#তিমিরে_ফোটা_গোলাপ
পর্ব–৭৪
Writer তানিয়া শেখ
বিশেষ এক মুহূর্তের জন্য অপেক্ষা করছে নিকোলাস। ইসাবেলাকে নিজের করে চেয়ে নিতে বিশেষ মুহূর্তটা খুব দরকার। স্মরণীয় হয়ে থাকবে এই মুহূর্তটি আগামীতে। ইসাবেলাকে সারপ্রাইজ দিতে কত কী ভাবছে। ভীষণ নার্ভাসও ও। পাছে অন্য কিছু ঘটে যায়! ইসাবেলা যদি খুশি না হয়? পিশাচকে ভালোবাসা সহজ নয়, কিন্তু ভালোবেসেছে ও। প্রেমিকরূপে গ্রহন করেছে, স্বামীরূপে গ্রহন করবে কী? নির্ভীক পিশাচটাও আজ ভয় পায়। মনের ভেতর চঞ্চলতা বাড়ে। বিয়ে মানে সামাজিক বন্ধন। নিকোলাস তো সামাজিক নয়। বৈবাহিক সম্পর্কে কত চাওয়া-পাওয়া থাকে। সেসব ভাবতে কেমন যেন হয়ে যায়। অপেক্ষার পালা আরও দীর্ঘ হয়। এক এক সেকেন্ড সহস্র বছরের সমান মনে হতে লাগল।
“কবে প্রপোজ করবেন কিছু ভেবেছেন?” পল সাহস করে জিজ্ঞেস করে পাশ থেকে। নিকোলাস আনমনে স্টাডি টেবিলের পাশের চেয়ারে বসেছিল। দুর্গের জানালার বাইরে ঘুটঘুটে অন্ধকার। ভাবনায় এতটাই ডুবে ছিল যে পলের কথা শুনতে পেল না। পল ওকে পরখ করে হাঁপ ছাড়ে। এত কী ভাবে তার মনিব? ভালোবাসার মানুষটিকে বিয়ের প্রস্তাব দেবে এ কী এতই কঠিন? এর চেয়ে ঢের কঠিন কাজ করতে দেখেছে মনিবকে। কই তখন তো এত ভাবেনি। অতি ভাবনায় সব গুলিয়ে যায়। মনিব কি তা জানে না?
বিয়ে পড়াতে যা শিখতে হয় তার অনেকটাই সে শিখে নিয়েছে। কেন যেন মনিবের বিয়ের ব্যাপারে খুব বেশি আগ্রহ ওর।
“নোভাকে পাওয়ার সম্ভবনা বেড়ে যাবে বলে।”
ভেতর থেকে কেউ একজন বলে উঠতে চমকে ওঠে পল। ধরা যেন খেয়েই গেল। লজ্জায় কান লাল হয়ে ওঠে৷ লজ্জা! তার মতো পুরুষ লজ্জা পেল? লজ্জা কথাটা আসলে পলের স্বভাবের সাথে যায় না। নোভার প্রেম ওকে আজ লজ্জাশীল পুরুষ করেছে। তাড়াতাড়ি ঘুরে এটা ওটা নাড়তে লাগল। মনিবের চোখে পড়া যাবে না। স্মৃতিতে ভাস্বর হয় নোভার মুখ। অনেকদিন ওকে দেখে না। কেমন আছে কে জানে! মনটা সহসা আবার খারাপ হয়। স্বীকার এখন করতেই হয় প্রেমে পড়েছে ও। ভালোবেসে ফেলেছে নোভাকে। কিন্তু নোভা ওকে ভালোবাসে না, হয়তো কোনোদিন বাসবেও না। একপাক্ষিক ভালোবাসা বড্ড যন্ত্রণার। নিজেকে সামলে ও আবার ঘুরে দাঁড়ায় মনিবের দিকে। দু’বার গলা ঝাড়তে নিকোলাস ফিরে তাকাল।
“কিছু বলবি?”
“না, মানে, বলছিলাম ইসাবেলাকে প্রপোজ কবে করবেন কিছু ভেবেছেন?”
