ভালোবাসায়_ভেজা_সন্ধ্যে #রোকসানা_রাহমান #বোনাস_পর্ব (৩২)

0
385

#ভালোবাসায়_ভেজা_সন্ধ্যে
#রোকসানা_রাহমান

#বোনাস_পর্ব (৩২)

মহসীন বিনাবাক্যে রিপ্তির ডান হাতটা টেনে নিলো। বুক পকেট থেকে কলমটা খুলে নিয়েছে। রিপ্তির বৃদ্ধাঙুলে কলমের কালি পড়ার পূর্বেই কলিংবেল বেজে উঠলো। দুজনেই চমকে উঠেছে। রিপ্তির চোখ পড়লো দেয়ালের ঘড়িতে। ১০ টা বেজে ২৫। কপাল কুঁচকে বললো,,

“” এতো রাতে কে এলো?””
“” আমি দেখছি।””

দরজার অপরপাশের মানুষটাকে দেখেই মহসীন হকচকিয়ে গেলো। চকিত কন্ঠে বললো,,

“” অনুভব,তুমি?””

অনুভব মাথা নিচু করে দাড়িয়ে আছে। বেশ শান্তশিষ্ট,পরিপাটি সাজ। তবুও মনে হলো কিছু পরিপাটি নেই,কিছু ঠিক নেই। তার ভেতরটা অগোছালো। ঠিক ততটাই যতটা গুছিয়ে উঠতে গিয়ে মানুষটা হাপিয়ে উঠেছে,তবুও এক কাণাও গুছিয়ে নিতে পারছেনা।

মহসীনের প্রশ্নে অনুভবের দিক থেকে কোনো সাড়া নেই। চোখের সামনেই মানুষটি দাড়িয়ে,হাত বাড়ালেই ছোয়া যাবে। তবুও কেন মহসীনের কন্ঠে নড়ে উঠছেনা। মাথাটা তুলে একটিবার তাকায়ওনি। তবে কি সে এখানে থেকেও এখানে নেই? শুধু শরীরটায় পড়ে আছে,আর বাকিসব অনুভূতিময় যন্ত্রাংশ অন্যকোথাও? কিন্তু কোথায়?

মহসীন খানিক্ষন চুপ থেকে আবারও ডেকে উঠলো,,

“” অনুভব?””

এবার বুঝি মরাদেহে প্রাণ ফিরে আসছে। চোখ তুলে তাকালো,এমন নির্জীব চাহনিতে মহসীন নিজেই চমকে উঠেছে। নিজেকে সামলাতে গিয়ে দরজা থেকে হাতটা সরে গেলো,অসার হয়ে পড়লো নিম্নদিকে। দরজাটা সম্পূর্ণ খুলে গেলো। অনুভব চাইলেই বাহির থেকে ভেতরের সবটা দেখে ফেলতে পারে। তবুও সে দেখলোনা। দুর্বলকন্ঠে বললো,,

“” ভেতরে আসব,স্যার?””

মহসীনের নিষ্পলক দৃষ্টি অনুভবের উপর। দৃষ্টি স্থির রেখেই মাথা দুলিয়ে সম্মতি দিলো। অনুভবও আর অপেক্ষা করেনা। দ্রুত ভেতরে ঢুকে পড়ে। তার প্রাণহীন দৃষ্টি হঠাৎ করেই প্রখর হয়ে উঠলো। চঞ্চল পা’দুটো পুরো রুমের কিনারে ঘুরে বেড়াচ্ছে। বিচ্ছুরিত দৃষ্টি চারপাশে ফেলছে। মনে হচ্ছে কিছু একটা খুজছে।

“” কিছু খুজছো?””

অনুভব মহসীনের প্রশ্নকে এড়িয়ে সোজা হাটা ধরেছে রান্নাঘরের দিকে। সেখানেও তুমুল অনুসন্ধান চালিয়ে যাচ্ছে। মশলার কৌটো,ধুয়ে রাখা প্লেট,সাজিয়ে রাখা প্রয়োজনী-অপ্রয়োজনীয় নানা রকম তৈজসপত্রের টুংটাং শব্দে মহসীনের মাথা ধরা অবস্থা। ছেলেটা ঠিক কি করতে চাচ্ছে কিছুই মাথায় আসছেনা মহসীনের। সে কি একটা কড়া ধমক দিবে? দিতেই পারে,দুজনের মধ্যে শিক্ষক আর ছাত্রের সম্পর্কটা তাহলে আরো বেশি প্রকট হবে। মহসীন ধমক দেওয়ার জন্য প্রস্তুত হতেই অনুভব রান্নাঘর থেকে বেরিয়ে এলো। হাতে ডাল ঘুটনি। যার কাটা কাটা ফুলের অংশটা ঢিলে হয়ে গিয়েছে। যে কারণে এটাকে ব্যবহার করা হয়না মহসীনের। একবার পানিতে সেদ্ধ করা ডাল ঘুটতে গিয়ে কি কান্ডাটাইনা ঘটেছিলো। ফুলের অংশটুকু খুলে গিয়ে চারপাশে ডালের ছড়াছড়ি। হাতে গরম ডালের ছ্যাকা খেয়ে ফোস্কা পড়ে গিয়েছিলো।

