অপূর্ণ_প্রেমগাঁথা #The_Mysterious_Love #আনিশা_সাবিহা পর্ব ৪

0
891

#অপূর্ণ_প্রেমগাঁথা
#The_Mysterious_Love
#আনিশা_সাবিহা
পর্ব ৪
মাধুর্যের চোখজোড়া স্পর্শ করতেই দুই ধাপ পিছিয়ে যায় মাধুর্য। মেয়েটার চোখ জোড়ায় আলাদা মাদকতা বিরাজ করছে। যেই মাদকতা ছড়িয়ে পড়েছে অনুভবের নীল বর্ণের চোখের মাঝে। মাধুর্যের গলার হাড় বার বার উঁচু নিচু হচ্ছে। অচেনা যুবকটিকে দেখে ওর চোখ স্থির হয়ে গিয়েছে কেন? হার্টবিট জোড়ে জোড়ে লাফাচ্ছে যেন। তার ঠোঁটজোড়া শুকিয়ে এসেছে। দমকা হাওয়া দুজনকে ছুঁয়ে যেতেই হুঁশ ফিরে দুজনেরই। মাধুর্যকে আগামাথা পর্যবেক্ষণ করে নেয়। স্বাভাবিকের থেকে বড় চোখজোড়া, চোখের মনি ঘন কালো, চিকন গোলাপিনেশা ময় ঠোঁটজোড়া, উজ্জ্বল গায়ের রঙ যেই উজ্জ্বলতা ছড়িয়ে পড়ছে আশেপাশেও ভ্রুযুগল হালকা কুঁচকানো। পরনে মেয়েটির কালো রঙের থ্রিপিস যেটা যেন ওর জন্যই বানানো। এমন মোহময় মেয়ে যেন দুনিয়াতে নেই! অনুভব এমন মোহময় মেয়ে আরেকজনকে দেখেছিল সেটা ছিল তার প্রেয়সী! সেই প্রেয়সী যাকে মারার দায়ে সে অভিশপ্ত ভ্যাম্পায়ার রাজকুমারে পরিণত হয়েছে। ও তবে সেই?

মাধুর্যের কথায় বাস্তবে ফেরে অনুভব।
–“এভাবে রাস্তায় উম্মাদের মতো গাড়ি না চালালে হয় না? ঠিক আপনাদের মতো মানুষদের জন্যই আজ কত কত মানুষ আহত নিহত হচ্ছে। আর আপনারা? বড়লোক বলে কেউ আঙ্গুল উঁচিয়ে কথা বলবার সাহস অবধি পায় না।”
মাধুর্যের কথায় রাগ স্পষ্ট ফুটে উঠেছে। রোদের ঝলকানিতে গাল লাল হয়ে যাচ্ছে তার মুখ। অনুভবের শরীরও জ্বলছে তবে তাতে তার কোনো খেয়াল নেই। মাধুর্য রাস্তায় পড়ে থাকা ছাতা তুলে নেয়।
অনুভব নিজেকে ঝাঁকুনি দিয়ে স্বাভাবিক করে। আবারও তাকায় মাধুর্যের দিকে। এই মেয়েটা একে তো নিজেই রাস্তার মাঝখান দিয়ে হাঁটছিল তার ওপর সে অন্যকে জ্ঞান দিচ্ছে? অনুভব আবারও কিছু বলতে নেয় আবারও থেমে যায় মাধুর্যের কথায়।

–“বড়লোকের ছেলে বলে যা ইচ্ছে তাই করবে। মানে যা ইচ্ছে তাই। এজন্য বিরক্তি আর ঘৃণা আসে এদের প্রতি। বাবার টাকা আছে বলে মনে করে সব কিছু টাকা দিয়েই হয়ে যাবে।”
কথাগুলো মাধুর্য বিরবির করে বললেও অনুভব সবটা শুনে নেয়। কারণ ওর শ্রবণ শক্তি মানুষের মতো নয়। ধীরে বলা কথাগুলোও ওর কানে স্পষ্ট ভেসে আসে। যদিও এতো বছর ঘুমন্ত থাকায় ওর শক্তি অচল হয়ে পড়েছে। নিজের রক্তের তৃষ্ণা আসলে কনট্রোলে রাখতে কষ্ট হয়।
মাধুর্যের কথা শুনে কপালে ভাঁজ পড়ে অনুভবের। মাধুর্য দাঁড়াতেই অনুভব ঝড়ের গতিতে মাধুর্যের কাছে গিয়ে দাঁড়ায়। সেকেন্ডেই অচেনা যুবকটিকে এতো কাছে দেখে মাধুর্যের অস্বস্তি হচ্ছে সেটা মটেও নয়। শুধু অবাক হয়ে তাকিয়ে আছে। চোখের পলকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে কি করে উনি এলেন? এটাই মাধুর্যের মনে ঘুরছে। অতঃপর সে ভেবে নিল সে তো নিজেও এমনটা পারে। যদিও এতোটা দ্রুত নয়। কিন্তু অন্যদের থেকে বেশ দ্রুত।

