#হলুদ_খামে
#পর্ব_২০ (শেষ পর্ব)
𝘼𝙙𝙝𝙖𝙧𝙚𝙧 𝙈𝙪𝙨𝙖𝙛𝙞𝙧 (ইফ্ফাত)
রেলস্টেশনে বসে অপেক্ষা করছি কখন ট্রেন আসবে। বাসে করেই সিলেট যেতে পারতাম, কিন্তু খুব ইচ্ছে ছিলো ট্রেনে ঘুরবো।
আজ ইচ্ছেটাকেও কেমন ফিকে লাগছে।
ওদিকে সবাই হয়তো জেনে গেছে বউ পালিয়েছে।
বাবা মায়ের মনের অবস্থা কেমন কে জানে!
খুব দেখতে ইচ্ছে করছে বাবা মাকে।
ইশশ একবার গিয়ে যদি জড়িয়ে ধরতে পারতাম!
সবাই হয়তো বাবাকে বাজে বাজে কথা শোনাচ্ছে।
নিজেকে খুব অপরাধি লাগছে আজ।
মানাফকে কোথায় খুঁজবো জানি না।
শুধু জানি আমার মানাফকে আমি সেখানেই পাবো।
চোখ বন্ধ করে এসব ভাবছি ঠিক তখনই ট্রেনের হুইসেল শুনতে পেলাম।
দীর্ঘঃশ্বাস ফেলে সামনে তাকালাম।
স্বপ্নের ট্রেন ভ্রমনটাও আজ কেমন রশহীন।
স্টেশনে তেমন কোনো মানুষও নেই।
ফাঁকা স্টেশনে যে ক’জন যাত্রী ছিলো সবাই আমার দিকে কেমন ফ্যাল ফ্যাল করে তাকিয়ে আছে।
হয়তো বুঝে গেছে মেয়েটা তার বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে এসেছে।
ভারি লেহেঙ্গা হাতে ধরে এগিয়ে যাচ্ছি ট্রেনের কাছে।
আশ পাশ দেখে নিলাম, পরিচিত কাউকে দেখতে পাচ্ছি না। উঠে পড়লাম ট্রেনে।
জানালার পাশে বসে ভাবছি, আমি কি ফিরে যাবো?
আচ্ছা তামিমকি খুব বেশিই রেগে গেছে?
আমার বাবাকে অপমান করছে নাতো?
কিন্তু এতদূর এসে ফিরে যাওয়া অসম্ভব।
পালিয়ে যখন এসেছি, এখন ফিরে যাওয়ার চিন্তা করা নিতান্তই হাস্যকর।
আমার সামনে এক মধ্যবয়সি মহিলা মাথায় ঘোমটা দিয়ে বসে আমার দিকে তাকিয়ে আছে।
আমারও অবশ্য মাথায় ঘোমটা দেয়া, কিন্তু মহিলার আর আমার মধ্যে বেশ পার্থক্য।
এই বগিতে মাত্র নয়জন মানুষ বসে আছে।
আমার জন্য অবশ্য ভালোই হয়েছে, সকলের চোখে বধু বেশে বসে থাকা আমার জন্যও অস্বস্তিকর।
আচ্ছা মহিলাটি আমার দিকে তাকিয়ে কি ভাবছে?
ভাবছে হয়তো আমি পাগল, বিয়ের আসর থেকে পালিয়ে এসেছি।
আমাকে দেখে হয়তো তারও অতীত মনে পড়ছে।
খুব জানতে ইচ্ছে করছে আমাকে নিয়ে সে কি ভাবছে।
কৌতূহল দমিয়ে রাখতে না পেরে তাকে প্রশ্ন করেই বসলাম–
কিছু বলবেন আন্টি?
আমার প্রশ্ন শুনে মহিলাটি নড়ে চড়ে উঠলেন।
কিছুটা আমতা আমতা করে তিনি আমাকে পাল্টা প্রশ্ন করলেন।
— মা তুমি কি পালায় আসছো?
