#তোর দিওয়ানা শুধুই আমি😎
#My madness love😍
#লেখিকা_তামান্না
#পার্ট_18
তামান্না তাসনিমের দিকে রাগী লুক নিয়ে তাকিয়ে আছে আর তাসনিম সে দেখেও না দেখার ভান করে এপাশ ওপাশ চেয়ে যাচ্ছে। সে কোনোভাবে তামান্নার কথার শিকার না হওয়ার জন্যে শিস বাজিয়ে তার পাশ কেটে যাচ্ছিলো। তামান্না সামনের দিকে তাকানো অবস্থায় তাসনিমের কান ধরে টান দিয়ে নিজের মুখোমুখি করে।
তাসনিম কানের ব্যথায় আউচচচচচ দিই ছাড়ো না আমি কি করলাম?? (বাচ্চাদের মতো ফেস করে)
তামান্না মুখটা গম্ভীর করে বলে ::: তোরে না বলছিলাম নিলা যাতে কাপড়টা না দেখে। এখন দেখলি কাপড়টা দেখে ফেললো।
তাসনিম ::: উহহ আমি কি জানতাম আমাদের কথার মাঝে নিলা দিই রুমে আসবে?? জানলে তো কখনও কাপড়টা সামনে রাখতাম না।
তামান্না :::: বাল তুই ডাল। নিরুপমা বহিপীরের এক্সট্রা বউ(কান ছেড়ে রেগে উচ্চ গলায়)
তাসনিম মুখ ফুলিয়ে উল্টা জবাব দিয়ে বলে :::: উহ তুমি মনে হয় খুব ভালো আমি সব জানি এখনই (বাকিটুকু বলার আগেই তামান্না তাসনিমের মুখ চেপে ধরে)
নীল নিলা তামান্না তাসনিমের কান্ড কারখানা বুঝতেছিলো না কিন্তু সুমনা ঠিকই বুঝতে পারছে। তামান্না তাসনিমের দিকে তাকিয়ে চোখজোড়া বড়বড় করে তাকায়। তাসনিম নিজেও চোখজোড়া বড় করে কানে একহাত চেপে তামান্নাকে সরি বলছে।
তামান্না ছেড়ে দিয়ে সামনে তাকাতেই দেখে নীল নিলা চোখজোড়া ছোট ছোট করে তাদের দিকে তাকিয়ে আছে। তামান্না আমতা আমতা করে বলে :::: ক….কি এভাবে কি দেখতেছিস বাল?? যা ভাগ(চোখ ঘুরিয়ে টেডি স্মাইল দিয়ে)
তামান্না নিরু মানে তাসনিমের দিকে তাকিয়ে ওরে কিছুটা বলতে চাচ্ছিলো তবে নীল এসে বলে ::: ওই হয়ছে !! তোদের ঝগড়া বন্ধ কর। বাকি ঝগড়া বাসায় গিয়ে করিস।
তামান্না তাসনিম শুনে ::: এ্যা……..(নিলা নীলকে কুচা দে। নীল নিলার দিকে তাকালে সে নীলের কানে বলে ::: এসব কি বলছো ঝগড়া করার জন্যে অনুমতি দিচ্ছো যে??)
নীল শুনে ::: ওওও না না তামান্না তাসনিম ঝগড়া করিস না মারামারি করিস কেমন(দাঁত কেলিয়ে হেসে)
তামান্না তাসনিম নিলা কোমরে হাত রেখে নীলের দিকে তাকায়। নীল তো তিনজনকে এভাবে দেখে বিড়বিড় করে বলে…..
