হৃদয়ের_ওপারে_তুমি #গল্প_ভাবনায়_ফারজানা_ইয়াসমিন_রিমি (আপু) #লেখিকা_রিয়া_খান #পর্ব_১২

0
490

#হৃদয়ের_ওপারে_তুমি
#গল্প_ভাবনায়_ফারজানা_ইয়াসমিন_রিমি (আপু)
#লেখিকা_রিয়া_খান
#পর্ব_১২
রাত প্রায় ১২ টার বেশি বাজে, অভ্র আকাশের রুমে জানালার কাছে হেলান দিয়ে বসে বসে ফোন টিপছে,গায়ে একটা নেভি কালার টিশার্ট। উল্টো ঘুরে বসে আছে বলে ফুলের রুম থেকে অভ্রর চেহারা দেখা যাচ্ছে না, পেছন থেকে অভ্রর ব্যাক সাইড দেখা যাচ্ছে , মাথার চুল গুলো দেখে বোঝা যাচ্ছে এটা অভ্র।

-আমরা সবাই তো তোর সাথেই তুই তাহলে কার সাথে চ্যাট করছিস অভ্র?
প্রশ্নটা শুনে অভ্র মাথা তুলে তাকালো কাব্যর দিকে,কাব্যর প্রশ্নে অভ্র বাঁকা হাসি দিলো,
-হাসছিস যে।
-অনুর সাথে।
-অনুর সাথে চ্যাট করছিস!বুঝলাম না কাহিনী।
-বুঝলে আগেই বুঝতি,এখন বললেও বুঝবি না।

কাব্য চুপ হয়ে গেলো, চোখ বন্ধ করে কিছু একটা চিন্তা করে বললো,
-আচ্ছা ফুল তোকে পছন্দ করে?
-জানি না শিউর।তবে মনে হয়।
-ওহ!ফুল এখন কি করছে না করছে অনু তোকে বলছে তাই না?
অভ্র কোনো উত্তর না দিয়ে হেসে দিয়ে মাথা নাড়ালো।
-কি করছে ও?
-জানালা দিয়ে উঁকি দিচ্ছে।
কাব্য সাথে সাথে জানালা দিয়ে বাইরের দিকে উঁকি দিলো,কাব্যকে দেখে ফুল সাথে সাথে পর্দার আড়ালে গেলো।বেচারীর খেয়াল ই নেই ওর রুমের লাইট টা অফ, পর্দার আড়ালে থাকলেই কি বা না থাকলেই কি ওকে দেখা যাবে না ওপাশ থেকে।

-কই দেখছি না তো, রুমে লাইট অফ।
-ও কি এতোই বোকা যে লাইট অন করে উঁকি দেবে।
-তাও কথা। তাহলে কি ঠিক করলি?
-বউমণিকে তো বলেছিই,আমাদের ওদিকটা ম্যানেজ করে নিবে। কিন্তু এদিকটা কিভাবে কি করবো বুঝতে পারছি না।তুই কিছু একটা ভাব।

-আচ্ছা দেখছি তাহলে কি করা যায় ।

রাত পেরিয়ে ভোর হয়ে গেলো,
আজ বউভাত।মানুষের আনাগোনা আজকে বেশি বুঝা যাচ্ছে কারণ সবাই বাড়িতে।কর্মীরা তাদের কাজ নিয়ে ব্যস্ত।

কনেপক্ষের মেহমানদের জন্য রমরমা আয়োজন। সব কিছুই নিয়ম মাফিক চলছে।

অভ্ররা সবাই বিয়েবাড়ির সমস্ত রিচুয়াল দেখে খুব ইম্প্রেস, কারণ এখানে খুঁটিনাটি সমস্ত রিচুয়াল পালন করে অনুষ্ঠান সম্পূর্ণ করা হয়েছে। এবাড়ির মানুষ গুলোর উপরও ভীষণ রকম ইম্প্রেস, প্রত্যেকেই খুব আতিথ্যগ্রহণের মাধ্যমে সবার দেখভাল করে যাচ্ছে।অচেনা জায়গায় এসেও কারো কোনো রকম সমস্যা হচ্ছে না, সবাই কত মিশুক একদম নিজেদের লোক বানিয়ে ফেলেছে একদিনে অভ্রদের প্রত্যেকের মনে হচ্ছি না জানি কত শতবার ওরা এখানে এসেছে,সবাই কত তাড়াতাড়ি আপন করে নিয়েছে।

