#নীরবতা
#নাইমা_জাহান_রিতু
#পর্ব_৩৭
আলাউদ্দিন শেখের পায়ে পানি ধরেছে। পা ফুলে টসটসে হয়ে রয়েছে দু’দিন যাবৎ। ঘটনা মেসবাহকে ফোনে জানানোর পর ঔষধের নাম বলে দিলে তা খেয়ে সামান্য কমলেও আজ সকালে আবারও বেড়েছে। তাই শেষমেশ আজ মুবিন আসার পর তাকে নিয়ে হাসপাতালে গিয়েছিল সে। ডাক্তার দেখিয়ে ঔষধপত্র নিয়ে এসেছে। দুনিয়ায় এই জীবনে মনে হচ্ছে হায়াৎ দিনেদিনে কমে আসছে তার। দ্রুত মৃত্যু ঘনিয়ে আসছে। তবে অনেক কাজই যে এখনো অসম্পূর্ণ রয়েছে! ছোট মেয়ের হত্যাকারীর শাস্তির খবর না শুনে মরে গেলেও শান্তি পাবে না সে। বড় মেয়েকে বিয়ে দিয়ে ঝামেলা চুকিয়ে ফেললেও বড় ছেলেটা নিঃসঙ্গ জীবন যাপন করছে। তারও একটি গতি করে দিতে হবে। ওদিকে মেজোটা মোটামুটি থাকলেও ছোট ছেলেটার পড়াশোনাও এখনো শেষ হয়নি। তার একমাত্র নাতিন, যার দুনিয়ায় মা থেকেও নেই। এসব রেখে দুনিয়া থেকে বিদায় নিলে সব এলোমেলো হয়ে যাবে। জীবনে ছেলেমেয়েদের উপর কম অধিপত্য খাটায়নি সে। মেয়েকে তো তার এই অধিপত্যের জোরেই জীবন দিতে হলো। আজও তার চিঠি লুকিয়ে লুকিয়ে পড়ে নীরবে চোখের জল ফেলে সে। বুকের ভেতরটা ব্যথা করে। খুব কষ্ট হয়। বারবার তার ভেতরের দাম্ভিকতা ভেঙে চুরমার হয়ে যায়। সে খারাপ মানুষ। তার উদ্দেশ্য খারাপ। আল্লাহর ঘরে গিয়ে হজ্ব পর্যন্ত করে এসেছে সে গ্রামে নিজের নাম ও প্রতিপত্তি পাবার উদ্দেশ্যে। তার মতো নিকৃষ্ট মানুষ এদুনিয়ায় থাকা মানায়ও না! আজ তার ছেলেমেয়েরা ভদ্র সভ্য বলে নীরব থেকেও তার আদেশ মাথা পেতে মেনে নেয়। নয়তো তারা একেকজন যে অবস্থায় অবস্থান করছে তাতে এই বুড়ো বাপের আদেশ পরোয়া কেনো করবে? তবে তারা এই বুড়োর কথা পরোয়া করে। বড় ছেলের বউ মনমতো না হওয়ায় যখন বুদ্ধি করে মিথ্যা অপবাদ দিয়ে তাকে বাড়ি থেকে বিতাড়িত করলো তখন মুখ বুজে নীরবে তার আদেশ মেনে নিয়েছিল মাজহারুল। মেজো ছেলে মেসবাহ দেশের বাইরে থেকে ড্রিগ্রী নিয়ে আসা ডাক্তার হওয়া সত্ত্বেও তার কথায় গরীব ঘরের বাচ্চা এক মেয়েকে বিয়ে করলো! অনা তো ভুল কিছু বলেনি। সে লোকের কথায় বিচলিত হয়েই তার দুই ছেলের উপর নিজের সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দিয়ে তাদের জীবনটা নষ্ট করে দিয়েছে। বুকচিরে একটি দীর্ঘশ্বাস বেরিয়ে এল আলাউদ্দিন শেখের। বালিশে হেলান দিয়ে চোখজোড়া বুজলো সে। নিজেকে সে সর্বজ্ঞানী সবজান্তা ভাবে। ভাবে তার সিন্ধান্তই এই পৃথিবীর সবচেয়ে উত্তম সিদ্ধান্ত। তার চিন্তাধারাই সঠিক চিন্তাধারা। তবে অনার মৃত্যুর পর পদে পদে বুঝেছে সে। প্রতিটি ক্ষণে ক্ষণে জীবন তাকে দু’চোখে হাত দিয়ে স্পষ্ট দেখিয়ে দিয়েছে নিজেকে নিয়ে তার ধারণা গুলো ভুল। এই যেমন অনার বান্ধবী চৈতালিকে খুনি বলে তাকে যাচ্ছেতাই ভাষায় গালিগালাজ করেছিল সে। পুরো গ্রামবাসীর সামনে তাকে হেয় করেছিল। অথচ কিছুদিন পর যখন অনার হত্যাকারীকে রিমান্ডে নেবার পর পুরো ঘটনা আদ্যোপান্ত খুলে বলেছিল সে তখন তার ধারণা কতটা ভুল তা প্রমাণিত হয়েছিল। সেদিন নিজেকে খুব ছোট মনে হচ্ছিলো। ইচ্ছে হচ্ছিলো চৈতালির পায়ে ধরে ক্ষমা চাইতে। এই তিনটি মাসে জীবন তাকে বারবার দেখিয়ে দিয়েছে তার অবস্থান। সে যে মানুষের মতো দেখতেই জঘন্য এক কীট তা জানতে আর বাকি নেই। তবে সবকিছুর পরে সে অনুতপ্ত। তার ভেতরের সত্তা আজ উপলব্ধি করতে পারে তার ভুলগুলো, তার করা অন্যায় গুলো। বাঁচতে হবে তাকে.. দীর্ঘদিন বাঁচতে হবে। নয়তো তার করা অন্যায়গুলো কী করে শোধরাবে সে?
