Story – Every Thing Is Fair In Love And War Writer – Nirjara Neera Part – 26

0
689

Story – Every Thing Is Fair In Love And War
Writer – Nirjara Neera
Part – 26……………………

কালকের কথা শুনতে কখন কালকের কোলে মাথা রেখে মায়া অঘোর ঘুমে তলিয়ে গেল বুঝতেই পারলো না।। তার সেই ঘুম ভাঙলো সাত দিন পর।। সেই সাত দিন স্বপ্নের মত সবকিছু ভাসা ভাসা হয়ে রইল।। মাঝে মাঝে একটু চোখ খুলে দেখতো তার কালক চলে গেছে নাকি আছে।। কিন্তু মায়া কালক কে দেখতো না।। অস্পষ্ট দৃষ্টিতে দেখতো কেউ একজন তার সামনে বসে আছে।। মনে মনে তাকে কালক ভেবে তার হাত টা শক্ত করে চেপে ধরতো।। আর বির বির করে বলতো তাকে ছেড়ে না যাওয়ার জন্য।।
আর সে সাত দিন অলোক দিবা রাত্রি ছেড়ে মায়ার পাশে বসে রইল।। মনে মনে তার প্রচুন্ড আফসোস হচ্ছে।। মায়া তো তারই সম্রাজ্ঞী।। সে কিভাবে পারলো তার প্রতি এত টা কঠোর হতে?? সে তো ফুলের মত কোমল ছিল।। অতটা কঠোরতা সে সহ্য করতে পারবেনা জেনেও কেন অলোক কাজ টা করতে গেল নিজেই উত্তর খুজে পেল না।।
মায়ার পাশে বসতে চেয়েও অলোক বসতে পারছিলনা তার জ্বরের উত্তাপের কারনে।। সেদিন রাতে আবার ফিরে এসে সে মায়া কে কক্ষে খুজে পাই নি।। অনেক খোজাখুজির পর তাকে বাগানে অবচেতন অবস্থায় খুজে পাওয়া গিয়েছিল।। তখন কেমন যেন ঘাসের উপর পড়ে আছে।। মনে হচ্ছে তাজা ফুল টা পানির অভাবে নেতিয়ে আছে।। এমন কি ভেজা কাপড় গুলো শরীরে ছিল।। যার কারনে মায়ার অসুস্থ হতে সময় লাগলো না।। বুক ধক করে উঠল অলোকের।। সে চায় নি এমন টা হোক।। সব তারই দোষ।।
সে হতে অলোক মায়ার পাশে বিনিদ্র রজনী কাটিয়েছে।। মনে মনে ওয়াদা করেছে মায়ার অনুমতি ছাড়া তাকে স্পর্শ করবেনা এবং তাকে কোনো রুপ কষ্ট দিবে না।।
.
সাত দিন পর মায়া যখন চোখ খুলল তখন তাকে গোসল করিয়ে আনা হল।। গোসল করে আসার পর মায়ার নিজেকে হালকা অনুভব করছিল।। তার মনে হচ্ছিল যে খুব ভারী একটা বোঝা মাথার উপর থেকে নেমে গেছে।। একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস বেড়িয়ে এলো বুক ছিড়ে।। সে এখনো জানে না চারপাশ টা অন্যরকম কেন লাগছে।। তবে লিয়ার মুখে শুনলো সে নাকি সাত দিন অসুস্থ ছিল।। তার নাকি প্রচুন্ড জ্বর ছিল।। মায়া জ্বরের কথা ভাবলো না।। সে ভাবলো কালক এর কথা।। সে কালক কে দেখেছিল সেটা স্পষ্ট মনে আছে।। কিন্তু সেটা কি তাহলে জ্বরের ঘোরে দেখা ভ্রম?? নাকি কল্পনা প্রসুত?? ভেবে পেল না মায়া।। অথচ কতটা জীবন্ত হতে পারে ভ্রম গুলো!!! কালক এর বলা কথা গুলো মায়ার এখনো কানে বাজছে।।
.
