#তোর দিওয়ানা শুধুই আমি😎
#My madness love😍
#লেখিকা_তামান্না
#পার্ট_25(ধামাকা একশন পার্ট)
তামান্না নীলকে দেখে বলে :: তুই আমার সাথে কোনো কথা বলবি না ! (রেগে অন্যদিকে ফিরে দুইহাত বুকের উপর গুজে )
নীল ব্যবলাকান্তের মতো হয়ে তার দিকে তাকিয়ে বলে ::: আমি কি করলাম?
তামান্না তার সামনে এসে জোরে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে থাকে। অপরপাশে সালমান তাদের দুইজনকে একসাথে দেখে রাগে ফুসতে থাকে। সে মনে মনে বলে…
~ বেবি এখনো সব ক্লিয়ারলি বুঝতে পারো নি তাই এমন করছো ! যখন বুঝতে পারবে তখন আমি বুঝাবো(সলমান রেগে চোখজোড়া গরম করে তামান্নার দিকে তাকিয়ে )
তামান্না নীলকে জড়িয়ে ধরে বলে ::: আমার সব মনে পড়ে গেছে। আগের সব কথা মনে গেছে(কান্না করে হিচকি তুলে)
নীল তামান্নার কথা শুনে কিছুটা ঘাবড়ে যায়। সে সাথে সাথে তামান্নার বাহুজোড়া ধরে বলে ::: কি…..কি মনে পড়ছে তোমার?? (ভয়ার্ত কণ্ঠে)
তামান্না নিজের চোখমুছে নীলের গাল ধরে বলে ::: আমার সব মনে পড়ে গেলো যে তুমিই আমার আসল ভালোবাসা। সেই সালমান তোমাকে আমার সামনে মেরে আমাকেও আঘাত করে সব স্মৃতি মুছে দিয়েছিলো। এখন আর কোনো বাঁধা থাকবে না। তুমি চিন্তা করো না। আমি নিলাকে বুঝিয়ে দেবো(কান্না করে করে)
নীল তামান্নার কথা শুনে থ মেরে যায়। সে তো মহাখুশি। তার এই মুহুর্তে যেনো ডান্স দিতে মন চাচ্ছে। নীল তামান্নার দিকে তাকিয়ে টেডি স্মাইল করে মনে মনে বলে ::: এতো দেখি মেঘ না চাইতেই বৃষ্টি। বাহ! মিস্টার মাফিয়া কতোই না গেইম খেলছিলে আমার থেকে তামান্নাকে দূর করার। এখন বুঝ তোর সামনেই সে আমার জন্যে কান্না করছে। আমাকে ভালোবাসি বলতেছে।
তামান্না আড়চোখে সালমানকে দেখে বাঁকা হাসি দেয়। সে নীলের হাত ধরে বলে ::: আর কখনো করবে…..(বাকিটা বলার আগেই নীলের ফোন বাজতে লাগলো)
তামান্না তার হাত ছেড়ে দেয় নীল বেচারা ফোন বের করে দেখে প্রিয়ার নাম ভেসে আসতেছে। সে কল উঠাতে যাবে তার আগেই তামান্না তার মুখের দিকে পানি ছুড়ে মারে। নীল হাউমাউ করতে তামান্না তার হাত থেকে ফোন নিয়ে নিজের পকেটে ডুকিয়ে বলে :::: নীল সরি খেতে গিয়ে পা পিছলে তোমার উপর পড়লো। তুমি ওয়াশরুমে গিয়ে ঠিক করে ফেলো। আইম সো সরি বেবি।
নীল বিরক্ত হলেও কিছু বললো না কারণ সে জানে তামান্না কি কি করতো যখন সে সালমানকে ভালোবাসতো। সে এরই সুযোগ নিয়ে বলে::: ওওহ জানু আমি কি কখনো তোমার সাথে রেগে থাকতে পারি? আমি এখনই যাচ্ছি আর আসচ্ছি(মুচকি হেসে)
নীল ওয়াশরুমের মধ্যে ঢুকতেই তামান্না তড়িঘড়ি করে তার ফোন বের করে ওপেন করতেই দেখে পাসওয়াড দেওয়া। এ দেখে তার মাথা গরম হয়ে যায়। সে এপাশ-ওপাশ তাকিয়ে কি করবে ভাবতে থাকে।
সে মনে মনে বলে ~~ এখন কি করি? যে কাজের জন্যে নিলাম! সেটাই যদি না করতে পারি। না না! আমি আমার কাজ করবোই। কিন্তু পাস কি হতে পারে ! এমন কিছু তো সে দেবেই যা সে বেশি পছন্দ করে। কি কি(একহাত মাথায় চেপে পায়চারি করে )।
হ্যাঁ একটা জিনিস অবশ্যই বলে “তুই ই তো সব”। এই কথাটা সে বার বার বলে। তাহলে কি এটাই হবে? লিখে দেখি!
