Story – Every Thing Is Fair In Love And War Writer – Nirjara Neera . Part – 27.

0
683

Story – Every Thing Is Fair In Love And War
Writer – Nirjara Neera
. Part – 27…………………..

তলোয়াড় বাজি তে মায়া যথেষ্ট দক্ষ।। তাই রাজকুমারী অধরা কে হারাতে তার বেগ পেতে হলনা।। খুব সহজে বার্বান রাজকুমারী অধরা কে হারিয়ে ধরাশায়ী করলেন।। কিন্তু অধরা হার মানতে নারাজ।। সে পুনরায় লড়াইয়ের আহবান করতে লাগল।। মায়া ততবারই তার নৈপুণ্য চালনায় অধরা কে হারিয়ে দিতে লাগল।। লড়াইয়ের সময় বেখেয়ালি মায়ার মাথার বিশাল ওড়না পড়ে গিয়ে চুল উন্মুক্ত হয়ে গেল।। এবং সে উন্মুক্ত চুলে তলোয়াড় চালানায় রত মায়া আশে পাশের সবারই দৃষ্টি সহজে কাড়ছিলেন।। সবাই মুগ্ধ নয়নে দেখতে লাগলেন মায়ার তলোয়াড় চালানো।। মুখে না বললেও মনে মনে মায়ার অস্ত্র বিদ্যার প্রশংসা করতে লাগল।। সেসময় রাজপ্রাসাদেরর সবার নজরে আড়ালে আরো একজন মুগ্ধ দৃষ্টিতে মায়া কে দেখছিল।। মায়ার উড়ন্ত ঢেউ খেলানো চুল গুলো বার বার তার বুকে ছুরি চালাচ্ছিল।। চোখে মুখের ক্ষিপ্রতা তাকে অদ্ভুদ সৌন্দর্য্য ঢেলে দিয়েছিল।। সুনিপুণ কৌশলে তলোয়াড় চালানায় মনে হচ্ছিল মায়া ছন্দের পর ছন্দে তার পা ফেলে যেন বৈরাগী নৃত্য করে চলেছে।। তলোয়াড় চালানোর সময় মায়ার ঘাঘরার নিচের অংশ কিছুটা উপরে উঠে যাচ্ছিল।। আর তাতে চিকন সোনালী নুপুর পড়িহিত এক জোড়া নৃত্যরত ফর্সা পা দেখা যাচ্ছে।। আবার পেটের উপর থেকে বাতাসে কিছুক্ষন পর পর কিছুটা কাপড় উঠে যাচ্ছে।। আর তাতে মায়ার নাভিদেশ বার দৃষ্টি গোচরে এসে হৃদয়ে কাপুনি কম্পন সৃষ্টি করছে।। চোখ বন্ধ করে ফেলল অলোক।। এরকম লুকিয়ে কাউকে দেখা কি ঠিক?? মনে মনে প্রশ্ন করল নিজেকে।। আবারো নিজেই উত্তর বানিয়ে নিজের মনকে প্রবোধ দিতে লাগল।। মায়া তারই সম্রাজ্ঞী।। সুতরাং নিজের সম্রাজ্ঞী কে দেখায় কোনো ঠিক বেঠিক নেই।। তার ইচ্ছে হয়েছে।। ব্যস সে দেখবে।। এটা ভেবে অলোক আবারো চোখ খুলল।। দেখতে লাগলো মুগ্ধ নয়নে মায়া কে।। মায়াতে দেখতে গিয়ে তার মাথায় একটা খেয়াল এলো।। খেয়াল আসতেই তার ঠোটের কোনে একটু হাসি ফুটে উঠল।। তারপর ওখান থেকে সরে এল।।
*
রাজকুমারী অধরা হার মানলো।। ক্লান্ত গলায় বলল
.
—- ঈরানভাতে এমন নৈপুণ্য দক্ষ তলোয়াড় থাকলে হারার প্রশ্নই আসেনা।।
.
মায়া একটু করে হেসে তলোয়াড় টা খাপে ঢোকাতে ঢোকাতে জবাব দিল
.