আশিকের বিয়ের সম্পূর্ণ অনুষ্ঠান ভালো ভাবে শেষ হয়ে গেলো। দূর দুরান্তের আত্মীয় স্বজনরাও চলে যেতে লাগলো ।

শুধু অভ্ররা বাদে,কারণ ওরা বেশ কয়েকদিন টাংগাইল থাকবে বলেই নিয়ত করেছে। পুরো টাংগাইল ঘুরে দেখবে ওরা।
এখন তো বিয়ের অনুষ্ঠান শেষ, একেক দিন একেক জায়গায় ঘুরতে যাচ্ছে। আজ দুপুরের পর সবাই মহেরা জমিদারবাড়ি ঘুরতে গিয়েছিলো সাথে অবন্তী আশিক,আর ফুল তো আছেই।

রাতে ফুলদের ছাদে মিটিং বসেছে একটা,যেখানে উপস্থিত অভ্র,অনু,কাব্য,সমুদ্র,অয়ন,আবীর,মীরা, বৃষ্টি, অয়নী আর ফুলের গ্যাংয়ের চারজন।সবাই বসে আছে কিন্তু ফুল দাঁড়িয়ে আছে, দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে লেকচার দিচ্ছে, সবাই তা গভীর মনোযোগ দিয়ে শুনছে।এখানে একটা প্ল্যানিং হচ্ছে যেখানে ফুল সবাইকে বাঁদরামি শেখাচ্ছে।সবাইকে জ্ঞান দিচ্ছে চুরি করা জিনিস খেতে কত মজা বিশেষ করে সালমা বানুর একমাত্র পেয়ারা গাছের পেয়ারাগুলো খেতে লাজবাব! সালমা বানু কে এবং কেমন ক্যারেকটারের তা সবার সামনে এক্সপ্লেইন করলো।
-ঘটনাটা হচ্ছে রথ দেখা আর কলা বেচার মতো হবে।
মীরা আগ্রহ নিয়ে প্রশ্ন করলো,
-মানে কিভাবে?
-মানে হলো আমরা সালমা বানুর গাছের পেয়ার চুরির মিশনে যাবো। গাছের পেয়ারা সব কটা এনে আমরা খাবো এটা হলো রথ দেখার মতো। আর কলা বেচার ব্যাপারটা হলো, সালমা বানুর গাছ পেয়ারা শুন্য হওয়ার পর সে হতাশ হবে এটা হবে কলা বেচা।
-এতো বুদ্ধি তুমি রাখো টা কোথায় ফুল?রাতে ঘুমানোর পর চুরি করতে আসে না কেউ?
অয়নী গালে হাত দিয়ে ফুলের দিকে প্রশ্ন ছুঁড়লো,
-ঘুমানোর সময় আমি বিছানার উপর বুদ্ধি রাখি তারপর সেটার উপর বালিশ রাখি, বালিশের উপর আমার মাথা।
যদি চোর আসে চুরি করতে, তাহলে প্রথমে বালিশ সরাতে হবে, আর বালিশ সরাতে গেলেই আমার মাথা সরাতে হবে, মাথা সরাতে গেলেই তো আমি জেগে যাবো তাই না?

ফুলের যুক্তি শুনে আবির জোরে জোরে হাত তালি দিতে লাগলো,ওর সাথে সাথে বাকিরাও মাথার কুবুদ্ধি দেখে সকলেই মহামারী ইম্প্রেস!
অভ্র গালে হাত দিয়ে অন্য জগতে প্রবেশ করে গেছে বেচারা মনে মনে ভাবছে, এই মেয়ে যে পরিমাণ দুষ্টু,বাই এনি চান্স ওকে রাগালে একদম ধোলাইখাল করে দেবে জীবন।

ফুলের মিশনে সবাই সহযোগী হবে বলে হাত মেলালো।
যথারীতি পরের দিন সকাল হতেই সব কটাকে নিয়ে সালমা বানুর বাড়ি প্রদক্ষিণের উদ্দ্যেশে বেরিয়ে গেলো।ফুলের সেনাদল গুলো আজ চারপাশে ছড়িয়ে দিলো সালমা বানু আসছে কিনা দেখার জন্য, আর নিজে গাছে উঠার সিদ্ধান্ত নিলো।পরিবেশ অনুকুল দেখে
ওয়ালে উঠার জন্য প্রস্তুতি নিলো, সেই এক নিয়মে,বাদল বকুল ঘোড়া হলো আর ওদের পিঠে ভর করে ফুল ওয়ালে ওঠে বসলো।সবাই ওর এই সব কারসাজি দেখে হতবম্বের মতো দাঁড়িয়ে আছে,ফুল যেভেবে রিস্কির কথা জানিয়েছে তাতে আগামী পরবর্তী সেকেন্ডে কি ঘটবে কে জানে,তবে অভ্র চিন্তায় আছে ফুল আবার পড়ে না যায়।

