#ক্রাশের_সাথে_বিয়ে
#পার্ট_০৩+০৪
#jannatul_ferdous
_________________________________________
নিশাত রাগিনীকে সাজিয়ে বাসর ঘরে বসিয়ে দিয়ে আসলো।আজ রোদ-রাগিনীর বাসর রাত। সেই কখন থেকে রাগিনীকে শাড়ি পড়িয়ে বসিয়ে রাখছে কিন্তু রোদের কোনো পাত্তাই নেই।
আরো ১ঘন্টা পর রোদ আসলো।রাগিনীকে দেখে অবাক হয়ে গেলো।শাড়ি পড়ে ভালো লাগছিলো না তাই রাগিনী রোদের শার্ট পড়ে বসে আছে।
রোদ-বাহ বাসর রাতে নতুন বউ বরের শার্ট পড়ে বসে আছে।
রাগিনী-তো সমস্যা কী?
রোদ-এই মেয়ে তুমি কী পাবনা থেকে এসেছো?
রাগিনী-না আমি তো আমার বাড়ি থেকে এসেছি।।
রোদ-ভাবতেছি তোমাকে পাবনা নিয়ে যাবো।
রাগিনী-আমাদের হানিমুন পাবনা হবে?না এটা হবে না।পাবনা না প্লিজ।
রোদ-আল্লাহ বলি এক,বুজে আরেক।উফফফ অসহ্যকর।
রোদ বারান্দায় চলে গেলো।রাতের আকাশের দিকে তাকিয়ে আছে সে।আবারও রাগিনী আসলো রোদের কাছে।
রোদ-তুমি…..
রাগিনী-অনেক রাত তো হলো ঘুমাবেন না।আমি শাড়ি পড়ে ভালো লাগছিলো না আর আমার কোনো ড্রেস নেই দেখে এইগুলো পড়ছি।
রোদ-তুমি যাও ঘুমাও।
রাগিনী-আমাকে ক্ষমা করে দেন।
রোদ-আমি কিছু মনে করিনি যাও ঘুমাও।
রাগিনী-না আমার একা একা রুমে ভয় করে।
রোদ-আমি আছি তো এখানে।
রাগিনী-না আপনাকে যেতে হবে আমার সাথে।
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
রোদ-ঠিক আছে চলো।
রুমে গিয়েই রোদ বলে উঠলো–
আমরা কী এক বিছানায় ঘুমাবো নাকি?
রাগিনী-হুম ঘুমাবো।আমরা তো বর-বউ।
রোদ-না এই দেখো মাঝখানে কোলবালিশ থাকবে।তুমি ওইপাশে আর আমি এইপাশে।
রাগিনী-ঠিক আছে।
রোদ-কিছু খেয়েছো?
রাগিনী-না খাইনি।
রোদ-ক্ষিধা লাগে নাই।
রাগিনী-লাগছে।
রোদ-আচ্ছা খাবার আনছি।কিন্তু এখন খাবার সব ফ্রিজে।
রাগিনী-আমি চকলেট খাবো।
রোদ-এত রাতে চকলেট?
রাগিনী-হুম।
রোদ-নিশাতের চকলেট তো আছে মনে হয়।তুমি ওয়েট করো আমি আনছি।
রাগিনী-হুম।
রোদ চকলেট এনে দিতেই রাগিনী খেয়ে শুয়ে পরলো।রোদের ঘুম আসছিলো না দেখে ফেসবুকে লগ ইন করতেই দেখলো তার বিয়ের কথা সবাই জেনে গেছে।
ইনবক্সে মেসেজে ভরপুর।
একটাই কথা—ক্রাশ তুমি বিয়ে করেছো তো আমার কী হবে।
তাড়াতাড়ি অফলাইন হয়ে রাগিনীর দিকে তাকালো।মেয়েটা ঘুমোচ্ছে।ঘুমালে অনেক সুন্দর লাগে মেয়েটাকে।হঠাৎ করেই চুলগুলো মুখের উপর এসে পরতেই রোদ হাত দিয়ে সেগুলো সরিয়ে দিলো।তারপর রাগিনীর দিকে তাকিয়ে থাকতে থাকতে ঘুমিয়ে পরলো রোদ।
সকালে—-
রাগিনী রোদকে জড়িয়ে ধরে আছে।ঘুম ভাঙ্গতেই রোদ দেখলো রোদের বুকে গুটিসুটি মেরে ঘুমোচ্ছে রাগিনী।রোদ আস্তে করে সরাতে যেতেই রাগিনীর ঘুম ভেঙ্গে গেলো।
রোদ-গুড মর্নিং।
রাগিনী-সুপ্রভাত।
রাগিনী নিজেকে রোদের বুকে দেখে লজ্জায় তাড়াতাড়ি উঠে গেলো রোদের বুক থেকে।ফ্রেশ হয়ে নিছে যাবে এমন সময়——-
রোদ-ওয়ারড্রপে শাড়ি আছে,যাও পড়ো।
রাগিনী-আগে বলবা তো।
রোদ-আম্মু এনে রাখছিলো নতুন বউ এর জন্য রাখছিলো।এখন যাও পড়ে নাও।
কিছুক্ষন পর……
রাগিনী-শুনছো।
রোদ-আবার কী?
