#স্পর্শানুভূতি
#writer_Nurzahan_Akter_Allo
#part_17
🍁🍁
ছেলেটিঃএই যে ম্যম ২৪/৩ এই বাসা কোন দিকে।বলতে পারবে…
মিষ্টুঃআপনি একটু পর যেই বাসা খুজে পাবেন! আর যেই বাসায় আমি ঢুকে বসবেন একটু পর ওটাই ২৪/৩ নং বাসা।
ছেলেটিঃএই মেয়ে তুমি এত ঝগড়াটে কেন?ভালো করে বললে কি সমস্যা হতো তোমার?
মিষ্টুঃঝাগড়াটের মুহূর্তে আমার জন্ম এজন্য ঝগড়া না করলে আমি শান্তি পায় না।আর এখন আমার কানের মাথা খাবেন না তো রাস্তা মাপুন।
ছেলেটিঃআজিব তো!
রিকশাওয়ালাঃস্যার আপনে হাতের বামে যে রাস্তা আছে ওই রাস্তা দিয়া গেলে একটা মোড় পাবেন।আর এই মোড়ের পাশে দিয়া ডানে গিয়ে বামে তাকালেই এই বাসাটা পাবেন।
ছেলেটিঃ ধন্যবাদ মামা!
রিকশাওয়ালাঃআমারে ধন্যবাদ দিতে হইবো না স্যার।
মিষ্টুঃএবার সামনে থেকে সরুন তো ছাতার মাথা।(দাঁতে দাঁত চেপে)
ছেলেটিঃএই যে মিসঃঝগড়াটে আপনার নাম কি জানতে পারি?
মিষ্টুঃফাজিল পোলা তোরে সামনে থেকে সরতে বলছিনা না!বানর,, নাইজেরিয়ার রাম ছাগল,কালা হনুমান একটা।বেশি কথা আমি পছন্দ করি না।আর এসব হাগল -পাগল এসে কে জানিনা আমার সামনেই পড়ে।
ছেলেটিঃআম,, আ
মিষ্টুঃচুপ একদম চুপ! আর একটা কথা বললে পাশে রাখা বালি তোর মুখে ঢুকিয়ে দিবো। তাড়াতাড়ি আমার মুখের সামনে থেকে সর। যত্তসব আবালের দল…
ছেলেটি: যা ব্বাবা কি এমন বললাম? এত রেগে যাচ্ছ কেন? যাইহোক তাহলে তোমার নামটা কি বলো?
মিষ্টু: বেদেনাসশরী আমার নাম( দাঁতে দাঁত চেপে)
–
রিক্সাওয়ালা ঝগড়া করা দেখে উনি মিষ্টুকে উঠতে বললো আর উনি রিকশা চালাতে শুরু করলো! আর মিষ্টু ছেলেটির গুষ্টি উদ্ধার করতে ব্যাস্ত হয়ে পরলো। মিতু ওর মেসের সামনে গিয়ে নেমে পড়লো আর মিষ্ঠু ওর বাসায় চলে গেল। মিষ্টু বাসায় গিয়ে শাওয়ার নিয়ে লাঞ্চ করতে গেল! মুহিত প্রতিদিন মিষ্টুর জন্য লাঞ্চ করতে বাসায় আসে। মিষ্টু গিয়ে মুহিতের সামনের চেয়ারে বসল! তারপর ওর আম্মু খাবার বেড়ে যাওয়াতে দুজনে খেতে শুরু করল। মিষ্ঠুর হুট করে চোখ গেল মুহিতের পাশের চেয়ারটায়! কারণ কালকেও তো সময়টায় রাসেল ওদের সাথে লাঞ্চ করছিল বাট আজকে নাই। কেন জানি মিষ্টু মনটা খারাপ হয়ে গেল! তারপর লাঞ্চ সেরে যে যার রুমে চলে গেল।
–
মিষ্টু রাসেলের দেওয়া চুরি গুলো পড়লো একে একে। রাসেলের কথা কেন জানি আজকে বার বার মনে হচ্ছে!মিষ্টুর সময় কাটছে না দেখে মুহিতের কাছে গিয়ে দেখলে মুহিত কিছুর একটা ফাইল দেখছিলো।মিষ্টু চুপি চুপি গিয়ে মুহিতকে হাও করে উঠলো তার মুহিত চমকে উঠে মিষ্টুর কান ধরে মিষ্টুকে বলছে…
–
মুহিতঃকি রে দুষ্টু মেয়ে?আমাকে এভাবে ভয়ে দেখালি কেন?
মিষ্টুঃখুশিতে ঠেলায় আর কি!ভাইয়া তোমার জন্য একটা গুড নিউড আছে..
