‘সিক্ত সুভানুভব’
[১৮]
লেখনীতে:- নূরজাহান আক্তার (আলো)
রোদঃwhat???
আলোঃআমি কি করবো? আমি কি ইচ্ছে করে করেছি নাকি?সব তো ঠিকই ছিলো হুট করে নাড়টা এত টাইট হয়ে গেলো
রোদঃআল্লাহ এটাও দেখার বাকি ছিলো,এখন কি হবে?
আলোঃউফফ রে তারাতারি কিছু একটা করেন?আমার মনে হচ্ছে আমার পেট ফেটে যাবে। পেটিকোটের নাড় এত টাইট হয়েছে, যে শাড়ির সাথে ঘেসে এখন খুব জালা করছে।
রোদঃনিজেই নিজের,,,,,, ঠিক করে বাধতে পারো না।কি আর বলবো? কি বলা উচিত এটাও তো বুঝতে পারছিনা। আচ্ছা আমাদের গেস্টরুমে চল, হাঁটতে পারবে তো?
আলোঃহুমম পারবো। বাট গেস্ট রুম কোনদিকে? আমি তো চিনিনা। আপনি যদি একটু দেখিয়ে দিতেন।
রোদঃ আচ্ছা চলো আমার সাথে।
আলোঃ হুমম।
–
রোদ আলোকে সাথে করে ওদের গেস্টরুমে যাওয়ার সময় রোদের আম্মু সাথে দেখা হয়। রোদ ওর আম্মুকে বলে এইদিকে ম্যানেজ করতে আর রোদ আলোকে নিয়ে গেস্টরুমে যায়।রোদ রুমের দরজার খুলতেই রোদকে ধাক্কা দিয়ে আলো হুড়মুড়িয়ে ঢুকে পড়ে। রোদ না পারছে হাসতে আর না পারছে রাগ করতে। রোদ রুমে ঢুকে দরজা লক করে উল্টো ঘুরে দাড়িয়ে থাকলো। আলোর কান্নার শব্দ শুনে রোদ পেছনে ঘুরে দেখল, আলো শাড়ির কুচি ধরে লাফাচ্ছে। রোদ আলোর দিকে এগিয়ে রাগী চোখে তাকিয়ে বললো।
–
রোদঃতোমাকে যে কাজের জন্য এখানে আনা হয়েছে। সেটা না করে তুমি এভাবে লাফালাফি করছো কেন?এত ঢং করো কিভাবে?
আলোঃরোদ প্লিজ আমাকে সাহায্য করো। আমি গ্যাড়াকলে ফেঁসে গেছি। আমি আর সহ্য করতে পারছি না। আমি এবার খুব ব্যাথা পাচ্ছি।
রোদঃকি হয়েছে? আর আমাকে না বললে বুঝবো কি করে? আমিও আর তোমার ন্যাকামি আর সহ্য করতে পারছি না।আমার রাগ কিন্ত এবার আমি কনট্রোল করতে পারবো না। তাই বলছি কাহিনী খুলে বলো?(দাঁতে দাঁত চেপে)
আলোঃইয়ে মানে গিট্টু পড়ে গেছে খুলতে পারছি না।
–
(আমি আর কিছু বলবো না)
–
রোদঃআল্লাহ এ কেমন বউ জুটালে আমার কপালে? যে গিট্টুও খুলতে পারে না। এখন কি বউয়ের ইয়ের গিট্টু খুলতে হবে আমাকে। আমি আর নিতে পারছি না, এটাও ছিলো আমার কপালে।
আলোঃ এখনও আপনি বকছেন।
–
রোদ এগিয়ে এসে আলো শাড়ির কুচি গুলো একটানে খুলে দিল। তারপর হাঁটু গেড়ে আলোর সামনে বসে গিট্টু খোলার যুদ্ধে নেমে পড়লো। রোদ যখন গিট্টু খুলে আলোর পেটের দিকে তাকালো। তখন দেখলো এত পরিমানের টাইট করে আলো বেঁধে ছিলো, যে একদম লাল হয়ে দাগ বসে গেছে। আর ফর্সা পেটে দাগটা দেখে মনে হচ্ছে রক্ত বের হবে। রোদ আলোর মুখের দিকে তাকাল। আলো চোখ ছলছল চোখে রোদের দিকে তাকিয়ে আছে। রোদ মনে করছে, আলোর ইচ্ছে করে ন্যাকামি করছে। কিন্তু যখন নিজের চোখে এভাবে দেখলো, তখন নিজের কাছে নিজেকে ছোট মনে হচ্ছে ।রোদ ওয়াশরুমে গিয়ে ওর রুমাল ভিজিয়ে এনে নাভির উপর চেপে রাখলো। যেখানে খুব খারাপ ভাবে দাগ বসে গেছে। রোদ আলোকে একটু ওয়েট করতে বলে, বাইরে থেকে দরজার লক করে চলে গেল।আর রুমাল ভিজিয়ে দেওয়াতে আলোন মনে হচ্ছে আরো বেশি জলছে,,,