রাগিনী-আমি শাড়ি পড়তে পারি না।
রোদ-তো আমি কী করবো?
রাগিনী-পড়িয়ে দাও।
রোদ-উফফ এরকম মেয়ে কেন আমার কপালে জুটলো।
রাগিনী-একটা পড়িয়ে দিলে কী হয়।
রোদ-আমি…..
রাগিনী-তাহলল আমি এই ড্রেসে নিছে চলে যাবো।
রোদ-না দাও পড়িয়ে দিচ্ছি।
রোদ রাগিনীকে শাড়ি পড়িয়ে দিলো।রাগিনী নিছে চলে গেলো।কিছুক্ষনের মধ্যে রোদও নিছে নামলো।
রোদের আম্মু-আমার বউ মা টা তো খুব কিউট।
রাগিনী-শাশুড়ি আন্টি আমি রান্না করবো।
রোদ আর রোদের আব্বু একসাথে না বলে চিৎকার দিয়ে উঠলো।
রোদের আম্মু-শাশুড়ি আন্টি মানে?
রাগিনী-আপনি তো আমার শাশুড়ি আর আমার আম্মু আছে তো।তাই আপনি শাশুড়ি আন্টি।
রোদের আম্মু-পাকা মেয়ে আমাকে আম্মু বলে ডাকবে।আর তোমরা চিৎকার দিচ্ছো কেনো?ও রান্না করুক সমস্যা কী?
রোদ-একবার রান্না খেলে বুজবে ঠ্যালা।
রোদের আব্বু-আরে এত তাড়াতাড়ি কেনো?
রাগিনী-আমি করবো মানে করবো।শাশুড়ি আম্মু…..
রোদের আম্মু-হুম করবা তো।চিৎকার দিয়ো না।চলো আমার সাথে।
রাগিনী চলে গেলো।রোদ রোদের আব্বুর দিকে অসহায়ের মত তাকিয়ে থেকে বললো—-
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
বিয়ে করাবে আমাকে,করাইছো।মেয়ে দেখছো নিজে।মেয়ে অনেক ভালো তাহলে ওই মেয়ে রে কেউ কইছে পালাইতো।এখন এটা কী জুটলো আমার কপালে।
রোদের আব্বু কিছু বলছে না।কিছুক্ষনের মধ্যেই নিশাত নিছে আসলো।
রোদ-বোন টাকা নে,বাইরে খেয়ে নিস।
রাগিনী-কেনো ও বাড়িতেই খাবে।
রোদ-এসে গেছে।
নিশাত-আমার দেরি হয়ে যাবে তো ভাবি।
রাগিনী-কিচ্ছু হবে না।এত পড়ালেখা করে কী হবে।আগে খাবার খাও।
নিশাত-ভাবি মুনতাহা ওয়েট করবে তো।
রাগিনী-মুনতাহাকে ফোন দিয়ে নিয়ে আসো।
নিশাত-না ভাবি দরকার নেই।আমি খাচ্ছি।
রোদ ইশারায় নিশাতকে খেতে নিশেধ করলো,নিশাতও খাবার খাচ্ছিলো না।
রাগিনী-ক্রাশ তুমি বসে আছো কেনো,খাও।
রোদ-সবাইকে ছেড়ে এবার আমারে ধরলো।
রাগিনী-কিছু বললে ক্রাশ বর?