নীল :::: ওমা গো এরা দেখি এভাবে চেয়ে আছে যেনো এখনই আমার ভর্তা বানাবে।
~~ হ্যাঁ এখনই করলা ভর্তা বানাবো। (তামান্না নীলের পাশে এসে দাঁড়িয়ে )
~~আমিও বানাবো আলু ভর্তা।(তাসনিম নীলের আরেকসাইডে এসে দাঁড়িয়ে )
~~ সেইম পিয়াজ ভর্তা বানাবো(নিলা নীলের সামনে এসে দাঁড়িয়ে)
নীল তিনজনের এক্সপ্রেশন দেখে বলে ::: তিন মহারানী দেখি আমাকে মেরে ফেলার দান ধায় আছেন। থাক মহারাণীরা আমাকে মেরে নিজেদের হাত কেন খারাপ করবেন(উদাস ফেস করে আস্তে আস্তে একপা দুইপা পিছিয়ে রুম থেকে বের হয়ে ড্রয়িং রুমের দিকে চলে যায়)
তামান্না তাসনিম নিলা সুমনা হু হা করে আসতে থাকে।
☘☘
রোয়েন কি করবে বুঝতেছে না সে কিভাবে এই মেয়েটাকে খুঁজবে তা নিয়ে ভাবতে থাকে। তখনই তার মাথায় একটা বুদ্ধি আসে আর বলে ::: ইয়েসস এখন আমি ঠিকই তোমাকে বের করবো মিস এন্জেল। (আসলে পাবজি গেইমে তাসনিমের নাম ছিলো এন্জেল ) তোমার থেকে তো আমারই হতে হবে।
রোয়েন হাতে ফোন নিয়ে সোফায় পায়ের উপর পা তোলে বসে আর পাবজির মধ্যে ঢুকে এন্জেল নামের মধ্যে ঢুকে প্রফাইল চেক করে। সেখানি কোনো ক্লো না দেখতে পেয়ে সে সোফার থেকে উঠে নিজের রুমে এসে ব্যাগ থেকে নিজের লেপটপ বের করে জিমেইল স্কেন করে সাথে এন্জেল এর জিমেইল প্রফাইল চেক বাউন্স দেয়। এতে আচমকা এন্জেল এর ফোন আর বাসার নাম্বার সো হয়ে যায়। রোয়েন একটা পেপারে এন্জেলের ফোন নাম্বার আর বাসার এড্রেসটা লেখে ফেলে সেটা মুখের সামনে নিয়ে ডেমিল স্মাইল দিয়ে বলে::: My love your are so fool. Cuz i’m fooling you হাহাহাহা ( নিজেই বেক্কল র্মাকা হেসে )
~ কি রে এভাবে হাসতেছিস কেন?? প্রেমে পড়ছিস নাকি?? (দুষ্টুমির ভাব করে কোট খুলে শার্টের হাতা ফোল্ড করে কলার ঠিক করতে করতে বলে )
রোয়েন কারো সাউন্ড পেয়ে পিছে ঘুরে দেখে সালমান আসলো। সে একহাত দিয়ে মাথার চুল নাড়িয়ে কোনো কিছু বলার। তবে কি বলবে বুঝতে পারতেছে না। সালমান তার দিকে তাকিয়ে বলে::: বাহানা খুঁজে লাভ নেই বলে ফেল।
রোয়েন :::: Im fall in love(নিশ্চিত ভাবে শান্ত কণ্ঠে)
সালমান জগ থেকে গ্লাসে পানি ঢেলে খাচ্ছিলো। রোয়েন এর কথা শুনা মাএই তার মুখ থেকে হিচকে কিছু পানি বের হয়ে পড়ে। সে কাশতে লাগে। রোয়েন এপাশ-ওপাশ তাকিয়ে তড়িঘড়ি করে টিস্যুর পেকেট নিয়ে তার সামনে হাজির হয়ে বলে :::: এভাবে শকড হওয়ার কিছু নেই im really fall in love of angel.(সামনের দিকে তাকিয়ে মনে মনে তাকে অনুভব করে)
সালমান মুখ মুছে বলে ::: তোর চাপা মারা না তোর কাছেই রাখ ভাই(দাঁত কেলিয়ে হু হা করে হেসে)
রোয়েন ::::: কেন???
সালমান::: তুই আর লাভ নোট বিলিভ আবেল!(হতাশ সুরের ভাব করে)
রোয়েন :::: তুই লাভ করতে পারলে আমি কেন পারবো না?? হুমম তোর লাভ থাকতে পারলে আমারও থাকবে।
সালমান লাভের কথা শুনে কিছুটা রেগে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে বলে ::: লাভ খেলা না রে একটা মেয়েকে তুই সত্যি কারের ভালোবাসলে পাবি নয়ত সারাজীবন নিস্তব্ধ শহরে বাস করতে হবে। হ্যাঁ আমি লাভ করি তাই তো এখানে আসা(কিছুটা আস্তে বলে)
রোয়েন বুঝতে পারলো সালমান রেগে গিয়েছে সে তার কাধের মধ্যে হাত রেখে বলে :::: সরি রে একটু বেশি বলে ফেললাম। রিয়েলি সরি রে দুশমন(উদাস হয়ে বাচ্চাদের মতো ফেস করে)
সালমান তার হাত ধরে বলে রেডি হয়ে নেন জনাব। পার্টিতে যেতে হবে।
রোয়েন শুনে ::: পার্টি কিসের কার?? আমরা তো এখানে নতুন কেউ তো আমাদের চিনে না। তাহলে কারা দিলো।
সালমান একটা কার্ড রোয়েনের হাতে ধরায় বলে ::: Im going to get ready..You also go.(টেডি স্মাইল দিয়ে)
রোয়েন কার্ডটা খুলে দেখে সেখানে লেখা “The love anniversary of Nil & Nila from Taru’s mantion.
