স্পর্শানুভূতি #writer_Nurzahan_Akter_Allo #part_23 🍁🍁

0
608

#স্পর্শানুভূতি
#writer_Nurzahan_Akter_Allo
#part_23
🍁🍁
রাসেলঃতোর দুষ্টু বোন আমাদের মাইনকার চিপায় ফেলছে ভাই!পালানোর রাস্তা নেই চল শুরু করি।

মিষ্টু আতিফ আসলামের তেরে লিয়ে গান ছেড়ে দিল…রাসেল আর মুহিত দুজন দুজনেরই দিকে তাকিয়ে তারপর ডান্স শুরু করলো।দুইটা দামড়া দামড়া ছেলে ডান্স শুরু করতেই পুরো স্টেজ নড়ে উঠছে…..ওদের দিকে সবাই চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।

তেরে লিয়ে!!!
ভিগি ভিগি পাল কে মেরি উতা তেরে লিয়ে
আকিয়া বিছায়ি ম্যানে তেরে লিয়ে!দুনিয়া ভুলায়িই ম্যান তেরে লিয়ে
জান্নাত সাজিয়্যই ম্যানে তেরে লিয়ে! ছোর দি খুদাইয়ি মেনে তেরে লিয়ে।।
ওহ্ ওহ্ ওহ্ ও ও ও তেরে লিয়ে ও ও ও !
ঝুম দিবানিকি মেরে তেরে লিয়ে
ওয়াদা মেরে ম্যা হু তেরে লিয়ে!হো না কাভি নো নোহি মেরি জুদা
(বাকি গানটা নিজ দায়িত্বে শুনে নিবেন)

হুট করে আয়ান আর শুভ্র রাসেল আর মুহিতকে চিৎকার করে বললো।

আয়ানঃভাই আস্তে নাচ তোদের চুরিদার ফেটে যাবে তো।তখন অনেকেই লজ্জা …

শুভ্রঃ ভাই দারুন ডান্স হচ্ছে! বাট চুরিদার সামলে..ফিটিং চুরিদার খুব রিস্কি কিন্তু…

মুহিত আর রাসেলে ঘুরে ঘুরে নাচছে!গানের সাথে তাল মিলিয়ে। মুহিত নাচতে নাচতে রাসেলের কানে কানে বলছে।

মুহিতঃ দেখছিস এই শালা রা কত হারামি!এত গুলো মেয়ে আছে তার মধ্যে ষাড়ের মত করে চিৎকার করে এসব কি বলছে?

রাসেলঃহুমম!দাড়া আজকে স্টেজ থেকে আগে নামতে দে।এরকম বন্ধু থাকলে বাইরের শুএুদের আর কি দরকার?

রাসেল আর মুহিত কেউ কারো থেকে কম না!দুজনেই গানের সাথে তাল মিলিয়ে ডান্স করছে!সবার চোখ এখন ওদের দিতে দুটো সুদর্শন ছেলে একটা সাথে ডান্স করছে কিছু কিছু মেয়ের চোখ বেরিয়ে যাওয়ার উপক্রম।মিষ্টু রাসেলের ক্যামেরা নিয়ে ওদের ডান্সটা ভিডিও করছে! মিষ্টু মনে করছে রাসেল মনে হয় ডান্স পারে না।কিন্তু মিষ্টুর জানা নেই রাসেল আর মুহিত ওদের কলেজে ডান্স আর গানের জন্য নামকরা ছিলো।রাসেল ডান্স করতে করতেই মিষ্টুর দিকে তাকিয়ে হাসছে বিষেশ করে মিষ্টুর মুখে এক্সপেশন দেখে।

ওরা ডান্স শেষ করে নেমে আসে!দুজনেই ঘেমে একাকার! আর দুজনেই চেয়ারে বসে হাপাতে থাকে ।তারপর সবাই এক সাথে উরাধুরা নাচতে শুরু করলো!রাত প্রায় একটার দিকে ওদের নাচ গান শেষ করে।আর সবাই খেয়ে তারপর শুয়ে পড়ে কারন কালকে তো কাজের শেষ নাই।

পরেরদিন সকালে…
বাড়িতে হৈচৈ আর প্যা পু ভ্য ভুর শব্দে মিষ্টুর ঘুম ভাংলো! হুট করে মিষ্টুর আয়ানাতে চোখ পড়লো।আর আয়নাতে তাকিয়ে দেখে ওর চুল গুলোর অবস্থা খুব খারাপ! মিষ্টু একা একা মাথাতে চিরুনি তল্লাসি করেও চুলের জট ছুটাতে না পেরে ওর আম্মুর কাছে দৌড় দেয়। মিষ্টু একটা মোড়াতে বসে বসে ঘুমাচ্ছে আর ওর আম্মু ওকে বকছে আর চুলের জট ছুটাচেছ আর মাঝে মাঝে মিষ্টুর মাথাতে ঠুয়া মারছে!বেশ কিছু সময় লাগলো চুলের জট ছুটাতে! তার পর ওর আম্মু মিষ্টুর চুল গুলোকে চুলের কাটা দিয়ে বেঁধে দিলো।