-“দাদু? এই যে তোমার মলম। বাবা নিয়ে এসেছে।”
মৌমির গলার স্বর কানে আসতেই চোখ মেললেন আলাউদ্দিন শেখ। মেয়েটি এই তিনমাসে বড্ড রোগা হয়ে গেছে। ঠিকমতো খাওয়াদাওয়া নেই, যত্ন নেই। একা আর কতদিক সামলাবে মোরশেদা? তাছাড়া বিচ্ছু এই মেয়ে তার কথা আমলেও নেয়না। অনা থাকতে মৌমির খাবার গোসল সবদিকই সে সামলিয়েছে। আজ যখন অনাই নেই তখন তার অভাব আর পূরণ করবেই বা কে! ছোট্ট একটি নিঃশ্বাস ফেলে আলাউদ্দিন শেখ বললেন,
-“তোর আব্বা আইছে?”
-“হ্যাঁ তো।”
-“তুই এতক্ষণ কোনহানে ছিলি?”
-“দাদীর সাথে। দাদীর ঘরে।”
-“খাইছিস?”
-“না।”
ইশারায় মৌমিকে কাছে ডেকে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলেন আলাউদ্দিন শেখ। নীচু গলায় বললেন,
-“তোর কি তোর আম্মাকে খুব দেখতে ইচ্ছে করে?”
-“করে তো।”
-“থাকতে ইচ্ছে করে আম্মার কাছে?”
-“করেই তো।”
-“অহ.. যা তোর আব্বাকে ডাইকা আন।”
-“কেন?”
-“তোর আম্মার ব্যবস্থা করমু। যা..”
মৌমির একদৌড়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে যাবার দু’দন্ড যেতে না যেতেই হালকা কেশে দরজায় টোকা দিল মাজহারুল। ক্ষীণ স্বরে বললো,
-“আব্বা ডাকছিলেন?”
-“হ্যাঁ.. আয়।”
কয়েক কদম এগিয়ে আলাউদ্দিন শেখের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে মেঝের দিকে তাকিয়ে মাজহারুল বললো,
-“জ্বি, বলেন..”
-“তোর কাছে বড় বৌমার নাম্বার আছে?”
ঘাবড়ে গেল মাজহারুল। ঢাকায় গিয়ে জ্যোতির সাথে তার দেখা করার খবর কী কোনোভাবে জেনে গেছেন আব্বা? ঢোক গিলে একরাশ আতংক নিয়ে মাজহারুল জবাব দিল,
-“না…”
-“মিথ্যা কইস না। তোর ফোনে বড় বৌমার নাম্বার আছে। ক.. আছে না?”
-“আছে।”
-“দেখি ফোন লাগাইয়া আমার কাছে দে।”
বুকের ভেতরে উথালপাতাল শুরু হতেই আমতাআমতা করতে লাগলো মাজহারুল। অস্থিরতায় সত্যিটা বলে দিলেও ভয় হচ্ছে তার।
-“কী দরকার আব্বা?”
-“তুই কল লাগাইয়া দে।”
-“কিন্তু আব্বা হঠাৎ? যে গেছে যাক না! তাছাড়া…”
মাজহারুলকে মাঝপথে থামিয়ে দিলেন আলাউদ্দিন শেখ। থমথমে গলায় তিনি বললেন,
-“তোর কাছে মিথ্যা বলছিলাম আমরা। বৌমা কোনো ছেলের হাত ধইরাই পালায় নাই। আমরাই তাকে এই বাড়ি ছাড়তে বাধ্য করছিলাম!”
