কত কিছুই তো মনে পড়ে। সুখের কথা। দুঃখের কথা। জীবনটা এতো ছোট অথচ কত শত মুহুর্ত অসহ্য সুখের কথা মনে পড়ে। ঘড়িতে রাত ৩টা বাজে। নেহা ব্যালকনিতে বসে, আনমনে বাহিরে তাকিয়ে আছে। আর কিছু পুরানো স্মৃতি মনে করে কষ্টে পাচ্ছে। চোখ থেকে কয়েক ফুটা পানি গাল বেয়ে বেয়ে পড়ছে..ঠিক তখনি নেহার ফোনে কল বেজে উঠল….অপরিচিত নাম্বার দেখে কিছুটা ইতস্তত হয়ে পড়ে ভাবতে থাকে এতো রাতে কে কল করেছে রিসিভ করবে না।পড়ে আবার ভাবে যদি কেউ বিপদে পড়ে থাকে,না রিসিভ করা দরকার। রিসিভ করার সাথে সাথে ওপাশ থেকে ছেলে কন্ঠে বলে আসসালামু আলাইকুম। কন্ঠটা শুনার পড়ে নেহার বুকে মুচড় মেড়ে উঠলো কন্ঠটা তার চিরচেনা একজনের।নেহা একাই মনে মনে বলতে থাকে না না একি করে সম্ভব ওপাশ থেকে আবারও সালাম দিয়ে উঠে।
“ওয়ালাইকুম আসসালাম,,, কে?”
“নেহা আমি আদম,তোর আদমক্ষুর আমার ভয়েস তুই চিনতে পারছিস না??”
_নেহা চমকে যায়। মনে মনে বলতে লাগে “৫বছর আগে আমার আদম ব্রেক আপ করে সে তো লন্ডন চলে গেছে। সে আমার কি ভাবে হতে পারে, নাহ্ আদম আমার নাহ্ অন্য কারো।”
“আমি জানি তুই আমার উপরে অভিমান করে আছিস,অভিমান করাটা স্বাভাবিক আমি যা করেছি তার জন্য তো অভিমান আবশ্যক..নেহা তুই কি কাল আসতে পারবি যেখানে আমাদের শেষ দেখা হয়েছিল। সেই বট গাছের নিচে আমি তোর সাথে কাল দেখা করতে চাই প্লিজ মানা করিস না প্লিজ প্লিজ প্লিজ প্লিজ নেহা”
_নেহা কখনো আদম এর কথা ফেলেনি তাই আজও তার কথা ফেলতে পারেনি।আর এতকরে রিকুয়েস্ট করছে,কিভাবে ই’ভা না করবে।
” আচ্ছা বিকেল ৪টায় আমি আসবো”
-ফোন কেটে নেহা ফ্ল্যাশব্যাক এ চলে যায়।৫ বছর আগে নেহা ভার্সিটি লাইব্রেরিতে ছিলো আদম কল করে বলে এক্ষনি বট গাছের এখানে আসার জন্য,নেহা এসে দেখে আদম আগে থেকেই বসে ছিল।
“কি হয়েছে তুই তো জানিস এখন আমি ব্যস্ত আছি ইমাজেন্সি আসতে বললি কেন??”
” আমাকে তুই ভুলে যা।সব কিছু নতুন করে শুরু কর। ভালো ছেলে দেখে বিয়ে করে নিস।”
“মানে?এই তুই কি বলছিস এসব। পাগল টাগল হয়ে গেছোস নাকি?তুই এখানে বস”
– নেহা ধরে আদম কে বসাতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। আদম ধাক্কা দিয়ে বলে।
“আমি একদম ঠিক আছি।আমি পাগল হইনি বরং তুই পাগল হয়ে গেছিস।ক্ষমা কর আমি তোর থেকে ব্রেক আপ চাই মুক্তি চাই আমাকে ভুলে যা”
-আদম চলে যাচ্ছে নেহা সামনে এগিয়ে যায়।
“এই আদমক্ষুর তোমার কি হয়েছে। আমাকে বলো। কেন?এগুলা বলছো। আমি কি কিছু করেছি। কোথাও ভুল হয়েছে আমার। আচ্ছা তার জন্য সরি এখানে বসো মাথা ঠান্ডা করো”
” তোর কোন দিক দিয়ে আমার মাথা গরম মনে হয়।আমার সামনে থেকে চলে যা নেহা,না হলে হাত উঠে যাবে সর আমার সামনে থেকে।”
“উঠুক তাতে আমি মাইন্ড করবো না। তুমি বলো আমি কি করেছি যার জন্য ব্রেক আপ চাচ্ছো?
” আমি বাধ্য নয় তোর প্রশ্নের জবাব আমি দিতে পারবনা। প্লিজ আমাকে ভুলে যা নেহা আমাকে ভুলে যা।”
-আদম আবারও ধাক্কা দেয়। নেহা নিচে পড়ে যায়। আদম সামনে থেকে বাইক নিয়ে চলে যায়। নেহা অবাক হয়ে তাকিয়ে দেখছে। আর ভাবছে যে আদম কিনা পুরা ক্যাম্পাসে ভার্সিটিতে বলে দিয়েছে নেহা শুধু তার। কখনো অবহেলা করেনি হঠাৎ কিছু দিন ধরে কি হয়ে গেলো যে এত অবহেলা করছে।এমনি আজ ধাক্কা দিয়ে ফেলে দিয়েছে।আদম তো এমন ছিলনা।না আর ভাবতে পারছে না।নেহা ও হোস্টেলে চলে যায়। দুই দিন পার হয়ে যায়। না কল না কোন মেসেজ; না আসে ভার্সিটিতে আদম। নেহা ভেবেছে হয়তো তার রাগ কমে গেলে ফিরে আসবে বা কল করবে কিন্তু তার ভাবনায় ছেদ পড়লো। পাচঁ দিন পড়ে নেহা আদমের বন্ধু সালমান তাকে জিগ্যেস করাতে সে বলে ওই দিন রাতেই নাকি লন্ডন চলে গেছে।এ কথা শুনে নেহার আকাশ ভেঙ্গে পড়ে।কি করবে বুঝতে পারছে না বিশ্বাস করতে পারছে না;আদম কি করে এভাবে চলে যেতে পারে। না জানিয়ে
“অবশ্যই আগে থেকেই প্ল্যান করে রেখেছে… একদিনে তো সব কিছু সম্ভব হয়ে উঠবে না.. আমার সাথে শেয়ার ও করলো না.. তাহলে কি আদম আমাকে ঠকালো”
_নেহা ফ্ল্যাশব্যাক থেকে বেরিয়ে বড় নিশ্বাস ফেলে রুমে এসে লাইট অফ করে শুয়ে পরে।
___________________
[বাকিটা পরবর্তী পর্বে]
……………………………..
ভুলক্রটি-ক্ষমা-দৃষ্টিতে-দেখবেন। আর অবশ্যই আপনাদের মূল্যবান মতামত টুকু দিয়ে যাবেন। ধন্যবাদ সবাইকে।
#গল্পঃসত্যিকার-ভালোবাসা।#লেখিকাঃস্মৃতি-ইসলাম।
#পর্বঃ০১