–
রোদ এসে আলোর সামনে বসে স্যাভলন ক্রিমটা দিয়ে লাগাচ্ছে, সাথে ফুঁ দিচ্ছে। রোদের হাত ওর পেটে পরাতে কেমন একটা কুাতুকুতু লাগছে। তবু আলো কিছু বলছে না। রোদের দিকে তাকিয়ে আছে। এই ছেলেটাই ওকে কত খোঁচা মেরে কথা বলে। এখন এই সামান্য ম্যাটারে কতটা কেয়ার করছে। রোদের মুখটা শুকিয়ে গেছে, দেখে মনে হচ্ছে কষ্টটা ওই পাচ্ছে ।
–
আলো কতটা লাকি তাই না? কতজন পারে রোদের মত কাউকে একটু ব্যাথা পেতে দেখলে এতটা উতলা হতে।আচ্ছা, কতজন ছেলে পারে চোখের সামনে একটা মেয়ের উন্মুক্ত নাভি দেখার পরেও, অন্যকিছু না ভেবে তার কষ্টটা ফিল করতে দেখা। হুমম রোদের মত হাজারও ছেলে আছে। যারা কোনো মেয়ের শরীরের ভাঁজে ভাঁজে ভালবাসা খুঁজে বেড়ায় না।যারা সত্যি কারের ভালবাসতে জানে, তারা তার প্রিয় মানুষের হাসি আর চোখের ভাষাতে খুজে ভালবাসা খুঁজে। আর যারা ভালবাসা খুঁজতে জানে না, তাদের কে শরীরটা সপে দিলেও সে বলতে পারবে না। বা সে ফিল করতে পারবে না আসলে ভালবাসা কি?
–
আর আমরা মেয়েরা সত্যি কারের ভালবাসা ছেড়ে, সেই সব বখাটেদের প্রেমে পরি। যারা আসেই শুধু মধু আহরণ করতে।আর তাদের কাজ হাসিল করতে পেরেই কেটে পড়ে।আর যারা আমাদের সত্যি ভালবাসে থাকে, তাদের হাজারো অপমান আর কথা শুনিয়ে বসে থাকি। আমরা মেয়েরা আসলেই বোকা, বার বার ইমিটিশনকে সোনা ভেবে ধরতে যায়। আর ঠকে গেলে বলি, “ছেলে জাতটাই খারাপ।”
না এটা আমাদের ভুল ধারনা সবাই খারাপ না। রোদের মত ছেলেরা আছে বলেই, এখনো ভালবাসা বলে কিছু আছে।রোদের মত ছেলেরা আছে বলেই, আলোর মত হাজারো মেয়ে ছেলেদের বিশ্বাসের হাত বাড়িয়ে দেয়। আর সারাজীবন পাশে থাকাতে ওয়াদা বন্ধ হয়। হুমম, আবার মেয়েই দিক দিয়েও সেইম কাহিনী। কিছু নিম্নরুচির ছেলে মেয়েদের জন্য আমরা ভালবাসার মত পবিএ একটা জিনিসকে বার বার ছোট করে ফেলি।আর এখানেই আমরা বার বার হেরে যায়।
(আজকে আমি অনেক তিতা কথা বলছি,কারো গায়ে লাগলে কিছু করার নেই।সত্যি তিতা হলেও সত্যি,,,)
রোদ আলোর দিকে তাকিয়ে বলে,
–
রোদঃএখনও কি জালা করছে?(ফুঁ দিয়ে)
আলোঃনা কমে গেছে অনেকটা।
রোদঃ আচ্ছা আর শাড়ি পড়তে হবে না তোমাকে। আমি কামিজ বা লং কোন ড্রেস এনে দিচ্ছি, ওটাই পরো। আর শাড়ি পড়া লাগবে না।কি অবস্থা করছো নিজের?
