#হলিডে
#পর্ব_২৫
হারুন কাতর চেহারা করে ড্রয়িং রুমে বসে রইলো।লাবণী চা নিয়ে এসেছে।
—হারুন ভাই আপনি কি ঠিক আছেন? মানে কোনো সমস্যায় নেই তো?
হারুন লাবণীর কথার জবাব না দিয়ে হাত বাড়িয়ে চায়ের কাপ নিলো। চিন্তিত মুখে চায়ে চুমুক দিলো।
—আপনি কেন এত চিন্তা করছেন বলুন তো ভাই? চিন্তা তো আমার করার কথারে ভাই। আমার এই এক আধমরা টাইপ বিয়ে। তাতে কিনা প্রাইম মিনিস্টারের মেয়ে চলে এসেছে! বিকালে সব কাজ গুছিয়ে একটুখানি ঘুমোতে গেলাম। এর মধ্যে প্রাইম মিনিস্টারের মেয়ে চলে এলো! আচ্ছা, এমনও তো হতে পারে শফিক কাউকে প্রাইম মিনিস্টারের মেয়ে সাজিয়ে নিয়ে এসেছে? কই; এত ভি আই পি বান্ধবী, শফিক নিজেই তো এলো না।
হারুন এবারও কোনো কথা বললো না। সে চিন্তা করছে অন্য দুটো বিষয় নিয়ে। প্রথমত, সেটা হলো তার থাকা নিয়ে, সে রাতে ঘুমোবে কোথায়? সে একদম রাত জাগতে পারে না। রাত জাগলে তার ঘাড়ে ব্যথা করে। আর দ্বিতীয়টা হলো, সেলিনা ম্যাম ফোন করে বলেছেন তিনি সবাইকে নিয়ে এখানে চলে আসছেন৷ রনি সাহেবের অবস্থা খারাপ। তিনি এই নিয়ে তেরোবার বাথরুম গিয়েছেন। হারুন এই খবরটা এখনো কাউকে বলেনি। কাকে বলবে সে বুঝে উঠতে পারছে না। এই বাড়িতে একেকজন একেক সমস্যা নিয়ে ব্যস্ত! এর মাঝে বরের পেট খারাপের খবর বলা কতটা ঠিক হবে? আবার তার সাথে আরেকটা ঝামেলাও সেলিনা ম্যাম নিয়ে আসছেন। সেটা নিয়ে নীরা মা কেমন রিয়েক্ট করে কে জানে!
লাবণী চা শেষ করে সোফায়ই বসে বসে ঘুমিয়ে পড়েছে আবার। হারুন ভ্রু কুঁচকে তাকালো। যার রাত পোহালেই বিয়ে; সে কিভাবে একটু পরপর এমন নিশ্চিন্তে ঘুমিয়ে পড়ছে? হারুনের নিজের বিয়ের এখনো অনেক বাকী। তাও বিয়ের কথা মনে হলে ঘুম হারাম হয়ে যায়। আচ্ছা, লাবণী মেয়েটা কোনো ঘুমের ঔষধ টৌষধ খেয়ে ফেলেনি তো!
নীরা তড়িঘড়ি করে উপর থেকে নেমে এলো,
—চলুন হারুন সাহেব আপনি আমার ঘরে থাকবেন।
হারুন থতমত খেয়ে গেল।
—জি মা… মানে? মানে….স্যার… আমি মানে…
—মানে মানে করার কি আছে? বাবা মেয়ের ঘরে ঘুমোবে, এতে এত চিন্তা করার কি আছে? আসুন বাবা। একটা রাতই তো, আমি ভাবীর ঘরে ঘুমিয়ে নেবো। তবে হ্যাঁ আপনি যে আমার ঘরে ঘুমোবেন, এটা টপ সিক্রেট। কেউ যাতে না জানে। বিশেষ করে আপনার স্যার।
হারুন নীরার যত্নের মানে এইবার বুঝলো।
—নীরা মা গো আমার স্যার কোথায় থাকবেন?উনার কি ব্যবস্থা হলো?