নিকোলাস গম্ভীর হয়ে বলল,
“উপযুক্ত সময় আসুক।”
তারপর চুপ করে আবার বলল,
“বললেই প্রপোজ করা যায় না। আগে মনে হয়েছিল ব্যাপারটা সহজ। এখন মনে হচ্ছে খুব কঠিন। অনেকদূর ভাবতে হচ্ছে আমাকে। প্রেম আর বিয়ে দুটো আলাদা ব্যাপার।”
পলের প্রশ্নবিদ্ধ মুখ চেয়ে বলল,
“এখনও বুঝলি না? শোন, বিয়ের পর মানুষ সংসার চায়। আমাকে কি তোর সংসারি বলে মনে হয়? আচ্ছা সেটাও না হয় কোনোভাবে চালিয়ে নিলাম। কিন্তু এরপরের চাওয়ার কী হবে?”
“এরপরের চাওয়া?”
“হুম, সন্তান। ইসাবেলা মা হতে চাইবে একদিন। সব স্ত্রীই তাই চায়। আমি সে ইচ্ছে কী করে পূরণ করব বল? আরও কত যে জটিলতা আছে! সেসব ভাবলে প্রপোজ করতে সাহস পাই না। মনে হয় এভাবেই বেশ আছি। কিন্তু কোথাও যেন অপূর্ণতা থেকে যায়। বিয়েটাই কি?”
পিশাচের ঔরসে সন্তান হয় না বললেই চলে। এ ক্ষেত্রে রিস্ক অনেক। মানব নারীর ঔরসে এর আগেও অনেকে সন্তান জন্মদানের চেষ্টা করেছিল। সফল হয়নি তেমন। দুএকজন মানব নারী গর্ভে ধারণ করতে পারলেও প্রসব করার আগেই মৃত্যুবরণ করেছিল। গর্ভে থাকা পিশাচ সন্তানই মায়েদের মৃত্যুর কারণ হয়। তবে নারীদের পেট কেটে কয়েকজন শিশুকে সময়ের আগেই বের করে আনা হয়েছিল। তারা এখনও বেঁচে আছে কি না সে খবর নিকোলাসের জানা নেই। সন্তানের জন্য ইসাবেলার ক্ষতি নিকোলাস কোনোদিন হতে দেবে না। ইচ্ছে থাকার পরেও এই কারণে ইসাবেলার সাথে দৈহিক সম্পর্ক করেনি ও। একদিকে কাছে পাওয়ার তীব্র আকাঙ্ক্ষা, অপরদিকে এত ভয়, শঙ্কা ওকে প্রায় দিশাহারা করছে।
এতক্ষণে পলও বুঝল প্রপোজ নিয়ে মনিবের গড়িমসির কারণ। আজকাল মনিবকে যত দেখে তত অবাক হয়। কত বদলে গেছে সে। নিজের আগে এখন ইসাবেলাকে প্রাধান্য দেয়। ওর ভালো-মন্দ নিয়ে ভাবে। কত কেয়ার করে। ভালোবাসার সম্পর্কই বুঝি এমন। পল মনিবের কাছে ভালোবাসা শেখে। ভালোবাসতে শেখে।
ভালোবাসার জয় হবেই। মনের ভয়, শঙ্কা কাটিয়ে নিকোলাস ঠিক প্রপোজ করবে ইসাবেলাকে। পল নিজে দাঁড়িয়ে ওদের বিয়ে দেবে। স্বপ্ন! হ্যাঁ, নিশ্চিত পূরণ হওয়া স্বপ্ন এটা। নিকোলাস আজ না হোক কাল এই স্বপ্ন সত্যি করবেই। পল বাজি ধরে সে কথা বলতে পারে।
