#পর্বঃ ৮+৯
#অবৈধ_বিয়ে
#Sabriha_Sadi
পর্ব : ৮
রাজ ঘরে ডুকে দেখে রানি ঔষধের বক্সে নিয়ে ঘাটাঘাটি করছে।
– কিছু খুঁজতেছো?
-…..
– কি হলে বলো আমাকে।
– এই নিন।
– ঔষধ কেন?
– খেয়ে নিন।
রানি রাজের মুখের সামনে পানি ধরল।
– নিন।
– এত যত্ন নিচ্ছো কেন?
– আমি একটা মানুষ তাই।
– কি?
– বললাম আমি একটা মানুষ। আর অন্য একটা মানুষের অসুস্থের সময় তার সেবাটা দরকার।
– ও।
-…….
তারপর দুজনেই চুপ।
এখন কথা হলো দুজন কোথায় থাকবে?
মানে এক সাথে থাকা তাদের সম্ভব না। দুজন এ বিছানায়? অসম্ভব।
– আমি কোথায় থাকব?
– মানুষ কোথায় থাকে?
– বিছানা।
– তাহলে জিজ্ঞেস করার কি আছে?
– আমি আপনি কি এক বিছানায় থাকব নাকি?
– হুম।
– কখনোই না।
– কেন?
– কেন মানে? আপনি জানেন না?
– আমি জানি। আর এটাও জানি তুমি আমার বিয়ে করা বউ।
– মুটেও না। এটাকে বিয়ে বলে না। এটা #অবৈধ_ বিয়ে।
এই #অবৈধ_বিয়ে কথাটা শুনলেই রাজের মাথাটা রাগে বিগড়ে যায়। ঠিক রাখতে পারে না নিজেকে।
– রানি। আমি তোমাকে মানা করেছি এটা বলতে।
– কেন? কেন বলব না আমি? শরীর জ্বলে? সত্যি বললে সবারই এমন হয়। আমি বলব। এটা অবৈধ বিয়ে।
রাজ আর নিজেকে সামলে রাখতে পারল। রানির চুলের মুটি ধরে রাজ তার রাগের বিজে ঠোঁট গুলি রানির মাঝে ডুবিয়ে দিল।
এটা রাজের ভালোবাসা নয়। ক্ষোপ প্রকাশ।
রানি চাইছে নিজেকে ছাড়াতে। কিন্তু পারছে না। একটা পুরুষ হিংস্র হয়ে গেলে তাকে থামানোটা অনেকটা কষ্টকর। তাই রানির সাথেও খুব স্বাভাবিক আচরণ হচ্ছে। রানির ইচ্ছে হচ্ছে এক ধাক্কা দিয়ে রাজ কে সরিয়ে দিতে। কিন্তু রানি রাজের শক্তির সাথে পেরে উঠছে না।
রাজ অনেকটা সময় রানির উপর নিজের ক্ষোপ প্রকাশ করে ছেড়ে দিল।
– ভুলেও আর ওই কথা তোমার মুখে এনো না। এর পর আরো খারাপ কিছু হয়ে যাবে।
রাজ কথাটা বলেই ঘটঘট করতে করতে বেলকুনিতে চলে গেল।
আর নিরুপায় রানি বিছানায় বসে কান্নায় ভেঙ্গে পড়ছে। ঠোঁট দুটিকে হাত দিয়ে মুছতে লাগল। ইচ্ছে হচ্ছে তার ঠোঁট দুটির অবস্থা ছিন্নভিন্ন করে দিতে।
কিন্তু এ দাগ আর স্পর্শ কি মুছা যায়?
রানি কান্না করতে করতে বিছানার উপর ঘুমিয়ে গেল।
রাজ অনেকক্ষণ পর ঘরে ডুকল। রানির দিকে তার চোখ গেল। ঠোঁট দুটি মেয়েটার লাল হয়ে আছে। রাজ ধীর পায়ে রানির কাছে গেল। রানির কপাল থেকে চুল গুলি সরিয়ে কপালে একটা চুমু দিল। মেয়েটাকে যে নিজের চেয়ে বেশি ভালোবাসে সে। কিন্তু ও এমন কেন করে? রাজের কষ্ট টা একটু বুঝার চেষ্টা করে কেন রানি?