নীরা ঘরে এসে হারুনের ব্যাগটা প্রায় আছার মেরে ফেললো।
—আপনার স্যার জাহান্নামে থাকবেন। সব ঝামেলার মূল আপনার স্যার, বুঝলেন? হি ইজ দ্য মেইন শয়তান। তার জন্যই তো এত সমস্যা। একদিনের বিয়ে, তাতেই উনি নাইওর চলে এসেছেন। এক কাজ করুন, তাঁর হাবিগুষ্ঠিকে নিয়ে আসতে বলুন না। যে যে আছে, সবাইকে নিয়ে আসতে বলুন। আমরা তো এখানে হোটেল খুলে বসে আছি।
সর্বজনীন পেট-ভাত হোটেল।
নীরা রাগে গরগর করতে করতে বেরিয়ে গেল।
হারুন বিব্রতভাবে নীরার পিছন পিছন আসছে।
নীরা ঘাড় ফিরিয়ে তাকালো এবং ঝাঁঝালো গলায় বললো,
—আবার কি হলো? পিছু ধরেছেন কেন? আপনার থাকার ব্যবস্থা তো করে দিলাম।
—ইয়ে মানে, একটা কথা ছিল।
—খাবার চাই তো? পেয়ে যাবেন। আপনার স্যারকেও ঘর দিয়েছি। আর কিছু?
—নীরা মা, আরো ঘর রেডী করতে হবে! স্যারের বাবা-মা’ও আসছেন।
নীরা হাঁটা বন্ধ করে সটান দাঁড়িয়ে পড়লো।
—আপনার স্যারের মা-বাবাও আসছেন?
—জি নীরা মা। রনি সাহেবকে সাথে নিয়ে আসছেন।
—রনি ভাইকে নিয়ে আসছেন আপনার স্যারের মা-বাবা?
—জি নীরা মা। আসলে রনি সাহেবের ভীষণ পেট খারাপ করেছে। এত খারাপ যে কাল ওখান থেকে বরযাত্রী আসতে পারবেন কিনা… তাই। সেলিনা ম্যাম অবশ্য বলেছেন, তিনি হাই ডোজ এন্টিবায়োটিক দিয়ে দিয়েছেন।
নীরা হারুনের দিকে একদৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। হারুন কি বলছে? সব এত পাকিয়ে যাচ্ছে কেন? তামিমের মা বাবা.. তার সাথে রনিভাই কেন? আবার রনি ভাই’র পেট খারাপই বা করলো কেন? নীরা নিশ্চিত হবার জন্য আবারও জিজ্ঞেস করলো,
—আপনার স্যারের মা-বাবা আসছেন?
—জি, স্যারের দুই-বোনও আসছেন। এনাফ রুম আছে তো মা? খাবার দাবার নিয়ে অবিশ্যি কোনো সমস্যা হবে না। সেলিনা ম্যাম একগাদা রান্না করে নিয়ে আসছেন।
—সেলিনা ম্যামটা কে? আপনার স্যারের মা?
