আপনিময়💓তুমি [ An unexpected crazy love ] #Written By: Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr [ Meherjan ] Part: 02

0
1041

#আপনিময়💓তুমি [ An unexpected crazy love ]
#Written By: Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr [ Meherjan ]
Part: 02……..

আনহা: এই পিচ্চি কি করছিস একা একা বসে…..

আনহার কথা শুনে ওর দিকে তাকায়…..

ইহান:…….. [ নিচের দিকে তাকিয়ে গাল ফুলিয়ে ]

আনহা: কিরে…. বল…

ইহান:……

আনহা গিয়ে বেঞ্জে বসতেই ছেলেটি দৌড়ে পালিয়ে গেল…এটা দেখে আনহা নিজেকে দেখে নিল….

আনহা: নাহহহ… সবাই পেত্নী বললেও এখন তো আমাকে মানুষের মত লাগছে… তাহলে পালালো কেনো… 🙄🙄🙄

কিছুক্ষন ভেবে….

আনহা: তারমানে ও সত্যি ভু -ভু-ত- ত দেখেছে…. 🙄🙄 ভুতত…. [ বলে নিজেও দৌড় দিলো ]

পরের দিন……… আনহা সেই একভাবে ছেলেটাকে দেখতে পায়……

আনহা: এইটা কেমন ছেলেরে কথাও বলল না। আবার পালিয়েও গেল🤔🤔🤔

আনহা আবার ওর কাছে যায়….

আনহা: এই পিচ্চি কাল কথা না বলে ওভাবে পালিয়ে গেলে কেন???

ইহান:…… [ আনহার দিকে তাকিয়ে মাথা নিচু করে ফেলে ]

আনহা: কি ব্যপার কথা বলবে না নাকি😡😡😡

ইহান:…….

আনহা: [ আজব কথা বলতে পারে না নাকি।] আচ্ছা বুঝতে পেরেছি তুমি কথা বলতে পারো না।

উহান:…… [ ড্যাব ড্যাব করে আনহার দিকে তাকিয়ে ]

আনহা: [ আহারে… এত্ত কিউট ছেলেটা কথা বলতে পারে না। তারপর আনহা ইশারায় ইহানকে কিছু বুঝাতে চেষ্টা করে কিন্তু ইহান কিছুই বুঝতে না পেরে ওর নিচের দিকে তাকিয়ে গাল ফুলিয়ে বসে থাকে ]

আনহা: ইসসস…. আগে যদি Btv সাংকেতিক খবর মন দিয়ে দেখতাম তাইলে আমিও আজ এই পিচ্চির সাথে কথা বলতে পারতাম। [ মন খারাপ করে ] আচ্ছা এই পিচ্চি শোন…. [ কিন্তু কই এখানে তো কেউ নেই……]

আনহা সামনের দিকে তাকিয়ে দেখে পিচ্চি চলে গেছে। আনহা বুঝতে পারে টিফিন পিরিয়ড শেষ…….

,
,
,
,
,,
,
,,

,
,
,এভাবেই প্রতিদিন আনহা টিফিন পিরিয়ডে ইহানের কাছে গিয়ে একা একা বকবক করত আর ইহান মাথা নিচু করে শুনত। একটা কথাও বলত না। প্রথম প্রথম ইহানের বিরক্তি লাগলেও পরে ইহান আনহার কথা গুলো শুনে যেত….. কারন ইহান নিজে থেকে কারো সাথে মিশতে পারত না কখনো। আনহাই প্রথম যে ইহানের কাছে এসে ওর সাথে কথা বলত……

অন্তি: আচ্ছা অর্নি [ আনহার ডাক নাম ] তুই প্রতিদিন ওই পিচ্চি ছেলেটার সাথে কি এমন কথা বলিস…….

আনহা: আর বলিস না ছেলেটা কথা বলতে পারে না…. আর সবাই ওকে মারে। আমার খুব খারাপ লাগে তাই আমি ওর সাথে গিয়ে কথা বলি। আমার ভালো লাগে কথা বলতে…..