না মানে এমন পোষাক গায়ে…
ভয় পাইয়োনা, আমি কাউরে বলব না।
আমি একটু হেসে মহিলার প্রশ্নের উত্তর দিতে যাবো তখনই কোথা থেকে শেরওয়ানী পাগড়ী পড়া একটি লোক মুখে রুমাল দিয়ে মহিলাটিকে বললো–
— না আন্টি পালিয়ে আসেনি, ও আমার সাথে এসেছে।
একটু আগেই বিয়ে হলো আমাদের।
তার আবদার বিয়ের পর ট্রেনে করেই নাকি সে শশুরবাড়ি যাবে।
বলেই সে আমার গা ঘেষে বসে মুখ থেকে রুমাল সরিয়ে ফেললো।
এবার আমার হাত পা কাঁপতে শুরু করলো।
ভয়ে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছি আমি, লোকটা তামিম ছাড়া আর কেউ নয়।
কিন্তু তামিম আমার খোঁজ পেলো কিভাবে?
আমি তো খুব গোপনে সকলের চোখ ফাঁকি দিয়ে এসেছি।
ভয়ে আমার মুখ থেকে কোনো কথাই বের হচ্ছে না।
তামিম আমার মেহেদী রাঙা হাত শক্ত করে ধরলো।
এত জোড়েই ধরেছে যে কাঁচের চুড়ি দুটো ভেঙ্গেই গেলো।
আমার দৃষ্টি একবার তামিমের হাতের দিকে তো আরেকবার তামিমের চোখের দিকে।
তামিমের মুখে হাসি লেগে থাকলেও এই হাসি যে প্রতিশোধের হাসি তা আমি ঢের বুঝতে পারছি।
— তোমার এত তাড়াহুড়ো কেনো বলতো?
আমার আগেই এখানে এসে বসে আছো, লোকে কি বলবে? সবাইতো ভাববে তুমি পালিয়ে এসেছো।
কথাগুলো বলে তামিম একটা ডেভিল হাসি দিলো।
মহিলাটিও আর আমাদের দিকে তাকিয়ে নেই।
বড় করে ঘোমটা টেনে সিটের সাথে মাথা হেলিয়ে দিয়েছে।
তামিমের হাসি দেখেই বুঝতে পারছি আমার আর রক্ষে নেই।
চোখ নামিয়ে নিলাম আমি।
সেই ভয়ঙ্কর লাল চোখ, দু’বছর আগে যেমনটা দেখেছিলাম ঠিক তেমনই।
এ চোখের চাহনির সাথে আমি কোনো ভাবেই পাল্লা দিতে পারি না।
— তুই কি আমাকে এতোই বোকা ভাবিস তানহা?
তুই বিয়ে বাড়ি থেকে পালিয়ে আসবি আর আমি ঘুণাক্ষরেও তা টের পাবো না?
আমি জানতাম আজ তুই যেভাবেই হোক পালাবি।
তাইতো বাড়ির চারপাশে আমার লোক লাগিয়ে দিয়েছিলাম।
তুই যখন পালিয়ে যাচ্ছিস তখন আমি চাইলেই তোকে আটকাতে পারতাম।
কিন্তু আমিও দেখতে চাইছিলাম, তোর কত সাহস।
তোর খুব ইচ্ছে পালিয়ে যাওয়ার তাইনা?
আজকে তুই যেখানে যেতে চাইবি, যার সাথে থাকতে চাইবে তার কাছেই রেখে আসবো তোকে।
কেউ বাঁধা দেবে না তোকে।
ওদিকটায় আমি সামলে এসেছি, ভবিষ্যতেও সামলে নেবো।
আমিও দেখতে চাই তুই কার সাথে সুখে থাকিস।
আমার চোখ ভিজে এলো।
কি হচ্ছে কেনো হচ্ছে আমি জানিনা।
শুধু জানি আমার মানাফকেই চাই।
তামিমের জন্য আমার খারাপ লাগছে।
আচ্ছা তামিমকে একটু ভালোবাসলে কি এমন ক্ষতি হতো?
কি হচ্ছে আমার, দোটানার মধ্যে কেনো পড়ে যাচ্ছি আমি?
বার বার আমি তামিমের দিকে তাকাচ্ছি।
কিন্তু তামিম একবারও আমার দিকে তাকায়নি।
শক্ত করে আমার হাত ধরে রেখেছে, যেনো ছেড়ে দিলেই আমি দৌড়ে পালিয়ে যাবো।
অবশ্য পালিয়েই তো যাচ্ছিলাম।
কিন্তু পালিয়ে যেতাম-ই বা কোথায়?