—ও মাই গড, নীরা মা সেলিনা ম্যামকে আপনি চিনতে পারছেন না! তামিম স্যারের মা’ই তো।
নীরার মেরুদণ্ড দিয়ে ভয়ের একটা শীতল স্রোত বয়ে গেল। তার মাথা ঘুরছে। সে প্যাসেজের রেলিং ধরে নিজেকে সামলে নিয়ে দাঁড়ালো। সেলিনা ম্যাম খুনতি নিয়ে তাকেই খুজেছিলেন সেদিন।
—আমাকে এক গ্লাস পানি দিন তো হারুন সাহেব! খুব গলা শুকিয়ে আসছে।
হারুনের পানি আনার সুযোগ হলো না। এর মধ্যে লাবণী চলে এসেছে।
—নীরা, নীরা…. খবর শুনেছো, সবাই এসে পড়েছে।আর ছাগলটা বিয়ের আগেই ডায়রিয়া বাঁধিয়ে ফেলেছে। দুদিন পর এই গাধাটা নাকি ডাক্তার হবে! চিন্তা করো, রসমলাই খেয়েছিল। তারপর থেকে ডায়রিয়া! আমি তো বলি, গরুটা কয় মণ রসমলাই খেয়েছিল বলো তো? রসমলাই কি জীবনে দেখেনি?বাটিসুদ্ধ খেয়ে নিয়েছে কিনা, কে জানে? এরকম হলে হয় বলো? আমি এই ক্যাঙ্গারুটাকে নিয়ে কিভাবে সংসার করবো? এ তো রসমলাই মনে করে আমাকেও খেয়ে নেবে।
হারুন এগিয়ে এসে বললো,
—লাবণী ম্যাম আপনি আগে কনফার্ম করুন রনি সাহেব গরু, না ছাগল, গাধা নাকি ক্যাঙ্গারু! আসলে আপনি একেকবার একেকটা বলছেন। দেখুন একটা মানুষ একইসাথে এতগুলো প্রাণী তো আর হতে পারেন না। উই শুড বি কেয়ারফুল টু আওয়ার ল্যাংগুয়েজ! নীরা মা, আপনার কথা বুঝতে পারছেন না। দেখুন তিনি কেমন হা করে তাকিয়ে আছেন।
লাবণী কড়া গলায় বললো,
—নীরা, তোমার এই পালিত পুত্রকে কথা বলতে মানা করো তো! আমি নাহলে কি করবো, জানি না। আমার হবু স্বামী টয়লেট করতে করতে মরে যাচ্ছে, ইনি আমার কথার ভুল ধরতে আসছেন। উনি কি কথার ব্যাকরণ?
নীরা কোনোরকমে গলার স্বরটা টেনে টেনে বললো,
—আপনার স্যারের মা হলেন সেলিনা মেডাম। ইতুরও মা, ঠিক? আপনি শিওর তো হারুন সাহেব?
হারুন হ্যাঁ সূচক মাথা নাড়লো।
—নীরা, তুমি তাড়াতাড়ি নিচে আসো। গাধাটা এতক্ষণে হয়তো আবার টয়লেটে।
লাবণী যেমন ছুটে এসেছিলো তেমন আবার চলে গেল! হারুন মুগ্ধ হয়ে তাকিয়ে আছে। আহারে লাবণী মেয়েটা তাঁর হবু স্বামীর জন্য কেমন ব্যাকুল হয়ে ছুটছে। আর এদিকে দেখো, নীরা মা স্যারকে পাত্তাই দিচ্ছে না। কথায় কথায় ধমক!
নীরা এখন কি করবে? তার কি লুকিয়ে পড়া উচিত? সেলিনা ম্যাম নিশ্চয়ই তাকে এমনি এমনি ছেড়ে দেবেন না। মাথাপাগলটা কি তাঁর মাকে বলে দিয়েছে, নীরাই তার বউ! উফ্, এত টেনশান আর নেওয়া যাচ্ছে না।
নীরা সোজা এসে তামিমের ঘরে ঢুকলো এবং ঢুকেই চোখ বন্ধ করে ফেললো। এই লোকটা সবসময় এত বিপজ্জনক সেজে থাকে কেন?
তামিম গোসল করে নিয়ে তোয়ালে পরে খালি গায়ে দাঁড়িয়ে আছে। নীরাকে দেখে যেন মহাউৎসাহে এগিয়ে এলো
—ইশ্ নীরা, এবার কিন্তু আমার সত্যিই লজ্জা করছে। একটু নক টক করে আসবে তো! তোমাদের বাড়ি বলে কি আমার কোনো প্রিভেসি নেই নাকি?
নীরা কোনো কথা বলল না। আহারে কি প্রিভেসি! দরজা হাট করে খোলা, উনি তোয়ালে গায়ে গান গেয়ে বেড়াচ্ছেন!