অন্তি: তাহলে বাদরের মত হাত মুখ বেকাস কেন???

আনহা: আরে ও তো বোবা কালাও হবে শুনতে পায় না। তাই এরকম ভাবে বলি। যতটুকু বোঝে আরকি… তা আইডিয়া কেমন???

অন্তি: তোর মত এলিয়েনের আইডিয়া এলিয়েনের মতই হবে….

আনহা: অন্তি😭😭😭

অন্তি: ওই দেখ তোর জান…..

আনহা: ওরে আমার ফু… চো… কা…. জানু দাড়াও আমি আসছি….

অন্তি: ফুচকা…. 😡😡😡

তারপর দুজন মিলে ফুচকা খায়। ইহান স্কুল থেকে বেড়িয়ে আনহাকে ফুচকা খেতে দেখে ঠোঁট উলটে ড্যাব ড্যাব করে তাকিয়ে থাকে। যেন কিছুই বুঝতে পারছে না। তখনি ওর গাড়ি আসে…. আর ইহান নিচের দিকে তাকিয়ে চলে যায়…….

,
,
,
,

,
,
,
,
,
পরের দিন টিফিন পিরিয়ডে ইহান টিফিন বক্স খুলে বসে থাকে…. কিন্তু কিছু খায় না ঠিক তখনি আনহা আসে। এ কয়দিনে ইহান আনহাকে সহজভাবে নিতে না পারলেও আনহার কাছে ইহান যেন ওর একটা ফ্রেন্ড হয়ে গেছে। ও প্রতিদিন এসে ইহানের সাথে বকবক করে নিজের সারাদিনের কাজের বিস্তারিত বর্ননা করে। কিন্তু ইহান শুনতে চায় কিনা তা শুনতে চায় না।

আনহা নিজের টিফিন বাটি নিয়ে এসে ইহানের পাশে বসে পরে। ইহান প্রতিদিনের মতই নিজের টিফিন বক্সটা একবার খুলে দেখে তারপর বন্ধ করে নেয়। আর ইহানের পাশে বসে আনহা খেতে থাকে আর বকবক করতে থাকে….

আনহা: জানিস পিচ্চি আজ আমি নিজের হাতে খাবার বানিয়েছি। ঝাল মিষ্টি আর টক একদম আমার মনের মত…. আহা কি খেতে….

আনহার এমন কথায় ইহান আজকে টিফিন বক্সটা একটু ইচ্ছে নিয়ে খুলল। কিন্তু খুলেই হতাশ হয়ে আবার তা বন্ধ করে নিল। তারপর মুখ ভার করে নিচের দিকে তাকিয়ে রইল…..

আনহা: আচ্ছা তুই টিফিন খাস না কেন??? তোর কি ক্ষিদে পায় না নাকি???

ইহান:…..

আনহা:আচ্ছা তুই কি এনেছিস দেখি… [ ইহানের হাত দেখে বাটিটা নিয়ে নেয় ] এমা এসব কি… [ নাক ছিটকে ] এসব ছাইপাস কেউ কিভাবে খায়…. তুই এসব কিভাবে খাসরে। আমার তো দেখেই বমি আসছে……

ইহান নিচের দিকে তাকিয়ে চুপ করে আছে। এবার আনহা বুঝতে পারে ইহান না খেয়ে কেন প্রতিদিন তা ফেলে দেয়। কারন বাটিতে স্যান্ডুইচ, ফল আর একটা সিদ্ধ ডিম আছে। আসব এইটুকু ছেলে কেন যেকারো কাছেই বিরক্তিকর৷…

আনহা: তোর কি ক্ষিদে পেয়েছে…???

ইহান:….. [ মাথা নেড়ে না বলল ]

আনহা দেখল ইহান ওর খাবারের দিকে তাকাচ্ছে বারবার। বেশ বুঝতে পারছে ও আনহার খাবারটা খেতে চায়। কিন্তু বলতে পারছে না।

আনহা: এখন আমি এতগুলো খাবার কিভাবে খাব…. আর আমিতো খাবার ফেলতে পারি না। আল্লাহ নাইলে পরে কপাল থেকে খাবার উঠাই নিব😭😭😭

ইহান এমন কথা শুনে আনহার দিকে তাকায়…..