মুহিতঃতা শুনি তো কি গুড নিউজ?
মিষ্টুঃআজকে একটা মেয়ে দেখছি ভাইয়া! একবারে পুরাই জখাম দেখতে।পরী ফেল পুরাই পরীর মায়ের মত দেখতে।আমি এমনই একটা ভাবি চাই।😊
মুহিতঃতা কেমন দেখতে শুনি সেই পরীটাকে দেখতে!আমাকে বলতো।আর বোনের চয়েজ বলে কথা!😊
মিষ্টুঃওই ভাবিটার ওজন ৭০ কেজি হবেই!অনেক ফর্সা, চুল গুলো অনেকটা ঝাটু পাগলির মত। আর সব সময় খেতেই থাকে এককথা পেটুকের বড় খালা।আর একটা আনকমন ব্যাপার হচ্ছে সারাবছর উনার কাছে সর্দি থাকে! আর একটু হালকা ট্যারা,,, তবে অনেক কিউট দেখতে।তোমাকে অনেক ভালবাসবে….
( আমার সব পাঠকেরও এমন বউ চাই! আমার সব পাঠকরা এমন বউ পেয়ে অনেক খুশি থাকুক।এটাই দোয়া করি)
মুহিতঃ মিষ্টুওওওওওওওওও ফাজিল মেয়ে। দাড়া আজ তোর হচ্ছে।
মিষ্টুঃধরতে পারবে না ভাইয়া! তবে আমার ওই মেয়েটাকেই ভাবি বানাবো।(দৌড়াতে দৌড়াতে)
মিষ্টু ওর রুমে গিয়ে দরজা আটকে দিয়ে হাসতে শুরু করলো।
–
প্রায় ১৫ দিন পর…
ওদিকে রাসেলও ওর কাজ আর মিষ্টুকে নিয়ে ভাবতে ভাবতেই সময় পার করে।আজকাল মিষ্টু রাসেলকে বড্ড মিস করে!মিষ্টু মাঝে মাঝে রাসেলের ফ্ল্যাটে যায় ঝাড়ু দেয় গোছানো জিনিস গুলো আবার গোছায় আর একা একা বকবক করে কিছু সময়! তারপর আবার চলে আসে।মিষ্টু যতই মুখে না বলুক না কেন রাসেলে অনুপস্থিতিটাই মিষ্টুর মনে একটা জায়গা তৈরী হয়েছে!আর সেটা মিষ্টুর অজান্তেই। রাসেলের প্রতি মিষ্টুর মনে একটা ভাললাগার অনুভুতি সৃষ্টি হয়েছে…
–
ওদিকে রাসেল মিষ্টুর আম্মু কে ফোন দিয়ে খোঁজ খবর নেয় বাট হাজার চেষ্টা করেই মিষ্টুর সাথে কথা বলতে পারে নি।তবে মামনির থেকে মিষ্টুর দুষ্টুমি কথা শুনে ওর মনে শান্তি অনুভব করতো! কারন হাজার হলেও তো ভালবাসার মানুষ। রাসেল মিষ্টুর নাম দিয়ে ফেসবুকে অনেক সার্চ দিয়েছে বাট মিষ্টুর আইডি খুজে পাইনি।রাসেল মুহিতর আইডি তে গিয়ে মুহিতের কয়েকটা পিকে একটা আইডি থেকে দুষ্টুমি করে কমেন্ট দেখে আর রাসেল ওই আইডিতে ঢুকে আর রাসেলের মুখে হাসি ফোটে কারন এটাই তার নিদ্রাকুমারীর আইডি। রাসেল মিষ্টুর টাইমলাইন ঘুরে দেখে বেশ কয়েকদিন আগে একটা পিক আপলোড করা হয়েছে একটা মেয়ে চুরি পড়া হাতের! রাসেলের চুরি গুলো দেখে চিনতে বেশি সময় লাগে নি কারন চুরি গুলো সেদিন রাসেলই কিনে দিয়েছিলো। রাসেল মিষ্টুর আইডি নাম দেখে মুছকি হাসলো কারন আইডির নাম ছিলে….স্পর্শানুভূতি…
–
প্রায় ১ মাস পর…
রাত্রি আর বকুলের বিয়ের দিন এগিয়ে আসে এজন্য মুহিতের চাচা-চাচী মুহিতের সাথে কিছু বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে বসে।আর অনেক গুলো কার্ড বের করে মুহিতের হাতে দেয় যাতে মিষ্টু আর মুহিতের বন্ধু /বানধবীদের বা কাছের কেউ থাকলে ইনভাইট করতে পারে।মিষ্টু কুচো চিংড়ির মত লাফাতে লাফাতে এসে কয়েকটা কার্ড হাতে তুলে নিয়ে নুডলস খেতে খেতে ওর রুমে চলে গেল।আর বড়রা বিয়ে নিয়ে আলোচনা করতে বসলো…
