রংধনুর_আকাশ #লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ পর্ব-২৬

0
655

#রংধনুর_আকাশ
#লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ
পর্ব-২৬

৪৬।
আজ অনেকদিন পর নিবিড় কলেজে এসেছে। কলেজে ঢুকেই তার দৃষ্টি আটকে গেলো মারিয়ার দিকে। মারিয়া হেসে হেসে মিতু আর সিয়ার সাথে গল্প করছিলো। নিবিড় মনে মনে ভাবলো,
“একটা মেয়ে এতো চাপের মধ্যেও কিভাবে দাঁত কেলিয়ে হাসতে পারে, তা আমি বুঝে উঠতে পারি না।”

নিবিড়কে দেখার সাথে সাথেই মারিয়ার মুখের হাসিটা বিলীন হয়ে গেলো। মিতু মারিয়ার মুখে চিন্তার ছাপ দেখে জিজ্ঞেস করলো,
“কি হয়েছে?”

মারিয়া দাঁতে দাঁত চেপে বলল,
“যার জন্য আমার এই পরিণতি, সেই নবাব এতোদিন পর এসেছে।”

মিতু আর সিয়া কলেজ গেইটের দিকে তাকিয়ে নিবিড়কে দেখতে পেলো। সিয়া বলল,
“মারু, এখন যদি আন্টি জেনে যায়, নিবিড়ও কলেজে এসেছে, তাহলে কি হবে?”

“কি আর হবে! কিছুই হবে না৷ আর মাত্র দুই মাস বাকী। এরপর টেস্ট এক্সাম। তারপর সে কোথায় আর আমি কোথায়! টেস্টের পর আমি আর কলেজে আসবো না।”

মিতু বললো,
“কেন আসবি না? জানিস না, এক্সট্রা ক্লাস হবে?”

“আমার নিজেরই ইচ্ছে নেই, এসব এক্সট্রা ক্লাস করার। আর মা আমাকে ও মহুয়াকে পড়ানোর জন্য বড় ভাইয়া আর মেজো ভাইয়াকে দায়িত্ব দিয়েছে। আর বাসার পাশে একটা কোচিং সেন্টার আছে। ওখানে গিয়ে পরীক্ষা দেবো।”

এবার সিয়া বলল,
“মারু, সত্যি বলতে কি নিবিড় তোকে অনেক ভালোবাসে। ছেলেটাকে একটা সুযোগ দেওয়ায় যায়।”

মারিয়া চোখ ছোট করে বলল,
“আর মা সেই সুযোগ দেওয়ার সুযোগটাও যাতে আমি না পাই, তাই আমার বিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”

সিয়া হেসে বলল,
“মেয়ের প্রেমে বাঁধা দেওয়ার নিনজা টেকনিক। বিয়ে!”

“তুই হাসছিস?”

এবার মিতু হেসে বলল,
“আমারও অনেক ইচ্ছে বিয়ে করার। ভাবছি কি একটা মিথ্যে প্রেমিক বানিয়ে বাবা-মার সামনে নিয়ে যাবো। তারপর ওরা আমাকে বিয়ে দিয়ে দেবে।”

মারিয়া মুখ বাঁকিয়ে বলল,
“এতো সোজা না। সবাই আমার মায়ের মতো নয়। একমাত্র আমজনতার নেত্রী মারিয়া নাওয়ালের কপালেই এমন মা জুটেছে।”

“মহুয়ার কপালেও তো জুটেছে।”

“জ্বি, না। ও এসবে অভ্যস্ত। ও মায়ের কলিজার টুকরো। আর আমি?”

সিয়া হেসে বলল, “হাড্ডি।”

সিয়ার কথা শুনে মারিয়া দাঁতে দাঁত চেপে কিছু একটা বলতে যাবে তখনই নিবিড় তার সামনে এসে দাঁড়ালো। নিবিড়কে এক নজর দেখে মারিয়া তার চোখ দু’টো সরিয়ে নিলো। নিবিড় নরম সুরে বলল,
“মারিয়া, তোমার সাথে কিছু কথা আছে।”

মারিয়া মিতুর দিকে তাকিয়ে বললো,
“আচ্ছা মিতু, তোকে তো বলতেই ভুলে গেছি, আমার না আগাছা একদম অপছন্দ।”

মিতু অবাক কন্ঠে বলল, “আগাছা!”

