#স্পর্শানুভূতি
#writer_Nurzahan_Akter_Allo
#part_21
🍁🍁
মিষ্টুঃতোরাই গান চুজ কর!আমি তোদের চুজ করা গানে ডান্স করবো।আর যদি আমি পারি তো আমার হাত থেকে তোদের কেউ বাঁচাতে পারবে না।আজ তোদের গোবর পানিতে না চুবালে আমার নাম বদলে দিস।
নিরবঃবকবক কম হবে!কাজে করে দেখাও।হা হা হা
রাত্রিঃছেড়ে দে না ভাই!মিষ্টু তো পারবেই না বরং পড়ে গিয়ে হাত মুখ না ভেঙে ফেলে।হা হা হা
উপস্থিত সবাইঃলুজার লুজার
মিষ্টুঃউফফ!শাট্ আপ.. (কান ধরে রাগে ফুসতে ফুসতে)
নিরবঃ ওকে নাও এই গানে ডান্স শুরু করো।
রাত্রিঃএই গানে তো আরেক জন লাগবে।
মিষ্টুঃযে গান চুজ করলো সেই পাটনার হোক না সমস্যা কি?(শয়তানি হাসি দিয়ে নিরবের হাত ধরে টেনে)
–
তারপর ফুল সাউন্ড গান ছাড়ে আর রাসেল তখনই ওর ক্যামেরা নিয়ে এক দৌড়ে নিচে আসে।আয়ান, জয়,শুভ্রও এসে দেখে মিষ্টুর আর নিরব ডান্সের জন্য রেডি হচ্ছে! রাসেল মুছকি হেসে ওর ক্যামেরা দিয়ে ভিডিও করতে থাকে!মিষ্টুর আর নিরব বাগানের মাঝখানে এসে দাঁড়ায় আর রাত্রি গান ছেড়ে দিতে ওরা ডান্স শুরু করে…
ইট’স বিন লং তেরি বিন সুনে পারদেসি..
ইট’স বিন লং তেরি বিন সুনে পারদেসি..
নাগিন ডিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন..মার গেয়ি…
নাগিন ডিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন..মার গেয়ি…
!!(উরাধুরা ডান্স শুরু করছে!নিরব মিষ্টুর সাথে তাল মেলাতে পারছে না)!!
সাজনা বিন তেরে লাগে আঙ্গান তেরি..
মে নাচ না জানু এক রাতি এনিমোর..
লেহেরানা বলি ইতরানা বলি..
ঘার আজা না ডোন্ট ইউ লাভ মি এনিমোর…
!!(নিরব তাল মেলাতে পারছে না দেখে মিষ্টু নিরবের পায়ে ল্যাং মেরে ফেলে দিলো!আর নিজে গানের সাথে সাথে তাল মিলিয়ে ডান্স করতে লাগলো)!!
ইট’স বিন লং তেরি বিন সুনে পারদেসি..
ইট’স বিন লং তেরি বিন সুনে পারদেসি..
!!(আয়ান,শুভ,আর জয়ও এবার মিষ্টিুর সাথে উরাধুরা ডান্স করা শুরু করলো।আর রাসেল মনোযোগ দিয়ে ওর ডান্স টা ভিডিও করে নিলো)!!
নাগিন ডিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন…মার গেয়ি…
নাগিন ডিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন গিন…মার গেয়ি…
–
মুহিত গাড়ি পার্ক করে ও আর ওর চাচা গাড়িতে থেকে নেমে বাগানে থেকে গানের সাউন্ড পেয়ে বাগানের দিকে হা করে তাকিয়ে আছে!মুহিত দেখে আয়ানরা মিষ্টুর সাথে নাচতে শুরু করছে আর রাসেল সেটা ভিডিও করছে আর হাসছে।মুহিত হেসে দিলো আর রাসেলের পাশে গিয়ে দাড়ালো রাসেল মুহিতকে দেখে হেসে দিল।গান শেষ হতে হতেই মিষ্টু নিরব আর রাত্রিকে দৌড়ানী দিলো!রাত্রি আর নিরব এসে মুহিত আর রাসেলের পেছনে লুকালো বাট মিষ্টু মুহিত আর রাসেলের দিকে তাকিয়ে বললো,,,
–
মিষ্টুঃওরা আমাকে লুজার বলছে!এই দেখো এই
মগটাতে গোবর গুলানো তোমরা সামনে থেকে সরো!তা না হলে তোমাদের গায়েই ঢেলে দিলাম। (রেগে রেগে)
মুহিতঃ ছিঃ বোন এসব নোংরা জিনিস হাতে কেন?ফেলে দে।
মিষ্টুঃনা মানে না! তোমরা সরবে কি না?😠
রাসেলঃওরা বললে তো তুমি লুজার হয়ে গেলে না তাই না!আর রাত্রির কালকে চলে যাবে ওকে ছেড়ে দাও।
মিষ্টুঃ ওর বিয়ে বলেই তো! আজ ওকে গোবর পানিতে ঢুবিয়ে পবিত্র করবো।তোমরা সরবে না তো ওকে এই নাও!!