সিটেলে গিয়ে আমি মানাফকে কোথায় খুঁজবো?
আমি তো মানাফের কোনো ঠিকানাই চিনি না।
কোথায় আছে কি করছে, আদৌ আমাকে মনে রেখেছে কিনা কে জানে?
তামিম যদি জানতে চায় আমি সেখানে গিয়ে কাকে খুঁজবো, কোথায় খুঁজবো তখন কি জবাব দেবো আমি!
তবে কি পালিয়ে এসে ভুল করলাম?
আর কিছু ভাবতে পারছি না আমি।
চোখের পানি ফেলতে ফেলতে কখন যে ঘুমিয়ে পরেছি কে জানে!
🍁
🍁
🍁
চোখ খুলতেই বুঝতে পারলাম আমার মাথা তামিমের কাঁধে।
মাথা উঠিয়ে তামিমের দিকে তাকিয়ে দেখি, সেও আমার দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে।
আশ-পাশে আর কেউ নেই।
একটা বগিতে শুধু আমি আর তামিমই বসে আছি।
আচ্ছা আমি কি কোনো স্বপ্ন দেখছি?
না তা কি করে হয়! তামিম তো আমার হাত শক্ত করে ধরে আছে।
তাহলে সবাই গেলো কোথায়?
সামনের সিটের মহিলাটাও তো নেই।
তামিমকে কিছু জিজ্ঞেস করবো সেই সৎ সাহসটুকুও যে আমার মধ্যে আর অবশিষ্ট নেই।
ট্রেন থামতেই আমার হাত ধরে তামিম নেমে পড়লো।
কিছুদূর হাঁটতেই সাদা গোলাপ ফুল দিয়ে সাজানো গাড়ির সামনে এসে থামলো।
গাড়ির দরজা খুলে মাথার পাগড়ি ভেতরে ছুড়ে ফেলে আমাকে ধাক্কা দিয়ে বেতরে বসালো।
আমিও চুপচাপ যা হচ্ছে তা মেনে নিচ্ছি।
সামনের সিট থেকে পানির বোতল নিয়ে এক পাশে দাঁড়িয়ে মাথায় পানি ঢালছে তামিম।
আমি চুপচাপ দেখছি তামিমের কর্মকান্ড।
এখনই হয়তো জিজ্ঞেস করবে আমায় ‘কোথায় যাবো আমি’ তখন কি জবাব দেবো?
মাথা নিচু করে বসে আছি আমি।
দুপাট্টার কোনা দু’হাত দিয়ে মোচড়াতে মোচড়াতে প্রায় ছিড়ে ফেলার উপক্রম।
তামিম আমার উত্তর শুনে আমার দিকে চোখ বড় বড় করে তাকিয়ে আছে।
আমি তো সত্যিই জানিনা মানাফ কোথায় আছে, তাহলে তার ঠিকানা কিভাবে বলি?
কিন্তু আমাকে অবাক করে দিয়ে তামিম কিছুই বললো না আমাকে।
সিটে মাথা হেলিয়ে দিয়ে চোখ বন্ধ করে চুল টেনে ধরে রেখেছে।
আমার নাক টানার শব্দে পাশ ফিরে তাকালো।
আমাকে কাঁদতে দেখে জোড়ে চিৎকার করে বললো–
— একদম কাঁদবিনা বেয়াদপ মেয়ে।
খুব বড় হয়ে গেছিস তুই?
নিজে নিজে সব সিদ্ধান্ত নিতে শিখে গেছিস?
একা একা ট্রেনে চড়ে বসলি, একবারও আমার কথা ভাবলিনা?
এখন আবার কাঁদছিস? থাপড়ে তোর সব দাঁত ফেলে দেবো চিনিস আমাকে?