অনুভব দ্রুত মহসীনের দিকে এগিয়ে এলো। ডালঘুটনিটা তার দিকে বাড়িয়ে বললো,,

“” এইটা ধরুন।””

মহসীনের কপাল কুঁচকে গেলো। ধরবে কি ধরবেনা ভাবতে ভাবতে ধরেই ফেললো। অনুভব সাথে সাথে নিজের শার্ট খোলা শুরু করেছে। অনুভব বেশ বিব্রত হয়ে বললো,,

“” কি করছো অনুভব? আবার শার্ট খুলছো কেন?””

বোতাম খুলে একটানে শার্টটা খুলে ফেলে অনুভব। ফেলে দেয় মেঝেতে। খোলা পিঠ মহসীনের দিকে রেখে উপুত হয়ে বললো,,

“” আমি অন্যায় করেছি বিশাল বড় অন্যায়। আমাকে শাস্তি দিন। পিটিয়ে পিঠের ছাল তুলে ফেলুন। যেন রক্তে আপনার বাড়ির মেঝেতে সাগর তৈরী হয়। রক্তের সাগর!””

মহসীন বিস্ময়ভরা কন্ঠে বললো,,

“” অন্যায়? কিসের অন্যায়? তোমার অন্যায়ের শাস্তি আমি কেন দিবো?””

অনুভব আর পিঠ বাকা করে থাকতে পারে না। স্যারের দিকে ঘুরে দাড়ায়। নতজানু অবস্থায় বললো,,

“” আপনার সবচেয়ে ব্যক্তিগত সম্পদে হাত দিয়েছে।””
“” ব্যক্তিগত সম্পদ?””
“” জ্বী! আপনার ভালোবাসা। আপনার রজনীগন্ধা।””

এতক্ষণে পুরো ব্যাপারটা বোধগম্য হলো মহসীনের। তারমানে অনুভব রিপ্তির কথা বলছে। অনুভব অপরাধীর মতো মুখ করে বললো,,

“” রিপ্তির বাবা,আমার খুবই পছন্দের এবং শ্রদ্ধেয় স্যার। তারপর যদি সম্মানের আসনে কাউকে বসিয়ে থাকি সেটা আপনি। আর আমি সেই আপনার একটু একটু করে ফুটিয়ে তোলা ফুলটি চুরি করতে চেয়েছিলাম। এতো বড় অন্যায়টা আমি কিভাবে করলাম? আমার তো কঠিন শাস্তি হওয়া উচিত! স্যার,আপনি আমায় শাস্তি দিন।””

অনুভবের একাধারে বলা কথাগুলোর বিপরীতে ঠিক কি বলা উচিত বুঝতে পারছেনা,মহসীন। সত্যি সত্যিই কি শাস্তি দেওয়া উচিত? মহসীন হাতের ডালঘুটনির দিকে তাকালো।

