#স্পর্শানুভূতি
#writer_Nurzahan_Akter_Allo
#part_15
🍁🍁
রাসেলঃমুহিতের সাথে আমার কথা বলতেই হবে!এভাবে আমি থাকতে পারছি না।আমি মিষ্টুর প্রতি মারাত্মক ভাবে দূবল হয়ে পড়ছি…মুহিত ফিরলেই আমি মুহিতের সাথে কথা বলবো।ওকে আমি বলবো যে আমি মিষ্টুকে খুব ভালবেসে ফেলেছি…
–
মিষ্টু বিছানাতে শুয়ে শুয়ে রাসেলের করা আজকে কাজগুলো ভাবছে!মিষ্টু ভেবে পাচ্ছে না রাসেলের কফির মগ আর নুপূর পড়িয়ে দেওয়ার ব্যাপারটা!মিষ্টুর মনে মনে অন্য কিছুর ভয় পাচ্ছে। কারন রাসেলের মনে মিষ্টুর জন্য কোন অনুভুতি জন্ম হোক এটা মিষ্টু চাই না।কারন এমন কিছু হয়ে থাকলে মুহিত আর রাসেল এত ভাল বন্ধুত টা নষ্ট হয়ে যেতে পারে।মিষ্টু মনে মনে ভাবে রাসেলকে এবার থেকে ইগনোর করে চলতে হবে।এটাই ভালো হবে।
–
পরেরদিন সকাল বেলা…
রাসেল ঘুম থেকে উঠে নামাজ পড়ে নেয় তারপর একটু হাটতে বের হয়।কারন সকালে হাটলে শরীর মন দুটোই ফ্রেশ হয়ে যায়। রাসেল বেশকিছু সময় একা একা হাটলো!তারপর বাসায় ঢুকতেই দেখে মিষ্টু কুট্টুশকে ঘাস খাওয়াচেছ!রাসেল মিষ্টুর দিকে যাওয়ার জন্য এক কদম এগোতেই মিষ্টু কুট্টুশকে কোলে নিয়ে বাসার মধ্যে ঢুকে গেল।রাসেল অবাক হয়ে মিষ্টুর চলে যাওয়া দেখছে!তারপর রাসেলও বাসায় ঢুকে ফ্রেশ হয়ে নিল।মিষ্টুর আম্মু ব্রেকফাস্টের জন্য রাসেলকে ডাকলো!রাসেলও গেল..
–
রাসেল গিয়ে দেখে দেখে মিষ্টু বসে বসে পরোটা আর মাংস খাচ্ছে খুব তৃপ্তি করে।রাসেলও ডায়নিং টেবিলের চেয়ার টেনে বসে!মিষ্টুর আম্মু রাসেলকেও খেতে দিয়ে নিজেও খেতে বসে!রাসেল মিষ্টুকে কিছু জিজ্ঞাসা করলে হুম আর না এসব বলেই উওর দিচ্ছে। রাসেল বুঝতে পারছে না মিষ্টু ওকে ইগনোর করছে!কিন্ত কেন এটাই বুঝতে পারছে না?মিষ্টু খেয়ে তারাতারি উঠে চলে যায়!রাসেলও কোন রকম খেয়ে চলে যায়। মিষ্টু ওর আম্মুকে বলে কলেজে চলে যায়!
–
মিষ্টুর বেস্টু মিতু আজ কলেজে এসেছে!মিতু এতদিন ওর নানু বাসায় বেড়াতে গিয়েছিলো আজ কলেজে এসেছে।মিষ্টু মিতুকে দেখে কয়েক দফা বকা দিয়ে ক্লাসে চলে গেল।রাসেল মিষ্টুকে দেখতে না পেয়ে আমতা আমতা করে মিষ্টুর আম্মুকে জিজ্ঞাসা করে জানতে পারলো মিষ্টু কলেজে চলে গেছে। এতে রাসেলের মনটা খারাপ হয়ে গেল।কারন আজকে সারাদিন রাসেলের সাথে মিষ্টু বেড়ানোর কথা ছিলো।রাসের ওর রুমে চলে গেল আর বসে বসে ভাবছে মিষ্টুর কি হলো হঠাৎ করে…
–
রাসেলঃ মিষ্টু প্লিজ এভাবে আমাকে ইগনোর করো না!আমি সহ্য করতে পারবো না।তুমি আজকে সকাল থেকে একবারোও আমার সাথে ভালো করে কথা বলো নি।তোমার এভাবে আমাকে ইগনোর করাতে সত্যি আমার খুব কষ্ট দিচ্ছে মিষ্টু!ভালবাসার মানুষটার থেকে অবহেলা বা ইগনোর এই দুটো জিনিস যে সহ্য করা যায় না ।😥
–