মানুষ আর পিশাচে বিয়ে হবে। কত নিয়ম, কত প্রথা ভাঙবে নিকোলাস। নতুন কিছুর সূচনা হবে কমিউনিটিতে এবং এর বাইরেও। পল নিজে নয় অনেক পিশাচও চাইছে পরিবর্তন আসুক। মানুষ আর পিশাচ এক হোক। এই দুইয়ের মাঝের চিরদিনের তফাৎ, দ্বন্দ্ব নিরসন হোক। কিন্তু সমস্যা হচ্ছে এর বিপরীত পক্ষের চাপও খুব বেশি। নিকোলাস ইসাবেলাকে বিয়ে করলে যতটা না পরিবর্তন হবে তারচেয়ে বেশি ঝামেলার সৃষ্টি হবে। কমিউনিটিতে নিকোলাসের বিপক্ষের দল ভারী হবে। এমনিতেই তো আন্দ্রেই চলে যাওয়ার পর নিকোলাসকে খুব বেশি সাবধানতা অবলম্বন করতে হচ্ছে। আন্দ্রেই ওর ঢাল ছিল। নিকোলাস অভ্যস্ত ছিল সেই ঢালে৷ কিছুটা বিপাকে সে পড়েছে কিন্তু স্বীকার করবে না। খুব বেশি ইগো ওর। পলকে তাই সতর্কে থাকতে হবে সর্বক্ষণ।
অদূরে ভোরের মোরগ ডেকে উঠতেই নিকোলাস কফিনে ফিরে যায়। পল ভালো করে রুমটা তালাবদ্ধ করে নিচে চলে এলো। দূর্গের একেবারে ওপরের ছোট্ট কক্ষের পুব দিকের জানালার পাশে চেয়ার টেনে বসল। এই কক্ষে মোট তিনটে জানালা আর একটা দরজা। চারদিকে দিয়ে দুপুর পর্যন্ত কড়া নজরদারি চলে। বিশেষ দুরবিনটা এসময় কাজে লাগে। অনেকক্ষণ নজরদারি চললো। আশপাশে ঘন সবুজ জঙ্গলে ঘেরা।প্রতিদিনের মতোই দুএকটা পাখি আর পশু ছাড়া আর কিছুই নজরে পড়ল না। গত দুরাতে ভালো ঘুম না হওয়াতে বেলা বাড়তে চোখদুটো লেগে এলো। কখন যে ঘুমিয়ে পড়েছিল টেরই পেল না। ঘুম ভাঙল শেয়ালের ডাকে। তড়াক করে উঠল চেয়ার ছেড়ে। শেয়ালের ডাক অনুসরণ করে সেদিকে দুরবিন ধরল। ঘন ঝোপঝাড়ের মাঝে শেয়ালটাকে উঁকি ঝুঁকি দিতে দেখে। ভীত-সন্ত্রস্ত দেখাচ্ছে ওটাকে। পল দুরবিন এদিক ওদিকে সরিয়ে দেখল। শেয়ালটা ওর পোষা। এমনিতে এই অবেলায় ডেকে উঠবে না। তারপর কারণ ছাড়া ভীত দেখাবে কেন? কারণটা একটু পড়েই দুরবিনে ধরা পড়ল। আপাদমস্তক কালো আলখেল্লা পরিহিত দুজন লোককে দেখতে পেল দুর্গের দিকে তাকিয়ে থাকতে। শেয়ালটা এখনও ডেকে যাচ্ছে দেখে সন্দেহ হলো ওদের। ছুরি হাতে খুঁজছে ওটাকে।
পলের ঠোঁটে ক্রূর হাসি। মনিব আজ জেগে উঠে খুশিই হবে। দুটো শক্ত সামর্থ্য মানুষের রক্তে আহারটা জমে যাবে। দরজার কাছে গিয়ে মানুষ দুটোর দিকে তাকাতে ওর পেট ডেকে ওঠে। খিদে জানান দিচ্ছে। চোখদুটো ক্রমশ লোলুপ ও হিংস্র হয়ে ওঠে। নাক কুঁচকে ঘোঁৎ ঘোঁৎ আওয়াজ করে। ঠোঁট প্রসারিত হতে দুপাটি দাঁতের সামনে থেকে চারটা সূচালো দাঁত বেরিয়ে আসে। সারা শরীরে লোম বাড়তে লাগল। কিন্তু পুরোপুরি কাঙ্ক্ষিত রূপটিতে যেতে পারল না। আরও কিছুক্ষণ চেষ্টার পরেও ব্যর্থ হলো। নেকড়ে হওয়ার চেষ্টায় বনমানুষ হয়ে যাওয়াটা মোটেও ভালো লাগে না। মেজাজ খিঁচরে যায়। এই জন্যই এইরূপে আসে না। বনমানুষ হওয়ার চেয়ে মানুষ হয়ে থাকা ঢের