“” কিন্তু বিশ্বাস করুন,আমি ইচ্ছে করে এমনটা করিনি। যেদিন রিপ্তি আপনার বাসায় এসেছিলো,বউসাজে। সেদিন আমিও তো আপনার বাসায় আসছিলাম,আপনি নিজেই বলেছিলেন ইম্পর্ট্যান্ট শীট দিবেন। পথিমধ্যেই রিপ্তিকে দেখি। আড়াল থেকে আপনাদের সবটা শুনেছিলাম। ঐটাই আমার প্রথম ভুল ছিলো। কেন শুনতে গেলাম? কেন দেখতে গেলাম রিপ্তিকে। না দেখলে তো মায়ায় পড়তাম না। এক দেখাই আমি ওর মায়ায় বাধা পড়লাম। আপনি যখন ওকে ফিরিয়ে দিলেন আমারও খুব কষ্ট হচ্ছিলো। ভেতরে ভেতরে আমারও কান্না পাচ্ছিলো। এমন সরল একটা মেয়ের পবিত্র অনুভূতিটাকে আপনি এভাবে ছুড়ে মারছিলেন যা দেখে আমার ভিষণ রাগ হয়। ইচ্ছে করছিলো,রিপ্তির মতো আমিও আপনার সামনে হাতদুটো তুলে বলি,বিয়ে করে নিন না। ও যে খুব কষ্ট পাচ্ছে! কিন্তু আমি কিছু বলতে পারিনি। মনের রাগ,কষ্ট নিয়েই রিপ্তির পিছু পিছু ছুটছিলাম। কেন যাচ্ছিলাম আমি জানিনা। কিন্তু মনে হয়েছিলো,ওকে একা ছাড়তে পারিনা। কিছুতেই না। তারপর যখন ট্রেণ ছাড়লো। তখন জানালা দিয়ে প্লাটফর্মের এককোণে আপনাকে আমি দেখতে পাই। দুর থেকেও আপনার চোখের জমে থাকা পানিটা আমি দেখতে পেয়েছিলাম। তখনি বুঝতে পারি,আপনিও রিপ্তিকে কতটা ভালোবাসেন। তাহলে ফিরিয়ে দিয়েছিলেন কেন? হয়তো কোনো মান-অভিমান চলছিলো। পরে মিটিয়ে নিবেন। এমন ভাবনা ছিলো আমার। কিন্তু এক রাতের তিন ঘন্টার জার্নিতে আমি রিপ্তির প্রেমে পড়ে যাবো এটাতো অকল্পনীয়,অবাস্তব ছিলো। তারমধ্যে আপনার ভালোবাসা। আমি জেনেশুনে কি করে আপনার ভালোবাসার মধ্যে নিজের ভালোবাসার অঙ্কুর ফুটাবো? তাই আমার উনিশ বছরের জীবনের প্রথম প্রেমটাকে কবর দিতে চাইলাম। আপনার কাছ থেকে হঠাৎ চলে যাওয়ার কারণ রিপ্তিই ছিলো। তার ঠিক তিন বছর পর রিপ্তির সাথে আমার আবার দেখা হয়। আমি তো জানতামও না রিপ্তি স্যারের মেয়ে। আমি তো রাসেলের বিয়েতে এটেন্ড করতে গিয়েছিলাম। আমার ধারণা ছিলো এতোদিনে আপনাদের মান-অভিমান ঠিক হয়ে হয়তো বিয়ে হয়ে গিয়েছে। কিন্তু সেই ধারণা ভুল প্রমাণ করলেন রিপ্তির বাবা। তিনি আপনাদের সম্পর্কের ব্যাপারটা জানতেন না। কিন্তু এরকম কোনো ঘটনাকে কেন্দ্র করেই রিপ্তির জীবনটা আধারে ছেয়ে আছে তা আন্দাজ করতে পারছিলেন। উনার মুখে সবটা শোনার পর কোনো ভাবনাতে না গিয়েই সরাসরি বলে ফেলি আমি রিপ্তিকে বিয়ে করবো। একজন ছাত্র হিসেবে উনি আমায় খুব পছন্দ করতেন। আমি খুব একটা নিশ্চিত ছিলাম না উনি রাজি হবেন কি না। তাই হলো। উনি সাথে সাথে রাজি হননি। যতই হোক মেয়ে বলে কথা,তার উপর অতি আদরের। মেয়ের জামাই হিসেবে সেরা কাউকেই চাইবেন। তাই বিয়েতে সম্মতি দেওয়ার আগে আমার উপর নানা শর্ত জুরে দিয়েছিলেন। আর সেইসব শর্ত শেষে উনি নিজেই আমার সাথে রিপ্তির বিয়ে দিতে রাজি হয়েছিলেন। কিন্তু তারমধ্যেই…””

অনুভব আর কিছু বলতে পারছে না। তার কন্ঠ কাঁপছে। নিজেকে সামলে নিয়ে অনুভব দ্রুত স্যারের হাতদুটো নিজের হাতে নিয়ে নিলো,,

