#তিমিরে_ফোটা_গোলাপ
পর্ব–৬২
Writer তানিয়া শেখ
আন্দ্রেইর হাত থেকে প্রাণে বেঁচে যাওয়া যুবক স্থানীয় একটি সরাইখানায় বসে বসে মদ গিলছে। পুরো একটা দিন কেটে গেল। এখনও ওর বিশ্বাস হচ্ছে না নিকোলাস ওকে বাঁচিয়ে দিয়েছে। আততায়ী জেনেও বাঁচিয়ে দিয়েছে! কেন যেন ভয় করছে ওর। প্রতি মুহূর্তে এখন মৃত্যু ভয়ে ভীত ও।সাক্ষাৎ মৃত্যুর মুখ থেকে ফিরে এসে প্রথমে মনিবের সাথে যোগাযোগের চেষ্টা করে। মনিব সরাসরি দেখা করেন না। তার এবং মনিবের মাঝে তৃতীয়, চতুর্থ পক্ষ থাকে। সেই তৃতীয়, চতুর্থপক্ষের দেখা এই সরাইখানায় এলেই মেলে। এদের একজন বলেছে মনিব শীঘ্রই ওর সাথে দেখা করবে, তবে নির্দিষ্ট দিন দেয়নি। এর অর্থ হলো যুবককে প্রতিদিনই সন্ধ্যার পর সরাইখানায় থাকতে হবে। মনিব খুব সাবধানী লোক। যখন তখন হাজির হোন না তিনি। যুবকের ভাগ্য ভালো থাকলে আজও দেখা হয়ে যেতে পারে। হাতের মদের বোতলটার এক তৃতীয়াংশ খালি হয়ে গেল। মনিবের সামনে বসলে একটু আদব সহবতের প্রয়োজন পড়ে। প্রবল ইচ্ছে থাকা স্বত্বেও মদের বোতলটা ঠেলে পাশে রাখল। পুরোটা না খেয়েও নেশা বেজায় চড়ে গেছে তার। চোখের পাতা দুটো ঢুলছে। সরাইখানায় চোখ বুলিয়ে নিলো। যুদ্ধের সময়েও এখানে বেশ ভিড়। মদের নেশা যুদ্ধের ভয়াবহতাকেও বুড়ো আঙুল দেখিয়ে দেয়৷ বাইরের রাস্তা অবশ্য থমথমে। অনেকক্ষণ তাকালেও একটা মানুষ তো দূরের কুকুরও চোখে পড়ে না। রেডিয়োতে যুদ্ধের খবরের ফাঁকে ফাঁকে মৃদু আওয়াজে গান বাজছে।
যুবকের খিদে পেল। বাড়ি থেকে না খেয়েই বেরিয়েছে। মনিবের তরফ থেকে মদ কেউ একজন দিয়ে যায়। কিন্তু খাবারটা না চাইলে দেয় না। মনে মনে এইজন্য ভীষণ অশ্লীল একটা গালি দিলো লোকগুলোকে। গুপ্তচরবৃত্তি এবং মাঝে সাঝে টুকটাক খুনখারাবি করা তার পেশা। মনিবের কথাতেই এসব সে করে। বিনিময়ে মোটা অর্থ পায়। খাবারের জন্য দু’বার হাঁক দিতে একজন রসুইঘর থেকে বিরক্ত মুখে বেরিয়ে এলো। হাতের প্লেটে একটুকরো হাঁসের পোড়া রান আর দুটো পোড়া আলু। যুবক গপাগপ খেয়ে নিলো।
রাত অনেক হয়েছে। সরাইখানার ভিড়ও পাতলা হয়ে এলো। রসুইঘর থেকে একজন মুখ বের করে যুবককে ইশারায় বলে দিলো আজ মনিব দেখা করবেন না। যুবক হতাশ মুখে বেরিয়ে এলো সরাইখানার বাইরে।
