আপনিময়_তুমি💓[ A unbearable Crazy love] #Season: 02 #Written_By_Åriyâñà_Jâbiñ_Mêhèr[Mêhèr] #Part: 02…

0
714

#আপনিময়_তুমি💓[ A unbearable Crazy love]
#Season: 02
#Written_By_Åriyâñà_Jâbiñ_Mêhèr[Mêhèr]
#Part: 02…
.
.
.
💓
ইহান চিঠিটা কুটিকুটি করে ছিঁড়ে ফেলে। রেগে যায় সিমান। ও ইহানকে ধমক দিয়ে বলে, ‘এইটা কী করলে তুমি?’
U

‘তোর চোখে কী সমস্যা? দেখতে পেলি না ছিঁড়ে ফেলেছি।’

ইহানের এমন কথায় অবাক সিমান। এইটুকু বাচ্চা ওকে তুই-তামারি করছে! আনহার কাছে এবার ব্যাপারটা অনেক বেশি লাগছে। ও ইহানের কাছে গিয়ে বলে,

‘ইহান এটা কী ধরনের অসভ্যতা? তোকে বলেছি না আমার ব্যাপারে নাক গলাবি না।’

কথাটা শুনে ইহান কুটিকুটি করে হেসে দেয়। বলে, ‘আমি আবার সভ্য ছিলাম ক…বে।’ আবার হাসে। ব্যঙ্গাত্মক ভাবে বলে, ‘ছি. ছি. আনহা! আমি তো আপনাকে ভালো ভেবেছি। আপনিও দেখি প্রে…ম করেন।’

‘ইহান বাজে কথা বন্ধ কর।’

‘বাজে কথা। হা… হা… আচ্ছা।’

বলেই চিঠিটা নিয়ে দৌড়ে পালিয়ে গেল৷ সিমান আর আনহা কেউ ওর নাগাল পেল না। ও যাওয়ার পর সিমান মুখে চিন্তার ছাপ রেখে বলল,

‘ছেলেটা কে ছিল?’

আনহা ইহানের যাওয়ার পথের দিকে তাকিয়ে আনমনে উত্তর দিল, ‘ইহান। আমাদের বাসার পাশে থাকে।’

‘ছেলেটা খুব বেয়াদব। কিন্তু তোমার সাথে এমন কেন করল?’

আনহা বোধহয় সিমানের কথা শুনতে পায় নি। উত্তর না দিয়েই বাড়ির পথে হেঁটে চলল। সিমান ওকে কয়েকবার ডাকল, ‘আনহা… আনহা…।’

কিন্তু আনহা কোনো রূপ প্রতিক্রিয়া করল না। হেঁটে চলল নিজের গন্তব্যে।

আনহার এরূপ আচরণ হজম করতে পারল না সিমান। হঠাৎই চোখে যায় অন্তির দিকে। অন্তির কাছে গিয়ে বলে,

‘ব্যাপারটা কী রে অন্তি?’

‘হ্যাঁ, ভাইয়া।’

‘ওই ছেলেটা…’

‘আনহার কিছু না। তবে হ্যাঁ, আনহার সাথে যারা থাকে তাদের সতীন।’

‘মানে?’ সন্দিহান কণ্ঠে জানতে চাইল সিমান।

‘কিছু না।’ বলে অন্তি খিলখিল করে হেসে পিছন ফিরে মাথা চুলকে ফিসফিস করে বলে, ‘আজকে এই ঘটনার পর ইহান যে কী করবে আল্লাহ মালুম। আল্লাহ রক্ষা করো সিমান ভাইকে।’

বলেই চলে যায়। সিমান আবুলের মতো ওদের যাওয়া দেখে।

.
.
.
.
.
.
.
🍁৩🍁
পরের দিন সকালে স্কুল থেকে ফেরার পথে সিমানের বন্ধু তানিম এসে আনহার সামনে দাঁড়ায়। ওকে দেখে প্রচন্ড রাগান্বিত মনে হচ্ছে আনহার। আনহা অন্তির দিকে তাকায়। অন্তি কিছু জানে না এরকম ইশারা করে। কী হয়েছে তা জানার জন্য তানিমকে জিজ্ঞেস করে, কী হয়েছে তানিম ভাই? আপনাকে এরকম দেখাচ্ছে কেন? আর সিমান ভাইকে তো দেখছি না। ওনি কই?’

‘তোমার সিমান ভাই কালকে মাইর খেয়ে এখন বিছানায় পড়ে আছে। তাও আবার এই অর্ণির জন্য।’

তানিমের কথায় অন্তি ও আনহা দু’জনেই হতভম্ব! ওদের জন্য বিছানায় পড়ে আছে মানে? কী হয়েছে সিমানের? আনহা দ্রুত কণ্ঠে জানতে চাইল, ‘কী হয়েছে ওনার? আর আমি কী করেছি?’