—আপনার সাথে আমার জরুরী কথা আছে। আমি যাস্ট দশ মিনিট সময় নেবো। আপনি যান তোয়ালে খুলে আসুন।
নীরা এক নিঃশ্বাসে কথাগুলো বলে ঘুরে দাঁড়ালো।
তামিম মাথায় হাত দিয়ে এসে নীরার গা ঘেষে দাঁড়ালো।
—তোয়ালে খুলে আসবো? দাঁড়াও, দরজা লাগিয়ে দিই আগে। আমি তো একটু পরই তোমার ঘরে যেতাম।
তামিম সত্যি সত্যিই দড়াম করে দরজা আটকে দিলো। দরজা বন্ধের শব্দে নীরা একটু কেঁপে উঠলো যেন। উফ্ এত নার্ভাস লাগার তো কথা ছিল না। নীরা তো সব কিছু ফেইস করতে জানে৷ তাহলে? করুক দরজা বন্ধ, নীরা এরকম ন্যাঁকা ন্যাঁকা ব্যাপারে একটুও বিচলিত হবে না।
—দরজা বন্ধ করার মানে কি? এসব ভয় দেখিয়ে লাভ নেই।
—দরজা বন্ধের সাথে ভয় দেখানোর কি আছে? তুমি যে কি বলো না? আমার লজ্জা করছিলো। বউ নিয়ে প্রথম এক ঘরে তো, তাই!
নীরার সামনেই তামিম দিব্যি আয়েশ করে গায়ে কিছু একটা মাখলো। চুল নিয়ে কিছুক্ষণ ঘাটাঘাটি করলো৷ চোখের ভ্রু ঠিক করলো। রাগে নীরার গা কিড়কিড় করছে। সে ঠোঁট কামড়ে রাগ সামলাচ্ছে। বিয়ে বাড়ি, কিছুতেই মাথা গরম করা যাবে না। ঠান্ডা মাথায় বুঝাতে হবে। এই মাথাপাগলের কোনো ভরসা নেই।
একটা লম্বা শ্বাস নিয়ে নীরা যথাসাধ্য স্বাভাবিক কণ্ঠে বললো,
—আপনার সাজগোজ শেষ হয়েছে? আমি কি কথা বলবো?
তামিম জবাব দিলো না। সে হাতে ক্রিম নিয়ে মুখে ঘষাঘষি করছে। নীরা শক্ত হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। এই লোকটা তাঁর স্বামী? এরকম পাগল! খালি গায়ে একদম হাসিখুশি দাঁড়িয়ে। কি বেহায়ারে বাবা! এর কি ধারণা এরকম পাগলামোর নাম অনুভূতি?
তামিম তোয়ালেটা খুলে নিয়ে বাঁধলো আবার।
—বলো কি বলবে?
—হুঁ বলছি…..
উফ্ বারবার কেন চোখ চলে যাচ্ছে? নীরা ভেতরে ভেতরে এত অস্থির কেন বোধ করছে? শ্বাসকষ্ট হচ্ছে নাকি এই ঘরে অক্সিজেন কম? বুকের ভেতরে ঢিপঢিপ হচ্ছে বেশ। মাথা কি ঝিমঝিম করছে? রাগের জন্য নাকি অন্য ব্যাপার? একছুটে এঘর থেকে বেড়িয়ে গেলেই তো হয়! কিন্তু সেটা করা বেকুবি হবে।
নিজেকে স্থির রাখতে নীরা বিছানায় বসলো। কাঁপা কাঁপা স্বরে বললো,
—আপনার মা তাঁর ছেলের বউটা কে, জানেন?
তামিমও নীরার পাশাপাশি বিছানায় এসে বসলো। বসে এক পায়ের উপর আরেক পা তুলে দিলো। আর তাতে রোমশ ফর্সা পায়ের বেশিরভাগটাই উরু পর্যন্ত দেখা যাচ্ছে। নীরার কানের ভেতরে শাঁ শাঁ শব্দ হচ্ছে। বুকের ঢিপঢিপটা কি আরো বেড়ে গেছে?