রানির উপর চাদরটা দিয়ে রাজ সোফায় গিয়ে শোয়ে পড়ল।
সকালে,,
রানি ঘুম থেকে উঠে দেখে উনি সোফায় আছে। রানির একটু লাগল রাজকে এই ভাবে দেখে। কিন্তু কিছু না বলে সে ওয়াশরুমে ঢুকার জন্য ভিতরে গেল।
ভিতরে গিয়ে তার মনে হলো, ফ্রেশ হয়ে সে পড়বে টা কি? রানি যে এক কাপড়ে রাজের কাছে আছে।
এখন রানি কি করবে?
হাতমুখ ধোঁয়ে সে বেড়িয়ে এলো। এখানে কি করে থাকবে রানি? তার যে দরকারি কোন জিনিসই এখানে নেই। রানির রাগ টা ক্রমশ বাড়ছে।
আর রাগ করে না থেকে সে বেলকুনিতে গেল। সকালের ফুরফুরে বাতাসটা রানির মনটাকেও ফুরফুরে করে দিল।
এদিকে রাজ ঘুম থেকে উঠে দেখে রানি নেই।
সে বেলকুনিতে উুঁকি দিল। রানি তে বেলকুনিতেই দাঁড়িয়ে আছে। কত ইচ্ছে ছিল রানি কে নিয়ে। সকালে দুই মগ কপি নিয়ে রানি আর সে বেলকুনিতে দাঁড়িয়ে থাকবে। কখনো রানিকে সে পেছন থেকে কোমর পাশে একটু জড়িয়ে ধরে নিজের কাছে মিশাবে। কখনো বা দমকা হাওয়াতে রানির এলোমেলো চুল গুলি ঠিক করে রানির কপালে চুমু খাবে। তার স্বপ্ন গুলি কি স্বপ্নই থেকে যাবে নাকি বাস্তবে পরিণতি লাভ করে? তা রাজ জানে না।
রাজ রানির কাছে বেলকুনিতে গেল। হাল্কা বাতাসে রানির সামনের কিছু চুল উড়ছে। রাজের ইচ্ছে হচ্ছে রানির চুল গুলি আলতো হাতে সরিয়ে দিতে। কিন্তু এটা যে রাজের স্বপ্নে মানায়। বাস্তবে না
রাজ চাইলে এখনি তার অধিকার। একটা স্বামীর অধিকার ফলাতে। কিন্তু রাজ ইচ্ছে করেই রানির সাথে এটা করছে না। রানিকে সে সময় দিতে চায়। রাজ চায় রানিও তাকে ভালোবাসুক। দুজনে ভালোবেসে কাছে আসুক। কিন্তু সেটা হবে? রাজ কতদিনই বা পারবে নিজেকে সামলে রাখতে?
রানি যে পরিমাণ রাজকে রাগিয়ে দেয়। রাজ তো রাগ কে সামলাতে পারে না। রাগে সে নিজেকে সামলিয়ে রাখতে জানে না। রাগ উঠে গেলে সে কার সাথে কি করে নিজেই বুঝতে পারে না।
– কখন উঠেছ?
-…….
– কি হলো?
– সকালে।
– ঠিক আছে। রেডি হয়ে নাও।
– কেন?
– দরকার আছে।
– কিসের?
