#বুকের_বা_পাশে 🌿🌿
#written_by_Nurzahan_akter_allo
#Part_32
আজকে প্রিয়মের এমন ভয়ংকর রুপ। আর হিংস্র চেহারাটাই বলে দিচ্ছে,
–” আকাশের পরিণতি খুব খারাপ করে তবেই প্রিয়ম ক্ষান্ত হবে।”
এর মধ্যে আকাশের ফোনের রিংটোন বেজে উঠলো। প্রত্যয় সোফাতে পড়ে থাকা আকাশের ফোনটা হাতে তুলে নিলো।আর ফোনের দিকে তাকাতেই বড়সড়ো একটা ঝাটকা খেলো। কারন আকাশের ফোনে কলের সাথে মিথির ছবি ভেসে উঠেছে। মিথির হাস্যজ্বল ছবিটা উপরে মিথির নাম্বারটা ‘হটি ‘ নামে সেইভ করা।
এদিকে প্রিয়মের যত শক্তি আছে। সব শক্তি দিয়ে প্রিয়ম আকাশকে মারছে। আকাশ প্রানপণ চিৎকার করে যাচ্ছে। কিন্তু কেউ শোনার মতো নেই। কারন মুখ বাঁধা এজন্য ওর আত্মচিৎকার গোঙানিতে পরিনত হচ্ছে। আকাশকে মারতে মারতে প্রিয়মের পুরো শরীর ঘেমে একাকার অবস্থা। আকাশের নাক মুখ দিয়ে রক্ত পড়ছে।আকাশের পুরো শরীর রক্তবর্ণ ধারণ করেছে। আকাশের অবস্থা মোটেও ভালো না।এবার প্রত্যয় এগিয়ে এসে প্রিয়মকে থামালো। প্রত্যয় প্রিয়মকে পানি খাইয়ে সোফাতে বসতে বললো। তারপর প্রত্যয় আকাশের মুখের বাঁধন খুলে বললো,
–“এখনও সময় আছে। সব সত্যিটা বলো। প্রিয়ম তোমাকে কি করবে আমি জানিনা? কিন্তু আমি রেগে গেলে এই পৃথিবীতে তুমি আর টিকে থাকতে পারবেনা।” (প্রত্যয় শান্ত গলায়)
—(সাইলেন্ট)
—“আমাদের বিল্ডিংয়ের নয় তলাতেই তুমি থাকো। এজন্য তুয়ার সব খবর তোমার জানা।আর আমাকে চেনো? আমি কিন্তু এতটাও ভালো না। সো হারি আপ ব্রো।এবার মুখ খুলো।” (প্রত্যয় দাঁতে দাঁত চেপে)
—“আ আ আসলে।”
–“আচ্ছা তুয়ার কাজিন মিথি কে হয় তোমার? এর পেছনে মিথিও কি যুক্ত আছে।” (প্রত্যয়)
–“হুমম!মিথি আমার গফ।” (আকাশ)
–“বাপ রে এখন তো দেখি, ‘কেঁচো খুঁড়তে গিয়ে কেউটে বের হচ্ছে।’ যাই হোক শালিকাকে পরে দেখছি। এবার তুমি আসল কাহিনীটা আগে বলো।” (প্রত্যয়)
—“আমি তুয়াকে খুব পছন্দ করতাম। ওকে আমার খুব ভালো লাগতো। তুয়াকে আমি অনেক বার প্রোপোজও করেছি। কিন্তু তুয়া পাত্তা দেয়নি। আর প্রিয়ম এসব শুনলে কষ্ট পাবে। তাই তুয়া প্রিয়মকে কিছু জানাতো না। এই সুযোগে আমি তুয়াকে আরো বিরক্ত করা শুরু করলাম। আর এজন্য তুয়া একদিন আমাকে থাপ্পড়ও মেরেছিলো। থাপ্পড় খাওয়া পর আমার ইচ্ছে হয়েছিলো। তুয়াকে জাস্ট এক রাতে জন্য হলেও আমার বেডে নিয়ে আসার। সেই রাগ তোলার জন্যই। আমিই তুয়াকে এসব মেসেজ করতাম। ওকে থ্রেট দিতাম। যাতে তুয়া ভয় পেয়ে আমার প্রস্তাবে রাজি হয়। আর মিথিও এজন্য আমাকে সাহায্য করেছে।” (হাঁপাতে হাঁপাতে)