–“হোয়াট ডিড ইউ সে?”
মাধুর্য চোখমুখ জড়িয়ে তাকায়। মাধুর্য তো কিছু বলেনি? যা বলেছে ধীরে বলেছে তাহলে? বোকা বোকা সেজে বলে….
–“নাথিং! সরুন আমার ক্লাসে দেরি হয়ে যাচ্ছে।”
অনুভব একচুলও সরে না। ওর একদিকে রাগ লাগছে আরেকদিকে অন্যরকম অনুভূতি হচ্ছে। সেই চেনাজানা অনুভূতি আবারও কেন ঢেউ খেলছে অনুভবের মনে? এই অচেনা মেয়েটির আড়ালেই কি রয়েছে সেই চেনা মুখ? অনুভব নিজেকে সামলে বলে…..
–“তুমি বলেছো, বড়লোকের ছেলে বলে যা ইচ্ছে করতে পারি, টাকা দিয়ে সব কিনে নিতে পারি তোমার ঘৃণা আর বিরক্তি আসে আমাদের প্রতি ব্লা ব্লা ব্লা! এগুলো কেন বললে? এক্সকিউজ মি! আমি তোমার রাস্তায় আসিনি। তুমি আমার রাস্তায় এসেছো আর আমার রেস….. ”
কথাটা বলে থেমে যায় অনুভব। ও তো রেসের কথা ভুলেই গেছিল। তখনই হৈ-হুল্লোড়ের আওয়াজ এলো তার কানে। অনুভব বুঝতে পারল তার বিপক্ষ দল জিতে গেছে। পাশের গাছে সজোরে ঘুষি দিয়ে সে বলে ওঠে….
–“ড্যাম ইট।”

মাধুর্য অনুভবের হাত স্পর্শ করতে গিয়েও থেমে গেল। অনুভব নিজের হাতে ইচ্ছে করে আঘাত করার জন্য মাধুর্য দুই সেকেন্ডের জন্য উতলা হয়ে পড়েছিল। নিজের ওপর বিরক্ত হয়ে নিজের মাথাতেই টোকা মারে মাধুর্য। এসব কি হচ্ছে তার সাথে? এই লোকটার সামনে থাকলে না জানি আর কত কি হবে! এই ভেবে দ্রুত গতিতে অনুভবকে পাশ কাটিয়ে অনেকটা দূরে চলে আসে মাত্র এক সেকেন্ডেই। মাধুর্যের চলার গতি দেখে অনুভব কিছুক্ষণের জন্য বিস্মিত হয়ে যায়। মাথাটা বাঁকা করে পেছন দিকে তাকায় সে। মাধুর্যের চলার গতি ভালোভাবে লক্ষ্য করে। অনুভবের চোখে আরেকজনের চলার প্রতিচ্ছবিও ভেসে ওঠে। চোখ বন্ধ করে ফেলে সে। অতঃপর নিজেও তাড়াতাড়ি চোখের পলক ফেলতেই মাধুর্যের সামনে গিয়ে উপস্থিত হয়। হকচকিয়ে ওঠে মাধুর্য।
–“আ…আপনি?”