– বাহিরে যাবো।
– কিন্তু কেন।
– রানি প্লিজ এতো প্রশ্ন আমার ভালো লাগে না। রেডি হয়ে নাও। সকালের খাবার বাহিরে গিয়ে করব।
রাজ চলে গেল। রানি সেখানেই দাঁড়িয়ে আছে, যেখানে ছিল। রানির খুব রাগ হচ্ছে। সে চাইলেও রাজের উপর বেশি কিছু করতে পারছে না। কারণ রানিও জানে রাজের রাগ উঠে গেলে সর্বনাশ হয়ে যাবে। রাজের রাগ নিয়ে তার ধারণা আছে।
– তুমি রেডি?
– হুম। চলো।
– হুম।
রাজ রানি কে নিয়ে গাড়ি তে বসল। দুজনেই চুপচাপ। এক অজানা নিরবতা চলছে তাদের মাঝে।
রাজ আপন মনে গাড়ি চালাচ্ছে। আর রানি নিজের মতো করে বাহিরের পরিবেশ দেখছে।
– নামো।
– হুম।
– আগে কিছু গেয়ে নেই। পরে সব হবে।
– কিন্তু কেন এসেছেন।
– রানি এতো প্রশ্ন করা ভালো লাগে না। চলে।
– (রানি একটা মুখ ভেংচি কাটল।)
রাজ তা দেখে মুচকি মুচকি হেসে হাটা শুরু করল।
খাবার শেষ করে দুজন শপিং মলে ঢুকল।
– এখানে এলেন কেন?
– দরকার আছে নিশ্চয়। তাই এসেছি।
– হ্যাঁ কিন্তু কি দরকার।
-…….
– ঢং। (আবার একটা ভেংচি দিল)
তারা দুজনে একটা কাপড়ের দোকানে ডুকল।
– এখানে কেন?
– কাপড়ের দোকানে নিশ্চয়, কেউ খাবার খেতে আসে না।
– সেটা তো আমিও জানি।
– তাহলে বোকার মতো জিজ্ঞেস করছো কেন?
– কি বললেন আপনি আমাকে? আমি কি? আমাকে আপনি বো…….
– স্যার কি লাগবে? (দোকানের একটা লোক)
– উনার জন্যে কিছু শাড়ি আর ড্রেস দেখান।
– শিওর স্যার। চলুন আমার সাথে।
– হ্যাঁ চলুন।
রানি হা করে তাকিয়ে আছে রাজের দিকে। রাজ তার জন্যে কাপড় আর ড্রেস কিনতে এখানে এসেছে? লোকটার সব দিক দিয়ে নজর রাখতেও পারে।
– কি হলো আসবে? নাকি এখানেই বাড়বি ডল হয়ে দাঁড়িয়ে থাকবে।
-….. (মুখ ভেংচি দিল)
রাজ রানির কাপড় কিনা হয়ে গেলে তারা জুতার দোকানে ঢুকল। তারপর রানির আরো প্রয়োজনীয় জিনিস পত্র কিনতে লাগল।
রাজ অনেকক্ষণ দরে খেয়াল করছে একটা লোক রানির দিকে বারবার করে বাজে নজরে তাকিয়ে আছে। লোকটার চোখে আছে শুধু লোভ। একটা পাবলিক জায়গায় রাজ কোন রকম ঝামেলা করতে চায়ছে না। না হলে একে তো এখানেই….
রাজের এমন সময় একটা ফোন এলো। খুব জরুরি ফোন।
– রানি।
– জ্বি।
– তুমি এখানেই থাকবে। এক পা নড়বে না। আমি ওই দিকটাই আছি। একটু সাবধানে থেকো।
– হুম।
রাজ ফোনে কথা বলতে বলতে রানির আড়ালে চলে গেল।
আর এই সুযোগ টা বদমাইশ লোকটাই নিল।
চলবে…..