আনহা: আল্লাহ প্লিজ তুমি আমার কপাল থেকে খাবার উঠাই নিয়ো না। 😭😭😭 আমি ইচ্ছে করে খাবার নষ্ট করছি না নেহাত খেতে পারছি না তাই…. আচ্ছা আমি যদি কাউরে খাওয়াই… [ ইহানের দিকে তাকিয়ে ] এই পিচ্চি প্লিজ আমাকে হেল্প কর খেতে তুই হেল্প করলে আল্লাহ রাগবে না। আর আমার কপাল থেকে খাওয়ন নিবে না। 😭😭😭

ইহান:……

আনহা: ওই পিচ্চি তুই কি চাস আল্লাহ খাবার উঠাই নেক😡😡😡

ইহান মাথা নেড়ে না বলল….

আনহা: তাইলে খা না পিচ্চি প্লিজ😭😭😭

ইহান খাবার টার দিকে তাকিয়ে মাথা নেড়ে হ্যা বলল…..

আনহা: [ এইবার লাইনে আসছে। কিন্তু আমার ভাগে কম পরব যাই হোক। ] নে…..

ইহান খেতে গেল কিন্তু পারল না কারন পরোটার সাথে আনহার বানানো পাও ভাজির ভাজিটা উঠাতে পারল না। এটা দেখে আনহা হেশে নিজেই ওকে খাইয়ে দিল। ইহান এই প্রথম কারো হাতে খেল। ছোট হলেও ওকে নিজের কাজ নিজেকে করতে হয়। ও আনহার দিকে তাকিয়ে খেয়ে যাচ্ছে…..

আনহা: আরো খাবি….

ইহান: [ মাথা নেড়ে না বলল ]

আনহা: [ হায়রে আর থাকলে তো খাওয়াইমু। আল্লাহ ক্ষিদে পায়নাই তাই এত খাচ্ছে পাইলে কি হত🙄🙄🙄 ]

ইহান খাবার টা খেয়ে ফোকলা দাতে একটা মুচকি হাশি দেয়। এই প্রথম ইহানের মুখে হাশি দেখল আনহা। ওর পেট টা ভরে গেল। তখনি ঘন্টা দিয়ে দেয়। ইহান চলে যায়। আর আনহা নিজের বাটির দিকে তাকিয়ে ঢোক গিলে বাটিতে লেগে থাকা ভাজিটা আঙুল দিয়ে মুছে খেয়ে কান্না করে দেয়…..

আনহা: আমার ভাজি 😭😭😭

তারপর ও চলে যায়। টিফিনে কিছু পায় না বলে ছুটির পর বাসায় গিয়ে খাওয়া শুরু করে।

মা: কিরে এভাবে খাচ্ছিস কেন???

আনহা: ক্ষিদা লাগছে খাওয়ন দেও।

মা: যাওয়ার সময় এতটা খেয়ে গেলি। টিফিনে নিয়ে গেলি। এখন আবার এত ক্ষিদে…

আনহা: আব্বু… 😭😭😭

মা: আচ্ছা থাম…. দিচ্ছি….,
,
,
,
,

,

,,
,
এভাবেই আনহার সাথে ইহানও ওর সাথে একটা বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে উঠে। কিন্তু সেখানে কথা আনহা বলত ইহান শুধু শুনত। এমন করে ওদের দিন গুলো কাটতে লাগল।

কিছুদিন পর হঠাৎ আনহা স্কুলে আসা বন্ধ করে দেয়। আর প্রতিদিন টিফিনের সময় ইহান আনহার জন্য অপেক্ষা করত। কিন্তু আনহা আসত না। তাই ও বাসায় গিয়ে প্রচন্ড কাদত। কারন আনহা ছাড়া ইহানের কোনো সঙ্গী ছিল না। আনহাই ছিল ওর একমাত্র সঙ্গী।

এভাবে কয়েকদিন কাটার পর আনহা স্কুলে আসে। আনহা বরাবরের মত টিফিনের সময় ওই বেঞ্জে গিয়ে ইহানের পাশে বসে। আনহাকে দেখে ইহান মুখ ফিরিয়ে চলে যেতে নেয়। তখনি আনহা ইহানের হাত ধরে নেয়।

আনহা: এই পিচ্চি কই যাস….