অনুভব মাধুর্যের হাত ধরে উঁচু করে। হা করে তাকায় মাধুর্য। দুজনের শরীরের শিরার মাঝে যেন বিদ্যুৎ বয়ে যায়। মাধুর্য আর অনুভব কিছুটা দূরে ছিটকে যায়। দুজন চোখজোড়া বড় বড় করে দুজনের দিকে তাকায়। এটা কি ছিল? অনুভব নিজের হাতের দিকে তাকায় সে হাত দিয়ে মাধুর্যের হাত স্পর্শ করেছিল সে। এমনটা হওয়ার কারণ উপলব্ধির বাইরে দুজনেরই। মাধুর্য চোখ নামিয়ে নিতেই অনুভব নিজেকে আগের মতো করার চেষ্টা করে। মাধুর্যের সামনে গিয়ে চুটকি বাজাতেই আবারও নিজের ডাগরডাগর চোখ দিয়ে চোখ রাঙায় মাধুর্য।
–“তুমি কি ভেবেছিলে? তোমাকে আমি এমনি এমনি ছেড়ে দেব? নো নেভার। তোমার জন্য রেস হেরে গেলাম আমি। এর দাম না চুকিয়ে কোথায় যাচ্ছো?”
–“এই মেইন রাস্তায় আপনারা রেস করছিলেন? সিরিয়াসলি? আপনারা জানেন এদিক দিয়ে কত মানুষ চলাফেরা করে? মানুষের সমস্যা বোঝার ক্ষমতা তো নেই আপনাদের। আপনাকে কেনই বা বলছি এসব? আপনি জাস্ট একটা অসহ্যকর বিরক্তিকর লোক।”

মাধুর্য যেতে নিলে আবারও ওর হাত ধরে টান দেয় অনুভব নিজের দিকে। সামলাতে না পেরে মাধুর্য অনুভবের গা ঘেঁষে কাছাকাছি গিয়ে পড়ে। আর এগোতে চায় না সে। তাই অনুভবের বুকে হাত রাখে। দুজনের ভেতরে আবারও অদ্ভুত তরঙ্গ বয়ে যায়। মাধুর্য চোখ তুলে তাকায়। অনুভব স্থির চোখে মাধুর্যকে দেখছে। ওর ভেতরে বিদ্যুৎ বইছে তবুও ছাড়ছে না মাধুর্যকে। ও দেখতে চায় মেয়েটা ওর ওপরে কতটা প্রভাব ফেলতে পারে। আসলে কে এই মেয়েটা? হঠাৎ অনুভব ফুঁ দেয় মাধুর্যের মুখে। সামান্য ফুঁ মেয়েটার চোখমুখে দমকা হাওয়ার মতো লেগে যায়। উড়ে অন্যপাশে চলে যায় ওর আশেপাশের চুল।
–” মনে রেখো, পৃথিবীটা গোল। যেখান থেকেই পথ শুরু করো না কেন শেষমেশ গোলকধাঁধার মতো একই জায়গায়ই পৌঁছাবে তুমি। তাই কারো সাথে যদি এক্সিডেন্টলি বা কোয়েনসিডেন্টলি দেখা হয় আর ভাগ্যে যদি লিখা থাকে তবে একবার নয় বারবার দেখা হবে তোমার সাথে। আর আজ আমাকে রেসে হারিয়ে দেওয়ার মূল্য না হয় তখনই উশুল করে নেব।”

নিঃশব্দে হেঁসে অনুভব মাধুর্যের হাত ছেড়ে দেয়। ফ্যালফ্যাল করে চেয়েই থাকে মাধুর্য। লোকটার কথার আগামাথা কিছুই খুঁজে পায়নি সে। ও যেন কোনো ঘোরের মধ্যে চলে গেছে। অনুভব নিজের সানগ্লাস বের করে পড়ে নেয়। অন্যদিকে ফিরে হাঁটতে লাগে। কিন্তু পা যেন মোটেই চলছে না তার। মনে হচ্ছে তার যাওয়া উচিত নয়। কোনো মহামূল্যবান জিনিস ও ফেলে যাচ্ছে। নিজেকে মনস্থির করে হাঁটতেই থাকে সে।
মাধুর্যও মানুষটার দিকে তাকিয়ে উল্টো দিকে হাঁটতে শুরু করে। ও এখনো ঘোরের মাঝে রয়েছে। এই ঘোর কি করে কাটাবে সে? তবে কি মানুষটির কথা অনুযায়ী এই গোল দুনিয়ায় আবার মুখোমুখি হতে হবে উনার সামনে? কে জানে! দ্রুত দেরি না করে তাড়াতাড়ি যেতে থাকে ইউনিভার্সিটির উদ্দেশ্যে।