প্রেগন্যান্সি স্টিক হাতে নিয়ে থম ধরে খানিকক্ষণ বসে রইলো মেসবাহ। উল্লাসী অন্তঃসত্ত্বা। তবে তা কিভাবে সম্ভব? সে উল্লাসীর সাথে যতবার মিলিত হয়েছে প্রতিবারই প্রোটেকশন ব্যবহার করেছে। বাদবাকি রইলো অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা.. যা প্রথম দু’বার ঘটেছিল। কোনো পরিকল্পনা ছিল না তাদের। তবে প্রথমবারে মিলিত হবার সময় তো উল্লাসীর প্রচুর রক্তপাত হয়েছিল। যাতে কনসিভ হবার চান্স না থাকার মতোই। তাছাড়া সেসময় পরিস্থিতি এতটাই বিগড়ে গিয়েছিল যে ব্যবস্থা নেবার মতো কিছু মাথাতেই আসেনি। পরবর্তীতে দ্বিতীয়বারের মিলনও ছিল পরিকল্পনা বিহীন। তবে সেসময় তো সেইফ পিরিয়ড চলছিল উল্লাসীর। এবং তা ভেবেই বার্থকন্ট্রোল পিল খাওয়ানোর প্রয়োজন মনে করেনি সে। তাছাড়া পিল সেবন করা স্বাস্থ্যের পক্ষে ক্ষতিকর। সেখানে উল্লাসী বাচ্চা একটা মেয়ে। পিলের সাইড ইফেক্ট একদমই সহ্য করতে পারবে না সে। তারপর থেকে পরবর্তীতে তো পরিকল্পনা মোতাবেক প্রোটেকশন ব্যবহার করেই মিলিত হয়েছে তারা। তাহলে এইঘটনা ঘটলো কী করে? অস্থিরতা নিয়ে বিছানা ছেড়ে উঠে পড়লো মেসবাহ। পরণের শার্ট খুলে এগুলো ওয়াশরুমের দিকে। খুশি হবার মতো একটি খবর জেনেও খুশি হতে পারছেনা সে। অদ্ভুত এক অনুভূতি হচ্ছে। মনের ভেতরে ভয় কাজ করছে। ডাক্তার হিসেবে আর কয়টি সাধারণ মানুষের চেয়ে একটু বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে হত না তার? অথচ সে করেনি। মুখে পানি ছিটিয়ে বেরিয়ে এল মেসবাহ। টাউয়েল হাতে ড্রেসিং টেবিলের সামনে দাঁড়িয়ে মুখ মুছতে শুরু করতেই পেছন থেকে উল্লাসী বললো,
-“কী হয়েছে আমার? যা বললেন সবই তো করলাম! কিন্তু কী হয়েছে তাই তো বললেন না!”
পেছন ফিরে উল্লাসীর দিকে তাকালো মেসবাহ। গম্ভীরমুখে বললো,
-“কিছুই হয়নি।”
-“তাহলে ওটায় কী দেখলেন?”
-“কিছুনা।”
-“কিছুনা বললে তো হবে না। কিছু তো অবশ্যই হয়েছে আমার। কী হয়েছে বলুন না! বড় কোনো অসুখ হয়েছে?”
-“আরে না..”
-“তাহলে?”
উল্লাসীর কথা এড়িয়ে যেতেই বেলকনির দিকে পা বাড়ালো মেসবাহ। ভালোলাগছে না তার। এ কেমন অপরাধ করে বসলো সে! চৌদ্দ বছর বয়সী এক বাচ্চার শরীরে আরেকটি প্রাণের বীজ বপন করে দিল!
-“আপনি বলছেন না কেনো? কী দেখলেন ওটায় আপনি? আমার কী হয়েছে?”
-“অদ্ভুত তো! যাও পড়তে বসো। আজ কোচিংয়ে গিয়েছিলে?”
-“হ্যাঁ.. ওটায় কী দেখলেন আপনি?”
-“কিছু না বাবা!”
-“উহু.. বুঝেছি আমি। আমার কিছু হয়েছে। বড় কোনো অসুখ করেছে।”
নানান আজেবাজে কথা বকতে শুরু করতেই উল্লাসীকে সবটা খুলে বলার সিদ্ধান্ত নিল মেসবাহ। লম্বা একটি দম ছেড়ে সে উল্লাসীকে হাত ধরে টেনে নিয়ে এল ঘরের ভেটরটায়। তার মুখোমুখি দাঁড়িয়ে নীচু গলায় বললো,
-“তুমি আর এখন একা নও। তোমার ভেতরে তোমার সাথেসাথেই বেড়ে উঠছে এক প্রাণ। তুমি প্রেগন্যান্ট উল্লাসী। তুমি মা হতে চলেছো..”
