প্রেমরোগ-২২,২৩

0
749

#প্রেমরোগ-২২,২৩
#তাসনিম_তামান্না
২২

সকালে ঘুম ভাঙ্গতেই কুয়াশার উঠতে ইচ্ছে হলো না। ব্ল্যাকেটে নিজে মুড়িয়ে গুটিশুটি মেরে শুয়ে রইলো। তুষার দরজা নক করলো। কুয়াশা গলার আওয়াজ বাড়িয়ে বলল
” আপনার রুম আপনার বউ সব আপনারই তো তাহলে নক করছেন কেনো? দরজা খোলায় আছে ”
তুষার দরজা ঠেলে ভিতরে ডুকে কুয়াশার দিকে একপলক তাকিয়ে কাবাডের দিকে যেতে যেতে বলল ” সকাল সকাল মাথার তার ছি ড় ছে? ”
” ভুল কি বললাম? ”
” না তুমি কি ভুল বলতে পারো? ”
” আমি জানি আমি সবসময় ঠিকি বলি ”
কুয়াশার এমন ফ্রিলি কথা শুনে তুষার অবাক হলো। কিন্তু অবাক হওয়ার লেশমাত্র মুখে প্রকাশ না করে চোখ ছোটো ছোটো করে কুয়াশার দিকে তাকিয়ে সন্দিহান কন্ঠে বলল
” তা আগে তোমার মুখ দিয়ে কথাই বের করাই যেতো না আর এখন ফটরফটর করছ? এতো চেজ্ঞ? তোমার উন্নতি হচ্ছে না-কি অবনতি হচ্ছে ব্যপারটা ঠিক বুঝতেছি না? ”
কুয়াশা ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে বলল
” আপনার সাথে কথা বললেও দোষ না বললেও দোষ। তাহলে আমি কোন দিকে যাবো? ”
তুষার দীর্ঘ শ্বাস ছেড়ে বলল
” আমি রান্না করে রাখছি সকালে দুপুরে খেয়ে নিও। আর আসার সময় সিম এনে দিবো। ”
তুষার এগিয়ে এসে কুয়াশার ফোন নিয়ে WiFi কানেক্টেড করে দিলো। ফের বলল
” WiFi কানেক্টেড করে দিয়েছি আপাতত বাসায় কথা বলে নিও কাল বলো নি ”
” আপনি কখন আসবেন? ”
তুষার কুয়াশার মুখের দিকে তাকালো। সদ্য ঘুম থেকে উঠা তৈলাক্ত ফোলাফোলা চোখ মুখ বড্ড আদুরে লাগছে। তুষার চোখ ফিরিয়ে নিয়ে বলল
” ঠিক নাই। রাত হতে পারে আবার সন্ধ্যায় ও আসতে পারি আবার বিকালেও আসতে পারি। সমস্যা হলে আমাকে ফোন দিও নেট ওয়ান রাখবো”
” আমি একা একা কি করবো? বোর লাগবে ”
” এসেছ কেনো তুমি আসতে বলেছিলাম আমি ”
তুষারের কথায় কুয়াশার খারাপ লাগলো মন খারাপ করে বলল
” আপনার অসুবিধা হচ্ছে না? ”
” আমি সেভাবে বলি নি কুয়াশা তুমি কি করবে এখানে থেকে? বোর ফিল করবে। একা বাসা থেকো বের হতে যেও না রাস্তা হারিয়ে ফেলবে ”
কথাগুলো একদমে বলে তুষার প্রস্থান করলো। কিছুক্ষনে রেডি হয়ে বেড়িয়ে গেলো।
কুয়াশা উঠে ফ্রেশ হয়ে কফি বানিয়ে খেলো। তুষারের দেখিয়ে দেওয়া রুমটায় নিজের সব জিনিস পত্র গুচ্ছিয়ে রাখলো। গুচ্ছিয়ে রাখার মধ্যে সকালের নাস্তাও করে নিলো। সব গুচ্ছিয়ে উঠতে ১২ টা বেজে গেলো। সাওয়ার নিয়ে চুল মুছতে মুছতে জানালার পাশে গিয়ে দাড়ালো চারিদিকে সবুজ গাছপালার ওপরে সোনালি রোদ চিকচিক করছে গাডেনের ফুলগাছ গুলো অযত্নে বেড়ে উঠছে। কাল রাতের এতো কিন্তু খেয়াল করার সময় পাই নি। কুয়াশা বাসা থেকে বের হয়ে গার্ডেনে গেলো বিভিন্নরকমের ফুল গাছ তার বেশিরভাগের ফুলের নামই জানে