এলোকেশী_কন্যা২__ #written_by_Nurzahan_akter_Allo #part_44 🍁🍁

0
790

#এলোকেশী_কন্যা২__
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_44
🍁🍁

মেঘ চুপটি করে আলোর কোলে বসে আছে!আলো মেঘকে কিছু খাওয়ানো চেষ্টা করছে কিনতু মেঘ খাচ্ছে না।রোদ এসে মেঘের কপালে আদর দিয়ে মেঘের মুখের খাবার তুলে দেয়!মেঘ মাথা নিচু করে আছে ঠিকই কিন্তু মেঘের গাল বেয়ে বেয়ে পানি পড়ছে!আলো মেঘের কপালে আদর দিয়ে মেঘের গালে দুই হাত রেখে কান্না করতে করতে বললো…!!

আলোঃ খেয়ে নাও মেঘবাবু??সোনা আর কান্না করো না.!!(ছলছল চোখে তাকিয়ে)

মেঘঃ……

আলোঃ তুমি যদি না খাও তাহলে কিন্তু আমিও মারা যাবো!আমি ওই আকাশে তারা হয়ে যাবো…!! তখন তুমি থেকো একা একা! (অন্য দিকে ঘুরে বসে)

মেঘঃ তাহলে আমিই মরে যাবো বউমনি!আম্মু আর আব্বু আমাকে রেখে চলে গেছে।তুমি আর দাভাই আমাকে ছেড়ে কোথাও যেও না বউমনি।আমি তোমার সব কথা শুনবো তাও আমাকে রেখে চলে যাওয়া কথা বলো না বউমনি (জোরে কেঁদে কেঁদে)

আলো মেঘের চোখ মুছে দেয়!রোদ মেঘকে খাইয়ে দিতে থাকে!মেঘকে খাওয়াতে খাওয়াতে রোদ আলোর দিকেও খাবার ধরে কারন আলোও আজকে সারাদিন কিছু খায়নি। আলো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে রোদের হাত থেকে খাবার মুখে তুলে নেয়!আলো আর মেঘ কাঁদছে আর খাচ্ছে! রোদ বার বার ওর অবাধ্য চোখের পানি আড়াল করে ফেলছে।আলো আর মেঘ দুইজনেই প্লেট থেকে খাবার নিয়ে রোদের সামনে ধরে। রোদ একবার মেঘের আর একবার আলোর দিকে তাকিয়ে রোদ না করতে পারেনা।তাই রোদও খাবার মুখে তুলে নেয়…!!কারো গলা দিয়েই খাবার নামছে না কিন্তু কেউ কারো ভালবাসা ফিরাতে পারছেনা তাই তিনজন কোন রকম খেয়ে নিলো।এটাকে বলে ভালবাসা! এটাকেই বলে ভালো থাকা আর এটাকে বলে সুখ।ভালথাকা মানে শুধু সুখটাকেই বোঝায় না!
কষ্টের মাঝেও সুখ লুকিয়ে থাকে শুধু খুঁজে নেওয়া জানতে হয়।

রোদ মেঘকে বেডে শুইয়ে ঘুম পাড়িয়ে দেয়!তারপর রোদ উঠতে গেলে আলো রোদকে ইশারায় উঠতে নিষেধ করে! আলো রোদের মাথার পাশে বসে আর রোদের মাথায় মুভ লাগিয়ে দেয়!আলো ঠিকই বুঝে নিয়েছে যে রোদের প্রচন্ড মাথা ব্যাথা করছে! কারন রোদ কিছুক্ষণ আগেও ওর নিজের মাথা চেপে ধরে বসে ছিলো।আলো রোদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে থাকে! রোদ চোখ বন্ধ করে আছে ঠিকই কিন্তু চোখের পানি পড়া বন্ধ হয়নি।কারন রোদের আম্মুও এইভাবে রোদের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়েছিলো।আলো রোদের চোখের পানি মুছে দেয়….!!রোদ ওর চোখ বন্ধ করে থাকতে থাকতে একটা সময় ঘুমিয়ে পড়ে।আলো রোদ আর মেঘের দিকে ছলছল চোখে তাকিয়ে মনে মনে বলতে থাকে….!!