রোদ-না আমি কী বলবো।খাচ্ছি তো।
রাগিনী-হুমম।
খাবার মুখে দিতেই………
।
।
।
।
#ক্রাশের_সাথে_বিয়ে
#পার্ট_০৪
#jannatul_ferdous
খাবার মুখে দিতেই নিশাত,রোদ আর রোদের আব্বু অবাক হয়ে গেলো।
রোদ-খাবার রান্না করলো কে?
রাগিনী-কেনো ভালো হয়নি?
রোদ-না তা না।কিন্তু রনি যে বললো তোমার রান্না ভালো না।
রাগিনী-ওই সব তো আগে করছিলাম।আর আজকে শাশুড়ি আন্টি থুক্কু আম্মু ছিলো তো।আমাকে সব দেখিয়ে দিয়েছে।
রোদ-যাক একটা কাজ অন্তত ঠিক ভাবে করতে পারে।
রাগিনী-আমি আরো কাজ করতে পারি।
রোদ-কী পারো শুনি।
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
রাগিনী-তোমার পিক গুলোতে লাভ রিয়েক্ট দিতে।
রোদ-খেতে পারি,ঘুমাতে পারি তা বললেও হতো।
রাগিনী-ওইটাও পারি।
রোদ-হুম জানি।
রাগিনী-আমি ভাবছি তুমি জানো না।
রোদ-উফফ অসহ্যকর।
রাগিনী-আম্মু।
রোদের আম্মু-ওকে একদম অসহ্যকর বলবি না।
রাগিনী-হুমম।
রোদ-সব দেখি আমার বিরুদ্ধে।
রাগিনী-শ্বশুড় আঙ্কেল বলছিলো তো তুমি এই বাড়ির জামাই।
রোদের আব্বু-রাগিনী শ্বশুড় আঙ্কেল না বাবা বলবা।
রাগিনী-ঠিক আছে।
রোদ-কথাগুলা এত সহজে তোমার মাথায় ডুকে গেলো?
রাগিনী-হুম ডুকছে।
রোদ-ভালোই।
রাগিনী-ক্রাশ বর তুমি আমার ফ্রেন্ড রিকু এখনও ঝুলাই রাখছো।
রোদ-সারাদিন তো এমনিতেই বকবক করে পাগল করে দিচ্ছো।আবার কী দরকার?
রাগিনী-দরকার আছে।
রোদ-(করি আর তিনি আমাকে ওইখানেও বাঁশ দিবে)–মনে মনে।
রাগিনী-কিছু বললে ক্রাশ বর?
রোদ-না আমি কী বলবো?
রাগিনীর আম্মু-আজ তো রিয়া আসবে।রোদ ওকে নিয়ে আসিছ।
রাগিনী-রিয়া কে?
ফেসবুক পেজ: নিঃস্বার্থ ভালোবাসা
রোদ-আমার কাজিন।
রোদের আম্মু-মেয়েটা তো বিয়ের আগেই আসতে চেয়েছে।আসতে পারে নি এখন আসবে বলছে।
রাগিনী-ভালো।
রোদের আব্বু-আজকে আমার কিছু ফ্রেন্ড, রাগিনীর বাড়ি থেকে ওর বাবা মা ভাই আসবে।অনেক মেহমান হবে বাড়িতে।
রাগিনী-আমার আম্মু,আব্বু,ভাই আসবে।
রোদের আম্মু-হুম তোদের পরিবারকে তো ভালো মত চিনিই না তাই আসতে বলছি।
রাগিনী-রিত্ত আসবে না?
রোদের আম্মু-রিত্ত কে?
রাগিনী-আমার ফ্রেন্ড।
রোদের আম্মু-আচ্ছা ফোন দিয়ে আসতে বলো।
রাগিনী-সত্যি আসতে বলবো?
রোদের আম্মু-হুমমম বলো।
রাগিনী সাথে সাথেই ফোন দিলো রিত্তকে।
রাগিনী-ওই হনুমানের বউ কই তুই?
রিত্ত-আমি তো ভার্সিটি যাচ্ছি।
রাগিনী-আজকে আসতে পারবি?
রিত্ত-কই পালিয়ে যাওয়ার পর তো আর কোনো খবর পেলাম না তোর।
রাগিনী-ক্রাশকে বর বানিয়ে নিয়েছি।
রিত্ত-কোন ক্রাশ?
