তিমিরে_ফোটা_গোলাপ পর্ব–৩৯

0
635

#তিমিরে_ফোটা_গোলাপ
পর্ব–৩৯
Writer তানিয়া শেখ

স্বামী যুদ্ধে শহিদ হয়েছে, একমাত্র পুত্র যুদ্ধাহত হয়ে ঘরে বসে আছে। মাদাম আদলৌনার সংসার বড়ো কষ্টে চলত একসময়। অর্থাভাবে রাঁধুনি হিসেবে কাজ নিলেন মেয়রের বাড়িতে। আগে সকাল থেকে সন্ধ্যা অব্দি সেখানে থাকতে হতো। এখন মাদামের শরীর ভালো যাচ্ছে না। মেয়র পত্নী ভালো মনের মানুষ। মাদাম আদলৌনার কর্মনিষ্ঠায় খুশি হয়েছে তিনি। মাস কয়েক হলো মাদামের স্বাস্থ্যের অবনতি দেখে তিনবেলার জায়গায় দু’বেলা রান্না করতে বলেছেন। মাসের বেতন আগের মতোই রেখেছেন অবশ্য। মেয়র বাড়িতে দুবেলা রান্না করে কিছু অর্থ জমিয়ে পাঁচটা ভেড়ি কিনেছিলেন। ভেড়িগুলো এখনো দুগ্ধ দেওয়ার মতো হয়নি। ওর গায়ের পশম খানিক বেড়েছে। আরো কিছুদিন গেলে পশম ছাড়িয়ে নেবেন। তারপর সেগুলো দিয়ে বানাবেন সোয়েটার, কম্বল। এসব কাজে মাদাম আদলৌনা বেশ দক্ষ। এই ভেড়িগুলো নিয়ে মাদাম আদলৌনার স্বপ্ন অনেক। ভবিষ্যতে এদের সংখ্যা বাড়লে ফার্মটা বড়ো করবেন। দুধ বিক্রির সাথে সাথে মাখন, পনিরও তৈরি করে বাজারজাত করার চিন্তা ভাবনা আছে৷ তখন এতেই তাঁর সংসার ভালোভাবেই চলে যাবে। ততদিনে সৃষ্টিকর্তার কৃপা হলে মাতভেইও পুরোপুরি সুস্থ হয়ে দাঁড়াবে। ভালো একটা মেয়ে দেখে ছেলেকে বিয়ে করাবেন। ছেলের জন্য ভালো মেয়ের কথা ভাবতেই ইসাবেলার মুখটা ভেসে উঠল। মেয়েটাকে মাদামের ভারি ভালো লাগে। ওদের দুজনকে একসাথে বেশ মানায়। ইসাবেলাকে নিয়ে ছেলের মনের ভাবনা কী মাদামের খুব জানতে ইচ্ছে করে। আজ ভাবলেন ছেলেকে একটু বাজিয়ে দেখবেন। সন্ধ্যায় বাড়ি ফিরে প্রথমে বাড়ির পেছনের ফার্মটা ঘুরে এলেন। ভেড়ি ছাড়াও তাঁদের একটি খয়েরী রঙের ঘোড়া আছে। ঘোড়াটি মাদামের স্বামীর পছন্দের ছিল। স্বামীর স্মৃতি মনে করে ওর গাঁয়ে মাঝেমাঝে হাত বুলিয়ে দেন। মৃত মালিকের কথা স্মরণ করে না আহ্লাদে, ঘোড়াটা কেমন একটা আওয়াজ তোলে। মাথা ঘষে মাদামের গাঁয়ে। আজ ঘোড়াটা ভিন্ন আচরণ করল। কাছেই ঘেঁষতে দিলো না। ভেড়িগুলোও এককোণে ঘাড় গুঁজে বসে আছে। যেন রাজ্যে ক্লান্তি ওদের চোখে। সকালে দেওয়া ঘাসগুলোও নেতিয়ে আছে সামনে। মাদামের মনটা কেমন করল। বাড়ির ভেতর ফিরে এলেন। কিচেনে তৈজসপত্র নাড়াচাড়ার শব্দ হচ্ছে। মাদাম আদলৌনা এগিয়ে গেলেন। বিটরুট স্যুপের সুগন্ধ পাচ্ছেন তিনি৷