–
আগামী বৃহস্পতিবার রাত্রির বিয়ে ঠিক করা হয়েছে!আর মাত্র তিনদিন বাকি আছে।মিষ্টু ওর রুমে গিয়ে ধপ করে ওর বেডে বসে পড়ে! ওর বুকের ভেতর ধুকপুকানি বেড়ে গেছে কারন মুহিত যে রাসেলকে ইনভাইট করবে এটা সিওর!আবার রাসেলের সাথে দেখা হবে ভাবতেই লজ্জা লাগছে মিষ্টু।
–
তারপর মুহিতের চাচা-চাচী ওদের কথা শেষ করে চলে যায়! আর মুহিত ফোন কথা বলতে বলতে মিষ্টুর রুমে আসে।মুহিতে মিষ্টুর পাশে বসে কথা বলা শুরু করছে!মিষ্টু মুহিতের কথা শুনে বুঝতে পারছে মুহিত এখন রাসেলের সাথে কথা বলছে।মুহিত বেশ কিছুক্ষন কথা বলে ফোন রাখে আর একটা বালিশ নিয়ে মিষ্টুর বেডে শুয়ে আর ইশারায় মিষ্টুকে চুলে টেনে দিতে বলে…
–
মুহিতঃজানিস বোন আমি রাসেলের পার্সনালিটি দেখে মাঝে মাঝে খুব অবাক হয়।যুগ হিসেবে রাসেল যথেষ্ট ভদ্র একটা ছেলে ওর কাছে আমরা কিছুই না।
মিষ্টুঃতাই নাকি?এত পাম মারছো কেন ভাইয়া?
মুহিতঃনা রে বোন পাম না!আমার বন্ধু বলে বলছি না রাসেল যথেষ্ট ভালো একটা ছেলে!আর সেদিনে রাতে তোর জর এসেছিলো না ওইদিন রাতে..
মিষ্টুঃআমার জর কখন এসেছিলো।আর ওই দিন রাতে মানে কি ভাইয়া? (অবাক হয়ে)
মুহিতঃওইদিন রাতে (সব ঘটনা খুলে বললো।)
মিষ্টুঃ এসব কি বলছো ভাইয়া? রাসেল ভাইয়া এসব করছে।(অবাক হয়ে)
মুহিতঃসেদিন রাসেল আমার পারমিশন নিয়েই তোর শরীরে টাচ্ করছে!সেদিন রাসেল আমার মনে আরো বেশি জায়গা দখল করে নিয়েছে।আমি আমার সব বন্ধুকেই খুব ভালবাসি তবে রাসেলকে আমি আমার শরীরের একটা অংশ মনে করি।
মিষ্টুঃহুমম (অবাক হয়ে শুধু শুনছে)
মুহিতঃতবে যে যত সৎ আর ভাল মানুষ হয়!আল্লাহ তার তত বেশি পরীক্ষা নেন। রাসেল যথেষ্ট ভালো মানুষ তবে ওর টাকা পয়সা থেকে শুরু করে কোন কিছুর কমতি নেয় তবে ওর জীবনে কমতি আছে শুধু ভালবাসার।ছেলেটার জীবনে এত কষ্ট পেয়েও দিব্যি সব সময় মুখে হাসি থাকে ওর।ওকে দেখে কেউ বলবে না ওর ভেতরে এত কষ্ট লুকিয়ে আছে।
মিষ্টুঃমানে কি বলছো একটু বুঝিয়ে বলো না!রাসেল ভাইয়ার কিসের কষ্ট?
মুহিতঃ সত্যি বলতে রাসেলের নিজের মা নেয়!রাসেল জীবনে মায়ের ভালবাসা পায় নি….
মিষ্টুঃকি!!!!!!
মুহিতঃ রাসেলের নিজের আম্মু মারা গেছে সেই ছোট থাকতেই!আর এখন যে রাসেলের মা উনিই রাসেলের আপন খালা!ওর আম্মু মারা যাওয়ার পর ওর আব্বু ওর খালাকে বিয়ে করে যাতে রাসেল মায়ের ভালবাসা পায়।বাট ওর ভাগ্য খারাপ ও মায়ের আদর পায়নি সব সময় ওর সৎ মা ওকে দুরে ঠেলে দেয়….তারপরেও রাসেলের কোন অভিযোগ নেই।
চলবে…
( আমি সরি খুব বিজি ছিলাম ভাইয়া ও আপুরা!অপেক্ষা করানোর জন্য সরি😥😥😥)