এই স্থানটি মূল শহর থেকে অনেকটা ভেতরে বলে সৈন্যদের টহল খুব একটা চোখে পড়ে না। আগে এই সড়কে মধ্যরাত অব্দি লোকের পদচারণায় মুখর থাকত। যুদ্ধের কারণে বেশিরভাগ লোকই বসতি ছেড়ে অন্যত্র চলে গেছে। রাত হলেই ভূতুড়ে নিস্তব্ধতা নামে পথে। যুবক অন্ধকার পথ ধরে হাঁটছে। হাতে নতুন একটা মদের বোতল। একটু পর পর চুমুক দিচ্ছে বোতলটাতে৷ কিছুপথ যেতে মাথার ওপর দিয়ে দুটো যুদ্ধ বিমান উড়ে যেতে দেখে থমকে দাঁড়ায়। এভাবে খোলা রাস্তা দিয়ে চলা বিপজ্জনক। যুবক টলতে টলতে কোনোরকমে পাশের নির্জন গলি দিয়ে হাঁটা ধরে এবার। মিনিট খানেক সময় পরে ওর মনে হলো কেউ যেন ওকে অনুসরণ করছে। থেমে উৎকর্ণ হয়। না, কোনো শব্দ নেই। তবে কী মনের ভুল ছিল? তাই ই হবে। আবার হাঁটছে সে। কয়েক কদম পরে আবার সেই শব্দ। না, মনের ভুল নয়। স্পষ্ট টের পাচ্ছে কেউ তাকে অনুসরণ করছে। নেশার চোটে যুবকের পা ঠিক ভাবে চলতে চায় না। তবুও সে দ্রুতপদে চলতে লাগল। তারপর দৌড়াতে শুরু করে। হঠাৎ কিছুতে বেঁধে মুখ থুবড়ে পড়ল পাশ্ববর্তী ড্রেনের ওপর। ভয়ে ভয়ে মুখ তুলে চারপাশে তাকাল। জনমানবহীন গলি। একটুখানি স্বস্তি নিয়ে উঠে দাঁড়ায়। ঠিক তখনই পেছনে কারো অস্তিত্ব টের পায়। চকিতে ঘুরতে হামলা করে বসে ওর ওপর। যুবক চিৎ হয়ে পড়ে আছে গলির রাস্তায়। দমবন্ধ হয়ে এলো। ভয়ে ওর নেশা কেটে গেছে প্রায়। স্পষ্ট চোখে নিকোলাসকে নিজের বুকের ওপর দেখতে পাচ্ছে। গতকালের চেয়ে আজ যেন আরো বুড়ো, বিভৎস লাগছে ওকে। ওর গা থেকে আসা মানুষ পঁচা উৎকট গন্ধে যুবকের পেট গুলিতে এলো। নিকোলাস ওর বুকের ওপর হাঁটু তুলে বসে আছে। নিস্প্রভ চোখের চাহনি। বয়স্ক গলায় বলল,
“কে তোর মনিব?”
“বলব না।” যুবক জবাব দিলো। নিকোলাস হাঁপ ছেড়ে মুখ ভার করে বলে,
“গত পাঁচ মাসে আমি মানুষের রক্ত পান করিনি। দ্যাখো কী বেহাল দশা আমার। অবশ্য খারাপ লাগছে না। সত্যি কথা হলো, অসাড় বোধ হয় থেকে থেকে। আচ্ছা, তুমি প্রেম করেছ কখনো? ধুর! কী থেকে কী বলছি। আমার না সবকিছুই খুব অসংলগ্ন হয়ে যায় এখন। তা যা বলছিলাম। পিশাচ আমি৷ মানুষ দেখলে রক্ত তৃষ্ণা পায়। এখনও পাচ্ছে। একটু বেশিই পাচ্ছে। তুমি সঠিক জবাব দিলে নিজেকে আজও বশ করে নেবো। বলো তোমার মনিব কে?”