তামিমের উঁচু গলায় আমার অন্তরাত্মা কেঁপে উঠলো।
গলা দিয়ে আর একটা শব্দও বের হচ্ছে না।
এভাবে আমাকে মানাফ ছাড়া আর কেউ বকা দেয়নি।
খুব রাগ হচ্ছে আমার, একে তো এভাবে বকা দিচ্ছে তার উপর তুই করে বলছে আমাকে।
গাল ফুলিয়ে জানালার দিকে তাকিয়ে রইলাম আমি।
🍁
🍁
🍁
রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করে তামিমের বউ হয়ে গেলাম আমি।
আমার অনুভূতি শূণ্য। বিয়ে করেছি বটে কিন্তু মন থেকে বিয়েটাকে কিছুতেই মানতে পারছি না।
বাবা মা সবাই খুব খুশি আমাকে বিয়ে দিতে পেরে।
সেদিন আমাকে বকা ঝকা করার পর প্রায় ঘন্টা খানিক থেকে সেখান আমাকে নিয়ে সেদিনই ফিরে আসে তামিম।
পুরো রাস্তায় একটা কথাও আমার সাথে বলেনি তবে এক মুহূর্তের জন্যও আমার হাত ছাড়েনি তামিম।
বেশ রাত করেই বাড়ি ফিরেও যে বিয়ের এতো আয়োজন দেখতে পাবো আমার ধারনাতেও ছিলো না।
বাবা মা একটু রেগে ছিলো আমার সাথে কিন্তু তামিম আড়ালে গিয়ে কিছু একটা বলতেই বাবার মুখে আবার আগের মতই হাসি দেখতে পেলাম।
গোলাপের সুগন্ধিতে চারিদিক ম ম করছে।
সম্পূর্ন বিছানায় লাল গোলাপের পাপড়ি ছড়িয়ে ছিটিয়ে আছে, মাঝখানে আমি লম্বা ঘোমটা টেনে বসে আছি।
চোখে আমার পানি নেই, মুখে হাসিও নেই, বিয়ের জন্য মনে লজ্জাও নেই।
সত্যিই সব অনুভূতি শূণ্য হয়ে গেছে।
কিছুক্ষন পরেই রুমে তামিম প্রবেশ করলো।
তার জন্য মনে ভালোবাসা না হলেও একটু ভক্তি আছে।
যতোই হোক এতো কিছু ঘটে যাওয়ার পরও সে আমাকে বিয়ে করেছে বলে কথা।
বিছানা থেকে নেমে তামিমের কাছে আসতেই সে এক হাতে আমার বাম হাত পেছনে নিয়ে মোচড়ে ধরে দেয়ালের সাথে ঠেশে ধরে, আরেক হাতে আমার চোয়াল শক্ত করে ধরে।
হাতের ব্যাথায় আমি চিৎকার করবো তারও উপায় নেই।
ছল ছল চোখে তামিমের দিকে তাকিয়ে আছি আমি।
তামিমও আমার দিকে এক ধ্যানে তাকিয়ে আছে।
ছোটাছুটির এক পর্যায়ে তামিম আমাবে বললো–
— তুই আমাকে তোর গোলাম হয়ে থাকতে বলবি আমি সারাজীবন তোর গোলাম হয়ে থাকতে রাজি, কিন্তু তোর এই ছোট্ট মাথায় যদি আমাকে ছেড়ে যাওয়ার চিন্তা আর একবার আসে তাহলে খুন করে তোকে রাস্তায় ফেলে নিজেও মরে যাবো, মনে রাখিস তানহা।
আমার হাত ছাড়তেই আমি গালে হাত দিয়ে ঢলতে লাগলাম।
খুব রাগ হচ্ছে আমার তামিমের প্রতি, প্রথম দিনেই কেউ এমন করে?
তামিমকে ধাক্কা দিয়ে বললাম–
কথায় কথায় তুই তোকারি করেন কেনো আপনি?
মেনার্স শিখেন নি? প্রথম থেকেই আপনি আমাকে তুই তুই কর বলছেন…
আর বলতে পারিনি আমি, তার আগেই তামিম আমাকে শরীরের সবটুকু শক্তি দিয়ে থাপ্পড় মেরে দিলো।
গালে হাত রেখে চোখের পানি ফেলছি আমি।
তামিম আমার সামনে থেকে সরে আলমারির ভেতর কি যেনো খুঁজছে।
একটু পর আমার কাছে এসে আমার মুখে একটা হলুদ খাম ছুড়ে মেরে বললো–
— পড় এটা, জোড়ে জোড়ে পড়বি না হয় আরেকটা গালও লাল কর দেবো আমি।
সঙ্গে সঙ্গেই হলুদ খামটা খুলে ভেতরে থাকা সাদা চিঠিটা পড়তে লাগলাম।
কিন্তু একি, এতো আমারই হাতের লেখা।
এই চিঠিতো আমি মানাফকে দিয়েছিলাম।
তাহলে তামিমের কাছে এই চিঠি কিভাবে এলো?