ভালো। অন্তত চোখের শান্তি। ভুলে থাকতে চায় এই রূপটাকে। শত্রু মোকাবিলা মানুষরূপেও বেশ ভালোভাবে করে। পলের বাবা ছিলেন অর্ধ নেকড়ে। মা মানুষ। জন্মগত ত্রুটি নিয়ে জন্মেছে পল। চাইলেই রূপবদল করতে পারে না। বুকে ব্যথা অনুভব করে, মাঝেমাঝে অসুস্থও হয়ে যায়। এই কারণে নেকড়ে হতে পারে না৷ এখন ওর সারা শরীর কাঁপছে। বুকে চাপ অনুভব করছে। ছোটো থেকেই নিজদলের অপমান, গঞ্জনা সইতে হয়েছে। দুর্বল মানুষ বলে উপহাস করেছে ওকে সবাই। আপনদলের অপমান, গঞ্জনার জবাব দিতে কঠোর পরিশ্রম করে নিজেকে সেরা যোদ্ধা হিসেবে গড়ে তুলেছে। নেকড়ে হতে পারুক আর না পারুক লড়াইয়ে ও এক হাতে তিন চারটা নেকড়েকে ধরাশায়ী করতে পারদর্শী। নিকোলাস ওর মধ্যে কিছু তো দেখেছিল। নইলে বিশ্বস্ত দাস হিসেবে এত বছর কাছে রাখবে কেন? পিশাচদের মাঝে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া চাট্টিখানি কথা ছিল না। নিজের শক্তি ও বুদ্ধির জোরে পিশাচমহলে আজ ওর অবাধ বিচরণ।
মানুষরূপে এখন তাঁকে দুর্গ ছেড়ে বেরোতে হবে। এছাড়া উপায় তো নেই। লোকদুটোকে এমনি এমনি ছাড়বে না। পিশাচের দুর্গে এসে বেঁচে ফিরবে এ হতে দেবে না পল। কোমরে ছুরি গুঁজে সাবধানে সেই আলখেল্লা পরিহিত মানুষদুটির দিকে এগিয়ে যায়। একটুপর মানবীয় আর্তচিৎকার আর নেকড়ের গর্জনে কেঁপে ওঠে দুর্গের বাইরের জঙ্গল। ক্ষনিকবাদে শান্তও হয়ে যায়। অচেতন আহত আলখেল্লা পরিহিত মানুষ দুটোকে দু ‘ কাঁধে করে ফিরে এলো পল। ঢুকলো দুর্গের ভেতরে। ওর পেছন পেছন শেয়ালটাও এলো।
বিকেলে মেয়েদের চায়ের আড্ডার আসর বসে মাক্সওয়েল বাড়ির বসার ঘরে। প্রতিবেশিনী অনেকে আসেন আড্ডা দিতে। আজও ব্যতিক্রম ঘটেনি। ইসাবেলার দুই মামি এই আড্ডার মধ্যমণি। ইদানীং তাতিয়ানাও যুক্ত হয়েছে। প্রাত্যহিক জীবনের অনেক কিছু নিয়ে আড্ডা হয়। রূপের বড়াই, সম্পদের দম্ভ, গুনের মাপ -পরিমাপ সবই হয়। কোনো কোনো সময় তল্লাটের নির্দিষ্ট কাওকে নিয়ে চলে আলোচনা সমালোচনা। আন্না মেরিও এসব আড্ডা আগাগোড়া অপছন্দ করেছেন। ইসাবেলাকেও নিষেধ করেছেন এসব আড্ডা থেকে দূরে থাকতে। কিন্তু তাতিয়ানা ধরে বেঁধে প্রায় এই আড্ডায় ওকে নিয়ে আসে। বোনকে বদলানোর চেষ্টা এখনও চালিয়ে যাচ্ছে ও।
