তবু মনে রেখো (৪র্থ পর্ব)
.
ইমাদ দাঁত ব্রাশ করতে করতে বাইরে চলে গেল। সাবিনা বেগম মেয়েকে বললেন,
– ‘হাত-মুখ ধুয়ে নে মা, নাশতা কর উঠে।’
পুষ্পিতা ঠোঁট দেখিয়ে বললো,
– ‘পানি লাগলে জ্বলবে মনে হয় মা। কাল রাতে বৃষ্টির সময় বারান্দায় গিয়েছিলাম। তখন ইমার মাথায় ঢুস লেগে এই অবস্থা।’
– ‘বলিস কিরে, এখন তো খেতেও পারবি না। কিছু দিয়েছিস ঠোঁটে?’
– ‘না, ওরা এমনিতে গরম পানি দিয়ে ঠোঁট পরিষ্কার করে দিয়েছে।’
– ‘ইমাদ বাবাকে বলে ডাক্তার আনাই তাহলে।’
– ‘তার দরকার হবে না মা, কমে যাবে।’
ইমা নাশতা নিয়ে এসে বললো,
– ‘মুখ ধুয়ে নাও ভাবি। তোমার জন্য জাউ করেছি। অন্যকিছু খেলে ঠোঁটে জ্বলবে।’
সাবিনা বেগম মিষ্টি হেঁসে বললেন,
– ‘দেখো ইমা এই বয়সেই সবকিছু শিখে গেছে। তোমারও এখন শেখা লাগবে। ইমা এখন থেকে ওকেও রান্নাঘরে নিয়ে যেও।’
– ‘আচ্ছা আন্টি।’
পুষ্পিতা মুখ ধুতে চলে গেল। ইমাদ এসে নাশতা করে কাপড় পালটে চলে গেল বাজারে। দুপুরের আগেই কর্মচারীকে খেতে পাঠালো। সে খেয়ে আসতেই ইমাদ দোকান থেকে বের হলো। ফার্মেসিতে গিয়ে পুষ্পিতার ঠোঁটের কথা বলে জোহরের আগেই সে ওষুধ নিয়ে বাড়ি ফিরে। মুহসিন সাহেব এসেছেন। তার বাবার সঙ্গে বসে গল্প করছেন। পুষ্পিতা আর সাবিনা বেগম ইমার রুমে। সে ইমার কাছে ওষুধ দিয়ে বললো, ‘নিয়ম লেখা আছে।’
ইমা মাথা নেড়ে চলে যায়। ইমাদ লুঙ্গি, সাবান নিয়ে পুকুরে যায় গোসল করতে। তখনই দেখতে পেল বাড়ির রাস্তা দিয়ে ঢুকছেন তার বড়ো মামা মতিন মিয়া আর রশিদা খালা। তার সঙ্গে কোনো কথা না বলেই তারা বাড়িতে ঢুকে গেলেন। রশিদা বেগম বারান্দায় পা দিয়েই বললেন,
– ‘এই বাড়িতে আজ আমার বইন জীবিত থাকলে এমন কাণ্ডকারখানা হইত না৷ কি এমন জমিদারের মাইয়া আনছো৷ পাশের গ্রামে থাইকাও খালা হইয়া জানলামই না কিচ্ছু৷ আমাকে না হয় নাইই বললা আমি তো বাদই। পোলার বড়ো মামা তো এখনও জীবিত আছে। তারেও তো একবার মুখ দিয়ে বলা হয়নি।’
হায়দার সাহেব ঘর থেকে তাড়াতাড়ি বের হয়ে এলেন। মতিন মিয়াকে দেখে বললেন,
– ‘ঘরে আসেন ভাইসাব। বসেন আগে তারপর কথা।’
তিনি আরও চড়াও হয়ে বললেন,
– ‘এসেছি যেহেতু বসবোই তো। তার আগে জবাব দেন আমাদেরকে কিছু না জানিয়ে ছেলেকে কেন বিয়ে করালেন। শুনেছি মেয়ের চরিত্র ভালো না৷ যে মেয়ে বাপ-দাদার ইজ্জতের মূল্য বুঝে না৷ তাকে জোর করে বিয়ে করালেন কেন? আপনি জানেন না? আমার মরা বোনের ইচ্ছা ছিল রশিদার মেয়েকে বউ করে আনবে? রশিদার মেয়ে কোনদিক থেকে এই মাইয়া থেকে খারাপ আছিল? সব খবরই তো পাইছি আমরা।’
