#নয়নতারা
পর্ব ৫৫ (অন্তিম পর্ব)
Suvhan Årag (ছদ্মনাম)
❤❤❤কুড়িতে পা রাখলাম আজ(26 অক্টোবর)।নয়নতারা আমার প্রথম প্রকাশিত উপন্যাস।এজন্য চেয়েছি আমার জীবনের এই বিশেষ দিনটাতেই এটার সমাপ্তি করতে❤❤❤
;;;;;
প্রিয় পাঠক/পাঠিকা,ইনশাহআল্লাহ অমর একুশে বইমেলা ২০২১ এ প্রকাশিত হতে যাচ্ছে আমার প্রথম উপন্যাস “আবেদিতা”।সবাই পাশে থাকবেন।
আশা করছি ইনশাহআল্লাহ নয়নতারা আবেদিতার কাছে কিছুই নয়।আপনাদের আরো বেশি ভালো লাগবে।
;;;;;
💙কারোর কোন প্রশ্ন থাকলে পড়া শেষ করে নিচের লেখা গুলো অবশ্যই পড়বেন💙
;;;;;
তারা যেন সামনে সবকিছু অন্ধকার দেখছে।বুকের ভেতর যেন অজানা ঝড় বয়ে যাচ্ছে।চোখের পানি বাঁধ মানছে না।নাফিজ কি সত্যি তার থেকে বিলীন হয়ে যাবে?এজন্য ই কি সেদিন এতো কথা বলেছিল নাফিজ!
—-ক্যাপ্টেন,,,,ক্যাপ্টেন আপনি আমাকে এভাবে কষ্ট দিতে পারেন না।ক্যাপ্টেন,,,,আমি মরে যাব ক্যাপ্টেন।
কাঁদতে কাঁদতে চিৎকার করছে তারা।লতিফা গিয়ে তারাকে ধরলো।
—-তারা শান্ত হ।শান্ত হ আগে।
হঠাৎ করেই পেট চেপে ধরে আরো জোরে চিৎকার করে উঠলো তারা।
—-আআহ।আআআহ।
—-কি হয়েছে মা?কি হয়েছে?
—-মা বড্ড ব্যথা করছে।আআআহ।
তারা পেটে হাত রেখেই জোরে চিৎকার করছে।লতিফা তারাকে তাড়াতাড়ি সোফায় বসিয়ে দিল।ব্যথায় ছটফট করছে তারা।লতিফা ভয় পেয়ে চিৎকার দিল,
—-নাফিজের বাবা।শিগগিরি এসো।নাফিজের বাবা শিগগিরি এসো।হসপিটালে যেতে হবে।
লতিফা তারার পাশে গিয়ে তারাকে ধরে বসলো।নাফিজের বাবা এর মধ্যে ছুটে এসেছে।দরজা খুলে বাইরে চলে গেছেন তিনি গাড়ি ডাকতে।
—-হে আল্লাহ!এ কি হলো?
;;;;;
অপারেশন থিয়েটারের সামনে দাড়িয়ে আছেন ডা:মাহমুদা।সবুজ রঙের পোশাক পড়ে আছেন তিনি।পায়ে রাবারের বিশেষ ধরনের জুতো।যেটা ডাক্তাররা অপারেশন থিয়েটারের ভেতর পড়েন।বৈদ্যুতিক শকের আশংকা থাকে।অপারেশন থিয়েটারে যেসব যন্ত্রপাতি ব্যবহার করা হয় বেশিরভাগ অতি উচ্চ পরিমাণের বিদ্যুৎ পরিবাহী।সামান্য দুর্ঘটনা ঘটলেই সকলের প্রাণের আশংকা থাকতে পারে।এমনকি রোগীর ও।এজন্য অপারেশন থিয়েটারে ঢোকানোর আগে রোগীর গায়ে কোন অলংকার কিংবা যে কোন কিছু যেটা বিদ্যুত পরিবাহী হতে পারে সব কিছু খুলে নেওয়া হয়।রোগীর মাথার দিকেও একটা বিশেষ ধরনের টুপি পড়ানো হয়।
সামনে লতিফা, নাফিজের বাবা বসা।ডা:মাহমুদা কান্নায় ভেঙে পড়েছেন।আব্রাহাম সাহেব তাকে বার বার সান্ত্বনা দিচ্ছেন।তারাকে পুরো অজ্ঞান করে ভেতরে নেওয়া হয়েছে।অতিরিক্ত উত্তেজনার কারণে বাচ্চার অবস্থা বেশ ক্রিটিক্যাল হয়ে পড়েছে।আরো তারার ডেলিভারি ডেট এক সপ্তাহ পরেই ছিল।যে কারণে ডাক্তাররা আর রিস্ক নিতে পারছেন না।সিজারিং ই করতে হবে তারাকে।
—-কেদোনা মাহমুদা।তুমি এভাবে কাদলে হবে?