—- তারপরও হেরেছি রাজকুমারী।। হয়ত নৈপুণ্য টা যথেষ্ট ছিল না।।
.
—- ভাবী আমার মনে হয় আপনি সৌন্দর্য্য আর অস্ত্রবিদ্যার মিশ্রনে নিপুনা তনয়া।। আশীর্বাদও বটে।।
.
—- রাজকুমারী অধরা!! একটা কথা মনে রাখবেন।। সবকিছু সবসময় আশীর্বাদ হয়না।। সৌন্দর্য্য আমার জন্য যেমন অভিশাপ তেমন অস্ত্রবিদ্যাও তেমন একটা বেকার বিদ্যা।। যেটা কখনো কোনো কাজে আসেনি।।
.
এই বলে মায়া পিছন ফিরে চলে আসতে যাবে।। ঠিক সে সময় কোথ থেকে সাই করে একটা তলোয়াড় এসে মায়ার সামনে দৃষ্টিগোচর হওয়ার সাথে সাথে খপ করে ধরে ফেলল।। মায়া কিছুটা চমকে উঠলেও নিজেকে মানিয়ে নিল।। তারপর সামনে তাকিয়ে দেখলো অদূরে বার্বান সম্রাট দাড়িয়ে।। ঠোটের এক কোনে হালকা একটা মুচকি হাসি।। মায়া ভ্রু কুচকে ফেলল।। তারপর অলোক এসে মায়ার কয়েক হাত দুরত্বে দাড়ালো।। মায়া মাথা নিচু করে অভিবাদন জানালো।। তারপর মুখ থেকে চিন্তার প্রহর কাটিয়ে একরাশ হাসিতে অলোক কে জিজ্ঞেস করল
.
—– সম্রাট কোনো প্রয়োজন থাকলে দাসী দিয়ে খবর পাঠালে আমি এক্ষুনি চলে আসতাম।। কষ্ট করে সম্রাট কে আসতে হত না।।
.
অলোক তেমন মুচকি হাসিতে জবাব দিল
.
—- সম্রাজ্ঞী যখন আমার তখন কোনো দাসীর দরকার নেই।।
.
—- যেটা সম্রাটের ইচ্ছা!! তবে এই তলোয়াড়”””””””
.
—- তোমাকে দিলাম।। আমার সাথে প্রতিযোগিতায় আস।। যদি হারাতে পার তাহলে ইনাম পাবে।।
.
মায়া আবারো হাসি দিল
.
—- সম্রাট বেয়াদবি মাফ করবেন।। আপনার সাথে তলোয়াড় বাজি করার মত বিদ্যা আমার এখনো হয় নি।।
.
—- তোমার কতটুক বিদ্যা হয়েছে সেটা আমি দেখে নিয়েছি।। এখন প্রতিযোগিতায় আস।।
.
—- সম্রাট আম”””””
.
—- আর কোন কথা নয় মায়া!! মনে হচ্ছে তুমি ভয় পাচ্ছ!!!
এই কথার পর মায়া দ্বিতীয় বার কোনো প্রশ্ন করল না।। সে অকুতোভয় রাজা মৈনাকের কন্যা।। ভয় পাওয়ার প্রশ্নই আসেননা।। অতএব হাতের তলোয়াড় টিকে মাটির সাথে গাথল।। তারপর দু হাতে তার লম্বা কেশরাজি ধরে হাত কে সাপের মত পেচিয়ে খোপা করতে লাগল।। আর অলোক মায়ার খোপা বাধার দৃ্শ্য হা করে দেখতে লাগল।। মনে মনে ভাবতে লাগল।। সামান্য খোপা বাধার মধ্যে এত কি মাধুর্য্য আছে যা অলোক কে মুগ্ধ করছে?? খানিকটা ইতস্থত করে অলোক বলল
.
—– চুল গুলো খোলা থাক মায়া।। ভালোই তো লাগছে।।
.
মায়ার হাত থেমে গেল।। তারপর অলোকের দিকে তাকিয়ে আবারো খোপা খোপা বাধতে বাধতে জবাব দিল
.
—- সম্রাট আমি তো হেরে যাব চুল খোলা থাকলে।।
.