#অবৈধ_বিয়ে
#Sabriha_Sadi
পর্ব : ৯
লোকটা হুট করে রানির পাশে এসে দাঁড়িয়ে গেল।
রানি তখন কিছু দরকারি জিনিস দেখা নিয়ে ব্যস্ত। লোকটা এসে রানির দিকে এক নজরে তাকিয়ে আছে। আর রানি পিছন ফিরে নিজের কাছে আছে।
বাজে লোকটা যেই রানির কোমর ছুঁয়ে দিবে দিব। ঠিক তখনই রাজ এসে হাতটার কব্জি বরাবর ধরল।
লোকটা ব্যস্ত কোঁকাতে লাগল।
রানি পাশ ফিরে তাকিয়ে দেখে রাজ একটা লোকের হাত খুব শক্ত করে দরে আছে। রাজের চোখ দুটি খুব একটা ভালো না। সুবিধার না। রাগে লাল আগুনের টুকরো হয়ে আছে।
– কি করতে যাচ্ছিলি রে তুই?
– আহহহ। ছাড়ুন আমায়।
– ছাড়ব? উপর থেকে ছেড়ে দেই? তাহলে উপর থেকে নিচে পরে আবার সেই আবার সেই উপরেই যাবি।
কথাটা বলেই রাজ লোকটাকে মারতে শুরু করে। লোকটার একটাই বাক্য। ছাড়ুন আমাকে ছেড়ে দিন।
– তোর সাহস কি করে হলে রাজের বউয়ের গায়ে স্পর্শ করার। আরে এই জানোয়ারের বাচ্চা এই রকম জায়গায় এই সব না করে পতিতালয়ে যা না নিজে কে ঠিক না রাখতে পারলে। আরে এই সব মানুষের ক্ষতি না করে যারা তোকে কিছু টাকার বিনিময়ে সব দিয়ে দিবে তাদের কাছে যা না। শুধু শুধু নিরপরাধ মানুষের ক্ষতি করতে আসিস কেন নিজের জ্বালা মিটাতে। তোদের মতো অমানুষের জন্যে। দুনিয়াটা নিরাপদ নয়। অসুন্দর হয়ে পড়ছে।
রাজ খুবচেয়ে মারছে। মারার মাঝেই কথা গুলি বলছিল। ইতিমধ্যে লোক জড়ো হয়ে গেছে। তবে কেউ কিছু বলছে না।
কি বা বলবে? রাজের কথা গুলি তো আর মিথ্যে নয়। রাজ তো সত্যিই বলেছে। রাজের কথায় যুক্তি আছে। তাই কেউ কিছু না বলে চুপ করে দাঁড়িয়ে দেখছে।
এমন সময় ম্যানেজার আর কিছু লোক এসে রাজ কে অনেক চেষ্টার পর ছাড়াল।
– স্যার স্যার। প্লিজ ঠান্ডা হোন স্যার।
– কি ঠান্ডা হতে বলছেন আপনি?
– স্যার, জানি ম্যাডামের সাথে যা হয়েছে ভুল। অন্যায় স্যার। আমি পুলিশ কে ফোন করেছি, ওরা চলে আসছে। পুলিশ এই লোকটাকে দরে নিয়ে যাবে। স্যার আপনি প্লিজ শান্ত হোন।
ম্যানেজার আর কিছু লোক রাজ কে বুঝাতে আর থামাতে চেষ্টা করছে।
অন্য দিকে, রানি চুপ করেই দাঁড়িয়ে আছে। রাজ ব্যক্তিটার কূলকিনারা করতে পারছে না সে। লোকটা কে বুঝা মুশকিল। সেদিন রাতে তাকে তুলে আনা রাজ আর এই রাজ কি এক?
সেদিন রাতেও তো এই মানুষটাই রাত কাটানোর জন্যে একটা মেয়েকে রাস্তা থেকে তুলে আনিয়ে ছিল। সেটা রানিকে ইচ্ছে করে তুলে আনিয়ে ছিল নাকি ভুল ক্রমে হয়ে গেছে? সে দিনের রাত কাটানো মেয়েটা যদি রানি না হয়ে অন্য কেউ এক জন হতো, তাহলে এই রাজ কি তার কোন ক্ষতি করত?