সফল ভাবে ওয়াল থেকে ফুল গাছে উঠতে নিলো আর বর্ষা, মীনা, বকুল, বাদল সিসি ক্যামেরার মতো চারপাশ প্রদক্ষিণ করছে , সালমা বানু এসে যায় নাকি আবার!

গাছে উঠে ফুলের নজর টসটসে পেয়ারার দিকেই গেলো, যেই হাত দিয়ে পেয়ারা ছিঁড়তে যাবে ওমনিই মীনা দৌড়ে আসে
-ফুল তাড়াতাড়ি নাম গাছ থেকে সালমা বানু বের হয়েছে।

এটা শোনার পর ফুল থতমত খেয়ে গেলো,পেয়ারাটা ছিঁড়বে নাকি গাছ থেকে নামবে সেটা নিয়ে সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে লাগলো,
-ফুল নেমে আসো,রিস্ক নেয়ার দরকার নেই, আমরা আবার আসবো।তাড়াতাড়ি নামো।
মীরা কথাটা বলার পর ফুল তাড়াহুড়ো করে গাছ থেকে নামার সময় আবারও সেদিনের মতো পড়ে গেলো, কিন্তু আজ দেয়ালের এপাশেই পড়েছে,আর ভাগ্যবশত ফুল মাটিতে পড়ার আগেই অভ্র ধরে ফেলেছে,যেনো এতোক্ষণ ভরে অভ্র ফুলের পড়ে যাওয়ার জন্যই অপেক্ষা করছিলো।

রোম্যান্টিক স্কিনের মতো স্ট্যাচু হয়ে দুজন দুজনের মুখ দর্শন না করে সব কটা স্থান পরিত্যাগ করলো,কারণ জান বাঁচানো ফরজ!

বাড়ির কাছে এসে সবাই এক সাথে হাঁপাতে লাগলো, ফুল হাঁপাতে হাঁপাতে বললো,
-আচ্ছা আমরা এভাবে দৌড়ে চলে এলাম কেনো?আমরা কি কোনো অপরাধ করেছি?
-কি বলছো ফুলদি দেখলে না সালমা বানু আসছিলো,দেখে ফেললেই তো সর্বনাশ হয়ে যেতো।
– আরে সেটা না হয় বুঝলাম, কিন্তু আমরা তো সালমা বানু দেখে ফেলার আগেই রাস্তায় নেমে এসেছি।আমরা যে ওখানে পেয়ারা চুরির জন্যই গিয়েছি সেটাতো আর সালমা বানু দেখে নি।রাস্তাটা তো সালমা বানুর নামে দলিল করা না, ওই রাস্তা দিয়ে তো আমরা অন্য কোথাও যেতে পারি।

ফুলের কথা শুনে সবাই ওর মুখের দিকে তাকালো,অভ্র ফুলকে বললো,
-কথা সত্য তবে ওরকম সিচুয়েশনে এরকমটা মাথায় কাজ করে নি।মস্তিষ্কের পিটুইটারি হরমোন তখন অই স্থান ত্যাগ করার আদেশই দিচ্ছিলো সবাইকে , কোনো একটা হরমোন যদি মনে করিয়ে দিতো এই কথাটা,তবে স্বাভাবিকই থাকতো সব কিছু।
-আমি না হয় ছোটো আপনারা তো বড় এই সামান্য ব্যাপারটা কারো মাথায় এলো নাহ!
-থাক অন্য একদিন মিশনে যাবো।আজকে কুফা ছিলো।যা হয়েছে হয়েছেই।

ফুলকে অভ্র কথাটা বলে শান্ত্বনা দিলো।কিন্তু ফুল বিরক্তি মুখ নিয়ে বললো,
-ধেত যদি এভাবে চলে না আসতাম, এতোক্ষণ এখানে দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে হাঁপাতে হতো না, সালমা বানুর বাড়ির এরিয়াতে দাঁড়িয়ে ঝগড়া করতাম।রাগ হচ্ছে পেয়ারা পারতে পারি নি তার জন্য নয়,সালমা বানুর সাথে ঝগড়া করতে পারলাম না সে জন্য দুঃখ লাগছে।