“মাদাম, কখন এলেন”

চুলার পাশ থেকে উঠে দাঁড়ায় ইসাবেলা।

“এই এখনই। রান্না কি শেষ? ঘ্রাণ কিন্তু বেশ আসছে।”

রান্না ও আগে থেকেই জানত কিন্তু এদেশের রান্না আবার একটু ভিন্ন। মাদাম আদলৌনার হাত ধরে সেটাও ও শিখছে। রাঁধতে ওর ভালোই লাগে। চুলা থেকে একটুখানি সরে বলল,

“দেখুন না কেমন হয়েছে।”

মাদাম আদলৌনা পাতিলের দিকে ঝুঁকে ঘ্রান নিয়ে চামচে নেড়েচেড়ে একটু টেস্ট করলেন।

“সব ঠিক আছে। বেশ দ্রুত শেখো তুমি ইসাবেল।”

“এক্ষেত্রে ক্রেডিট কিন্তু আপনারই। আপনি শিক্ষক হিসেবে ভালো।”

মাদাম আদলৌনা মুচকি হাসলেন। বেশিক্ষণ স্থায়ী হলো না তাঁর হাসি। কিচেনের দরজার কাছে এসে থামলেন। ডান পাশের জানালা দিয়ে ফার্মটা দেখা যায়। ভেড়িগুলোর ক্লান্ত মুখ তাঁকে ভাবনায় ফেলে। এই তো তাঁর ভবিষ্যৎ। এগুলোর কিছু হলে আবার ঘুরে দাঁড়ানোর স্বপ্নটা ভেঙে যাবে।
ইসাবেলা স্যুপের পাত্র চুলা থেকে নামিয়ে রাখে। রাতের খাবার ওরা আরো দেরিতে খায়। তখন স্যুপটা গরম করে নেবে। মাদাম আদলৌনার গম্ভীর মুখ দেখে ইসাবেলা বলল,

“কী হয়েছে মাদাম আদলৌনা? আপনাকে বেশ চিন্তিত দেখাচ্ছে।”

“কিছু না।” হাঁপ ছাড়লেন শব্দ করে। বসার ঘরে এসে বসলেন। সামনে ফায়ারপ্লেসটা জ্বলছে। বেশ আরাম লাগছে উষ্ণতায়।

“মাতভেই কী করছে?”

ইসাবেলা বসার ঘরে আসতেই জানতে চাইলেন মাদাম। ইসাবেলা বলল,

“বোধহয় পড়ছে।”

মাদাম আদলৌনা খেয়াল করলেন ইসাবেলার মুখ মলিন হয়ে উঠেছে। এমনটা হয় মাতভেই ওকে রাগালে।

“আবার কী করেছে ও?”

“কিছু না তো।”

মাদাম জানেন এই জবাবই দেবে মেয়েটা। অনুযোগ অভিযোগ করেই না ও। কিন্তু ছেলেকে তো তিনি চেনেন। সারাদিন ঘরে বসে বোর হলে মেয়েটাকে এটা ওটা বলে রাগিয়ে মজা নেয়। মিল হতেও ওদের সময় লাগে না। মাদাম তাই তেমন গুরুত্ব দিলেন না। ইসাবেলা বই হাতে বসল তাঁর সামনের সোফাতে। দুজনের মধ্যে আর তেমন কথাবার্তা হলো না। মাদামের মনটা বড়ো বিচলিত হয়ে আছে ভেড়িগুলোর পরিবর্তনে। একটু পর উঠে নিজের রুমের দিকে গেলেন।