সে তো এটাই জানে না, রাজ তাকে তুলে আনিয়েছিল নাকি ভুলবশত সে চলে গিয়েছিল সেখানে? কিন্তু রাজ চাইলে তো একটা বছর আগেই রানির সাথে এটা করতে পারত। কিন্তু তখন কেন করল?
ভুলবশত রানি হলেই বা কি? রাজ যদি অন্য একটা মেয়েকে তুলে আনত তাহলে তার সাথে তো খারাপ কিছুই ঘঠত। রাজ কেন এটা করতে গেল?
রানির মাঝে এই রকম অনেক প্রশ্ন ঘুরপাক খাচ্ছে। কিন্তু উত্তরের সন্ধান নেই একটারও।
হঠাৎ রানির ভাবনায় ফাটল ধরল, রাজের স্পর্শে। রানি একটু কেঁপে উঠল।
– ঠিক আছো তুমি? ভয় পেয়েছো খুব? আমি থাকতে তোমার কোন ভয় নেই। আমি থাকতে কেউ তোমার কিছু করতে পারবে না। কখনোই না।
-…..
– কি হলো বলো ঠিক আছো তুমি?
– হ্যাঁ। হুম। লোক টা কোথায়?
– অমানুষ টা কে পুলিশ হসপিটাল নিয়ে গেছে। চলো এখন।
রাজ তাকে কে নিজের এক হাতের আবদ্ধে করে নিয়ে হাটছে। এখন রাজ কে তার প্রায় ভয় হয়। রাগ উঠে গেলে মানুষটা কেমন যেন হিংস্র হয়ে যায়। এ দু দিনে রাজকে অনেকটা চিনা হয়ে গেছে। রাজ কে চেনা মানে তার রাগ টাকে চেনা। তাছাড়া অন্য কিছু রানির জানা নেই। তার সাথ রানি এক সাথে থাকবে কি করে? রাজ কে তো সে রীতিমতে ভয় পেয়ে যাচ্ছে।
বাসায়,
– তুমি ফ্রেশ হয়ে নাও।
-…
– ফ্রেশ হয়ে আমার জন্যে এক কাপ কফি বানিয়ে দাও তো। মাথাটা খুব ধড়েছে।
– হুম।
রানি আর কিছু না বলে একটা ড্রেস নিয়ে ওয়াশরুমে চলে গেল।
রাজ নিজের ল্যাপটপ নিয়ে কি যেন করছিল। রানি ওয়াশরুম থেকে বের হলো। রাজ রানির দিকে তাকাতেই হা হয়ে আছে। রানি কে যে মেরুনপরী লাগছে।
মেরুন কালারের ড্রেসটাতে সাদা রানিকে টুকটুক লাগছে। তার উপর লম্বা চুল গুলি কোমর পর্যন্ত পরে আছে। বিজে চুল থেকে টপটপ করে পানি পড়ছে। রাজ রানির ঘোর আছে। রানি তাকে দেখে একটু ভয় পাচ্ছে।
একি রাজ তো তার দিকেই আসছে।
রাজ আস্তে আস্তে পায়ে রানির দিকে এগিয়ে গেল। রানিকে ছুঁয়ে দিতে যে তার বড্ড ইচ্ছে হচ্ছে।
রাজ চুপচাপ পায়ের রানির অতি নিকটে চলে গেল। ঘাড়ের এক পাশের চুল গুলি নিজের হাতে নিল। টুপটুপ করে চুল থেকে পড়া পানি রাজ নিজের হাতে নিয়ে নিল।
রানির মনের ভয় টা বাড়তে থাকল।
রাজ রানির চুল গুলি কানের পাশে গুঁজে দিল। তার পর গালের এক পাশে রাজ নিজের হাত লাগল। রাজ নিজে কে একটু একটু করে রানির কাছে নিয়ে যেতে লাগল।
– আআপপনার কফি বানাতে হবে না? সরুন, কফি বানিয়ে নিয়ে আসি।
রাজের মাঝে একটা রাগ চলে এলো। রাজ রানির থেকে একটু সরে গেল। রানি এক দৌড়ে ঘর থেকে বেড়িয়ে রান্নাঘরে চলে গেল।
বুকের ভিতরটা এখন ধকধক করছে। চোখ গুলি এখনো ঝাপসা লাগছে। এমন মানুষের সাথে এ জায়গায় থাকবে কি করে একটা মানুষ? রানির ভয় হচ্ছে। শরীর টাও কাঁপছে। কি করবে সে? কি করার আছে তার? নিজের বাবাও তাকে ভুল বুঝে সরিয়ে দিয়েছে। রানির যে কিছু করার নেই।
রানি কফি হাতে নিয়ে কাঁপা কাঁপা হাতে রাজের কাছে গেল। রাজের কাছে যেতেও তার এখন ভয় হয়।
– আপনার কফি।
– হুম।
রাজ ল্যাপটপ থেকে চোখ সরিয়ে রানির দিকে তাকাল।
– আজব এত হাত কাঁপছে কেন তোমার? কিছু হয়েছে।
– কই না তো। আপনি কাজ করুন আমি যাই।
– রানি।
-…..