না। কুয়াশা সব খুঁচিয়ে খুঁচিয়ে দেখলো। বাড়িতে ঢোকার কা চি গেটের দু’ধারে গোলাপি রঙের বাগানবিলাস গাছ। বাড়িটা চিলেকোঠার মতো দুতালা ত্রিকোণের দেখে মনে হচ্ছে কাঠের। কুয়াশা একটা ছোট সাদা ফুল নিয়ে কানের পিঠে গুচ্ছলো এই ফুলের নাম জানে না কিন্তু নেটে অনেক দেখেছে। ফুলের নাম ‘হোয়াইট ডেইজি’। কুয়াশা খুব ভালো লাগছে মুক্ত বিশুদ্ধ বাতাস। চারিদিকে কেমন নিস্তব্ধ কোলাহল নেই। পাখিরা ডালে স্পষ্ট শোনা যায়। গার্ডেনর একপাশটায় চারজনের টেবিলে চেয়ার পাতানো আছে। কুয়াশা কিছুক্ষণ পরিবেশটা উপভোগ করে রুমে চলে আসলো। বাড়িটাও ঠিক ভাবে দেখে নি তাই বাড়িটাও ঘুরে ঘুরে দেখে নিলো। সব সাজানো গোছানো রূপকথার গল্পের মতো। কুয়াশা ঘুরাঘুরি শেষ করে মেঘার কাছে ফোন দিলো। একবার ফোন বাজতেই সাথে সাথে ফোন ধরলো জেনো ফোনের অপেক্ষায় ছিল।
” হ্যালো মেঘা? কেমন আছিস? ”
মেঘা মেজাজ নিয়ে বলল
” তোকে ছাড়া অনেক মজা করছি। ”
কুয়াশা মেঘার কথার মানে বুঝতে না পেরে মন খারাপ করে বলল
” ওহ তাহলে মজা কর ফোন রাখি ফ্রী হয়ে ফোন দিস ”
মেঘা ধমকে উঠে বলল ” কু ত্তি একদম ফোন কাটবি না। কাল পৌঁছে ফোন দিস নাই কেনো? ”
” আসলে টায়ার্ড ছিলাম মনে ছিল না ”
” ওখানে যেতে না যেতেই আমাদের ভুলে গেলি? তাহলে আর কয়দিন পর কি হবে ”
” এমন ভাবে বলছিস কেনো? তোদের যদি ভুলেই যেতাম তাহলে কি এখন ফোন দিতাম? ”
” থাক অনেক হইছে সেন্টি খেতে হবে না। তা কি করছিস? খেয়েছিস সকালে? ”
” বসে আছি। খেয়েছি। তোরা কি করছিস? খেয়েছিস? ”
” হ্যাঁ। দাঁড়া ভিডিও কল দি তোকে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে ”
” আচ্ছা ”
কুয়াশা ভিডিও কলে সকলের সাথে কথা বলল কুশ, শান কুয়াশাকে দেখে হাত বাড়িয়ে দিল। কুয়াশা হেসে ফেললো। আবার মন খারাপ হলো কান্না পেলো হঠাৎ। কিন্তু কাদলো না নিজের মনে শান্তনা দিয়ে শক্ত করার চেষ্টা করলো। কল কেটে। কুয়াশা দুপুরের খাওয়া শেষ করে তুষার ফোন দিল
” খেয়েছ? ”
” হ্যাঁ। আপনি? ”
” খাচ্ছি। কি করছ? ”
” বসে আছি ভাবছি কি করবো? ”
” ঘুমিয়ে পড়ো। ”
” ইচ্ছে হচ্ছে না। আপনি কখন আসবেন? ”
তুষার মুচকি হেসে বলল ” আমাকে মিস করছো না-কি? ”
কুয়াশা আমতা আমতা করে বলল ” মোটেও না আমি এমনিই শুনছিলাম ”
” আচ্ছা রাখছি। ”
কুয়াশার রাতের রান্নাটাও সেরে ফেললো। কুয়াশার সারাদিন কেমন করে কেটে গেলো বুঝতে পারলো না নিজেকে কেমন বউ বউ ফিল হচ্ছে ওর। বিকালের দিকে ছাদে গেলো ছাদটা একদম ফাঁকা দোলনা, ফুল, চেয়ার টেবিল কিছু নাই। কেমন বোরিং লাগলো। কিন্তু ঠান্ডা শীতল বাতাস শরীর স্পর্শ করে চলে যাচ্ছে সেটা রেলিং এ হেলান দিয়ে উপভোগ করলো এভাবে কতক্ষণ কেটে গেলো কুয়াশার খেয়াল নাই৷ বাসার সবার কথা মনে পরছে। এখন বাসায় থাকলে ভাবিদের সাথে গল্প করলো কুশ, শান এর সাথে খেলা করতো। খুব মিস করছে সবাইকে। চোখ দিয়ে নিজের অজান্তে পানি গড়িয়ে পড়লো। তুষার চোখের পানি মুছে দিতেই কুয়াশা চমকে তাকালো।
