#অনুভূতির_শীর্ষবিন্দু
#written_by_Nurzahan_Akter_Allo
#part_03
–“তোমার ঘামার্ত নাকটা আমার বেশ পছন্দের। অদ্ভুত এক সৌন্দর্য মিশ্রিত আছে, তোমার এই ঘামার্ত নাকটাতে। এজন্যই তোমার ঘামার্ত নাকের জন্য খুব ছোট্ট একটা উপহার।” (নক্ষত্র মুচকি হেসে)
নক্ষত্রের এই কথা শুনে তিতিক্ষা এবার সত্যিই খুব
লজ্জা পেলো। তিতিক্ষা লজ্জা পেলে ওর দুই গাল লালবর্ণ ধারণ করে। এখনও তার ব্যাতিক্রম কিছু ঘটলো না। মুখের উপর কেউ যদি এমন কথা বলে। তাহলে লজ্জা পাওয়াটা তো অস্বাভাবিক কিছু না। তিতিক্ষা মাথা নিচু করে মুচকি হাসলো। নক্ষত্র তিতিক্ষার হাসিটা খুব যত্ন করে ওর মনের কোঠরে গেঁথে নেওয়া মত করে পলকহীন ভাবে দেখে নিলো। বিভা বাইরে থেকে ওদের ডাকছে। নক্ষত্র বিভাকে আস্তে করে ডেকে বললো,
–“সোনাআপি আর একটা মিনিট দাও প্লিজ।”
নক্ষত্রের কিউট করে কথা বলার ফেসটা দেখে বিভা হেসে ওখান থেকে চলে গেল। নক্ষত্র তিতিক্ষার দিকে তাকিয়ে ওর অনামিকা আঙুল এগিয়ে দিলো। যে আঙুলে তিতিক্ষা ওকে রিং পড়িয়ে দিয়েছে। তিতিক্ষা ভ্রু কুঁচকে নক্ষত্রের দিকে তাকালো। নক্ষত্র ইশারাতে তিতিক্ষাকেও ওর আঙুল এগিয়ে দিতে বললো। নক্ষত্রের ইশারা অনুযায়ী তিতিক্ষাও তাই করলো। নক্ষত্র তিতিক্ষার সেই আঙুলের সাথে ওর আঙুল ছোঁয়ালো। নক্ষত্রের এমন কান্ডে তিতিক্ষা কিছুই বুঝতে পারলো না। নক্ষত্র তখন তিতিক্ষার দিকে তাকিয়ে বললো,
–“শুনেছি অনামিকা আঙুল নাকি আমাদের হার্টের সাথে সম্পর্কিত। এজন্য তোমার অনামিকা আঙুলের সাথে আমার অনামিকা আঙুল ছোঁয়ালাম। যাতে আমাদের দুজনের হার্ট দুইটা অতিশ্রীঘই একে অপরের হার্টকে টার্চ করে।” (নক্ষত্র মুচকি হেসে)
নক্ষত্রের এই কথা শুনে তিতিক্ষা বোকার মত ওর তাকিয়ে থাকলো। এটা আবার কেমন যুক্তি। তবে ব্যাপারখানা এমন করে তো ভেবে দেখা হয়নি! নক্ষত্র আর কথা না বাড়ালো না। সে মুচকি হাসতে হাসতে তিতিক্ষার নাকটা আলতো করে টেনে দিয়ে চলে গেল। এখন আর দাঁড়ানো উচিত হবেনা। কারন বাইরে সবাই অপেক্ষা করছে। তিতিক্ষা এখনো ওখানে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে রইলো। নক্ষত্রের কথাগুলো তিতিক্ষার খুব মনে ধরেছে। আসলেই ব্যাপারটা গভীরভাবে চিন্তা না করলে এমন যুক্তি দেওয়ায় সম্ভব না। এই যুক্তিটা ঠিক কতটুকু সত্য তিতিক্ষার জানা নেই। তবে ব্যাপারটা নিয়ে ওর ভাবতে খুব ভাল লাগছে।
–“প্রিয়মানুষটা+ অনামিকা আঙুল+ হার্ট= অনুভূতির শীর্ষবিন্দু।”
নক্ষত্ররা এখন চলে যাবে। হালকা নাস্তার আয়োজন করা হয়েছে। তিতিক্ষা ড্রয়িংরুমে গিয়ে দাঁড়ালো। নক্ষত্রের আম্মু তিতিক্ষার কপালে আদর দিলো। অদ্রি তিতিক্ষাকে জড়িয়ে ধরলো। নক্ষত্রের আব্বু তিতিক্ষার হাতে দশ হাজার টাকা ধরিয়ে দিলো। তিতিক্ষা প্রথমে নিতে চাচ্ছিলো না। এজন্য নক্ষত্রের আব্বু বললো,