হায়দার সাহেব আস্তে আস্তে বললেন,
– ‘বাড়িতে মেহমান আছে। আস্তে কথা বলেন ভাইসাব।’
– ‘হ্যাঁ বিয়ে বাড়িতে তো মেহমান থাকবোই। আমরা তো ছেলের কিছুই ছিলাম না, তাই মেহমান হতে পারিনি।’
রশিদা বেগম বললেন,
– ‘আমরা থাকলে তো ছেলেরে এমন মাইয়া বিয়া করতে দিতাম না। তাই এরকম করা হইল। আজ আমার বইন জীবিত থাকলে এই কাণ্ড হইতে দিত না।’
হায়দার সাহেব রেগে গিয়ে বললেন,
– ‘এত কথার কি হল বুঝলাম না। আমি আমার ছেলের ভালোমন্দ বুঝি৷ ভাইসাবকে এত সংবাদ কে দিল আমি বুঝি না না-কি?’ তারপর খানিক থেমে রশিদা বেগমের দিকে আঙুল তুলে বললেন,
– ‘তুইই তো দিয়েছিস এই সংবাদ? না হলে কাগজপুর থাইকা এতকিছু জানলেন কি করে? তোর এতো জ্বলুনি শুরু হইছে কেন সেটা তো আমি জানি। তোর মেয়েকে আমার ছেলের কাছে গছাতে পারসনি বলেই এত চিল্লাপাল্লা শুরু করেছিস।’
রশিদা বেগম আরও চড়াও হয়ে বললেন,
– ‘মুখ সামলে কথা বলবা কইলাম৷ আমার মেয়ে কোনো পোলার লগে চলে যায়নি যে তাকে গছানো লাগবে।’
ইমা রান্নাঘর থেকে তাড়াতাড়ি বারান্দায় এসে বললো,
– ‘প্লিজ তোমরা থামো, কি শুরু করছো তোমরা? ওরা ভেতর থেকে সব শুনতে পাচ্ছে।’
হায়দার সাহেব রেগে বললেন,
– ‘তোর মামা-খালাকে বল এই বাড়ি থেকে বের হতে। এরা এসেছেই ঝামেলা করার জন্য৷ যারা মৃত বোনের লাশ ঘরে রেখে ঝামেলা করতে পারে। এরা আবার অন্যের মান-ইজ্জৎ কি বুঝবে।’
মুহসিন খান ম্লান মুখে ঘর থেকে বের হয়ে এসে বললেন,
– ‘আমি এখন যাই, হায়দার। বাড়িতে একটু কাজ আছে।’
তিনি ওদের জবাবের অপেক্ষা না করে মাথা নীচু করে ঘর থেকে বের হয়ে গেলেন। ইমাদ ঘাট থেকে সব শুনতে পাচ্ছে। সে কি করবে বুঝতে পারছে না। মুহসিন সাহেব পুকুর পাড় দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন। সে সিঁড়িতে বসে তাকিয়ে আছে। মানুষটাকে কেমন ক্লান্ত-বিধ্বস্ত দেখাচ্ছে। ওদিকে এখনও তর্ক-বিতর্ক থামেনি। মায়ের মৃত্যু নিয়ে দুই পরিবারের পুরোনো বিবাদ আছে৷ আবার মা চাইতেন রশিদা বেগমের মেয়েকে তার জন্য আনতে। তাই এতো চড়াও হয়েছে ওরা। হায়দার সাহেব অনেকটা তাড়িয়ে দিলেন রশিদা আর মতিন সাহেবকে। পুকুর পাড় দিয়ে রাগে ফুঁসতে-ফুঁসতে ওরা বের হয়ে গেল।