–“মিথির সাথে তোর পরিচয় হলো কিভাবে?” (রিমন)
–“তুয়া প্রিয়মের সাথে মিথির পরিচয় করিয়ে দেওয়ার জন্য একটা রেস্টুরেন্টে মিথিকে এনেছিলো। প্রিয়ম আর তুয়ার অলক্ষ্যে আমি মিথির নাম্বার চেয়ে নেই। আর তারপর থেকে ওর সাথে টুকটাক কথা হতে হতেই ওর সাথে সম্পর্কটা আরো গভীরে চলে যায়।” (আকাশ)
–“তুয়াকে পর্ণ ভিডিও বানানোর অফারটা কি তুমিই দিয়েছিলে?” (প্রত্যয় রাগী সুরে)
–“হুম! আমিই এসব মেসেজ দিতাম ওকে।” (আকাশ)
আকাশের কথাটা বলতে দেরি। কিন্তু আকাশের বুক বরাবর লাথি মারতে প্রিয়মের একটুও দেরী হয় নি। প্রিয়মের লাথি এত জোরে ছিলো। যে আকাশ চেয়ার নিয়েই হুড়মুড় করে পড়ে গেল। রিমন প্রিয়মকে কোনো মতে থামালো। আর আকাশকে টেনে তুললো। প্রত্যয় ওর নিজের ঠোঁট কামড়ে নিজেকে কনট্রোল করলো। প্রত্যয় শান্ত সুরেই আকাশকে বললো,
–“তুমি খুব চালাক এটা মানতেই হবে। প্রিয়মের নামে কেনা সিম দিয়ে খেলাটা শুরু করলে। প্রথমে যাতে প্রিয়মের দিকে আঙ্গুল উঠে। প্রিয়ম যেহেতু রিমনকে সিমটা দিয়েছে। তাই তুমি রিমনের থেকে সিমটা নিলে। নিজেকে হাইড করার জন্য দারুন বুদ্ধি খাটিয়েছো। তুয়ার বোনকে ব্যবহার করে তুয়ার ক্ষতি করতে চেয়েছিলে। দারুন খেলা খেলেছো। এবার বলো তুয়ার পিক নিয়ে যে ভিডিও গুলো বানিয়েছো। সেগুলো কোথায় রেখেছো?”
–“আমার পেনড্রাইভে আর ল্যাপটপে আছে।”
প্রত্যয় রিমনকে ইশারায় বললো আকাশের বাসায় যেতে।আর আকাশের পেনড্রাইভ আর ল্যাপটপ নিয়ে আসতে।রিমনও প্রত্যয়ের কথা অনুযায়ী আকাশের বাসায় গিয়ে ওগুলো আনলো। রিমনকে আকাশের বাসার সবাই চিনে। তাই কেউ কিছু বলেনি। প্রত্যয় নিজে সব পেনড্রাইভ গুলো নষ্ট করে দিলো। আর ল্যাপটপ নিয়ে প্রত্যয় নিজে আকাশের সব পারসোনাল ফাইল গুলোও চেক করলো। হঠাৎ প্রত্যয় ওর মুখটা বিকৃতি করে বললো,
–“কি নোংরা মনের মানুষ রে তুই। এসব কি রেখেছিস তোর ল্যাপটপে? ইয়াক! তোর বাসায় কি ভাই বোন কেউ নেই?