রেস শেষ। জিতেছে অনুভবের বিপরীত পক্ষ। রাগে মুখ লাল বর্ণে পরিণত হয়েছে তার। কিছু বলতেও পারছে না। মোটা ইউকালেক্টার গাছে হাত দিয়ে আঁকড়ে ধরে দাঁড়িয়ে আছে সে। নিজের ড্যাডির থেকে লুকিয়ে আড়ালে বেরিয়েছিল শুধুমাত্র রেস টার জেতার জন্য। কে জানতো এমনটা হবে? অনুভবের বন্ধুদের মুখও থমথমে।
–“খুব তো কনফিডেন্স নিয়ে বলেছিলি অনুভব সিনহা যে তুই জিতবি। কিন্তু কি হলো? আমাদের রাজ জিতে গেল। শুধুমাত্র মুখে বললেই হয় না। কাজে করে দেখাতে হয়।”
অনুভবের রাগটা দ্বিগুন বেড়ে গেল। তার বন্ধুরা ভয়ে দাঁতে দাঁত চেপে দাঁড়িয়ে আছে। আর একটু এদিক ওদিক হলে নিজের আসল ও হিংস্র রুপ বের করতে একটুও দ্বিধাবোধ করবে না অনুভব। সেই ভয়েই আছে তারা। অনুভব ওদের দিকে ফিরে অদ্ভুত গম্ভীর গলায় বলে…..
–“একটা মেয়ে এসেছিল আমার কারের সামনে। ও তো এদিক দিয়েই মেবি গেছে। তোরা সবাই দেখেছিস নিশ্চয়। তবুও এতো বড় বড় কথা বলিস কোন সাহসে?”

জোহান কিছু একটা মনে করে বলে….
–“হ্যাঁ হ্যাঁ গিয়েছিল আমরা দেখেছি। তাই না রিহান?”
রিহানও মাথা নাড়ায়। কিন্তু বিপরীত পক্ষ তা সত্ত্বেও অনুভবের মজা উড়াতে ব্যস্ত হয়ে পড়ে। এই দুটো সার্কেলের শত্রুতা অনেক দিন থেকেই লেগে আছে। দুই পক্ষের মধ্যে সবসময় কম্পিটিশন চলতে থাকে। অনুভব নিজের রাগ দমাতে পারে না। বড় বড় পায়ের ধাপ ফেলে এগিয়ে যায় রাজের দিকে। জোহান রিহানকে ইশারা করে অনুভবকে শান্ত করার জন্য। কিন্তু রিহান মাথা এপাশ-ওপাশ নাড়িয়ে ভয়াতুর দৃষ্টিতে তাকায়। এখন অনুভবের সামনাসামনি হওয়া মানে নিজের বলি দেওয়া। শেষমেশ দেখা যাবে রিহানের সমস্ত রক্ত খেয়ে ফেলল অনুভব। অকালে মরার শখ নেই তার।

সরাসরি গিয়ে রাজের জ্যাকেটের কলার চেপে ধরতে এক মূহুর্তও লাগায় না অনুভব। কলার ধরেই হালকা উঁচু করে রাজকে। রাজ নিজেকে ছাড়ানোর চেষ্টা করতে শুরু করে। অনুভব গাম্ভীর্যের সঙ্গে বলে ওঠে….
–“হারতে শিখিনি আমি। আর তোরা যেই জেতার কারণে ঠাট্টা করছিস সেটা মোটেও তোদের জেতা নয়। কারণ আমি একটা মেয়েকে দেখে গাড়ি থামিয়ে দিয়েছিলাম। বুকের পাটা থাকে তো লিগ্যালি জিতে দেখা। যখন গো হারান হেরে যাবি তখন দেখব তোদের এই স্টুপিড হাসি কোথায় যায়।”
জ্যাকেটের কলার ছেড়ে রাজকে ধাক্কা দেয় অনুভব। কারো সঙ্গে কোনোরকম কথা না বলে বেরিয়ে যায় সেখান থেকে গাড়ি নিয়ে। মাধুর্যের ওপর ভীষণ রাগ হচ্ছে তার।