মারিয়া চোখ দিয়ে ইশারায় নিবিড়কে দেখিয়ে দিয়ে আবার বলল,
“আরেহ, ওইসব আগাছা, যেগুলো বিনা অনুমতিতে চলে আসে।”

নিবিড় এবার মারিয়ার হাত ধরে তাকে টেনে নিয়ে গেলো। মারিয়া মোচড়ামুচড়ি করে নিবিড়ের হাত থেকে নিজের হাত ছাড়িয়ে নিয়ে বলল,
“তোর তো সাহস অনেক বেড়ে গেছে দেখছি।”

“হ্যাঁ, বেড়ে গেছে। কারণ তুমি একটু বেশি ভণিতা করছো।”

“তোর জন্য এমনিতেই আমার জীবনটা এলোমেলো হয়ে গেছে। আর এখন তুই আমার হাত ধরে আরেকটা গন্ডগোল বাঁধিয়ে দিতে এসেছিস?”

“তুমি আমার কথা শুনছো না। তাই বাধ্য হয়ে তোমাকে টেনে আনতে হলো।”

মারিয়া রাগী কন্ঠে বললো,
“মা ঠিকই বলেছে, একবার যেহেতু গায়ে পড়ার সাহস পেয়েছিস, এখন তো যখন তখন আমার গায়ে পড়তে আসবি।”

“মারিয়া, সুন্দর করে কথা বলো।”

“আমি তোকে কোনো অশ্লীল কথা বলছি না।”

“আচ্ছা, আমি দুঃখিত৷ ওইদিনের ব্যবহারের জন্যও দুঃখিত। এখনের জন্যও দুঃখিত।”

মারিয়া এবার বুকে হাত গুঁজে বলল, “তারপর।”

“আসলে আন্টি বাবাকে বলেছে, আমি তোমাকে বিরক্ত করি। কিন্তু এটা মিথ্যে কথা। আমি তোমাকে ভালোবাসি, মারিয়া। কিন্তু কখনো জোর করে তোমাকে চাই নি। আমি তোমার ভালো বন্ধু হতে চেয়েছিলাম। কিন্তু তুমি তো আমার সাথে কথায় বলো না। আচ্ছা মারিয়া, আমার জন্য কি একটু অপেক্ষা করতে পারবে? একদমই প্রেম কর‍তে হবে না, শুধু অপেক্ষা করো। আমি পড়াশোনা শেষ করে বিয়ের প্রস্তাব নিয়ে আসবো।”

মারিয়া নিবিড়ের কথা শুনে হাসতে লাগলো। নিবিড় অবাক কন্ঠে বলল,
“হাসছো কেন?”

মারিয়া হাসতে হাসতে বললো,
“তোর স্বপ্ন সম্পর্কে জেনে হাসি পাচ্ছে।”

“তুমি কি মানুষের আবেগও বুঝতে পারো না?”

মারিয়া তাচ্ছিল্যের সুরে বলল,
“ওওও, আবেগ! তোর আবেগ? ইশ! তোরও আবেগ আছে?”

“মারিয়া, প্লিজ।”

“দেখ, নিবিড় তোকে বিয়ে করতে গেলে আমার বিয়েই করা হবে না। তোর বিয়ের বয়স হতে হতে আমি চার সন্তানের মা হয়ে যাবো।”

নিবিড় দীর্ঘশ্বাস ফেলে বলল,
“আমাকে নিয়ে কি একবার ভেবে দেখা যায় না?”

“আর তুই কি আমাকে ভুলে অন্য কাউকে নিয়ে ভাবতে পারিস না?”

