#তোর দিওয়ানা শুধুই আমি😎
#My madness love😍
#লেখিকা_তামান্না
#পার্ট_26(Love is in air❤)
তামান্না সালমানের বুকে মুখ গুজিয়ে আছে। সেও তাকে আকঁড়ে ধরে বসে আছে তাদের সেই পুরানো স্মৃতি জোড়ানো জায়গায়। যেখান থেকে শুরু হয়েছিলো তাদের ভালোবাসার অধ্যায়।
সাগরের সেই স্রোতময় আহবান করছে তাদের স্মৃতিকে,জোনাকি পোকারা ঘুরঘুর করে চারদিক করছে আলোকিত,ফুলের সুবাসে চারপাশ যেনো মনমুগ্ধকর হয়ে উঠছিলো। তামান্না আজ খুব শান্তির নিশ্বাস ছাড়ছে। কেনো না এতোদিন সে ছিলো তার অতীত থেকে অজানা। আজ সব ঠিক হয়ে গেলো।
সালমান তামান্নার দিকে চেয়ে থাকে। সে তার হাত দিয়ে তামান্নার সামনে আসা চুলগুলো কে হাত দিয়ে সরিয়ে দিয়ে কানের কাছে গুজে দিয়ে নিজের মুখ তামান্নার কানের কাছে এনে ফিসফিসিয়ে বলে…….
~ ভালোবাসা কি জানো? (তামান্নার ঘাড়ে নিজের মুখ গুজে বলে)
সালমান তামান্নার এতো কাছে আসায় সে কিছুটা লজ্জা অনুভব করে। এতে সে নিজের কাপড় চেপে ধরে। সালমান ধীরে ধীরে তামান্নার ঘাড়ে নিজের নাক দিয়ে ঘোষাঘুষি করতে থাকে। তামান্না তার প্রতিটা স্পর্শ এ কেঁপে উঠতে থাকে। সালমান সেভাবে করে করেই জিগ্গেস করে।
তামান্নার লজ্জিত ভাব আসায় কাঁপাকাঁপা কণ্ঠে বলে ~ হ..হ্যা ভালোবাসা দুই জনের অন্তরের গহীন থেকে উচ্চারিত একটি শব্দ। যার অর্থ খেয়াল রাখা, সত্য বলা বিশ্বাস করা,খুটিনাটি ঝগড়া মাস্টি থাকে যে সম্পর্কে তাকে বলে ভালোবাসা।
সালমান তামান্নার ঘাড়ের সব চুল সরিয়ে একপাশে দিয়ে তার ফর্সা ধবধবে সাদা ঘাড়ে পিঠের উপরে নিজের ঠোঁট ছুয়েঁ বলে~ জানো ভালোবাসার প্রতিটা মুহুর্ত যেনো সোনার রূপার চেয়েও দামি। প্রতিটা স্পর্শে যেনো নেশা মিশে থাকে। আর আমার নেশা হলা তুমি। তোমার প্রতি যে ভালোবাসা আমার অন্তরের মধ্যে আছে তা শেষ হবার নয়। তোমার থেকে সাতটা বছর দূরে ছিলাম সব একদম যেনো মরেই গিয়েছিলাম। তবুও এই হৃদয়ে ছিলো তোমার বসবাস। না পারছিলাম তোমার কাছে ছুটে আসতে, না পারছিলাম তোমার থেকে নিজেকে দূরে রাখতে। তাও প্রতিশোধ মাথায় গেঁটে বসছিলো। যার কারণে মাফিয়া জগতে নিজের পা বাড়ালাম(চোখজোড়া লালবর্ণ করে রেগে তার গা ঘিন ঘিন করতে লাগে)।
তামান্না সালমানের অবস্থা বুঝতে পেরে বসা থেকে উঠে তার হাটুর উপর বসে গলা জড়িয়ে ধরে বলে ~ হুসসস যা হলো একটা খারাপ সময় স্বপ্ন ছিলো। এখন আর নয়। নতুন জীবন গড়ার সময়(মুচকি হেসে তার কপালে নিজের কপাল ঠেকিয়ে একে অপরকে অনুভব করে বলে)
🌿🌿
রোয়েন রুমের মধ্যে স্টাচুর মতো দাঁড়িয়ে নিরুর কান্ড দেখছে। সে রুমের মধ্যে পায়চারি করতেছে। একবার এদিকে যায় আরেকবার এদিকে যায়। আর জোরে জোরে কথা বলতেছে যা শুনে রোয়েনের মাথা হেংগ খাচ্ছে।
~ বজ্জাত মেয়ের মতো আমাকে সব শুনাছে অথচ নিজের বোনের সামনে হলে চুপ মেরে বসে থাকে। এখনই বুঝাছি মজা(দুষ্টুমি হেসে সে ধীর পায়ে নিরুর কাছে এগিয়ে যায়)
নিরু পায়চারি করে বলতে থাকে ~ তামান্না আপুর সাহস তো কম না। আমাকে ফেলে মিশনে গেলো। এটা কোনো কথা। আমি সারাক্ষণ আপুকে কতো কিছুতে হেল্প করেছি(মুখ ফুলিয়ে রেগে)। হ্যাঁ আমি জানি পিচ্চি আপুর মতো বড় হয়নি। তাই বলে এভাবে যাবে গা উহহ। আজ আসুক তেরোটা না বাজালে আমার নাম (বলার আগেই রোয়েন বলে গাধী না)
নিরু না শুনেই হাবলার মতো করে বলে ~ হ্যাঁ ঠিকই বলছো। হঠাৎ থেমে নিজের কোমরে হাত রেখে রোয়েনের দিকে তাকায়।
রোয়েন নিরুর আন্সার শুনে পেটে হাত রেখে হাসতে হাসতে লটুপতু খেতে লাগে। নিরুর এই মুহুর্তে মন চাচ্ছে রোয়েনের খুন করে ফেলতে। সে রাগে গজগজ করে তার সামনে এসে বলে…..
