#অপূর্ণ_প্রেমগাঁথা
#The_Mysterious_Love
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ১২
কিছুক্ষণ পর কাঁপতে কাঁপতে হাত থেকে ছিটকে ফেলে দেয় মাধুর্য ওই প্রাণীটাকে। প্রাণীটা রক্ত শূন্য হয়ে পড়েছে। নিজের এই রুপ দেখে অবাক চোখে তাকায় সে। হাত উঠিয়ে দেখতে থাকে নিজের ধারালো নখগুলো। নখে কিছু তাজা রক্ত লেগে আছে। নিজের রুপ দেখে নিজেই ভয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে মাধুর্য। ঠোঁটের কোণে হাত দিয়ে রক্ত পেতেই মাথাটা চক্কর দিয়ে ওঠে তার। চোখমুখ ঝাঁকুনি দিয়ে বন্ধ করতেই সেখানেই জ্ঞান হারায় মাধুর্য।
যখন মাধুর্য পিটপিট করে চোখ খোলার চেষ্টা করে তখন সে নিজেকে ভীষণ দুর্বল লাগে তার। এই দুর্বলতার কারণ খুঁজে পায় না সে। চোখটা ভালোভাবে মেলতেই একটা অচেনা মেয়েকে দেখে ভালোভাবে তাকায় সে। মেয়েটার মুখে হাসি ফুটে ওঠে মাধুর্যের জ্ঞান ফেরা দেখে।
কিন্তু মাধুর্য মোটেই সন্তুষ্ট নয় মেয়েটাকে দেখে। ভয়ে ভয়ে দ্রুত ওঠার চেষ্টা করে মাধুর্য। তাৎক্ষণিক নিজের বাহুতে কারো স্পর্শ পেয়ে ঘাড় ঘুড়িয়ে তাকায় সে। অনুভবকে দেখতে পেয়ে শান্ত হয় তার চোখজোড়া। অনুভব থমথমে গলায় বলে ওঠে….
–“আর ইউ ওকে?”
মাধুর্য ছোট্ট করে বলে…”হু।”
জ্ঞান হারানোর আগে নিজের হাতের শেষ দৃশ্যটা মনে পড়ে মাধুর্যের। তাড়াতাড়ি করে হাত উঠিয়ে ওলটপালট করে দেখতে থাকে তার নখ। সব ঠিকঠাক আছে। নখও বেশ ছোট ছোট। তাহলে কি সবকিছু ওর কল্পনা ছিল? অনুভবের দিকে তাকিয়ে দুর্বল গলায় মাধুর্য প্রশ্ন করে….
–“আমি কোথায়?”
–“ফার্মহাউজে তুমি এখন। কি হয়েছিল তোমার? রাস্তায় সেন্সলেস হয়ে পড়ে ছিলে তুমি মাধুর্য। আমার মনে হয় তোমার প্রেশার ফল করেছিল নয়ত দুপুরে খাওনি তাই শরীর দুর্বল হয়ে পড়েছিল।”
মাধুর্য কিছুক্ষণ ভাবনাচিন্তা করে বলে ওঠে….
