ঠোঁট সাত,

0
471

#ঠোঁট

সাত,
ইমতির বাঁধনটা ঢিলে হয়ে আসছে। নিজের ঘন নিশ্বাস থেমে আসছে যেন।
তবুও সে আগের কথাটাই বলে। উহু, আমার কিচ্ছু হবে না। এখন ঠিক যেমনটা ভালোবাসি। তখনো ঠিক এমনটাই ভালোবাসবো। আমি কখনো আপনাকে কষ্ট দিয়ে বুঝিয়ে দিব না। আপনার কাছে আমার কোন স্বার্থ ছিল। বাচ্চা হয় না হবে না হয়নি।
এসব নিয়ে ভাবার দায়িত্ব আপনার না। এমনও তো হতে পারে। আমিও আপনাকে মা বানাতে অক্ষম।তাহলে কি আপনি আমাকে ছেড়ে দিয়ে অন্য পুরুষের কাছে চলে যাবেন?
বলেন আমাকে।

ঝরনা এমন কথা শোনার পর স্থির হয়ে যায়। ইমতি বুঝতে পারে। ঝরনা হয়তো আবার কাঁদছে। ইস এ মেয়েটাকে নিয়ে আর পারা গেল না।
ইমতি তখন ঝর্নাকে নিজের দিকে ঘুরিয়ে নেয়। ঠিক তাই। ঝরনা চোখ দুটো চিক চিক করছে।

ইমতি তখন মুচকি হাসে। আস্তে করে নিজের ঠোঁটেদুটো নিয়ে যায় ঝরনার ঠোঁটের কাছে।
জিব্বা দিয়ে চেটে ভিজিয়ে দেয় দুটো ঠোট।

ঝরনা তখন বলে। আমার কেন যেন মনে হয়। আমি আপনার যোগ্যই না।

ইমতি তখন চোখ রাঙ্গিয়ে উঠে। রাগান্বিত কন্ঠে বলে।

দেখ, তুই এখন আমার বউ। এসব আজেবাজে কথা বলবি তো। মেরে হাড্ডি গুড্ডি ভেঙ্গে গরুর মাংসের সাথে সাথে ভুনা করে খাব।
এসব কি কথা। কে কার যোগ্য না হ্যাঁ।
এখন তো শুনছি আপনি নাকি আমার বড়। তাহলে?

নাহ ইমতি, এসব বলে আমাকে লজ্জা দিবেন না। আমি ছোট নিয়ে কখনো আপনাকে ঝামেলা করিনি করতে চায় না করব না। এসব আমার কাছে কোনো কিছুই না। আপনাকে যে জীবনে পেয়েছি আমি। এটা আমার কাছে এক অপূরণীয় সংবাদ। যা আপনাকে ছোঁয়ার পরও আমার বিশ্বাস হয়না।
আমি সত্যি অনেক ভাগ্যবতী।

এই গর্ব যেনো সারাটা জীবন থাকে। আমি তাই চেষ্টা করব।

তবে আমি আপনাকে এখনো বিশ্বাস করি না। কখন না জানি কোন মেয়েকে পটিয়ে ফেলেন। বিশ্বাস নাই। এমনি তো আপনাকে মেয়েরা দেখলে কেমন জানি করে। আমার যা গা জ্বালা করে। আবার আপনি পড়তে চাচ্ছেন কলেজে। যদি আমারচে কোন সুন্দরী মেয়ে দেখে আপনার পছন্দ হয়ে যায়। তখন আমার কি হবে।

ঝরনা আপনি এসব কি বলছেন। মাথা ঠিক আছে আপনার। আমি আপনি থাকা সত্ত্বেও অন্য মেয়েকে পছন্দ করব মানে। কেন এ চারটা বছরে কোন মেয়েকে আমি পছন্দ করেছি নাকি কাউকে পটিয়েছি?

আপনি না হয় না করলেন। কিন্তু মেয়েরা তো আপনাকে করতে পারে। তখন কি আমার গা জ্বলবে না।

কে পছন্দ করলো কিংবা না করলেও আমার সেটা দেখার বিষয় না। আমি ব্যস্ত থেকে মুক্ত হলে আপনার কথাই ভাবি এবং ভাববো। কারণ আমি আপনাকে অনেক অনেক অনেক ভালোবাসি।