কি দিয়েছো মায়া ঈরানভার ভালোবাসার পরিবর্তে?? পরাধীনতার শৃঙ্কল নাকি জীবন ভরের জন্য অশ্রু!!!
.
সত্যিই তো!! মায়া কে তারা ভালোবাসে।। তাদের ভালোবাসার পরিবর্তে মায়া তাদের কি দিয়েছে?? বঞ্চনা???
মায়া বাগানে চলে এলো।। তার ঠান্ডা মাথায় ভাবা দরকার।। একলা থাকা দরকার।।
প্রায় ঘন্টা খানেক মায়া বাগানে সময় কাটালো।। ঝির ঝিরে বাতাসে খোলা চুলে হাটলো।। দোলনায় দোলা খেলো।। তার পর ধীরে সুস্থে সে কি করতে চাই ভেবে নিল।। যখন মায়া কক্ষে ফিরে এলো তখন তার মুখে এক চিলতে হাসি ফুটে উঠল।।
.
*
.
এখন দুপুর।। সম্রাটের অলোকের ভোজন সময়।। মায়া নিজ হাতে তার খাবারের তদারকি করছে।। চেষ্টা করছে কোনো রুপ ত্রুটি না রাখার।। শরীর দুর্বল।। কিছুক্ষন পর পর তার মাথা টা দুলে আসছে।। তারপরও সে বিন্দু মাত্র কার্পন্য করল না।। অলোকের ভোজনের আয়োজনে তার প্রিয় সব খাদ্য আনা হয়েছে।। আরো আনা হয়েছে ঈরানভার মিষ্টি ফল আঙ্গুর আর আতা।। বরই মিষ্টি এ দুটা ফল।। এছাড়া মায়া নতুন কিছু রান্নার পদ তৈরি করে এনেছে।। আশা করছে এসব অলোকের পছন্দ হবে।।
দরবার থেকে এসেই অলোকের চোখ ছানাবড়া!! এত সব আয়োজন দেখে অলোকের মাথা ঘুরতে লাগলো।। এতসব আয়োজন মায়া শুধু মাত্র তার জন্য করেছে সেটা তার বিশ্বাস হচ্ছে না।। সে সন্দিগ্ন চোখে মায়ার দিকে তাকাতে লাগলো।।
.
—- অভিবাদন গ্রহন করবেন সম্রাট!!! অনুমতি দিলে গোসল খানা তৈরি করতে বলি??
.
—- হ্যা””””” না মানে হুম দাও!!!
.
অলোক ভাবলো ব্যাপার টা কি?? মায়া মনে মনে অন্য কিছু করার চেষ্টা চালাচ্ছে না তো?? মায়া অলোকের সন্দিগ্ন দৃষ্টিকে এড়িয়ে মিষ্টি করে হাসলো।। তারপর তার কাছে এগিয়ে গিয়ে রাজকীয় পোশাক খুলতে সাহায্য করল।। অলোক চুপচাপ মায়ার কাজ দেখছে।। মায়া তাকে গোসল খানায় নিয়ে গেল।। এবং গোসল শেষে একসাথে খেতে বসল।। মায়া এটা সেটা অলোকের পাতে তুলে দিচ্ছিল।।
.
—– সম্রাট এটা আমি বানিয়েছি।। নিন!! ঈরানভাতে সবাই খুব পছন্দ করে।। আমি নিজ হাতে বানিয়েছি।।
.
—- ঠি-ঠিক আছে।।
.