ইমাদ গোসল করে এসে রুমে গিয়ে দেখে পুষ্পিতা বালিশে মুখ গুঁজে ফুঁপিয়ে-ফুঁপিয়ে কাঁদছে। ইমাদ কার উপর রাগ করবে ঠিক বুঝতে পারছে না। তার বাবা যে নাটকের রূপ দিয়েছেন সেটা পুরোপুরি ইমাদের নিজের হাতে। সে চাইলেই পুষ্পিতাকে বুকে টেনে নিতে পারে। বাবার কিছুই করার নেই। তাছাড়া টেনে না নিলেও সবকিছু খেয়াল করছে সে। এখানেও কোনো অসুবিধা হচ্ছে না৷ সবকিছু পুষ্পিতারই কপাল কিংবা কর্মফল। তার বাবা যদি এই বিয়েতে রাজি নাও হতেন। সে যদি একাই বিয়ে করতো। তখনও এসব কথা শুনতে হতো তাকে। এগুলো হওয়ারই ছিল। কষ্ট পাক, কষ্ট পাওয়া ভালো। সোনা পু’ড়তে পু’ড়তে যেমন খাঁটি হয়। মানুষও দুঃখ-কষ্ট পেতে পেতে পরিপক্ব মানুষ হয়। তবুও পুষ্পিতার কান্না তাকে কষ্ট দিচ্ছে। একবার মাথায় হাত দিয়ে কি সান্ত্বনা দেবে? ইমা এসে ঢুকলো রুমে। মাথায় হাত রেখে বললো,
– ‘বাদ দাও ভাবি। অন্যের কথায় মন খারাপ করো না। খাবে এসো। আন্টিও চলে গেছেন তোমার কান্না দেখে।’
পুষ্পিতা কান্না বন্ধ করলো না। ইমা তাকে টেনে তুলে বসালো। চোখ-মুখ লাল হয়ে গেছে।
– ‘আসো, আমার সঙ্গে আসো।’
ইমা তাকে ধরে ধরে নিয়ে গেল খাওয়ার টেবিলে। হায়দার সাহেব ঘরে নেই। বাইরে কোথাও চলে গেছেন। ইমাদ এসে চুপচাপ খেতে বসেছে। ইমা পুষ্পিতার প্লেটে ভাত দিতে গেলে সে বাঁধা দিল।
– ‘আমি তোমাদের সাথে বসে আছি, খেতে ইচ্ছা করছে না।’
– ‘কেন, বললাম না এগুলো বাদ দাও ভাবি।’
– ‘না আসলে ঠোঁটে জ্বলবে তাই ইচ্ছা করছে না খেতে।’
ইমাদ শীতল চোখে মাথা তুলে তাকিয়ে বললো,
– ‘তুমি হাত দিয়ে মাখিয়ে চামচ দিয়ে খাও, তাহলে হয়তো ঠোঁটে কম লাগবে।’
পুষ্পিতা কিছু বললো না। ইমা পুনরায় বললো,
– ‘তাহলে খিচুড়ি দেই আবার?’
– ‘না থাক, চামচ দিয়েই খেয়ে দেখি।’
ইমাদের খাওয়া শেষে বললো,
– ‘ইমা আমি বাজারে যাচ্ছি। আর ওষুধ খাইয়ে দিস মনে করে।’
ইমা ভেংচি কেটে বললো,
– ‘আমি কেন খাইয়ে দিব? তোমার বউ বেবি না-কি।’
ইমাদ জবাব না দিয়ে চলে যায়। বাড়িতেই জোহরের নামাজ পড়ে বাজারের উদ্দেশ্যে বের হয়। কিন্তু দোকানে গিয়ে কোনোভাবেই মন বসছে না। সারাক্ষণ পুষ্পিতার কথা মনে পড়ছে। ওর ফুঁপিয়ে-ফুঁপিয়ে কান্না কানে ভাসছে। তাই আসরের আজানের আগেই বাজার থেকে বাড়ির উদ্দেশ্যে বের হয়ে পাড়ার মসজিদে নামাজ পড়ে বাড়িতে চলে এলো। ইমা অবেলায় পড়তে বসেছে। পুষ্পিতা বিষণ্ণ মনে পালঙ্কে হেলান দিয়ে বসা। ইমাদ রান্নাঘরে চলে গেল। চা জ্বাল দিয়ে ট্রে-তে করে হায়দার সাহেব এবং ইমাকে দিয়ে রুমে এলো।
– ‘নাও চা খাও।’
পুষ্পিতা কোনো কথা না বলে হাত বাড়িয়ে চা নিল। পুষ্পিতার মলিন মুখ দেখে হঠাৎ মাথায় কিছু একটা আসে তার। একটানে চা শেষ করে বাইরে চলে যায়। ফিরে আসে মিনিট তিরিশেক পর। ইমার দরজায় গিয়ে বললো,
– ‘বিদ্যাসাগর, রহিম চাচার খোলা নাও এনেছি। বিলে যাবি না-কি?’
