#তুই_আমারই_থাকবি💜
#Esrat_Jahan 💜
#Part_15
!
‘এভাবেই কেটে গেলো আরো পাঁচদিন। আজ সকালে একটু আগে আম্মু ফোন করেছিল,বাসায় যেতে বলেছে আমাকে। কী জানি আপুর কী দরকারি কাজ করে দিতে হবে!
।
অবশ্য আপুর আর কি ইম্পর্টেন্ট কাজ থাকবে! ভার্সিটির সিনিয়রদের কাছ থেকে র্যাগিংয়ের শিকার হয়ে একগাদা এসাইনমেন্ট নিয়ে আসবে।আর সেই কার্যগুলো আমাকে সমাধান করতে হবে,নইলে সারাক্ষণ আমায় জ্বালিয়ে খাবে!এমনিতে ভার্সিটিতে গেলে বোকাসোকা নিমাই সেজে থাকে।আর বাসায় হিটলারি বুদ্ধি প্রয়োগ করবে……হিটলারও বড় আপুর বুদ্ধির কাছে হার মানতে বাধ্য…..!
।
যাইহোক, বাসায় যাবার জন্য ব্যাগপত্র গোছাচ্ছি। মামানিকে বলে দিয়েছি যে,অনেকদিন থাকবো! মামানিও পারমিশন দিয়ে দিয়েছে আর বলেছে যে,আমার যতদিন ইচ্ছে ততদিন থাকতে পারি। নো চাপ….
।
খুশিমনে রেডি হলাম।কিন্তু প্রবলেম হলো আমাকে দিয়ে আসবে কে?আরহাম ভাইয়ার এককথা,ভাইয়া আমাকে দিয়ে আসবে!
।
কিন্ত গুন্ডা আবরার?সেকী আর কারো কথা মানে?গো ধরে বসে আছে যে, উনিই আমায় দিয়ে আসবেন।আমি অবশ্য উনার মতলব বুঝতে পেরেছি।উনার মতলব হলো,উনাকে ছাড়া যে আমি যাচ্ছি সেটা উনার সহ্য হচ্ছে না।আসলে উনাকে তো যেতে বলা হয়নি…আর উনি মুখ ফুটে কিছু বলতেও পারছে না, তাই রেগে উনি মিস্টার ফায়ার থেকে দাবানল হয়ে গিয়েছেন!
।
এ নিয়ে উনার সাথে আমার ছোটখাটো কথা কাটাকাটিও হয়েছে।বাট আমি এখন উনার সাথে কথা বলতে চাচ্ছিনা।তাই আম আরহাম ভাইয়ার উদ্দেশ্যে বললাম,ভাইয়া চলো!আমি তোমার সাথে যাবো!
।
-এ কথা শোনার পর উনার মুখ হা হয়ে গেলো। কিছু না বলে গরম চোখে আমার দিকে তাকালেন।ওই চোখের ভাষা ছিলো,কাজটা ভালো করলে না!দেখে নেবো!
।
-আমিও ব্রাশমার্কা হাসি দিয়ে উনার দিয়ে তাকিয়ে চোখ মারলাম।মনেমনে বললাম,যা রে!তুই থাকিস ডালে ডালে আমি তার পাতায় পাতায়!মজা কীভাবে দেখাতে হয়,সেটা এবার খুশবু শেখাবে তোকে!আমার পেটে ঘুমিয়েছিস এতদিন,এখন গিয়ে জুতায় মুখ দিয়ে ঘুমিয়ে থাক!
।
-আরহাম ভাইয়া বলে উঠলো, চলো!বলেই তাড়াহুড়ো করতে লাগলেন।মামানি হাতে তৈরী পিৎজা, ভুনাখিচুড়ি, আর কিছু পিঠা দিয়ে দিচ্ছিলেন।কিন্তু আরহাম ভাইয়ার তাড়াহুড়োতে সব ভুলভাল ব্যাগে ঢুকাতে লাগলো!