‘কী করেছ আবার জিজ্ঞেস করছ? লজ্জা করছে না বলতে?’

‘ভাইয়া, সত্যি আমি জানিনা। প্লিজ বলুন।’

‘তোমার ছোট ভাই কলেজের রাতুল ভাইকে বলেছে, তোমাকে নাকি সিমান ডিস্টার্ব করে। রাস্তায় আটকে রাখে। সেদিন নাকি তোমার ব্যাগ টেনে রেখে দিয়েছে। আর কাল? কাল তো তোমাকে লাভ লেটার দিয়েছিল, কিন্তু তুমি নেওনি বলে সিমান তোমার ওড়না টেনে নিয়েছে?’

এই কথায় অন্তি আর আনহা আশ্চর্যান্বিত হয়ে নিজেদের দিকে চাওয়া-চাওয়ী করল।

তানিম আবার বলল, ‘এসব কথার প্রমান হিসেবে কী দেখিয়েছে জানো?’

‘কী? কী?’ বেশ আগ্রহ নিয়ে জানতে চাইল অন্তি।

তানিম মুখে বিরক্তির ছাপ ফেলে বলল, ‘কালকে তোমাকে লেখা চিঠিটা। সেটা রাতুল ভাইকে দেখিয়ে কেঁদে কেঁদে বলেছে, তুমি নাকি সিমানের কাজে খুব কষ্ট পেয়েছ, কাঁদতে কাঁদতে বাসায় গেছ।’

এটা শুনে অন্তি আর নিজেকে সামলাতে পারে না। হেসেই ফেলে। হাসতে হাসতে বলে, ‘দেখ রে আনহা যা বলেছিলাম তাই। এই ছেলের জন্য তোর কপালে দুঃখ আছে। যার ট্রেলার এখন থেকেই শুরু হয়ে গেছে।’

আনহা ওর কথায় কান দিল না। উদ্বেগিত কণ্ঠে জানতে চাইল, ‘ইহান তো পিচ্চি। রাতুল ভাইয়া? ওনি কী করে এটা করতে পারলেন? একটা বাচ্চার কথায়…’

ওর কথা শেষ করতে না দিয়ে তানিম বলে উঠল, ‘বাচ্চা! সিরিয়াসলি! ওকে তোমার বাচ্চা মনে হয়। যে এরকম মিথ্যে কথা যে এত সুন্দর ভাবে সাজিয়ে-গুছিয়ে বলতে পারে। একটা মিথ্যকে উল্টো-পাল্টা ভাবে বুঝিয়ে সত্যি বানিয়ে দিতে পারে, তাকে আদোও কি বাচ্চা বলা যায়!’

আনহা চুপ।

তানিম আবার বলল, ‘দেখো, অর্ণি। কাল যা হয়েছে, খুব খারাপ হয়েছে। রাতুল ভাইয়া সিমানকে মেরে ক্ষান্ত হয় নি। থ্রেড দিয়েছে, যেন তোমার আশে-পাশে সিমানকে না দেখে। আমি তো ওর বন্ধু তাই না জানিয়ে থাকতে পারলাম না। আসছি।’

তানিম চলে যেতে নিলেই পিছু ডাকে অন্তি। জানতে চায়, ‘রাতুল ভাইয়ার সাথে কেউ তো কথা বলার চান্সই পায় না। সেখানে ইহান কী করে?’

এ-কথায় তানিমের চোখ লাল হয়ে গেল। যেন চোখ দিয়েই অন্তিকে ভস্ম করে দেবে। ঝাঁঝরা কণ্ঠে বলল, ‘দেখতে হবে না, ওইটা তো পিচ্চি না বদের হাড্ডি। কাঁধের মধ্যে একশো একটা শয়তান নিয়ে ঘোরে। রাতুল ভাইয়ের সাথে কেউ কথা বলার চান্স পায় না। আর ওই ছেলেটা ওনাকে এমন পট্টি পরাইছে, ও যা বলবে তাই ঠিক। তুমি জানো, রাতুল ভাইয়ের ফেভারিট বান্দা এখন ওই পিচ্চিটা।’

‘তাই…না…কি?’ কিছুটা প্রফুল্ল গলায় বলল অন্তি। তারপর আনহার কাছে গিয়ে কানের মাঝে ফিসফিসিয়ে বলল, ‘এরপরেও তুই বলবি ওইডা ছুডো পোলাপাইন। ফিডার খায়, ফিডার। যা আমি কালকে ফিডার আইনা দিমু নি। তুই খাওয়াইয়া দিস। কেমন?’ বলেই হো হো করে হাসা শুরু করল।

তৎক্ষণাৎ তানিম বলে উঠল, ‘তোমাকে কিছু বলার নাই। দোষ তো তোমার না। কিন্তু ওই ছেলেটাকে…’

ওর কথার মাঝেই আনহা বলল, ‘ভাইয়া ওকে কিছু বলবেন না প্লিজ।’