আলোঃ আম্মু আমি হয়তো তোমার মত এত সুন্দর করে সংসারটা সামলাতে পারবো না!তবে আমি এখন থেকে চেষ্টা করবো তোমার মত হওয়ার!তোমরা এভাবে আমাদের ফাঁকি দিয়ে না গেলেও পারতে!আম্মু তোমার বলা প্রতিটা কথাটা আমি মেনে চলবো!তোমার এই দুই রাজপুত্রকে ভাল রাখার জন্য আমার যা যা করতে হবে আমি করবো!আমি শেষ নিঃশ্বাস অবধি এই দুজনকে আগলে রাখবো! আমি আমার নিজের ছেলের মত করেই মেঘকে দেখে রাখবো আম্মু!আমাকে তোমার দেওয়া এই আমানত গুলোর আমি কোনদিনও খেয়ানত হতে দিবো না আম্মু।আজকে দিনটা আমাদের তিনজনের জীবনের মোড় একেবারেই ঘুরিয়ে দিলো!কালকে থেকে আমিও নতুন আলো হয়ে নিজেকে তৈরী করবো! যে আলোর কাছে রোদ আর মেঘকে ঘিরেই হবে তার পৃথিবী।আমি সবার দৃষ্টিভঙ্গি বদলে দিবো আমি প্রমান করো দিবো! সব বউমনিরা খারাপ না!রক্তের সম্পর্কের থেকে বড় হলো আত্মার সম্পর্ক।আম্মু আব্বু তোমরা যেখানেই থাকো আমাদের জন্য দোয়া করো। আমি যেন মেঘের বেস্ট বউমনি হয়ে থাকতে পারি!আজকে থেকে আমার একটাই লড়াই হবে ! আর সেটা হলো মেঘের বউমনির হয়েও মেঘকে মায়ের মত আগলে রাখার লড়াই……!!(বেডের সাথে হেলান দিয়ে)

আলো এমন কিছু কথা ভাবতে ভাবতে ঘুমিয়ে পড়ে!আমাদের জীবনটা বড়ই অদ্ভুত নিয়মে চলতে পছন্দ করে!যখনই সুখের রেখা দেখা দিবে!তখনই আমাদের জীবনে এমন কিছু ঘটে যে জীবনের রং টাই পাল্টে যায়।রোদ আলো আর মেঘের জীবনেও ঠিকই এমনটাই হলো।একটা অনাকাঙ্ক্ষিত বিপদ এসে ওদের তিনজনের সাজানো গুছানো সুখে মোড়ানো জীবনডাকে কিছু মুহূর্তেই জন্য থমকে দিলো।আর এটাই হয়তো সৃষ্টিকর্তার অদ্ভুত লীলা!

পরেরদিন সকালবেলা…..!!

ফজরের আজান শুনে আলো ঘুম থেকে উঠে!তারপর রোদ আর মেঘকেও ঘুম থেকে টেনে তোলে!আলো রোদ আর মেঘকে নামাজের জন্য মসজিদে যেতে বলে! আলোর কথা মত দুই ভাই বেড থেকে নেমে পড়ে!রোদের দেখে দেখে মেঘও অযু করে নিলো!তারপর দুই ভাই পান্জাবী পড়ে মাথায় টুপি পড়ে বের হতেই আলোর মেঘের হাত ধরে ফেলে!রোদ মেঘের হাত ধরে ছিলো!মেঘ থেমে যাওয়ার জন্য রোদও থেমে যায়।আলো মুচকি হেসে মেঘের সামনে বসে পড়ে আর মেঘকে বলে….!!

আলোঃ মেঘবাবু আমি এখন তোমাকে কিছু কথা বলবো! আর তুমি আমার কথাগুলো মন দিয়ে শুনবে কেমন…!! (মেঘের গালে হাত রেখে)

মেঘঃ কি কথা বউমনি..??(নিষ্পাপ দৃষ্টিতে তাকিয়ে )

আলোঃ মেঘ সোনা তুমি তো মসজিদ যাচ্ছো নামাজ পড়তে তাই না !তো ওখানে সবাই যেমন ভাবে নামাজ পড়বে! তুমিও তাদের দেখে দেখে তেমন ভাবেই নামাজ পড়বে ! নামাজে অমনোযোগী হবে না! আর মন খারাপ করে নামাজ পড়বে না।আমাদের আব্বু আম্মু তো ওই দুর আকাশের তারা হয়ে গেছে তাদের জন্য মন থেকে দোয়া করবে!মোনাজাতে কাঁদবে আর আল্লাহকে বলবে! যাতে আমাদের আব্বু আম্মু অনেক ভালো থাকে!আমরা সন্তানরা যদি তাদের জন্য দোয়া করি আল্লাহ আমাদের দোয়া কবুল করবে।আর যখন নামাজ পড়বে তখন সব সময় মনে করবে স্বয়ং আল্লাহ তোমার সামনে উপস্থিত। তাই অমনোযোগী হয়ে নামাজ পড়ে না কেমন! আর মন থেকে আব্বু আম্মুর জন্য দোয়া করবে সোনা…!!ইনশাল্লাহ তখন দেখবে আল্লাহ তোমার দোয়াই আগে কবুল করবে..!! (মেঘের কপালে আদর দিয়ে)

মেঘঃ বউমনি তোমার জন্য কি দোয়া করবো?

