বৃষ্টির_রাতে #রূবাইবা_মেহউইশ (১১)

0
456

#বৃষ্টির_রাতে
#রূবাইবা_মেহউইশ
(১১)

কোট কাচারির যুগেও গ্রামে সালিশ বসেছে। দয়াগঞ্জ এর মুরুব্বিরা সব নয়া গঞ্জে এসে উপস্থিত হয়েছে। এখন আর দোররা মারার যুগ নেই তবুও কেউ কেউ ওৎ পেতে আছে মারপিটের একটা পর্ব তৈরি করতে। এমন অবশ্য আসামী, বাদী নয় আশপাশের মানুষরাই সুযোগ খুঁজছে। টিয়ার পরিবার হিংস্র রাগ নিয়ে আসলেও তারা মেয়েপক্ষ জেনে বুঝে মেয়ে ফেরত নিয়ে ঝামেলা নিজেদের জন্য বাড়াবে না। আর মুরাদের পরিবারেও পুরুষ মুরুব্বি বলতে কেউ নেই। আত্মীয় স্বজনরা আছে কিন্তু তারা কেউ ঝামেলায় এগিয়ে আসতে চায়নি। মুরাদের মা বিধবা মানুষ একা কার কার সাথে তর্কে যাবেন তাই মাথা নিচু করে পুরুষদের চেয়ে একটু দূরে দাঁড়িয়ে আছেন। আসামীর মত শুধু মুরাদ নয় রিমন আর সুমনও দাঁড়িয়ে আছে সবার সামনে। টিয়াকে রাখা হয়েছে তার পরিবারের মানুষদের সাথে। মুরাদ একটুও ঘাবড়ায়নি কিন্তু তার ভয় মাকে নিয়ে। কোন প্রকার ঝক্কি সামলাতে গিয়ে যদি মা মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে পড়ে! এলাকায় সালিস শুধু মুরুব্বিরা চালাবে তা যেন কিছুটা বিপদের সংকেত দিচ্ছিলো সুমনকে। সে আলগোছে ফোন তুলে কল দিল তাসিনকে। মাত্রই লাঞ্চ করে একটু রেস্ট নিচ্ছিলো সে। সুমনের ফোনকল তাকে আন্দাজেই যেন রেড সিগন্যাল দিচ্ছিলো। সে তটস্থ হয়ে ফোন তুলতেই শুনতে পেল অনেকের গলার স্বর একসাথে। সুমনের কানে ওয়ারলেস ব্লুটুথ থাকায় সে সহজেই কল দিতে পেরেছে কিন্তু মুশকিল হলো তাসিনের কথা শুনতে পারলেও তার কথা বলাটা বিপদজনক। কারো চোখে না পড়ে যায় তাহলে আবার হয়ত তাসিনও ফেসে যাবে। ফোনের এক প্রান্ত থেকে তাসিন বলে চলছে, “কোন ঝামেলা হয়েছে? এত হৈ চৈ কেন শোনা যাচ্ছে?”

সুমন যথেষ্ট বুদ্ধিমান সে হাই তোলার ভাণ করে দু হাতে মুখ ঢেকে অতি ধীর স্বরে বলল, “সালিশ বসেছে এলাকায়। আর এখানে টিয়ার চেয়ে প্রভা মেয়েটার বাড়ির লোকই বেশি চড়াও হয়ে আছে।”

সুমনের ফিসফিসে আওয়াজ আর তার চারপাশের হৈ চৈ মিলিয়ে কথা ঠিকঠাক বুঝতে না পেরে তাসিন কল কেটে দিল। তড়িঘড়ি পটলের নাম্বার ডায়াল করতেই পটল ফোন তুলে বলল, “বস আপনার বন্ধু গো আজকা হেব্বি সাইজ করবো।”

“কি হয়েছে বল তো!”