—-আমি পারব না।আমি অন্য কোন ডাক্তারকে আসতে বলছি।আমি পারব না।
—-কেন পারবেনা?ডা:মাহমুদা এখানের সবচেয়ে সিনিয়র ও অভিজ্ঞ গাইনী বিশেষজ্ঞ।আজ তার মেয়ের এই সময়ে সে কেন ভয় পাচ্ছে?
—-আব্রাহাম তুমি বুঝতে পারছো না।ওর গায়ে কখনো একটা আচ লাগতে দেইনি আমি।ওর একটা আঁচড় এর দাগ সহ্য করতে পারিনা আমি।সেখানে ওর ডেলিভারি!আমি পারব না।ওর লাইফ রিস্ক আছে আব্রাহাম। আমি সহ্য করতে পারব না।
—-তুমিই পারবে।তোমার থেকে ভালো এখানে কেউ পারবে না।তারার জন্য তুমিই পারবে।তুমি না ওর মা।মেয়ে হিসেবেই তো বড় করেছো।তারার জন্য তোমার থেকে ভালো এখানকার কোন ডাক্তার হতে পারে না।
—-ওর লাইফ রিস্ক আছে আব্রাহাম।কেন বুঝছো না তুমি?
—-এর থেকে বড় বড় অপারেশন ও তুমি আল্লাহর নাম করে করেছো।সফল হয়েছো।আজ কেন পারবে না?পারতে হবে মাহমুদা।আমাদের পাখিটা কষ্ট পাচ্ছে মাহমুদা।তুমি আর দেরী করো না।যাও।
—-আমি আজ অনেক বড় পরীক্ষা তে পড়ে গেলাম আব্রাহাম।আমার এতো বছরের ক্যারিয়ারে কখনো হাত কাঁপেনি আমার।আজ আমার হাত কাঁপছে।আমার ভয় করছে।
লতিফা নিজে ও বসা থেকে উঠে দাঁড়ালো।মাহমুদা বেগমের কাছে গেল।
—-আপা।ও আপনার সন্তান।আল্লাহর কাছে দোয়া করুন আপা।আল্লাহর নাম নিয়ে শুরু করুন যান।আল্লাহ আপনার কোল খালি রেখেছিল।তিনিই পরিপূর্ণ করেছিল।তিনি সব পারেন।সবকিছু তার হাতে।আপনি মনে প্রাণে তাকে স্মরণ করুন।দেখবেন খালি হাতে আপনাকে ফেরাবেন না তিনি।
—-আপা ঠিক ই বলেছে মাহমুদা।আর দেরী করো না।যাও।
—-আমি যাচ্ছি।তোমরা কিন্তু আমার কলিজাটার জন্য দোয়া করবে বসে বসে।ওর কিছু হলে আমি আর বাঁচব না।
আব্রাহাম সাহেব মাহমুদা বেগমের কাঁধে হাত রেখে সায় দিলেন।মুখে কাপড়ের মাস্ক টা বেধে ভেতরে গেলেন মাহমুদা বেগম।
বেডের ওপর শুয়ে আছে তারা।কোনো জ্ঞান নেই।মুখে অক্সিজেন মাস্ক লাগানো।এক হাতে স্যালাইন দেওয়া।মাহমুদা বেগম এসে তারার কপালে চুমু খেলেন।
—-আমি আজ নিজের সর্বোচ্চ দিয়ে চেষ্টা করব।আল্লাহ কে ডাকব মা।তোর জন্য তোর সন্তানের জন্য ভিক্ষা চাইব আমি।আজ ডা:মাহমুদার ক্যারিয়ারের সব চেয়ে কঠিন অপারেশন টা।আজ আমার ছোট্ট মা শুধু না তার কোলটার জন্য ও লড়তে হবে।
একজন নার্স এগিয়ে এলো।
—-ম্যাম শুরু করুন।
—- হুম।ফি আমানিল্লাহ।
পাশে আরো দুজন ডাক্তার আছেন।নার্স আছেন।তারার সোজাসুজি ওপর থেকে বিশাল একটা লাইট জ্বলে উঠলো।দিনের আলোর মতো পরিষ্কার দেখা যাচ্ছে সব।আল্লাহর নাম করে মাহমুদা বেগম নিজের কাজ শুরু করলেন।
;;;;;
অপারেশন শুরু হয়েছে অনেক আগে।অনেকক্ষণ পার হয়ে গেছে।অপারেশন থিয়েটারের বাইরে বসে চিন্তায় আছেন সবাই।পুরুষ মানুষ হয়েও আব্রাহাম সাহেব নিজেকে সামলাতে পারছেন না।বার বার চোখ মুছছেন।লতিফা মনে মনে আল্লাহকে ডেকেই চলেছে।
হঠাৎ করেই ভেতর থেকে বাচ্চার কান্নার আওয়াজ ভেসে এলো।লতিফা চমকে গেল।
—-নাফিজের বাবা শুনেছো?
