স্পর্শানুভূতি #writer_Nurzahan_Akter_Allo #part_24 🍁🍁

0
624

#স্পর্শানুভূতি
#writer_Nurzahan_Akter_Allo
#part_24
🍁🍁

রাসেল এখনো হা করে তাকিয়ে আছে!মিষ্টু রাসেলের দিকে একবার তাকায় তার মিষ্টু রাত্রতিকে বকুলের পাশে বাসিয়ে দেয়!মিষ্টু আড়চোখে রাসেলের দিকে তাকিয়ে বলে

মিষ্টুঃ আরে ব্যাস আমার হিরোকে তো সিলভার কালার ব্লেজারে দারুন মানিয়েছে!ইসস ওর কপালেএকটা টিপ দিয়ে দিতে পারলে ভালো হতো!না জানি কোন শাকচুন্নি এসে নজর দেয়। সিলভার কালের সাথে সাদা শার্ট উফফ তোমাকে দারুন লাগছে রাসেল তাওসীফ (মনে মনে)


কাজি এসে রাত্রি আর বকুলের বিয়ে পড়ানো শুরু করলো! কাজি আগে রাত্রিকে কবুল বলতে বললো! রাত্রি মিষ্টুর হাত টা ধরে আছে,রাত্রি অলরেডি কাপাকাপি শুরু করে দিয়েছে।রাসেল বকুলের সাথে কথা বলে ঘাড় ঘুরাতে সামনে দেখে মিষ্টু আর রাত্রি। রাসেল সাথে সাথে দাড়িয়ে যায় আর মিষ্টুকে দেখে ওর অজান্তে মুখ ফোসকে বলে ফেলে..অসাধারণ।মুহিত যে রাসেলের পাশেই আছে সেটা রাসেলের খেয়ালই নেই!মুহিত ভ্রু কুচকে রাসেলের দিকে তাকিয়ে বলে..

মুহিতঃকি বললি তুই?

রাসেলঃনা মানে ব ব বলছি ওই বাচ্চাটা কি কিউট তাই বলছি?(একটা বাচ্চাকে দেখিয়ে)

মুহিতঃ ওহহ! এটা বকুলের কাজিনের মেয়ে হ্যা অনেক কিউট বাচ্চাটা।

রাসেলঃওহহ (আল্লাহ তোমার কাছে লাখ লাখ শুকরিয়া এবারের মত বাঁচিয়ে দিয়েছো।তা না হলে আজকেই মনে হয় আমার শেষ দিন হতো) রাত্রিকে কবুল বলতে বলছে বাট রাত্রি চুপ করে বসে আছে।মিষ্টু রাত্রিতে খোঁচা মেরে বললো…

মিষ্টুঃকবুল টা বলে দে না আপু!কবুল বলে দিলেই তো ল্যাটা চুকে যায়।সারা জীবন প্যারা দেওয়ার পাসপোর্ট হাতে পেয়ে যাবি।

রাত্রিঃক ক বুল

মিষ্টুঃ আপু কবুল বলবি না বকুল বললি!,যা বলবি জোরে বল তো!সারাদিন বকুল বকুল করতে করতে কবুলকে বকুল বলে দিস না।😜

উপস্থিত সবাই মিষ্টুর কথা শুনে হা হা হা হেসে দেয়!বকুলও হেসে দেয়।রাসেল দাড়িয়ে দাড়িয়ে হাসছে আর মিষ্টুর দুষ্টু দুষ্টু কথা গুলো শুনছে শুধু।তারপর কাজি রাত্রিকে আবার কবুল বলতে বলে রাত্রি বলে দেয়।মিষ্টু অবজেকশন জানায় যে রাত্রিকে একসাথে তিনবার কবুল বলতেই হবেই!মিষ্টু জেদের কাছে হার মেনে রাত্রি বলে দেয়।

