তোর দিওয়ানা শুধুই আমি😎 #My madness love😍 #লেখিকা_তামান্না #পার্ট_21

0
419

#তোর দিওয়ানা শুধুই আমি😎
#My madness love😍
#লেখিকা_তামান্না
#পার্ট_21

তামান্না তাসনিম একে অপরের দিকে তাকাতাকি করছে। আবার সামনে দিকে তাকাতেই চোখজোড়া গোল করে তাকিয়ে থাকে। কারণ তাদের সামনে স্টেজে দাড়িয়ে আছে সালমান আর রোয়েন। তাসনিম রোয়েন কে দেখে ভয়ে বেহাল হয়ে যাচ্ছে। সে মনে মনে বলে…

তাসনিম ::: ওরে বাবা গো এ দেখি কলেজেও চলে আসলো ! ছেলেটার প্রবলেম কি? এভাবে যেখান সেখান চলে আসে। উফফ অসহ্য ! (চোখ ঘুরিয়ে ভ্রু নাচিয়ে স্টেজের দিকে তাকিয়ে)

তামান্না তাদের আসা যাওয়া নিয়ে তেমন মাথা না ঘামিয়ে নিরুর দিকে তাকিয়ে দেখে সে ঠোঁট নাড়িয়ে নিজেই বিড়বিড় করছে। তামান্না দুষ্টুমির ভাব ধরে নিরুর কিছুটা কাছে এসে শুনার চেষ্টা করে। নিরু বিড়বিড় করে রোয়েনের চৌদ্দ গোষ্ঠী উজার করতে থাকে।

তামান্না শুনে মনে মনে বলে ::: নিরু তোর থেকে যে জ্বালাস ফিল হচ্ছে খুব ভালোই বুঝতেছি। তোর পছন্দের জিনিসের পিছে এতোগুলো মেয়ে ঘুরঘুর করতেছে তা নিয়ে তোর রোয়েনের ঘর উজার করা স্বাভাবিকই।

তামান্না নিরুকে সেখানে রেখে সামনে যেতে লাগলেই হঠাৎ তার পা থেমে যায়। সে তার হাতে কারো স্পর্শ অনুভব করে। কেউ আচমকা তার হাত ধরছে এ বুঝতে পেরে পিছে ঘুরতেই সে দেখে হা হয়ে তাকায়। সালমান তার হাত ধরে রাখছে। সে তাকে দেখে ক্রাশর্মাকা স্মাইল দেয়। এ দেখে তামান্না অবাকসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।

তামান্না তার স্মাইল দেখে একদফা ক্রাশ খেয়ে মনে মনে বলে ::: এমন হাসি যদি আগে দেখতাম তাহলে বিয়ে করে ফেলতাম। এখন তো লাগছে সে আমাকে বেহাল করার ধান্দায় আছে। এভাবে স্মাইল করতেছে যেনো আমাকেই দেখাচ্ছে।

সালমান মুচকি হেসে তামান্নাকে টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নেয়। তার কোমর পেঁচিয়ে ধরে। তামান্না বড় সরো ধাক্কা খেলো। সে ভাবতেও পারে নি সালমান পাবলিক প্লাসে তাকে এভাবে আঁকড়ে ধরবে। তামান্না আশেপাশে সবার দিকে তাকিয়ে দেখে যে যার মতো চলাফেরা করতেছে।

তামান্না একরাশ বিরক্তি নিয়ে সালমানের হাতে নিজের নখের আঁচড় দিয়ে বলে :::: বেশি শখ মেয়েদের এভাবে কোমর পেঁচিয়ে ধরতে(চোখ ঘুরিয়ে রাগী দৃষ্টিতে)।

সালমান মুচকি হেসে বলে ::: সব ঠিক তবে বেঠিক হলো সবার না শুধু (তামান্নাকে আরো আছে টেনে নিজের মুখের কাছে এনে ) তোমার কোমর পেঁচিয়ে ধরতে ভালো লাগে।

🌿🌿

নিরু রোয়েনের গোষ্ঠি উজার করে সামনে ক্লাসে গিয়ে দেখে সেখানে কেউ নেই। সে আশপাশে তাকিয়ে দেখে তার বান্ধবীদের ছিটেফোঁটাও উপস্থিত নেই। সে রেগে ব্যাগটা বেঞ্চের উপর রেখে গালে হাত দিয়ে মুখ ফুলিয়ে বলে ::: তামু দি তুমিও পারলে এমন করতে?? একটু কি ভাবতেছিলাম তার জন্যে এভাবে ফেলে চলে গেলে। আসিও তোমাকে বুঝাবো মজা। উহহ তাসনিম আরা নিরু আমি !