—-হ্যাঁ আমিও শুনেছি।
আব্রাহাম সাহেব উঠে দরজার কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন।
—-কংগ্রাচুলেশন ম্যাম।আপনার তো দায়িত্ব বেড়ে গেল এখন।নানু হয়ে গেছেন।
ডা:মাহমুদার কোলে সদ্য জন্মানো বাচ্চা।এখনো কান্না করছে।বাচ্চাটার গা টা একদম পিচ্ছিল হয়ে আছে।
ডা:মাহমুদা চোখে পানি নিয়ে বলে উঠলেন,
—-আলহামদুলিল্লাহ।কন্যা সন্তান।এর চেয়ে বড় নিয়ামত আর কি হতে পারে।
বাচ্চাটাকে আলতো করে নার্স এর হাতে তুলে দিলেন মাহমুদা বেগম।বাবুর শরীর টা পরিষ্কার করতে হবে।সামনে থাকা ছোট্ট মনিটরের দিকে তাকালেন মাহমুদা বেগম।আনন্দে তার চোখে আরো পানি চলে এলো।তারার বিপদ কেটে গেছে।কাটা জায়গা টাতে সেলাই করতে হবে।মাহমুদা বেগম নিজ হাতে সব করলেন।তারাকে পুরোপুরি অজ্ঞান করার কারণে সে কিছুই টের পাচ্ছে না।সব কিছু শেষ করতেই উপরের লাইট নিভে গেল।তারার হাত টা নিজের হাতের মুঠোতে নিলেন মাহমুদা বেগম।
—-আমি পেরেছি সোনা।আল্লাহ আমাকে খালি হাতে ফেরাননি।
বাইরে সবাই উৎকন্ঠা নিয়ে অপেক্ষা করছে।বাচ্চার কান্নার আওয়াজ শোনার পর অনেকক্ষণ হয়ে গেছে।সবার চিন্তার মধ্যে ই মাহমুদা বেগম দরজা খুলে বের হলেন।সবার নজর দরজার দিকে।
হাসি মুখে মাহমুদা বেগম এগিয়ে আসছেন।কোলে গোলাপী রঙের তোয়ালে জড়ানো ফুটফুটে একটা বাচ্চা।লতিফা দৌড়ে গেল মাহমুদা বেগমের কাছে।
—-আপা তারা?
—-আলহামদুলিল্লাহ।মা বাচ্চা ওরা দুজনেই সুস্থ আছে।এই দেখুন আমাদের নাতনিকে দেখুন।একদম ছোট্ট পুতুল।
লতিফা আবেগে কেঁদেই ফেললো।কাপা কাপা হাতে বাচ্চাটাকে কোলে তুলে নিল।আব্রাহাম সাহেব নাফিজের বাবা ও এগিয়ে এসেছেন।
—-আমি বলেছিলাম না মাহমুদা তোমার থেকে ভালো কেউ পারবে না।
—-কি করতাম।তুমি জানো কতবার হাত কাঁপছিল আমার।
—-তারাকে বেডে দেবে কখন?
—-পোস্ট অপারেট ওয়ার্ড এ শিফট করা হবে।ওর জ্ঞান না ফেরা অবধি ওখানেই থাকবে ও।
;;;;;
ফজরের আজানের ধ্বনি যখন চারিদিকে ছড়িয়ে পড়েছে।তারার কানে সুমধুর আজানের ধ্বনির সাথে ও আরেকটা কন্ঠ ভেসে আসছে।
“বউ সোনা চাঁদের কনা।আর কতক্ষণ অপেক্ষা করাবে?চোখ খোলোনা।বউসোনা।”
গতকালকের কথা ধীরে ধীরে মনে পড়ছে তারার।আস্তে আস্তে চোখ খুললো তারা।তবুও যেন সবকিছু ঝাপসা দেখছে সে।চোখ মেলতেই নিজেকে অন্য কোথাও আবিষ্কার করলো তারা।মুখে অক্সিজেন মাস্ক।হাতে স্যালাইন লাগানো।গতকালকের কথা আবারো মনে পড়লো তারার।সঙ্গে সঙ্গে যেন বাম হাতটা পেটের ওপর চলে গেল।এ কি?তারা নিজের সেই বড় সড় পেট টাকে খুঁজে পাচ্ছে না।আবার তারার কানে ভেসে আসলো সেই ডাক।
“বউসোনা, তারাপাখি,মিষ্টি পাখি,আমার নয়নতারার মা।”
তারা এবার একটু একটু করে সব পরিষ্কার দেখছে।সামনে তাকাতেই চমকে গেল তারা।
আধো আধো স্বরে বলে উঠলো,
—-ক্যাপপপটেন।
সৈকত ফোনটা তারার আরো কাছে নিয়ে গেল।তারা চোখের কোন দিয়ে পানি বেয়ে পড়ছে।ফোনের স্ক্রিনে র ওপারে নাফিজ চোখ মুছছে বার বার।চোখ মুখ ফুলে আছে নাফিজের।গায়ের ইউনিফর্ম টাতে কাদা মাটি লেগে আছে।ফোনের স্ক্রিনে নাফিজের ছবিটা বড় দেখা যাচ্ছে।উপরে কোনার দিকে ছোট্ট করে তারার মুখ ও দেখা যাচ্ছে।তার মানে কিছুই হয়নি।নাফিজ তারাকে বেরঙিন করে যায়নি।তারা সব কিছু ভাবতেই ওঠার চেষ্টা করতে লাগল।আবার আহ শব্দ করে শুয়ে পড়লো।
—-একদম উঠবি না।কাটা জায়গায় ব্যথা লাগবে তো।
—-তুমি,,,।
—-হ্যাঁ আমি।সব সময় এতো বেশি বুঝিস কেন বলতো?তোকে বার বার বলেছি না আমাকে নিয়ে এতো চিন্তা করতে হবে না।কাল যদি তোর জন্য আমার রাজকুমারীর কিছু হতো না তোর খবর ছিল।
—-রাজকুমারী!