অভ্র কিঞ্চিত হেসে দিয়ে বললো,
-ঝগড়া করতে খুব ভালো লাগে তাই না?
-হুম কিন্তু সেটা শুধু সালমা বানুর সাথে,আর কারো সাথে না।খুব মজা লাগে মহিলাটাকে জব্দ করতে।
-আমার মাথায় একটা প্ল্যান এসেছে সালমা বানুকে মন ভরে জব্দ করার।
-কি প্ল্যান?
-দেয়ালেরও কান আছে সবাই কাছে আসো আস্তে আস্তে বলি।

সবাই একসাথে জুট হলো, অভ্র ওর প্ল্যানিং টা বললো সবাইকে।
-প্ল্যানটা মারত্মক প্ল্যান, এইপ্ল্যানে সালমা বানু এতো ইম্প্রেস সরি জব্দ হয়ে পুরোই বোবা হয়ে যাবে।

-প্ল্যান মতো এখন পরিবেশ বিরল ঠান্ডা রাখাই ভালো, ঝোপ বুঝে কুপ হবে।
– ওকে ডান!

সবাই বাড়ি ফিরে এলো।
বিকেলের দিকে সবাই ঘুরতে বের হবে , যমুনার উদ্দ্যেশে কারণ যমুনার আসল সুন্দর্য্য বিকেলে আর রাতেই ফুটে উঠে,তাই সবাই ঠিক করেছে বিকেলের দিকেই যাবে।

বিকেল হতেই সবাই বেরিয়ে পড়লো,
তবে আজ বাড়ির বয়ষ্করা বাদে বাকি সবাই যাচ্ছে।সুমাইয়া এখন পুরোপুরি সুস্থ। ওর ও কিছুদিন ধরে খুব যমুনা দেখতে ইচ্ছে করছে। তাই বাড়ির সব বউরা ফুলের ছয় ভাই,মিনা, বর্ষা, বাদল, বকুল আর অভ্রর ফ্রেন্ড সার্কেল সবাই মিলে বেরিয়ে গেলো। ছয় ভাই কারণ পলাশ বেচারা ব্যাংকারের ছুটি শেষ। সে এখন অফিসে, তবে ওদের সাথে জয়েন করবে যমুনাতে গিয়ে, পলাশের যেতে যেতে সন্ধ্যাও হতে পারে আবার সন্ধ্যার আগেও যেতে পারে।

বাকি সবাই গাড়ি ভরে যমুনার উদ্দ্যেশে চলে গেলো।অনেকটা পিকনিকের মতো লাগছে। যদিও এক গাড়িতে যাওয়া হচ্ছে না।

ভাগ্যিস আকাশে মেঘ করেনি,আবহাওয়া কেমন যেনো রহস্যময় খেলা খেলছে,মেঘ জমলে বৃষ্টি নেই আবার বিনামেঘে বৃষ্টি হচ্ছে।বৃষ্টিময় আবহাওয়ার প্রকৃতিতে ঘুরতে ভালো লাগে, কিন্তু বৃষ্টি যুক্ত না।

রাস্তার এপাশটাতে দাঁড়ালে প্রশস্ত যমুনা নদী,এপার থেকে ওপার দেখা দুর্লভ।
তবে পাড় থেকে যমুনার ব্রিজের মাঝামাঝি স্থানে একটা ছোট্ট চর উঠেছিলো,বর্ষার পানিতে চরটা ডুবে যাচ্ছে,নদীর উপর ঘুরানোর জন্য বড় বড় সেলু , নৌকা, স্পীড বুট রয়েছে।

নদীর বুকের উপর দিয়ে অনবরত স্টিমার, ফেরি চলাচল করছে। পুরো এরিয়াটা সেনাবাহিনীদের আওতাভুক্ত। তাই চারদিকটা এতো পরিপাটি। নদীর এদিকে আসার রাস্তাটাও দেখতে খুব বেশি মনোমুগ্ধকর, সেনাবাহিনীদের কাজ গুলো বড্ড বেশি পরিপাটি গুছানো হয়।