“” বিশ্বাস করুন,স্যার। আমি শুধু চেয়েছিলাম রিপ্তি ভালো থাকুক,প্রাণবন্ত হাসি নিয়ে প্রত্যেকটা সকাল কাটাবে। হাসিখুশিতে ক্লান্ত হয়ে ঘুমিয়ে রাত কাটাবে। কোনো দুঃস্বপ্ন নয়,ভালো স্বপ্ন,সুখের স্বপ্ন,যে স্বপ্নে রঙ থাকবে, তেমন স্বপ্ন দেখবে। এইটুকুই! তারজন্য যদি নতুন করে ওর মধ্যে ভালোবাসার রংধনু সাজাতে হয়,তাহলে তাই করবো। নিজের সবটা রঙ দিয়ে ওর মনে ভালোবাসার রংধনু আকতে চেয়েছিলাম। ওর অতীতটা ভুলাতে চেয়েছিলাম। আর কিছু নয়। আপনার সাথে প্রতারণা করতে চাইনি। আমি যদি জানতাম আপনি আবার ওকে নিজের জীবনে ফিরিয়ে নিবেন তাহলে এই দুঃসাহসটা দেখাতাম না,কখনোই না!””

অনুভবের চোখের একফোটা অশ্রু মহসীনের হাতে স্পর্শ করলো। মহসীন আরেক দফা চমকে উঠলো। বিড়বিড় করে নিজেকেই প্রশ্ন করে,অনুভব কি কাঁদছে?

অনুভব প্যান্টের পকেট থেকে একটা সাদা কাগজ বের করলো। ভাজ করা। মহসীনের হাতে রেখে বললো,,

“” এইটা রিপ্তির জন্য।””

মহসীন কিছু বলতে চাইলে অনুভব বাধা দিয়ে বললো,,

“” আমি জানি ও আপনার কাছে আছে। এতোদিন আপনার কাছেই ছিলো। আর এইটাও জানি আপনাদের বিয়ে হয়নি। খোজ পেতে লেট হয়েছে কিন্তু ঠিক খুজে নিয়েছি। আমি আর কোনো পাগলামি করবো না। বলবো ও না আমার রিপ্তিকে চাই। জোর করে টেনে নিয়ে যাবো না। আমার সন্তানের দোহাই দিয়ে ইমোশনাল ব্ল্যাকমেইল ও করবো না। তবু এটুকু বলবো আপনার ভালোবাসাটাকে আমিও খুব ভালোবেসে ফেলেছি!””
“” অনুভব..””
“” স্যার প্লিজ,আমাকে শেষ করতে দিন। আমি সবসময় আপনার কথার শ্রোতাপ্রেমী ছিলাম,এখনো আছি। তবে আজ কষ্ট করে আপনিই শুনুন।””

মহসীন ভেতরের কথা আবার ভেতরে পাঠিয়ে চুপ করে দাড়িয়ে রইলো। অনুভবের বাকি কথা শোনার অধির অপেক্ষা।

“”আপনার এক হাতে চিঠি আরেক হাতে আমার গুরুদক্ষিণা। যেকোনো একটা গ্রহণ করবেন। গুরুদক্ষিণা গ্রহণ করলে চিঠিটা ছিড়ে ফেলবেন। ওটা শুধু রিপ্তির জন্য। ও যদি আপনার কাছে থাকে এই চিঠি মূল্যহীন। ওকে দেওয়ার কোনো প্রয়োজন নেই। আমি চাই ও ভালো থাকুক। সেটা আপনি,আমি অথবা অন্যকারো সাথে থাকলেও আমি খুশিমনে মেনে নিবো। তারজন্য নাহয় আমি ওর কাছে অপ্রিয়,ঠকবাজ হয়েই থাকলাম। আমার কোনো আফসোস নেই। আসি!””

অনুভব চলে যাওয়ার জন্য ঘুরে দাড়ালেও এখনো স্থির হয়ে আছে। পা’দুটো নড়ছেনা। উল্টো দিকে মুখ রেখেই শ্বাসরুদ্ধকন্ঠে বললো,,

“” আমি কি একটিবারের জন্য রিপ্তিকে দেখতে পারি?””

মেঝেতে পড়ে থাকা ধূসর রঙের শার্টটা তুলে নিলো মহসীন। অনুভবের হাতে দিয়ে বললো,,

“” পড়ে নাও।””
“” প্লিজ! একটিবার। আমি কথা দিচ্ছি জাস্ট চোখের দেখা দেখেই চলে যাবো। কোনো কথা বলবো না।””
“” শার্টটা পড়ে সোফায় বসো।””

মহসীন ডাইনিং টেবিলের দিকে যাচ্ছে। অনুভবও পেছন পেছন। গ্লাসে পানি ভর্তি করে অনুভবের দিকে দিয়ে বললো,,

“” আমি বসতে বলেছি।””

