#তুই_আমারই_থাকবি💜
#Esrat_Jahan💜
#Part_5
!
আমিও বেহুশের মতো বললাম,হুম,স্টার্ট করুন।
!
-তারপর উনি মেহেদীটা হাতে নিলেন,কিছুক্ষণ ওটার দিকে তাকিয়ে বললেন, বুঝতেই পারছি না,কিভাবে স্টার্ট করবো?
!
-তাহলে প্লিজ এসব রেখে দিন।আমার প্রচুর ঘুম পাচ্ছে…
!
-শাট আপ।পকপক করলে দিবো ঠাস করে চড় বসিয়ে।
!
-তাহলে মেহেদী হাতে রেখে সারারাত বসিয়ে রাখুন আমায়,আর নিজেও বসে থাকুন। আমি চুপ!
!
-একটা কাজ করি,ইউটিউবে ভিডিও দেখে নিই।
!
-নিন।(বিরক্ত হয়ে)
!
-উনি বেড থেকে নেমে মোবাইল রেখে ল্যাপটপটা নিয়ে এলেন।খুঁজে খুঁজে একটা গর্জিয়াস মেহেদীর ডিজাইন বের করলেন।ওটা নাকি উনার বেশ পছন্দ। ঠিক করলেন এটাই আমাকে দিয়ে দিবেন।
!
-আমিও বললাম,আচ্ছা আপনি কি লাইফে কখনো মেহেদী দিয়েছেন?
!
-না,প্রথমবার ট্রাই করবো।
!
-তাহলে এত গর্জিয়াস ডিজাইনটা নিচ্ছেন কেন?হালকা সিম্পল একটা নকশা নিলেই হয়।আর মেহেদী দেওয়া এত ইজি না।আর আপনার পক্ষে দেওয়া জাস্ট ইম্পসিবল।
!
-এই ইম্পসিবল কে পসিবল করবে আবরার আগুন চৌধুরী! সো তুমি চুপ থাকো।
!
-ওকে।
!
!
!
-তারপর উনি আনন্দিত হয়ে ঠিকঠাক করে বসলেন।বালিশের উপর আমার হাত রেখে মেহেদীটা ধরলেন।ল্যাপটপটা আমার পাশে রেখে খুব মনোযোগ দিয়ে কিছুক্ষণ ভিডিওটা দেখলেন।তারপর আমার হাতে আঁকা শুরু করলেন। প্রথমে আড়াআড়ি একটা লম্বা লাঠি আঁকলেন,তারপর ওটার উপর ছোট ছোট গোল গোল ফুল জাতীয় কিছু আঁকলেন।বুঝলাম না,এগুলো ফুল না ক্রিকেট বল!!
!
-আমি চিৎকার করে বললাম,এসব কি?আপনি ডিজাইন অনুযায়ী আঁকছেন না কেন?
!
-এইতো ডিজাইন অনুযায়ীই আঁকছি।তুমি চুপ থাকো, আমার যেভাবে ইচ্ছে সেভাবে আঁকবো। (আমতাআমতা করে রেগে!)
!
-আমিও রেগে চুপ হয়ে বসে রইলাম।
!
-তারপর উনি ওই বলগুলোতে ক্রস চিহ্ন জাতীয় কি যেন দিল।ওটার পাশে পাতাপাতা টাইপ কি আঁকলো।ওটার চারপাশে ঢেউখেলানো বন আঁকলেন। তারপর আঁকাআঁকি শেষ করে বললেন,ওয়াও, ভেরি নাইস।কেমন দিয়েছি বলো?(খুব উৎসাহের সাথে)
!
-আমারও উনার উৎসাহিত খুশি মুখ দেখে খুব মায়া লাগলো।যদিও রাগও হচ্ছিল প্রচুর!তাও গুন্ডার হাসিমুখ দেখে হাসিটাকে নষ্ট করার ইচ্ছে হলো না।তাই আমিও হাসিমুখে বললাম,হুম খুব সুন্দর হয়েছে।থ্যাংকস!
!
-ওকে।এখন ওটাকে কিছুক্ষণ শুকোতে হবে,তাই না?