ইসাবেলার মনটা আজ ভীষণ খারাপ। মাতভেই আজ ওকে ধমকে দিয়েছে। দোষ কিছুটা ওরও ছিল, কিন্তু ওমন দোষ তো ও রোজ করে। আজ তবে ধমক দিলো কেন? ধমক দিয়েছে সেটাও সহ্য হয়।কিন্তু দুপুর থেকে সন্ধ্যা হয়ে এলো মাতভেই একবারো ডাকল না। অভিমানে ওর কান্না পাচ্ছে। মাদাম তখন মন খারাপের কারণ জিজ্ঞেস করাতে ও প্রায় কেঁদেই ফেলত। সেটা চাপা দিতে বইটা খুলে বসেছে৷ বই খুললে কী হবে? একটা বাক্য যদি মাথায় ঢুকছে! সব গুলিতে যাচ্ছে। মনোযোগই দিতে পারছে না। বিরক্ত হয়ে বইটা পাশে বন্ধ করে রাখল। অনেক হয়েছে। মাতভেই কথা না বললে ওর বইয়েই যাবে। ইসাবেলা সিঁড়ি বেয়ে ওপরে উঠে এলো। মাতভেইর রুমের পরের রুমটা ওর। মাতভেইর দরজার সামনে এসে থেমে যায়। সারাদিন দরজাটা বন্ধ। একবারের জন্যও খোলেনি। এমনটা আগে হয়নি। এক একা মাতভেই ঘরে বসে থাকেনি এতক্ষণ। আজ কী হলো ওর? চিন্তা হচ্ছে ইসাবেলার। ও আর অভিমান করে থাকতে পারল না। ধীর পায়ে এগিয়ে দরজার লকে হাত দিলো। নিঃশব্দে খোলার চেষ্টা করল ওটা। দরজা সামান্য ফাঁক করে উঁকি দেয়। বিছানা শূন্য। চোখ বুলাল ঘরের ভেতর। খাটের একপাশে ছড়িয়ে আছে কাগজ। হঠাৎ ওর কানে ফুঁপানোর শব্দ এলো। খাটের মাথার দিকের সংকীর্ণ জায়গাটাতে একটা মাথা দেখা গেল। মাতভেই কাঁদছে। দরজা ঠেলে ভেতরে ঢুকলো ইসাবেলা। রুমটাতে আবছা আঁধার। খোলা দরজা দিয়ে কড়িডোরের একফালি আলো ঢুকলো মাতভেইর রুমে। মাতভেই চমকে তাকায় পেছনে। ইসাবেলার উদ্বিগ্ন মুখে খানিক্ষণ সিক্ত চোখে চেয়ে রইল। আস্তে আস্তে ওর মুখটাতে অপরাধবোধ জেগে ওঠে। মুখ ঘুরিয়ে বসল আগের মতো। ইসাবেলা এগিয়ে যাবে তখনই চোখ পড়ল মেঝেতে পড়ে থাকা কাগজের ওপর। কয়েকটার ওপর কড়িডোরের স্পষ্ট আলো পড়েছে। একটা চিত্র ওর দৃষ্টি আকর্ষণ করল। ইসাবেলা জানত মাতভেই ভালো আঁকে। ইসাবেলার কয়েকটা ছবি ও এঁকে দিয়েছে। একদম জীবন্ত ওর হাতের ছবিগুলো। এই যে মেঝেতে পড়ে থাকা মানবীর চিত্র, এও কিন্তু জীবন্ত লাগল। কতদিন বাদে মুখটা আবার দেখল ইসাবেলা। কাঁপা হাতে একটা চিত্র তুলে নিলো। আশ্চর্যে অস্ফুটে বেরিয়ে এলো,

“তাতিয়ানা!”