“ভালোবাসা তো হুট করে আসে না। আমি তোমাকে ধীরে ধীরে ভালোবেসেছি। আর তোমাকে ধীরে ধীরেই কাছে পেতে চাই।”

মারিয়া নিবিড়ের চোখের দিকে এক দৃষ্টিতে তাকিয়ে রইলো। তারপর চোখ সরিয়ে নিয়ে বলল,
“মা, আমাকে বিয়ে দিয়ে দেবে। আর না দিলেও তোর সাথে কখনোই দেবে না। তাই আমাকে ভুলে যা।”

কথাটি বলেই মারিয়া সেখান থেকে চলে গেলো।

এদিকে মিসেস সাবিলা ক্লাস শেষে মারিয়াকে এসে বললেন, আরিয়া ফেরদৌসকে কলেজে নিয়ে আসতে, তার সাথে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা আছে। মিসেস সাবিলার কথা শুনেই মারিয়ার হাত-পা জমে শক্ত হয়ে গেলো। এমনিতেই নিবিড়ের জন্য মা তাকে একপ্রকার বেঁধে রেখেছে, এরই মধ্যে মিসেস সাবিলা যদি মাকে তার সম্পর্কে কোনো অভিযোগ দেন, তাহলে তো মা তার হাত-পা ভেঙেই বসিয়ে রাখবে।

না, মারিয়া তা হতে দেবে না। তাই সে মনে মনে সিদ্ধান্ত নিলো, কয়েকদিন কলেজেই আসবে না। যেই ভাবা সেই কাজ। মারিয়া এর পরের চার দিন আর কলেজে যায় নি। কিন্তু এদিকে ঘটলো আরেক ঝামেলা। আরিয়া ফেরদৌস যখন দেখলেন, মারিয়া নিজ ইচ্ছায় কলেজে যাচ্ছে না, তখনই তিনি জিজ্ঞাসাবাদ করা শুরু করে দিলেন। আর এদিকে মারিয়া তো মায়ের প্রশ্নের জবাব দিতে দিতেই ক্লান্ত হয়ে যাচ্ছে।

পঞ্চম দিন হঠাৎ আরিয়া ফেরদৌস মারিয়ার ঘরে এসে বসলেন। মারিয়া মাকে তার ঘরে দেখে কিছুটা অবাক হলো। আশেপাশে তাকিয়ে দেখলো, ঘরে মহুয়াও নেই। মনে মনে সে আল্লাহর নাম নিতে লাগলো।

আরিয়া ফেরদৌস মেয়ের দিকে তাকিয়ে জিজ্ঞেস করলেন,
“কি সমস্যা?”

মারিয়ার উত্তর দিলো,
“না তো, কোনো সমস্যাই তো নেই।”

“তাহলে কলেজে যাচ্ছো না কেন?”

মারিয়া মুচকি হেসে বললো, “এমনিতেই।”

“এমনিতেই কেন?”

মারিয়া কিছুক্ষণ ভেবে বলল,
“শরীর ভালো না তাই।”

“এই কথাটা এতোক্ষণ ভেবে বলতে হয়?”

মারিয়া মাথা নিচু করে হাসার চেষ্টা করলো। আরিয়া ফেরদৌস আবার বললেন,
“কি হয়েছে আমাকে বলো?”

মারিয়া মাথা নেড়ে বলল,
“কিছু হয় নি তো।”

আরিয়া ফেরদৌস এবার মেয়ের কাছে এসে তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে বললেন,
“তোমাকে বিয়ে দিয়ে দেবো বলেছি, তাই মন খারাপ করেছো?”

মারিয়া মায়ের কথা শুনে মনে মনে হাসলো। এইবার মাকে ভালোই জব্দ করা যাবে। কারণ সে মায়ের গলার স্বর শুনেই বুঝে ফেলেছে যে মা এই মুহূর্তে আবেগপ্রবণ হয়ে আছে।

মারিয়া এবার মাথা নেড়ে বললো, “হুম।”