—-হ্যাঁ।একটা ছোট্ট পুতুলের জন্ম দিয়েছিস তুই কাল।ছোট্ট পুতুল।তুই এমন কেন রে?কাল যদি তোর কিছু হয়ে যেত আমি কিভাবে থাকতাম সেটা বুঝিস না তুই!
তারার মুখে হাসি ফুটলো।এর মধ্যে মাহমুদা বেগম এসে তারার অক্সিজেন মাস্ক টা খুলে দিয়ে বাইরে চলে গেলেন।
—-কিন্তু ঐ যে খবরে,,,।
—-হ্যাঁ।খবর।দেশে ফিরে তোর খবর করব আমি।আরে ওটা অন্য নাফিজ ছিল।একজন সৈনিক।শুধু নামটা পড়লি।পাশের পদবিটা দেখবি না!তুই সত্যি বোকা।কাল উত্তেজিত হতে গিয়ে কত বড় বিপদ ঘটিয়েছিস তুই জানিস!আমি কাল ক্যাম্পে ফিরে এসে তোকে কল করি।তখন শুনি সব।তুই তখন ওটিতে।
—-আমার খুব ভয় হয়ে ছিল ক্যাপ্টেন।আমি আপনাকে ছাড়া থাকতে পারব না।
—-আমি ওতো পারব না রে।
এর মধ্যে সৈকত বলে উঠলো,
—-আজব তো!দুজনে প্রেমালাপ করে যাচ্ছিস।আমার ভাগ্নীটার নাম গন্ধ কেউ নিচ্ছে না!মা তো অজ্ঞান হয়ে সারা রাত পড়ে ছিল।আর বাপ সে আগে বউ দেখবে।বলি আমার ভাগ্নী টার প্রতি এতো অত্যাচার কেন?
—-আমার মেয়ে কোথায় সৈকত ভাইয়া?
—-যাক এতক্ষণে মনে পড়লো।চাচিমা কোথায় তুমি?আরে আমাদের প্রেসিডেন্ট সাহেবা কে নিয়ে এসো।
তারা অধীর আগ্রহে দরজার দিকে তাকিয়ে আছে।নাফিজ তারার দিকে চেয়ে আছে।তারাকে দেখতে আজ অন্য রকম লাগছে।মাতৃত্বের স্বাদ গ্রহণ করার পর প্রত্যেক টা মেয়ের মধ্যেই যেন অন্য কিছুর শুরু হয়।মা মা গন্ধ ভেসে আসে।
সৈকতের ডাক শুনে লতিফা মাহমুদা বেগম দুজনেই ভেতরে আসলেন।লতিফা কোলে করে বাবুকে তারার পাশে শুইয়ে দিল।ঘুমিয়ে আছে ছোট্ট তারা।তারা পাশ ফিরে তাকিয়ে আছে।গোলাপী রঙের তোয়ালে জড়ানো ছোট্ট একটা পরী তার পাশে শুইয়ে আছে।বাবুকে দেখেই তারার চোখের কোন বেয়ে এক ফোটা পানি গড়িয়ে পড়লো।নাফিজ ও খুশিতে কেদেই ফেলেছে।তার বড্ড ইচ্ছে করছে তার ছোট্ট পুতুল টাকে কোলে নিতে।কিন্ত সে নিরুপায়।
—-মামোনি।চোখ খুলবে না সোনা।বাবাই কে দেখবে না।
বাচ্চাটা ঘুমিয়ে আছে।পুরো তারার কপি মনে হচ্ছে যেন।ঠোট গুলো টকটকে লাল।ধবধবে ফর্সা গায়ের রঙ।চোখের পাপড়ি গুলো ও লম্বা লম্বা।কালো রঙের জোড়া ভ্রু।নাফিজের ডাকে তার কোন হেলদেল নেই।বরং ঘুমের মধ্যে একটু হাই তুলে আবার ঘুমিয়ে পড়েছে।
—-দেখেছিস তারা।একদম তোর মতো হয়েছে।
—-আমাদের ছোট্ট পরী।
—-হুম শুধু আমাদের।
—-ওর নাম তো রাখলে না।
—-রেখেছি তো।
—-কি?