আলোঃ মেঘবাবু আমার জন্য তোমার মনে যে দোয়া আসে! তুমি সেই দোয়াই করবে….(মুচকি হেসে)

মেঘঃ তাহলে আমি আল্লাহকে বলবো! আমার এক আম্মু তো ওই আকাশের তারা হয়ে গেছে! আমার বউমনির মত আম্মুকে যাতে আল্লাহ ওই আকাশের তারা করে না দেয়!আমার এক আব্বু ওই আকাশের তারা হয়ে গেছে! আমার দাভাই রুপী আব্বুকে যেন কোনদিন আমার থেকে দুরে সরিয়ে না দেয়।এবার তোমাদের কিছু হলে আমি মরেই যাবো বউমনি..!! (ছলছল চোখে তাকিয়ে)

আলোঃ ছিঃ!এসব বলতে নেই সোনা।তুমি তো আমাদের প্রান তোমাকে ছেড়ে আমরা কোথাও যাবো না..!! (চোখ মুছে দিয়ে)

রোদঃ………(রোদ ওর চোখের পানি অন্য দিকে
তাকিয়ে মুছে নিলো!রোদের কিছু বলার ভাষা নেই)

আলোঃ যাও আজানের ডাকে সাড়া দিয়ে এসো…!!আর আল্লাহর শুকরিয়া আদায় করে এসো।

মেঘঃ আচ্ছা (আলোর গালে আদর দিয়ে)

আলোঃদুইজনেই সাবধানে যেও..!! (মুচকি হেসে)

রোদঃহুমম..!
মেঘঃ আচ্ছা বউমনি..!!

তারপর রোদ আর মেঘ দুইভাই এক সাথে নামাজ আদায় করতে গেল!আলোও অযু করে নামাজে বসে গেল। মেঘ মসজিদে গিয়ে সবার দেখে দেখেই নামাজ পড়েছে!আলোর কথামত মেঘ মন থেকে সবার জন্য দোয়া করছে!মেঘ শব্দহীন ভাবে কেঁদে কেঁদে মোনাজাত করেছে!নামাজ পড়া শেষ তাই সবাই এখন চলে যাওয়ার জন্য উঠে দাড়িয়েছে!মেঘ একদিন ওদিক তাকিয়ে কি যেন দেখলো আর ইমাম যেখানে বসে আছে সেই দিকটাই মেঘ এগিয়ে গেল!সবাই একে একে বের হচ্ছে বাইরে যাওয়ার জন্য ! রোদ পাশে তাকিয়ে দেখে মেঘ নাই! তাই রোদ মেঘকে খুঁজতে থাকে!মেঘ ইমামের কাছে বসলো! মেঘকে দেখে ইমাম মুচকি হেসে মেঘকে উনার কোলে বসিয়ে নিলো! আর মেঘের নাম জিজ্ঞাসা করলো।একটু ভিড় কমতেই রোদ দেখে মেঘ ইমামের কোলে বসে তাই স্বস্তির নিঃশ্বাস ছাড়লো।ইমাম বললো…!!

ইমামঃ বাবু তোমার নাম কি?(মুচকি হেসে!মেঘের টুপি ঠিক করে দিয়ে)

মেঘঃ আমার নাম মেঘ মেহবুব! আর ওই যে দাড়িয়ে আছে ওইটা আমার দাভাই। আমার দাভাইয়ের নাম রোদ মেহবুব।আর বাসায় আমার বউমনি আছে আর আমার বউমনির নাম আলো মেহবুব..!!(একনাগাড়ে গড়গড় করে বলে দিলো)

ইমামঃ মাশাল্লাহ্ খুব সুন্দর নাম!আমার মনে হচ্ছে তুমি আমাকে কিছু বলতে চাও। তুমি আমাকে যা বলতে চাও র্নিভয়ে বলো….!!(মুচকি হেসে)

মেঘঃ আমি আজকে দুপুরেও এখানে নামাজ পড়তে আসবো।

ইমামঃমাশাআল্লাহ শুনে খুব ভালো লাগলো!বাবু তুমি অবশ্যই আসবে!এই মসজিদ আল্লাহর ঘর! আর এটা সবার জন্য উন্মুক্ত। (মেঘের দিকে তাকিয়ে)

মেঘঃ আমি যখন দুপুরে নামাজ পড়তে আসবো! তখন তুমি আমার আব্বু আর আম্মুর জন্য একটু দোয়া করে দিবে।(মাথা নিচু করে)

ইমামঃ তোমার আব্বু আম্মু কি অসুস্থ??