রোয়েন টেডি স্মাইল দিয়ে বলে ::: সব ঠিক আছে তবে তারু লেখা টা ফানি লাগলো হাহা।
সে কার্ডটা টেবিলের উপর রেখে রেডি হতে গেলো। তখন কেউ একজন তা নিয়ে চলে যায়। সালমান ব্লু কালারের শার্ট জিন্স ওয়াইট কালার ব্লেজার পরে শার্টের কলার কিছুটা হোল্ড করে হাতাটা ফোল্ড করে পারফিউম মেকে চুলের মধ্যে তেল দিয়ে সামনের চুলগুলো কিছুটা সামনের দিকে এনে পিছের চুলগুলো নাড়া দিয়ে স্পাইক করে আয়নার দিকে তাকিয়ে ক্রাশর্মাকা স্মাইল দিয়ে বলে :::: আজ ফিদা হবে,,ক্রাশ হবো আবারো হাজারো মেয়ের( দরজার দিকে এসে ডেভিল স্মাইল দিয়ে গেইম শুরু করার জন্যে আসতেছি মিস্টার আসহান খান)
সালমান রোয়েন একসাথে গাড়িতে উঠে যায়।
☘☘
তামান্না হালকা হলুদ কালারের গাউন পরে মুখে হালকা সাজ,,ভ্রু এর মধ্যে কালো কাজল এঁকে,,ঠোঁটে পিংক কালার লিপস্টিক দিয়ে কানে ডায়মন্ড ইয়াররিং,, গলায় ডায়মন্ড চেইন,, ব্রেসলেট আর বামহাতে ঘড়ি পরে চুলগুলো খোলা রেখে অধেক চুল পিছে রেখে বাকি অধেক সামনের দিকে নিয়ে রাখে।
~~ আপনি গো আপ্পি এভাবে রেডি হয়েছো যেনো আজ কাউকে তোমার লুক দিয়ে শিকার করবা মনে হচ্ছে(দুষ্টুমি হেসে)
তামান্না এমন কথা শুনে দরজার দিকে তাকায় দেখে নিরু দাঁড়িয়ে আছে তাকে দেখে বলে মাশাআল্লাহ আমার বোনটার উপর কারো নজর যেনো না পড়ুক। খুব সুন্দর লাগছে।
নিরুও পিংক কালারের গাউন পরে হালকা সাজ সাথে ডায়মন্ড সেট যা তাদের আম্মু তাদের কে পরতে বলেছিলো।
নিরু লজ্জামাখা ফেস করার ভান করে বলে :;: আহা এতো প্রশংসা কোথায় জমিয়ে রাখবো??(হাত দিয়ে মুখ ঢেকে)
তামান্না ঠোঁট উল্টিয়ে বলে ::: বাল আমাকে সুন্দর বলছিস !! মাশাআল্লাহ কি তোর শ্বশুরবাড়ির লোক বলবে??(ভ্রু নাড়িয়ে)
নিরু::: আরে দিই রাগছো কেন আর আমার শ্বশুরবাড়ির লোক তোমাকে দেখলে পছন্দ করে নিয়ে যাবে তাই আমিই বলি ওদের পক্ষ থেকেও মাশাআল্লাহ (তামান্নার গাল টেনে)
তামান্না মুচকি হাসি দে নিরু তার হাত ধরে নিয়ে যেতে চাইলেই সে বলে ::: কি রে টান দিয়ে কোথায় নিয়ে যাবি??(অবাক চোখে)
নিরু চোখ ঘুরিয়ে বলে ::: দিইই নিলা ভাবি?? রিমেমবার??
তামান্না :::ওহহ আচ্ছা তুই যা আমি আসতেছি ফোনটা চার্জ দিয়ে আসি। পার্টি তে পিক তুলতে কাজে লাগবে(চোখ মেরে মুচকি হেসে)
নিরু নিজের দুই হাতের তিন আঙুল এক সাথে করে গার্ন টাইপ করে বলে ::: Yooo yaah Snapchat…
তামান্না নিজের মাথা নাড়িয়ে নিরুকে যেতে বলে নিজের ফোন খুঁজতে গিয়ে দেখে ফোন বালিশের এখানে। সে ফোন নিতে গিয়ে কিছুটা অবাক হয়। সেখানে একটা খাম। সে খামটা হাতে নিয়ে বিড়বিড় করে বলে…..
