#এলোকেশী_কন্যা২__
#written_by_Nurzahan_akter_Allo
#part_59
🍁🍁
জাজদের কথা অনুযায়ী আলো ৯৯৬ নম্বর আর শাহরিয়ার ৯৯৮ পেয়েছে!আর রেজাল্ট অনুযায়ী শাহরিয়ার দুই নাম্বার বেশি পেয়েছে।আর এই রেজাল্ট অনুযায়ী শাহরিয়ার প্রথম স্থানে আছে।
–
আলো নিশ্চিুপ হয়ে মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে!রোদ চোখে পানি ছলছল করছে এই বুঝি গড়িয়ে পড়বে।মেঘ তো ফুঁপিয়ে ফুঁপিয়ে কেঁদে যাচ্ছে।
জাজদের মধ্যে একজন মাইক্রোফোনটা হাতে নিয়ে বললো…!!
–শাহরিয়ার পেয়েছে ৯৯৮ আর আলো পেয়েছে ৯৯৬ এখানে এগিয়ে আছে শাহরিয়ার। তবে এটা ছিলো এখনকার পরীক্ষায়। এখানে তিন ধাপে বিজয়ী পরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম আমরা আর সেটা হলো!
১.ওনাদের তৈরী করা কাজের উপর নির্ভর করে
২. এখানে ড্রেস তৈরী পরীক্ষা
৩.আমাদের হাতে কিছু মার্ক(এস.বি.এ) যেটা আমরা কাজ,ব্যবহার,উপস্থিত বুদ্ধি এসব দেখে বিচার করে দিবো।(ম্যাম)
–আর সেই তিনটি ধাপের রেজাল্ট হিসেবে শাহরিয়ার পেয়েছে..
১.হাতের কাজে- ৭৫০/৯০০
২.ড্রেস তৈরী – ৯৯৮/১০০০
৩.জাজদের মতে- ৮৫/১০০
___________________________(২০০০ এর মধ্যে)
মোট পেয়েছে ১৯২৯
–আর আলো মোট পেয়েছে…
.হাতের কাজে- ৮৬৯/৯০০
২.ড্রেস তৈরী – ৯৯৬ /১০০০
৩.জাজদের মতে- ৯৫/১০০
___________________________(২০০০ এর মধ্যে) মোট পেয়েছে ১৯৬০
— আর এই পূর্ণ নাম্বার অনুযায়ী আজকে বেস্ট ডিজাইনার হিসেবে জয়ী হলো ” আতকিয়া ইবনাত আলো) (জোরে চিৎকার করে)
জাজরা এটা ঘোষণা করার সাথে সাথে চারদিকে হৈহুল্লোড় বেড়ে গেল।রোদ আর মেঘ দুইভাই অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে।আলো ওখানে হাঁটু গেড়ে দুই হাত তুলে আল্লাহর কাছে শুকরিয়া জানায়।বার বার ভাগ্য সবাইকে ঠকায় না এটা আবার প্রমান হলো।একজন জাজ আলোকে উদ্দেশ্য বললে…!!
–আলো তোমার প্রাণপাখি দুটোর সাথে আমাদের পরিচয় করিয়ে দিবে না।(ম্যাম মুচকি হেসে)
–হুম! (চোখ মুছে)
–আলোর প্রাণপাখি গুলো প্লিজ স্টেজে আসুন।এখানে আসার জন্য আপনাদের অনুরোধ জানাচ্ছি (এ্যাংকারিং করা ছেলেটি)
রোদ মেঘের মুখ মুছিয়ে নিজের মুখটাও মুছে নিলো!তারপর উঠে দাড়িয়ে স্টেজে গেল।রোদ আর মেঘকে দেখে জাজ রা অবাক হলো কারন জাজরা মেঘ আর রোদকে মডেল ভেবেছিলো। রোদ আর মেঘ গিয়ে দাঁড়ালো। মেঘ ছুটে গিয়ে আলো গলা জড়িয়ে ধরে চোখ মুছে দিয়ে এত এত আদর দিয়ে দিলো।রোদ আলোকে তুলে ওর পাশে দাড় করিয়ে চোখ মুছে দিলো! একজন ম্যাম বলে উঠলো..!!
–এনারা তোমার প্রাণপাখি??
–হুমম(আলো)
–তোমাদের একে অপরের প্রতি এত টান দেখে খুশি হলাম।এই যুগে একজন আরেকজন সাপোর্ট করার মানুষেরও বড্ড অভাব।এই যে জুনিয়র মডেল আপনি খুশি তো??