!
-হুম।
!
-তাহলে শুকাও।শুকিয়ে গেলে ঘুমাতে পারবে।
!
-পাঁচমিনিট রাখলেই হবে।
!
-তাই?
!
-হুম।
!
-ওকে।
!
-তারপর পাঁচমিনিট ওয়েট করে শুকিয়ে মেহেদীটা তুলে ফেললাম।হাসিও পাচ্ছিল গুন্ডার কাণ্ডকারখানা দেখে।আমি ফ্রেশ হয়ে রুমে আসলাম।উনি বললেন,দেখাও দেখি!
!
-নিন দেখুন।বলে হাতটা দেখালাম।
!
-উনি বললেন,খুব না হলেও মোটামুটি হয়েছে।আমি বলেই পেরেছি,আর তুমি মেয়ে হয়েও মেহেদী দিতে পারো না!ডিসগাস্টিং…
!
-মেয়ে হলেই মেহেদী দেওয়া জানতে হবে?আজব!(রেগে)
!
-পকপক বন্ধ করো।
!
-আচ্ছা,আপনি এসব কেন করছেন?এই ভালো তো এই খারাপ!আবার কখনো কেয়ারিং এর ডিব্বা সাজেন?এত এত রুপের মানে কী?
!
-আরে তুমি আমার ফুপির মেয়ে। যখন ওরা এসে জিজ্ঞেস করবে, তখন আমি বলবো যে,তোমার মেয়েকে আমি কত কেয়ার করি,পিচ্চিটাকে দেখে রাখি,নিজে বসে থেকে খাওয়াই।আরো কত কী?…..
!
-ওহহ….এত এত ধান্ধা…….আমি কী ভাবছিলাম!
!
-এখন ঘুমুতে যাও।চলো….
!
-ওকে।
!
-আমি গিয়ে আগের জায়গায় শুয়ে পড়লাম।আর গুন্ডা আবরার সাহেব সোফায় রাখা বিশাল বার্বিডলটাকে নিয়ে এলেন।ওটাকে পাশে রেখে জড়িয়ে ধরে শুলেন।
!
-আমি অবাক হয়ে বললাম,একী?
!
-কী?(ভ্রু কুঁচকে)
!
-আপনি ডলটাকে নিয়ে এসেছেন কেন?
!
-জড়িয়ে ধরে ঘুমুব বলে!
!
-আপনি বাচ্চা নাকি?আজব!
!
-আমি ওকে পাশে নিয়ে ঘুমুলে তোমার মতো ডাফারের কী প্রবলেম?
!
-ডল তো মেয়েদের জিনিস। আর আপনি ছেলে হতে এসব মেয়েলী কাজ করছেন?আমার বেশ ডাউট হচ্ছে!
!
-এখানে ডাউটের কী আছে?(রেগে)
!
-আপনি এত গুন্ডাগীরি করেন।আর বাসায় মামানির আঁচল ধরে বসে থাকেন।আর এসবের আড়ালে দুনিয়ার যত্তসব মেয়েলী কাজ করছেন,এসব অস্বাভাবিক ব্যাপার দেখে আমার মনে হচ্ছে আপনার মাথায় প্রবলেম আছে।বিরাট ছিট আছে!
!
-মানে?তুমি বলতে চাইছো, আই এম মেইড?(রেগে চিৎকার করে)
!
-না না।আপনি যা ইচ্ছে করুন।প্লিজ… আমি কিছু বলিনি,আর আপনি খুব ভালো। আমিও না,,,, নিজেই পাগল…… ধুর…..কী যে করি না?গুড নাইট…স্লিপ টাইট! ঘুমিয়ে পড়ুন…..বাই!
!
-উনি তখনো রাগে কাঁপছেন। আমি আর কিছু না বলে আবারো কম্বলের ভেতর ঢুকে পড়লাম।যাক বাবা…বেঁচে আছি।ঘুমিয়ে পড়ি,নইলে গুন্ডা আমার ইন্তেকাল ডেকে আনবে!
!
চলবে…….