অনুভব বাধ্য ছেলের মতো বসে পড়ে। মহসীন পানির গ্লাসটা বাড়িয়ে দিলে,ঢকঢক করে সবটা পানি খায় অনুভব। তারপর আগ্রহী চাহনি আঁকে। আকুলকন্ঠ ছাড়তে গিয়েও পারেনা। মহসীন আবারও ডাইনিংয়ে চলে গিয়েছে। হাতে কিছু নিচ্ছে। কিছু একটা নাকে লাগাতে লাগাতে কিছুদুরের রুমের দিকে এগুচ্ছে। অনুভব সেদিকেই চাতকপাখির ন্যায়ে তাকিয়ে আছে। মন বলছে ঐ রুমেই রিপ্তি আছে। তাহলে কি মায়াকন্যার দেখাটা পাবো?

মহসীন বেশ কয়েক কড়াঘাত ফেলে বললো,,

“”রিপ্তি,দরজা খোল।””

ভেতর থেকে কোনো সাড়া পাচ্ছেনা। কলিংবেলের শব্দে মহসীনের পিছুপিছু রিপ্তিও এসেছিলো। অনুভব নামটি শুনতেই দৌড়ে রুমে ফিরে যায়। শক্ত করে এঁটে দেয় রুমের দুয়ার। মহসীন আরো কয়েকবার দরজায় আঘাত হেনে বললো,,

“” রজনীগন্ধা,আমি বাইরে দাড়িয়ে আছি কিন্তু!””

রিপ্তি আর জেদ চেপে রাখতে পারেনা। দরজা খোলে দেয়। আতঙ্কিত কন্ঠে বলে,,

“” তোমার নাকে কি হয়েছে? আল্লাহ! রক্ত!! কিভাবে হলো?””
“” অনুভব..””

মহসীনের পুরোবাক্য শেষ হতে পারেনা। তার আগেই রিপ্তির চোখ আগুনের ফুলকির রূপ নেয়। চোখ,মুখ,শক্ত করে বিদ্যুৎগতিতে ছুটে যায় বসার রুমে। রিপ্তিকে এদিকে আসতে দেখেই অনুভব দাড়িয়ে পড়েছিলো। চোখ মেলে তাকাতেই প্রচন্ড শব্দে গালে থাপ্পড় পড়লো। পরপর কয়েকটা থাপ্পড় মেরে রিপ্তি ব্যাঘ্রগর্জন তুলে,,

“” তোর সাহস কি করে হলো,মহসীনের গায়ে হাত তুলা? বেরিয়ে যা এখান থেকে। আমার চোখের সামনে থেকে যা। নাহলে! নাহলে তোকে আজ খুন করে ফেলবো।””

রাগের রিপ্তির পুরো শরীরটায় কাঁপছে। শরীরের সবটা শক্তি দুহাতে জমা করে অনুভবের বুকের উপর ফেলছে। ওকে ধাক্কাতে ধাক্কাতে সদর দরজার দিকে নিয়ে যাচ্ছে। অনুভবের বিশালদেহীটাকে এই মেয়েটা নাড়াতে পারে? যদি না সে চায়? অনুভবের তৃষ্ণার্ত দৃষ্টি রিপ্তির উপর রেখেই ওর ধাক্কার সাথে তাল মিলিয়ে একটু একটু করে পিছিয়ে যাচ্ছে। সদর দরজা পার না হওয়া পর্যন্ত একটিবারের জন্যও চোখের পাতা দুটো এক হয়নি অনুভবের। একাধারে এতক্ষণ তাকিয়ে থাকার দরুনে চোখে জ্বালা করছে,আর সেখান থেকেই পানি জমছে চোখে। রিপ্তির শেষ ধাক্কায় বাহিরে পা পড়ে অনুভবের। সাথে সাথে চোখের পলক ফেলে মনে মনে বললো,,

“” ভালো থেকো মায়াকন্যা!””

চলবে

[অনেকের অনুরোধ রেখে এই পর্বটা দিয়েছি। ইচ্ছে ছিলো সবাইকে মেনশন করবো। কিন্তু এই মুহুর্তে একজনের নামও মনে পড়ছেনা। আপনাদের ব্রেইনভোলা আপুটা দুঃখিত প্রকাশ করছে। তবে হ্যা বোনাস পার্টের সাথে বোনাস রিয়েক্ট+কমেন্টও চায়। যাতে ফিউচারেও এমন বোনাস পার্ট দিতে আগ্রহী হই😋]

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here