ইমা উচ্ছ্বসিত হয়ে বললো,
– ‘ওয়াও যাব৷ বিলে প্রচুর শাপলা ফুল ফুটেছে।’
– ‘যা পুষ্পিতাকে নিয়ে আয়।’
ইমা চুল ভালোভাবে খোঁপা করে ওড়না মাথায় তুলে পুষ্পিতাকে গিয়ে বললো,
– ‘চলো ভাবি বাইরে যাবে।’
– ‘বাইরে কোথায়?’
– ‘জানি না আমি শুধু তোমার বরের আদেশ পালন করতে এসেছি।’
পুষ্পিতার পরনে শাড়ি। সাবিনা বেগমই ভোরে গোসলের পর পরিয়ে দিয়েছিলেন। শাড়ির আঁচল ভালোভাবে মাথায় তুলে বের হয় পুষ্পিতা। বাড়ির পেছনে গিয়ে দেখে বৈঠা হাতে নাওয়ের গলুইয়ে ইমাদ বসে আছে। ইমা দুষ্টামি করে বললো,
– ‘সাঁতার তো জানো না। আজ ভাইয়া বিলে নাও ডুবিয়ে মা’রতে নিচ্ছে।’
পুষ্পিতা স্মিথ হাসলো। প্রথমে ইমাকে হাত ধরে তুললো ইমাদ।
– ‘চুপচাপ বসে থাক, এমনিতেই নাও নড়ে বেশি।’
– ‘ডুবলে আমার কিচ্ছু হবে না, আমি সাঁতার জানি। নিজের বউয়ের চিন্তা করো।’
ইমাদ এবার হাত বাড়িয়ে দিল পুষ্পিতাকে। রাতের ছোঁয়াগুলো ছিল অনেকটাই অবচেতনে। এখন যেন তার বুকটা শিরশির করছে। পুষ্পিতা হাত বাড়ালে সে ওর কোমল হাতটা মুঠোয় নেয়। বাঁ হাতে শাড়ির কুঁচি ধরে পুষ্পিতা উঠে ইমার পাশে গিয়ে বসে। সামনে আয়নার মতো স্বচ্ছ টলমলে জল। সেখানে ছায়া পড়েছে মেঘের, দূরের গাছগাছালির। এই বিলের পরেই হাওর, এরপর গ্রাম। হাওর আর বিলের পানি এখন সমান হয়ে আছে। এই টলমলে বিলের পানির শেষ দূরের ওই সবুজ গ্রামে। গ্রামটিকে এখান থেকে দেখে মনে হচ্ছে পানিতে ভেসে আছে। বৈঠার টানের সঙ্গে নাও নড়ে উঠে। ছলাৎ ছলাৎ শব্দের সঙ্গে তখন পুষ্পিতার বুকও দুরুদুরু করে কাঁপে। তবুও ভালো লাগে, অন্যরকম এক ভালো লাগা। চারপাশে জল, লোকালয় বলতেই দেখা যায় সবুজ গাছগাছালি। তাদের পাশ দিয়ে একপাল সাদা হাস ‘প্যাক প্যাক’ করে যাচ্ছে। পুষ্পিতার সঙ্গে মোবাইল নেই। ইচ্ছা করছে সবকিছু ক্যামেরায় বন্দি করে নিতে। আপাতত সেই সুযোগ নেই। কেবল আছে নিজস্ব ক্যামেরায় বন্দি করার সুযোগ। মানুষের চোখ সেই ক্যামেরা। সেই ক্যামেরায় ধারণ করা কিছু কিছু ছবি মৃত্যু পর্যন্ত হারায় না। নাও