হঠাৎই ক্লাসের সব লাইট অফ হয়ে গেলো। সে আশপাশ তাকাতেই পারছে না পুরো রুম অন্ধকার হয়ে গেলো। সে কাঁপাকাঁপা হাতে ব্যাগ থেকে ফোন বের করে আশেপাশে লাইট দিতেই দেখে এক কালো স্যুট পরা লোক দাঁড়িয়ে আছে। সে ভয়ে ভয়ে উচ্চ সুরে তাকে ডাকতে থাকে। কিন্তু কোনো রেসপন্স না পেয়ে সে ধীর পায়ে হেটে তার কাছে যেতেই তার পা পিছলে গিয়ে পড়তে লাগলেই তার আগে কেউ তার কোমর চেপে নিজের কাছে নিয়ে আসে।

নিরু ভয়ে চিৎকার চেঁচামেচি করতে লাগে ::: আআআআআআআআ বাঁচাওওও বাঁচাওওও। কেউ আমাকে এর হাত থেকে বাঁচাওও প্লিজজজজজ।

লোকটা নিরুর কান্ড দেখে মুচকি মুচকি হাসতে থাকে। সে তাকে নিজের বুকের সাথে লাগিয়ে নিয়ে কিছুক্ষণ সেভাবে দাঁড়িয়ে থাকে। নিরু তার থেকে ছুটার জন্যে হাত পা চালাতে থাকে। লোকটা আর না পেরে নিরুর গাল টেনে গালে ভালোবাসার ছোয়া দেয়। নিরু জীবনেও এমন কিছু অনুভব করে নি। এমনকি লাভ কি তাও বুঝে নি তবুও রোয়েন এর পাশে কোনো মেয়েকে দেখলে তার কেনো যেনো অন্যরকম খারাপ লাগতো। যা সে বুঝতো না।

লোকটা তার হাত ছেড়ে দেয়। নিরুর নিজেকে হালকা হালকা মনে হতেই চোখ খুলে দেখে লাইট অন হয়ে গেলো পুরো রুম ফাঁকা। সে আনমনেই গালে হাত দিয়ে মুচকি মুচকি হাসি দেয় আর বলে আই নো এটা তুমিই মিস্টার রোয়েন হেকমাত ওরপে আমার হবু জামাই। ইসসস! (দুই হাত নাড়িয়ে মুখ ঢেকে)

রোয়েন ক্লাসের বাইরে নিরুর কান্ড দেখে মুচকি হাসি দিয়ে বলে পাগলি যে আমার উফফ ! আসলেই আমি ও পাগল সালমান ঠিক বলে হাহাহা।

🌿🌿

তামান্না নিভু নিভু চোখ খুলে দেখে সে এক নৌকার মধ্যে শুয়ে আছে। আস্তে আস্তে উঠে দেখে সালমান তার সামনে হাটুগেড়ে বসে আছে। সে এর কারণ বুঝতেছে না। তামান্না এতে ভ্রুক্ষেপ না করে নৌকা থেকে নামবে ভেবে পা দিতেই দেখে সে নদীর মাঝে। আর মাটি থেকে কিছুটা গভীরে।

সালমান উঠে বসে বলে :::: জান এভাবে তাকালে কিছু হবে না যেতে পারবে না আর কেউ নেই যে তোমাকে আমার কাছ থেকে নিয়ে যাবে।

তামান্না মুখ ফুলিয়ে বলে ::: উহহ ! আপনি নিজেকে কি মনে করেন আমি যেতে পারবো না?? হাহ আমি পারবো এখনই দেখাছি। এই বলে সে পা রাখতেই সালমান বলে ::: এই নদী কিন্তু স্বাভাবিক কোনো নদী না। এখানে পানি নিচে ধারালো ভয়ংকর কিছু মাছ আছে। আশা করি বাকিটা বুঝেছো(পাম মেরে মুখটা বাঁকিয়ে মুচকি হেসে)

তামান্না শুনে একপা পিছায় তো আরেক পা আগায়। সে আমতা আমতা করে বলে ::: তো কি হয়ছে আমি কি ভয় পাই এগুলো কে!

