#প্রেমরোগ-২৬,২৭
#তাসনিম_তামান্না
২৬
কুয়াশা ঘুম থেকে উঠে সবার আগে চিরকুটের কথা মাথায় আসলো ফ্রেশ না হয়ে ডাইনিং টেবিলের কাছে এসে দেখলো আজ কোনো চিরকুট নাই। মন খারাপ করে পিছনে ফিরতেই ঝটকা খেলো তুষার সোফায় বসে মনযোগ দিয়ে ল্যাপটপে কি করছে। কুয়াশা চিরকুটে জন্য অন্য দিকে খেয়াল করে নি। কুয়াশা ভাবলো আজ কি তারাতাড়ি ঘুম ভাঙলো নাকি ও স্বপ্ন দেখছে? হ্যালুসিলেশন? কুয়াশা দু হাতে চোখ কোচলে ভালো করে দেখলো না তুষার ই বসে আছে। আশ্চর্য কণ্ঠে বলল
” আমি এখানে? অফিসে যান নাই? ”
তুষার কুয়াশার দিকে তাকালো সদ্য ঘুম থেকে উঠে আসা ফোলাফোলা চোখ মুখে অবাক হয়ে তাকিয়ে থাকা রমনির মুখোভঙ্গি দেখে হেসে তুষার বলল
” না। আজ ছুটির দিন। তাছাড়া সন্ধ্যায় পার্টি আছে”
” ওহ। খেয়েছেন? ”
তুষার নিজের কাজে মনযোগ দিয়ে বলল
” উহুম ফ্রেশ হয়ে আসো একসাথে খাবো ”
কুয়াশা খুশি হয়ে মাথা দুলিয়ে চটপট ফ্রেশ হয়ে আসলো। দু’জনে খেতে খেতে টুকটাক কথা বলল
” খেয়ে রেডি হয়ে নাও ”
কুয়াশা খাওয়া থামিয়ে তুষারের দিকে তাকিয়ে বলল
” কেনো? ”
” তোমাকে নিয়ে শপিং এ যাবো। আজ সন্ধ্যায় পার্টিতে যাবে তুমি ”
” অফিস পার্টি তে গিয়ে কি করবো আমি? আপনি ব্যস্ত থাকবে। আমি কাউকে চিনিও না ”
” তোমার কাছে শুনছি আমি তুমি যাবে কি যাবে না। রেডি হয়ে থাকবে ব্যস ”
কুয়াশার রাগ হলো তুষারের কথায় বলল
” আমি যাবো কি যাবো না সেটাও আপনি ঠিক করবেন? ”
” অবশ্যই তুমি সারাদিন বউ বউ করে লাফাও ভাবলাম আমি বরের রোল প্লে করি। তাইলেই নাটক টা জমবে ”
তুষারের নাটক কথাটা কুয়াশার খারাপ লাগলো। ও যা করছে মন থেকে করছে এখানে নাটক কোথা থেকে দেখলো। কুয়াশার গলার আওয়াজ মিহি করে বলল
” এটা নাটক মনে হচ্ছে আপনার? ”
” নাহ। ”
” তাহলে? ”
” আ’ম ইউর হাসবেন্ড সো রাইট আছে তোমার ওপর অধিকার খাটানোর ”
” তাই বলে জোর করবেন? ”
” অবশ্যই কেনো না? তুমি জোর করে এখানে আসতে পারো আমি তোমাকে জোর করতে পারি না? ”
কুয়াশার মন খারাপের তিব্রতা বাড়তে লাগলো।
” আমি এসেছি আপনি খুশি হন নি? ”
” তোমার কি মনে হয়? আমি খুশি না? ”
” আপনার কোনো উচ্ছ্বাস প্রকাশ করতে দেখি না ”
” সব অনুভূতি প্রকাশ করতে নেই। আমি অনুভূতি প্রকাশ করলে তুমি নিতে পারবে তো? ”
তুষারের কথা বুঝতে না পেরে কুয়াশা জিজ্ঞেসসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে বলল
” মানে? ”
” কিছু না। তুমি এখনো বাচ্চা এসব বুঝবে না ”
কুয়াশা রেগে গেলো কন্ঠে ঝাঁঝ ঢেলে বলল
” সবসময় আমাকে ইনসাল্ট না করলে চলে না আপনার? আর কাকে বাচ্চা বলছেন হ্যাঁ? এতোদিন সংসার করলে দশ-পনেরো টা বাচ্চা হয়ে যেতো! আর আপনি আমাকে বাচ্চা বলছেন? ”