” আপনি? ”
” হুম কাঁদছ কেনো? ”
” আপনি কখন এসেছেন ”
” অনেকক্ষণ নিচ থেকে দেখলাম তুমি ওপরে ফ্রেশ হয়ে আসলাম ”
” ওহ ”
” বললে না তো? ”
” কি? ”
” কাঁদছিলে কেনো? ”
” কই ”
” মিথ্যা বলো কেনো? ”
কুয়াশা রেলিং এ হাত দিয়ে আকাশের দিকে তাকালো সন্ধ্যা হয়ে আসছে আকাশে সবুজ রঙের আলো দেখা যাচ্ছে। কুয়াশা ভ্রু কুঁচকে কিছুক্ষণ তাকিয়ে থাকলো সবুজ রঙ গড় হতে লাগলো বলল
” ওটা কি? ”
” অরোরা ”
” সেটা কি?”
” নর্দান লাইট। এগুলো সুইজারল্যান্ড সহ আরো অনেক দেশে দেখা যায়। নিয়ন টিউবের মধ্যে নিয়ন গ্যাসের পরমাণুগুলোকে আন্দোলিত করবার জন্য ব্যবহৃত হয় বিদ্যুৎ। তাই নিয়নের বাতিগুলো এরকম উচ্চ মানের রঙ্গিন আলো দেয়। আরোরাও ঠিক এভাবে কাজ করে-তবে এটি আরো বড় মাত্রায় হয়। আরোরাগুলো মাঝে মাঝে আলোর পর্দার মতো দেখায়। তবে এরা গোলাকার অথবা সর্পিল বা বাঁকানোও হতে পারে। বেশিরভাগ আরোরাতে সবুজ রঙ এবং গোলাপী রঙ দেখা যায়। তবে অনেকসময় লাল রঙ বা বেগুনী রঙের হতে পারে। ”
” তাই? অনেক সুন্দর তো ব্যাপারটা ”
” হুম এটা সেপ্টেম্বর থেকে এ আলো দেখতে পাওয়া যায় তাছাড়া সুইজারল্যান্ড ছাড়াও আরও অনেক দেশে দেখা যায়। ”
কুয়াশা বিস্ময় চোখে আকাশের দিকে তাকিয়ে রইলো। নতুন কিছুর সাথে পরিচয় ঘটতেই। প্রেমে পড়ে গেলো। অরোরা গুলো সারা আকাশ জুড়ে বিচরণ করছে।

চলবে ইনশাআল্লাহ

#প্রেমরোগ-২৩
#তাসনিম_তামান্না

আকাশে যখন আরোরারা বিচরণ করছে তখন কুয়াশা মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে দেখছে। আর কুয়াশার মুগ্ধ বিস্মিত চেহারা দিকে তুষার অপলক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। কি সুন্দর লাগছে কুয়াশাকে। তার ফর্সা হলদেটে মুখে সবুজ রাঙা আলো এসে তিযক ভাবে পড়ছে। দুজন দুইটা তে মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে দেখছে এভাবে কতক্ষণ চলে গেলো। তুষার কুয়াশার নরম তুলতুলে মোলায়েম হাত নিজের মুঠোয় নিয়ে ঠান দিয়ে বলল
” নিচে চলো গরম পোশাক পরা নেই ঠান্ডা লাগবে”
কুয়াশা যেতে চাই না বলল ” না এতো সুন্দর একটা মজার জিনিস ফেলে কেউ যাই না-কি? ”
” আবার পরে দেখো প্রতিদিন ই উঠবে ”
তুষার কুয়াশাকে জোর করে করে নিচে আনলো। কফি বানিয়ে সাথে হালকা স্ন্যাক খেলো। কুয়াশা তখনো থাই গ্লাসেের ফাঁক দিয়ে দেখছে কফি খেয়ে অরোরার কয়েকটা ছবি তুলে মেঘার কাছে দিলো মেঘা তখন অনলাইনে নেই। তুষার কফিটা খেয়ে ল্যাপটপ নিয়ে বসলো। অরোরা চলে যেতে। কুয়াশা বোর হয়ে পাইচারি করলো এঘর ওঘর কিছুক্ষণ পর বিরক্ত হয়ে তুষারের পাশে বসে ল্যাপটপটা টান দিয়ে নিয়ে বন্ধ করে দিলো। তুষার অবাক নিয়ে কুয়াশার দিকে তাকালো কুয়াশা বলল