—-নয়নতারা।
—-এখানেও!
—-হ্যাঁ এখানেও।
দুজনেই একসাথে হেসে উঠলো।সৈকত ও ফোন ধরে রেখে হাসছে।সবার মধ্যে হুট করে কেঁদে উঠলো নয়নতারা।মাহমুদা বেগম ছুটে আসলেন।
—-এই যাহ।নানু কাদে না কাদেনা।তারা মা ওকে এবার খাওয়া।কাল থেকে ফিডার খেয়েছে।এখনো মায়ের দুধ খেতে পারলো না।
—-দেও আমার কাছে।
সৈকত ফোন নিয়ে বাইরে চলে গেল।
—-কি দুলাভাই।এখন তো মামা হয়ে গেলাম আমি।
—-হ্যাঁ।এবার তোমার ও একটা ব্যবস্থা করতে হচ্ছে।
ফোনের এপাশে সৈকত ওপাশে নাফিজ দুজনেই অট্ট হাসিতে ফেটে পড়লো।
তারা খুব আলতো করে কাত হয়ে শুয়ে বাবুকে খাওয়াচ্ছে।কাত হওয়াতে পেটের কাটা জায়গায় একটু ব্যথা লাগছে।তবুও কোথাও যেন তৃপ্তি পাচ্ছে তারা।বাবুর ছোট্ট হাত টা নিজের হাতের মধ্যে নিল তারা।তুলতুলে তুলোর মতো শরীর।পাতলা চামড়া শরীরে।যেন একটু টানলেই ছিড়ে যাবে।মেয়ের কপালে চুমু দিল তারা।
;;;;;
—-নয়ন মা ঘুমাও।সকাল থেকে খেলে যাচ্ছো।
তারার কথা শুনে ছোট্ট নয়নতারা মায়ের দিকে তাকিয়ে কিছু না বুঝে হেসে দিল।হাতের কাছের ঝুনঝুনি টা নিয়ে আবার খেলতে শুরু করলো।
মেয়েকে খাটের ওপর বসিয়ে তারা ঘর গোছাচ্ছে।সাড়ে ছয় মাস বয়স হয়ে গেছে নয়নতারার।আজ নাফিজ বাড়িতে আসবে।দেশে ফিরেছে সে বিশ দিন আগে।সব ফরমালিটি শেষ করতে করতে দেরী হয়ে গেছে অনেক।আজ বাড়িতে আসবে নাফিজ।সকাল থেকে লতিফার সাথে সাথে তারাও রান্না করেছে নাফিজের জন্য।মাহমুদা বেগম আব্রাহাম সাহেব ও এসেছেন আজ বেড়াতে।
—-তারা মা।নানু ভাই কোথায়?
আব্রাহাম সাহেবের কথা শুনে পেছনে ঘুরলো তারা।
—-ঐ দেখো বসে খেলছে।
—-তুমি কি করছো?বাড়িতে আমরা এতজন থাকতে তুমি আবার এই পা নিয়ে ঘর গোছাচ্ছো?এতো খুঁড়িয়ে কষ্ট করতে কে বলেছে?
—-বাপি।তেমন কিছু না।নয়নের জামা গুলো শুকিয়ে গেছে।ওগুলো ভাজ করছিলাম।
—-তুমি গোসল করেছো?
—-না বাপি।
—-এখনো করোনি!নাফিজ এর ফ্লাইট ছেড়ে দিয়েছে।ঢাকা থেকে আসতে বেশি সময় লাগবে না।যাও যাও।
—-কিন্ত নয়ন তো জেগে আছে।নিচে সবাই ব্যস্ত।
—-আমি আছি না।আমি দেখছি।তুমি যাও।
—-আচ্ছা।
তারা নিজের কাপড় গুলো বের করে তোয়ালে নিয়ে ক্রাচ হাতে ধীরে ধীরে হেটে গেল বাথরুমের দিকে।
;;;;;
তারা গোসল গেছে অনেকক্ষণ হয়েছে।আব্রাহাম সাহেবের কোলেই ঘুমিয়ে পড়েছে ছোট্ট নয়ন।আব্রাহাম সাহেব খাটের ওপর বালিশ কোলবালিশ দিয়ে শুইয়ে দিলেন নয়নকে।ছোট্ট মশারী টাঙিয়ে দিয়ে বাইরে চলে গেলেন।
লতিফা আর মাহমুদা বেগম বসে বসে নাড়ু বানাচ্ছেন।নাফিজ নারকেলের নাড়ু খেতে বড্ড ভালোবাসে।
হঠাৎ করেই কলিংবেলের আওয়াজ।নাড়ু বানানো বন্ধ করে লতিফা আর মাহমুদা বেগম দুজনেই উঠে গেলেন।লতিফা ছুটে গিয়ে দরজা খুললো।
—-আসসালামু আলাইকুম মা।
—-ওয়ালাইকুম আসসালাম।নাফিজ।
লতিফা নাফিজকে দেখে জড়িয়ে ধরে কেঁদেই ফেললো।এই প্রথম টানা একবছর এর বেশি নাফিজ তার থেকে দূরে ছিল।লতিফা নাফিজকে এনে ভিতরে বসালো।আব্রাহাম সাহেব নাফিজের বাবা গিয়ে দরজার বাইরে থেকে নাফিজের ল্যাগেজ গুলো ভেতরে আনলেন।
—-তারা কোথায় মা?বাবু কোথায়?