তুষার চোখ বড়বড় করে বিস্ময় নিয়ে বলল
” দশ-পনেরো টা? ”
তুষারের কথা শুনে কুয়াশার খেয়াল হলো রাগের মাথায় কিসব আজেবাজে কথা বলছে। লজ্জায় ম রে যেতে ইচ্ছে করলো। কুয়াশা কে লজ্জা পেতে দেখে তুষার শব্দ করে হেসে উঠলো কুয়াশা দৌড়ে রুমে এসে নিজেকে বকতে বকতে রেডি হয়ে নিলো।
তুষার রেডি হয়ে ড্রাইংরুম সোফায় বসে ফোন টিপছিল কুয়াশা একেবারে শাওয়ার নিয়ে এসে বলল
” চলুন ”
তুষার উঠে দাঁড়িয়ে ফোন পকেটে ঢুকতে ঢুকতে বলল
” এতোক্ষণ লাগে? সবাই ঠিকি বলে মেয়ে মানুষ মানেই ঝামেলা ”
কুয়াশা স্থির দৃষ্টি তুষারের ওপরে রেখে বলল
” আমি ঝামেলা? ”
” তা নয় তো কি? ”
” আচ্ছা। চলুন ”
” মেনে নিলে? ”
” হ্যাঁ আমি সবার কাছে ঝামেলা বোঝা এটা না মানার কি আছে? ”
তুষার খেয়াল করলো কুয়াশার চোখের অশ্রু আভাস তুষার এগিয়ে এসে কুয়াশাকে বুকের মধ্যেখানি জড়িয়ে ধরে বলল
” এই পাগলি আমি কি সেভাবে বলেছি নাকি তোমাকে রাগানোর জন্য বলেছি। আমার কথা এতো সিরিয়াসলি নিচ্ছ কেনো? ”
কুয়াশা আদুরে বিড়ালের মতো তুষারের বুকে মাথা দিয়ে হৃদয়স্পন্দন শুনছে তুষারের কথার প্রতিত্তরে বলল
” সবাই তো আমাকে দয়া করেন। আপনারা দয়া করে থাকতে না দিলে তো এতোদিন আমি বিলীন হয়ে যেতাম ”
” হুসসস। এসব কি কথা হ্যাঁ? যদি কুয়াশা বিলীন হয়ে যাবে সেদিন তুষার ও বিলুপ্ত হয়ে যাবে। আর এতো কঠিন কথা তোমাকে কে বলছে হ্যাঁ? আমার যা সব কিছু তোমার ও। ”
কুয়াশা তুষারের বুক থেকে মাথা তুলে তাকালো তুষারের মুখোপানে। তুষার কুয়াশার হাত ধরে বলল
” চলো। আজ আমরা ঘুরে বেড়াবো। তোমার মন খারাপ দূর করে দিবো। চোখে পানি আসার আগেই যেনো তোমার সব খারাপ লাগা দুঃখ কষ্ট জেনো দূর করতে পারি ”
সুইজারল্যান্ডের বৃহত্তম জুরিখ নগরী পিচের রাস্তায় দুপাশ দিয়ে ত্রিভুজাকৃতির সারি সারি বাড়ি। বাড়িগুলো একে অন্য থেকে বেশ দূরত্ব একাক বাড়ির একাক রংয়ের। সবুজে ঘেরা চারিদিক যতদূর চোখ যায় দূর পাহাড়ের গিয়ে আঁটকে যায়। সোনালী রঙের রোদ ঝলমল করলেও শীতের পোশাক পরা। রাস্তায় তেমন লোকজনের দেখা নেই কেমন নিস্তব্ধ কোলাহল মুক্ত বিশুদ্ধ বাতাস শরীর থেকে কোমল হৃদয় পর্যন্ত স্পর্শ করে যাচ্ছে। সব যেনো রূপকথার গল্পের মতো। প্রকৃতির ও যে এতো সুন্দর হয় না দেখলে বিশ্বাস ই হতো না। তুষার কুয়াশা একটা গলির মধ্যে ঢুকলো। এখানে দুপাশে উঁচু উঁচু দালান-কোঠা লতানো ফুলগাছ গুলো উপরের দিকে উঠেছে সুগুলায় ফুল ফুটেছে। কি অপররূপ সুন্দর।
” কেমন লাগছে? ”
কুয়াশা তুষারের বাহু জড়িয়ে ধরে কাঁধে মাথা রেখে বলল
” অনেক ভালো। এতো সুন্দর কেনো সব কিছু ”
” যার মন সুন্দর তার কাছে সব কিছু সুন্দর স্বচ্ছ লাগে ”
” তাহলে কি আমার মন সুন্দর? ”