” ভালো লাগছে না কি করবো? ”
” আমি কিভাবে জানবো? ”
” আমার সাথে গল্প করেন। সারাক্ষণ কাজ কাজ তাহলে আমাকে বিয়ে না করে আপনার কাজকেই বিয়ে করতে পারতেন ”
কুয়াশার এমন হঠাৎ রেগে যাওয়া কারণে তুষার হতভম্ব হয়ে তাকিয়ে বলল
” আজব রেগে যাচ্ছো কেনো? কি এমন বললাম আমি? ”
” রাগবো না? আপনি আমার সাথে একটু গল্পও করেন না ”
” আমি গল্প করলে তো তোমার কাঁপা কাপি শুরু হয়ে যায় ”
কুয়াশা আমতাআমতা করে বলল ” আগে না হয় ভয় পেতাম তাই ওমন করতাম তাই বলে এখনো সেটা নিয়ে আমাকে খোঁটা দিবেন? ”
তুষার সোফায় আরাম করে বসে বলল
” তোমার এই বহুরূপী রূপটা আমি ঠিক নিতে পারছি না। ”
” মানে কি বলছেন আপনি? ”
” কিছুই বলছি না বলতে চাইছি না। তো বলো কি গল্প করতে চাও ”
কুয়াশা অসহায় চাহনি দিয়ে তাকিয়ে রইলো তুষারের পানে। এভাবে কি গল্প হয় না-কি যে বলো কি গল্প করতে চাও এমনে যদি গল্প হতে তাহলে তো হয়েই যেতো। গল্প তো হয় হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়ায় এক কথায় দুকথায় গল্প জমে এভাবে গল্প জমে না।
” আপনি একটা রসকষহীন নিরামিষ মানুষ এভাবে গল্প হয় না-কি? ”
তুষার আবার ল্যাটপটটা নিয়ে কাজ করতে করতে বলল ” তাহলে যাও। আমাকে কাজ করতে দাও ”
কুয়াশা ধুপধাপ পায়ে চলে এলো রুমে। তুষার মুচকি হেসে কাজে মন দিলো। কুয়াশা যে তাদের সম্পর্কটা স্বাভাবিক করতে চাইছে। তুষার সেটা বুঝতে পারছে। তার মনে ভালো লাগাও কাজ করছে এটা ভেবে কুয়াশা নিজের ইচ্ছেতে এগুলো করছে। কুয়াশা রুমে গিয়ে তিশার কাছে ফোন দিলো ২ বার বাজতেই ফোন তুললো তিশা। কুয়াশা বলল
” মামনি কেমন আছো? ”
” ভালে আছি তোরা কেমন আছিস? ”
” আমি আর ভালো তোমার ছেলে একটা শ য় তা ন যানো ঔ একটা নিরামিষ ”
তিশা অবাক হয়ে বলল ” কেনো কি করেছে ও? ঝগড়া করেছিস তোরা? ”
” ঝগড়া না। তোমার ছেলের এ্যাটইটিউড বেশি ঢং বললাম বোরিং লাগছে একটু গল্প করুন ওনি কাজ নিয়ে বসে আছে ”
তিশা হতাশ নিশ্বাস ছেড়ে বলল
” জানিস ই তো একটু ওমনই। তুই যদি একটু আমার ছেলেকে আমিষ বানাতে পারিস কি না দেখ। ”
কুয়াশা ফোঁস ফোঁস করে বলল
” তোমার ছেলের গোডাউন ভরা বস্তা বস্তা ভাব। শুরু আমাকেই ভাব দেখাতে পারে তোমার ছেলে ”
তিশা বুঝতে পারলেন কুয়াশা খেপে আছে তাই কথা ঘুরিয়ে বলল ” খেয়েছিস? কি রান্না করলি আজ? ”
তিশার সাথে কথা বলে ফোন রেখে মেঘার কাছে ফোন দিলো। পাখি, কুশান, মেঘ, তুতুল সকলে সাথে কথা বলল। মেঘা বলল
” শোন আমাকে একটু টিপস দে তো ”
” কিসের টিপস্? ”
” রিদটাকে একটু টাইড দিতে হবে বুঝলি। শ য় তা ন টা বড্ড বার বেরেছে ”