বহুদূর চলে এসেছে। পড়ন্ত বিকেল। সূর্য মেঘের আড়ালে হারিয়ে যেতে শুরু করেছে। পুষ্পিতা তাকালো সেদিকে। সূর্য মেঘের আড়ালে যাওয়ায় পুরো আকাশটাই রঙিন করে রেখেছে। ক্রমশই অপূর্ব সব রঙ ধারণ করছে আকাশ। সেগুলোর ছায়া পড়ে বিলের পানিও রঙিন হয়ে গেছে। পুষ্পিতা চারদিকে তাকায়। এ এক অলিক জগতে যেন চলে এসেছে সে। ওই দূরের গ্রামের সবুজ গাছের উপর এখন এক টুকরো মেঘ লাল হয়ে আছে। যেন কেউ নিজ হাতে মেঘের গায়ে লাল সিঁদুর পরিয়ে দিয়েছে। তারা বিল পেরিয়ে এবার চলে এলো হাওরে। ইমা আঙুল দিয়ে দেখিয়ে বললো,
– ‘ওই দেখো কত শাপলা ফুটেছে ভাবি।’
পুষ্পিতা অস্ফুটে ‘ওয়াও’ বলে উঠলো। নাও গিয়ে ঢুকলো অসংখ্য অগণিত শাপলা ফুলের মাঝখানে। তিনটা সাদা বক উড়াল দিল তখনই৷ পুষ্পিতা অবাক হয়ে বললো,
– ‘এখানে বক ছিল?’
ইমা মুচকি হেঁসে বললো,
– ‘ওই দেখো আরেকটা শাপলা গাছের পাতায় বসে আছে।’
পুষ্পিতা হাত বাড়িয়ে জল মুঠোয় নিয়ে ছুড়ে মারতেই উড়ে গেল শেষ বকটিও।
ইমা সামনে তাকিয়ে মুগ্ধ হয়ে বললো,
– ‘বাহ এখানে নীল ফুলও আছে। আমি ভেবেছিলাম শুধু সাদা আর গোলাপি থাকবে। ভাইয়া ওই নীল ফুলটা এনে দাও না।’
ইমাদ এবার বৈঠা রেখে লগি দিয়ে ভর দিয়ে সেদিকে গেল। নাও নিয়ে ফুলের কাছে রেখে বললো,
– ‘নিজেই নে হাত বাড়িয়ে।’
ইমা হাত বাড়িয়ে টেনে আনলো ফুলটি। পুষ্পিতা তার পাশে সাদা ফুল দেখে নিজেও টেনে তুললো নৌকায়৷
ইমাদ কয়েকটা ভ্যাট ছিঁড়ে এনে ভালোভাবে ধুয়ে বললো,
– ‘খাবি ইমা?’
– ‘ওয়াক, না, ভ্যাট খেতে ভালো লাগে না। ভাবিকে দাও।’
ইমাদ ছুড়ে দিল ওর কোলে। পুষ্পিতা হাতে নিয়ে বসে থাকলো। ইমাদ একটা ভ্যাটের সবুজ আবরণ তুলে দেখে ভেতরের দানাগুলো মুড়ির মতো সাদা হয়ে আছে। পুরো সবুজ আবরণ ফেলে দিল। দেখে মনে হচ্ছে ছোট্ট সাদা একটা ক্রিকেট বল। এবার পুরোটাই সে মুখে পুরে দিল। পুষ্পিতা তাকিয়ে আছে। এক গাল ফুলে যাওয়ায় ইমাদকে এখন অদ্ভুত দেখাচ্ছে। পুষ্পিতা অন্যদিকে মুখ ফিরিয়ে মুচকি হাসছে।
__চলবে…
লেখা: জবরুল ইসলাম