” তুমি ঝগরুটে সারাক্ষণ ঝগড়ার মুডে থাকো ”
কুয়াশা রেগে বলল
” আমাকে না খেপালে হয় না আপনার? আর আমি৷ ঝগড়া করি আর আপনি বসে থাকেন? ”
” আমি খেপালে তুমি খেপো কেনো? না খেপলেই হয়। ”
” আপনার কথা শুনলেই তো মাথায় রাগ উঠে যায় ”
” কেমন মাথা তোমার? যে আমার কথা শুনলেই গরম হয়ে যায়? দেখো তোমার মাথায়ই গন্ডগোল আছে ”
কুয়াশা ঝট করে তুষারের হাত ছেড়ে দিয়ে বলল
” আপনি আমাকে ইন্ডাইরেক্টলি পা গ ল বলছেন? ”
তুষার ইনোসেন্ট ফেস করে বলল
” ইন্ডাইরেক্টলি না ডাইরেক্টলি বলছি ”
কুয়াশা রেগেমেগে বলল
” খুব খারাপ আপনি। সবসময় এমন করেন ”
বলে ধুপধাপ পা ফেলে সামনের দিকে চলে গেলো তুষার হেসে কুয়াশার রাগ ভাঙ্গাতে গেলো। সারাদিন ঘুরাঘুরি কেনাকাটা বাইরের খাবার খেয়ে বিকালে বাসায় ফিরে রেস্ট নিলো। সন্ধ্যায় পার্টি কুয়াশা যেতে না চাইলেও এখন এক্সাইটেড ফিল হচ্ছে। এখানকার পার্টি কেমন হবে? স্পেশাল সামথিং কিছু হবে নিশ্চিয়ই। ভেবেই আনন্দিত অনুভব করছে। সাথে নতুন ড্রেস। আজকের পার্টিতে ভেবে রেখেছে গাউন পরে যাবে।
” এতো লাফাচ্ছ কেনো? বললে যে যাবে না? ”
” একশোবার যাবো আপনি কি করবেন হুহ্ ”
চলবে ইনশাআল্লাহ
#প্রেমরোগ-২৭
#তাসনিম_তামান্না
সন্ধ্যা পার্টিতে যাওয়ার জন্য কুয়াশা একটা পিংক কালারের গাউন পড়েছে চুলগুলো পনিটেল করে বাধা, মুখে হালকা মেকাপ দেখতে পুরা এক আস্ত পুতুলের মতো লাগছে। তুষার কালো কোর্ট পড়েছে। ড্রাইংরুমের সোফায় বসে ফোন টিপছে আর বার বার কুয়াশাকে ডাক দিচ্ছে। কুয়াশা এ নিয়ে ৫ মিনিট ৫ মিনিট করে আধা ঘণ্টা পার করে দিয়ে তুষার প্রচন্ড রাগ লাগছে। আরো ১০ মিনিট পর কুয়াশা বের হয়ে বলল
” আমাকে কেমন লাগছে? ”
কুয়াশার কন্ঠ শুনে রাগ ঝাড়বে বলে মাথা তুলে তাকাতেই বাক হারা হয়ে ফ্যালফ্যাল করে তাকিয়ে রইলো। কুয়াশা লজ্জা পেয়ে বলল
” এমন করে কি দেখছেন? ”
” তোমাকে। একদম পুতুলের মতো ”
কুয়াশা লজ্জায় শুকনো ঢোক গিললো। তুষার কতক্ষণ তাকিয়ে রইলো ওভাবে। কুয়াশা এবার বলল ” যাবেন না? দেরি হয়ে গেছে ”
তুষারের হুঁশ আসলো। ঘড়ির দিকে তাকিয়ে বলল
” হ্যা চলো তারাতাড়ি। বার-বার ফোন দিচ্ছে ওখান থেকে ”
তুষার ড্রাইভ করতে করতে কতবার যে কুয়াশা দিকে তাকালো। কুয়াশা বুঝে বলল
” সামনের দিকে তাকিয়ে গাড়ি চালান এভাবে চালালে দূর্ঘটনা ঘটতে পারে। আমি কোথাও পালিয়ে যাচ্ছি না পরে আমাকে দেখেন ”
তুষার গাড়ি চালানোই মন দিয়ে বলল
” তুমি ও আমাকে দেখছিলে বুঝি নাহলে বুঝলে কি করে আমি তোমাকে দেখছি ”
” আজ্ঞে জি না মিস্টার দূর থেকে কেউ তাকিয়ে থাকলেও মেয়েরা বুঝতে পারে ”
” তাই না-কি ”
” জি ”
” এতো ভদ্র হয়ে গেলে কিভাবে? ঝাঁঝের রানীর ঝাঁজ নেয় যে আজ ”