তবে কি..
— কি হলো, এখনও চুপ করে আছিস কেনো?
“মানাফ ভাইয়া
আপনি এতো কিউট কেনো? আপনি জানেন আমি দেখতে অনেক সুন্দরী। ক্লাসের সবাই আমাকে অনেক ভালোবাসে অনেক আদর করে শুধু মাত্র আপনিই আমাকে বকেন। একটু ভালো ভাবে কথা বললে কি এমন হয়? শোনেন, আপনি না আর কোনো মেয়ের সাথে মিশবেন না হ্যাঁ? শুধু আমার সাথেই কথা বলবেন আর আমার সাথেই মিশবেন। আবার অন্যদিন লিখবো আজকে আর কিছু মনে আসছে না।
ও হ্যাঁ আমি না আপনাকে ভালোবাসি, টাটা।
আপনার তানহা
লজ্জায় আমি তামিমের দিকে তাকাতে পারছি না।
ইশশ ছেলেটা কি ভাবছে।
কিন্তু লজ্জা শরম বাদ দিয়ে আমু আবারও তামিমের দিকে অবাক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছি।
মনে হচ্ছে আমি আমার মানাফকে পেয়ে গেছি।
মানাফ হ্যাঁ আমার মানাফ, সেই ক্লাস নাইনে আমি মানাফকে এই চিঠি লিখেছি।
তামিমের কাছে এই চিঠি তবে কি…
কিন্তু চেহারায় এত পরিবর্ত?
অবশ্যই কিছু কিছু মিলে, সেই চোখ চাপ দাড়ির মাঝখানের ঐ তিলটা।
দু’বছর আগে তবে এজন্যই তামিমকে খুব চেনা চেনা লাগছিলো।
আমার বিস্বয় কাটে তামিমের কথায়।
বোকা মেয়ে তুই কি রেজিস্ট্রি পেপারে সাইন করার সময় আমার নামটা দেখিস নি?
কাজি যখন তোর সামনে বলছিলো মানাফ আহমেদ তামিম তখন কি আমার নাম শুনতে পাস নি?
বাড়ান্দার গ্রিল ধরে দাঁড়িয়ে আছে মানাফ।
মানাফকে এখন তামিম ডাকবো নাকি মানাফ ডাকবো কিছুই বুঝতে পারছি না আমি।
এদিকে আমার বিস্বয় এখনও কাটেনি।
বাড়ান্দায় গিয়ে মানাফের পাশে কান ধরে দাঁড়িয়ে আছি আমি।
অথচ মানাফের কোনো পাত্তাই নেই। সে ব্যস্ত আকাশ দেখতে।
কানে ধরে উঠবস করার সিন্ধান্ত নিতেই হুট করে আমাকে হেঁচকা টেনে নিজের বুকের সাথে মিশিয়ে নিলো।
হঠাৎ এমন হওয়াতে কিছুটা হকচকিয়ে গেলাম আমি।
দু’হাত দিয়ে পেছন থেকে শক্ত করে আমাকে জড়িয়ে ধরে আমার ঘাড়ে মুখ ডুবালো।
পুরো শরীর যেনো আমার অবশ হয়ে গেছে, চোখ বন্ধ করে নিলাম আমি।
শক্ত করে মানাফের হাতে আকড়ে ধরলাম।
আজ আর বাঁধা দেবো না।
বাঁধা না দেয়াটা অবশ্য আমার সরি বলার আরেকটা উপায়।
চোখ বন্ধ করেই মানাফকে বললাম– ভালোবাসি মানাফ, খুব ভালোবাসি তোমায়।
ভালোবাসি শব্দটা শুনে মানাফ আমাকে আরেকটু শক্ত করে জড়িয়ে ধরে বললো– আমিও ভালোবাসি আমার ঝগড়ুটে বউটাকে
(সমাপ্ত)
বানানের ভুল ত্রুটি ক্ষমা সুন্দর দৃষ্টিতে দেখবেন, ধন্যবাদ।