রাগিনী-আমার একমাত্র ক্রাশ।
রিত্ত-সেই রোদ।
রাগিনী-হুম ক্রাশের সাথে বিয়ে হয়ে গেছে আমার।
রিত্ত-তাহলে তোর ক্রাশ বর এখন।
রাগিনী-হুমমম।
রিত্ত-কীভাবে হলো?
রাগিনী-আয় সব বলবো।
রিত্ত-ওকে বিকেলে দেখা হবে।
রাগিনী-হুমমম।
রিত্ত-ঠিক আছে ভালো থাকিস।
রাগিনী-হুম।
রিত্ত ফোন রেখে দিলো।রাগিনী ফোনটা দিয়ে চলে যেতে চাইলে রোদ ডেকে বললো খাবার খেয়ে যেতে।রাগিনী মাথা নেড়ে খেতে বসলো।রোদ উঠে চলে গেলো
রোদের আব্বু-কি রে কি ভাবছিস?
রাগিনী-আমি না রিত্তের হেল্পে বাড়ি থেকে পালিয়েছিলাম।
রোদের আব্বু-তো কি হয়েছে?
রাগিনী-রিত্ত তো এসে আমাকে মারবে।আমি তো বিয়ে করবো না তাই পালাইছি,কিন্তু বিয়ে তো করে পেললাম।
রোদের আব্বু-হাহাহা মেয়ের কী টেনশন।যা তো খেয়ে রুমে যা,সাজগোজ কর।
রোদের আম্মু-দাঁড়া আমি শাড়ি এনে দিচ্ছি।
রাগিনী-আবার শাড়ি।আমি মরে যাবো এই সব শাড়ির প্যারায়।
রোদের আম্মু গিয়ে শাড়ি,জুয়েলারী আনলো।তারপর রাগিনীর হাতে দিয়ে বললো,,,,,,,
রোদের আম্মু-আজকেই শেষ।কাল থেকে তোর যা মন চাইবে তা-ই পরবি।
রাগিনী-ঠিক আছে।
রোদের আম্মু-আমি পরে তোকে শাড়ি পড়িয়ে দিবো।যা এইগুলা সব তোর রুমে রেখে আয়।
রাগিনী-এই ভারি জুয়েলারী গুলা…….
রোদের আম্মু-তুই পরবি,শুধু আজকের দিনের জন্য।
রাগিনী-হুম শুধু আজকের দিন।
রোদের আম্মু-ওকে।
রাগিনী রুমে এসে শাড়ি গুলা বিছানায় রাখলো।
রোদ-এতগুলা শাড়ি।
রাগিনী-আম্মু দিয়েছে।বলছে যেকোনো একটা পছন্দ করতে।ক্রাশ বর প্লিজ হেল্প করো।
রোদ-মানে?
রাগিনী-আমি ফিল্মে দেখি বউ এর শাড়ি বর পছন্দ করে দেই।তুমিও করো প্লিজ।
রোদ-তোমার আবার শুরু।
রাগিনী-প্লিজ।
রোদ-আচ্ছা আয়নার সামনে চলো।
রাগিনী-হুমম ঠিক আছে।
রোদ ড্রেসিং টেবিলের সামনে গিয়ে একটা একটা শাড়ি নিয়ে দেখছিলো।রাগিনী চুপচাপ বসে আছে।
রোদ-এই শাড়িটা তোমাকে ভালো লাগবে।
রাগিনী-সত্যি তো?
রোদ-হুম সত্যি।
রাগিনী-তাহলে এটাই।
রোদ-আমি তোমাকে আবার সাজিয়ে দিবো?
রাগিনী-কিন্তু আম্মু???
রোদ-আম্মু নিছেই বিজি থাকবে,এত কিছু মনে থাকবে না।
রাগিনী-আচ্ছা ঠিক আছে।
রোদ-ওকে দুপুরে সাজিয়ে দিবো।
রাগিনী হেসে উঠলো খুশিতে।রোদ রাগিনীর দিকে তাকিয়ে আছে।
রোদ-(সত্যিই মেয়েটার পিচ্চি পিচ্চি ভাব,দুষ্ট মিষ্টি কথাগুলো আর হাসিটা খুব সুন্দর।যতটা ভেবেছিলাম ততোটা বলদ না)–মনে মনে ভেবে হেসে উঠলো।
।
।
.
।
#________________চলবে________________
।
।
#আপনাদের উৎসাহ পেলে পরবর্তী পার্ট দিবো। সবাই লাইক কমেন্ট করে সাথেই থাকবেন।