” তুই এখনো রিদ ভাইয়াকে নিয়ে পরে আছিস ভাইয়া কি কখনো বলেছে তোকে ভালোবাসে? ”
” না কিন্তু ওর হাবভাব কথা বলার ধরণ বলে দেয় ও আমাকে ভালোবাসে ”
” আরে বুদ্ধু আগে সিওর হ ভাইয়া তোকে ভালোবাসে কি-না নিজের মতো ভেবে নিলে তো হবে না ”
মেঘা মন খারাপ করে বলল ” যদি রিজেক্ট করে কথা বলা বন্ধ করে দেয় তখন? ”
” যা হবে দেখা যাবে ”
” দূর সবাই মিঙ্গেল ”
” আহা বাচ্চা বিয়ে করবে ”
” অনেক দিনের শখ বিয়ে কিন্তু কেউ বিয়ের কথা তো দূর একটা বফ ও জোটে না ”
কুয়াশা মেঘার কথা শুনে দম ফাটা হাাসি হেসে উঠলো। প্রাণ খোলা হাসি। কতদিন পর এমন হাসছে ঠিক নাই তুষার দরজার সামনে দাড়িয়ে কুয়াশার সে হাসি দেখলো। কুয়াশাকে রাগিয়ে দেওয়ার জন্য বলল
” এমন পে ত্নি র মতো হো হো করছ কেনো? পাশের বাসার বাচ্চাটা তো ভয় পাবে ”
কুয়াশা রেগে বলল ” আমার হাসি আমি হাসবো আপনার কি? ”
” আমার কিছু না ভয় পেয়ে দেখতে আসলাম কে হাসছে ”
কুয়াশা ফোন রেখে বলল ” আসতে বলেছি আমি আপনাকে? যান আপনার ল্যাপটপ বউয়ের কাছে যায় ”
তুষার ভ্যাবাচ্যাকা খেয়ে বলল
” ল্যাপটপ আমার বউ? ”
” তা নয় তো কি? সারাদিন ওর সাথেই তো থাকেন আমি যে আপনার বউ সেদিকে আপনার খেয়াল থাকে না ”
” কি ব্যপার বলো তো আসা থেকে সারাদিন বউ বউ করে মাথা খাচ্ছো ”
কুয়াশা মুখ ভেংচি কেটে বলল ” আমি আপনার বউ তো আপনার মনে থাকে না তাই আপনাকে বার বার বলে মনে করিয়ে দি। যান আপনি আপনার কাজে যান আমারকে আমার কাজ করতে দিন ”
” খেতে এসে রাত হয়েছে ”
” খেতে ইচ্ছে হচ্ছে না ”
তুষার ধমক দিয়ে বলল
” তারাতাড়ি আসো ”
কুয়াশা খেতে খেতে অনেক কথা ভাবছে তুষার কে কিভাবে টাইট দিবে। কুয়াশা বলল ” আচ্ছা। আপনি ঔযে অন্ধকার রুমটায় যখন আমার গলা চে পে ধরেছিলেন তখন ঠোটে আঙ্গুল বুলিয়ে কি যেনো বলছিলেন? ”
তুষারের বিষম লেগে গেলো। দ্রুতো পানি খেলো। কুয়াশা মুখ টিপে হেসে বলল ” আপনার তো অধিকার ছিল আমার সাথে যা ইচ্ছে করার তাহলে কিছু করেন নি কেনো? নাকি আপনার কোনো সমস্যা আছে”
তুষার গম্ভীর কন্ঠে দাতে দাত চেপে বলল ” তোমার ইচ্ছে বিরুদ্ধে কিছু করার ইচ্ছে ছিলো না। আর সারাদিন যে বউ বউ করো আমি যদি স্বামী গিরিফলাতে শুরু করি না পালানোর পথ পাবে না ”
তুষারের কথায় কুয়াশার লজ্জায় কান গরম হয়ে গেলো। মুখ রক্তিম আভা ফুটে উঠলো। তুষার সেটা দেখে শব্দ করে হেসে দিলো। কুয়াশা তুষারের সামনে বসে থাকতে পারলো না দৌড়ে রুমে গিয়ে দরজা বন্ধ করে জোরে জোরে শ্বাস নিতে লাগলো। কই তুষার কে জব্দ করে গিয়েছিল। সেখানে কিনা নিজেই জব্দ হয়ে আসলো। ছিঃ ছিঃ কি লজ্জা কি লজ্জা। কুয়াশা দু’হাতে মুখ ডেকে নিলো।
চলবে ইনশাআল্লাহ

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here