–“মেয়ে দেখতে আসলে নাকি টাকা দিতে হয়। আর মেয়ে পছন্দ হলে নাকি একটু বেশিই টাকা দিতে হয়। তো মেয়ে আমাদের পছন্দ হয়েছে। অতিশ্রীঘই আবার আসবো। আমার মেয়েকে আমার বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য। ভালো থাকিস আম্মু।” (তিতিক্ষার মাথায় হাত বুলিয়ে)
রুহান, আফান আর সাফওয়ান তিতিক্ষার সাথে কথা বললো। আফান তিতিক্ষাকে বললো,
–“আমরা কিন্তু তোমাকে ভাবি ডাকতে পারবো না। ভাবি ডাকটা আমার কাছে পর পর লাগে। তুমি আমার ছোট বোনের বয়সী। এজন্য আমরা তোমার নাম ধরে ডাকবো কেমন?” (আফান)
তিতিক্ষা আফানের কথা শুনে মুচকি হেসে বললো,
–“জ্বি ভাইয়া! ভাবি বলে আমাকে আর লজ্জায় ফেলবেন না। আমি আপনাদের থেকে অনেক ছোট। আমি ভাবি নয় বরং বোন হয়েই থাকতে চাই।”
সাফওয়ান তিতিক্ষাকে বললো,
–“আর নক্ষত্র যদি তোমাকে ডির্স্টাব করে শুধু আমাদের একটাবার জানাবে। তারপর ওকে আমরা দেখে নিবো।আসছি আপু ভালো থেকো।”
তিতিক্ষা মুচকি হেসে বললো,
–“জ্বি ভাইয়া। আপনারাও ভাল থাকবেন আর সাবধানে যাবেন।”
রুহান কিছু বলতে যাবে, তার আগেই আফান আর সাফওয়ান রুহানকে টেনে হিঁচড়ে নিচে নিয়ে চলে গেল।নক্ষত্র আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো, বড়রা কথা বলতে বলতে নিচে নেমে গেছে। নক্ষত্র মৃদু স্বরে বললো,
–“সাবধানে থেকো আর অবশ্যই নিজের খেয়াল রেখো। আল্লাহ হাফেজ।”
তিতিক্ষা প্রতিউত্তরে মৃদু সুরে বললো,
–” আল্লাহ হাফেজ।”
বাসার সবাই নিচে চলে গেছে ওদের এগিয়ে দিতে। তিতিক্ষা শুধু যায়নি। নক্ষত্রের আব্বু আম্মু তিতিক্ষার আব্বু আম্মুর থেকে বিদায় নিয়ে গাড়িতে উঠে বসলো। নক্ষত্র তিতিক্ষার আব্বুকে আর খালুকে জড়িয়ে ধরলো। এরপর সালাম দিয়ে উনাদের থেকে বিদায় নিলো। নক্ষত্ররা দুটো গাড়ি এনেছিলো। প্রথমটাতে অদ্রির ওর আব্বু আম্মু চলে গেল।আর পরেরটাতে নক্ষত্ররা যাবে। নক্ষত্রকে এখন গাড়ি ড্রাইভ করতে হবে। এই অলসগুলো কেউ এখন ড্রাইভ করবে না। এজন্য আগেই গাড়িতে উঠে সিট দখল করে বসে আছে। নক্ষত্র গাড়ির ড্রাইভিং সিটের দিকে আসতে আসতে এক বার তিতিক্ষার রুমে দিকে তাকালো। তখনই জানালার পাশে থেকে কিছু একটা সরে যেতে দেখলো। এটা দেখে নক্ষত্রের মুখে হাসির রেখা দেখা দিলো। নক্ষত্র ওর নিচের ঠোঁট কামড়ে হাসিটা আড়াল করে নিলো। এরপর গাড়িতে উঠে গাড়ি স্টার্ট দিয়ে চলে গেল।
নক্ষত্ররা চলে যাওয়ার পর বাসাটা খুব ফাঁকা ফাঁকা লাগছে। তিতিক্ষার আম্মু, মামনিও একই কথা বললো। এতগুলো মানুষ এতক্ষণ বাসায় ছিলো। সত্যি বলতে নক্ষত্ররা এমন ভাবে ওদের সাথে মিশেছে যে, মনে হচ্ছিল ওরা খুব কাছের কেউ। তিতিক্ষা ওর রুমে গিয়ে চুল ছেড়ে দিয়ে বেডের উপর বসলো। একটু পরে তনুকা আর বিভা আসলো তিতিক্ষার রুমে। বিভা মুচকি হেসে বললো,