রাত্রিঃকবুল কবুল কবুল
(ও হো আমার সব পাঠক আজ থেকে বিবাহিত। কবুল বলে ফেলছেন ল্যাটা চুকে গেছে অথাৎ বিয়ে হয়ে গেছে ফান করছি কেউ সিরিয়াসলি নিবেন না😜)


বকুলও তিনবার কবুল বলে ওরা দুজন পবিএ বন্ধনে আবদ্ধ হয়!তারপর বকুল আর রাত্রির কাপল পিক সহ দুই পরিবারের ফটো সুট চলে! তারপর খেতে বসে বকুল আর রাত্রি এক টেবিলে বসে!মিষ্টু মুহিতের পাশে বসে আর মুহিতের পাশেই বসে রাসেল। মিষ্টু একটু আনইজি ফিল করছে!সবাই খেতে শুরু করে মুহিত মিষ্টুকে চিংড়ির খোসা ছাড়িয়ে দিচ্ছে আর মিষ্টু খাচ্ছে। মুহিত মিষ্টুর দিকে তাকিয়ে বলে…


মুহিতঃরাত্রির মত তোরও এই দিনটা আসবে! আর তুই কি না আজো চিংড়ির খোসা ছাড়াতে পারিস না।

মিষ্টুঃআমি শিখে কি করবো?আমার বর তো আমাকে চিংড়ির খোসা ছাড়িয়ে দিবে!না দিলে ওর খবর থেরাপির দেওয়ার ব্যাবসথা করবো….

রাসেলঃ সেই অধিকারটা একবার দিয়েই দেখো না!হয়তো মুহিতের মত পারবো না বাট আমি একটা পারফেক্ট হাজবেন্ড হওয়ার চেষ্টা করবো!তুমি আমাকে নিয়ে কোন অভিযোগ দিতে পারবে না মিষ্টু রানী…(মনে মনে)

মুহিতঃ সাথে তোমাকেও উরাধুরা পিটাবে!যাও শশুড়বাড়ি দেখবে কত ধানে কত চাল।

মিষ্টুঃশশুড়বাড়ি লোক যা ইচ্ছে হোক আমার বরটা যাতে খুব ভাল হয়!তাহলেই হবে, আর দেখবে আমার বরটাও শুধু চিংড়ির খোসা না! তিনবেলা না পারলেও দুইবেলা আমাকে নিজে হাতে খাইয়ে দিবে।

মুহিতঃহুমম দেখা যাবে সেই হতভাগা তখন কি করবে?তোকে নিয়ে আমার টেনশন নেয়! আমার খুব টেনশন হয় তোর সেই হতভাগা বরকে নিয়ে।হা হা হা হা

রাসেল মুহিতের কথা শুনে মনে মনে ভাবতে থাকে।

রাসেলঃমুহিত আমি জানি না তোকে কি করে বোঝাবো আমি মিষ্টুর প্রতি কতটা দূবল! তবে আল্লাহ যদি মিষ্টুর সাথে আমার জোড়া লিখে রাখে তো আমি মিষ্টুকে টাকা পয়সা দিয়ে না! আমার ভালবাসা দিয়ে ওকে রাজরাণী করে রাখবো!আমি না পারছি তোকে বলতে আর না পারছি মিষ্টুর থেকে নিজেকে সরিয়ে রাখতে!দিন দিন
মিষ্টুকে হারানোর ভয়টা যেন আমার বাড়তেই আছে!