ইহান:…….

আনহা: রাগ করেছিস আমার উপর। আসলে এতোদিন আমার অসুখ ছিল তাই আসতে পারিনি।

ইহান:……..

আনহা: বললাম তো সরি। [ কান ধরে ] আচ্ছা এই দেখ তোর জন্য আমি নিজের হাতে পাও-ভাজি বানিয়ে এনেছি তুই পছন্দ করিস বলে।

ইহান:……

আনহা: এখনো রেগে থাকবি। আচ্ছা তোকে কথা দিচ্ছে আর কোনোদিন তোকে না বলে কোথাও যাব না। কিছু হলে তোকে বলব…. এবার তো খা….

ইহান:…..

আনহা: বুঝতে পেরেছি… বলে ইহানকে টেনে নিজের হাতে খাইয়ে দেয়। [ আর ইহান ও চুপচাপ আনহার হাতে খেয়ে নেয় ] বড্ড বেশি মানি পিচ্চিটা কিন্তু আদর করলে সব ঠিক😁😁😁 এই জন্য তোকে এত ভালোবাসি….. চল পিচ্চি….. তোর নামটাও আমার এখনো জানা হলো না…… যাই হোক পিচ্চিটাই ঠিক আছে….

এভাবেই আনহার সাথে কাটতে থাকে ইহানের দিন গুলো। ভাগ্যের পরিহাসে দুইটি ছোট্ট হৃদয় একে অপরের সাথে জড়িয়ে যায়। ইহান আনহাকে পেয়ে নিজের সঙ্গী পেয়েছে। আর আনহা পেয়েছে কথা বলার মানুষ…….

,
,
,

,
বর্তমান……….

আনহা ঘুমের ঘোরে নিজের উপর কিছু ফিল করতে পারে। আর ঠোঁটের উপর কিছু স্পর্শ করতে পারে। কিছু একটা আনহাকে খুব শক্ত করে ধরে আছে। আনহা চেয়েও নিজেকে ছাড়াতে পারছে না। নিজের চোখ মেলে দেখার শক্তি হারিয়ে ফেলেছে আনহা। ওওও বার বার নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করছে। কিন্তু ব্যর্থ হয় আনহা।

এবার আনহা সহ্য করতে পারে না। ধম বন্ধ হয়ে আসছে আনহার। তাই খুব জোরে চিতকার করে উঠে। পুরো শরীর ঘামে ভিজে গেছে। আশেপাশের দেখতেই দেখে ও ইহানের রুমে বেডের উপর শুয়ে আছে। কিন্তু ও তো দোলনায়….. তাহলে কি ইহান …. কিন্তু কই ইহান…. আনহা

আনহা গিয়ে লাইট জালাতে দেখে ইহান সোফায় শুয়ে আছে। আর কানে হেডফোন লাগানো…

আনহা: ওও তারমানে এইজন্য ও আমার চিতকার শোনেনি যাক ভালোই হলো। নাইলে ওকে কি বলতাম। কিন্তু এটা যদি আবার হয় তবে……

[ তারপর আনহার আয়নার দিকে চোখ গেল…….. আনহার চোখ কপালে…..

আনহা: এটা….. [ ভয় পেয়ে ]

,
,
,
,

,[ বাকিটা পরের পর্বে জানবেন ]

জানিনা কেমন হলো ছেলেবেলা কিউট একটা সম্পর্ক সময়ের স্রোতে কি হয়ে দাঁড়ায় দেখা যাক ]

Join Åriyâñà Jâbiñ Mêhèr

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here