মেঘঃ না!আমার আব্বু আম্মু কালকে দুপুরে ওই দুর আকাশের তারা হয়ে গেছে! তাই বউমনি বলছে, আমরা সবাই যদি আব্বু আম্মুর দোয়া করি তাহলে আমার আব্বু আম্মু ভালো থাকবে আল্লাহর কাছে।তাই তোমাকে বলছি একটু দোয়া করে দিতে!আমি দোয়া করলে একজন হলাম কিন্তু তুমি দোয়া করলে এখানে যারা যারা থাকবে সবাই দোয়া করবে! তাই তোমাকে বলছি। প্লিজ আমার আব্বু আম্মুর জন্য দোয়া করে দাও…!!(ছলছল চোখে তাকিয়ে)

ইমাম অবাক হয়ে গেছে মেঘের কথা বলার বাচন ভঙ্গি দেখে!এতটুকু একটা বাচ্চা কি সুন্দর করে গুছিয়ে কথা বলে।রোদ মেঘের কথা শুনে ছলছল চোখে মেঘের দিকে তাকিয়ে আছে!তারপর মেঘ ইমামের সাথে কথা বলা শেষ করে রোদের কাছে যায়!

রোদ মেঘকে ওর কোলে নিয়ে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরে রাখে!এখন আলো আর মেঘই হলো রোদের ভাল থাকার চাবিকাঠি ।মেঘ নামাজ পড়ার সময় এটা খেয়াল করছে ইমাম যা যা করছে! ওখানে উপস্থিত সবাই ঠিক সেইরকম করেই নামাজ পড়ছে!তাই মেঘের ছোট্ট মাথা এই বুদ্ধি এসেছে যে ইমাম দোয়া করলেই সবাই ওর বাবা মায়ের জন্য দোয়া করবে।তাই তখন মেঘ ইমামের সাথে বলতে যায়।

ইমাম এসে রোদের সাথেও কথা বলে আর জানতে পারে ওদের বাবা মায়ের এই অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর ঘটনা।ইমাম রোদ আর মেঘের মাথায় হাত রেখে দোয়া করে দেয় যাতে আল্লাহর রহমত এদের উপর বর্ষিত হয় আর এরা যাতে নিজের সামলে নিতে পারে।ইমাম রোদ আর মেঘের মাথায় হাত রেখে দোয়া করে দিলো তাই দেখে মেঘ বললো..!!

মেঘঃ আমাকে একটু তোমার দোয়া দাও তো আংকেল! আমার বাসায় আমার বউমনি আছে।আমার বউমনি তো তোমার দোয়া পেলো না।

মেঘের কথা শুনে ইমাম দোয়া করে হাত মুঠো করে মেঘের বামপাশের বুকে হাত বুলিয়ে দিলো!আর ইমাম মেঘকে বললো বাসায় গিয়ে এখান থেকে দোয়া নিয়ে আলোর মাথা হাত বুলিয়ে দিতে!ইমামের কথা শুনে মেঘ খুশি হলো।তারপর রোদ আর মেঘ মসজিদ থেকে বের হয়!মেঘ রোদের হাত ধরে হাঁটছে…!! মেঘ রোদের দিকে তাকিয়ে বললো..!!

মেঘঃ দাভাই নামাজ পড়লে শান্তি শান্তি লাগে তাই না!নামাজ পড়ে আমার এখন অনেক ভালো লাগছে…!!(বুকে হাত রেখে)

রোদঃ হুমমম!নামাজের মাঝেই শান্তি আছে।এজন্য যতই মন খারাপ, বিপদ,যাই হোক নামাজ পড়লে শান্তি লাগে।(মুচকি হেসে)

মেঘঃ দাভাই…!!