–হুমম আমি তো অনেক খুশি।আমার বউমনি বেস্ট এটা আবার প্রমান করে দিলো(অনেক খুশি)
–বউমনি মানে??(স্যার)
–হুমম তো এটা আমার বউমনি আলো!আমি মেঘ মেহবুব আর ওটা আমার দাভাই রোদ মেহবুব
–এটা আপনার ছেলে না (ম্যম অবাক হয়ে)
–মেঘ আমার ছেলে,আমার দেবর,আমার প্রাণপাখি সবই বলতে পারেন।(আলো মুচকি হেসে)
–আপনাদের বন্ডিং টা মনে রাখার মত।আর রোদ মেহবুব আপনি কিছু বলুন।(স্যার)
–আসসালামু আলাইকুম! আমি কি বলবো বুঝতে পারছি না।তবে এটা আবার প্রমান হলো যে,সৎ,পরিশ্রমী, আল্লাহ তাদের খালি হাতে ফেরায় না।(মুচকি হেসে)
–রোদ মেহবুব আপনি ঠিক বলেছেন।তবে আপনি কি প্রফেশনাল মডেল??আপনার এটিটিউড আমাকে মুগ্ধ করেছে। আমি ভেবেছিলাম প্রোগ্রামের পর আপনার খোঁজ নিয়ে মিট করবো।তবে ব্যাড লাক আপনি মেরিড!আফসোস (মুখটা গোমড়া করে)
— হা হা হা (সবাই একসাথে)
তারপর জাজরা আলোর হাতে বেস্ট ডিজানার এর এ্যাওয়ার্ডটা তুলে দিলো।আলো মুচকি হেসে এ্যাওয়ার্ডটা রোদ আর মেঘের হাত তুলে দিলো।আলোর কষ্ট স্বার্থক।আলো পেরেছে রোদ আর মেঘের আবদার রাখতে।জাজরা আলোকে চেক তুলে দিলো!আর ৩ বছর আলো ওনাদের সাথে কাজ করার সুযোগ পেলো!সাথে নিজস্ব একটা গাড়িও উপহার হিসেবে পেলো।তারপর প্রোগ্রাম শেষ হলো আলো শাহরিয়ার সহ সবার সাথে কথা বললো।সাফিনের সাথেও কথা বললো। এরপর এদিকের ল্যাটা চুকিয়ে বাসার উদ্দেশ্যে বেরিয়ে পড়লো….!!
মেঘের খুশি দেখে কে আশেপাশে সবাই আলোর সাথে দেখা করতে এসেছে।আর মেঘ বুক ফুলিয়ে হাজারটা কথার বুলি ছুড়ছে।বাসার থেকে লোকজন চলে গেলে রোদ খাবার নিয়ে রুমে গেল। আলো বেডে বসে আছে চুপটি করে।রোদ আলোর পাশে বসতেই আলোকে ঝাপিয়ে পড়লো রোদের বুকে।তারপর রোদের গলায় মুখ লুকিয়ে হাউমাউ করে কেঁদে দিলো। এই শান্তি জায়গায় মুখ লুকানোর জন্য আলো এতক্ষণে উশখুশ করছিলো।আলো কাঁদছে আর কি বলছে সেটা রোদের কাছে অস্পষ্ট।রোদ মাথায় বুলিয়ে, কপালে আদর দিয়ে চোখের পানি দুই আঙ্গুল দিয়ে মুছে দিলো।তারপর আলোর চোখ রেখে বললো…!!
–কাঁদছো কেন পাগলী??
–আমি তো ভেবেছিলাম আমি হেরে গেছি।হেরে গেলে আমি মুখ দেখাতে পারতাম না তোমাদের।
–চুপ! আর একটা কথাও না!জানো না যে, শেষ ভাল যার সব ভাল তার তাই না।এখন কান্নাকাটি বন্ধ করে।আর তখন পড়ে গিয়েছিলো বেশি কি ব্যাথা পেয়েছিলে?.এখন কি বেশি ব্যাথা করছে??ডাঃ এর কাছে যাবে।(পাগলের মত উত্তেজিত হয়ে)
–উহুমম।আমি একদম ঠিক ঠিক আছি।
–সত্যি তো!(আলোর কপালে আদর দিয়ে)
–হুমম।
–আমি ভয় পেয়েছিলাম।আল্লাহর কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া আল্লাহ আমাদের সহায় ছিলো।আমার জানটার চোখের পানির মূল্য দিয়েছে।কাঁদছিলে কেন তখন জানোনা তোমার চোখের পানি আমার বুকের তোলপাড় শুরু করে।আর কাঁদবে না..!!
–হুম(মুচকি হেসে)
তারপর রোদ আর কিছু না বলে আলোকে আবার বাহুডোরে জড়িয়ে নেই।কিছুক্ষণ দুইজনকে শক্ত করে জড়িয়ে ধরে একে অন্যের দমিয়ে রাখা অনুভূতিটা এখন আদানপ্রদান করছে।আর আলো যখন পড়ে গিয়েছিলো রোদের বুকের ভেতরটাতে তখন কি হয়েছিলো সেটা রোদই জানে।রোদ আলোকে খাইয়ে দিয়ে শুইয়ে দিলো।কারন এখন আলোর বিশ্রামের প্রয়োজন।টানা তিন ঘন্টা বসে কাজ করলো,এত মানসিক চাপ,কান্নাকাটি এতে আলোও টায়ার্ড।
আর আলোও এখন কোন কথা বলতে নারাজ কারন আলো এখন রোদের বুকে মাথা রেখে প্রশান্তি নামক জিনিসটিকে লুফে নিতে ব্যস্ত।কারন আলোর মতে শুধু মাত্র আলোর জন্যই রোদের বুকটাই হচ্ছে সবচেয়ে নিরাপদ স্থান।যেখানে শুধু আলোর বসবাস। এখানে অন্য কারো জায়গা নেই এখানে শুধু আলোর একাই রাজত্ব…!!
To be continue…!!
(আজকের পার্ট পড়ে আপনাদের কেমন ফিল হচ্ছে জানাবেন তাহলে আমি খুশি হবো..!! )