বকুলের বাসা অনেক দুরের রাস্তা এজন্য আর দেরি না করে রাত্রিকে বিদায় দেয়!মিষ্টু মুহিত সহ সবাই খুব কাঁদছে !রাত্রির বাবা মা কাঁদছে ওদের কলিজার টুকরো চলে যাচ্ছে তাই!বাসাটাকে একেবারে ফাঁকা করে দিয়ে। রাত্রি মিষ্টু কাছে আসতেই মিষ্টু রাত্রিকে জড়িয়ে হাউমাউ করে দেয়। তারপর সবাই অশ্রু ভেজা নয়নে রাত্রিকে বিদায় দেয়।


মিষ্টুও এবার ওর বিয়ের দিনের কথা ভেবে ভ্য ভ্য করে কেঁদে দেয়।
চিৎকারর করে কাঁদছে দেখে সবাই ওর দিকে তাকায়।

মুহিত মিষ্টুকে এবার থামতে বলে!কারন কালকে বাদে পরশুদিনই তো দেখা হবে।বাট মিষ্টু মুহিতকে জড়িয়ে ধরে আরো জোরে জোরে কেঁদে কেঁদে বললো..

মিষ্টুঃআমি আপুর জন্য কাদছি না ভাইয়া! আমি আমার বিয়ের কথা ভেবেই কাঁদছি? আ আ আ আ 😭

মুহিতঃতো এখন কেঁদে ভাসানো কি দরকার?যেদিন বিয়ে হবে সেদিন কাদলেই তো হয়।আপাতত চুপ কর বোন আমার কানটাকে এভাবে প্রতিবনধী করে দিস না।

মিষ্টুঃআ আ আ তুমি এটা বলতে পারলে।আর আমি ভাবলাম কান্না যখন শুরু করছি একেবারে আমার বিয়ের কান্নার পালাটাও চুকিয় দেয়।বার বার কাঁদতে আমারও তো কষ্ট হয় এজন্য আপুর সাথে আমার বিয়ের কান্নাটাও কেঁদে নিলাম। (কেঁদে কেঁদে)

রাসেলঃবাহ্ মিষ্টু তুমি তো দেখি ৬ জি স্পিডে ভাবো সবকিছু।বিয়ের কান্না আগেই কেঁদে নিচেছা ভাবা যায়।😂

মুহিতঃহুমম অবশ্যই!আমার বোন পড়াশোনা বাদে সব কিছু হাই স্পিডে চলতেই পছন্দ করে তাই না রে বোন।

মিষ্টুঃহুমম!বিয়ের পর তো রান্না করেই খেতে হবে তাহলে এত পড়াশোনা কি করবো? (কেঁদে কেঁদে)

উপস্থিত সবাই এতক্ষণ মুখে টিপে হাসছিলো বাট মিষ্টুর এই কথা শুনে হা হা হা হাসা শুরু করে।তারপর সবাই বাসায় গিয়ে ফ্রেশ হয়ে নিল।রাবেয়া আন্টি এখনো রাসেলের পেছনে পড়ে আছে বাট রাসেল যেখানে রাবেয়া আন্টিকে দেখছে সেখান থেকে হুট করে গায়েব হয়ে যাচ্ছে! রাসেল রোদ, গরম, সহ্য করতে পারে না ওর মাথা খুব ব্যাথা করছে বাট কাউকে কিছু বলতে পারছে না।


মুহিতরা সবাই ঠিক করলো আজ অনেক রাত পযন্ত আড্ডা দিবে।এজন্য সন্ধ্যার পর সবাই আড্ডা দিতে বসলো রাসেল ড্রেস বদলে আসে! রাসেল চাচ্ছে না ওর জন্য আড্ডা টা থেমে যাক।এভাবে প্রায় রাত ১২টা পযন্ত আড্ডা চলতে থাকে।এর মাঝে মুহিত রাসেলের দিকে তাকিয়ে দেখে ওর চোখ লাল হয়ে গেছে!মুহিত রাসেলকে জোর করে নিচে পাঠিয়ে দেয়।রাসেল নিচে নামতেই পাপড়ি রাসেলের সাথে কথা বলতে চাই!
বার বার রাসেলের শরীর টার্চ করতে চাই!এবার রাসেলের খুব রাগ হচ্ছে! রাসেল রাগি চোখে তাকিয়ে বলে…

রাসেলঃ পাপড়ি মেয়ে হয়ে জন্ম হয়েছো লজ্জা বলে কিছু একটা আছে সেটা ভুলে যেও না!আর আমি এসব গায়ে পড়া মানে এককথায় ছ্যাচড়া মেয়েদের একেবারেই সহ্য করতে পারি না!আমার থেকে দুরে থাকো এটা বেটার হবে…

পাপড়িঃরাসেল ভাইয়া বাসাতে কেউ নেই!এই সুযোগ হাত ছাড়া করাটা কি……..