বাকি পর্ণ ভিডিও গুলোর কথা বাদ দিলাম। নিজের জিএফ এর ভিডিওটাও এখানে রেখেছিস। রুমডেট এর প্রমান রেখেছিস তাই না? তুয়াকে বিপদে ফেলতে চেয়েছে মিথি। আর মিথির জন্য আকাশের তৈরী বাঁশ ল্যাপটপে রেডি। দারুন ইন্টারেসটিং ব্যাপার তো। এজন্যই বুঝি কে বিবাহিত আর কে অবিবাহিত শরীর দেখেই মিথি বলে দিতে পারে। তবে তোরা আসলেই অস্কার পাওয়ার মতো শয়তান। এটা মানতেই হবে। ল্যাপটপ যেমন ডাস্টবিন করে রেখেছিস।তেমনি তোদের মনের সাথে মস্তিষ্কটাও জঘন্য কোয়ালিটির।ছিঃ!” (প্রত্যয়)
এই কথাটা বলে, প্রত্যয় স্বজোরে ল্যাপটপ টা আছাড় মারলো। ল্যাপটপটা চূর্ন বিচূর্ন হয়ে গেলো। প্রিয়ম এতক্ষণে রেগে ছিলো। তাই প্রত্যয় ঠান্ডা মাথায় ছিলো। আর নিজের রাগকে কনট্রোল করে আকাশের থেকে সব কথা বের করলো। আকাশের সব কথা প্রত্যয় ওর ফোনে রেকর্ড করেও নিয়েছে। এরপর প্রত্যয়, প্রিয়ম আর রিমন মিলে আকাশকে ইচ্ছে মতো উত্তম মধ্যম দিলো। এই কথা অন্য কেউ জানলে, যে ওর কি করবে সেটা আকাশকে আর বলতে হয়নি।আকাশ বুঝে গেছে যা বুঝার।
আকাশের এক্সিডেন্ট হয়েছে। এটা বলে রিমন আকাশকে হসপিটালে এডমিট করে দিয়ে আসলো। প্রত্যয় আর প্রিয়ম দুজনেই চুপ করে বসে আছে। প্রিয়মের চোখের কোণা বেয়ে ঝরঝর করে পানি পড়ছে। প্রত্যয় প্রিয়মের কাঁধে হাত রাখতেই, প্রিয়ম শব্দ করে কেঁদে দিলো। প্রিয়ম বা প্রত্যয় কেউ কখনো কাউকে তাদের প্রতিদ্বন্দী ভাবেনি। দুজনেই শুধু নিঃস্বার্থভাবে তুয়াকে ভালবেসেছে। আর সেক্ষেত্রে দুজনেই একই পথের পথিক। প্রত্যয় প্রিয়মের পিঠে হাত রেখে, প্রিয়মকে বললো,
–“শান্ত হও প্রিয়ম। এভাবে ভেঙ্গে পড়লে তো চলবেনা।নিজেকে শক্ত করো।” (প্রত্যয়)
–“ভাই আমি আর পারছিনা। আমার আপনজন গুলোই আমাকে ঠকাচ্ছে ভাই। আমি যাদের কলিজায় জায়গা দিতে দুইবার ভাবি না। তারাই আমাকে নিঃস্ব করে দিচ্ছে। জীবনের এই নিষ্ঠুর চাওয়া পাওয়ার খাতায় আমি শূন্যতা অর্জন করেছি। আমি হেরে গেছি,আমি ব্যর্থ। আমার কলিজা জ্বলে যাচ্ছে। আমি আর সহ্য করতে পারছিনা ভাই।” (প্রিয়ম)
–“আল্লাহর উপর ভরসা করো সব ঠিক হয়ে যাবে। একটা কথা মনে রেখো। মানুষের জীবনে শূন্যতা বলে কিছু থাকেনা।কেউ না কেউ এসে সেই জায়গায়টা পরিপূর্ণ করে দেয়। শুধু সময়ের ব্যবধানে।”
–“আমি নিঃস্ব হয়ে গেছি ভাই । আমি একেবারে নিঃস্ব হয়ে গেছি।” (প্রিয়ম)
প্রত্যয় প্রিয়মকে অনেক কষ্টে শান্ত করেছে। তারপর রাত প্রায় ১ টার দিকে প্রত্যয় ওর বাসায় এসেছে। প্রত্যয় এতক্ষণ প্রিয়মের সাথেই ছিলো। প্রত্যয় আর প্রিয়ম দুজনেই রাতে একসাথে খেয়েছে। আজকে প্রত্যয় বাসায় ফিরে তুয়াকে ওর রুমেই পেয়েছে। এজন্য প্রত্যয়ের মুখে হাসির রেখা দেখা দিলো। তুয়া একদম বাচ্চাদের মতো হাত পা ছড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে। আগের তুলনায় তুয়া শুকিয়ে গেছে। চোখের নিচে কালি জমা হয়েছে। তবুও প্রত্যয়ের চোখে তুয়াকে মন্দ লাগছে না। প্রত্যয় আর না দাঁড়িয়ে,খুব সাবধানে ওর ড্রেস নিয়ে ফ্রেশ হতে চলে গেল।
