ঠোঁট এগারো,

0
316

#ঠোঁট

এগারো,
ধীরে ধীরে বারান্দার সেই জায়গাতেই যায়। যেখানে কাগজ আর চিকন দড়িটা লুকিয়ে রেখেছিলাম। কলম আগেই তৈরি করে রেখেছিলাম ঘুমানোর আগে। কিন্তু উত্তর যা তৈরি করেছিলাম সেটা লিখতে পারছি না আমার হাত দিয়ে। এমন কি মাথাতেও আসছেনা কি উত্তর তৈরি করেছিলাম।

তবুও ধারণার উপরে লিখে দিই।

তোমরা আবার আমার কাছে কি চাও। যার কারণে আমার পিছে আবার ধরেছ।

এই লেখাটা লিখে দড়িতে পেচিয়ে দি। খুব সাবধানে নিচে নামিয়ে দি। অপেক্ষা আমার করতে ইচ্ছা করছিল। কিন্তু ভিতরে ঝরনা একা আছে। ঝরনার জন্য আর অপেক্ষা করলাম না। তার পাশে গিয়ে আবার শুয়ে পড়লাম।

কিন্তু তাকে আর ধরিনি। বুক উপর করে আলাদা হয়ে শুয়ে আছি। গভীরভাবে ভাবছিলাম আমি। কাজটা কি ঠিক করলাম। যদি তারা উল্টো একশন নেই। আমারতো সামর্থ নেই তাদের বিপক্ষে দাঁড়ানোর। তখন কি করব আমি। কিছুই বুঝে উঠতে পারলাম না। এমন চিন্তাই থাকতে থাকতে কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছি নিজেও জানি না।

সকালে আমার ঘুম ভাঙ্গে ঝরনার ডাকে। খুব স্বাভাবিক ভাবে উঠে যায় আমি। উঠে হাসি দিনা। তাকে নরম ভাবে জিজ্ঞেস করি না, কেমন আছেন আপনি। এমনকি জড়িয়েও ধরি না। সোজা ফ্রেশ হতে চলে যায়।
সকালের নাস্তাটাও আনমনে ভাবে করি।
তুমি ঝর্ণা যে আমার এমন অবস্থা খেয়াল করছে না তা কিন্তু নয়।
খুব ভালো করে আমার এসব পরোক্ষ করছে।

কিন্তু হয়তো এখন কিছুই বলবে না।

দুপুর থেকে তার সাথে হালকা মিশছি। কথা বলছি খুনসুটি করছি। মাঝে মাঝে আদর করছি।
কিন্তু আমি তাকে সেই টান দিতে পারছি না।

এভাবে প্রায় চার দিন কেটে যায়। আর কোন সমস্যা আমার চোখে পড়ে না। হয়তো আকাশে অনেক ঘন কালো মেঘ জমছে। হঠাৎ বৃষ্টি হবে। আর সেই বৃষ্টিটা আমাদের কোন দিকে ভাসিয়ে নিয়ে যাবে। তাই এখন ভাববার বিষয়।
তবে আমি এ কয়দিন নিজেকে গুছিয়ে নিয়েছি। ঝরনা কে সেই ভালোবাসা গুলো দিচ্ছি। যা সে চাইতো আমার কাছে।

এভাবে কলেজে ভর্তি হওয়ার সময় হয়ে আসে। ঝরনা চাপ দিতে থাকে। রেজাল্ট ভালো হওয়ার কারণে চান্স পেয়ে যায়।
কিন্তু ঝরনা একটু বদলিয়ে যায়।

সবসময় চোখে চোখে রাখা। কড়া শাসন করা। পড়াশোনা নিয়ে সবসময় মাতিয়ে রাখা। শুধু নির্দিষ্ট কিছু সময় আদর আর ভালবাসা। আর কিছু সময় গভীর উষ্ণতা। আর বাকি সময় গুলো একজন করা অভিভাবক।
আমার বেশ ভালই লাগে। আমি এমনটা চেয়েছিলাম তার কাছে অনেক আগেই। তাকে বলেছিলাম। বিয়ের পরে আমার পড়াশোনা প্রয়োজন হতে পারে। তখন কিন্তু মাঝে মধ্যে আমাকে কড়া শাসন আর করা অভিভাবক এর মধ্যে আয়ত্ত করে রাখবেন। ও আমার কথা শুনে হাসতো।
বলতো আমি কি আপনার উপরে কড়া শাসন করতে পারব। আমি তখন বলতাম, কড়া শাসন আপনাকে করতে হবে। না হলে আমি বড় কিছু হতে পারব না। ওর জবাব তখন ছিল।

আপনাকে অনেক উচ্চতায় নিয়ে যেতে আর বড় করতে আমার যা করার প্রয়োজন হয় আমি সবি করব। শুধু আমাকে ভালোবাসিয়েন তাহলেই হবে।

ক্লাস শুরু হয়ে যায়। এই কয়েকদিন ধরে টানা ক্লাস করছি। ঝরনাও আমার সাথে প্রতিদিন আসে বিল্ডিং এর পাশে ছোট্ট একটি ছাউনি আছে। তার ওপর বিশাল গাছ। ঝরনা ওখানে বসে থাকে আমার ক্লাস শেষ না হওয়া পর্যন্ত।
টিফিন টাইমে আমার সাথে খায়। আবার অনেকে মনে করে ঝরনা আমার বোন হয়তো। কিন্তু আমি হা হু করে চালিয়ে দি। সঠিক ভাবে বলি না সে আমার কে হয়।
এভাবে চলতে থাকে বেশ কয়েকদিন।

সবকিছু ভালই চলছিলো।
তবে এর মধ্যে ঝরনা কে একটা কথা বলব বলবো ভেবে বলাই হচ্ছিল না।
ভয়ও লাগছে যদি রেগে যায়। আবার যদি বিশ্বাস ভেঙ্গে যায়।

তবে আজ বলবো ভেবেছি।

সন্ধ্যায় ঝরনা আমাকে ইংলিশ পড়াচ্ছিল। ওর পড়ানোটা আমার দারুন লাগে। যায় বোঝাই যায় পড়ায় আমার মাথায় ঠিক সেভাবে গেঁথে যায়।

পড়া থেকে মনোযোগ সরিয়ে ঝরনা কে বলি।

ঝরনা, একটা কথা বলবো।

না এখন পড়া পরে কথা হবে।

না শুনেন না আগে।

আচ্ছা বলেন।

চলবে*

Written by-Ibna Imtiaj

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here