রোদঃ হুমমম

মেঘঃ বউমনিকে আমি তুমি কেউ আর কষ্ট দিবো না।আম্মুর কথা শুনতাম না তাই আম্মু চলে গেছে।আমি বউমনিকে হারাতে পারবো না!তাই এবার থেকে আমি বউমনির সব কথা শুনবো..!!(মাথা নিচু করে)

রোদঃ তোর বউমনিকে তুই খুব ভালবাসিস তাই না..!!(শান্ত কন্ঠে)

মেঘঃ হুমম!আমি তোমাকেও খুব ভালবাসি দাভাই

রোদঃ আমিও তোকে খুব ভালবাসি ভাই!তুই তো আমার কলিজা মেঘ।(হাটু গেড়ে বসে)

মেঘঃ হুমমম(রোদের গালে আদর দিয়ে)

রোদঃ তোর বউমনিও তোকে খুব ভালবাসে!আর তোর বউমনি খুব কষ্ট পায় যখন তুই কান্না করিস।আমি তোদের দুজনকেই খুব ভালবাসি সোনা।তোরা ছাড়া আমিও যে একা!আব্বু আম্মুকে ছাড়া তোরা আমার কাছে যা চাইবি আমি এনে দিবো।তাও আর কাঁদিস না ভাই। তোদের চোখে পানি দেখলে আমার খুব কষ্ট হয় সোনা।(মেঘের গালে হাত রেখে)

মেঘঃ দাভাই আমি আর কাঁদবো না।প্রমিস আমি বউমনির সব কথা শুনবো।

রোদঃ আমি জানি তো আমার ভাই সব চেয়ে বেস্ট (আদর দিয়ে)

মেঘঃ তুমিও বেস্ট দাভাই (আদর দিয়ে)

তারপর আবার দুইভাই হাঁটতে শুরু করলো!রোদ আর মেঘ মুখে যাই বলুক বাবা মাকে কি এত সহজে ভোলা যায়।রোদ মেঘকে বোঝাচ্ছে কিন্তু রোদের যে বুক ফেটে যাচ্ছে এটা কেউ দেখতে পাচ্ছে না।মেঘ ছোট তাই বুঝতে পারছেনা! কিন্তু রোদ তো জানে যে ওদের মাথার উপর থেকে সবচেয়ে নিরাপদ ছায়া টা চিরকালের জন্য সরে গেছে।এই নিষ্ঠুর পৃথিবীতে ওদেরকে এখন লড়াই করে বাঁচতে শিখতে হবে।রোদ মেঘের জন্য নিজেকে শক্ত রাখার চেষ্টা করছে কিন্তু মনের ভেতরে যে তুফান উঠেছে সেটা থামাতে ব্যর্থ হচ্ছে রোদ।

হঠাৎ মেঘ রোদের হাত ছেড়ে দৌড়ে চলে গেল!সামনে একটা বকুল ফুলের গাছ দেখে।গাছের নিচে অনেক গুলো বকুল ফুল পড়ে আছে।মেঘ মাটিতে হাঁটু ভাজ করে বসে আর ওর ছোটো ছোটো হাতে বকুল ফুল কুড়াতে শুরু করে।মেঘ বকুল ফুল গুলো কুড়িয়ে মেঘের পান্জাবীর ছোট পকেটে রাখলো।কিন্তু ফুল গুলো নষ্ট হয়ে যাবে ভেবে মেঘ আবার পকেট থেকে ফুল গুলো বের করে!আর মাথার টুপি খুলে টুপির ভিতর ফুল গুলো রাখলো।

শুভ্র চওড়া টুপির ভেতর বকুল ফুল গুলো অসম্ভব সুন্দর দেখাচ্ছিলো!মেঘ টুপিতে রাখা ফুল গুলোর দিকে একবার তাকিয়ে প্রান জুড়ানো একটা হাসি দিলো!যে হাসির দাম কোটি টাকা দিয়েও কিনে নেওয়া সম্ভব নয়!রোদেরও মন জুড়িয়ে গেল মেঘের হাসি দেখে।রোদ এগিয়ে এসে মেঘের পাশে এসে দাঁড়ালো আর মেঘ মনোযোগ দিয়ে আর কিছু ফুল কুড়াতে ব্যস্ত হয়ে গেল !মেঘ স্বযত্নে ফুল গুলো তুলে ওর টুপিতে রাখছে! মেঘের এই ভাবে ফুল কুড়ানোর প্রধান কারন মেঘ আলোকে ফুল গুলো উপহার হিসেবে দিবে তাই।আর এটা আলোর কাছে পবিএ একটা মনের,পবিএ একটা বন্ধনের, পবিএ ভালবাসায় মুড়ানো একটা উপহার হিসেবে অখ্যায়িত হয়ে রবে…..!!

To be continue….!!

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here