আলোঃ আমি এখন ঠিক আছি সমস্যা নেই। আর বাসাতে কত গেস্ট শাড়ি না পড়লে সবাই কি মনে করবে?আমার আর কোন সমস্যা হচ্ছে না। এখন ঠিক হয়ে যাবে,,
রোদঃ কে কি ভাবলো? সেটা আমি যেমন কেয়ার করি না, তেমনি তোমারও কেয়ার করার প্রয়োজন নেই।অন্যরা কি বললো সেটা ভেবে নিজেকে কষ্ট দেওয়াটা বোকামি।
আলোঃ বলছি তো আমি ঠিক আছি। আর কোন সমস্যা হবে না। আপনি আমাকে একটু শাড়িটা পরতে সাহায্য করুন, তাহলেই হবে।
–
রোদ এবার নিজেই পোটিকোটের নাড় ঠিক করে বেঁধে দিলো। যদিও আলোকে এবার নাভির নিচে শাড়ি পরিয়ে দিচ্ছে। কারন একই জায়গাতে পরলে আবার ঘষা লেগে ব্যাথা পাবে। রোদ খুব যত্ন করে শাড়িটা পড়িয়ে দিল।রোদ পরিয়ে আলোর দিকে তাকিয়ে বলছে,,
রোদঃ সবসময় আমি যা বলি তার উল্টো কাজ করে খুব মজা পাও, তাই না?নিজেও কষ্ট পাও আর আমাকেও কষ্ট দাও। কেন বলো তো আমাকে?কি সুখ পাও এতে?
আলোঃ আমি নাড়টা একটু টাইট করে বেধেছি, শাড়িটা যাতে খুলে না যায়। পরে দেখি সত্যি বেশি টাইট হয়ে গেছে।
রোদঃনিজের পেটের দিকে তাকিয়ে দেখছো? দাগটা নীল বর্নধারণ করেছে। তুমি এত ব্যাথা পাচ্ছো, তারপরেও এটা নিয়ে বসে ছিলে কেন?
আলোঃ এটা আমার কাছে সামান্য ব্যাথা। এতে আমার কষ্ট যতটা লাগছে তার থেকে হাজার গুন কষ্ট পাচ্ছি, আপনার বদলে যাওয়াতে। আমি সত্যি আর নিতে পারছি না রোদ।প্লিজ আমাকে এভাবে বার বার দুরে সরিয়ে দিবেন না।
রোদঃসবাই আমাদের জন্য ওয়েট করছে। এবার আমাদের যাওয়া উচিত।
,-
রোদের এসে আবার চেয়ারে বসলো। সবাই যে যার মত আনন্দ করছে। আলোর বাবা মা ও এসে গেছে। আলোর বাবা মা ওর সাথে যারা এসে তাদের মধ্যে একটা ছেলে এসে হুট করে জড়িয়ে ধরে। রোদ চেয়ার থেকে উঠে সোজা দাড়িয়ে যায়।রোদ রাগী চোখে আলোর দিকে তাকিয়ে আছে। আর আলো ওই ছেলেটার সাথে হেসে হেসে কথা বলছে। রোদ ওখান থেকে সরে গেল। আর আলো বাকিদের সাথে কথাতে বিজি হয়ে পড়লো।
–
রোদ যে রাগের ফায়ার হয়ে আছে। সেটা আলোর জানা নেই। অনেকদিন পর ওর বন্ধুদের পেয়ে সব ভুলে গেছে।যে ছেলেটা আলোকে জড়িয়ে ধরছে, সে হচ্ছে নাবিদ। আলো আর নাবিদ সিঙ্গাপুরে থাকাকালীন ওদের friendship হয়।আর সিঙ্গাপুরে ওরা যেভাবে বড় হয়েছে। সেখানে এভাবে হাগ করা কোনো ব্যাপার না।
–
সবাই সময় লাঞ্চ করে নিল। বাট রোদকে আর তারপর থেকে কোথায় দেখা যায়নি।অনেকে রোদকে খুজলো বাট কোথাও পেলো না। এবার সন্ধ্যায় হয়ে গেছে রোদও আসছে না। আর আজকে তো আলোদের বাসাতে ওর যাওয়ার কথা। রোদের জন্য ওয়েট করতে করতে আরো দেরি হয়ে গেল। বাট রোদের কোন খবর নেই।
–