যুবক বলে না। নিকোলাসের নিস্প্রভ শান্ত চোখে হিংস্রতা ফুটে ওঠে। মুহূর্তে শ্বদন্ত বসিয়ে দেয় যুবকের গলায়। আর্তনাদ করে ওঠে যুবক। ভীত কণ্ঠে কেঁদে বলে,
“বলছি, দয়া করে মেরো না আমাকে।”
নিকোলাস মুখ তোলে। শ্বদন্ত বেয়ে ঠোঁটের দু’পাশে গড়িয়ে পড়ছে যুবকের তাজা রক্ত। পাশে সরে বসে ও। যুবক ঘাড় চেপে ধরে নিরাপদ দুরত্বে গিয়ে বলে,
“ওয়াদা করো নাম বললে ছেড়ে দেবে।”
“ওয়াদা।”
যুবক গভীর শ্বাস নিয়ে বলল,
“ড্যামিয়ান।”
রাগে চোয়াল শক্ত হয়ে ওঠে নিকোলাসের। বিড়বিড় করে বলে,
“ড্যামিয়ান, হুঁ? ব্লাডি বাস্টার্ড।”
যুবক সুযোগ বুঝে পালাতে গেলে নিকোলাস ওর গলা চেপে ধরে। ভীত যুবক বলল,
“তুমি আমাকে ওয়াদা করেছিলে নাম বললে ছেড়ে দেবে।”
নিকোলাস দাঁত বের করে হাসে। বলে,
“ওয়াদা? গতকাল তুমিই তোমার বন্ধুকে বলেছিলে না? ওকে বিশ্বাস কোরো না বন্ধু। ভুলে গেলে এত তাড়াতাড়ি? মাই ডিয়ার লিটল আততায়ী, আমি মোটেও লয়াল পার্সন নই আমার শত্রুদের সাথে। ডোন্ট ওয়ারি, তোমাকে আমি কম কষ্টের মৃত্যু দেবো।”
যুবকের সকল অনুনয়, কান্না অগ্রাহ্য করে অনেকদিন পর তৃপ্তিতে রক্ত তৃষ্ণা মেটায় নিকোলাস। দুর্বল শরীরে শক্তি ফিরে পায়। দুদিন একটু চুপচাপ থেকেছে বলে শত্রুরা দুর্বল ভেবে নিয়েছে? নিকোলাস দুর্বল নয়। কিন্তু ওর মনটা ইসাবেলার মৃত্যুতে শোকাভিভূত হয়ে আছে। ইসাবেলার মৃত্যুর ধাক্কা ওর মনটা সহজভাবে নিতে পারেনি। দুরত্ব সবসময়ই বিচ্ছেদ ঘটায় না। মাঝে মাঝে দূরে চলে যাওয়া মানুষটা কত আপন ছিল তা বুঝিয়ে দেয়। তখনই অনুভব হয় তাকে ছাড়া জীবন মূল্যহীন, নিরস ও বিবর্ণ। নিকোলাস জীবিত না। ইসাবেলার সান্নিধ্যে ওকে ভুলিয়ে দিয়েছিল সেই কথা। প্রতিটি মুহূর্তে নিজেকে ও সাধারণ মানুষের মতো ভেবেছিল। জীবিত, জীবন্মৃত কোনো কালই ওকে ওই সুখ দেয়নি যে সুখ ইসাবেলা দিয়েছে। আজ ইসাবেলাও নেই, সুখও নেই। নিকোলাস জানত ওর হারানোর ভয় নেই। এই ভুল ধারণার কারণে ইসাবেলাকে হারিয়েছে। একটু যদি সতর্ক হতো। ইসাবেলাকে সাথে করে যদি নিয়ে যেত তবে আজ ও হয়তো বেঁচে থাকত। মৃত্যুর পূর্বরাতের কথা স্মরণ করে নিজেকে তিরস্কারে জর্জরিত করে। কত কষ্ট দিয়েছে ইসাবেলাকে ও। নিজের দুর্বলতা ঢাকতে ওকে বারবার দূরে ঠেলে মন ভেঙেছে। ওর মৃত্যু দিয়ে কেউ যেন দারুন শোধ নিয়েছে তার। ইসাবেলা আর নেই এই ভাবনা ভেঙেচুরে কুঁজো করেছে ওকে। সবার চোখে আজ ও দুর্বল, করুণারপাত্র। এ ওর শাস্তি। ইসাবেলাকে একা ছেড়ে জার্মানি যাওয়ার, ওকে ব্যথা দেওয়ার শাস্তি পাচ্ছে। নিকোলাস মাথা পেতে নিয়েছে এই শাস্তি। এতেও যদি ইসাবেলাকে ফিরে পাওয়া যেত! যুবকের রক্তপানে দেহে অসীম শক্তি টের পাচ্ছে নিকোলাস। কিন্তু মন! মন যে ভীষণ রুগ্ন, দুর্বল। লোকে ভুল বলে। ভালোবাসা দুর্বলতা নয়। ভালোবাসা শক্তি। নিকোলাস সেই শক্তি হারিয়েছে।