–“তাই হবে হয়ত।”
–“অ্যান্ড লিসেন, এই মেয়েটা আমার বন্ধু। এলিনা ওর নাম। আজ থেকে তোমার সঙ্গে থাকবে।”
মাধুর্য চোখ উঠিয়ে তাকায়। বেশ ফর্সা আর চিকন গড়নের মেয়েটি। মাধুর্য একটা জিনিস খেয়াল করেছে অনুভবসহ তার পরিবার থেকে ওর বন্ধুবান্ধব সবাই বেশ সুন্দর এবং ফর্সা দেখতে। সবাই কি সিক্রেট রুপচর্চা করে নাকি? কথাটা ভেবে জ্বিহ্বাতে কামড় দিয়ে হাসে মাধুর্য। আজকাল বোধহয় কবিতার সঙ্গে থাকতে থাকতে ওর মাথাতেও উদ্ভট চিন্তাভাবনা আসছে।
অনুভব হালকা হাসলেও হাসিটা মিলিয়ে যায়। কারণ অনুভব জানে মাধুর্যের সঙ্গে মোটেও এমনটা ঘটেনি। আজকে যখন সে নিজের কাজ শেষ করে মাধুর্যের কেবিনে আসে তখনই মাধুর্যকে দেখতে পায় না সে। নীলিমা জানায় ও বাড়ি চলে গিয়েছে অনেকক্ষণ আগেই। অনুভব সিউর হওয়ার জন্য এলিনাকে ফোন দেয়। এলিনা জানায় মাধুর্য এখনো বাড়িতে যায়নি। চিন্তিত হয়ে গাড়ি নিয়ে বেরিয়ে পড়ে অনুভব। মেইন রাস্তা পেরিয়ে জঙ্গলের রাস্তায় গাড়ি নিয়ে যেতেই গাড়ির লাইটে মাধুর্যকে রাস্তায় অজ্ঞান অবস্থায় দেখে গাড়ি থামায় সে। গাড়ি থেকে নেমে মাধুর্যকে কয়েকবার ডাকে অনুভব। মাধুর্যের সাড়া না পেয়ে ওর গলায় আর হাতের একটু ওপরে চোখ যায়। বেশ গভীর আঁচড় দেখে হতভম্ব হয়ে যায় সে। এমন আঁচড়ের দাগ তার অচেনা নয়। হালকা ছুঁইয়ে দেয় মাধুর্যের আঁচড়ের জায়গাগুলো হাত দিয়ে। ওর বুকে চিনচিন যন্ত্রণা অনুভব হচ্ছে। এ কেমন যন্ত্রণা? বিরবির করে বলে ওঠে…..
–“ব্যাথা পেয়েছে মেয়েটা আর হৃদয়ক্ষরণ হচ্ছে আমার। কেন?”
উত্তর না পেয়ে আশেপাশে তাকাতেই একটা ওয়ারওল্ফের দেহ দেখে বিস্ময়ের সঙ্গে তাকায় সে। ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছে দেহটা। দেখেই বোঝা যাচ্ছে দেহে কোনো রক্ত নেই। সব শুষে নেওয়া হচ্ছে। বড় বড় চোখ দিয়ে একবার তাকায় ওয়ারওল্ফের দিকে আর একবার মাধুর্যের দিকে। মাধুর্যের নখের আগায় রক্ত লেগে আছে। এতো ভয়াবহ পরিস্থিতির মাঝেও অদ্ভুত হাসি হেসে ওঠে অনুভব। এই হাসিটা ওর খুশির হাসি। মাধুর্য নিজেই ওর পরিচয়ের প্রমাণ দিতে শুরু করেছে। এর থেকে ভালো কি হতে পারে? অনুভব বেশ ভালোভাবে বুঝে যায় মাধুর্য সাধারণ কোনো মেয়ে নয়। এটাতেই তার আনন্দ। নিজের নিশ্চয়তার দিকে এগুচ্ছে অনুভব। মাধুর্যের হাত নিজের হাতের ওপর নিয়ে হাতে একটা আলতো ঠোঁটের স্পর্শ দিয়ে বলে….
–“তুমি যদি সে হও। তাহলে আমার চেয়ে বেশি খুশি কেউ হবে না। এবার আমি তোমাকে লুকিয়ে রাখব নিজের হৃদয়ে।”
সেখান থেকে মাধুর্যকে উঠিয়ে নিয়ে আসে অনুভব।
মাধুর্যের কথায় ধ্যান ভাঙে অনুভবের। মাধুর্য প্রশ্নসূচক দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে। অনুভব গলার সুর যথাসম্ভব গম্ভীর রাখার চেষ্টা করে বলে…..
–“কিছু বললে?”
–“আমার হাতে এবং গলায় আঘাত লাগলো কি করে? আপনি জানেন?”
মাধুর্যের কন্ঠে জানতে চাওয়ার আকাঙ্ক্ষার। অনুভব বলে ওঠে….