–
মিষ্টু ওদের দিকে গোবর পানি মারতেই রাসেল আর মুহিত সামনে থেকে সরে যায় আর সব গোবর পানি নিরব আর রাত্রির গায়ে পড়ে।বেচারা নিরব আর রাত্রি গোবরের গন্ধে ইয়াক ইয়াক করতে থাকে আর রাসেল,মিষ্টু,মুহিত সহ বাকি সবাই হা হা হা করে হাসতে শুরু করে!মিষ্টু রাত্রির দিকে তাকিয়ে বললো..
–
মিষ্টুঃএত করে বললাম আমার সাথে লাগতে আসিস না!তারপরেও কথা শুনলি না দেখলি তো কি হলো এর ফলাফল।
রাত্রিঃ এটা তুই কি করলি?(ভ্য ভ্য করে কেঁদে)
মিষ্টুঃআপু যা ভাগ!আর এখন ভালো করে সাবান মাখবি কেমন!কালকে আবার বাসর রাত। গোবর গোবর গন্ধ আসলে ভাইয়া কিন্ত উল্টো ঘুরে দৌড় দিবে। হা হা হা
মুহিতঃরাসেল চল যায় ভাই এখান থেকে(মিষ্টুর কথায় রাত্রি আরো বেশি লজ্জা পাবে! মুহিত আর রাসেলকে দেখে এজন্য কেটে পড়ছে)
রাসেলঃহুমম চল!(রাসেল মুছকি হেসে হুমম বললো! মুহিতের কথা ধরতে পেরে)
–
বাসায় অনেক গেষ্ট এসেছে দুপুর হতে হতে বাড়িটা বিয়ের বাড়ির মতই মানুষে গমগম করতে থাকে!রাত্রির খালা রাবেয়া মিষ্টুর মাকে গিয়ে বলে মিষ্টুর সাথে উনার ছেলে বিয়ে দেওয়ার বাট মিষ্টু মা এসব বলতে না করে!মুহিত এসব শুনলে রাগারাগি করবে তাই।মহিলাটা কেন জানি রাগে গমগম করতে করতে চলে গেল!তারপর রাত্রিদের বাসায় থেকে বের হতেই রাসেলের দিকে উনার চোখ পড়ে। আর মুহিতের সামনে গিয়ে মুহিতকে ডাকে। তখন মিষ্টু আর মুহিত তখন কি নিয়ে যেন কথা বলছিলো।রাবেয়া খালা মুহিত কে বলে..
–
রাবেয়া খালাঃমুহিত ওই ছেলেটা কে?তুমি তাকে চিনো?
মুহিতঃজি! আমার বন্ধু রাসেল। কেন কোন দরকার?
রাবেয়াঃআসলে ছেলেটাকে দেখে আমার খুব পছন্দ হয়েছে!আমার মেয়ে পাপড়ির সাথে ওর বিয়ের প্রস্তাব দিতে চাই…
মুহিত আর মিষ্টুঃ কি??
–
মুহিত রাসেলকে ডাকলো আর মিষ্টু রাসেলের দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে।রাসেলে গিয়ে ওদের সামনে গিয়ে দাড়ালো! আর ওদের দিকে তাকিয়ে মুছকি হাসি দিলো আর রাবেয়া খালাকে সালাম দিলো।মুহিত রাবেয়ার খালার দেওয়া প্রস্তাব টা রাসেলকে বললো!রাসেলে সাথে সাথে ভীষম খেলো আর মিষ্টুর দিকে তাকিয়ে দেখে মিষ্টু ওর দিকে রাগি চোখে তাকিয়ে আছে।রাসেলে কি বলবে বুঝতে পারছে না!রাসেল কিছু বলতে যাবে তার আগেই মিষ্টু হনহন করতে করতে চলে গেল। রাসেল মুহিতের দিকে করুন চোখে তাকিয়ে থাকলো।মুহিত শুধু মুছকি মুছকি হেসেই যাচ্ছে…
–
রাবেয়া খালা রাসেলের গলাতে উনার মেয়ে ঝুলিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে!রাসেল রাবেয়া খালার দিকে তাকিয়ে বললো..
রাসেলঃ আন্টি আমি এখনও বিয়ের কথা ভাবি নি!আর এসব বলে আমাকে লজ্জা দিবেন না?