নিরু~ ওই পাগলা গরাধ থেকে উঠে আসলে নাকি?এতো হাসতেছো কেনো? একটুই তো ভুল হলো(দুইহাত দিয়ে রোয়েনের শার্টের কলার ধরে)
রোয়েন তাও হাসতে থাকে। নিরু এবার রেগে তার কলার ধরে ঝাকুনি দিতে লাগে। নিরু খুব চেষ্টা করে রোয়েনকে ঝাকাতে। কিন্তু একটা সিক্সপ্যাক বডি টাইপ মানুষকে ঝাকালেও সে ঝাকুনি খাবে? (নিরু ভেবে )
নিরু আর না পেরে তার কলার ছেড়ে দিয়ে বলে ::: মোটা মানুষ কে ঝাকুনি দিচ্ছিলাম উহহ। হাত ব্যথা হয়ে গেলো(নিজের হাতের বাহু ঝেড়ে)
রোয়েন নিরুর দিকে চোখজোড়া ছোট করে বলে ::: কি (ভ্রু কুচকে)কি বললে তুমি আমাকে? আমি….আমি মোটা(নিজের দিকে ডান হাতের তর্জনী আঙুল দেখিয়ে) আমাকে কোন এংগেল থেকে মোটা লাগতেছে?(কিছুটা রেগে)
নিরু আড়চোখে রোয়েন কে দেখে :::: ইসস নিজে মোটা আবার আমাকে গাধী বলে(দুইহাত বুকের উপর গুজে)। যান তো আপনি আপনার সাথে কোনো আমার কথা নেই ! বের হোন এখান থেকে এখনইইই(কিছুটা গর্জনের মতো করে)
নিরু চোখবন্ধ করে তাকে বের হতে বলে। সে আশেপাশে কারো আবাস না পেয়ে চোখ খুলে দিকে তার সামনে কেউ নেই। এতে নিরু নিজেই বিড়বিড় করে বলে….
~ আরে মিয়া দেখি গেলো গা। আমি রাগ করছি কি নিজে একটু রাগ ভেঙে দেবে তা না। উল্টা চলে গেলো। উগান্ডা কোথাকার(মুখ ফুলিয়ে)
হঠাৎ নিরু অনুভব করে কে যেনো তার পিছ থেকে এসে কোমরে হাত রাখে। আচমকা কারো উপস্থিতি অনুভব করতেই সে পিছে ঘুরবে। কিন্তু সে ফিরলো না। কারণ নিরু সেই মানুষটার সুবাস পেয়ে গেলো। সে মুচকি হেসে সে ভাবে দাঁড়িয়ে থাকে। রোয়েন নিরুর কোমর থেকে হাত সরিয়ে তাকে টেনে নিজের দিকে আনে।
নিরু লজ্জায় রোয়েনের বুকে মাথা ঠেকায়।
🌿🌿
~ তামান্না ময়না পাখি এটা কিন্তু ঠিক না। তুমি এখন দূরে যেতে পারবা না। দাও আমার আমানত(রাগ করে তার হাত ধরে নিজের কাছে টেনে)
তামান্না লজ্জামাখা ফেস করে আহ্লাদী সুরে বলে ::::: কিস দিতেই হবে। না দিলে হয় না?(চোখজোড়া ছোট করে বাচ্চাদের মতো ফেস করে)
সালমান তার ফেসের অবস্থা দেখে মজা নিতে থাকে আর বলে ::: উফ তোমাকে না বলছি আমার সামনে এভাবে লজ্জা না পেতে। সত্যি কন্ট্রোললেজ হয়ে যায়।
(তামান্না যে পরিমাণ লজ্জাটা না পাচ্ছে এ দেখে সালমান মজা নিতে থাকে। সে আবারো বলে) আচ্ছা মেয়েরা এতো লজ্জা পাই কেনো? আমি তো তোমার সাথে বাসর করতেছি না যে তুমি এভাবে লজ্জা পাচ্ছো(টেডি স্মাইল দিয়ে)]
তামান্না এবার মুখ ফুলিয়ে তার থেকে নিজেকে সরানোর চেষ্টা করে। কিন্তু সিক্সপ্যাক বডির সাথে পারবে না দেখে সে চুপ করে সালমানের বুকে মুখ গুজে থাকে।
সালমান ধীরে ধীরে তার মুখ উপরে তোলে কপালে ভালোবাসার ছোঁয়া এঁকে দেয়। তামান্না পরম আবেশে নিজের চোখ বন্ধ করে ফেলে। হঠাৎ তার ফোন বেজে উঠলো। তামান্নার ধ্যান ফিরলে কিছুটা দূরে সরে আসে।
সালমান বিরক্ত হয়ে ফোনটা বের করে ফোনের দিকে তাকিয়ে বলে :::: বদমাইশ কোথাকার ! মুড টাই নষ্ট করে দিছোস।
সে ফোন ওপেন করে দেখে স্ক্রিনে রোয়েনের নাম ভেসে আসচ্ছে। সে রেগে কল কানে ধরে…
অপরপাশ থেকে রোয়েন :::: কি গো ভাই রোমান্স শেষ নাকি এখনো চলে!