–“বলতে পারছি না আমি। তুমিই জানো।”
মাধুর্য মাথায় চাপ দিয়ে মনে করবার চেষ্টা করে কিন্তু বিফলে যায় তার চেষ্টা। গা গুলিয়ে আসছে তার। মনে হচ্ছে পেট থেকে সব কিছু বেরিয়ে আসবে। মুখে হাত দিয়ে তড়িঘড়ি করে নেমে ওয়াশরুমে চলে যায় মাধুর্য। গড়গড় করে লাল বর্ণের কিছু একটা বমি করে ফেলে সে। মাধুর্যের গুরুতর অবস্থা দেখে ছুটে আসে এলিনা এবং অনুভব।
মাধুর্য ওয়াশরুমের দেয়ালে হাত ধরে দুর্বলভাবে চোখ বুঁজে দাঁড়িয়ে আছে। ওর সাথে কি হচ্ছে তার ওর নিজেরই অজানা। অনুভব লাল বর্ণের বমি দেখে বুঝতে সময় হয় না এসব রক্ত ছিল। ওয়ারওল্ফের রক্ত।
তবে সেসবে পাত্তা না দিয়ে দুর্বল মাধুর্যকে মূহুর্তেই কোলে তুলে নেয় সে। মাধুর্য হকচকিয়ে গিয়ে অনুভবের সাদা শার্টের কলার চেপে ধরে নিচে তাকায়। অনুভব তাকে নিয়ে বাইরে বেরিয়ে আসে আর এলিনাকে ইশারা করে। মাধুর্য বারণ করে না অনুভবকে কোলে না নিতে। যেন এটাই তার জায়গা। বরণ চোখ বুঁজে অনুভবের বুকে মাথা রাখে। অনুভবের বুকের মধ্যে যে ধুকপুকানি হচ্ছে সেটা উপভোগ করায় বেশ মজা পায় মাধুর্য। হুট করে তাকে চমকে দিয়ে অনুভব বলে….
–“উপভোগ করা ভালো। তবে সেটা যেন ক্ষনিকের না হয়।”
হা করে তাকায় মাধুর্য। অনুভব কি করে বুঝল বিষয়টি। সঙ্গে সঙ্গে কাচুমাচু করে নেয় তার মুখ।
অনুভব গিয়ে মাধুর্যকে বেডে বসায়। মেয়েটাকে আরো এক ধাপ চমকে দিয়ে অনুভব ওর চুলের ওপর চুমু খেয়ে বসে। বিষয়টিকে অনুভব নিজেই বোকা হয়ে যায়। কিসব করছে সে? ভাবনাকে মাধুর্য ভাবছে নাকি মাধুর্য ভাবনা? যদিও ঘুরেফিরে দুটো বাক্য একই সঙ্গে জুড়ে যাচ্ছে সেটা আন্দাজ করতে পারছে অনুভব। নিজেকেই যখন সে বুঝতে পারছে না তখন ঝড়ের গতিতে ঘর থেকে বেরিয়ে যায় অনুভব। কিছুক্ষণ দরজার দিকে তাকিয়ে থেকে নিজের আঘাত পাওয়া জায়গায় হাত বুলায় মাধুর্য। ক্লান্ত হয়ে পড়েছে সে। ক্লান্তির শ্বাস ছেড়ে স্থির হয়ে বসে থাকে মাধুর্য।
পায়ের ধুপধাপ শব্দ শুনে দেখে মাধুর্য এলিনাকে। এলিনা দ্রুত পায়ে এগিয়ে এসে বসে পড়ে মাধুর্যের কাছে। মিষ্টি হেসে সরু কন্ঠে বলে….
–এখন ঠিক আছো?”
–“হ্যাঁ। অনুভব কি চলে গেছেন?”
এলিনা পা তুলে বসে। গালে হাত দিয়ে বেখেয়ালি হয়ে বলে….
–“হ্যাঁ তা তো গিয়েছেন। যাওয়ার আগে কড়াভাবে বলে গিয়েছেন তোমার খেয়াল রাখতে। জানো তো উনাকে দ্বিতীয়বারের মতো কোনো মেয়ের জন্য এতো অস্থির আর এতো যত্নশীল হতে দেখছি।”
মাধুর্য উৎসুক হয়ে তাকায়। তীর্থের কাকে মতো চেয়ে বলে….
–“মানে?”
–“মানেটা হলো প্রিন্স তো সবসময় ডোন্ট কেয়ার ভাব নিয়ে থাকেন। কার কি আশেপাশে হলো কিছু যায় আসে না। অথচ উনি আবারও তোমার প্রতি এট্রাক্ট হচ্ছেন। ব্যাপারটা সত্যি বেশ কৌতুহলের।”
সবটা ভালোভাবে না শুনলেও ‘প্রিন্স’ শব্দটি বেশ তার কানে বেশ ভালোভাবে এসেছে। তার শরীর অজানা কারণে ঝাঁকুনি দিয়ে ওঠে। প্রিন্স শব্দটিকে ঘৃণা করে নাকি ভালোবাসে তা মাধুর্যের মনটাও বলতে পারে না। সে অতি আগ্রহের সঙ্গে বলে….