– রানি তুমি কি আমাকে ভয় পাচ্ছো?
-…
– রানি প্লিজ এই ভাবে থেকো না। দুটো মানুষ এই ভাবে এক সাথে এক ঘরে থাকতে পারে না।
– আমি আপনার সাথে থাকতে চাই না। কথাটা বলার সাহস তার নেই। তাই রানি বলতে চেয়েও পারছে না।
– কি হলো রানি? বলছো না কেন?
– হুম।
– রানি তুমি এই ভাবে নিজেকে আমার কাছ থেকে কেন দূরে সরিয়ে রাখছ?
– না। মানে..
– রানি তুমি জানে আমি তোমাকে ভালোবাসি। নিজেকে আমার কাছ থেকে এই ভাবে কেন দূরে রাখো?
– আমি চাই না তাই।
– কি বললে??
রাজ রানির একটু কাছে আসল।
– কি বললে তুমি?
রানি কিছু না বলেই দৌড়ে পাশের রুমে গিয়ে দরজাটা বন্ধ করে দিল।
– রানি কি হলো? দরজা খুলো।
-……
– রানি দেখো প্লিজ দরজা খুলো। তুমি জানো আমি দরজা ভেঙ্গে ঘরে ডুকতে পারি। রানি দরজা খুলো।
– কেনো?
– দরজা কেন বন্ধ করলে?
– আপনার কি?
– তুমি ভয় পাচ্ছো?
-…
– ঠিক আছে। তবে এটা মনে রেখো, আমার থেকে দূরে থাকতে তুমি পারবে না। আমি নিজেই থাকতে দিবো না।
রাজ চলে এলো। দুপুরে খাওয়া হয় নি। বিকেল হয়ে এসছে। রানি এখনো দরজার ওপাড়েই আছে।
– রানি দরজা খুলো। রানি।
-…
– রানি বিকেল হয়েছে। প্লিজ লক্ষ্মী টা দরজা খুলো। কিছু তো করে খাওয়াবে।
-…..
– রানি। রানি। প্লিজ দরজাটা খুলো।
-……..
– রানি? রানি। এই রানি??
না। কিছু তেই রানি দরজা খুলছে না। এখন তে রাজের ভয় হতে শুরু করল। রানি দরজার ওপাড়ে এখনো কি করছে?
“দুটো মানুষ এক ঘরে। শুধু দরজার ওপাড়ে।”
রানি এখনো দরজা খুলছে না কেন। সে কেন নিজেকে দরজার ওপাড়ে রেখেছে? রানি নিজের কোন কিছু করে বসেনি তো? নিজের ক্ষতি করেনি তো দরজার ওপাড় থেকে? রাজ আর ভাবতে পারছে না। চিন্তার পরিমাণ টা বাড়তেই থাকছে।
চলবে….