সবাই সকালের খাবার খেয়ে নিলো!এত আনন্দ হইচই তারপরেও কেন জানি মনে শান্তি পাচ্ছে না মিষ্টু!মনে হচ্ছে কিছু একটা অঘটন ঘটতে যাচ্ছে! কেমন একটা অশান্তি বিরাজ করছে মনের ভেতর।মিষ্টু একা একা ওর রুমে বেশ কিছু সময় বসে থাকলো তারপর রাত্রির কাছে গেল!রাত্রি মে বি তখন কাঁদছিলো মিষ্টুকে দেখে সাথে সাথে রাত্রি চোখ মুছে নিলো!মিষ্টু বুঝেও না বোঝার ভান করে চেপে গেল কারন এখন কিছু বললে রাত্রি কেদে দিবে।মিষ্টু আর রাত্রির কোলে মাথা দিয়ে শুয়ে পড়লো আর রাত্রি মিষ্টুর মাথাতে হাত বুলিয়ে দিচ্ছে। মিষ্টুর চোখ দিয়ে গাল বেয়ে পানি পড়ছে এটা দেখে রাত্রিও কাঁদতে শুরু করে।

দুইবোন একসাথে বড় হওয়া, দুষ্টুমি করা এখন রাত্রি চলে যাওয়াটা মিষ্টু মেনে নিতে পারছে না।মিষ্টু আর কিছু না বলে রাত্রির কোল থেকে উঠে এক দৌড়ে ওর বাসায় চলে যায়!আর সিড়ি বেয়ে উঠতে রাসেলের সাথে ধাক্কা খায়। রাসেলে সাথে সাথে মিষ্টুকে ধরে ফেলে!রাসেল কিছু বলতে তার আগে মিষ্টুর চোখে পানি দেখে রাসেল থমকে যায় আর কিছু বলতে পারে না।মিষ্টু ওর চোখ মুছতে মুছতে ওর রুমে চলে যায়। রাসেল ও মিষ্টুর পিছু নেয় আর মিষ্টু রুমে গিয়ে নক করে!মিষ্টু চোখ মুছে উঠে বসে!রাসেল মিষ্টুর থেকে দুরত্ব বজায় রেখে বেডে বসে আর মিষ্টুকে জিজ্ঞাসা করে…

রাসেলঃউহুম উহুম! আমি কি কিছু কথা বলতে পারি।
মিষ্টুঃহুমম বলুন!আমি শুনছি

রাসেলঃএভাবে কান্না করার কারণ টা কি আমি জানতে পারি?আজকের দিনে সবাই কত খুশি বাট তুমি এভাবে কাদছো কেন?

মিষ্টুঃএমনিতেই!ভাল লাগছে না তাই।(মাথা নিচু করে)

রাসেলঃনা বলতে চাইলো জোর করবো না!তবে তোমাকে কাঁদতে দেখলে মুহিত তোমার আম্মু রাত্রি তো খুব কষ্ট পাবে।তুমি কি চাও তোমার জন্য কেউ কষ্ট পাক।

মিষ্টুঃনা! আসলে আমার মন ভালো নেই (কাঁদতে কাঁদতে)

রাসেলঃকেন ভালো নেই সেটা জানতে চাইবো না!বাট কান্না করলে কি সেই সমস্যার সমাধান আসবে।
মিষ্টুঃনা

রাসেলঃহুমম তাহলে শুধু শুধু এমন অশ্রু ঝরিয়ে কি লাভ বলো?তোমার কান্না দেখে তো অনেকে আছে তারা আরো দিগুন কষ্ট পাবে।

মিষ্টুঃআপু চলে যাবে তো!আমার এজন্য খুব কষ্ট হচ্ছে! আপু চলে গেলে আমি কার থেকে এক সাপোর্ট পাবো।আমি আপু খুব মিস করবো।

রাসেলঃআরে বোকা মেয়ে এজন্য তুমি কাঁদছো?
মিষ্টুঃহুমম

রাসেলঃএইরকমই তো নিয়ম তৈরী করা হয়েছে যে মেয়েদের তার শশুড়বাড়ি যেতে হবে!আর সেটা হাজার কষ্ট পেলেও।মিষ্টু তুমি যদি কান্না করো তাহলে মিষ্টু কিন্তু আরো ভেঙে পড়বো।প্লিজ কান্না থামাও…

মিষ্টুঃহুমম (চোখ মুছে)


তারপর রাসেল অনেক মিষ্টুকে বোঝানোর পর মিষ্টু কান্না থামিয়ে মুখে পানি দিয়ে আসলো।আর রাসেল নিচে চলে গেল!মিষ্টু রাসেলেকে মনে মনে ধন্যবাদ দিলো আর রাসেলের এমন ভাবে বোঝানোর জন্য খুব খুশি হলো।প্রায় ১১ দিকে রাত্রি সাওয়ার নিয়ে নিলো কারন পার্লার থেকে ওকে সাজাতে আসবে!মিষ্টুও সাওয়ার নিলো তারপর হেয়ার ড্রেয়ার দিয়ে চুল শুকাচেছ আর রাত্রির সাথে বকবক করছে।পার্লার থেকে মেয়েগুলো এসে রাত্রিতে সাজাতে বসলো।আর ৩ ঘন্টা লাগছে রাত্রির সাজ কমপ্লিট করতে…