—“বনু নক্ষত্র ভাইয়া জিজু হিসেবে পারফেক্ট। সাথে অসম্ভব ভালো একজন মানুষ। আমি শুধু ভাবছি নক্ষত্র ভাইয়া এত সুন্দর করে কথা কিভাবে বলে?” (বিভা)
বিভার কথা শুনে তিতিক্ষা মুচকি হাসলো। তনুকা তিতিক্ষার থুতনী ধরে ওর দিকে ফিরালো। তিতিক্ষা মুখটা লজ্জায় রাঙা হয়ে উঠেছে। তনুকা বোনের মুখের দিকে তাকিয়ে হাসলো। তিতিক্ষা মাথা নিচু করে নিয়েছে। তনুকা মুচকি হেসে বললো,
—“জানিস তিতু, যে মেয়েরা তাদের বরের দেওয়া এক টুকরো ভালবাসা নিয়ে সন্তুষ্ট থাকে। সে মেয়েরা তাদের বরের নামটা অন্য কারো মুখ থেকে শুনলেও তাদের চেহারায় অদ্ভুত এক আভা ছড়িয়ে পড়ে। যেটা আমি এখন তোর চেহারায় দেখতে পাচ্ছি।”
এরপর তিন বোন আরও কিছুক্ষণ গল্প করে ওরা চলে গেল। তিতিক্ষা ওর হাতের রিংটার দিকে তাকিয়ে আছে। তনুকা, বিভা, মামনি,তিতিক্ষার আম্মু তো নক্ষত্রের খুব প্রশংসা করলো। আহানও এখন নক্ষত্রের সাপোর্টার। সে তো নক্ষত্রের প্রশংসায় পঞ্চমুখ। তিতিক্ষা আব্বু তিতিক্ষার কাছে এসে বলল,
–“আম্মুরে আমি তোমার জন্য খাঁটি হীরেই তুলে এনেছি। তুমি নক্ষত্রের সাথে কিছুদিন কথা বল। তাহলে তুমিও বুঝতে পারবে, ছেলেটা আসলেই খুব ভালো মনের অধিকারী।”
তিতিক্ষা ওর আব্বুর কথার প্রতিউত্তরে কিছু বললো না। কারণ তিতিক্ষাও বুঝে গেছে নক্ষত্র কেমন। একটা ছেলের চোখের দিকে তাকালেই বুঝা যায়, সে কেমন ক্যারেক্টারের। মানুষ মুখে মিথ্যা বললেও চোখের ভাষা মিথ্যা হতে পারেনা। হুমায়ূন আহমেদ এই ব্যাপারে একটা উক্তি দিয়েছে,
–“পুরুষ মানুষ দুইভাগে বিভক্ত। একদল হলো, যারা সরাসরি মেয়েদের চোখের দিকে তাকাই। আরেক দল আছে, তারা সরাসরি মেয়েদের বুকের দিকে তাকায়।”
তিতিক্ষা ও যে নক্ষত্রকে লক্ষ্য করেনি তা কিন্তু নয়। কিন্তু তিতিক্ষা নক্ষত্রের মধ্যে সেরকম কিছু দেখতে পায়নি। বরং নক্ষত্রের বলা কিছু কিছু কথা, ওর মুচকি হাসি, ওর পছন্দের কথা সরাসরি বলা, ওর বলা অনামিকা আঙ্গুলে যুক্তিটা, এসবকিছু তিতিক্ষার মনে একটু হলেও ভালোলাগার সৃষ্টি হয়েছে।
তিতিক্ষা যখন শাড়ি চেঞ্জ করতে রুমে এসেছিল। নক্ষত্র তখন আহানের সাহায্যে নিয়ে তিতিক্ষার ফোন নাম্বার, ইমু নাম্বার, ফেসবুক আইডি এগুলো কালেক্ট করে নিয়েছে। এই তথ্য তিতিক্ষার এখনো অজানা। নক্ষত্র ঠান্ডা মাথায় তিতিক্ষার সাথে কনটাক্ট করার সব পথই নিজেই তৈরী করে নিয়েছে। যদিও এই কাজটা করেছে সবার আড়ালে। এজন্য আহানকে ঘুষও দিতে হয়েছে। এই ব্যাপারটা নক্ষত্র তিতিক্ষাকে ক্ষুনাক্ষরেও টের পেতে দেয়নি। আহানও মার খাওয়ার ভয়ে তিতিক্ষাকে কিছু বলেনি। এজন্য নক্ষত্রকে অনেক কাঠ খড় পুড়িয়ে আহানকে বশে আনতে হয়েছে।
তিতিক্ষার আব্বু রুম থেকে চলে গেল। তিতিক্ষা নক্ষত্রের বলা সব কথাগুলো ভেবে মুচকি হেসে বললো,
–“মানুষটা আসলেই একটা পাগল।”
প্রায় দুই সপ্তাহ পর…..