তামান্না বাংলায় টাইপ করে কথাটা লেখতেই ফোনের লক খুলে যায়। সে একদীর্ঘশ্বাস ফেলে কল লগে যায়। সেখানে যেতেই নিলার নাম্বারের সাথে আরেক জন মেয়ের নাম দেখতে পাই প্রিয়া।
তামান্না ভালো করে দেখে প্রিয়ার টাইম আর নিলার টাইম খুব কাছাকাছি। যখন নীল নিলাকে কল করেছিলো তখন 10:20am ছিলো আর প্রিয়ার টাইম হলো 10:40am…সে ধীরে ধীরে কিছুটা অনুমান করতে পারে।
সে মনে মনে বলে ~ নিলার সাথে কথা বলার বিশমিনিট পর প্রিয়ার সাথে..কে এই প্রিয়া??(সন্দেহের ভঙ্গিতে)
সে পিছে ঘুরে দেখে নীল আসতেছে। সে ফোনটা চেয়ারের মধ্যে রেখে অন্যদিকে তাকিয়ে নিজের ফোন বের করে চালানোর ভান করতে লাগে। সালমান কিছুক্ষণের জন্য সোহেলের সাথে ফোনে কথা বলতেছিলো। তাই সে দেখেনি তামান্না নীলের সাথে কি করতেছিলো। সে কল রেখে তামান্নাকে আবারো নীলের বুকে দেখে নিজের বুকের আগুন জ্বলে উঠলো। সে এবার রেগে তাদের সামনে গিয়ে তামান্নার হাত ধরে টান দিয়ে নিজের সাথে মিশিয়ে নীলের গালে চড় মেরে দেয়।
তামান্না সালমানের হাত সরানোর চেষ্টা করতে লাগে। সে চাইলেই মাফিয়া কুইনের মতো কাজ করতে পারে। কিন্তু সালমান আর নীল তার মাফিয়ার ব্যাপারটা জানে না। সালমান নীলকে মারতে আগাতে লাগবে তখনই ওটি থেকে ডক্টর বের হয়ে আসে। তারা থেমে যায়। নীল কিছুটা ভয় পেতে থাকে। কেননা নিলা সব জেনে গেছে। নিলাকে গাড়ি দিয়ে এক্সিডেন্ট করিয়ে সে নিজেই তার সামনে এসে তামান্না সালমান তার সব কথা বলে।
নীল কিছুটা দূরে এসে দাঁড়ায়। ডক্টর সবার দিকে উদাস ফেস করে তাকিয়ে মাথা নিচু করে। তামান্না ডক্টরের দিকে তাকিয়ে বলে ~ আমার বান্ধবীর কি অবস্থা??(শান্ত কণ্ঠে প্লাস গম্ভীরতা প্রকাশ পেয়ে)
ডক্টর নিজের মুখ উপরে করে দেখে বলে ::: কনগ্রেচুলেশন সে এখন আল্লাহর রহমতে ঠিক আছে। তবে পাঁচ ঘণ্ঠা পর হুশ আসবে। এর আগে উনার সাথে একজনকে থাকতে হবে।
~ আমি থাকবো (সুমনা সবার মাঝ থেকে বলে উঠে)
সবাই মুচকি হেসে রাজি হয়ে যায়। এতে নীল শয়তানি হাসি দিয়ে মনে মনে বলে::: এবার নিলা মরলেও আমার উপর দোষ আসবে না। আসবে এই সুমনার উপর(সুমনা তামান্নার দিকে তাকিয়ে)
নীল ফোন পেয়ে প্রিয়াকে বলে সব সাকসেসফুল তুই রোয়েনকে বেঁধে রেখেছিস তো? প্রিয়া বাঁকা হেসে বলে :: অলরেডি ডান বেইব। এখন একটাই কাজ এর পোরর্পাটি আমাদের নামে লিখে দিক। এদিক থেকে আমি আমাদের ব্যবস্থা করে ফেলি তুই তোর মাসুকার ব্যবস্থার করে ফেল। আর শুন ড্রাগ ডিলার আসছে তাড়াতাড়ি আস কয়েকটা মেয়েদেরও কিডনাপ করছে। এর সাথে ডিল ফাইনাল করতে আস।