ওর মাথায় যেন কিছুই ঢুকলো না। নিজের পরিবারের কথা মাতভেইকে বলেছে। তাতিয়ানার কথাও বলেছে তবে তেমন করে না। বলেছিল, তাতিয়ানা নামে ওর একটা বড়ো বোন আছে। বোনের ছোট্ট একটা মেয়ে আছে। নাম তাশা। তাশাকে ও খুব ভালোবাসে। প্রচন্ড মিস করে। ব্যস! এই এতটুকু। দৈহিক কোনো বর্ণনা দেয়নি। না দেখে এমন নিখুঁত ছবি কেউ আঁকতে পারে? আর তাতিয়ানারই কেন? হঠাৎ ওর মাথাটা ঘুরে উঠল। মাতভেই ওকে বলেছিল ও একটা মেয়েকে ভালোবাসে। মেয়েটার বাড়িও রিগাতে। বন্ধুদের সাথে একটা বিশেষ প্রয়োজনে একবার রিগা যেতে হয়েছিল। ক্লাবে ও তেমন যায় না। বন্ধুরা জোর করাতে গিয়েছিল সেখানের একটি ক্লাবে। সেখানেই মেয়েটার সাথে পরিচয়। প্রথমবার দৃষ্টি বিনিময়ে একে অপরের প্রতি আকৃষ্ট হয়েছিল। মাতভেইর ক্ষেত্রে সেটা অবশ্য লাভ অ্যাট ফার্স্ট সাইট। সামান্য কথাবার্তা হয়। দুজনে ড্রিংক করেছিল। দৈহিক আকর্ষণকে ওরা কেউ এড়িয়ে যেতে পারেনি। রাতটা একই বিছানায় কাটে। সকালে ঘুম ভাঙলে মাতভেই মেয়েটাকে আর পায়নি। এরপরের আবারো দেখা হয়। সেদিন মেয়েটি নেশায় বুঁদ থাকলেও মাতভেই পুরোপুরি চেতনায় ছিল। মাতভেই চেয়েছিল কথা বলতে। কিন্তু কথা বলার মতো অবস্থায় ছিল না মেয়েটি। আগের রাতের মতোই সেদিনও একই বিছানায় কাটল। কেবল দেহের টান ছিল না সেদিন মাতভেইর। ভালোবেসে ছুঁয়েছিল মেয়েটিকে। ভালো লেগেছিল মেয়েটিকে ওর৷ ভেবেছিল সকালে ডেটের প্রস্তাব দেবে। কিন্তু আগের মতোই সকালে মেয়েটি ওর জেগে ওঠার আগেই চলে যায়। এরপর আর তাকে দেখতে পায়নি ওই ক্লাবে। পিতার মৃত্যুর খবরে রিগা থেকে দ্রুত ফিরে আসতে হয়েছিল। তারপর যুদ্ধে যেতে হলো। বছর কেটে গেলেও মেয়েটির স্মৃতি আজও মাতভেইর মন থেকে যায়নি। ওই স্মৃতি ভালো লাগা থেকে ভালোবাসার সৃষ্টি করেছে। ইসাবেলা জানত মেয়েটির প্রতি মাতভেইর ভালোবাসার গভীরতা, কিন্তু সেই মেয়েটি যে ওর আপন সহোদরা তা ও কল্পনাও করেনি। মাতভেই মাথা হেঁট করে বসে আছে। ইসাবেলা সামনে গিয়ে বসল। চিত্রটা এগিয়ে ধরতে মাতভেই হাত বাড়িয়ে নেয়। ওর চোখ থেকে দুফোঁটা জল পড়ল তাতিয়ানার ছবির ওপর।

“সকালে বালিশের পাশে যেই কাগজ ধরার কারণে তোমাকে ধমকেছি তা এই ছিল, বেল। এই মেয়েটির ছবি। আ’ম সরি, বেল। তোমার সাথে ওমন ব্যবহার করা আমার উচিত হয়নি।”

“এই মেয়েই কি সে? যার কথা বলেছিলে?”

“হ্যাঁ।”

“ওর ছবি দেখাতে চাওনি কেন?”

“জানি না। বোধহয় একপাক্ষিক ভালোবাসা বলেই কাওকে ওকে দেখাতে চাইনি।”

“একপাক্ষিক? তুমি ভাবো ও তোমাকে ভালোবাসে না?”

মাতভেই সে কথার জবাব দিলো না। এই প্রশ্নের জবাব ওর কাছে নেই। ছবিটার দিকে একদৃষ্টে চেয়ে রইল। ইসাবেলা মাতভেইকে দেখছে।

“মাতভেই?”

“হুঁ?”

“আমার দিকে একটু তাকাবে?”

ভুরু কুঁচকে তাকায় মাতভেই। ইসাবেলা ওর মুখ, চোখ ভালো করে দেখে বিস্ময়ে বলল,

“আমি আগে কেন খেয়াল করিনি?”

“কী?” মাতভেই প্রশ্ন করে। ইসাবেলা ওর চোখের দিকে চেয়ে বলল,

“তোমার চোখ। ওরও চোখের মণি তোমারটার মতো সবুজ। তারপর মুখের আদলেও তো কত মিল। হা ঈশ্বর!”