নক্ষত্রের সাথে তিতিক্ষার এখন মেসেজে কথা হয়। সারাদিনে তিতিক্ষার ফোনে নক্ষত্রের দশটা মেসেজ আসবেই। তিতিক্ষা নক্ষত্রের মেসেজের মাঝে মাঝে আনসার করে। তাছাড়া নক্ষত্রের মেসেজ গুলো তিতিক্ষা মনোযোগ দিয়ে পড়ে আর মুচকি মুচকি হাসে। তবে নক্ষত্র কল দিলে, তিতিক্ষা যেন কথা বলার শক্তিটুকু হারিয়ে ফেলে। ওর বুকের ভেতর ধুকপুকানি বাড়তেই থাকে। নক্ষত্র ওকে যা জিজ্ঞাসা করে ,সে কথার প্রতিউত্তরে হুম, হ্যা, না, জ্বি এসব ছাড়া কোন উত্তরই খুঁজে যেন সে খুঁজে পায়না। নক্ষত্রকে কিছু বলার জন্য তিতিক্ষা যতই আগে থেকে কথা সাজিয়ে রাখুক; নক্ষত্রের পুরু কন্ঠে হ্যালো বলার সাথে সাথে তিতিক্ষার কেন জানি সবটা গুলিয়ে যায়। তবে নক্ষত্রের ফেসবুক আইডির টাইমলাইনের নক্ষত্রের যতগুলো পিক আছে। তিতিক্ষার ঘুমানোর আগে একবার দেখে নেওয়াটা যেন অভ্যাসে পরিনত হচ্ছে। আর এই কাজটা তিতিক্ষা কেন করে সেটা ওর ও অজানা। এটাই হয়তো একবিন্দু ভালোলাগা থেকে শুরু করে, এক সিন্ধু ভালোবাসা জন্মানের প্রথম ধাপ। এই ভালোবাসা নামক ব্যাধিটার জন্যই মনের কোঠায় প্রিয় মানুষটার জন্য একটু একটু করে সৃষ্টি হয় অনুভূতির শীর্ষবিন্দু। তবে চূড়ান্ত পর্যায়ে বুকের বা পাশে কারো জন্য ভালোবাসা উৎপত্তি হওয়ার সর্বশেষ অনুভূতির নামই হলো,
–“#অনুভূতির_শীর্ষবিন্দু।”
নক্ষত্র তিতিক্ষার আব্বু, মামনি, আহান সবাইকেই ফোন দিয়ে কথা বলে। তবে নক্ষত্র বুদ্ধি করে মামনিকে একটু বেশিই ফোন দেয়। কারণ উনাকে পাম মারলেই উনি তিতিক্ষার সব খবরাখবর নক্ষত্রের কাছে পৌঁছে দেয়। আর তখন ফোনের ওপাশ থেকে নক্ষত্র শুধু মুচকি হাসে। নক্ষত্র কিছু বলে না শুধু কান পেতে শুনে। প্রিয় মানুষটার খবরা-খবর শুনতে কার না ভালো লাগে। আর সে যদি হবু বউ হয়, তাহলে তো কথাই নেই। তাই নক্ষত্র ওর এই টেকনিকটাকেই বেশি কাজে লাগায়। সারাদিনে তিতিক্ষার ইউনিভার্সিটি, ওর প্রাইভেট, পড়াশোনা, সন্ধ্যার পর ভাই বোন মিলে জমপেশ আড্ডা, নক্ষত্রের মেসেজ, টুকটাক হাতের কাজ, এসব নিয়েই তিতিক্ষার দিনগুলো কাটছে। তিতিক্ষার আব্বু আম্মু ঢাকাতে চলে গেছে।
এদিকে শীতের প্রকোপটাও দিন দিন বাড়ছে। আজকে তিতিক্ষার সকালবেলা একটু দেরী করেই ঘুম থেকে উঠেছে। কালকে রাতে পড়া কম্পিলিট করতে একটু বেশিই রাত হয়ে গিয়েছিলো। এজন্য উঠতে দেরী হয়ে গেছে। আজকে তো শুক্রবার। এজন্য কোন তাড়াহুড়োও নেই। তিতিক্ষা ওর এলোমেলো চুল গুলো উচু করে বেঁধে চুলের কাটা দিয়ে আটকে নিলো। এরপর ফোনটা হাতে নিয়ে দেখলো প্রতিদিনের মতো আজকেও নক্ষত্রের দুইটা মেসেজ এসেছে। মেসেজটা এই রকম….