মুহিতের আজকে রাতে আসার কথা ছিলো!বাট কাজ শেষ হয়ে যাওয়ার কারনে সকালে ফ্ল্যাইটে চলে এসেছে। যদিও কাউকে বলে নি ওর আসার কথা একবার অফিস ঘুরে একেবারে বাসায় ফিরবে তাই।
–
মিষ্টু কলেজ থেকে এসে দেখে রাসেল ড্রয়িংরুমে বসে তখন টিভি দেখছিলো।মিষ্টুকে দেখে রাসেল একটা হাসি দিলো বাট মিষ্টু রাসেলের পাশ কাটিয়ে চলে গেল।তার কিছুক্ষন পরে মুহিতও আসলো!মুহিত সবার সাথে কথা বলে ফ্রেশ হয়ে নিলো তারপর সবাই একসাথে খেতে বসলো।মিষ্টু মুহিতের সাথে খুব হাসাহাসি করছে বাট রাসেল কিছু বললে হ্যা /না বলে উওর দিচ্ছে। ওরা খেয়ে যে যার রুমে চলে গেল।
–
বিকাল ৫টার দিকে মুহিত আর রাসেল একসাথে বের হলো।মুহিতের পাড়ার কিছু বন্ধুদের সাথে রাসেলের পরিচয় করিয়ে দিলো!মুহিতের বন্ধুদের মাঝে ছিলো জয়,শুভ্র আর আয়ান!রাসেলও খুব মিশুক ছিলো এজন্য ওদের সাথে মিশতে সময় লাগলো না!সবার সাথে খুব অল্প সময়েই ভাল একটা সম্পর্ক হয়ে গেল!সব বন্ধুরা মিলে একটা ক্যামপাসে বেড়াতে গেল!আর শহীদ মিনার সহ বেশ কিছু জায়গা দেখালো রাসেলকে।তারপর সাবাশ বাংলার মাঠে গিয়ে সবাই ঘাসের উপর বসে পড়লো।
এর মধ্য জয় রাসেলের কাঁধ চাপড়ে বললো..
–
জয়ঃরাসেল বললি না তো ভাই ইয়ে টিয়ে আছে কি না?
রাসেলঃহা হা হা! না ইয়ে টিয়ে এখনো জুটে নি।
শুভ্রঃঢপ কম মারো ভাই!এসব ঢপ আমরা গিলবো না।তারপর দেখাও আমার ভাবি কে?
রাসেলঃ সত্যি বলছি কেউ নেই!এসব প্যারা সহ্য করতে পারবো না তাই এসব নিয়ে ভাবি নি।
(কেউ তো আছেই আমার মনের কোঠরে! বাট না পেরেছি তাকে বলতে না পেরেছি তাকে ভালবাসার অনুভূতি গুলো বোঝাতে।মনে মনে)
আয়ানঃএত সুদর্শন একটা ছেলের নাকি জিএফ নাই!ভাই সত্যি মানতে পারছি না।
মুহিতঃমানতে পারছিনস না তো।এককাজ কর তোর টাই ওরে দিয়ে দে !(আয়ানের দিকে তাকিয়ে)
রাসেলঃতারমানে আয়ানের কেউ আছে নাকি!তা কে সে শুনি..হা হা হা
আয়ানঃহুমম আমার একজন আছে!নাম হচ্ছে নাবিলা জান্নাত!পাগলিটাকে বড্ড বেশি ভালবাসি।খুব শান্ত টাইপের মেয়ে আর আমি ছাড়া কিছু বোঝে না। (মুছকি হেসে)
রাসেলঃবাহ্ দারুন তো।দোয়া করি সারাজীবন যাতে একসাথে থাকতে পারিস।
আয়ানঃহুমম
মুহিতঃ জীবনে বউ পাগলা ছেলে দেখছি বাট জিএফ পাগলা ছেলে আয়ানকে না দেখলে বুঝতাম না।হাহা হা
রাসেলঃহা হা হা তাই নাকি
জয়ঃআয়ান তুই শুধু বিয়েটা কর!তারপর আমাদের কাজ আমরা বুঝে নিবে (দুষ্টু হেসে)
শুভ্রঃবিয়ে করবে আয়ান সেটা ঠিক আছে!বাট তুই কি কাজ করবি এখানে?🙄
মুহিতঃওর মাথাতে নিশ্চয়ই কোন শয়তানি বুদ্ধি উদয় হয়েছে।ওর মুখ দেখেই বোঝা যাচ্ছে হা হা হা হা
রাসেলঃহুমম আমিও এটাই বলতে চাচ্ছিলাম।
জয়ঃদেখ ভাই আমার একটা কথা শোন!(আয়ানের সামনে এসে)
আয়ানঃবল শুনি! তবে নাবিলাকে নিয়ে শয়তানি কথা বললে আজ তোরে ভর্তা বানামু শালা।ওরে কিছু কিছু বলবি না..