।
আমি বুঝলাম না,ভাইয়া এত তাড়া দিচ্ছে কেন?আমাদের বাসায় যাওয়ার রিজনটা কী উনার?আর হঠাৎ করেই বা উনি আমায় নিয়ে যেতে চাচ্ছেন কেন?ভাবসাবে তো অন্যকিছু মনে হচ্ছে!গায়ে কড়া পারফিউম, চোখে সানগ্লাস, কালো শার্ট-প্যান্ট ইন করা আর পায়ে কালো লুপার!গায়ের রং ফর্সা দেখতে গুন্ডা আবরারের সাথে মিল থাকলেও উনার চুলগুলো কালো! ‘
।
ভাবনার খাতা বন্ধ করে গাড়িতে গিয়ে বসলাম ভাইয়ার সাথে!আর আমার গুন্ডা মিয়া মুখ গোমড়া করে রুমের দরজা বন্ধ করে বসে আছেন।উনিও শ্বশুরবাড়ি যাওয়ার জন্য রেডি হয়েছিলেন বাট উনার প্ল্যানে একগ্লাস পানি ঢেলে এই মহাযুদ্ধে আরহাম ভাইয়া জিতলেন।
।
যাইহোক, আরহাম ভাইয়া গাড়ি স্টার্ট করলেন।আমি আর ভাইয়া প্রচুর হাসাহাসি করছি আবরার গুন্ডাকে নিয়ে! টপিক হলো গুন্ডাটার ছোটবেলা নিয়ে!
।
আরহাম ভাইয়া মজা করে উনার ভাইয়ের কথা বলছেন আর আমি হেসে কুটিকুটি হচ্ছি!ভাইয়া বললো,
।
-আরহাম একবার উইক এন্ডে ছুটি কাটাতে গিয়ে এক ব্রিটিশ মেয়েকে থাপ্পড় দিয়ে নাকি অজ্ঞান করে ফেলেছিলো!রাগে তিন তিনটা থাপ্পড় এতই জোরে মেরেছিলো যে,মেয়ের ফর্সা গালে নাকি স্থায়ীভাবে উনার হাতের দাগ বসে গিয়েছিল!এ নিয়ে নাকি উনাকে জরিমানাও গুনতে হয়েছিলো। মেয়েটির দোষ ছিল শুধু, উনার হাত ধরায়!
।
-চিন্তা করো! কেমন ডেঞ্জেরাস ছেলে।ভার্জিনিটি নিয়ে যে এত বড় গলা করতো এখন কোথায় গেলো সেই মহান বীরপুরুষের ভার্জিনিটি?
।
এভাবেই কথা বলতে বলতে, হাসতে হাসতে পৌঁছে গেলাম চৌরাস্তার মোড়ে!হঠাৎ গাড়ির সামনে এসে পড়লো আরেক গাড়ি!আরহাম ভাইয়া মিটিমিটি করে তাকালেন।আমিও উনার দৃষ্টি অনুসরণ করে বাইরে তাকাতেই চোখ দুটো গোল গোল হয়ে গেলো…….
।
আমাদের গাড়ির সামনে কুচকুচে কালো মার্সিডিজ গাড়ি নিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন বিখ্যাত ইংরেজ মডেল এবং আমার কুখ্যাত জামাই মিস্টার আবরার আগুন চৌধুরী উরফে দাবানল চৌধুরী! উনি এমনই স্টাইল করে দাঁড়িয়ে আছেন যে,রাস্তায় দাঁড়ানো মেয়েরা একটা করে ছবি তুলে নিচ্ছেন।কলেজরত মেয়েরা মুখ হা করে তাকিয়েই আছে……জীবনে এমন ইংরেজ পোলা মনে হয় দেখেনি।আমি এসব দেখে খুব মজা পেলাম!!
।
যাইহোক,উনি গাড়ির দরজা খুলে হ্যাঁচকা টানে আমাকে বাইরে নিয়ে আসলেন।যাতে করে আমি গাড়ির দরজাই খাই এক বারি!রেগেমেগে উনাকে বললাম,এই গুন্ডার গুন্ডা!রাস্তায় আর মেয়ে পাসনি?আমার সাথে গুন্ডাগিরি করতে আসছিস?এটা কিন্তু চৌরাস্তার মোড়,মানুষজনের অভাব নাই!
।
-উনি ভ্রু কুঁচকে বললেন,তো?
।
-তো?তো আমি এখন সবাইকে ডেকে বলবো যে,আপনি একটা গুন্ডা!আমাকে জোর করে তুলে নিয়ে যাচ্ছেন!
।
-সবাই তোমার কথা বিশ্বাস করবেই বা কেন?
।
-করবে করবে!সবাই আপনাকে দেখেই বুঝবে আপনি খাঁটি বিদেশী! আর এসব খাঁটি বিদেশীরা কেমন মেয়ে দেখলেই ছোঁকছোঁক করে সেটা এদেশের মানুষজন ভালো ভাবেই বুঝে!
।
-তো কীভাবে বুঝে? ইংলিশ মুভি দেখে?