“সুপ্রভাত আমার বেঁচে থাকার চাবিকাঠিটা।”
(নক্ষত্র)
তার দু’মিনিট পরের মেসেজটা..
–“উহুম! উহুম! এই যে মিসেস নাহিয়ান আবরার, এবার তো উঠুন। বারান্দায় গিয়ে একটাবার আকাশের দিকে তাকান। আমি এখন আকাশ দেখছি। আর আপনাকেও আকাশের দিকে তাকাতে বলছি, কারন আমি তো এখন সরাসরি আপনাকে দেখতে পাচ্ছিনা। কিন্তু একই আকাশের নিচে তো আমরা অবস্থান করছি।” (নক্ষত্র)
মেসেজটা পড়ে তিতিক্ষা মুচকি হাসলো। বারান্দায় গিয়ে আকাশের দিকে তাকালো। ফোনটা হাতে নিয়ে নক্ষত্রকে মেসেজ করলো,
–“দেখলাম।”
এরপর তিতিক্ষা ওয়াশরুম ঢুকে বেসিনের সামনে দাঁড়িয়ে চোখ মুখে পানির ছিটা দিলো। ফেসওয়াশটা হাতে নিয়ে চোখ বন্ধ করে ওর মুখ ম্যাসাজ করছে। ওয়াশরুমের দরজা খোলা দেখে আহান দরজার কাছে এসে বললো,
–“এই তিতু আপু তুমি কি করছো?”
–“আহান বাবু আমি ফুটবল খেলছি। তুমি কি খেলবে আমার সাথে?”
তিতিক্ষার কথা শুনে আহান মুখ বাঁকালো। এরপর বললো,
–“তিতু আপু নক্ষত্র ভাইয়া কি জানে তুমি এতোটা ঝগড়ুটে?”
আহানের কথা শুনে তিতিক্ষা চোখ বন্ধ করেই আহানের গায়ে পানি ছুঁড়ে মারলো। আহান তখন চিৎকুর দিয়ে বলে উঠলো,
–“তিতু আপু তুমি নক্ষত্র ভাইয়াকে ভিজিয়ে দিলে কেন?” (চিৎকার করে)
নক্ষত্রের কথা শুনে তিতিক্ষা সাথে সাথে চোখ খুলতে লাগলো। চোখে ফেনা ঢুকে চোখ জ্বালা করতে লাগলো। তিতিক্ষা সাথে সাথে ওর চোখ বন্ধ করে নিলো। নক্ষত্র তখনই বলে উঠলো,
–“ইস! তুমি এতো ছটফট করো কেন? চোখ কি বেশি জ্বালা করছে? তারাতারি চোখে পানির ঝাপটা দাও।”
নক্ষত্রের কথা শুনে তিতিক্ষা যেন জমে গেছে। তিতিক্ষা উল্টো দিকে ঘুরে চুপ করে দাঁড়িয়ে আছে। তিতিক্ষা ওর চোখে পানির ঝাপটা দিলো। নক্ষত্র তখন আদুরে সুরে বলে উঠলো,
–“আমি কি আপনার ভেজা মুখটা আর একবার দেখার সুযোগ পেতে পারি?”
To be continue…!!
(কেমন হচ্ছে জানাতে ভুলবেন না। আপনাদের গঠনমূলক কমেন্ট গুলোই আমাকে লেখার উৎসাহ প্রদান করে। )