সালমান ::: না পেলে যাও ডুব দাও আমি সুটিং করি ক্যামেরা রেডি আছে।

তামান্না ভ্রু কুচকে তাকিয়ে বলে ::: মানে ক্যামেরা কেন লাগবে??

সালমান দুষ্টুমি হেসে বলে ::: কেনো আর কি তোমাকে এখানে অজ্ঞান করে রোমান্টিক টাইম স্পেন্ড করার জন্যে এনেছিলাম। কিন্তু তুমি তো পালানোর উপায় খুঁজতেছো। তাই ক্যামেরা রেডি রাখলাম। তুমি যদি মাছের খাদ্য হয় সেটা ভিডিও করে এফবি,ইন্সটাগ্রাম,টিকটক,লাইকে ছেড়ে দিবো।

তামান্না চোখজোড়া গোল করে সালমানের কিছুটা কাছে এসে ধমকির মতো করে বলে ::: হেই আপনার প্রবলেমটা কি আমাকে এভাবে জ্বালাছেন কেন?? না চেনা,,না জানা,,না কোনো অতীতের সম্পর্ক….(বাকিটা বলতে গিয়ে তার মাথায় ব্যথা অনুভব করে সে দুইহাত মাথায় চেপে ধরে চোখ হিচকে বন্ধ করে ফেলে)

সালমান তামান্নার অবস্থা দেখে বাঁকা হাসি দেয়।

🌿🌿

নীল নিজের রুমে সোফার মধ্যে বসে বেডে শুয়া আর্ধমরা মেয়েটার বেহাল অবস্থা দেখে মনে মনে বলে ::: এসব কে করতে চাই?? আমি তো শুধু তামান্নাকে চাই।

নীল নিজের শার্ট পরে মেয়েটার দিকে তাকিয়ে বলে ::: দেখ তুই মরিস না আবার আর্ধমরাও হয়ে আছিস। তোর শরীরে হাত দেয় নি। কারণ আমি থার্ড লো ক্লাস মেয়েদেরকে একদম পছন্দ করি না। তোরে (গালে হাত দিয়ে ভাবার ভান করে) শুধু নির্যাতন করছি বেশি কিছু করিনি। রাতে ইনজেকশন পুশ করছিলাম। করার পর তোর গালে চড় মেরে লাল করে দিছি ব্যসস। সত্যি না তিন সত্যি তোর গায়ে একফুট বিন্দু ও স্পর্শ করে নি।

মেয়েটা সব শুনে নিস্তব্ধ তার উপর এভাবে জুলুম করা হলো। সে দেখে তার কাপড় ঠিকঠাকই আছে তবে কিছুটা জায়গা ছেঁড়া সাথে হাত পায়ের বন্ধনগুলোও খুলা। সে কোনোমতে বসে বলে ::: আমাকে এভাবে রেখেই বা দিলেন কেনো শেষ করে দিতেন।

নীল বাচ্চাদের মতো ফেস করে মেয়েটার কাছে সে বেডের পাশে হাটু গেড়ে বসে বলে :::: না না আমি কিছু করবো না। যা করবে ঐ ঐ তামান্নার দিওয়ানা আছে না? কি যে নাম ওও হ্যাঁ মনে পড়ছে সম্রাট সে না তামান্নার পিছে ঘুর ঘুর করে।

মেয়েটা নীলের এসব বলার কোনো কারণই বুঝতে পারছে না। সে কিছুটা সাহস জুটিয়ে বলে ::: এ…এ…এতে আমার কি করার??(ভ্রু নাচিয়ে মুখটা ভয় পাওয়ার মতো করে কাঁপাকাঁপা কণ্ঠে)

নীল ::: ওও হ্যাঁ তুই তুই কি করবি জানিস?? (দাঁত কেলিয়ে হেসে) তুই সম্রাটের বেড পাটনার হবি….