–“কি বললে তুমি? প্রিন্স বললে না অনুভবকে?”
এবার এলিনাও বিস্ফোরিত নয়নে তাকিয়ে থাকে। চোখ বুলিয়ে এপাশ-ওপাশ তাকায়। সে একটা বাহানা খুঁজছে। ঢোক গিলে বলে….
–“ইয়ে মানে, অনুভবকে তো প্রিন্সের মতো দেখতে। তাই মাঝে মাঝে প্রিন্সের সাথে তাকে গুলিয়ে ফেলি। হেহেহে।”
এলিনার কথাগুলো বেশ অবিশ্বাস্য হয়ে ঠেকে মাধুর্যের কাছে। তবুও তার অবিশ্বাস করার জায়গা নেই। হালকা জড়ো হাসি দিয়ে চুপ থাকে সে।
বেশ হাই স্পীডে গাড়ি চালাচ্ছে অনুভব। জঙ্গল পেরিয়ে হাই রোড ধরে আবারও একটা শুনশান রাস্তায় ঢুকে পড়ে গাড়ি নিয়ে। এদিক দিয়ে বাড়িতে দ্রুত পৌঁছাতে পারবে সে। নয়ত তার ড্যাড তাকে আবারও হাজারটা প্রশ্ন করবে। আর এতো প্রশ্ন বা কৈফিয়ত দিতে পছন্দ করে না অনুভব। তাই বাড়িতে ঝামেলা হওয়ার থেকে ভালো দ্রুত বাড়ি পৌঁছা। তার ওপর রাত গভীর যতই হচ্ছে ততই রক্তের প্রতি তৃষ্ণা বাড়ছে তার। এভাবে চলতে থাকলে হুট করেই কাউকে আক্রমণ করতে সময় লাগবে না অনুভবের। অস্থিরতায় শার্টের দুটো ওপরের বোতাম খুলে মুখ দিয়ে নিশ্বাস ফেলে ড্রাইভ করতে থাকে সে। কিছুদূর যেতেই সে লক্ষ্য করে কেউ একটা দৌড়ে আসছে। দূর থেকে দেখে একটা মেয়ে মনে হচ্ছে। বেশ ভাবনাচিন্তা করে গাড়ি থামিয়ে দেয় অনুভব। ব্রেক কষতেই মেয়েটি এসে পড়ে তার গাড়ির সামনে। খানিকটা রাগ হয় অনুভব। গাড়ির দরজা খুলে বেরিয়ে এসে গাড়ির সামনের অংশে থাবা মেরে বলে ওঠে….
–“মরণের পাখনা গজিয়েছে? গাড়ির নিচে পড়তে একটু হলে। মরার জন্য আমার গাড়িই পেলে?”
মেয়েটা নিজের সামনে থাকা চুল পেছনে ঠেলে দিতেই ওর চোখমুখ স্পষ্ট হয়ে ওঠে। কবিতাকে দেখে ভ্রু কুঁচকে তাকায় অনুভব।
–“তুমি? এখানে এতো রাতে?”
কবিতার চোখমুখ ফ্যাকাশে হয়ে গিয়েছে। ও দ্রুত এসে অনুভবের পেছনে দাঁড়ায়। মানুষের গন্ধ পেয়ে মুখ খোলে অনুভব। ও নিজের আয়ত্তের বাইরে চলে আসছে। তৎক্ষনাৎ বন্ধ করে নিজের মুখ।
–“আমাকে সাহায্য করুন প্লিজ। আমি আমার মায়ের ঔষুধ নিতে বেরিয়েছিলাম। কিন্তু কোথা থেকে দুটো ছেলে আমার পিছু নেয়। ওদের উদ্দেশ্য ঠিক নয়।”
অনুভবের খানিকটা মায়া হয় কবিতার ভয়ে মাখা কথা শুনে। চোয়াল শক্ত করে চাপা সুরে বলে…
–“ছেলেগুলো কোথায়?”