সালমান চোখ গরম করে ::: তুই তো সত্যিকারের দুশমন চুল কোথাকার।
রোয়েন হেসে বলে :::: ওকে ভাই চলে আয় নিলু আপুর জ্ঞান ফিরেছে। উনি তামান্না আপু থুক্কু ভাবির সাথে কথা বলতে চাচ্ছে।
সালমান নিলুর জ্ঞান ফেরার কথা শুনে শান্তির নিশ্বাস ছেড়ে বলে ::: আসতেছি পাচঁ মিনিটের মধ্যে। টুট টুট টুট।
কল রেখে তামান্নার দিকে তাকিয়ে দেখে সে জিগ্গেস করার ভঙ্গিতে চেয়ে আছে তার দিকে। সালমান মুচকি হেসে বলে ::: নিলা আপুর জ্ঞান ফিরেছে। চলো যায়।
কিছুক্ষণের মধ্যে তারা হসপিতালে চলে আসে। তামান্না দৌড়ে নিলার কেবিনে যায়। সেখানে গিয়েই তাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগে।
নিলা মুচকি হেসে বলে :::: এই পাগলী কান্না করতেছিস কেন? দেখ আমি বেঁচে আছি ধোঁকা খেয়েও যে বেঁচে আছি সেটাই আলহামদুলিল্লাহ (একফুট জল গড়িয়ে পড়ে)
তামান্না বুঝতে পারছে নিলা কিসের কথা বলতেছে। সে নিলার গালে হাত রেখে বলে ::: কিছু হবে না সময় থাকতে সব সত্য বের হয়ে গেলো। সেটা মহান আল্লাহর সহায়তায়। নইতো নীলের বাচ্চা হারামজাদা তোর লাইফটা হেল করে দিতো।
নিলা নিজের মাথা নাড়িয়ে কোনো ভাবে বেডের মধ্যে উঠে বসতে চাইলে তামান্না তার হাত আর কাধে হাত রেখে হেলান দেওয়ায়।
~ তো নিলা বোন যে কেমন ফিল হচ্ছে?(সালমান রুমে প্রবেশ করে মুচকি হেসে বলে)
নিলা সালমানের দিকে তাকিয়ে বলে ::: আলহামদুলিল্লাহ দাভাই এখন ভালো লাগছে। তো দাভাই রা (সালমান রোয়েন ওর দিকে তাকিয়ে)ভাবিদের ঘরে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা শুরু করবা না?
তামান্না তাসনিম লজ্জায় মাথা নিচু করে থাকে।
রোয়েন সালমান মিটমিট করে হেসে একে অপরের দিকে তাকিয়ে নিলার দিকে দৃষ্টি দিয়ে বলে ::: এখন বিয়ে যদি তোমার ভাবিরা করতে চাই তাহলে করবো (দুষ্টুমি হেসে রোয়েনের দিকে তাকিয়ে নিলার দৃষ্টি দেয়)
রোয়েন ::: হ্যাঁ ভাই ঠিক বলছোস এরা যদি না চাই তাহলে(গালে হাত দিয়ে ভাবার ভান করে)
~ আরে তাহলে কি?? দুইজন মেয়ে দেখে একটাকে তুই আরেকটাকে আমি বিয়ে করে ফেলবো(সালমান মুচকি হেসে রোয়েনের কাধে হাত রেখে)
তামান্না-নিরু একসাথে :::: ওয়াটটটটটটট???? (রেগে সালমান-রোয়েন এর দিকে তাকিয়ে)
নিলা ব্যবলাকান্তের মতো হয়ে তাদের দিকে তাকায়। সালমান রোয়েন হাসতে লাগে।
…………চলবে……….
[বিঃদ্র :::: উহ কালকে এই গল্পের অন্তিম পর্ব দেবো। নিজেরই কষ্ট লাগতেছে। যাক তাও বাকি দুই গল্পের রানিং দেবো। এরপর আপনাদের জন্যে আরো সুন্দর সুন্দর গল্পের আগমন করাবো। ইনশাআল্লাহ। কালকে চলে আসবেন সবাই তাদের বিয়েতে। হেপ্পি রিডিং ]