।
-এজন্য ইংলিশ মুভি দেখার দরকার নেই,বাংলা সিনেমা দেখলেই বুঝে!
।
-ওহহ….বেইবী!তুমি পকপক আবারও শুরু করেছ?তুমি যখন এতকিছুই জানো তাহলে তো মেইন জিনিসটাও জানো!
।
-আমি সন্দেহী চোখে উনার দিকে তাকিয়ে বললাম,মেইন জিনিস? সেটা আবার কী?
।
-উনি ব্রাশমার্কা হাসি দিয়ে বললেন, ওই! ইংরেজ বলো আর যা ই বলো,ওরা যে,রাস্তায় সবার সামনে প্রেমিকার ঠোঁটে চুমু খায় সেটাও জানো নিশ্চয়ই!
।
-আমি বেক্কলের মতো উনার দিকে তাকালাম। ব্যাটা যে এতবড় বেলাজ,বেহায়া সেটা আজ আবারও প্রুফ হলো! শেইম অন ইউ খুশবু…. শেইম অন ইউ!নিজের প্রতি নিজেরই রাগ লাগছে!
।
-উনিও যেন মহান কর্তব্য পালন করছে আমার প্রতি, এমন একটা ভাব নিয়ে বিশ্বজয়ীর হাসি ঠোঁটের কোণে ঝুলিয়ে রেখে বললেন,কাম অন বেইবী!করবো নাকি লিপ..কিস…..?
।
আমার মাথার উপর দিয়ে যেন টর্নেডো বয়ে গেলো। উনি জোরে বলাতে আশেপাশে যাতায়াতরত চার-পাঁচজন বয়স্ক মুরুব্বি লোক ফিরে তাকালেন!আমার দিকে তাকিয়ে আছেন।
।
নিজেকে এই মূহুর্তে এলিয়েন মনে হচ্ছে।এক্ষুনি যদি একটা ইউএফএ যান মাটিতে নেমে আসতো তাহলে শিউর আমি একলাফে ঢুকে যেতাম।এতই লজ্জা করছে নিজের প্রতি, আর উনার প্রতি রাগ লাগছে…..
।
।
আমাকে এই অস্বস্তিকর মূহুর্ত থেকে বাঁচাতেই যেন গাড়ি থেকে নেমে এলো আরহাম ভাইয়া।উনার কথা ভাইয়া গাড়িতে বসে থাকায় শুনতে পাননি।ভাইয়াকে আসতে দেখে মুরুব্বি লোক গুলো ধীরেধীরে চলে গেলো।
।
ভাইয়া এসেই বললো, ফাজলামো পেয়েছিস আবরার?তোর কান্ডগুলো আমি এতক্ষণ বসে বসে দেখছিলাম!!এভাবে মাঝরাস্তায় কেউ এভাবে ওভারটেক করে?
।
-তুমি আমার বউ নিয়ে যাচ্ছিলে কেন?
।
-লিসেন,তোর বউটা আমার বোন হয়।আর আমার বোনকে আমি যেখানে ইচ্ছে সেখানে নিয়ে যাবো। তোর এতে বাধা দেওয়ায় রাইট নেই!
।
-উনি রেগে বললেন, আছে!
।
আরহাম ভাইয়াও ছাড়ার পাত্র নয়।তিনিও বললেন, নেই!
।
-নেই!
।
-আছে!