প্রিয়ম ওর বারান্দায় রাখা সোফাতে মাথা ঠেকিয়ে বসে আছে। প্রিয়মের দৃষ্টি ওই ঘুটঘুটে অন্ধকারের দিকে। এই অন্ধকারের মাঝেই প্রিয়ম এক টুকরো শান্তি খুঁজে বেড়ায়।আজকে ওই বিশাল আকাশটা অন্ধকার হয়ে আছে। আকাশে একটা তারারও দেখা নেই। সব তারা গুলো কালো অন্ধকার মেঘের মাঝে ঢেকে গেছে। এজন্য তারাহীন আকাশটাকে অপরিপূর্ণ লাগছে।
প্রিয়মের চোখের কোণা বেয়ে পানি পড়ছে। প্রত্যয় যাওয়ার পর প্রিয়ম এখানে এসে বসেছে। নিজের একাকীত্বের সাথে লড়াই করতে। কিন্তু রাতের একাকিত্বটা যে কতটা ভয়ানক। সেটা বোঝার ক্ষমতা সবার হয় না। রাত জাগা কষ্টের পাখি গুলোই জানে,এর আসল রুপ। কষ্টেভরা বুকটাতে জ্বালাপোড়া শুরু হয় এই একাকীত্বের মাঝেই। সারাদিন সবার সাথে হাসি মুখে থাকলেও। রাতের বেলা যেন কষ্টটা দশগুন হারে বেড়ে যায়। কষ্টটাও তখনই কেনো জানি তার ভয়ানক রুপ ধারণ করে। হৃদয়টাকে ক্ষত বিক্ষত করে। প্রতিনিয়ত দগ্ধ করতে থাকে।
প্রিয়ম তুয়ার ছবির দিকে তাকিয়ে আছে। কিছুক্ষন একদৃষ্টিতে তাকিয়ে থাকার পর, প্রিয়ম কান্নাভেজা কন্ঠে বললো,
–“আমার লাল টুকটুকে বউ হয়ে আসার কথা ছিলো। কিন্তু তা আর হলো না রে জান। কেনো এটা করলি তুই? আমাদের গল্পটা তো এমন হওয়ার কথা ছিলো না। আমার ভাল করতে গিয়ে,আমার বাঁচার অবলম্বনটাই কেড়ে নিলি। আমি জানি আমার ভালোর জন্য তুই এমন পথ অবলম্বন করেছিস। আমি এটাও জানি, তুই আমার কথা ভেবেই প্রত্যয় ভাইকে এর মধ্যে জড়িয়ে নিয়েছিস। আসলে তুই চেয়েছিলি আমাদের বিয়েটা কোনরকম ভেঙ্গে দিতে। কিন্তু আংকেল আর আন্টির চাপে পড়ে প্রত্যয় ভাইকে বিয়ে করতে বাধ্য হয়েছিস। তবে তুই ভুল কিছু করিস নি তুয়া। তুই জানিসনা, তুই তোর অজান্তেই খাঁটি হিরা কে জীবন সঙ্গী হিসেবে বেঁছে নিয়েছিস। প্রত্যয় ভাইয়ের মতো ছেলেকে বর হিসেবে পেয়েছিস তুই। আমি জানি ভাই তোকে পাগলের মতো ভালবাসে। ভাই তোকে কখনো কষ্ট পেতেই দিবেনা। আমার বুকের বা পাশটা ফাঁকা হয়ে গেলেও। তোর বিরুদ্ধে আমার কোনো তুয়া কোনো অভিযোগ নেই। সব আমার ভাগ্যের দোষ। আর আমি আমার ভাগ্যকেই মেনে নিবো।” (প্রিয়ম)
তারপর প্রিয়ম কিছুক্ষণ খুব কাদলো। প্রিয়ম জানে তুয়া আর প্রত্যয়ের বিয়ের কথা। আর কখন, কিভাবে ওদের বিয়ে হয়েছে,সব কথাই প্রত্যয় সেইদিনই প্রিয়মকে বলেছে। সেই থেকেই প্রত্যয় প্রিয়মকে অনেক বুঝিয়েছেও। প্রিয়মের যখন কাউকে খুব দরকার ছিলো। তখন প্রত্যয় প্রিয়মের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে। প্রিয়ম ওদের বিয়ে হওয়ার কথা শুনে। তখন প্রিয়মের বুক ফেটে যায়। তাও প্রিয়ম প্রত্যয়ের সামনে স্বাভাবিক থাকে। যাকে এত ভালবাসে এসেছে। সে আজ অন্য কারো অর্ধাঙ্গিণী। এটা যে কতটা কষ্টের সেটা প্রিয়মের মতো এমন পথের পথচারী গুলোই জানে। তুয়াহীন প্রিয়মের এক একটা দিন আর রাত কেমন যাচ্ছে। সেটা শুধু প্রিয়মই জানে।