আচ্ছা দেখা যাবে। আমি এই চিন্তা থেকে মুক্ত হতে পারছি না।

তখনকার মতো কথা ওখানেই বন্ধ করে দিলাম। তাকে মুক্ত করলাম কাজের জন্য। তবুও আমি আমার জ্বালানোর কাজ চালু করে রেখেছি। কখনো শাড়ি টেনে খুলে দিচ্ছি। চুল এলোমেলো করে দিচ্ছি। বুকে হাত দিয়ে বিরক্ত করছি। কখনো কখনো বা চেপে ধরছি পেছন থেকে খুব শক্ত করে। ও যে বিরক্ত হচ্ছে না। তা কিন্তু নয়। তবে সে কিন্তু মনে মনে চাচ্ছে। আমি তাকে বিরক্ত করি।
এটা আমি খুব ভাল করেই জানি। সে আমার কাছে এই মুহুর্তের বিরক্ত গুলো চাই। মুখে হয়তো না বলছে। কিন্তু তার ভেতর থেকে চাইছে আরো জ্বালাচ্ছি না কেন। আমি তার মনের ভালোবাসা ও চোখের ভাষা দুটোই বুঝতে পারি।

রান্না শেষে দুজনা চাচ্ছিলাম গোসল করতে। জীবনের প্রথম এমন এক অবস্থায় আমরা দুজনে। যা একসময় কল্পনা ছিল এখন তা বাস্তবে। গোসলের সময় লেপ্টে আছি দুজনে। এক অস্বাভাবিক উষ্ণতার মাঝে। যেন প্রতিটা স্পর্শ কাঁপিয়ে তুলছে দুজনকে। গভীর থেকে গভীরে নিয়ে যাচ্ছে দুজনের ভালোবাসা। উষ্ণতার ভালবাসা শেষ করতে ইচ্ছে হয় না। ডুবে থেকে যেন সময় পার করে দিতে ইচ্ছা করে।

গোসল শেষে দুজন একসঙ্গে বের হলাম। কিন্তু গোসলের পরে তাকে যে ভেজা অবস্থা এতটাই সুন্দরী লাগে। যা আমার বিশ্বাসকে আবার উল্টিয়ে দেয়। আমি এবার চোখ ফেরাতে যেন পারলাম না। তার ভেজা চুল। চুল থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে ফর্সা শরীরের চামড়ায়। এমন দৃশ্য দেখে নিজেকে ধরে রাখতে পারিনি। খুব জড়িয়ে ধরতে ইচ্ছে করছিল পেছন থেকে আমার। ঠিক তাই করি। ঝরনা বিরক্ত হয়না।বরং সে সব সময় আমার কাছ থেকে এমন ভালবাসায় আশা করে।

দুপুরে আমার আবদার ছিল। তার হাতে খাব। তবে আরও একটি আবদার করেছিলাম। যা এখন উল্লেখ করতে পারছি না। সেটা ঝরনার দিবে বলেছে তবে দেয়নি। কেন যেন সে আমাকে মনে করে।আমি হয়তো তার অনেক উষ্ণতা কিংবা ভালোবাসাতে ইতস্ত করতে পারি। আমি কিছু বলিনি বলবো না। হতে পারে কিছুদিন পর তার এই ধরণা উল্টিয়ে যাবে।
আমি তার কাছে কি চাই।
কিন্তু সে আমাকে নিয়ে সব সময় গল্প গবেষণা করে। আমি কি করে তার থেকে ভালোবাসা পাবো। কোন ভালোবাসাতে আমি সবচেয়ে বেশি সুখ পাব। কি করে সবসময় তাকে নিয়ে ভাববো।
এমন গবেষণা তার ভেতর সবসময় হতেই থাকে। আমারও খুব ভালো লাগে। কেউ একজন আমাকে নিয়ে গবেষণা করে। আমি কি করে সুখে থাকব কি করে সুখ পাব তা নিয়ে ভাবে। এমন একজন সঙ্গিনী পাওয়া একজন পুরুষের বড়ই ভাগ্যের ব্যাপার।

আমি খাবার দাবার শেষ করে বারান্দায় আসলাম মুখ মুছতে। মনটা আমার খুব ফুরফুরে ছিল।যা হয়তো প্রকাশ করার মত শক্তি আমার ছিল না তখন।এতো ভালোবাসা উষ্ণতা মাঝে মন খারাপ থাকবে কিংবা আমি কোন অন্য মনষ্ক এর মধ্যে থাকবো তা হয় না।

তবে এই বারান্দায় যাওয়া যেন আমার জন্য এটা কাল হয়ে দাঁড়ালো। যা আমি ঠিক কয়েক সেকেন্ড আগেও কল্পনা করতে পারিনি।
বারান্দাতে যাওয়ার পর আমি যখন দেখি রাস্তার দিকে তাকিয়ে। বাসা থেকে একটু দূরে একটা কালো গাড়ি পার্কিং করা। যেই গাড়িটা আমার ভিতর দুমড়ে মুচড়ে দেয়। মুহূর্তে যেন আমার বুকের মনটা আতঙ্কে ঘিরে বসে।

চলবে*

Written by- Ibna Imtiaj( Abdullah bin imtiaj)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here