।
এভাবে কথা কাটাকাটি করতে লাগলেন দুই ভাই।একপর্যায়ে……… ‘
।
একপর্যায়ে উনি ঝগড়া থামিয়ে দিলেন।হাত উঁচিয়ে আরহাম ভাইয়াকে শাসানোর ভঙ্গি করলেন।তারপর আমার দিকে তাকিয়ে একটা শয়তানি হাসি দিয়ে গাড়ির দরজাটা খুললেন,ঠাস করে আমাকে হ্যাঁচকা টান দিয়ে গাড়িতে বসিয়ে দিয়ে নিজেও বসে পড়লেন। আর আরহাম ভাইয়া বেক্কলের মতো দুইহাত গুঁটিয়ে দাঁড়িয়ে আছেন,মুখটা কেমন শুকনো, প্রাণহীন লাগছে। এরকম হওয়ার মানে বুঝলাম না।
।
-আমার বউ আমি নিয়ে যাবো। তুমি কোনখানের কার জামাই যে,অন্যের বউকে নিয়ে তাঁরই শ্বশুরবাড়ি যাচ্ছো?লিসেন…তুমি অফিসে যাও।আমি একাই আমার বউকে তাঁর বাড়ি নিয়ে যেতে পারবো!গট ইট…
।
-একদমে পুরো কথাটা বলে উনি গাড়ি স্টার্ট দিলেন।চোখে কালো রোদচশমা, পুরোই হিরো। বাট এই হিরোগিরির দাম নেই আমার কাছে।যাচ্ছিলাম একা একা,যে শান্তিতে বাসায় যাবো, সবার সাথে মজা করে কাটাবো। কিন্তু মাঝপথে এই উটকো ঝামেলা আমার পিছনে লেজ লেগেছে! ধুর…ভাল্লাগেনা…
।
প্রচন্ড বাতাসে আমার এবং উনার দুজনের চুলগুলোই উড়ছে।চারদিকে কোলাহল কমে এসেছে।গাড়িটা আমাদের পাড়ায় ঢুকতেই আশেপাশের লোকজন সবাই মিটিমিটি করে তাকালো! চা-স্টলে চা-খেতে আসা মুরুব্বিরা অবাক চোখে তাকিয়ে আছে! আমার কেমন অস্বস্তি শুরু হলো।
।
গাড়ি থেকে নেমে আমি এক দৌড়ে আমাদের বাসার দরজায় গেলাম।আহ….কত্ত শান্তি!এতদিন পর বাসায় এলাম যে……
।
-যাইহোক কলিংবেল চাপার আগেই গুন্ডাটা এসে আমার পাশে দাঁড়ালো। গা থেকে কড়া পারফিউমের স্মেল আসছে।আমি ভ্রু কুঁচকে জিজ্ঞেস করলাম,এতক্ষণ তো এত স্মেল পাইনি,তাহলে?
।
উনি পাত্তা না দেওয়ার ভঙ্গিতে কলিংবেল চাপলেন।আম্মু এসে দরজা খুলে দিলো।আমাকে আর উনাকে যেন আকাশ থেকে পড়লেন,এতই খুশি হয়েছে যে কথা বলতে পারছে না।আমাদের ভিতরে আসতে দিয়ে আম্মু আব্বুকে ডাকলেন।আব্বু এসে আরও খুশি।দুজনের খুশি দেখে উনিও খুশি।আর আমি অবলা নারীর মতো তাকিয়ে রইলাম।
।
সেই খুশিতে তিনজন নিজেদের কুশল বিনিয়ম করলেন।আপু,ভাইয়া এলো এবং সবাই মিলে একসাথে বসে নানান কথাবার্তা শুরু করলেন।
।
কিছুক্ষণ পর!আমরা ফ্রেশ হয়ে এসে সোফায় বসে আছি,উনি আমাকে পা দিয়ে বারবার খোঁচা দিচ্ছেন আর আমি রেগে উনার পায়ে লাথি মারছি!আর উনি রেগে আমার দিকে তাকাচ্ছেন।
।
-দুপুরের খাবার দেওয়া হলো উনাকে। উনিও ফ্রেশ হয়ে খেতে বসলেন।আমি রাগে গজগজ করতে করতে ফ্রেশ হতে রুমে আসতে চাইলাম,আর আম্মুকে বলে গেলাম যে,আমি রুমে যাচ্ছি।ঘুমাবো…
।
আম্মু বললো, ঠিক আছে মা।বলেই জোর করে আমার মুখে ভাতের লোকমা তুলে দিলেন,আম্মুর দেখাদেখি আব্বুও।আর তা দেখে আমার বড় গরিলা আর বড় হনুমান ভাইবোন এসে আমাকে আদর করে একের পর এক লোকমা মুখে দিয়েই যাচ্ছে।আমার খেতে কষ্ট হচ্ছে….যে এই গরিলারা বুঝবে না….গুন্ডাটা আমার এই পরিস্থিতি দেখে হাসতে হাসতে অজ্ঞান হবার দশা…
।
যাইহোক, এই নির্মম অত্যাচার শেষে আমি নিজের রুমের দিকে পা বাড়ালাম।আহ….কত শান্তি।এতদিন পর নিজের রুমে এসেই শুয়ে পড়লাম আমার ছোট্ট বিছানায়। নিজের ঘর ছাড়া আমি যে এতদিন ওখানে ছিলাম,, ভাবতেই অবাক হচ্ছি।যে আমি দুদিন কারো বাসায় থাকিনি নিজের রুমে থাকবো বলে!
।
সময়! সময় মানুষকে কতখানি পাল্টে দেয়!কত কিছুর সাথে মানিয়ে নিতে শিখায়….