মেয়েটা চোখজোড়া বড় রে বলে ::: এই আপনি কি বলছেন?? আমাকে কেনো এসবে ব্যবহার করতেছেন?? আমি একজন গরীব নিরহ ঘরের মেয়ে। আমাকে আপনার বাসায় কাজের মেয়ে রাখলেও চলবে দাসি বানিয়ে ফেলেন তাও…….(বাকিটা বলতে গিয়েও পারলো না। নীল রেগে মেয়েটাকে জোরে সরে চড় দেয়)

নীল চেঁচিয়ে বলে :::: চুপ একদম চুপ ফাজিল মেয়ে।

এই বলে নীল রুম থেকে বেরিয়ে যায়। যাওয়ার আগে মেয়েটার মুখে নিজের পকেট থেকে টাকা বের করে মারে আর বলে খবরদার যদি বাসায় না ফিরিস। যা লাগবে কিনে রুমে চলে আসবি। এখান থেকে বের হবি না। তোরে আমার কাজে লাগাবো। সো রত্নকে যত্ন করে সজাগ সতেজ করতে হবে। মাইন্ডডেট!

মেয়েটা নীলের এসব আচরণ কোনোভাবেই মানতে পারছে না। একটা মেয়েকে এভাবে কষ্ট দেওয়ার মানে কি??

নীল গাড়িতে বসে তামান্নার ছবির দিকে তাকিয়ে আছে। তখন তার ঘাড়ে কারো হাতের স্পর্শ পাই। সে চোখজোড়া এদিকওদিক দেখে গ্লাসের মধ্যে তাকাতে দেখে এক হুডি পরা লোক তার গাড়ির পিছনে বসে আসে। চোখে সানগ্লাস। ধীর হাতে নিজের পকেটে হাত রাখতেই।

~~ খবরদার গার্ন বের করার ট্রাই করো না। নইতো আমি সুট করতে টাইম নেবো না(ভ্রু নাচিয়ে বাঁকা হেসে)।

নীল কণ্ঠটা মেয়েদের মতো শুনে বলে ::: কি চাই আপনার?? আর এখানে আমার গাড়িতে কিভাবে এলেন??(সন্দেহের ভঙ্গিতে চোখজোড়া ছোট করে সামনের দিকে দৃষ্টি রেখে)

মেয়েটা ~~ এই ব্যাাপারে আপনার না জানলেও চলবে। তাই এসব কথা শুনে একটা প্রয়োজনীয় কথা শুনেন।আমার সাথে হাত মিলিয়ে একটা ডিল ফাইনাল করতে হবে।

নীল::: আমি অপরিচিত কারো সাথে কাজ করে না।

মেয়েটা~~ অপরিচিত মেয়ের সাথে সারা রাত কাটাতে পারো। সে ব্যাপারে সব জানা আছে। আর (গালে হাত দিয়ে ভাবার ভান করে) তুমি তো এনগেইজড তাই না?? তোমার ফিউন্সের নামটা কি জানি?? (কপাল চুলকিয়ে শয়তানি হেসে) ওওও মনে পড়ছে নিলা রাইট??

নীল শুনে কিছুটা ঘাবড়ে যায়। সে একশ্বাস ফেলে বলে :: কি চাও??

মেয়েটা শয়তানি হেসে বলে ::: এতো এসেছো আসল কথায়……..

…….চলবে……

[বিঃদ্র:::: কেউ আমারে বকা দিও না কেমন। নীল এতোক্ষণ ভিলেন ছিলো আমিও ভাবছিলাম। কিন্তু হঠাৎ এই কোন মেয়ে একটা এসে হাজির হলো তা না জানা আমি। এখন লাগতেছে নীল সাইকো আর এই নতুন মেয়েটাই বা কে? জানতে পড়তে থাকুন]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here