পটল সবিস্তারে সবটা বলতেই মাথায় হাত দিল তাসিন। কি করবে কি করা যায় অনেক ভেবেও যখন কূল কিনারা পেল না তখনই পাশের ডেস্কের হাবিব চাচা তাসিনকে ডাকলেন, “কি বেটা মুখ গোমড়া কেন এখনও তো লাঞ্চ আওয়ার শেষ হয়নি।”

লোকটা বরাবরই তাসিনকে কামচোর বলে রসিকতা করে। তাই এমন করে বলল যেন লাঞ্চ আওয়ার শেষ হতেই কাজ শুরু হবে বলে তাসিন মুখ গোমড়া করে আছে। হাবিব চাচা অফিসের খুব পুরাতন লোক তবুও তাসিনের সম পদেই আছেন। মাঝেমধ্যে তাসিনের সাথে নিজের অনেক সমস্যার কথাও খোলাখুলি আলোচনা করেন৷ সেই ভরসাতেই হয়ত তাসিনও নিজের কথা বলল৷ বলে দিল এলাকায় কি হচ্ছে বা কি হয়েছিল গত তিনদিনে। সব শুনে হাবিব চাচা বললেন, “এটা কোন সমস্যাই না যদি তোমরা থানা এলাকায় হয়ে থাকো।”

ভর দুপুরে রোদে বসে সালিশ কারো মনঃপুত হওয়ার নয়। মন মেজাজ এমনিতেই তিরিক্ষি হয়ে থাকবে। সালিশ বসেছিল মুরাদদের বাড়ির উঠোনে। কিন্তু সেখানে গরমে প্রায় অতিষ্ঠ সবাই । সালিশ স্থগিত করতে চাইল অনেকে কিন্তু হঠাৎ করেই তাসিনদের এলাকার মেম্বার বলল, এক কাম করলে হয় আফছারের বাড়ির বাগানে বসি আমরা। গাছের তলায় রোদ নেই আবার বাতাস খুব। এই বাড়ির পরের বাড়িই আফছারের কি বলো মীর সাহেব!”

আফছারও সালিশে উপস্থিত ছিল সবার সাথে। মুখের ওপর না বলাটা ভালো দেখায় না তাই হাসি হাসি মুখ করে বলল, “কি বলবো আমি, সেখানে বসলে মন্দ হয় না।” বিপদে পড়ে হ্যাঁ বললেও মনে মনে ভয় পাচ্ছে স্ত্রীকে নিয়ে। মেয়ে বড় হচ্ছে বলে মাছুমা বাড়িতে বাইরের কোন পুরুষ আসতে দেয়না। আফছারের বিভিন্ন কাজেও লোকজন আসলে সে সবাইকে নিয়ে তার কাজের জায়গায় বসে। আর এখন কিনা দুই এলাকার কতশত মানুষ গিয়ে উঠবে তার বাড়ি! যদিও সমস্যা নেই ঘরের পেছন দিকে বিশাল বাগান। তবুও বউয়ের যেই নাকের ডগায় রাগ! ভয়ে ভয়েই সে বাড়ি গিয়ে মাছুমাকে বলল কথাটা। আশ্চর্যের বিষয় সে বলার আগেই বাড়িতে খবর চলে এসেছে বিস্তারিত। বুঝতে বাকি নেই কাজটা পটলের কিন্তু মাছুমা ঠান্ডা মাথায় আছে তা খুব ভাবাচ্ছে তাকে। তারওপর বাইরের ঘরে থাকা কয়েকটা চেয়ার আর কাঠের টুল, বেঞ্চি সব বের করতে বলছে পটলকে। মেয়ে এখনো স্কুল থেকে ফেরেনি বাড়িতে। নুড়ি আর পটল মিলে দেখা গেল বেঞ্চ, টুল সব বাগানে পেতে এসেছে। কিছু সময়ের মধ্যে মানুষজনও এসে গেল। মাছুমা কি মনে করে আবার বড় এক পাতিলে চায়ের জন্য পানি বসিয়েছে চুলায়। মতিগতি এত শান্ত যা ভাবাচ্ছে আফছারকে। একটু পরই সবাই এসে উপস্থিত হলো তাসিনদের আম বাগানে। জৈষ্ঠের রোদ্দুরে ভেজা বাতাস ঘামে ভেজা শরীরে সবারই আরাম লাগছে। সালিশের জায়গা পরিবর্তনের সময়টুকুতে সুমন আর রিমন কথা বলেছে তাসিনের সাথে। সে বলল, “আর চিন্তা করতে হবে না আমি পুলিশে ফোন করে দিয়েছি হয়ত এতক্ষণে এলাকায় পৌঁছেও গেছে। শিকদার ফিকদার কোন বাড়ির মানুষই কিচ্ছু করতে পারবে না। মুরাদ আর টিয়া দুজনই প্রাপ্ত বয়স্ক কারো রাইট নেই তাদের মতের বিরুদ্ধে বিয়ে দেওয়ার। এখন শুধু কথা হলো মেয়ে পরিবারের কারণে মত না পাল্টে ফেলে। যদিও বিয়ে হয়ে গেছে এখন চিন্তার প্রয়োজন নেই বলেই জানি।”