থেমে গেল মেসবাহ। চোখেমুখে একরাশ অস্বস্তি ফুটিয়ে আবারও বললো,
-“আসলে সবটাই অনাকাঙ্ক্ষিত। না তুমি না আমি আর না তোমার শরীর কোনোটাই এখন এসব সামাল দেয়ার জন্য প্রস্তুত নয়। তবে কথায় আছে না কপালের লেখন না যায় খন্ডন? এঅবস্থায় আমরা না চাইলেও আমাদের কিছু করার নেই। মেনে নিতে হবে। তুমি ছোট একটি মেয়ে। তোমার জন্য প্রেগ্ন্যাসির সময়টা অনেক বেশি কষ্ট হবে, রিস্ক থাকবে। তবে.. আই অ্যাম সরি উল্লাসী!”
-“আমি মা হবো? মানে আমার বাবু হবে? পিচ্চি সুহার মতো আবারও কেউ আসবে?”
-“হুম…”
খুশিতে আত্মহারা হয়ে ফেটে পড়লো উল্লাসী। পা উঁচিয়ে মেসবাহর গালে একটি চুমু দিয়ে তার কাঁধে হাত ঠেকিয়ে বললো,
-“আপনি বাবা.. আমি মা। সুহা ওর খালামুনি। মৌমি বড় বোন। বড় ভাই বড় বাবা, মুবিন ভাই ছোট বাবা…”
উৎসাহী বেশে উল্লাসীর কথাগুলো শুনে মনের ভেতরটায় তৃপ্তি অনুভব করলো মেসবাহ। এতক্ষণ যাবৎ মনে চলা অস্থিরতা অনেকটাই কমে এল। তৃপ্ত গলায় সে বললো,
-“তুমি খুশি?”
-“হ্যাঁ.. খুব। আমার না নাচতে ইচ্ছে করছে!”
-“এই না। মোটেও না। এইসময় ধীরেসুস্থে চলাফেরা করবে। এমনিতেই তুমি ছোট।”
-“ঠিকাছে.. করবো। সব করবো…”
শান্ত গলায় মেসবাহ বললো,
-“গুড। এবার যাও.. পড়তে বসো। কয়টা দিন পরই এক্সাম। সে খেয়াল আছে?”
-“খুব আছে.. একটু নানাজানকে কল দিয়ে দিন না! উনাকে বলি.. সুহাকে বলি। ইশ! আমার এত খুশি লাগছে কেন?”
-“এখন না। আমি দেখেশুনে তাকে বুঝিয়ে বলবো।”
-“না। আপনি কেনো বলবেন? আমি বলবো..”
-“ব্যাপারটি উনি ভালোভাবে নাও নিতে পারে। প্লিজ উল্লাসী। আমার কথা শুনো.. আমি বুঝিয়ে বলবো।”
-“কচু..”
ঠোঁট বাঁকিয়ে ব্যাগ খুলে বই নিয়ে বিছানায় গুটিসুটি মেরে বসলো উল্লাসী। ইচ্ছে করছে না তার পড়তে। কিন্তু উনি সেসব শুনলে তো! বমির অভিনয় করলে কেমন হয়? ভাবামাত্র আঁড়চোখে মেসবাহর দিকে তাকালো উল্লাসী। কিছু একটা ভাবছেন উনি। কী ভাবছে? নানাজানকে কিভাবে জানাবে সে কথা? ভাবতে থাকুক। এর মাঝে না হয় নিজের কাজ সেরে নেয়া যাক! বিছানা ছেড়ে নেমে দৌড়ে ওয়াশরুমে ঢুকলো উল্লাসী। দরজা আটকে খানিকক্ষণ ওয়াক ওয়াক শব্দ করতেই ওপাশ থেকে টোকা পড়লো দরজায়।
-“কী হয়েছে উল্লাসী? শরীর খারাপ লাগছে? দেখি দরজা খোলো।”
-“কচু খুলবো! আপনি কী বোঝেন না বইয়ের গন্ধ নাকে আসলেই আমার বমি পায়?”
-“তুমি আগে দরজা খোলো…”
-“খুলবো না.. খুললেই আবারও গন্ধ পাবো। আবারও বমি হবে।”
-“ওয়েট.. ওয়েট। আমি বই গুছিয়ে টেবিলে রেখে আসছি।”
দরজা খুলে উল্লাসী বেরিয়ে আসতেই তার হাত ধরে বিছানায় বসালো মেসবাহ। চিন্তা হচ্ছে তার। বইয়ের গন্ধেও গা গুলিয়ে উঠে উল্লাসীর? শরীরের অবস্থা কি তাহলে খুব বেশি খারাপ তার? শঙ্কিত মনে ফোন উঠিয়ে ইভানার নাম্বারে ডায়াল করলো মেসবাহ। জরূরী ভিত্তিতে মেয়েটিকে নিয়ে ইভানার সঙ্গে দ্রুত একবার কথা বলা দরকার।
(চলবে)