সবাই একটা বড় ইঞ্জিন চালিতো নৌকা ঠিক করলো, যেটাতে করে ওরা নদীর উপর ঘুরবে। পলাশ যমুনার কাছাকাছি আছে বলে এখনি কেউ নৌকাতে উঠছে না ও আসার পর ই উঠবে।বাইক চালিয়ে আসছে বলে বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করতে হবে না।
অভ্র ফুলের পাশে দাঁড়িয়ে ফুলকে জিজ্ঞেস করলো,
-তুমি এর আগে এখানে কতবার এসেছো?
-হিসেব নেই অনেকবার।
-ভালো লাগে খুব?
-আমার এই নদীর থেকে ওপাশে একটা রাস্তা আছে ওখান দিয়ে হাঁটতে খুব ভালো লাগে।
-কোন পাশে?
– ক্যান্টনমেন্ট এরিয়াতেই, এদিকে আসার আগে ডান পাশে যে একটা মোড় আছে , অই রাস্তাটাই। খুব ভালোলাগে দুই পাশ দিয়ে শুধু গাছ আর গাছ রাস্তা টা খুব পরিচ্ছন্ন ,বলে বুঝাতে পারবো না কতোটা সুন্দর।
-এদের ভাবভঙ্গী দেখে তো মনে হচ্ছে নদীর উপর ঘুরে ফিরেই সবাই বাড়ি ফিরবে আমার তো এখন অই দিকে দেখতে ইচ্ছে হচ্ছে।
-যাবেন আপনি?
-যেতে পারলে ভালো হতো,
– আচ্ছা ওয়েট পলাশ নানা আসুক,নানার বাইক নিয়ে আপনাকে ওদিকে ঘুরতে নিয়ে যাবোনি।
-তুমি বাইক চালাতে পারো?
-আরে ধুর আমি বাইক চালাবো কি করে! আপনি পারেন না?
-পারি তো।
-আপনি চালাবেন আমি নিয়ে যাবো।মানে আপনাকে দেখাবো কোন দিক দিয়ে যেতে হবে।
-বাইক নিয়ে যেতে হবে কেনো?গাড়ী নিয়ে যাই?
-না ওদিকটাই বাইক নিয়ে ঘুরতেই ভালো লাগে।
-ওহ ওকে।তুমি চিনবে তো?
-আরে বাবা আমার এই এরিয়া মুখস্ত।ছোটো বেলা থেকে এতো এতোবার এসেছি মনে হয় এখানে আমার পূর্ব বসতি ছিলো।
-না মানে জিজ্ঞেস করলাম এই জন্য আমার কাছে সব রাস্তা গোলকধাঁধার মতো লাগছে আসার সময় যতগুলো রাস্তা। দেখলাম সব রাস্তা একরকম দেখতে।
-আচ্ছা দাঁড়ান আমি বড় দাদাকে বলে আসি আগে।

ফুল একছুটে আয়মানের কাছে গিয়ে দাঁড়ালো ,আয়মানকে বললো,ও নদীতে এখন ঘুরবে না, অই রাস্তাটাতে আগে ঘুরবে। আয়মান পারমিশন দিয়ে দিলো, কারণ জানেই ফুলের ওদিকটাই বেশি পছন্দ।
কার সাথে যাবে জানতে চাইলে ফুল বললো অভ্রকে নিয়ে যাবে।

পলাশ আসতে না আসতেই পলাশের থেকে বাইক নিয়ে অভ্র ফুলকে নিয়ে যেতে লাগলো।সবাই শুধু এক কথায় বলছে,সাবধানে বাইক চালাতে, কোনো প্রবলেম হলে সাথে সাথে কল করতে।ফুলকে দেখে রাখতে।পাঁচ মিনিটেরও পথ না,কিন্তু একেক জনের সতর্ক বার্তা শুনে মনে হচ্ছে পাঁচ ঘন্টার জার্নি করতে যাচ্ছে কিংবা শেষ বিদায় দিচ্ছে এরকম টাইপ।

ছুঁ মেরে অভ্র সবার সামনে দিয়ে ফুলকে নিয়ে চলে গেলো, কাব্য নির্লিপ্ত দৃষ্টিতে অনুর কাঁধে হাত রেখে ওদের যাওয়ার দিকে তাকিয়ে আছে।অনুও একই রিয়্যাকশনে তাকিয়ে আছে।আসল সত্যিটা তো শুধু অনু আর কাব্যই জানে। বাকিরা জানার পর কি হবে কে জানে, জানলেই বা কি করতো, বিশেষ করে ফুলের সাত ভাইয়েরা।

ফুলের পরিবারের সবার ধারণারও বাইরে আগামীতে কি হতে যাচ্ছে তাদের সাথে।

চলবে…………

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here