নীরা একটু সরে বসলো।
—জানে না। তবে আজ জানবে। আমি মাকে বলেছি, বিয়েতে আমার বউ আসবে।
তামিম আরেকটু কাছাকাছি আসলো নীরার।
নীরা বিছানায় পা তুলে নিয়ে গুটিশুটি মেরে বসলো এবার।
তামিম নীরার হাত দুটো বদ্ধ রেখে শক্ত করে জড়িয়ে ধরলো একপাশে থেকে। নীরা কোনো প্রতিবাদ করলো না। তীব্র একটা পারফিউম স্মেল নাকে লাগছে তাতে। পাগলটা কি সব সেন্ট ঢেলে নিয়েছে গায়ে? নীরা চোখ বন্ধ করে ফেললো। চোখ বন্ধ রেখেই বললো,
—আপনি আপনার মা’কে সামলে রাখবেন, তিনি যাতে কোনোভাবেই আমার কথা না জানতে পারেন। তিনি যে একটা কান্ড ঘটাবেন আপনি জানেন নিশ্চয়ই। তাই প্লিজ! ঠিক আছে?
—আমি তোমার কথা শুনবো কেন? আমার লাভ কি এতে?
তামিম ততক্ষণে আরো ঘনিষ্ঠ হয়ে গেছে নীরার।
সমস্ত শরীর থরথর করে কাঁপছে নীরার। বাঁধা দেবার কোনো শক্তি কেন পাচ্ছে না সে? এত নিস্তেজ লাগছে কেন? চোখও ঝাপসা লাগছে।
নীরা প্রায় ফিসফিস করে বললো,
—দেখুন ওটা কোনো বিয়ে ছিল না। এই পাগলামোর মানে হয় না। আপনি আপনার মাকে বলবেন, আপনি বিয়ে ফিয়ে করেননি। তাকে মিথ্যা বলে খেপিয়েছেন। আপনি এমনটা করেননি। ছাড়ুন আমাকে।
নীরা উঠে দাঁড়াবার চেষ্টা করলো। তামিম চেপে ধরে আছে তাকে। নীরার গা কাঁপছে। মন ভেঙে যাচ্ছে। এই যে এত জোর করছে তামিম, এতে রাগ হচ্ছে না কেন? সে কি গলে যাচ্ছে?
নীরা আলতো করে তামিমের হাতটা ছাড়িয়ে দিলো। তামিম তাতে যেন একটু অসহায় চোখে তাকালো। তবে এক হাতে নিজের মাথার চুল টেনে ধরলো। চোখ দুটো যেন রক্তলাল হয়ে গেছে। দ্রুত নিঃশ্বাস পড়ছে তাঁর। বিড়বিড় করে বললো,
—ইউ আর গেটিং মি রং নীরা। গেটিং মি রং।
—আমাদের বিয়েটা কোনো বিয়ে না। সো আপনার মাকে এই মিস পজিশন থেকে বের করে আনুন।
নীরা একটু মৃদু করে ঠেলে দিলো তামিমকে।
তামিম বসা থেকে শুয়ে পড়লো এবার। দু-হাতে কপাল চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে আছে সে। নাকের পাশটা ঘেমে একাকার তাঁর। বুকের ওপর বিন্দু বিন্দু ঘাম।
নীরা সেদিক থেকে দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলো। চলে যাওয়া দরকার এখন।
—আমি তোমার কথা শুনলে কি দেবে নীরা?
নীরা খুব সাবধানে বিছানা থেকে নামলো।
তামিম বাঁ-হাতে ওড়না টেনে ধরেছে। তবে তাঁর চোখ বন্ধ। নীরা ওড়নাটা খুলে নিয়ে সম্পূর্ণটা তামিমের হাতে গুঁজে দিয়ে বললো,
—দেওয়ার মতো কিছু নেই আমার কাছে সত্যি, আপনি কেন বুঝেন না! থাকলে অবশ্যই দিতাম। তবে এখন এই ওড়না ধরে টানছেন যেহেতু, এটা দিয়ে দিলাম।
নীরা আর এক মুহূর্ত সেখানে দাঁড়ালো না। দরজা খুলে একছুটে বেরিয়ে এলো। এত কেন কান্না পাচ্ছে তার?
এরকম বুক ভেঙে যাচ্ছে কেন? এত কষ্ট কেন? এত ব্যথা…..
(চলবে)
#তৃধা_আনিকা