সিক্ত সুভানুভব’ [৩০]

0
278

‘সিক্ত সুভানুভব’
[৩০]
লেখনীতে:- নূরজাহান আক্তার (আলো)

মেঘ ওদিকেই তাকিয়ে মনোযোগ দিয়ে কুকুুরছানা গুলোকে দেখছ।টিচার এসে কান টেনে ওকে বসতে বললো,মেঘ বসে বসে খাতাতে আঁকিবুঁকি করছে। টিচার দেশের পরিচালনা কে করে?কিভাবে করে?এসব বিষয়ে আলোচনা করছিলো মেঘ হুট করে আবার উঠে দাড়ায় আর, টিচারকে বললো,,

মেঘঃস্যার আপনি যদি দেশ পরিচালনা করার সুযোগ পেতেন, তাহলে কি করতেন?

স্যারাঃআমি আমার সাধ্যমত চেষ্টা করতাম,দেশে গরীব বা অসহায় মানুষ না রাখার।

মেঘঃআমি যদি সেই সুযোগ পাই তাহলে আমি একটা সমাজ সেবার করবো,যদিও আমি ঠিক করে রাখছি?

স্যারঃতা কি সমাজ সেবা শুনি?তোমার মুখে সমাজসেবার কথা শুনে খুব ভালো লাগলো,,

মেঘঃআমি প্রত্যেক কুকুরকে জামা আর কুকুর ছানাদের এক প্যাকেট করে দুধ আর একটা হরলিকস্ দিতাম।

(মেঘের মাথা যা এসেছে তাই বলছে,, কেউ সিরিয়াস ভাবে নিবেন না।গল্পকে সিরিয়াস ভাবে নেওয়াটা বোকামি,দেশ পরিচালনা নিয়ে কোন খারাপ কিছু তে ইঙ্গিতও করি নি)

স্যারাঃতা হঠাৎ কুকুরকে কেন দিবে?মানুষকেও তো দিতে পারতে,,কুকুর কে কেন বেছে নিলা?

মেঘঃস্যার প্রথমত আমরা কুকুরদের দেখতে পারি না,ওদের কত কষ্ট, ওরা খুধা লাগলে বলতে পারে না।কিছু চেয়ে খেতেও পারে না,,ওদের দেখে আমার খুব কষ্ট এজন্য।

স্যারঃহুমম তাও ঠিক,,এমন আইন চালু হবে কি না জানি না?তবে এমন অনেক দেশ আছে যেখানে কুকুরদের পালন করার ব্যবসথা আছে।

মেঘঃ আচ্ছা স্যার আমাদের দেশে কুকুর গুলোকে প্যান্ট পরালে কেমন হয়।আমাদের দেশের কুকুর গুলো খুব অভদ্র,,

স্যারঃএসব বিষয় থাক,আমরা পড়াতে ফিরে যায়।কারন তুই আর শুধরাবি না,,তোর মাথায় তো দুষ্টু বুদ্ধি আর যত উটঘট বুদ্ধিতে পুরো মাথাটন ভরা। সো মেঘ পড়াতে মন দাও,।ফাজিল ছেলে

রোদ আর আলো ওরা রিসোর্টে ফিরে যায়,আজ অনেক কান্ত,আলো এসে ঠাস করে বিছানাতে শুয়ে পড়ে।রোদ ডোর লক করে আর গেন্জী খুলে আর শুধু সেন্ডো গেন্জী পড়ে থাকে।আলোর ওড়না টা সরিয়ে ফেলে, আলোর মুখে বিন্দু বিন্দু ঘাম জমে আছে।রোদও আলোর পাশে শুয়ে পরে,আর মুছকি হেসে বলে,,,

রোদঃতোমার নাকে, ঠোটেের নিচে ঘাম জমলে তোমাকে দারুন লাগে দেখতে।আর নাকের নোজ পিনটাতে মুখে একটা সৌন্দর্য টা আরো বেড়ে গেছে।

আলোঃতাই নাকি,,,বাহ্ কেউ যে ঘামলে তাকে সুন্দর দেখায় এটা আজকে আমি জানলাম।

রোদঃ সবাইকে লাগে না রে পাগলী, যারা মায়াবতী তাদের ভালো লাগে,,আর তোমার গুলুমলু গালের, সাথে গোলাপি ঠোঁট, আর জমে থাকা এমন বিন্দু বিন্দু ঘাম,,এক কথায় আমার মাথা পাগল কথার জন্য যথেষ্ট,,,।

আলোঃ আপনার মাথাটা পুরোপুরি গেছে,,ভুল ভাল কথা ছাড়া মুখে কথা নাই।আজ আজকাল বড্ড লাগাম ছাড়া কথা বলেন আপনি,এটা কিন্তু ঠিক না।

রোদঃলাগাম ছাড়া কথা না বললে যে,তোমার লজ্জামাখা মুখটা দেখতে পারি না।মেয়েদের নাক ঘামলে বর নাকি খুব ভালোবাসে এটা কি সত্যি,,? তোমার কি তাই মনে হয়?