রাবেয়া খালাঃশোন বাবা আমার মেয়ের সাথে তোমাকে খুব মানাবে!,তুমি চাইলে আমি তোমার বাবা মায়ের সাথে কথা বলে দেখতে পারি।
রাসেলঃ প্লিজ আন্টি! এসব বলবে না।ভালো থাকবেন।
রাবেয়া খালাঃশোন বাবা আমার কথা শুনে যাও।
–
(কিছু কিছু এমন মহিলা আছে!কোন ছেলে বা মেয়ে দেখলেই এসে হুট করে বিয়ের প্রস্তাব দেয়।এদের কাজই মনে হয় এই কাজ করা!জানা নাই শোনা যায় হুট করে যাকে তাকে ধরে এসব বলে!আর বিব্রত করে দেয়)
–
ওদিকে মিষ্টু রাগে হন হন করতে করতে ওর রুমে চলে যায় আর রাসেলের গুষ্ঠী উদ্ধার করতে থাকে।রাসেল বাগানে এসে মিষ্টুকে আর খুজে পাই না!তবে মিষ্টুর এভাবে রেগে যাওয়ার কারন বুঝতে পাররো না।বাট হুট করে কয়েক সেকেন্ডে রাসেলের মাথায় একটা কথা মাথায় আসলো!আর সাথে সাথে রাসেলের মুখে হাসি ফোটে। আর মনে মনে বলে…
রাসেলঃতাহলে কি মিষ্টু আমাকে নিয়ে কোন মেয়ে কথা শুনাতে জেলাস ফিল করছে!তারমানে কি মিষ্টু মনে আমার জন্য সামথিং সামথিং ফিল করছে।হুমম তাহলে তো মিষ্টুকে বাজিয়ে দেখতে হয়।মিষ্টু রানী তুমিও মে বি লাভ নামক রোগে আসক্ত হয়ে পড়ছো।হা হা হা
–
মিষ্টু ওর রুমের বেডে বসে রাগে ফুসতে থাকে আর বলতে থাকে!
মিষ্টুঃতোকে হিরো সেজে ঘুরে বেড়াতে হবে কেন?আর থ্রীকোয়াটার প্যান্ট পড়ে মেয়েদের পায়ের পশম দেখানো হচ্ছে?কেন রে লুচু ছেলে এভাবে মেয়েদের দেখাচ্ছিস পা দেখাবি কেন তুই?আর ব্লু কালারের গেন্জী পড়তে তোকে কে বলছে রে?শালা লুচু যাতে মেযেরা সহ মেয়ের বাবা মা এসে বিয়ের প্রস্তাব দেয় এজন্য এসব পড়ে হিরো সেজে ঘুরে বেড়াচ্ছে।তোর মত লুচু ছেলের সাথে আমি আর কথায় বলবো না!যা বেশি বেশি করে থ্রীকোয়াটার পড়ে ঘুরে বেড়া আমি কিছু বলবো না! নাআআা বলবো তো! আমি দেখবো শুধু আর কেউ দেখবে না।আমি খুব হিংসা হচ্ছে কেউ তোমার দিকে তাকালে।আমি কেমন করে বলি কেউ তোমার দিকে তাকালে আমার খুব হিংসা হয়! 😭
–
দুপুরে দিকে সবাই বাসায় চলে আসে।আয়ান রা বাসায় চলে গেছে ওদের লাঞ্চ করে যেতে বললো বাট ওরা না করে দেয়।রাসেল এবার বাসায় এসে সাওয়ার নিয়ে একটা কালো গেন্জী আর মেরুন কালার থ্রী কোয়াটার পড়ে আর এক হাতে ওর ভেজা জামা-কাপড় আর একহাত দিয়ে টাওয়াল দিয়ে মাথা মুছতে মুছতে বাইরে বের হয় আসে।মিষ্টুও তখন মাথায় টাওয়াল পেচিয়ে ছাদে যাচ্ছিলো।মিষ্টু রাসলকে দেখেও না দেখার ভান করে মুখ ভেংচি দিয়ে চলে গেল।রাসেলও মিষ্টুকে অনুরণ করে ছাদে গেল।রাসেলকে দেখে মিষ্টু তারাতারি ওর কাপড় গুলো শুকাতে দিয়ে এক প্রকার দৌড়ে চলে গেল।
রাসেল বুঝতে পারলো মিষ্টু কোন কারণে রেগে আছে!রাসেলও ওর কাপড় দিয়ে শুকাতে দিলো আর নিচে নেমে এলো।তারপর সবাই এক সাথে খেতে বসে…আর খেয়ে বেশ কিছুক্ষন আড্ডা দিয়ে মুহিতকে রেস্ট নিতে বলে কারন মুহিত রাত্রির গায়ের হলুদের স্টেজ সাজাবে তাই ওনাকে যাবে!রাসেলেও গেল মুহিতের সাথে কারন একা একা বোরিং লাগছে।মুহিত আর রাসেল ওখানে গিয়ে কাজে লেগে পড়লো!রাসেলও কাজে লেগে গেল মুহিতের সাথে সাথে।
–
রাসেলরা এটা ওটা করছে আর মিষ্টু ওর রুমের জানালা দিয়ে সব দেখছে!কারন হলুদের স্টেজ মিষ্টুদের বাগানেই করা হয়।নিরবের হাতে কুট্টুশ দিয়েছে ঘাস খাওয়ানো জন্য কিন্তু নিরব কোথায় যাবে তাই নিরব কুট্টুশকে রাসেলের হাতে দেয়।
চলবে..