—-তারা গোসলে গেছে।বাবু ঘুমিয়ে গেছে।যা ওপরে যা।
লতিফা নাফিজকে ওপরে পাঠিয়ে দিল।আপাতত কেউ নাফিজকে ডাকবে না।দুজনে একটু সময় কাটাক সবাই এটাই চায়।
;;;;;
ঘরে ঢুকতেই নাফিজের কানে কান্নার স্বর ভেসে আসলো।নাফিজ দৌড়ে দরজা খুলে ভেতরে ঢুকলো।খাটের ওপর চোখ পড়তেই নাফিজ দেখলো নয়নতারা উঠে পড়েছে।কাত হতে গিয়ে মশারির সাথে জড়িয়ে পড়েছে।ঠোট ফুলিয়ে কাঁদছে।
বাথরুমের ভেতর থেকে তারা বলছে,
—-মা আসছি।আসছি সোনা।মা বাপি বাবা কোথায় তোমরা।
বাথরুমের ভেতর তারা উত্তেজিত হয়ে যাচ্ছে।তাড়াতাড়ি করে জামা পড়ছে।
এদিকে নাফিজ তাড়াতাড়ি মশারি সরিয়ে কোলে তুলে নিল নয়নকে।নয়ন এখনো ঠোট ফুলিয়ে কাদছে।
—-মা মা।কাদেনা।দেখ বাবাই এসে গেছে না।
কাঁদতে কাঁদতে থেমে গেল নয়নতারা।ড্যাপ ড্যাপ করে তাকিয়ে আছে নাফিজের দিকে।ফুলছে আর ঠোট ফুলাচ্ছে।গোলাপি ঠোট দুটো ফুলাচ্ছে মুখটা লাল হয়ে গেছে নয়নের।নাফিজ মেয়ের চোখ মুছে দিয়ে নিজেই কেঁদে ফেললো।নয়নকে শক্ত করে বুকের সাথে জড়িয়ে ধরলো।এই প্রথম নিজের সন্তানকে কোলে নিয়েছে সে।
এর মধ্যে তারা তাড়াহুড়ো করে বেরিয়ে এসেছে।বেরোতেই বাবা মেয়ের দৃশ্যটা দেখে মনটা ঠান্ডা হয়ে গেল তারার।নাফিজ মেয়ের চোখে মুখে চুমু খাচ্ছে।জড়িয়ে ধরছে।নয়ন চুপ করে নাফিজকে দেখছে।রক্তের টান বলে একটা বিষয় আছে।এছাড়া এতদিন তারা প্রতিদিন নয়নকে নাফিজের সাথে ভিডিও কলে দেখাতো।ছবি দেখাত।বাবার কোলে একদম চুপ করে আছে নয়ন।
—-শুধু এখন মেয়েকেই দেখবে।আমাকে তো ভুলে গেছো না।
তারার গলা শুনে নাফিজ পেছনে ঘুরলো।তারাকে দেখে মুচকি হাসি দিল।নয়ন ঠান্ডা হয়েছে দেখে কোল থেকে নামালো নয়নকে।খাটের ওপর বসিয়ে দিল।গিয়ে তারাকে একটানে বুকের সাথে জড়িয়ে নিল।
—-তোকে কি ভোলা যায়!
—-তুমি জানো কত চিন্তায় থাকতাম এই একটা বছর ধরে।
—-আর চিন্তা করতে হবে না।তোর অনেক কষ্ট হয়েছে না?একা একা সব টা করতে হলো।
—-উহুম কষ্ট হয়নি।
তারা মাথা টা তুলে খাটের ওপর বসে থাকা ছোট্ট নয়নের দিকে আঙুল ইশারা করে বললো,
—-ঐ যে তৃপ্তি।তৃপ্তি যেখানে কষ্ট সেখানে নিরর্থক।
;;;;;
৫ বছর পর।
—-উহ লে।আসছে না কেন?কি শক্ত।উহলে।
নাফিজ নয়নের গলা শুনে সোফা থেকে উঠে ডাইনিং এর কাছে গেল।ডাইনিং এর চেয়ার ধরে নয়ন টানাটানি করছে।
—-কি করছো মা?