পরেরদিন তুরাগের বিয়ে।। যথাসময়ে বরযাত্রী ওখানে পৌঁছে গেল। কিছুক্ষনের মধ্যে তুরাগ আর তিন্নির বিয়ের কাজ সম্পূর্ণ হলো। সবাই অনেক মজা করেছে। খাওয়ার দাওয়ার পর্বও শেষ হয়ে গেছে। এর মধ্যে প্রত্যয়ের ফোনে কল আসাতে,প্রত্যয় বাগানের এক সাইডে দাঁড়িয়ে ফোনে কথা বলছিলো। তুয়া প্রত্যয়ের চোখের আড়ালে বিয়ে বাড়ি থেকে বেরিয়ে গেল। তুয়া দ্রুত পায়ে হেঁটে, একটা সিএনজি ডেকে তাতে উঠে বসলো। ১৫মিঃ পর তুয়া একটা লেকের পাশে এসে নামলো। সিএনজির ভাড়া মিটিয়ে তুয়া কারো জন্য অপেক্ষা করছিলো। একটুপর সেই কাঙ্ক্ষিত ব্যক্তি এসে ওখানে পৌঁছালো। উনি এসেই বললো,
—“আমার ছেলে কোথায়? আমার প্রিয়মের যদি কিছু হয়, তাহলে তোমাকেও আমি বাঁচিয়ে রাখবোনা। বলো আমার ছেলে কোথায়?” (প্রিয়মের আম্মু)
–“আমি কিভাবে জানবো?” (তুয়া)
–“তুয়া ভালোই ভালো বলছি, বলো প্রিয়ম কোথায়? তুমি হয়তো জানো না, আমি এখন তোমাকে কি করতে পারি?” (চোখ গরম করে)
–“আমি জানি আপনি সব করতে পারেন। আপনার মতো বহুরূপী মা পৃথিবীতে আর আছে কি না সন্দেহ। যে নিজের ছেলের জীবন নিয়ে খেলতেও দ্বিধাবোধ করেনা। সে তো শুধু মা না পুরো মেয়ে জাতির কলঙ্ক। নিকৃষ্ট আর কুরুচিপূর্ণ মানুষ আপনি। ইয়াক থু! আপনার মতো মানুষের সাথে কথা বলতে আমার রুচিতে বাঁধছে।” (তুয়া অগ্নি দৃষ্টি বর্ষন করে)
—“ঠাস! একদম চুপ। তোর থেকে আমি উপদেশ নিতে আসিনি। আমি নিজের স্বার্থের জন্য নিজের ছেলেকে মারতে দুবার ভাববো না। আর তুই কোন ফকিন্নির বাচ্চা। আমিও দেখি তুই কতদিন আমার ছেলেকে লুকিয়ে রাখিস। আমিও এর শেষ দেখেই ছাড়বো।” (তুয়াকে থাপ্পড় মেরে)
প্রিয়মের আম্মু কথা টা বলে চলে গেল। আর তুয়া মাটিতে বসেই শব্দ করে কেঁদে দিলো। দু’ একজন পথচারী তুয়ার দিকে তাকাচ্ছে। তাতে তুয়ার কিছু যায় আসেনা। তার বুকে যেন আগুনের ফুলকি জ্বলছে। এখন কোনো দিকে খেয়াল করার মতো মন-মানসিকতা তুয়ার নেই। তুয়া শব্দ করে পাগলের মতো কেঁদেই যাচ্ছে। হঠাৎ করে তুয়া ওর সামনে কারো উপস্থিতি টের পেলো। তখন কান্না ভেজা চোখেই মুখ তুলে তাকালো। আর তখন দেখলো প্রত্যয় ওর সামনে দাঁড়িয়ে আছে। প্রত্যয়কে দেখে তুয়ার ভয়ে হাত পা কাঁপতে শুরু করলো। তুয়া এই ভয়টাই পাচ্ছিলো। প্রত্যয় তুয়াকে মাটি থেকে টেনে তোলে আর গম্ভীর কন্ঠে বলে,
–“আমি কিন্তু তোদের সব কথা শুনেছি। আর লুকিয়ে রাখার কোনো স্কোপ নেই। এবার আমার থেকে কিভাবে লুকাবি তুয়া? এবার তো তুই ধরা পড়ে গেছিস।” (প্রত্যয়)
To be continue…!