পরদিন গলি দিয়ে যাওয়া কয়েকজন পথচারী ড্রেনের মধ্যে যুবকের লাশ দেখতে পেল। যুদ্ধের এই মুহূর্তে কেউ কাওকে নিয়ে ভাবছে না। যুবকের লাশ নিয়েও ওরা বেশিক্ষণ ভাবল না। নিজেদের গন্তব্যে পা বাড়াল। মানুষ উপেক্ষা করলেও গলির ক্ষুধার্ত কুকুর আর আকাশে উড়ে বেড়ানো শকুনেরা বড়ো আগ্রহ নিয়ে ভিড় জমায় যুবকের লাশের পাশে। সন্ধ্যা হওয়ার আগে লাশটা ওরা নিজেদের মধ্যে ভাগ বাটোয়ারা করে নেয়। অন্ধকারে পড়ে থাকে হাড্ডিসার ছিন্নভিন্ন দেহটা। একটু অদূরে একটা কালো ছায়া এদিকে স্থির হয়ে দাঁড়িয়ে আছে।
নিকোলাস আজ আর দুর্গ ছেড়ে বাইরে যায়নি। জানালার পাশে বসে আছে। উদাস চোখে চেয়ে দেখছে টিমে টিমে তারকা খচিত ধূসর আকাশ৷ শুল্ক পক্ষের চাঁদের আলোয় উদ্ভাসিত জানালার বাইরেটা। প্রেমিকের চোখে এই রাত বড়ো মধুর, বড়ো সুন্দর। ঠিক প্রেয়সীর মতো। সুখের অতলে ডুব দেয় ওরা আজকে। কিন্তু নিকোলাসের ভেতরটা শূন্যতায় খা খা করে ওঠে। আনমনে বলে,
“আমি আঁধার, অন্তঃসারশূন্য। অথচ, এতদিন এই শূন্যতা আমি বিন্দুমাত্র টের পাইনি। আজকাল তোমার বিরহ আমায় তা টের পাইয়ে দেয়, বেলা। বড়ো অসহ্য মনে হয় শূন্যতা।”
নিকোলাস এতটাই অন্যমনস্ক হয়ে ছিল যে, এ রুমে রিচার্ডের উপস্থিতি সহসা টের পেল না। দরজার মুখে দাঁড়িয়ে রিচার্ড একদৃষ্টে ওকেই দেখছেন। পরশু নিকোলাস বিভৎস এক বৃদ্ধ ছিল। আজ ওর দেহজুড়ে যৌবনশ্রী। আগের মতো পেশিবহুল, সুঠামদেহি যুবক এখন নিকোলাস। রিচার্ডের ঈর্ষা হয়। নিকোলাসকে দুর্বল বৃদ্ধরূপে দেখে এতদিন ভেতরে ভেতরে পৈশাচিক আনন্দ পেয়েছিলেন। আজ ঠিক তার বিপরীত অনুভব করছেন। কিন্তু সেটা নিকোলাসকে বুঝতে দেওয়া যাবে না। গলা ঝেড়ে মেকি হেসে বললেন,
“তাহলে ফিরছো কমিউনিটিতে?”
নিকোলাস তাকাল না তাঁর দিকে। জবাবও দিলো না। রিচার্ড আরো কাছে গিয়ে দাঁড়ান।
“তুমি যে কোনো মেয়ের কারণে ট্রাজিক হিরোতে পরিণত হবে এ কিন্তু আশ্চর্যের বটে। মেয়েটার মধ্যে কিছু তো বিশেষ ছিল, নয়তো তোমার মতো কঠিন পাহাড়কে এমন করে টলাবে কার সাধ্য? প্রেমে একেবারে ডুবিয়ে নাকে-মুখে পানি তুলে ছেড়েছে।” শেষটা রসাত্মক সুরে বিড়বিড় করে বললেও নিকোলাস শুনতে পেল। তীব্র চোখে চেয়ে বলল,
“খোঁচা দিতে এসেছেন?”