নীল দেরি না করে বেরিয়ে যায়। তামান্না নীলের বেরিয়ে যাওয়া দেখে বলে :::: চোর আসবে এবার সবার সামনে।
তামান্না আর সালমান দুইজনই দুই ধরনের মেসেজ পাই। তামান্না মেসেজে দেখে রিয়া ওকে মেয়েদের হরণের কথা বলে জায়গাটা সেন্ড করে। সালমানও সেইম জায়গার লোকেশন পাই সাথে জানতে পারে ড্রাগডিলার সে এই জেলার মানুষদের মেরে জেলাটা শূন্য করতে চাই। সব ডিলেটলস দুইজন পেয়েই বের হয়ে যায়। কিন্তু তারা জানতো না তাদের দেখা হওয়ার সব ব্যবস্থা আল্লাহ করে রেখেছেন।
নীল ড্রাগডিলারের সাথে ডিল ফাইনাল করে নিলো আর বাকি মেয়েদের দিকে তাকিয়ে শয়তানি হেসে ড্রাগডিলারকে ধরিয়ে দেয়। ড্রাগডিলার খুশি হয়ে বিশলাখ টাকার ব্যাগ নীল আর প্রিয়ার হাতে দেয়।
তখন এক কুকুরের আওয়াজে সবাই বাইরের দিকে তাকায়। কিন্তু অবাকজনক সেখান থেকে সাদা ধুয়া ভেতরে আসতে থাকে। এর মাঝে সবাই ধুয়া সরিয়ে ফ্ল্যাশ অন করার মধ্যে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। পুরো গোডাউন অন্ধকারময় হলে তাদের এক এক গার্ড গায়েব হতে থাকে। নীল বুঝতে পারলো সম্রাট এখানে চলে আসছে।
নীল দেরি না করে রোয়েন মাথায় গার্ন রেখে বলে::: সম্রাট আমি জানি তুই এখানে চলে আসছিস। এখনই বেরিয়ে আয়। নাহলে তোর ভাইয়ের গেইম এখানেই শেষ করে দেবো।
হঠাৎ ধুয়া সরতেই দেখে সামনে মাস্ক পরা চুলগুলো একসাথে বেণী করা, কালো শার্ট-পেন্ট পরা এক মেয়ে একদম কিলার মাফিয়া কুইন লুক। সে পকেটে হাত রেখে বলে ::: মার গুলি!
নীল শুনে ::: মিস ভেলেনিয়া লোয়া দ্যা মাফিয়া কুইন তো দেখি মানুষের প্রতি কোনো দরদ দেখাই না। ওকে দেন এর গেইম বাজাই দেয়।
তামান্না ডোন্ট কেয়ার ভাব করে বলে ::: কারে ট্র্যাগ করছিস?
নীল ভ্রু কুচকে সেদিকে তাকাতেই অবাক তার পাশে চেয়ারে রোয়েন বাঁধা নেই। সে পাশ ঘুরতেই রোয়েন তার মুখে এক পান্স মারে। এতে সে ফ্লোরে পড়ে। তামান্না এসে বলে ::: তোরে দোস্ত বানিয়ে ছিলাম। কিন্তু দোস্ত হয়ে পিঠে ছুড়ি ঢুকিয়েছিস।
নীল কণ্ঠটা শুনে বলে ::: তুমি কি??
ভেলেনিয়া লোয়া নিজের মাস্ক খুললেই নীল শকড খাই। সে জানতোই না তামান্না মাফিয়া জগতে। হঠাৎ তামান্নার মাথায় ড্রাগডিলার বয় গার্ন ট্র্যাগ করে। এতে রোয়েন আগাতে চাইলেই বাকি যে কয়েকজন গার্ড ছিলো। তারা রোয়েনকে ধরে ফেলে। নীল উদাসর্মাকা হাসি দিয়ে দাঁড়িয়ে বলে ::: জানু এভাবে বললে কি আর হয়। এখনই বিয়ে করবো তোমাকে দেখবো তুমি কি করো!