–“সামনে।”
সামনে তাকায় অনুভব। দুটো ছেলে হন্তদন্ত হয়ে ছুটে আসছে। ভ্রু উঁচিয়ে হালকা ঠোঁট বাঁকা করে অনুভব। ঘাড় বাঁকিয়ে বলে….
–“চলে যাও এখান থেকে। আই প্রমিস, ওরা তোমার পিছু নিতে পারবে না।”
ভয়ে কাঁপা-কাঁপি করতে করতে তাকায় কবিতা। অনুভব এবার রেগে উঠে বলে….
–“চলে যাও বলেছি না।”
এক সেকেন্ডও না দাঁড়িয়ে এক মূহুর্তেই গায়েব হয়ে যায় কবিতা। অনুভব নিজের চোখের রঙ পাল্টায়। নিজের হিংস্র রুপ ধারণ করে সে। নিজের হাতের নখের দিকে তাকায় নখগুলো বেড়ে বড় বড় হয়ে ওঠে। হা করতেই পাশের দুটো দাত বড় হয়ে বেরিয়ে আসে। চোখের পলকে ছেলে দুটোর কাছে পৌঁছে গিয়ে ওদের গলা নিজের নখ বসায় অনুভব। কিছু বলার সুযোগ না দিয়ে হা করে দাঁত বসায় একজনের গলায়। তাদের চিৎকার অবধি চাপা পড়ে যায়। দাঁত উঠিয়ে গর্জন দিয়ে বলে….
–“আমরা রক্তের জন্য কোনো ভালো এবং সাধারণ মানুষের প্রাণ নিই না। এটা ভ্যাম্পায়ার রাজ্যের নিয়মনীতির বাইরে। এই নিয়মটা যে শুরু করে গেছে আমরা আজও তার নিয়ম মেনে আসছি। তোদের মতো জানোয়ারদের প্রাণ তো নেওয়ায় যায়।”
রাত প্রায় তিনটে। মাধুর্য নিজের ঘুমে মগ্ন হয়েছে কিছুক্ষণমাত্র। তার ঘরের জানালার কাঁচের লক খুলে গিয়ে জানালা ফাঁক হয়ে যায়। জানালাটা খোলা। কোনো গ্রীল নেই। সেখান দিয়ে ঢুকে আসে অনুভব। ওর হাতে সাদা ওড়না। সেই ওড়না যেটা ও নিজের প্রাসাদের বাইরে পেয়েছে। ঘরে ঢুকতেই নড়েচড়ে ওঠে মাধুর্য। ওর চোখমুখটা চাঁদের আলোয় স্নিগ্ধ হয়ে ওঠে। এই স্নিগ্ধ মাখা মুখ অনুভবের ইচ্ছে করে নিজের ঠোঁট দিয়ে ছুঁইয়ে দিতে। কিন্তু এটা কি আদোও ঠিক হবে? ওড়নাটা মাধুর্যেড পাশে রাখতেই ঘুমের ঘোরে অনুভবের হাত চেপে ধরে ফেলে মাধুর্য। প্রশান্তি মাখা হাসি দেয় ঘুমের মাঝে। এই প্রশান্তি মাখা হাসিতে একটু চমকায় অনুভব। কীসে এতো প্রশান্তি তার? অনুভবের হাত ধরে নাকি অনুভবের উপস্থিতি পেয়ে? নাকি দুটোই? এই #অপূর্ণ_প্রেমগাঁথায় পূর্ণতা মিলবে কি কখনো?
মাধুর্যের এলোমেলো চুলগুলো সরিয়ে দিতেই মাধুর্য নিজের ঠোঁট সরু করে অস্পষ্ট গলায় বলে….
–“এতোবছর পর পেয়েছি আবারও সেই স্পর্শ। সেই ঠোঁট দিয়ে স্পর্শ নেব না তা কি হয়? দিন ভালোবাসার পরশ।”
ফ্যালফ্যাল করে তাকায় অনুভব। ও কি জেগে আছে? কপালে কয়েকটা ভাঁজ ফেলে বলে….
–“তুমি কি জেগে আছো?”
মাধুর্য আবারও একই প্রলাপ বকে।
–“দিন ভালোবাসার পরশ।”
চলবে……
বি.দ্র. ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।