রাসেলঃবাসাতে কেউ নেই তো!তুমি কি মিন করতে চাচ্ছো!পাপড়ি আমি সবাইকে একবার করে ভুল সুধরে নেওয়ার সুযোগ দেয়!তোমাকেও দিলাম। নিজেকেও শুধরে নাও..আমাকে রাগিও না এর ফল ভালো হবে না।(রাগী চোখে তাকিয়ে)

পাপড়িঃখালি বাসাতেও যে কোন ছেলে একটা মেয়েকে একা পেয়েও এতটা ভদ্র সেজে থাকতে আগে জানতাম না।অনেক হয়ে ভদ্র সেজে থাকেছো ডালিং! এবার…

রাসেলঃঠাস্ ঠাস্!তুই এত খারাপ আগে জানতাম না।তুই কি মনে করছিস তোর শরীর দেখিয়ে আমাকে পাগল বানাবি!আর সব ছেলে তোর মত ফালতু মেয়েকে দেখে পাগল হয়ে যায় না!আর তুই একটা মেয়ে হয়েও এতটা নোংরা হতে পারিস কি করে?তুই যে কতটা নোংরা তোর এই রুপটা না দেখলে বুঝতাম না।

পাপড়িঃ তুমি আমাকে মারলে!(গালে হাত দিয়ে)

রাসেলঃহুমম মারলাম কেন কিছু বুঝতে পারিস নি!আরেক কয়েকটা দিবো।আমাকে থেকে দুরে দুরে থাকবি তোর জন্য মিষ্টু বার বার আমাকে ভুল বুঝছে।আবারও যদি তুই একই কাজ করিস তো মনে রাখিস আমার থেকে খারাপ কেউ হবে না। (রেগে গিয়ে চোখ লাল করে)

পাপড়িঃহুমমম!

(ওহ্ তারমানে এটাই আসল কাহিনী! তুমি আমাকে ইগনোর করলে তো!এর ফল তোমাকে পেতেই হবে আর সেটা খুব তারাতারি রাসেল তওসীফ)

তারপর রাসেল রাগে ফোসফাস করতে করতে পাপড়ির পাশ কাটিয়ে ওর রুমে চলে যায়! আর শব্দ করে দরজা আটকে শুয়ে পড়ে।


রাসেল ওর রুমে শুয়ে পরার বেশকিছু সময় পর রাবেয়া খালা আসে আর রাসেলের রমের দরজা নক করে!রাসেল বিরক্ত হয়েই দরজাটা খুলে দেয় আর দেখে ওই গোয়ালেরই আরেকটা গরু এসে ছুটেছে।হয়তো আবার প্রলাপ বকা শুরু করবে।রাসেল ওর রাগটা কনট্রোল করে জিজ্ঞাসা করে কিছু বলবে কি না?…


রাসেলঃআন্টি কিছু বলবেন?

রাবেয়া খালাঃরাসেল বাসায় তো কেউ নেই আর আপাতত কেউ থাকবেও না। রাত্রি বাবা মায়ের মন খারাপ তাই ওখানে গেছে সবাই!তাই তোমার মামনি তোমাকে বলছে…

চলবে….
(অনেক বিজি আছি এজন্য আজকে পার্ট ছোট হয়েছে! তাই আগেই সরি বলছি….কেউ বকা দিও না গো😊)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here