—-মামোনি নান্নাঘরে দাড়িয়ে নান্না করছে।পা ব্যথা কলছে না।তাই এই চেয়ার নিতে এসেছি।
—-পাকা বুড়ি।সব বোঝে উনি।আমিও কাজ করছিলাম।খেয়াল ছিল না।চলো চলো আমি নিয়ে যাচ্ছি।
—-তলো তলো।
নাফিজ চেয়ার নিয়ে রান্নাঘরে গিয়ে রাখলো।নয়ন ও নাফিজের সাথে গুড়গুড় করে চলে এসেছে।শব্দ শুনে পেছনে ঘুরলো তারা।
—-কি হলো?
—-তোমার মেয়ে মায়ের কষ্ট হবে বলে চেয়ার আনতে গেছিল।
—-পারে ও বটে ও।
—-নেও বসোতো।
তারা পায়েশটা একটু নেড়ে ক্রাচ টা পাশে রেখে চেয়ারে বসলো।
—-পায়েশ এ তো রাতে কে খাবে?
—-বাবাই এর জন্য রেধেছি।
—-এখন!
—-হুম।কখনো তো বলেনা কি পছন্দ করে।আজ সকালে মুখ ফসকে বলে ফেলেছিল কথায় কথায়।
—-হয়ে গেছে বোধ হয়।দাঁড়াও আমি দেখছি।
নাফিজ একটা বাটি নিয়ে তাতে খানিকটা পায়েশ উঠালো।চামচ দিয়ে একটা ছোট ট্রেতে রাখলো।
—-যাও দিয়ে এসো।
—-তোমাদের দুজনের টা দিয়ে যাই।
—-আমি বাবুকে দিয়ে দেব।তুমি আসো।দুজনে একসাথে খাব।
—-আচ্ছা।
নাফিজ দরজা অবধি তারাকে ট্রে টা এগিয়ে দিল।ট্রে তা নিজের এক হাতে নিয়ে আরেক হাত দিয়ে ক্রাচ এ ভর করে দাঁড়ালো তারা।
—-বাবাই।দরজা খোলো।বাবাই।
—-আসছি মা।
একটু পর ফজলে শেখ এসে দরজা খুললো।তারা পায়ের ট্রে নিয়ে ভেতরে ঢুকলো।
ফজলে শেখ এখন তারার কাছেই থাকে।তিন বছর আগে কঠিন অসুখে তানিয়া মারা যায়।সেদিন তারা আর নিজেকে শক্ত করতে পারেনি।নাফিজ জোর করে তারাকে নিয়ে যায় সেখানে।ভেঙে পড়েছিল ফজলে শেখ।বার বার আকুতি মিনতি করেছিল তারার কাছে শুধু শেষ জীবনটা তারার সাথে কাটাতে চায় সে।শত হলেও যাই হোক ফজলে শেখ তারার জন্মদাতা পিতা।ক্ষমা মহৎ গুণ।কিছু জিনিসের ক্ষমা হয়তো হয়না।তবুও পরিস্থিতি বাধ্য করে।নাফিজের কথাতে তারাও নিজে কে শক্ত করতে পারেনি।একদিন বাবাই বলে ডাকতো।এত সহজে কি সব ভোলা যায়।শেষমেশ নিজের কাছেই ফজলে শেখকে নিয়ে আসে তারা।নাফিজের পোস্টিং এ ঢাকাতে এখন।ফজলে শেখ ও আগের মতো নেই।কেমন নিষ্প্রাণ হয়ে গেছে।তারার কাছে যে তিনি আছেন এটাই ঢের বেশি।
—-বাবাই পায়েশটা খেয়ে ঘুমিয়ে পড়ো।
—-মিষ্টি মা।তুই রেধেছিস!
—-হ্যা।
—-এই শরীর নিয়ে এত রাতে কষ্ট করেছিস।
—-ওসব কিছু না।তুমি খেয়ে নেও বাবাই।
;;;;;
নয়ন বায়না ধরেছে আজ নানুর কাছে ঘুমাবে।তাকে বাধ্য হয়েই ফজলে শেখের কাছে রেখে এসেছে নাফিজ।
দরজা খুলেই নাফিজ দেখে ফোন হাতে নিয়ে তারা হাসছে।
—-কি গো?কি হয়েছে?