।
কিছুসময় পর,
।
আমার গুন্ডাটা এলো রুমে।চোখ গোল গোল করে পুরোটা রুম গিলে খেলো।কারণ আমার রুমটা অন্যরকম।
।
প্লাস্টিকের ফুল,লতা,পাতা দিয়ে ছাদ থেকে মেঝে পর্যন্ত ছেয়ে আছে ঘরটা। একপাশে প্লাস্টিকের ম্যাপল পাতা কমলা রঙের! তার পাশের দেয়ালে টাঙানো আমার ছোট্টবেলার গুলুমুলু একটি ছবি।যেখানে আমি একা পাহাড়ের উপর সবুজ জামা পরে দাঁড়িয়ে আছি,মেঘেরা উড়ে যাচ্ছে আমার মাথার উপর দিয়ে!আমার সারা রুমটাতেই মেঘ-বৃষ্টি,পাহাড়, কুয়াশা,নদ-নদী,হ্রদ,আর গাছগাছালির ছবি।বড্ড অবাক করার বিষয় এটা।আমার মতো মেয়ের রুমে এসব প্রাকৃতিক ছবি থাকাটা!
।
-উনি বেশ কিছুক্ষণ এসবকিছু দেখে আমাকে বললেন,তুমি তো রুমটাকে একেবারে বন্যবাড়ি বানিয়ে ফেলেছ!নদী, আকাশ,গাছগাছালি, পাহাড় সব এক জায়গায়!
।
-আমি কিছু বললাম না।
।
-উনি এসে আমার পাশে বসে বললেন,আমি ঘুমুবো!
।
-ঘুমাতে চাইলে ঘুমান।আমার কী!
।
-তোমার কী মানে? তুমি আমার বউ,আমার প্রতি তোমার একটা দায়িত্ব আছে না?
।
-আমি সন্দেহী চোখে তাকিয়ে বললাম,কী বলতে চাইছেন আপনি?
।
-উনি গমগমে স্বরে বললেন,সেটাও বলে দিতে হবে?
।
-আজব পাবলিক তো!প্রবলেম কী আপনার?
।
-আমার অনেক প্রবলেম!
।
-যেমন?
।
-যেমন আমি এখন ঘুমাতে চাচ্ছি,কিন্তু তুমি ঘুমাতে দিচ্ছো না!
।
-কীহহ?আমি ঘুমাতে দিচ্ছি না?রেগে বললাম….
।
-তুমি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দাও!
।
-কচি খোকা!আসছে…..
।
-দেখো, পকপক বন্ধ করো। যা বলছি তাই করো…. রেগে বললেন।
।
-আমি পারবো না।
।
-হোয়াট দ্যা হেল… প্রচন্ড রেগে বললেন উনি।বাকিটা বলার আগেই…..।আর আমি তাতে ভয় পেয়ে বিছানা থেকে দাঁড়িয়ে যেই একদৌড়ে বেরিয়ে যাবো বলে ভেবেছি….আর উনি একটানে আমাকে দেওয়ালের সাথে চেপে ধরে আমার ঠোঁটে কিস করতে লাগলেন।
।
আমি ফ্রিজড হয়ে দাঁড়িয়ে উনাকে ধাক্কা দিয়ে সরিয়ে দিলাম আর উনি তাতে আরও প্রচন্ড রেগে আমাকে বিছানায় ফেলে দিয়ে নিজের শরীরের সমস্ত ভর আমার উপর ছেড়ে দিলেন।
।
আর আমি ৪৫+ ওজনের শুভ্রতা জান্নাত খুশবু যেন বিছানার সাথে মিশে গেলাম।উনার শরীরের ভারে আমি ঠিকঠাক শ্বাস নিতে পারছি না।যদিও আমার শ্বাসকষ্টজনিত রোগ আছে!যেটা উনার অজানা….
।
উনি উনার শরীরের ভার আমার উপর ছেড়ে দিয়ে আমার গলায় মুখ গুজলেন।ঠোঁটের উপর এমন জোরে একটা কামড় দিলেন যে,আমার প্রাণপাখিটা ফুড়ুৎ করে উড়ে যাবার দশা!আমি চিৎকারও করতে পারছিনা,উনাকে সরাতেও পারছিনা।
।
এদিকে উনি পাগল হয়ে গিয়েছেন।একের পর এক ঠোঁটে আর গলায় কামড় দিয়েই যাচ্ছেন।আর আমি ব্যথায় অজ্ঞান হবার দশা!
।
আমি এবার………. ‘
চলবে….