তামান্না::: এটা কিসের খাম?? আর এখানে কেমনে আসলো?? সকাল-বিকাল-সন্ধ্যা কোনো টাইমে এটা এখানে আসলো? আজকে রুমে……বাকিটা ভাবতেই মনে পরে যায় কে যেনো তার চোখ ফাঁকি দিয়ে বেরিয়ে ছিলো। তার মানে খামটা সেই রাখলো। কিন্তু কেনো?? এরপর আমি রুমে আসি নি একদম নিলার বাসায় চলে গিয়েছিলাম।
তামান্না খামটা খুলতেই কিছু ছবি উল্টা করে বেরিয়ে আসে। সে ছবিগুলো সোজা করতেই কিছুটা ঘাবড়ে যায়। ছবিগুলো মধ্যে আসিফ,,,সেই পাচঁ ছেলেটা যারা ঐ দিন এক মেয়েকে ধর্ষণ করতে চেয়েছিলো তাদের ছবি!! কিন্তু এদের এভাবে কে মারলো?? আসিফ একে কেন মেরে ফেললো?? (ভয়ে তার হাত থেকে ছবিগুলো পড়ে ) এগুলো Veleniya করবে না কোজ সে তো এভাবে কাউকে মারে না। তাহলে কি….(হঠাৎ মাথা চেপে ধরে তার চোখে কিছু কিছু জাপসা ছবি ভেসে উঠতে লাগলো কারো ফেস তার গলার আওয়াজ ঠিকভাবে শুনা যাচ্ছে না তবে একটা কথাই তার মনে পড়তেছে তোর দিওয়ানা)
তামান্না ধপ করে বেডের উপর বসে পরে কাঁপা কাঁপা হাতে গ্লাসের মধ্যে পানি ঢেলে ঢোক ঢোক করে পানি খেয়ে ফেলে। সে নিজেকে বুঝানোর চেষ্টা করে ভাবতে লাগে কে সে যে আমার দিওয়ানা?? তার মাথা কিছুটা ভালো লাগতেই সে ফ্লোর থেকে ছবিগুলো নিয়ে খামটা নিতেই এখান থেকে একটা চিঠি বের হয়।
তামান্না খামের মধ্যে ছবিগুলো রেখে চিঠিটা খুলে দেখে উপরে নাম দেওয়া তোর দিওয়ানা।
~ ভালোবাসতে এসেছি,, মায়ার প্রেমেতে অন্ধ হতে এসেছি,, তোমায় নিজের করতে এসেছি,, তোমার নেশায় নেশাগ্রস্ত হতে এসেছি। মাই ডেয়ার লাভ নিজের মাথায় এতো জোর দিও না আমি কে তা জানার জন্যে। কোজ আমি যেই হোক না কেনো তুমি শুধু আমার। অন্য ছেলের সাথে মিশবা না। আজকে পার্টি সো তোমার মায়াবি নেশায় নিজেকে জজরিত করতে উপস্থিত হবো। তোর নেশা আমার হৃদয়ের ভালোবাসার বাহার। কেউ তোমার কে আমার থেকে দূর করতে পারবে না। যে চেষ্টা করবে তার দন্ড এই ছবিগুলো মতোই হবে। সো জানু বি কেয়ারফুল।
তোমারই এক দিওয়ানা💖
তামান্না ভ্রু কুচকে বলে:::: দিওয়ানা দিওয়ানা (গর্জন দিয়ে চিঠিটা হাতের মধ্যে মুঠো করে)এটা কেমন চিঠি লাভও দেখাই সাথে ভয় বোনাস। ধুর লাগবে না। (খামে চিঠি ডুকিয়ে ড্রয়ারের মধ্যে রেখে রুম থেকে বের হয়ে যায়)
………….চলবে………..
[বিঃদ্র:::: কালকে এই গল্পই দেওয়া হবে তাও বোনাস পার্ট। সবাই পার্টিতে আসিয়েন। অপেক্ষা রইলো। কারণ কালকে হিরো ভিলেন সব মাফিয়া কিং এন্ড কুইন সব একসাথে হবে। আর গল্পটা শেষের দিকে যাচ্ছে খুব তাড়াতাড়ি রহস্যের উদঘাটন হবে। তারপর গল্পের ইতি টানবো ইনশাআল্লাহ। হেপ্পি রিডিং ]