খেতে গিয়েও অলোকের সন্দেহ দূর হচ্ছিল না।। তাই সে বেশি কিছু খেতে পারলো না।। মায়ার মিষ্টি হাসিতে তার গলায় খাবার আটকে যাচ্ছিল।। কি সাংঘাতিক ব্যাপার?? নিরস্ত্র মায়া সশস্ত্র অলোক কে ঘায়েল করতে এরকম একটা হাসিই যথেষ্ট।। নিথর হয়ে মাটিতে পড়ে থাকবে অলোক।। আর কখনো উঠতে পারবেনা সেখান থেকর।।
এরকম ভাবতেই মাথা ঝেড়ে তাড়াতাড়ি উঠে দাড়ালো অলোক।। তারপর মায়া কে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে গট গট করে চলে গেল।। মায়া অলোকের যাওয়া দেখে কিছু বলল না।। শুধু একটা আঙ্গুলে কানের কাছে নেমে আসা জুলফি পেচাতে পেচাতে মুচকি একটা হাসি দিল।। তারপর আবার খেতে বসলো।। যেন অনেক দিন ধরে মায়া উপোস।। তারপর গপগপিয়ে খেতে লাগলো।। সে আর উপোস থাকবেনা।। শক্তি দরকার তার।। প্রচুন্ড শক্তি দরকার।।
*
বিকেলে মহলে ঘুরতে ঘুরতে মায়ার মহলের এক পাশের খোলা মাঠে নজরে গেল।। কেউ একজন তলোয়াড় চালনার অনুশীলন করছে।। তাকে দেখে মায়ার নিজের কথা মনে পড়ে গেল।। রাজা মৈনাক কোনো শিক্ষক না রেখে নিজ হাতে মায়া কে অস্ত্রবিদ্যা দিয়েছিল।। তলোয়াড় চালনায় মাঝে মাঝে মায়া তার পিতা কে হারিয়ে দিত।। হেরে গিয়েও রাজা মৈনাক হার মানতে চাইতো না।। বলতো বুড়ো হয়েছি তো তাই।। যখন কোনো শক্তিশালি কে হারাতে পারবে তখন মানবো তোমার শিক্ষা পরিপুর্ণ।।
পিতার কথা মনে পড়তেই মায়া মনে মনে একটু করে হাসলো।। তারপর পিছন ফিরে লিয়া কে জিজ্ঞেস করল
.
—- লিয়া এ কে??
.
—- রাণী মায়া ইনি আমাদের রাজকুমারী অধরা।।
.
—- ওহ!! অধরা!! চিনতেই পারি নি।।
.
মায়া সামনে এগিয়ে গেল।। মায়া কে চোখে পড়তেই অধরা সামনের প্রতিযোগীকে নিমিষে হারিয়ে দিল।। যেন মায়া কে দেখানোর জন্যই হারালো।। ঘাম ঝড়াতে ঝড়াতে অধরা মায়া হে কটাক্ষ করে বলল
.
—- ভাবী পারেন কি চালাতে??
.
—- হুম!!
.
—- পারবেন হারাতে আমাকে??
.
—- কেন নই রাজকুমারী অধরা।। অবশ্যই পারবো!!
.
—- তাহলে হয়ে যাক একটা লড়াই।। দেখি কে জিতে??
.
—- মাফ করবেন রাজকুমারী।। সম্রাট আমার তলোয়াড় নিয়ে নিয়েছে।। আমার কাছে কোনো তলোয়াড় নেই।।
.
—- তাতে কি?? ধরুন।। আমার টা নিন।।
.
এই বলে অধরা তার তলোয়াড় টা মায়ার দিকে ছুড়ে মারলো।। কিছুটা দূরে থেকেও মায়া বা হাতে খপ করে তলোয়াড় টা ধরে ফেলল।। তারপর অধরা কে জিজ্ঞেস করল
.
—- তাহলে আপনার তলোয়াড়??
.
—- আমার কাছে আরো আছে ভাবী।।
.
এই বলে একটা দাসী কে ইশারা করতেই সে কতগুলো তলোয়াড় নিয়ে মায়ার সামনে দাড়ালো।।
তলোয়াড় নিলে মায়া বলল
.
—- তৈরি তো রাজকুমারী??
.
—- কিন্তু আপনার পোশাক??
.
—- সমস্যা নেই।।
.
—- ঠিক আছে তাহলে।।
.
(চলবে)
.
ইদানিং ফারহান নামক অনেক গুলো ছেলের আইডি থেকে রিকুয়েস্ট আসতেছে।। এতগুলো ফারহান আগে কেনো দেখিনি।।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here