তোর দিওয়ানা শুধুই আমি😎 #My madness love😍 #লেখিকা_তামান্না #পার্ট_17

0
391

#তোর দিওয়ানা শুধুই আমি😎
#My madness love😍
#লেখিকা_তামান্না
#পার্ট_17

নিলা সোফায় মাথা রেখে ঘুমাচ্ছে তার পাশেই নিরু মুখ ভার করে বসে আছে সে গেইম থেকে বের হয়ে দাতঁ দিয়ে নখ কামড়াচ্ছে। আর মনে মনে খুব ভয় পাচ্ছে। সে একবার নিলার দিকে তাকিয়ে আবারও টিভির দিকে ফিরে তাকায়। কিন্তু টিভির দিকে তাকাতেই তার শরীরে কপঁন দিয়ে উঠে। তাই দাঁড়িয়ে যায় তবে ভাবে যাবেও বা কোথায়?? এতে সে ধপ করে বসে পড়ে। সে মুখ উল্টিয়ে বিড়বিড় করে বলে…..

নিরু:::: জীবনেও গেইমে যাবো না। গেইমেও লাভ হয় !?(চোগজোড়া বড় করে নিজের মাথা ঝাকুনি দিয়ে) সব মিথ্যা মিথ্যা দ্যাটস ইট। ফেইক লাভ নিয়ে কাজ নেই। আর কি জানে গেইমের মধ্যে যারা আছে এরা রিয়াল কিনা(চোখ ঘুরিয়ে ) তবে সে যে বললো সে আমাকে নিতে আসবে!?(ভয়ার্ত এর মতো ফেস করে)

::::::: আর আমাকে কেন নিবে !! দুনিয়াতে কি মেয়ের কমতি পড়ছে যে আমাকে নিবে। নিতে দিমো না উহহ।(কারে নিতে দিবি না?? (নিলা নিভু নিভু চোখ খুলে জিমিয়ে বলে ) নিরু ভ্যোবাচেকা খেয়ে সে এপাশওপাশ মাথা নাড়ায়।

নিলা উঠে নিজের চুলে ক্লিপ পড়তে পড়তে নিরুকে পুনরায় জিগ্গেস করে :::: হুমম বল !! কি দিবি আর আজকে কি?? (জানার ভঙ্গিতে )

নিরু নিলার কথা শুনে মনে মনে দুষ্টুমি বুদ্ধি চিন্তা করে বলে ::::: ভাবি তো দেখি কিছুই বুঝে নি ভালোই হলো না বললেই ভালো হবে কিন্তু আমার সুপার কুল বোনটা কবে বলবে যে ইনাকে রেডি করবো??(উদাস ফেস করে)

নিলা নিরুর উদাস ফেস দেখে নিরুকে নাড়া দিয়ে বলে::: ও মহারানী কোথায় উধাও হয়ে গেলেন?? হঠাৎ হঠাৎ তুই আর তোর বোন কোথায় যে উধাও হয়ে যাস!? তোদের যে কবে বুঝবো আল্লাহই জানে!(চোখ ঘুরিয়ে একনিশ্বাস ফেলে)।

নিলা নিরুর পাশ কেটে ড্রয়িং রুম থেকে বের হয়ে কিচেনে গিয়ে নাস্তা তৈরি করতে যায়। নিরু নিলার যাওয়ার দিকে চেয়েছিলো। যখনই নিলা চলে গেছে দেখলো তখনই নিরু দরজা অফ করে ধপ করে সোফার উপর বসে হাত দিয়ে নিজের মুখ ওর উপর তুড়ি বাজিয়ে বেডের মধ্যে হেলান দিয়ে ভাবতে লাগে কিছুক্ষণ আগে গেইমের মধ্যে তার সাথে হলোটা কি!!

কিছুক্ষণ আগে🌹…..