” আমার সবকিছুতেই দোষ খুঁজে পান আপনি? ”
পার্টিতে জাঁকজমকপূর্ণ অবস্থা সফট মিউজিকে ডান্সফ্লোরে ডান্স করছে কয়েকজন। আকাশে অরোরা আর নিচে রং বেরংয়ের ফেরিলাইট। কি মুগ্ধকর দৃশ্য। এখানকার লোকেদের কাছে অরোরা কোনো ব্যপার না এটা স্বাভাবিক তাদের কাছে কিন্তু নতুন যারা আসে তাদের কাছে কি অদ্ভুত আজব ব্যপার মনে হয়। মুগ্ধ চোখে তাকিয়ে থাকে সারাক্ষণ দেখলেও মনপ্রাণ জুড়ায় না। কুয়াশার ও হয়েছে সেই অবস্থা অরোরা উঠলেই আকাশের দিকে তাকিয়ে থাকে। মেঘের মতো ধীরে ধীরে অরোরা গুলো নিজের স্থান পরিবর্তন করে। রং বেরংয়ের এমন খেলায় কুয়াশা মুগ্ধতা যেনো কাটেই না। তাই তো তুষার কুয়াশাকে ‘মুগ্ধময়ী’ বলেছে। পার্টিতে দুজন দুইজনের হাতে হাত দিয়ে পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সকালে সাথে আলাপ করছিলো। কুয়াশা এদেশের ভাষা বুঝে না তবে এখানে বেশ কয়েকজন বাঙালি আছে তাদের সাথে কথা বলে স্থতিবোধ করছে। অন্যদের ইংরেজি তে কথা বলতে গেলেও কেমন বেঁধে যাচ্ছে কেউ কিছু মনে করছে না সকলে খুব মিশুক কিন্তু কুয়াশার নিজের কাছে খুব অসহায় লাগছে। মনে মনে নিজেকে বকছে, গা-লা-গা-ল করছে কেমন আসতে গেলো ভেবেই কান্না পাচ্ছে। কুয়াশার এমন ফেস দেখে নির্জনে এনে তুষার বলল
” কি হয়েছে? এনি প্রোবলেম? ”
” আমি এ ভাষা পারি না কেনো? ইংরেজি বলতে গেলেও কেমন বাঁধা পাচ্ছে ”
” আরে তুমি কি বোকা প্রথম প্রথম আমারও এমন হয়েছিলো। ইট’স নরমাল এটাতে কেউ কিছু মনে করছে না ”
” আমি আমাকে এভাষা শিখাইবে কি না বলেন? ”
তুষার রেগে বলল
” খাতা- কলম এনে এখন শেখানো শুরু করি?”
কুয়াশা বোকাসোকা চাহনি দিলো। তুষার আবার বলল ” মুখ ঠিক করে থাকবে। তোমার মুখ গোমড়া যেনো না দেখি ”
” আমার মুখ আমার ইচ্ছে ”
” ওমন করে থাকলে তোমাকে পে ত্নী র মতো লাগে ”
” আপনি আবার আমাকে খেপাচ্ছেন? ”
” আমি বলি নি আমাকে আমার এক কলিগ বলল ”
কুয়াশা রাগে ফোঁস ফোঁস করলো। কিছু বলল না। কিছুক্ষণ পর আবার ওরা পার্টিতে এটেন্ট করলো। কুয়াশা একজায়গায় চুপ করে বসে আছে। তুষার কে অনেকক্ষণ ধরে খেয়াল করছে। একটা মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বলছে কোনো দিকে খেয়াল নেই। মেয়েটা দেখতেও সুন্দর ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরা কিন্তু বাঙালি কিছুক্ষণ আগেও কুয়াশার সাথে পরিচয় হয়েছে। কুয়াশা রাগে ফোঁস ফোঁস করছে পারলে এখনি এই মেয়ের চুল গুলো টে নে ছিঁ ড়ে ফেলতো। আর তুষারকে পানিতে চু বি য়ে রাখতো কত বড় ফ্লা ট বা জ বউয়ের সামনে অন্য মেয়ের সাথে ফ্লা ট করছে। মনে একটুও ভয়ডর নেই? কুয়াশার রাগে দাঁত কিরমির করছে। তুষার কুয়াশার দিকে খেয়াল হতেই ভ য়ং ক র দৃষ্টিতে ফেঁ সে গেলো। শুঁকনো ঢোক গিলে কুয়াশার পাশে বসে বলল
