এলোকেশী_কন্যা২__ #written_by_Nurzahan_akter_Allo #part_19 🍁🍁

0
974

#এলোকেশী_কন্যা২__
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_19
🍁🍁

রোদ রেডি হয়ে রুম থেকে বের হতেই দেখে আলো রেডি হয়ে সোফাতে বসে পানি খাচ্ছে। রোদ আলোর মাথা থেকে পা পর্যন্ত তাকায় আর দেখে সবকিছু ঠিক আছে।তারপর রোদ ওর আম্মু বলে বেরিয়ে পড়ে!আলো রোদের পাশে বসে রোদকে কয়েকদফা গালি দিচ্ছে। রোদ আলোকে উদ্দেশ্য করে বললো…

রোদঃ কালকে সুবর্ণপুর যাচ্ছেন যান!তবে ওখানে কোন ছেলের আশেপাশে যাতে না দেখি!আর ওখানকার মেয়েদের সাথে দাঁত ক্যালাতে ক্যালাতে যেখানে সেখানে যাবেন না।আমার চোখে যদি পড়ে তাহলে তো কেল্লাফতে.. (তেডি স্মাইল দিয়ে)

আলোঃ তারমানে আপনি যাবেন??(অবাক হয়ে)

রোদঃ হুমম!কেন আমি গেলে কি তোমার কোন সমস্যা।(ভ্রু কুচকে)

আলোঃ না আমার আর নতুন করে কি সমস্যা? বাঘের গর্তে থাকি বাঘের সাথেই তো চলাফেরা করতে হবে তাই না (বিরবির করে)

রোদঃ বিরবির করছো কেন?যা বলার জোরে বলো।আচ্ছা তুমি কি ড্রেস পড়তে বেশি পছন্দ করো।

আলোঃ থ্রি পিস

রোদঃ আর

আলোঃ আর নাই!গ্রামের মেয়ে আমি মর্ডান ড্রেস পরিনি কখনো।আর পড়ার ইচ্ছেও নেই।

রোদ আর কিছু বললো না!রোদ আর আলো ঘুরে ঘুরে শপিং করছে!রোদ আলোকে একবারো জিজ্ঞাসা করেনি আলোর কোনটা পছন্দ। রোদ ওর পছন্দ মত ড্রেস চুজ করছে!আলো কিছু বলে নি কারণ রোদের চয়েজ অনেক ভালো আলো সেটা খুব ভালো করেই বুঝতে পেরেছে।রোদ ওর আম্মু, আব্বু আর মেঘ আর আলোর জন্য শপিং করলো।রোদ আলোকে কসমেটিকস এর শপে নিয়ে গিয়ে বললো…

রোদঃ মেয়েদের সাজগোজের সব জিনিস এখানে পাওয়া যায়!তোমার যা যা লাগবে তুমি চুজ করে নাও! আমি এই শপিং ব্যাগ গুলো গাড়িতে রেখে এক্ষুনি আসছি।

আলোঃ আচ্ছা…

আলো দোকানে থাকা মেয়েটাকে বলে কয়েক কালারের টপটেন নিয়ে নিলো!কারন রোদ যে ড্রেস কিনছে সেগুলো শেমিজ বা টপটেন ছাড়া পড়া ঠিক হবে না।আলো তো রোদকে বলতেও পারছে না!আর রোদ ইচ্ছে করেই আলোকে এখানে রেখে গেছে!যাতে আলো ওর পারসোনাল কিছু জিনিস কিনে নিতে পারে!বুদ্ধি মান ছেলে মনে হয় একেই বলে।আলো ওর ব্যাগে টপটেনের প্যাকেট টা নিয়েছে আর বিলও দিয়ে দিয়েছে!১০ মিঃ পর রোদ এসে দেখে আলো দাড়িয়ে আছে!রোদ ভ্রু কুচকে জিজ্ঞাসা করে…

রোদঃ দাড়িয়ে আছো কেন?কিছু নাও নি….

আলোঃ আমার কিছু লাগবে না।চলুন বাসায় যায়।

রোদঃ কসমেটিক্স এর শপে এসে বলছো যে কিছু লাগবে না!বাহ্ তোমাকে তো নোবেল দেওয়া উচিত।

আলোঃ….