নিরু পাবজি নিয়ে বসে গেইমের মধ্যে ঢুকে দেখে তাকে রিমুভ করা হলো তার বন্ধুদের দল থেকে। এমনকি তার পুরো ফ্রেন্ডের কয়েন বেলেন্সও শেষ করে দিলো। যা তার আর তার বন্ধু সব তাকে ছেড়ে চলে গেলো। তখনই ওর ক্রাশ আই মিন নিরুর ক্রাশ যে সে হলো রোয়েন। কারণ রোয়েন পাবজি প্রো। তাকে সে ঐ দিন ট্রেগ করলেও মারে নি। কেননা সে লাইফের ফাস্ট টাইম এভাবে রিয়াল ক্রাশ খেলো।

নিরু আর রোয়েন একে অপরেকে চেনে না। তারা যাস্ট গেইমের মধ্যে হাই হ্যালো কথা বলছে। কিন্তু আজকে রোয়েন যে তাকে সাপোর্ট করলো। এতে সবাই হতবাক সাথে রোয়েনের বলা কথাগুলো শুনে তো বড় ধাক্কা খেলো।

রোয়েন গেইম থেকে বের হয়ে সাথে সাথে নিরুর জিমেইলে মেসেজ দে। নিরু তখনো গেইমের মধ্যে ছিলো। সে তার ক্রাশকে ঠিকভাবে চেনে না তাই সে কে তাও জানে না। নিরু গেইমের মধ্যেই ছিলো। সে অন্য পক্ষের দলে যোগ দেবে এমন ভেবে আরেক দলে যাবে তার আগেই জিমেইল আসায় সে পাবজি থেকে বের হয়ে মোবাইল হাতে নিয়ে দেখে জিমেইল এর নাম ভেসে আসছে। সে ফোন নিয়ে সোফায় বসে ফোনের লক ওপেন করে জিমেইলে ক্লিক করতেই একটা ভয়েস পাই। নিরু তো অবাক জিমেইলের নামটা দেখে।

নিরু :::: কি নাম রে বাবা “HOBHOBIMO” এমন নামেও জিমেইল হয়। আজকে না দেখলে জানতাম না। তবে ইমু শব্দটা কেন দেওয়া এই জিমেইল কি কোনো কথা বুঝার জন্যেই কি বানানো??(কিছুটা ভেবে ) ভয়েসটা কি শুনা দরকার নাকি শুনবো না!?(ঠোঁট উল্টিয়ে) দেখি ঐ মানুষটা তো আর জানাবে না। আমি শুনছি নাকি শুনেনি(ডোন্ট কেয়ার ভাব করে)।

সে পাশের ড্রয়ার থেকে ইয়ারফোন নিয়ে কানে দিয়ে ভয়েসটা চালু করে। সে শুনে…..

রোয়েন:::: শুনো তুমি কে জানি না তবে আমি রোয়েন হেকমাত। আর আমার থেকে তোমাকে খুব ভালো লেগেছে। তাই আমি তোমাকে চাই সারাজীবনের জন্যে এখনই তোমার এফবি আইডি পাঠাও। তোমার সাথে কলে কথা বলবো। I want to marry you!

নিরু শুনে তার শরীরে কম্পন লেগে যায় এতে সে দাঁড়িয়ে কান থেকে ইয়ারফোন খুলে ফেলে।

এরপর থেকে তো উপরে জেনেছেনই।

নিরু হেলান দেওয়া অবস্থায় ভাবতে ভাবতেই ঘুমিয়ে পড়ে। নিলা কিচেনে রান্না করছে। তামান্না গাড়ি পার্ক করে সুমনা কে ধরে ভেতরে আনে। নিলার বাসার গেইটের কাছে এসে তামান্না বেল বাজায়। নিলা বেলের সাউন্ড শুনতেই তড়িঘড়ি এসে দরজা খুলো তামান্না আর সুমনা কে জড়িয়ে ধরে। তামান্না নিলা মিলে দুইজন সুমনা কে ধরে সোফার মধ্যে বসায়। নিলা তো সাথে সাথে কিচেনে গিয়ে সুমনার জন্যই তার ফেভারিট খাবার বিরানি সাথে কিছু ফলমূল আর দুধ পরিবেশন করে টেবিলে।

তামান্না আর সুমনা সোফায় বসে কুশলবিনিময় করছে। নিলা সব ঠিকঠাক করে পনেরো মিনিট পর তাদের ডাক দে। তামান্না সুমনাকে ধরে ওয়াশরুমের এখানে গিয়ে ঢুকিয়ে দে। সুমনা ফ্রেশ হয়ে কোনোমতে হেঁটে টেবিলের এখানে আছে। তামান্না সুমনাকে একা আসতে দেখে রেগে বলে…