মিষ্টুও রেডি হয়ে নিলো!আজকে মিষ্টু একটা মিষ্টি কালারের লেহেংগা পড়ছে। চুল ছেড়ে দিসে আর মাঝে সিথি করে একটা টায়রা দিসে! হাতে চুরি গলাতে একটা নেকলেস কানে দুল!চোখে টানা কাজ আর হালকা গোলাপী লিপস্টিক।১ঃ৩০ দিকে বকুল এসে রাত্রিদের বাসায় পৌঁছায়। চারদিকে বর এসেছে শুনে মিষ্টু বর দেখতে যাবে বলে উঠে আর রাত্রি সাথে মিষ্টুর হাত ধরে আবার বসিয়ে দেয় আর রাত্রি মিষ্টুর দিকে অসহায় দৃষ্টিতে তাকিয়ে বললো..


রাত্রিঃবোন তুই আমার কাছে থাক না প্লিজ! আমার খুব ভয় লাগছে।

মিষ্টুঃওমা কেন?তুই ভয় পাচ্ছিস কেন সেটা তো বলবি?
রাত্রিঃআমি জানি না তুই এখানে থাক প্লিজ! আমার ভয় লাগছে।

মিষ্টুঃএখন বাড়িতে এত মানুষে গমগম করছে তাই তোর ভয় লাগছে! বাট আজ রাতে যখন তুই একা ঘরে থাকবি তখন কি করবি?

রাত্রিঃ মিষ্টুওওও (কেঁদে দিয়ে অসহায় দৃষ্টিতে)
মিষ্টুঃওকে ওকে তুই কাঁদিস না!আমি এখানেই তোর সাথে আছি কেমন আপাতত কাপাকাপি বন্ধ করে।ভাইয়ার কাছে গিয়ে কাপাকাপি করিস…

রাত্রিঃতোরও এমন দিন আসবে তখন আমিও মজা নিবো দেখিস।

মিষ্টুঃওকে ডান!
(আপুরে আমার হিরো টা যে কি করছে কে জানে?একবার দেখতেও পারলাম না তাকে কেমন লাগছে দেখতে?কি ড্রেস পড়ছে তাও জানি না?)


ওদিকে রাসেল হন্য হয়ে মিষ্টুকে খুজছে বাট কোথাও নেই মিষ্টু!রাসেলের সাথে সেই সকালের পর থেকে আর দেখা হয় নি প্রায় তিন ঘন্টা রাসেল মিষ্টুতে দেখে নি!রাসেল সহ আরো সব বন্ধুরা বকুলের সাথে কথা বলবো হাগ করলো! আর বড়রা রাত্রিকে এনে বকুলের পাশে বসাতে বললো। রাসেলে বকুলের দিকে তাকিয়ে বকুলের পাশে বসে বললো..

রাসেলঃ কি ব্রো নার্ভাস লাগছে নাকি?
বকুলঃএকটু একটু

রাসেলঃহা হা হা! পানি এনে দেয়!
বকুলঃনা না লাগবে না।

রাসেলঃওকে! যদিও নার্ভাস লাগাটা কমন তারপরেও বলবো আপনি নার্ভাস ফিল করলে!আপনার বউ আরো নার্ভাস ফিল করবে।

বকুলঃহুমম ব্রো তা ঠিক বলছেন।

রাসেল বকুলের সাথে কথা বলে ঘাড় ঘুরাতে সামনে দেখে মিষ্টু আর রাত্রি আসছে!রাসেল সাথে সাথে দাড়িয়ে যায় আর মিষ্টুকে দেখে ওর অজান্তে মুখ ফোসকে বলে ফেলে..অসাধারণ।মুহিত যে রাসেলের পাশেই আছে সেটা রাসেলের খেয়ালই নেই!মুহিত ভ্রু কুচকে রাসেলের দিকে তাকিয়ে বলে..

মুহিতঃকি বললি তুই?

রাসেলঃনা মানে ব ব বলছি ওই বাচ্চাটা কি কিউট তাই বলছি?(একটা বাচ্চাকে দেখিয়ে)

মুহিতঃ ওহহ! এটা বকুলের কাজিনের মেয়ে হ্যা অনেক কিউট বাচ্চাটা।

রাসেলঃওহহ (আল্লাহ তোমার কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া এবারের মত বাঁচিয়ে দিয়েছো।তা না হলে আজকেই মনে হয় আমার শেষ দিন হতো)

রাসেল এখনো হা করে তাকিয়ে আছে!মিষ্টু রাসেলের দিকে একবার তাকায় তার মিষ্টু রাত্রতিকে বকুলের পাশে বাসিয়ে দেয়!মিষ্টু আড়চোখে রাসেলের দিকে তাকিয়ে বলে…..

মিষ্টুঃআরে ব্যাস…….

চলবে..

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here