তামান্না হাসি দিয়ে বলে :: আমার দিওয়ানা এখানেই আছে।
~আহহহহ (ব্যথায় মাথায় হাত চেপে সে পিছে ঘুরতেই সম্রাট তাকে পান্স মারে সালমান)। সে নিচে পড়ে যায়।
সালমান নিজের তর্জনী আঙুলে গার্ন ঘুরিয়ে ঘুরিয়ে নীল আর গার্ডস এর দিকে তাকিয়ে। রোয়েন শিটি বাজিয়ে বলে :::: ভাই জসস ভাবে এন্ট্রি মারলা।
নীল গার্ডস এর দিকে তাকিয়ে বলে ::: গরুর মতো তাকিয়ে আছিস কেন তোরা?? মার এদের!
সব গার্ডস ওদের মারতে আসলে সালমান আর রোয়েন মিলে এক এক জনকে টাইড দেয়। সালমান একসাথে দুইজনের হাত ধরে দুইজনের মাথা একসাথে মেরে দেয় এতে তারা অজ্ঞান হয়ে যায়। রোয়েন আরেকজনের ঠ্যাং এ পা দিয়ে ফেলে তার হাত বাঁকিয়ে জোলে ডান হাত দিয়ে বারি দেয়। এতে তার বাহুজোড়া ভেঙে যাওয়ার উপক্রম।
সালমান আরেক গার্ডকে মারবে তার আগে প্রিয়া তার মাথায় গার্ন ট্র্যাগ করে। সে বলে :::: অনেক হয়েছে তোমাদের একশন এখন আমার সুটিং দেখো। প্রিয়া গার্নের ট্রিগার চালাতে গেলেই তামান্না তার হাত দিয়ে প্রিয়ার হাত ধরে গার্নটাকে ধাক্কা দেয়। এতে গার্ন উপরে উঠে নিচে পড়ার আগেই তামান্না প্রিয়ার দিকে তাকিয়ে চোখ টিপ মের তার মুখে এক পান্স মারে। এতে প্রিয়া দুলতে দুলতে নিচে পড়ে যায়। গার্নটা তামান্না কেস করে ফেলে।
নীল জোরে জোরে নিশ্বাস নিয়ে তামান্নার দিকে তাকিয়ে বলে :::: আমি সত্যিই তোকে খুব ভালোবাসি। প্লিজ আমার হয়ে যাহ। তামান্না নিজের মাথা ডান-বাম নাড়িয়ে না বুঝিয়ে গার্ন ট্র্যাগ করতে চাইলেই সালমান গার্নটা নিয়ে নে সাথে সাথে পুলিশও সেখানে চলে আসে।
তারা নীলকে ধরে নিয়ে যায়। সালমান রোয়েনেকে জোরে গলা মিলিয়ে এপাশ তাকাতেই দেখে তামান্না উদাস মুখ করে আছে। সে তার পাশে এসে হালকা কাশি দেয়। তামান্না সাথে সাথে সালমানকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগে আর বলে ::: আমি আমি খুব খারাপ। তোমাকে ভুল বুঝে তোমার গালে…..(বাকিটা বলতে গিয়ে সালমানের বুকে মাথা গুজে তার শার্ট ভিজিয়ে দেয়)
সালমান মুচকি হেসে কিছু না বলেই একহাত দিয়ে তামান্নার হাত ধরে আরেক হাত দিয়ে কোমর পেচিয়ের কুলে উঠিয়ে নেয়। তামান্না উহ বলে ভয় পেয়ে যায়। সে সালমানের চোখের দিকে তাকাতে দেখে তার চোখে অন্যরকম চাহনি। যা এতোবছর ধরে গর্তে ঘেটে ছিলোহ লুকিয়ে রেখেছিলো সেই ভালোবাসা।
রোয়েন তাদেরকে দেখে মনে মনে নিরুকে নিয়ে ভেবে বলে ::: ভাই মেরে ভাই তুই তোর রোমান্সে থাক, আমি গেলাম আমারটার কাছে।
…………চলবে………
[বিঃদ্র::: ধামাকা তো পেলেন চেয়েছিলাম পার্ট পচিশে শেষ করে দেবো। তবে অনেকে তামান্না আর সালমানের কিছু রোমান্টিক মোমেন্ট চাই। আসলে লেখতে লজ্জা লাগে। কিন্তু তাও বিয়ের পর দেবো কালকে রোমান্টিক মোমেন্ট বানিয়ে দেওয়া হবে। সবাইকে তাদের বিয়েতে দাওয়াত রইলো। এরপর শেষ পার্ট দিয়ে গল্পটির ইতি টানবো। তারপর বাকি দুই গল্পের পার্ট দেওয়া হবে। হেপ্পি রিডিং ]