তামান্না::: সুমনা আমি তোমাকে কি বলেছিলাম??(গম্ভীর কন্ঠে মুখ ভার করে সুমনার দিকে না তাকিয়ে সামনের দিকে দৃষ্টি রেখে দুইহাত মুঠো করে)

সুমনা আর নিলা তামান্নার রাগ দেখে ভয়ে চুপসে যায়। সুমনা তামান্নার রাগের কারণ বুঝতে না পেরে নিলার দিকে তাকায়। নিলা সুমনার দিকে তাকিয়ে চোখ দিয়ে ইশারা করে বুঝায় সে একা কেনো আসলো এই অবস্থায়(হাত নাড়িয়ে)।

সুমনা বুঝতে পেরে তামান্নার পাশে বসে বলে :::: বুইন সরি তো এখন খাবার খেয়ে তুই নিয়ে যাস তাও এভাবে মুখটা বাংলা পাঁচের মতো করিস না একদম বেকার লাগিস। তোরে হাসলে যে সুন্দর লাগে যদি ছেলে হতাম তোরে বিয়েই করে ফেলতাম(মুচকি হেসে বাচ্চাদের মতো ফেস করে)

তামান্না ঠোঁট উল্টিয়ে বলে উহহহ হয়েছে পাম মারা লাগবে না আর তোরে না বলছিলাম একা না যেতে আসতে। তুই ফ্রেশ হয়ে আমাকে ডাকিস নি কেন??(উদাস হয়ে মন খারাপ করে)

সুমনা বলে ::: I’m so so sorry.. Please forgive me.

তামান্না মুচকি হেসে সুমনার গাল টেনে বলে :::: ফ্রেন্ডস এর মধ্যে নো সরি নো থ্যাংকস।

সুমনা সাথে সাদে নিজের মুখ চেপে ধরে তামান্না নিলা ভড়কে যায় তার কান্ডে। তামান্না সুমনার হাত ধরে বলে :::: কি হলো এভাবে কেন করলা একটুর জন্যে।

সুমনা আমতা আমতা করে বলে :::: আসলে আমি থ্যাংকস ও বলতে চাচ্ছিলাম (বাচ্চাদের মতো করে ভয়ে ভয়ে)

তামান্না ::: ধুর হ লাগবে না তোর সাথে নো ফ্রেন্ডশিপ(মজা করে টেডি স্মাইল দিয়ে)।

নিলা তার দিকে তাকাতেই সে নিলাকে চোখ টিপ মারে। এতে নিলা চোখ ঘুরিয়ে সেও মজাস্বরুপ তার পাশে বলে ::: হ্যাঁ তোর সাথে নো ফ্রেন্ডশিপ আর।

সুমনা মুখগম্ভীর করতেই তামান্না আর নিলা হু হা করে হেসে দে। সে অবাক নয়নে তাদের দিকে তাকায়। নিলা হেসে তার কাধে হাত রেখে বলে::::: বুনু আমরা তো মজা করছিলাম।

::::: আমিও কি মজা করতে পারি?? (মুচকি হেসে উচ্চ গলায়)

আচমকা কারো গলার আওয়াজ পেয়ে তিনজনই ঘাবড়ে যায়। তারা ডোরের এখানে তাকাতেই শকড। তাদের সামনে নীল দাঁড়ানো। নিলা ততো খুশি আর লজ্জায় এদিকওদিক তাকাচ্ছে। কিন্তু তামান্না সুমনা একে অপরের দিকে তাকিয়ে নীলের দিকে তাকিয়ে বলে……

তামান্না :::::: আরে নীল তু….তুই এখানে কেন?(অবাক প্লাস ঘাবড়ে )

নীল শুনে::: এ্যা…… তামান্না জিহবে কামড় দিয়ে :::: আইমিন হঠাৎ করে কল করে জানাতি।

নীল এসে ড্রাইনিং টেবিলে তাদের সাথে বসে বলে::: আরে আমার হবু বউ এর বাসা। আসা তো ফরজ কাজ। না আসলে বউ এ পরে পিটাবে যে কি! (মুখ বাঁকিয়ে দুষ্টুমির ভান ধরে)