তাসিনের কথায় আশ্বস্ত হলো বন্ধুরা কিছুটা। আবার সালিশি কার্যক্রম শুরু হতেই দেখা গেল মুরুব্বিরা খুব বেশি না ঘাটিয়ে সহজ প্রশ্ন করলো টিয়াকে সে কি স্বইচ্ছায় মুরাদের সাথে বেরিয়ে এসেছিল! টিয়া সত্যিটা বলল সে ভালোবাসে মুরাদকে৷ আর পরিবার তাকে তার মতের বিরুদ্ধে বিয়ে দিতে চেয়েছে। ভরা মজলিশে মেয়ের মুখে এমন কথা নিঃসন্দেহে একটা পরিবারের জন্য অসম্মানজনক। এতে মেয়েটা হয়ত তার পছন্দের মানুষটাকে পেয়ে যাবে, নিজের ইচ্ছেটার ওপর সে স্বত্বাধিকারী হয়ে গেলেও সে হারিয়ে ফেলবে তার আজন্মকালের আপন, রক্তের সম্পর্কগুলোকে। টিয়ার সাথেও তাই হলো। টিয়ার মুখনিঃসৃত কথা শুনতেই সকলের সামনে টিয়ার বাবা তাকে কষে এক চড় মারলো এবং উপস্থিত সকলের দিকে দু হাত জোড় করে বললেন, “আপনাদের মূল্যবান সময় নষ্ট করার জন্য আমাকে ক্ষমা করবেন। আমার আর কোন কিছু বলার বা করার নেই।”

গমগমে একটা সালিশে ঝুপ করেই যেন নিস্তব্ধতা নেমে এলো কিছু সময়ের জন্য। দুই এলাকারই গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ ছিল তারাও যেন ব্যথিত হলো কিছুটা। মেম্বার সাহেব যখন শেষ বারের মত মুরাদকে কিছু বলতে যাবেন ঠিক তখনই মীর বাড়ির গেইটে পুলিশ এসে হাজির হলো। এতে সবাই আশ্চর্য হলো বেশ। কারণ কেউই পুলিশ ডাকবে বলে কোন সিদ্ধান্ত নেয়নি তবুও পুলিশ এলো কি করে! পুলিশের এস আই নিজেই এসেছেন সাথে একজন কন্সটেবল৷ মেম্বার নিজেই এগিয়ে গিয়ে কথা বলে নিয়ে আসলেন বিচারের জায়গায়। সুপ্রভার বড়দা ভাই সেখানেই ছিল। সে খেয়াল করলো তার আপন মামাতো ভাই এসেছে। সে জানতো তাদের থানায় নতুন এস আই এসেছে কিন্তু সেটা যে তারই আত্মীয় সেটা জানত না। সোহরাবকে দেখেই এস আই নিজেই সালাম দিয়ে জড়িয়ে ধরলো ভাইকে। এস আই এহসান এই এলাকায় এখনো কেউ চেনে না খুব একটা। সে সবে মাত্র প্রমোশন পেয়ে ট্রান্সফার হয়ে এসেছে সপ্তাহখানেক আগে। মূলত ফোন পেয়ে সে ইচ্ছে করেই এসেছে এই এলাকায়। তার ফুপুর বাড়ি পাশের এলাকায় তাই সুযোগটা কাজে লাগিয়ে এই ফাঁকে একবার ফুপুকে দেখতে যাবে ভেবেছিল। কিন্তু এখানে এসে সব ঘটনা শুনে অবাক। এই সালিশে তার ফুপাতো ভাইরাও এসেছে এ এলাকার ছেলেদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে। এবং শেষ পর্যন্ত জানা গেল পালিয়ে যাওয়া কাপলের সাথে তার পাগল ছোট বোনটাও ছিল। এহসান বুঝলো সমস্যা এখানে অলরেডি মিটে গেছে এবং তার ভাইদের কথা শুনে বুঝলো এখন ঝামেলা তৈরি করবে তারাই৷ তাই খুব ঠান্ডা মাথায় সোহরাবকে একটু আলাদা নিয়ে বলল, “ভাইয়া এখানে এখন প্রভাকে নিয়ে কথা তোলা মানে নিজেরাই নিজেদের মেয়েকে অসম্মান করা৷ সবাই কিন্তু জানে পালিয়ে গেছে ওই দুটো ছেলে মেয়ে। প্রভা কারো সাথে কোথাও যায়নি এটা সবাই এমনিতেই বুঝে নেবে। কিন্তু ঘাটাঘাটি করলে ব্যপারটা ঘোলা হতে পারে।”