এদের আড্ডার আসরে বসে একেবারে যে ইসাবেলার ভালো লাগে না তা নয়। মানুষ কত বিচিত্র এখানে এসেই টের পায় ইসাবেলা। অনেক কিছু শেখে। অবশ্য শিক্ষাগুলো ইতিবাচক৷ চুপচাপ এককোণে বসে সকলের কথা শোনে। মাঝেমাঝে একই আলাপ শুনে শুনে বোর হয়ে উঠে চলে যায়। এ নিয়ে উপস্থিত মহিলামন্ডলি হাসাহাসি করে। বলে, “ও এখনও সামাজিক হয়ে উঠল না। মায়ের মতোই রয়ে গেল।”
আজ অবশ্য তেমন কিছু ঘটল না। ইসাবেলা আগ্রহ নিয়ে ওদের আলাপ শুনছে। প্রতিবেশী কোনো এক দম্পতির শীঘ্রই ডিভোর্স হবে। ডিভোর্সের কারণ এরা জেনে এসেছে। পুরুষটি সন্তান নেবে না৷ অপরদিকে মেয়েটির সন্তান চাই ই চাই। এ নিয়ে মতবিরোধ বাড়তে বাড়তে ডিভোর্স পর্যন্ত গড়িয়েছে। একজন এই কথা শুনে বলল, তার স্বামীও বিয়ের প্রথম কয়েক বছর সন্তান নিতে খুব অনীহা প্রকাশ করেছিল। সম্পর্কচ্ছেদ হতো তাদেরও। শেষমেশ সন্তান নিতে আগ্রহ দেখাতে সম্পর্ক টিকে যায়। অন্য একজন বলল, বেশিরভাগ পুরুষই বিয়ের পরপরই সন্তান নিতে চায় না। বয়স্ক একজন উপস্থিতদের উপদেশ দিলো, বিয়ের আগে সকলের উচিত সন্তানের এই প্রসঙ্গ নিয়ে কথা বলে নেওয়া। এতে করে পরবর্তীতে সংকট সৃষ্টি হবে না। ওদের নানান মতামত শুনতে শুনতে ইসাবেলার ভাবনা অন্য দিকে ঘোরে। নিকোলাস আজপর্যন্ত ওকে স্পর্শ করতে আগ্রহ দেখালো না সন্তান তো দূরের কথা। যদিও সন্তান নিয়ে এখনই তেমন ভাবনা নেই। সন্তান যে চায় না তা নয়। আগে বিয়েটা তো হোক তারপর না হয় ভাববে। বিয়ে! নিকোলাস একবারো তো বিয়ের কথা মুখে আনে না। বিয়ে ছাড়া কাছাকাছি আসা কি হবে? আর কত লোকের বিদ্রুপ সহ্য করবে। প্রতিজ্ঞা ভুলে যতবার কাছে গিয়েছে নিকোলাস দূরে ঠেলেছে। মনে করিয়ে দিয়েছে প্রতিজ্ঞার কথা। আজ এ নিয়ে ভারী অভিমান হলো। বিয়ের কথাও বলবে না আবার কাছেও টানবে না। ওর কী মন চায় না ঘনিষ্ঠ হতে? ধর্মের বালাই নেই যার মধ্যে সে কেন ইসাবেলার প্রতিজ্ঞা রক্ষা করতে এত সচেষ্ট হবে? না কি ইসাবেলাকে আদৌ কামনা করে না। আকৃষ্ট হয় না ওর প্রতি। সতি বলেই কী এত অবহেলা? নিজেকে নিয়ে বরাবরই হীনম্মণ্যতায় ভুগেছে ও। আজও তাই হলো। নিকোলাস ওর প্রতিজ্ঞার সম্মান করে এই ভাবনা উপেক্ষা করে নতুন ভাবনার জন্ম হলো আজ- নিকোলাসের চোখে বুঝি বড্ড অসুন্দর ও। তাই তো ছুঁয়ে দেখে না। অন্য কাওকে কাছে টানে না তো? ও জানে শেষ কথাটার ভিত্তি নেই। তবুও মান হলো। দুরন্ত যৌবনে যখন জোয়ার ওঠে তখন দেহমন অস্থির হয়। অস্থিরতায় কাঁদো কাঁদো হয়। মনে মনে বলে,
“কেন যে বিয়ের আগে কুমারী থাকার পণ করেছি! এখন কেউ চায় না আমায়, যাকে ভালোবাসি সেও না।”
চলবে,,,,
ঈদ মোবারক সবাইকে।