শ্রেয়সী লেখাঃKhayrun Nessa Ripa পর্বঃ৩০

0
419

শ্রেয়সী
লেখাঃKhayrun Nessa Ripa
পর্বঃ৩০

শিশির সকালবেলা ঘুম থেকে উঠেই তাড়াতাড়ি নাস্তা তৈরী করলো। সকাল আটটায় ক্লাস। বিন্দু তখনও বিছানায় পরে পরে ঘুমাচ্ছে। সারাটা রাতই মরার মতো ঘুমিয়েছিলো। কখন যে ঘুম ভাঙবে! শিশির কোনোরকম একটা পরটা আর ডিমভাজা খেয়েই রুমে এসে পরলো। বিন্দু তখনও খাটের মাঝখানে হাত-পা ছড়িয়ে ঘুমিয়ে আছে। শিশির বিন্দুর কপলাে হাত দিয়ে কয়েকবার ডাকলো। প্রত্যুত্তরে বিন্দু শুধু, হুঁ, হুঁ করলো। শিশির একটা ছোট্ট কাগজে কয়েকটা লাইন লিখে দিয়ে দরজাটা বাহির থেকে লক করে স্কুলে চলে গেল। ঘড়িতে যখন এগারোটার ঘণ্টা বাজলো। বিন্দু আড়মোড়া ভেঙে এক পলক দেয়াল ঘড়িটার দিকে তাকালো। একরকম লাফিয়ে বিছানায় উঠে বসলো। মাথাটা ভিষণভাবে ঘুরছে। শরীরটাতেও কেমন যেন মৃদু ব্যথা অনুভব করছে। হয়তো বেশি ঘুমিয়েছে সেই জন্যই এরকম লাগছে। হঠাৎই একবার নিজের দিকে রহস্যময় ভঙিতে তাকলো বিন্দু। নাহ্ সবই তো ঠিক আছে। ওয়াশরুমে যেতে গিয়ে থমকে দাঁড়ালো বিন্দু। খাটের পাশে বালিশটার কাছে কলম দিয়ে চাপা দেওয়া একটা কাগজ দেখা যাচ্ছে। কৌতুহল আটকে রাখতে পারলো না বিন্দু। এগিয়ে এসে কাগজটা খুললো।
“ঘুম ভাঙলে আগে শাওয়ারটা সেরে নিও। ডাইনিংয়ে পরটা,ভাজি আর ডিমের অমলেট রাখা আছে খেয়ে নিও। আর দুপুরে কিছু রান্না করতে হবে না। আমি হোটেল থেকে নিয়ে আসবো।”
বিন্দু কিছুটা অবাক হলো ছোট কাগজটায় লেখা দু’টো লাইন পড়ে। পরক্ষণেই ব্যাপারটা স্বাভাবিকভাবে নিয়ে আলমারী থেকে একটা শাড়ি বের করলো। আজ কেন যেন শাড়ি পরতে ইচ্ছে করছে। গোসল সেরে এসে ড্রেসিং টেবিলের আয়নার সামনে বসে চুলগুলো আঁচড়াচ্ছে বিন্দু। তখনই ফোনে শিশিরের কল আসলো।
–হ্যাঁ বলুন?”
–কী করছো?”
–চুল আঁচড়াচ্ছি।”
–কখন উঠেছো?”
–এইতো কিছুক্ষণ আগে।”
–শাওয়ার নিয়েছো?”
বিন্দু কিছুটা বিরক্ত ভঙ্গিতে বললো,
–হুঁ।”
–ওহ্। তাহলে এবার খেয়ে নাও। কোনো কাজ করা লাগবে না। বিশ্রাম নাও।”
–একটা কথা ছিলো।”
–বলো?”
–আজ হঠাৎ সকালে শাওয়ার নেওয়ার জন্য উঠে পরলেন কেন?”
শিশির কোনোরকম ঢোক গিলে বললো,
–কাল রাতে গরমে দেখেছিলাম ঠিক মতো ঘুমাতে পারোনি৷ তাই বলছি সকাল সকাল শাওয়ার নিতে যাতে শরীরটা ভালো লাগে।”
বিন্দু যেন এরকম একটা উত্তর আশা করেনি৷ কিছুটা নিরাশ হয়েছে। কারণ গতকাল রাতে সে গভীর ঘুমে আচ্ছন্ন ছিলো এতটুকু ঠিক মনে পরছে। এর বাহিরে কিছু করেছে কি না সেটা মনে করতে পারছে না। যদিও ঘুমরে ঘোরে বাজে বকার অভ্যেস তার নেই৷ তবুও এখন কথা বাড়াতে ইচ্ছে করছে না। দু’চোখের পাতা বুঝে আসছে। ঢুলুঢুলু হয়ে চেয়ারে বসে আছে। হাত-পায়ে যেন একটুও শক্তি পাচ্ছে নাহ্। ফোনটা বোধহয় এখনি হাত থেকে ফসকে যাবে। বিন্দু নিরাশ ভঙ্গিতে বললো,
–ওহ্।”
–হুম৷ এখন রাখছি আমি ক্লাসে আছি।”
–হুঁ।”
কেউ যেন এতক্ষণ শিশিরের গলা চেপে ধরেছিলো৷ প্রাণটা বোধহয় আর একটু হলেই আকাশে উড়াল দিতো। একটা স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে স্কুলের বারান্দা ছেড়ে ক্লাসে ঢুকলো। বিন্দু একরকম মাতাল করা মানুষের মতো ডাইনিং টেবিলে গিয়ে বসলো। কোনোরকম একটা পরটা খেয়ে এসেই আবার শুয়ে পড়লো। সত্যিই ঘুমের মতো শান্তি বোধহয় পৃথিবীতে আর কিছু নেই। ঘুম হচ্ছে একমাত্র শান্তির ঔষধ। কোনো চিন্তা নেই, শোক নেই সারাক্ষণ শুধু আরাম আর আরাম!

স্যরি ছোট হয়ে গেছে😐।

চলবে,,,,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here