আলোঃজানিনা তবে আমার বর বউ পাগল তো,তাই আমার মানতে সমস্যা নাই(লজ্জা পেয়ে)

রোদঃতাই বুঝি,আমার আর মেঘেরও খুব নাক ঘামে এজন্য দাদিমা বেঁচে থাকতে খুব হাসাহাসি করতো।তবে আমার বউও আমার পাগল,এজন্য আমারও মানতে সমস্যা নাই।তবে আমার বউটা যে এত আমার পাগল হবে, আমি তো সপ্নেও ভাবিনি,,তোমার কথা কি বলবো?আমি নিজেই এখন বউ পাগল হয়ে গেছি,,,,(আলোকে লজ্জা দেওয়ার জন্য)

আলোঃএই আপনি উঠে ফ্রেশ হয়ে আসুন তো,তারপর আমি যাবো,,,(রোদকে এখন না সরালে এসবই বলেই যাবে এজন্য)

রোদঃচলো এক সাথে যায়(মুখে দুষ্টু হাসি৷ নিয়ে)

আলোঃ জি না আপনি আগে যান তারপর আমি যাবো

আলো জোর করে রোদকে ওয়াশরুমে পাঠিয়ে দিলো।আর ওর আব্বু আম্মুর সাথে কথা বলে,,রোদের আম্মু, বাপি আর মেয়ের সাথেও কথা বলে নিলো।রোদ সাওয়ার নিয়ে শুধু টাওয়াল পেঁচিয়ে বের হয়ে এলো,আলো শয়তানি হাসি দিয়ে রোদের সামনে গিয়ে বললো।

আলোঃএখন যদি এই টাওয়াল টান দেয়, তাহলে কি হবে?(দুষ্ট হাসি দিয়ে)

রোদঃকেন?আমার টাওয়াল তুমি টান দিতে পারো না।প্লিজ আলো এমন করো না,,,

তুমি ভাবছিলে আমি এটা বলবো,,হা হা হা।

আলোঃতাহলে আমি সত্যি সত্যি দিলাম টান।

রোদঃ হুম হুম অবশ্যই টান দাও,আমি কিছু মনে করবো না।দাও না বউ দাও।

আলোঃআপনি আসলেই খুব অসভ্য, তাতে একটুও ডাউট নেয়।

রোদঃযা বাবা আমি কি করলাম?তুমিি তো বললে টান দিবে।তাই তোমার ইচ্ছেটাকে আমি প্রাধান্য দিলাম।এখন তুমি বলে তুমি লজ্জা পাচ্ছো।

আলোঃআপনার মত আমি লুচু না।(আলো রেগে ওয়াশরুমে চলে গেল)

তারপর ওরা খেয়ে শুয়ে পড়ে এক অন্যকের জড়িয়ে ধরে।পরেরদিন সকালে ওরা ব্রেকফাস্ট করে বেরিয়ে গেল।তারপর চাকমাদের বাজার দেখলো,অনেক মেয়ে বিভিন্ন ধরনের সবজি নিয়ে বসে আছে আর মাঝে মাঝে হুক্কা টানছে, কোন কোন মেয়ে সিগারেট খাচ্ছে।ওরা ঘুরে ফিরে বাজারটা দেখলো,অনেক কিছু কেনা করলো।

রোদ আলোকে ডেকে দেখালো একটা লোক অনেক গুলো ব্যাঙ নিয়ে বসে আছে,বিক্রয় করার জন্য।তারপর বিভিন্ন গাছের বীজ এসবও বিক্রয় করা হচ্ছে।তারপর রোদ আর আলো বাজার থেকে বেরিয়ে গেল।রাস্তাতে এসে ওরা গাড়িতে বসলো ঝুলন্ত ব্রিজ দেখতে যাওয়া জন্য,আলো রোদের দিকে তাকিয়ে বলছে,,।

আলোঃগাড়ি নিয়ে যাওয়ার কি দরকার শুনি?রিকশা করে গেলেই তো হয়।ধুর বাবা ভালো লাগে না,জানেন রিকশাকে বলা হয় প্রেমের যানবাহন,,রিকশা করতে ঘুরতেই খুব মজা।
(মন খারাপ করে)

রোদঃগাধী রাঙামাটিতে রিকশা চলে না,যে আকা বাঁকা, উচু,নিচু রাস্তা রিকশা তো উল্টে যাবে।আর এখান থেকে একটু দুরে ঝুলন্ত ব্রিজ এজন্য গাড়ি নিয়েই বের হলাম।ভয় নাই আমি আস্তে ড্রাইভ করবো।

রোদ ড্রাইভ করছে আর আলো রোদের দিকে তাকিয়ে আছে,রোদ আলোর দিকে তাকিয়ে হেসে ভ্রু নাচিয়ে জিজ্ঞাসা করে কি দেখছে?আলো লজ্জা পেয়ে বাইরের দিকে তাকায়।
বেশ কিছুক্ষন বাহিরের দিকে তাকিয়ে পাহাড় দেখছিলো।তারপর আলো হুট করে চেচিয়ে রোদকে গাড়ি থামাতে বললো।রোদ আলোর এভাবে চিৎকার করা দেখে ভয় পেয়ে, এক সাইডে গাড়ি থামিয়ে দিলো,আলো গাড়ি থেকে নামতে গেলে, রোদ আলোর হাত ধরে আটকায়।-

রোদঃকি হয়েছে?মাঝ রাস্তাতে গাড়ি থামিয়ে কোথায় যাচ্ছো?(অবাক হয়ে)

আলোঃ রোদ আমার হাত ছাড়ো প্লিজ,,আমাকে যেতে দাও (কেঁদে কেঁদে)

রোদঃআলো কি হয়েছে? তুমি কাঁদছো কেন?বলো আমাকে কি সমস্যা? আর এভাবে নেমো না, অন্য গাড়ি এতে মেরে দিতে পারে তো।আর হুট করে কি এমন দেখলে তুমি?(অবাক হয়ে)

আলোঃআমি আমার আম্মু কে দেখছি রোদ?(কেঁদে কেঁদে)

রোদঃwhat?

চলবে,,
(আস্তে আস্তে সব রহস্য জানতে পারবেন, তাই হাইপার হবেন না।সারপ্রাইজ কেমন দিলাম জানাবেন।)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here