—-আর বলো না।গাসুর সাথে কথা বলছিলাম।ওর ছেলেটাকে যে কি ভুলভাল ইংলিশ শেখাচ্ছে।কাদছে।ক্রাইং না বলে বলছে ফ্লাইং উড়ছে।বোঝো অবস্থা।
—-ওরা কাল আসছে তো।
—-হ্যাঁ।মা বাপি রওনা দিয়েছে।মা বাবা ও ট্রেনে উঠে গেছে।
—-যাক আমার নয়নতারা কাল পাঁচ বছরে পা দেবে।
—-হুম।
নাফিজ তারার কাছে এসে তারাকে জড়িয়ে ধরলো।
—-অনেক গুলো বছর কাটলো তাই না?
—-হুম।যুগ কাটুক।তবুও শেষ দিন অবধি তোমাকে চাই।
—-আমিও।তুই আমার সাধনা।সাধনা।তার থেকেও অনেক বড় কিছু।
—-তাই বুঝি?
—-হুম।তাই।
“তোকে সাজিয়ে রাখব আমার মনের বাগানে
ছোট্ট আঙিনায়
তুই সকাল বেলা ফুটবি সূর্যের মতো
আর রাতের চাঁদ হয়ে আলো ছড়াবি শুধু আমার ঘরে
তোকে মনের মধ্যে গেঁথে রাখব
মালার মতো একটা একটা করে
তুই শুধু আমার বাগানে সৌরভ ছড়াবি
ফুটে রইবি শুধু আমার নয়নতারা হয়ে,
তুই শুধূ ই আমার একান্ত আমার #নয়নতারা।”
তারা হেসে উঠলো নাফিজের কথায়।দুজনে দুজনকে আলিঙ্গন করলো।
“প্রিয় পূর্ণতা,
সবাই কি পরিপূর্ণ হতে পারে?আমি শূন্যতাকে নিয়ে ই তো আছি।সে পরিপূর্ণ নয়।আমি পরিপূর্ণ।তাতে কি?বেশ তো আছি।ভালোবাসার অফুরন্ত জোয়ারে ভেসে।কিছুর কিছু টা যে শূন্যতাতেই পরিপূর্ণ “।
(লেখার শুরুতেই শেষ টা কি হবে ভেবে রাখি আমি।সব সময় তো স্যাড এনডিং দেইনা।যেটা মনে হয় দেই।খারাপ লেগেছে কাল অনেকে গালি দিয়েছেন।আইডি পেজ উড়িয়ে দেওয়ার হুমকি তাই পেয়েছি।
তবুও বলব পাশে থাকবেন।আজ আমার জন্মদিন 😇 দোয়া করবেন)
———————– সমাপ্ত———————-
(বিদ্র:সব চরিত্র ঘটনা কাল্পনিক।এক নির্মম বাস্তবতার সাথে কল্পনাকে মিশিয়ে উপস্থাপন করেছি।জানিনা কতটুকু পেরেছি।লেখার সময় কখনোই বানান গুলো দেখিনি।ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।আমার পেজ Suvhan Arag’s Storys এর ফলো করে পাশে থাকবেন।
৫৪ পর্ব এজন্য ই দিয়েছিলাম কারণ আমি নিজে একজন অবসরপ্রাপ্ত সেনা সদস্যের মেয়ে।জীবনে অনেক মূহূর্ত গেছে অনেক ঈদ,অনেক জন্মদিন বাবাকে ছেড়ে কাটিয়েছি।আমার বাবা নিজের নব জাতক সন্তনাকে কোলে নিয়েছেন ঠিকই।অপারেশন থিয়েটারের বাইরে বসে সদ্যজাত সন্তানকে কোলে নেওয়ার অনুভূতি তিনি পাননি।একজন সৈনিক সৈনিকের পরিবার অনেক কিছু ত্যাগ করে।আমি উপন্যাস টা লিখতে গিয়ে বাবার সাহায্য ও নিয়েছি।ইউনিট rank এই বিষয় গুলোতে।
আর গাসুয়া র ভাষা গাসুয়া মাংসাং আর ওর বোন মমনী সিমসাং থেকে শিখেছি।গাসু আমার পাঠক।কিছু সময় ওদের ভাষাটা ওরা লিখে দিয়েছে।আমি সেটা কপি করে পেস্ট করে ছি।এ তো কঠিন কি বলব।
কেমন লাগল অবশ্যই জানাবেন। আর ক্ষুদ্র মানুষ আমি।ইনশাহআল্লাহ “””আবেদিতা””” আমার প্রথম উপন্যাস আসছে।চাইলে তখন না হয় একটু দেখবেন।
কাল থেকে ইনশাহআল্লাহ #রৌদ্র_কুয়াশা দেওয়ার চেষ্টা করব।এটা আরেক বাস্তবধর্মী উপন্যাস আমার।এটা শেষ হলে সত্য ঘটনা নিয়ে লিখব।
সবার মেসেজ র ঠেলায় আধ ঘন্টা আগে দিলাম যাও।🙃
পাশে থাকার জন্য ধন্যবাদ)
Pc: গাসুয়া মাংসাং