“না, সে সাহস কী আমার আছে?”
“সাহস? হাসালেন আপনি।” কটাক্ষ করে হাসল নিকোলাস। তারপর বলল, “যে কারণে এসেছেন বলে চলে যান। কারো সঙ্গ এই মুহূর্তে চাচ্ছি না আমি।”
রিচার্ডের মেকি হাসি ম্লান হয়। জোর করে সেটাকে আগের মতো করে বলল,
“শুনলাম পরশুরাতে তোমার ওপর আবার হামলা করেছে ড্যামিয়ান?”
“ড্যামিয়ান? আপনি কী করে জানলেন হামলা ড্যামিয়ানই করেছে?”
একটু যেন বিব্রতবোধ করে রিচার্ড। নিকোলাসের সন্দেহ দৃঢ় হওয়ার আগেই নিজেকে সামলে নিয়ে বলে,
“তুমি আমার সন্তান নিকোলাস। তোমার চোখে আমি খারাপ পিতা হতে পারি। কিন্তু আমার কাছে তুমি আমার প্রিয় পুত্র।”
“প্রিয় পুত্র? এটা কী কৌতুক ছিল?” ভুরু তুলে বলল নিকোলাস। রিচার্ড রাগত গলায় বললেন,
“প্রেয়সীর মৃত্যু শোকে কমিউনিটির সকলের দায়িত্ব তুমি অবহেলা করতে পারো, কিন্তু আমি সেটা পারি না। গোপনে সব খবরই আমি রেখেছি। তোমার ওপরে করা হামলা ড্যামিয়ান করিয়েছে। প্রথমে তোমাকে তারপর আমাদের সবাইকে ও শেষ করে ফেলতে চায়। তুমি এবং কমিউনিটি দুটোই আমার দায়িত্ব।__”
রিচার্ডের কথা শেষ হয় না। ফোঁস করে ওঠে নিকোলাস,
“এই দায়িত্ব কে দিয়েছে আপনাকে?”
রিচার্ড বললেন,
“কমিউনিটির নিয়ম ভঙ্গ করে আমাকে এই দায়িত্ব নিতে বাধ্য করেছ তুমি। একের পর এক অন্যায় করছ আমাদের সাথে। নিজেকে শত্রুর জন্য সহজলভ্য করে আমাদের বিপদ ডেকে আনছ। তোমার কাছে এটা আমরা আশা করিনি নিকো। যা হোক, এসব কথা তোমাকে বলে লাভ নেই। আমি চিরদিনই তোমার চোখে খারাপলোক। যা বলতে এসেছি তাই বলি। গোপন সূত্রে জানতে পেরেছি ড্যামিয়ান বর্তমানে রাশিয়ার রিগা শহরে আছে। এই মোক্ষম সুযোগ ওকে শেষ করার।”
নিকোলাসের সন্দিগ্ধ চাহনি দেখে মুখটা মলিন করে রিচার্ড বললেন,
“আমাকে বিশ্বাস না করলে কিছু করার নেই। যা বলার বলেছি এবার সিদ্ধান্ত তোমার। চলি।”
রিচার্ড দরজার কাছাকাছি যেতে নিকোলাস পিছু ডাকল,
“পলকে পাঠিয়ে দেবেন। এতদূরের পথে ওকে ছাড়া আর কাওকে আমি বিশ্বাস করি না।”
রিচার্ড হাসিমুখে তাকাতে নিকোলাস গম্ভীর গলায় বলল,
“আমাকে প্রতারণা করার, মিথ্যা বলার শাস্তি কিন্তু মওকুফ হয় না রিচার্ড। আপনজন ধোঁকা দিলে আমি কতটা নিষ্ঠুর হয়ে যাই তা বোধহয় আপনার চেয়ে ভালো কেউ জানে না। যান, সময় নষ্ট করবেন না।”
মুখ ঘুরিয়ে আবার আগেরমতো জানালার বাইরে মুখ করে বসল নিকোলাস। রিচার্ড থমথমে মুখে সেখান থেকে প্রস্থান করল।
চলবে,,