রোদ দুপুরে খায়নি এজন্য আলোকেও কেউ খাওয়াতে পারি নি।একটা সময় সবাই মিলে ঠিক করলো আলো আর রোদকে ছাড়া সবাই যাক রোদ আসলে ওদের একসাথে পাঠিয়ে দিবে।বড়রা যা বললো আলো সেটাই মেনে নিলো। সবাই যে যার মত করে চলে গেল বাসা ফাকা হয়ে গেছে।আলোকে রোদের আম্মু রোদের রুমে এনে ড্রেস বদলে ফ্রেশ হতে বললো।আলোর এত ভারী গয়না শাড়ি ভালো লাগছে না। এজন্য ড্রেস বদলে একটা কামিজ পড়ে নিল।রাত নয়টা বাজে তাও রোদের কোন খবর নেই।
–
রোদ রাত ১১ টার দিকে বাসায় ফিরে দেখে সবাই ড্রয়িং রুমের সোফাতে বসে আছে। আলোর কেঁদে কেঁদে চোখ মুখ লাল করে ফেলছে। রোদ কারো সাথে কোন কথা না বলে ওর রুমে চলে গেল। আলোও রোদের পেছন পেছন আসলো আর রোদের পথ আটকে দাঁড়ালো।
আলোঃআপনি এতসময় কোথায় ছিলেন?আপনি জানতেন না আজকে আমাদের ওই বাসাতে যাওয়ার কথা ছিলো।
রোদঃ হুম জানতাম। যাওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি তাই যায়নি। বাট তুমি যাও কেন?আমি তো এখন তোমাকে বাসায় আশা করি নি।
আলোঃআপনাকে ছাড়া আমি যাবো?আপনি ভাবলেন কি করে?
রোদঃকেন না ভাবা কি আছে?আমি কি একা তোমার আপনজন নাকি?তোমার তো এখন আপনজনের অভাব নেই, তাহলে আমাকে তোমার কি দরকার?এখন তো যাকে তাকে জড়িয়ে ধরতেও পারো, কিছু তো মনেও করো না ।আরে এটা ব্যাপার না। সুন্দরী মেয়েদের এমন কয়েকজন থাকেই, জড়িয়ে ধরার জন্য তাই না?
আলোঃহুমম ঠিক বলছেন। আমি রাস্তার মেয়ে তো আমাকে জড়িয়ে ধরার জন্য লোকের অভাব নেই।
রোদঃসেটা তুমিই ভালো জা,,,,
–
রোদ আর কিছু বলতে পারে নি। তার আগে আলো রোদকে সর্বশক্তি দিয়ে চড় মেরেছে। আর রোদ চোখ বন্ধ করে, চড়টা হজম করছে। আপাতত রোদের কানে পো পো আওয়াজ হচ্ছে,,,,চড় টা সে এতটাই জোরে মেরেছে রোদকে।
(যদিও বা মেরেছে গালে, বাট কানেও লেগেছে। গালের সাথে কান ফ্রীতে মার খেয়েছে। এবার রোদ বয়রা না হয়ে গেলেই হয়।)
আলো রোদের থেকে এতদিন সুযোগ চেয়েছে কিছু বলার। রোদ সুযোগ তো দিচ্ছে না বরং আরো কথা শুনাচ্ছে। আর এখনকার বলা কথা গুলোর জন্য আলো বেশি রেগে গেছে।
(এজন্য বলি! লেবু যেমন বেশি চটকাতে হয় না। বেশি চটকালেও লেবু যেমন তিতা হয়ে যায়।তেমনি আমরা মেয়েরাও যে দিন সব সহ্য করার কনট্রোল হারিয়ে ফেলবো। সেইদিনই ঘুরে দাঁড়াবো। তখন কোন ছেলেকে বাবা বলাও সময় দিবো না। আরে বাহ্ দারুন ডায়লগ দিলাম তো।ওহ জিও আলো।)
আলো রোদের এসব লেইম কথায় এত পরিমান রেগে গেছে। যে আজকে রোদকে চড় দিতে দুবার ভাবে নি। রোদ চোখ খুলো আলোর দিকে তাকায়। আলোর রাগে ওর মুখ চোখ লাল করে রোদের দিকে রাগী চোখে তাকিয়ে আছে।আর রাগে ফুসছে।আলোর এমন রুপ রোদ এর আগে দেখে নি,,,, রোদ কিছু বলার আগেই আলো রোদের সামনে আঙ্গুল তুলে বলে,,,
–
আলোঃ এনাফ ইজ এনাফ রোদ মেহবুব। আপনি অনেক বলে ফেলছেন। আর না, এবার আপনার মুখে লাগাম দেন।এবার বলবো আমি আর শুনবেন আপনি।
চলবে,,!!