বাড়িতে আসবার পরেই পায়ের বুট জুতো দুদিকে দুটো ফেলে দিয়ে লিভিং রুমের সোফার ওপর জ্যাকেট ছুঁড়ে মারে অনুভব। যতই মেজাজ ভালো করতে চাচ্ছে ততই যেন ভেতরটা তিক্ততায় ভরে উঠছে। কারণটা মাধুর্য। এতোকিছুর পরেও ঘুরেফিরে তার মাধুর্যের কথায় মনে পড়ছে। সোফার হাতল জোরে চেপে ধরে ফ্লোরের দিকে তাকিয়ে থেকে আবারও মাধুর্যকে নিজের বলা কথাগুলো মনে করতে থাকে অনুভব। আনমনে বলে ওঠে…..
–“জানি না তোমাকে কেন ওসব কথা বললাম আমি। আমি তো বলতে চাইনি ওসব কথা। কিন্তু মনে হয়েছিল তোমাকে কথাগুলো বলা উচিত। এতোটুকু বুঝেছি কিছু একটা তোমার মধ্যে। কি আছে সেটা আমি জেনে ছাড়ব।”
–“কোথায় কি আছে?”
পরিচিত গলা শুনে ভাবনার ফোড়ন কেটে বেরিয়ে আসে অনুভব। হাসিবিহীন মুখে ঘুরে দাঁড়ায় সে। একরাশ বিরক্তি ঘিরে ধরে তাকে। চিকন আঁকাবাঁকা সিঁড়ি দিয়ে নামছেন প্রলয়। অনুভব জানে এখন তাকে হাজারটা প্রশ্ন করা হবে। তাই সেখানে থাকতে চায় না সে। প্রলয় নামতেই অনুভব সিঁড়ির দিকে এগোয়। কিন্তু বাঁধ সাধেন প্রলয়।

–“তোকে বলেছিলাম বাইরে যাস না। রোদের মধ্যে তো আরো যাওয়া বারণ। জন্ম থেকে কি প্রতিজ্ঞা করেছিস নিজের ড্যাডের কথা কানে অবধি তুলবি না? তোর মা যুদ্ধে আহত হওয়ার পর তোর ভালোমন্দ আমাকে বুঝতে দিবি না? কেন বাইরে গেছিলি বল।”
ধমকের সুরে কথাগুলো বলেন প্রলয়। অনুভবের মোটেও পছন্দ নয় ধমকানো সুর। সে যেই হোক। তবুও দাঁতে দাঁত চেপে বলে….
–“আমি বাইরে গিয়েছিলাম। আজকে একটা রেস ছিল সেটাতে গিয়েছিলাম।”
–“আমার কথা ভালোভাবে শোন অনুভব। পুরো ৪৯ বছর পর তোর জীবন থেমে ছিল। তোর জীবনের না সময় এগিয়েছে আর না তুই এগোতে পেরেছিস। এতোদিন ভাবনাকে মারার অভিশাপে অভিশপ্ত ছিলি তুই। যার অভিশাপের রেশ কাটতে এখনো সময় লাগবে।”

হুট করে অনুভবের হৃদয়ে দহন বাড়তে শুরু করে। এখনো তাকে এসব শুনতে হয় তার প্রেয়সী ভাবনাকে নিয়ে। চোয়াল শক্ত করে বলে….
–“আমি ভাবনাকে মারিনি, মারিনি, মারিনি। এটা অলরেডি অনেক বার বলে ফেলেছি। আর এককথা বার বার বলব না আমি।”
–“তাহলে কেন তুমি সেই শাস্তি মাথা পেতে নিয়েছো?”
প্রনয়ের গলা পেয়ে প্রনয়ের দিকে একপলক তাকায় অনুভব। একটা শ্বাস নিয়ে বলে…..
–“কারণ আমার বেঁচে থাকার ইচ্ছে মরে গিয়েছিল তখন। কি করতাম আমি বেঁচে থেকে? আর আমি ভাবনাকে মারিনি সেটা একদিন না একদিম ঠিক প্রমাণ হয়ে আসবে। এখন শুধু ওকে নতুন খোঁজার পালা। কতদিন পালিয়ে বেরাবে আমার থেকে। ধরা দিতেই হবে ওকে। আমাদের #অপূর্ণ_প্রেমগাঁথা পূর্ণ করার জন্য।”

চলবে…..🍀🍀
বি.দ্র. আজকেও দিব না বলেছিলাম। কিন্তু ছোট্ট করে দিয়েই দিলাম😑😑। ভুল ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন।

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here