” কি হয়েছে বউ? এমন করে তাকিয়ে আছো কেনো? ”
কুয়াশা রাগে গজগজ করতে করতে বলল
” তুই যে কি পরিমাণ লু ই চ্চা তুই নিজেও জানিস না ”
তুষার ভ্রু কুঁচকে গেলো বলল
” লু চ্চা মির কি করলাম বউ? এখনো তো কিছুই করলাম না তোমার সাথে ”
” এই তুই আমার সামনে থেকে দূর হ যা ঔ মেয়ের সাথে হেসে হেসে কথা বল। আমার সাথে কথা বলতে গেলে তো তোর মুখে মধু থাকে না ”
” তোমার যে কখন হুটহাট মুডসুইম হয় বোঝা মুসকিল। যায় হোক তুমি যেটা ভাবছো তেমন কিছু নয়। আমরা কলেজে একসাথে পরতাম কিন্তু তেমন কথা হয় নি হাই, হ্যালো। তাছাড়া আমাদের কোম্পানির সাথে ওদের কোম্পানি আজ ডিল হচ্ছে নিউ প্রজেক্টের জন্য ”
” বাবাহ। হাই, হ্যালো হতো। ”
তুষার হেসে বলল
” আর ইউ জেলাস কুয়াশা ”
” আমি জেলাস না তুই যে কত পরিমাণ লু ই চ্চা সেটাই দেখছিলাম ”
” বউ এতো খেপোনা শরীরের জন্য ক্ষতিকর ”
কুয়াশা চোখ পাকিয়ে তাকালো। তুষার হাসতে হাসতে চলে গেলো। কুয়াশা যে ভালো মতো পুড়ছে সেটা বেশ বুঝতে পারছে তুষার এটাও বুঝতে পারছে কুয়াশা ওকে ভালোবাসে শুধু পাখি ধরা দিচ্ছে না। ওদের আর কথা হয় নি তুষার ও ব্যস্ত হয়ে পড়লো। কুয়াশা একটা ভুল করে ফেললো। পার্টি জুস মনে করে ড্রিংক খেয়ে ফেললো। প্রথমে ভালো লাগলেও পরপর খেতে লাগলো। ড্রিংক খেয়ে মাথা হ্যাং করে বসে রইলো। উঠে দাড়ালেই মাথা ঘুরছে। তুষার সব ফর্মালিটি শেষ করে কুয়াশাকে টেবিলে মাথা দিয়ে চোখ বন্ধ করে রাখতে দেখে ঘাবড়ে গেলো বলল
” কুয়াশা শরীর খারাপ লাগছে? ”
উত্তর আসলো সামনে এতোগুলো গ্লাস দেখে হাতে নিয়ে বুঝতে পারলো কুয়াশা ড্রিংক খেয়ে ফেলছে। তুষারের মাথায় হাত উঠে গেলো। তারাতাড়ি কলিগ দের বলে কুয়াশাকে কোলে তুলে গাড়িতে বসালো। ঘুমিয়ে আছে। তুষার নিজেকে বলছে কুয়াশার খেয়াল রাখতে পারে নি বলে। কুয়াশা পিটপিট করে চোখ খুলে বলল
” আমি আকাশে উড়ে ঔ অরোরা গুলো ছুঁয়ে দিবো”
তুষার বিরবির করে বলল ” মা ত লা মি শুরু হয়ে গেছে ”
কুয়াশা উঠে দাঁড়াতে গেলো গাড়ির সাথে বাড়ি খেলো প্রচন্ড ব্যথায় মাথায় হাত দিয়ে কেঁদে ফেললো। তুষার চমকে তাকালো।
” খুব লাগছে? ”
” হ্যাঁ এই শ য় তা ন টা আমাকো ব্যথা দিয়েছে একে আমি মা র বো ”
বলে গাড়িতে মা র তে লাগলো তুষার থামানোর চেষ্টা করেও পারলো না। একসময় ক্লান্ত হয়ে কুয়াশা নিজেই থেমে গেলো আবার ঘুমিয়ে গেলো তুষার তারাতাড়ি ড্রাইভ করে বাসায় আসলো। কুয়াশাকে কোলে তুলে রুমে এনে শুয়ে দিলো কুয়াশা গলা জড়িয়ে ধরেছে ছাড়ার নাম নিচ্ছে না পিটপিট করে চোখ খুলে মিলিয়ে দিলো ওষ্ঠ জোড়া… থমকে গেলো সব কিছু….
চলবে ইনশাআল্লাহ