তামান্না মনে মনে বলে ::: হুমম নীল কে আমাদের কথার কাজে ব্যস্ত রেখে সব করতে হবে নইতো সব সারপ্রাইজ ওয়েস্টে যাবে। রাত অলরেডি হয়ে যাচ্ছে কিছুক্ষণ পরই মাগরিব এর আযান হবে। এর মধ্যে কাজ শেষ করতে হবে(নিজে নিজে টেডি স্মাইল দিয়ে)

তামান্না নীলকে বলে :::: তুই আমারে গালি দিছিস কেন??

নীল ব্যবলাকান্তের মতো হয়ে তামান্নার দিকে তাকিয়ে জিগ্যেস করে ::: আমি কবে গালি দিলাম(কিছুটা স্বাভাবিক ভাবে থেকে না জানার মতো করে ফেসটা)??

তামান্না চোখজোড়া ছোট করে তাকিয়ে বলে :::: এখনই সত্যি বল নইতো তোরে টিকটিকির বিরানি খাওয়াবো।

নীল তখন মাএই মুখে কিছুটা ভাতের লোকমা তোলে খাচ্ছিলো। কিন্তুু তামান্নার মুখে এমন খাবারের নাম শুনে সে দৌড় দে। সুমনা হা করে সব শুনছিলো সে একবার তামান্নার কথা ভেবে তার দিকে একবার তাকায় আবার নীলের যাওয়ার দিকে। নীল ওয়াশরুমে গিয়ে বমি করতে লাগে। সে ফ্রেশ হয়ে এসে তামান্না কে একনজর দেখে নে। সে তো ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়েই বসে অাছে। তামান্না আবারো নীলকে জিগ্গেস করে……

তামান্না ::::: বলবি নাকি না?? (টেডি স্মাইল দিয়ে) নাকি আবারো সুন্দর সুন্দর খাবারের নাম বলতে হবে(বাঁকা হেসে)

নীল তোয়াল দিয়ে মুখ মুছে দুই হাত এক করে তামান্নার সামনে ধরে বলে ::: আরে ভুল হয়ে গেলো আমার যে তোরে গালি দিলাম। আর জীবনেও দেবো না শুধু ভালো…..(বাকিটা বলতে গিয়ে থেমে যাই। তামান্না নীলের দিকে তাকিয়ে বলে :::: ভালো কি??(জানার ভঙ্গিতে )

নীল আমতা আমতা করে বলে ::: সারাজীবন ভালো হয়ে চলবো এটাই বলতে চাচ্ছিলাম(হাসার ট্রাই করে)

তামান্না শুনে ওও গুডড। এতে তো ভালোই। আমার জান্টুস তোর লগে সারাজীবন ভালো থাকবে।

নীল শুনে নিজের মাথা নাড়িয়ে কিছুটা গম্ভীরতা প্রকাশ করে যা কেউই বুঝে নি। নিরু জিমু জিমু ড্রাইনি রুমে এসে সবাইকে দেখে খুশিতে এসে জড়িয়ে ধরে তামান্না আর সুমনা কে। তবে নীলকে দেখে চিৎকার দে। এতে তামান্না নিজের মাথা নাসূচক নাড়িয়ে নিরুকে বুঝানোর ট্রাই করে। নিরু তামান্নার ইশারা বুঝতে পেরে চুপ হয়ে যায়। নীল দে কিছু জিগ্গেস করবে তার আগেই নিলার রুম থেকে চিৎকার শুনা যায়……..

………চলবে…….

[বিঃদ্র::: এখন এখানে কাহিনি বাড়ছে সাথে রহস্যের উদঘাটন ও খুলতে চলেছে। সম্রাট বা সালমান বা রোয়েন হিরো তিনজন নাকি দুইজন আবার ভিলেন কি আছে? তাহলে বলি হ্যাঁ ভিলেন আছে। আপনাদের কি রোয়েন আর তাসনিম এর জুটিটা ভালো লাগবে যদি তাদের কে এক করি??। জানাবেন কেমন। হেপ্পি রিডিং

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here