—- কিন্তু খোলা চুলে অধরা কে তো হারিয়ে দিয়েছ।।
.
—- সেটা রাজকুমারী অধরা ছিল বলে।। এখন আমার সামনে দাড়িয়ে বার্বান সম্রাট।।
.
—- সামনের জনকে দূর্বল ভাবা নিতান্ত বোকামী নই কি???
.
—- মাফ করবেন সম্রাট।। অত বড় সাহস হয়নি কাউকে দূর্বল ভাববো।।
.
— ঠিক আছে। তাহলে তৈরি তো??
.
—- অবশ্যই সম্রাট।।
.
তলোয়াড় শক্ত হাতে ধরে মুখোমুখি দাড়িয়ে দুজন দুজন কে প্রথমে কুর্নিশ করে নিল।।
তারপর ধীরে ধীরে লড়াই শুরু হল।। প্রথম লড়াইটা শুরু হল মায়ার পক্ষ থেকে।। মায়া একের পর এক আঘাত করে চলেছে আর অলোক অনেকটা হেলার সাথেই নিজেকে বাচিয়ে নিচ্ছিল।। যেন এই কাজ করতে তার খুব মজা হচ্ছে।।
তাদের দুজনের তলোয়াড় বাজিতে পুরো বার্বান রাজপ্রাসাদ থমকে দাড়িয়েছে।। পিন পতন নিরবতা সবখানে।। সবাই হা করে তাকিয়ে দেখছে।। কোনো রণ কৌশলের তলোয়াড় চালানো হচ্ছে সেরকম কিছুই না।। সম্রাটের সাথে সম্রাজ্ঞী লড়াইয়ে কে জেতে সবাই সেটা দেখতে চাইছে।। অনেকে বাজি ধরা ও শুরু করে দিয়েছে।। কেউ মায়ার পক্ষে, কেউ বা অলোকের পক্ষে।। যারা মায়ার পক্ষে তাদের যুক্তি হল তাদের সম্রাট সম্রাজ্ঞী কে প্রচুন্ড ভালোবাসে।। আর ভালোবাসার টানে হয়ত তাকে জেতার সুযোগ দেবে।।
কিন্তু মায়া আর অলোকের সেদিকে কোনো ভ্রুক্ষেপ নেই।। মায়ার নজর কিভাবে অলোক কে হারাবে।। অলোকের নজর সে কিভাবে মায়ার আরো কাছে আসবে!!!
প্রায় ঘন্টা হতে চলল।। মায়া হাপিয়ে উঠেছে।। ঘর্মাক্ত হয়ে এসেছে পুরো শরীর।। অলোক কে স্পর্শ করা তো দুরের কথা তাকে সামান্য তম দূর্বল ও করতে পারেনি মায়া।। মনে মনে তার অস্ত্রবিদ্যার প্রতি খানিকটা হীন্যমনতা জাগতে লাগল।। সে এতটাই দূর্বল।।
মায়ার এই অন্য মনষ্কতার সুযোগ নিল অলোক।। তার তলোয়াড়েরর আঘাতে মায়ার তলোয়াড় কে আঘাত করল।। আঘাতে মায়ার তলোয়াড় দূরে ছিটকে পড়ল।। মায়া ঘুরে তাকিয়ে দেখার আগেই অলোক এগিয়ে এসে তলোয়াড়ের মাথা দিয়ে মায়ার খোপার ভিতরে হালকা করে টান দিল।। আর সাথে সাথে মায়ার চুল গুলো খুলো চারদিকে ঝড়ো বাতাসে আক্রান্ত গাছের পাতার ন্যায় উড়তে লাগল।। মায়া চমকে গেল।। সে তলোয়াড় কোথায় উড়ে গেল সেটা দেখার সুযোগ হল না।। তার আগেই তার চুল উড়তে লাগল।। হা করে শুধু অলোকের দিকে তাকালো।। আর অলোক তাকে মুচকি হাসিতে জানালো
.
—– অভিনন্দন আমার সম্রাজ্ঞী!!! তুমি হেরে গেছো!!!
.
(চলবে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here