রোদঃ ওকে আমি হেল্প করছি…

রোদ দুই ডজন চুরি,ছোট্ট কালো টিপ,কাজল,চুলের জন্য ছোট কাকড়া,কালো ক্লিপ,বাবার ব্যান্ড,ডিজাইন করা ব্রুজ,চুলের জন্য বড় কাকড়া নিতে গেলে আলো বলে উঠে…

আলোঃ আমার জন্য কাকড়া নিতে হবে না।আম্মুর জন্য হলে নিতে পারেন।

রোদঃ কেন??তোমার জন্য নিলে কি হবে (ভ্রু কুচকে)

আলোঃ আসলে এগুলো আমার চুলে হবে না।চুলে আটকাতে গেলেই ভেঙ্গে যাবে।এজন্য নিষেধ করছি।

রোদঃ তাহলে এখন কি করবে?ওখানে গিয়ে তো আর সবসময় চুল ছেড়ে রাখা যাবে না তাই না।

আলোঃ চুলের কাটা হলে ভালো হয়।

রোদঃ ওকে

রোদ যেগুলো আলোকে কিনে দিলো রোদ সেগুলো নাম জানে কি না সন্দেহ! দোকানে সাজানো আছে ওটা ওটা বলছে আর দোকানের মেয়েটা এনে দিচ্ছে। আলো দুইটা চুলের কাটা নিলো! রোদের আম্মুর জন্য আলো বেশ কয়েটা জিনিসও নিলো।তারপর রোদ সেগুলো বিল দিয়ে সামনে এগুলো!আলো অনেক সাহস নিয়ে বললো….!!

আলোঃ বলছিলাম যে আপনার জন্য তো কিছু নিলেন না।

রোদঃ আমার অনেক গুলো ড্রেস নিউ কেনা আছে!একবারো পড়া হয়নি এজন্য নিলাম না।(মুচকি হেসে)

আলোঃ ব ব বলছিলাম কি যে?

রোদঃ না তুতলে বলো কি বলবে….!!

আলোঃ মেঘের জন্য একটা পান্জাবী নিতে চাচ্ছিলাম।
রোদঃ ওকে চলো(মুচকি হেসে)

পান্জাবীর শপে গিয়ে আলো পান্জাবী দেখছে!আর রোদ বসে বসে আলোকে ফলো করছে।আলো দুইটা এ্যাশ কালারের পান্জাবী বের করে!এ্যাশ কালারের পান্জাবীতে ব্লু সুতার কাজ করা!সাধারণ পান্জাবী মত বুকের মাঝখানে বোতাম না সাইডে বোতাম স্টিটেম!আর পাঁচটা পান্জাবীর থেকে এই পান্জাবীটা একটু বেশিই ইউনিক!আলো অনেক খুশি হয়ে রোদকে দেখায়।রোদ ভ্রু কুচকে বলে…!!

রোদঃ এই ছোট সাইজের টা মেঘের হবে! আর মেঘকে ভালোও দেখাবে।বাট বড় সাইজের টা কার….ওয়েট ওয়েট তুমি কি পান্জাবী পড়বে নাকি।

আলোঃ আমি মেয়ে হয়ে পান্জাবী কেন পড়বো??

রোদঃ তাহলে এটা কার জন্য! বাবার তো এই সাইজটা হবে না।

আলোঃ এটা কারো জন্য না!এটা রেখে দিচ্ছি! এবার আপনি খুশি… (একটু রাগ নিয়ে)

রোদঃ ওকে..!!

রোদ আর আলো মেঘের পান্জাবীটা নিয়ে বেরিয়ে গেল!আলো মন খারাপ করে আরেকবার পেছনে ঘুরে পান্জাবীটার দিকে তাকালো!তারপর রোদের সাথে হাটতে শুরু করলো।রোদ আলোকে নিয়ে গোল্ডের শপে গেল! তারপর রোদ একটা মাঝারি সাইজের চেন এনে আলোর হাতে দিলো!আলো ভ্রু কুচকে তাকিয়ে আছে…

আলোঃ এটা কি বরের জন্য??

রোদঃ বরের জন্য মানে?

আলোঃ যার বিয়ের জন্য যাচ্ছি তার জন্য কি এটা?

রোদঃ জি না!এটা আপনার জন্য..