ইসাবেলা হাতে মুখ ঢাকল। মাতভেই ওর কথার অর্থ বুঝতে না পেরে বিভ্রান্ত মুখে চেয়ে আছে।

“তুমি কী বলছ বলো তো? কার চোখের মণি আমার মতো? কার সাথে মিল?”

ইসাবেলার চোখ ভরে উঠল জলে। ঠোঁটে হাসি। আনন্দে হুট করে মাতভেইর গলা জড়িয়ে ধরে,

“বেল?”

“আমি আজ অনেক খুশি মাতভেই, অনেক।”

ইসাবেলার মুখ তুলে গলা থেকে মাতভেইর কাঁধে হাত রাখতে ব্যথায় হিস হিস করে উঠল মাতভেই।

“কী হয়েছে?” কাঁধ থেকে হাতটা সরিয়ে প্রশ্ন করে ইসাবেলা। মাতভেই মুহূর্তে নিজেকে সামলে নেয়।

“কিছু না।”

“না, কিছু তো হয়েছে। দেখাও কাঁধ।”

মাতভেই বাধা দেওয়ার আগে শার্টের গলাটা সরিয়ে ফেলে ইসাবেলা। ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র দুটো গর্ত হয়ে আছে কাঁধে। রক্ত জমে গেছে। এই গর্ত ইসাবেলার পরিচিত। রক্তশূন্য মুখে তাকাল মাতভেইর দিকে।

“এ-এ গর্ত __?”

মাতভেই শার্টের কলার টেনে ঢোক গিলল।

“এ কিছু না। একটুখানি ব্যথা পেয়েছিলাম।”

“ব্যথা! না, তুমি মিথ্যা বলছ।”

রেগে ওঠে মাতভেই।

“মিথ্যা! কেন মিথ্যা বলব আমি? অনেক বকবক হয়েছে। এখন যাও তো। একা থাকতে দাও একটু।”

“মাতভেই শোনো, আমাকে তুমি বিশ্বাস করতে পারো। আমরা তো বন্ধু তাই না? বলো না কীভাবে হলো এই ক্ষত? কেউ রাতে আসে তোমার ঘরে? এই যেমন কালো__”

ইসাবেলার কথা শেষ করতে দেয় না মাতভেই। বিরক্ত ঝেড়ে বলে,

“উফ! এত বকবক করতে পারো? আ-আর কে আসবে রাতে আমার ঘরে? কী সব আবোল তাবোল বকছ। যাও তো এখন আমার চোখের সামনে থেকে। যাও, প্লিজ।”

মাতভেইর ধমকে উঠে দাঁড়ায় ইসাবেলা। কিন্তু যায় না।

“মাতভেই প্লিজ বলো না।”

“ইসাবেলা, আমার রুম থেকে বেরোও বলছি। যাও।”

মাতভেই চেঁচিয়ে ওঠে একপ্রকার। বাধ্য হয় ইসাবেলা ওর রুম থেকে বেরিয়ে যেতে। ও বেরিয়ে যেতে দরজায় চেয়ে মাতভেই বলল,

“আমি বড়ো পাপ করে ফেলেছি, বেল। এই পাপ গোপন করতে তোমাকে ধমকেছি। ক্ষমা করো আমাকে। আমার ভালোবাসাকে আমি অপমান করেছি, বেল। তোমাকে আমি বলতে চাই, কিন্তু কী করে বলব? কী করে বলব গত রাতে ওই পিশাচিনীরা আমাকে বশ করে কী কী করেছে। আমি নিরুপায় ছিলাম, বেল। বড্ড নিরুপায় ছিলাম। আমার মতো দুর্বল, পাপীর মরে যাওয়া ভালো। মরণ হোক আমার।”

তাতিয়ানার ছবিটাতে হাত বুলিয়ে বলল,

“তোমার সাথে বুঝি আর দেখা হবে না প্রিয়তমা। মৃত্যুর আগে যদি একবার দেখতে পেতাম তোমায়? একবার বুকে জড়িয়ে নিতে পারতাম! মরেও বুঝি শান্তি হতো। কিন্তু তা আর সম্ভব নয়।”

চলবে,,,

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here