জয়ঃআরে ধুর!আমি একদমই শয়তানির কথা বলবো না।শুধু এটাই মনে করিয়ে দিবো যে.…তোর বউ আমার বউ আর আমার বউ তোর বোন। (বলেই দৌড় দিসে)
–
জয় দৌড় দেওয়ার আগেই সবাই জয়কে ধরে উরাধুরা মারতে শুরু করলো।জয় বেচারা মার খেয়ে খোড়াতে খোড়াতে মুহিতের সামনে গিয়ে বললো।
জয়ঃভাই একটা এনার্জি ড্রিংক কিনে দে তো!ওই শালা আয়ান আর শুভ্রর মার খেয়ে আমার সব এনার্জি শেষ।
মুহিতঃহা হা হা বেশ করছে। ওরে বউকে নিয়ে টানলে তো মার খাবেই।
আয়ানঃআর একদিন এসব বললে তোর খবর আছে।তোর ইফটিজিংয়ের কেসে ফাসিয়ে দিবো।
রাসেলঃথাক ভাই ছেড়ে দে!একদিনে বেশি ডোজ সহ্য করতে পারবে না। হা হা হা
মুহিতঃদাড়া আমি তোর এনার্জি ড্রিংকস নিয়ে আসি।আর কারো কিছু লাগবে?
শুভ্রঃআমরা ভদ্র বাচ্চা আমরা সিগারেট খায় না!তাই কয়েক প্রকারে চকলেট আর চিপ্স আনিস।
জয়ঃআর আয়ানের জন্য একটা ফিডার আনিস ভাই।ও তো বাচ্চা ওরে খাইয়ে বড় করলে তো বেচারা বিয়ে করতে পারবে।আমাদেরও তো একটা দায়িত্ব আছে তাই না।
শুভ্রঃহুমম তাও ঠিক হা হা হা
আয়ানঃশালা তোদের উপর ঠাডা পড়ে না ক্যারে।
সবাই একসাথেঃহা হা হা করে হাসতে শুরু করলো
–
মুহিত সবার জন্য কিছু এনার্জি ড্রিংকস কিনে আনলো।সবাই অনেক সময় ধরে আরো আড্ডা দিলো।রাসেল সবার ফেবু আইডি সহ নাম্বার নিয়ে নিলো!সেই ছোট থেকেই মুহিতের সাথে আয়ান, জয়,আর শুভ্র একসাথে বড় হয়ে ওঠা একথায় সবাই মুহিতের কাছে বন্ধু। সবাই মিলে আড্ডা দিচ্ছিলো এর মধ্যে রাসেলের ফোন বেজে ওঠে!রাসেলর বাবা ফোন দিচ্ছিলো এজন্য একটু সাইডে চলে গেলো।
–
রাসেল ওর বাবাকে সালাম দিলে কথা বললো আর বাসার সবার খোঁজ নিলো।রাসেলের বাবা জানালো রাসলেকে ঢাকায় ফেরার জন্য! জুরুরী একটা মিটিংয়ে এটেন্ড করার জন্য। রাসেল কথা বলা শেষ করলো।
–
।মিষ্টুকে ছেড়ে যাওয়ার কথা ভাবতেই রাসেলে দম বন্ধ হবার উপক্রম। রাসেল দিন দিন কেন জানি মিষ্টুর প্রতি খুব দূবল হয়ে পড়ছে!তার উপরে মিষ্টুর ইগনোরটা রাসেলটা কিছুতেই মেনে নিতে পারছে না।ওর মনে কেমন একটা অশান্তি অশান্তি ভাব কাজ করছে।এক দন্ড শান্তিতে থাকতে পারছে না বিশেষ করে আজকে সকাল থেকে মিষ্টুর এভাবে ইগনোর করার পর থেকে।রাসেল মন খারাপ টা চেপে রেখে আবার আড্ডা যোগ দিলো।
–
রাত প্রায় ১১ টার দিকে মুহিত আর রাসেল বাসায় ঢুকলো।রাসেল আশে পাশে তাকিয়ে মিষ্টুকে খুজলো বাট পেলো না।ডিনারের সময় মিষ্টু খেতে আসে নি ওর নাকি খেতে ভালো লাগছে না তাই! না খেয়েই শুয়ে পড়ছে।মুহিত নিজে গিয়ে মিষ্টুকে খাইয়ে দিয়ে আসে! রাসেলও ইচ্ছে করছিলো মিষ্টুকে একটা বার দেখে আসার জন্য বাট সব ইচ্ছে যে পূরণ করা যায় না।বাকিরা ডিনার সেরে নেয়…
–
পরের দিন সকালে বেলা ব্রেকফাস্ট টেবিলে রাসেল সবাই উদেশ্য করে একটা কথা বলে।আর রাসেলের হুট করে এমন কথা বলাতে মিষ্টু সহ সবাই রাসেলের দিকে ঘুরে তাকায়…..
চলবে..