এহসান যা বলল তা যে সোহরাব ভাবেনি তা নয়। বরং সোহরাবও চাচ্ছিল প্রভাকে নিয়ে কথা না তুলতে। কিন্তু সেজো ভাই মেহরাবটা বড্ড গরম মাথার। তার এক কথা এই এলাকার ছেলেগুলো ফুসলেই প্রভাকে বাড়ি থেকে বের করিয়েছে। তাই আর যাইহোক সে এমন কিছু করবে যেন ছেলেগুলোকে বেধড়ক মারের একটা সুযোগ পায়। এহসানের কথার পর সত্যিই আর কোন কথা তোলেনি সোহরাব৷ মজলিশ ভেঙে যেতেই একে একে সবাই বেরিয়ে যাচ্ছিল কিন্তু কি মনে করে আফছার পুলিশ দুজনকেই চায়ের জন্য আমন্ত্রণ জানালো। এহসান বসতে চাইলো না সে সোহরাবকে দেখিয়ে বলল, “আঙ্কেল আমি ভাইয়ার সাথে যাবো। আপনাদের এলাকায় এখন আসা যাওয়া হবেই তাই সময় সুযোগ করে আসবো একদিন।”
চলে গেল এহসান তার ফুপাতো ভাইদের সাথেই৷ বাড়ি খালি হতেই আফছার ভীরু পায়ে স্ত্রীর কাছে গিয়ে দাঁড়ালেন। স্মিত হেসে বললেন, “তুমি কি রাগ কইরা আছো?”

“রাগ করবো কেন?” একদম স্বাভাবিক স্বরে বলল মাছুমা৷ এতে আরো আশ্চর্য হয়ে গেল আফছার।

“এই যে বাড়িতে মজলিশ বসতে দিছি তাতে রাগ করো নাই?”

“রাগ করার কি আছে? তাসিন বলেছে তাই রাগ করার প্রশ্নই আসে না। আর আমার ছেলে জড়িত এ ঝামেলায় তাই আমি নিজেই খুশি হয়েছি এখানে বসবে শুনে৷ অন্তত নিজ কানে শুনতে পাবো আমার ছেলের নাম উঠে কিনা। শোকর ওপরওয়ালার ছেলেপেলে গুলোর কারোরই নাম আসেনি।”

“ওহ এইজন্যই কই এহনও কোন কথা শোনাও নাই ক্যা! পোলারই সব দাম তোমার কাছে পোলার বাপ তো বাণের জলে ভাইসা আসছে।”

অভিমানী হয়ে উঠেছে আফছারের কণ্ঠস্বর। সে এমনই খুব সাদাসিধা। মাছুমা শিক্ষিতা আবার অভিজাত পরিবারের হওয়ায় কিনা কে জানে আফছারের নজরে সারাজীবন সে এক চাঁদের ন্যায়। এমন চাঁদ যার কাছে যাওয়া যায় তবুও সে অধরা। তার মন সংকীর্ণ এ ব্যাপারে মাছুমা তাকে বাধ্য হয়ে বিয়ে করেছে, ভালো মেয়ে বলে সংসারও করছে অশিক্ষিত আফছারের সাথে কিন্তু মন থেকে হয়ত কখনো সুখী হয়নি৷ আফছারের এমন আরো বহু ভাবনা আছে মাছুমাকে নিয়ে৷ কিন্তু তবুও দিন শেষে আফছার খুব সুখী এই ভেবে এই বিধুকন্যা তার সন্তানদের মা, তার অর্ধাঙ্গিনী।

“অসংখ্য ধন্যবাদ হাবিব চাচা। আপনি বুদ্ধি না দিলে পুলিশের ব্যপারটা আমার মাথায় আসতো না।”