তানিম কণ্ঠে বিরক্তি ঝরিয়ে বলল, ‘পাগল মনে হয় আমাকে? ওকে কিছু বললে রাতুল ভাই আমাকে স্কুল ছাড়া করবে।’ বলেই আনহাকে কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে দ্রুত চলে গেল তানিম।

তানিম চলে যেতেই আনহা অন্তির দিকে তাকাল। অন্তি একগাল হেসে ওকে ভেংচি কাটল। রসাত্মক কণ্ঠে গেয়ে উঠল,

‘তোমার ইচ্ছেই তো সব আমার ইচ্ছে কোথায়?
পাশে থেকেও যেন ভিন্ন চিলে কোঠায়।
আমার ইচ্ছে কোথায়?
আমার ইচ্ছে কোথায়?’

‘চুপ কর।’ ধমক দিল আনহা। তাতে ভয়ের পরিবর্তে হেসে উঠল অন্তি। অতঃপর দু’জন স্কুল থেকে বাড়ির উদ্দেশে চলে গেল।
.
.
.
.
.
.
.
🍁৪🍁
আনহা প্রতিদিনের মতো বাসায় ফিরে ব্যাগ রাখতে রাখতে মাকে খেতে দিতে বলল। তারপর হাত-মুখ ধুতে যায়। কিন্তু ফিরে এসে দেখে ওর মা ভাত না দিয়ে লাঠি হাতে দাঁড়িয়ে আছে। ব্যাপারটা বুঝতে পারল না আনহা।

কী হয়েছে জিজ্ঞেস করতে যাবে তার আগেই ওর মা একটা কাগজ দেখিয়ে জানতে চাইল, ‘এটা কী?’

কাগজটা দেখে কেঁপে উঠল আনহা। এটা তো সিমানের দেওয়া চিঠিটা। এটা মার কাছে কীভাবে এল? ও ভয়ার্ত চোখে ওর মায়ের দিকে তাকায়।

ওর মা অগ্নিমূর্তি ধারণ করে কর্কশ কণ্ঠে বলল, ‘এই বয়সে তোর প্রেম করার শখ হয়েছে। এইজন্য তোকে পেটে ধরেছিলাম—আমাদের মান-সম্মান ডুবিয়ে দিবি বলে।’

বলেই চিকন লাঠিটা দিয়ে আনহাকে আঘাত করতে করতে বলতে লাগল, ‘তোর বাবা যদি জানতে পারে কী করবে জানিস? আর তুই? প্রেমের কী বুঝিস? এই বয়সে এইসব আর তো দিন রয়েছে পড়ে।’

তখনি আনহা ওর মায়ের হাতের লাঠিটা ধরে। হাউমাউ করে কাঁদতে কাঁদতে বলে, ‘আমি কিছু করি নি। বিশ্বাস করো। ওই ছেলেটাই আমাকে চিঠি… আমি কিছু…’

‘তাহলে ও কী মিথ্যে বলেছে? তোকে নাকি সিমান না কি ওই ছেলেটার সাথে ঘুরতে যেতে দেখেছে? কথা বলতে দেখেছে?’

আনহা বিস্ফোরিত চোখে কাঁদতে কাঁদতে জানতে চাইল, ‘মিথ্যে কথা। কে বলেছে এসব?’

‘আমি। আমি এসব কথা আন্টিকে বলেছি।’ আনহা দরজার দিকে তাকালেই ইহানকে দেখতে পায়। কাঁদতে কাঁদতে বেচারির হেঁচকি উঠে গেছে। ও নাক মুছে প্রশ্ন করল, ‘তুই?’

‘হ্যাঁ, আমি। আন্টিকে আমি বলেছি।’ তারপর আনহার মাকে জিজ্ঞেস করে বলল,’আন্টি বিশ্বাস করুন আমি সত্যি ওদের ঘুরতে যেতে দেখছি।’

কথাটা শুনে তিনি আরও মারতে লাগল আনহাকে। এতটুকু পিচ্চি কি আনহার নামে মিথ্যে বলবে।

ওদিকে আনহা কাঁদছে আর মারতে না করছে। এটা দেখে ইহান মুখ গোমড়া করে দাঁড়িয়ে মনে মনে বলল, ‘বেশ হয়েছে আনহা। আপনি বলেছিলেন না আমি আপনার কেউ নই, অন্তি আপনার সব। তাহলে এবার ওকে বলুন আপনাকে বাঁচাতে। নাহলে আরও মার খান।’
.
.
.
.
.
.
.
.
[ বাকিটা পরের পর্ব গুলোতে জানবেন। ]
সিজন-২ এর ইহানের চরিত্র সম্পূর্ণ আলাদা। আর গল্প সবটাই নতুনত্ব আনা হয়েছে। সিজন-২ ভেবে কেউ বোর হবে, ওমনটা কিন্তু নয়।

ধন্যবাদ সবাইকে…
মেহের🍁

Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here