আলোঃ আমার এসব লাগবে না।

রোদঃ আমার মুখে মুখে তর্ক করবে না!এই ভুল যেন দ্বিতীয় বার না হয়।মাইন্ড ইট..(দাঁতে দাঁত চেপে)

আলোঃ আ আপনি আম

রোদঃ আমার রাগ উঠিও না আলো!আমার কাজে বাঁধা দেওয়াটা আমি মোটেও পছন্দ করি না।আর ওখানে গিয়ে আম্মু বলবে তুমি আম্মুর মেয়ে। আর আম্মু মেয়েকে তো আম্মুর মত হতে হবে না তাই না।আর একটা কথা বললে থাটিয়ে এমন থাপ্পড় দিবো ৮৮০ এ্যাঙ্গেলে মুখ বাঁকা হয়ে যাবে।(দাঁতে দাঁত চেপে)

আলো আর কিছু বলার সাহস পায়নি!রোদ একটা সুন্দর পাতার লকেট এনে চেনের মধ্যে ঢুকিয়ে আলোর গলায় পড়িয়ে দিলো।আর রোদ রাগী গলায় নিষেধও করে দিলো এটা যেন কোন সময় না খুলে!তারপর রোদ আলোকে নিয়ে একটা রেস্টুরেন্ট চলে গেল!আলো বললো এখন কিছু খাবে না তাই রোদ খাবার প্যাক করে নিয়ে বাসায় চলে গেল।

আলো বাসায় ফিরে রোদের আম্মুকে সব কিছু দেখাচ্ছে! আলো ওর চেনটাও দেখালো। রোদের আম্মু তো রোদের এই কাজে খুব খুশি।আর মেঘ গাল ফুলিয়ে বসে আছে ওকে শপিং করতে নিয়ে যায়নি তাই।বাট মেঘ ওর ড্রেস আর আলোর পছন্দ করা পান্জাবী দেখে নাচতে শুরু করছে!রোদ ড্রেস বদলে কেবল বেডে শুয়েছে এমন সময় মেঘ এক দৌড় এসে রোদের উপর হামলে পড়লো আর বলতে শুরু করলো…

মেঘঃ কি বড়মিঞা ফেঁসে গেলে তো?

রোদঃ মানে?

মেঘঃ আগে আমাকে ট্যাস্ক দাও! কোন কথা হবে না! আগে আমাকে ট্যাস্ক দাও তারাতারি..

রোদঃ ভণিতা না করে আসল কাহিনী কি বলবি নাকি মার খাবি।

মেঘঃ আমার বউমনি প্রেমে পড়ছো আর আমাকে ট্যাস্ক দিবে না।(বিশ্বজয় করা হাসি দিয়ে)

রোদঃ কেবল বাইরে থেকে আসলাম মাথা গরম আছে বকবক করিস না তো।

মেঘঃ বুঝি দাভাই! আমি তো আর বেবি না আমি এখন সব বুঝি..!!

রোদঃ এই তোর বউমনির প্রেমে পড়তে আমার বয়েই গেছে!যা ভাগ এখান থেকে..

মেঘঃ বউমনি ঠিকই বলে

রোদঃ কি ঠিক বলে তোর বউমনি(ভ্রু কুচকে)

মেঘঃ বউমনি বলে তুমি একটা খাটাশ।

মেঘ কথাটা বলে দৌড় দিসে!রোদ আর কিছু বলে নি!৩০ মিঃ রেস্ট নিয়ে ওর বন্ধুদের সাথে আড্ডা দিতে চলে যায়!রোদের আম্মু আলোর দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বলে…

রোদের আম্মুঃ আলো তোর যা যা লাগবে সব গুছিয়ে নে।কালকে সকাল সকাল আমরা বেরিয়ে পড়বো…

আলোঃ জি আম্মু..!!

রোদের আম্মুঃ আলো আমার ছেলেটা এতটাও খারাপ না!(মুচকি হেসে)

আলোঃ…..

না আম্মু আপনার পোলা খারাপ হইবো ক্যান!আপনার পোলা তো গোবরে ধোঁয়া তুলসি পাতা।সারা ডা দিন আমাকে ধমকের উপরে রাখে।শালা হুলো বিড়াল! মুখে তো রস কস তো কিছু নাই! জন্মের সময় মধু ভাইবা সরিষার তেল দিসিলেন মনে হয়।এজন্য কথার এত ঝাঁজ!ক্যান রে ভাও আমার লগে একটু মিষ্টি কইরা কথা কইলে! তোর কত নাম্বার বউ মইরা যাবে শুনি! যে তুই আমার লগে ভালো কইরা কথাও কস না।এই পোলা আমার জীবনখান নিজ দায়িত্বে ত্যানা ত্যানা কইরা দিবে! এটা বুঝতে আমার আর বাকি নাই। শালা তুই আসলেই একখান ঢ্যামনা….!!(মনে মনে)

তারপর আলো রোদকে আরো কিছু বকা দিয়ে ধুয়ে দিলো! আর ওর রুমে গিয়ে জামা কাপড় গোছাতে শুরু করলো।

To be continue….

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here