“ধুর মিয়া, ধন্যবাদ রাখো। এইসব মামলা একসময় আমরাও পার করে আসছি৷ তোমার চাচীরে আমি এমনেই পালাইয়া নিয়ে বিয়ে করছি। তোমরা তো অল্পে বেঁচে গেলা। আমার কপাল মন্দ ছিল নিজেও মাইর খাইছি তোমার চাচীর ভাইদের হাতে সাথে আমার দুই দোস্ত আর আমার চাচাও মাইর খাইছে৷”

“কি কন চাচা! আপনি এত ডেয়ারিং ছিলেন?” অবিশ্বাস্য সুরে বলল তাসিন।

“এত অবাক হওয়ার কিছু নাই বেটা৷ মরণ প্রেম যারে ধরে সে এসব কিছুরই তোয়াক্কা করে না।”

তাসিন অবাক হয়ে শুনছিল হাবিব চাচার কথা। কিন্তু ডেস্কের ওপর ফোনটা বেজে ওঠায় তার ধ্যান হটলো। একটু ঝুঁকে তাকাতেই আবারও দেখলো “তুফান” নামটা জ্বলজ্বল করছে। সকালেও টি টাইমে একবার কল এসেছিল। তখন সে ধরতে ধরতে কেটে গেল। পুনরায় কল করার পর আর ধরেনি৷ কিন্তু এখন আবার কল করছে তারমানে কি জরুরি কোন ব্যাপার! তাসিন ফোনটা রিসিভ করে উঠলো বসা থেকে।

“চাচা জরুরি কল। শুনে আসি।”

ফোন কানে হ্যালো বলতে বলতেই ডেস্ক ছাড়লো তাসিন। ওপাশ থেকে উদগ্রীব কণ্ঠে সুপ্রভা জানতে চাইলো, “কি হলো?”

তাসিন বুঝলো না কথার অর্থ সেও প্রশ্ন করলো, “কি হবে?”

“সেটাই তো জানতে চাচ্ছি?”

“আমি কি করে বলবো?” তাসিন সত্যিই বুঝলো না সুপ্রভার কথা। বিরক্ত হয়ে সুপ্রভা বলল, “টিয়ারা বাড়ি ফিরে যায়নি?”

“হ্যাঁ, সকালেই পৌঁছে গেছে।”

“তারপর কি হলো? ”

“সালিশ বসেছে। তুমি ফোন করোনি তোমার বান্ধবীকে?”

“তাকে করতে পারলে কি আপনাকে জিজ্ঞেস করতাম!”

“ওহ, সালিশ বসেছে। দু পরিবারে তেমন ঝামেলা না হলেও টিয়ার পরিবার তার থেকে মুখ ফিরিয়ে নিয়েছে৷ তবে হ্যাঁ ঝামেলা বাঁধানোর জন্য প্রস্তুতি নিয়ে এসেছিল তোমার ভিলেন ভাইয়েরা।”

“কিহ!” কিছুটা চেঁচিয়ে বলেও আবার থেমে গেল সুপ্রভা। সে একটু আগেই ক্লাস করে হোস্টেলে ঢুকেছে। সিঁড়িতে তার পাশেই মেহরিন। সে আবারও ক্ষীণ স্বরে বলল, “আমার ভাইদের নিয়ে বাজে কথা বলবেন না।”

“কি বলেছে প্রভা! আমার মতোই তিনিও গুন্ডা বলেছে নিশ্চয়ই! ভুল কিছু না কিন্তু। তোমার ভাইয়েরা দেখতে গুন্ডা টাইপই।” কথাটা বলে মেহরিন দ্রুত পায়ে সুপ্রভার পাশ কেটে চলে গেল৷ ওপাশ থেকে মেহরিনের কথাটা আবার স্পষ্টই শুনেছে তাসিন। সে হা হা করে হেসে উঠেছে আর রাগে তৎক্ষনাৎ ফোন কেটে দিয়েছে সুপ্রভা। বজ্জাত, বদ আর ফালতু লোক এক নাম্বারের। মনে মনে এগুলোই আওড়াচ্ছে সুপ্রভা আর মেহরিনকে তো সে রাতে ঘুমানোর সময়ই দেখে নেবে৷

চলবে

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here