“মা, আমি তোমার ভালোর জন্য তোমাকে বিয়ে দিতে চাইছি। আমি তোমাকে বিশ্বাস করি। কিন্তু তোমার আশেপাশে থাকা পুরুষদের আমি বিশ্বাস করতে পারছি না। ছেলেরা অনেক চালাক হয়। তারা তোমার সাথে দু’ দন্ড মিষ্টি ভাষায় কথা বলে তোমাকে পটিয়ে ফেলবে। কিন্তু তুমি বুঝতেই পারবে না যে তাদের মনে আদৌ কি চলছে। পৃথিবীতে প্রেমের কোনো অস্তিত্ব নেই। সবাই স্বার্থপর হয়। শুধু নিজের সুবিধাটায় খুঁজে। আজ তোমার দুই ভাই তোমার খুব যত্ন নিচ্ছে, কাল তোমার পাশে নাও থাকতে পারে। তারা এখন বিয়ে করেছে, বউয়ের কথায় তাদের মন-মানসিকতার পরিবর্তন হতে বেশি সময় লাগবে না।”

“মা, ভাবীরা তেমন নয়। বড় ভাবী তো অনেক ভালো।”

“আমারও দুইটা বড় ভাবী ছিলো। একজন মন থেকেই আমাকে ছোট বোন ভেবেছিলো, আরেকজন ভাইকে দেখানোর জন্য আমাকে ছোট বোন বলেছিলো। যে মন থেকে ভালোবেসেছিলো, সে এখন সুখে আছে। কিন্তু যে মন থেকেই আমাকে মেনে নেই নি, সে না জানি কি অবস্থায় আছে! কিন্তু মা জানো, যারা আমাকে ভালোবাসতো তারাও আমাকে বাঁচাতে পারে নি। সাহেদা ভাবী ও বড় ভাইয়ার প্রেমের বিয়ে ছিলো। কিন্তু ভাইয়া ভাবীকে ছেড়ে আরেকটা বিয়ে করে এনেছিলেন। আসলে প্রেম কখনই সুখের হয় না৷ এক পক্ষ এতে কষ্ট পাবেই পাবে। আজ তোমার সূচনা ভাবী হয়তো অনেক ভালো আছে, কিন্তু তোমার ভাই যদি নিজেকে পরিবর্তন করে ফেলে? পুরুষ মানুষের বিশ্বাস নেই, মা। পুরুষদের একদম বিশ্বাস করতে নেই।”

আরিয়া ফেরদৌসের চোখ পানি টলমল করে উঠলো। মারিয়া মায়ের চোখে পানি দেখে থমকে গেলো। মাকে সে খুব কম কাঁদতে দেখেছে। তাই এই মুহূর্তে মায়ের কান্না তার সহ্য হচ্ছে না। মারিয়া মাকে জড়িয়ে ধরে বলল,
“বাবা তোমাকে খুব কষ্ট দিয়েছে, তাই না?”

আরিয়া ফেরদৌস কাঁপা কন্ঠে বললেন,
“মানুষটা আমাকে একেবারে শেষ করে দিয়ে গেছে। কিন্তু আমি তোমাদের আশায়, তোমাদের জন্য বেঁচে আছি।”

“মা, বাবা কি আমাদের ভালোবাসতো না?”

আরিয়া ফেরদৌস মারিয়ার চুলগুলো কানের পেছনে গুঁজে দিতে দিতে বললেন,
“তোমাদের বাবা কাউকেই ভালোবাসতো না। সে আদৌ কি চাইতো, তা আমি জানি না। আমি তাকে কখনোই বুঝতে পারি নি। তবে এইটুকু বুঝেছি, আমার জীবনটা নষ্ট হয়ে গিয়েছিলো। একটা মেয়ের সংসার ভাঙলে তাকে অনেক ঝামেলা সহ্য করতে হয়। তার নামে অনেক বাজে কথা রটতে থাকে। কেউ পুরুষ মানুষের দোষ খুঁজে না, শুধু মেয়েদের দোষটাই দেখে। আজ তোমাদের ছোট মামা, আর রিদ্ধ মামা না থাকলে, আমি তো মরেই যেতাম।”

“তুমি কি ভাবছো, আমার সাথেও এমন হবে?”

“কখনো না। আমি আমার মেয়েকে এমন পরিস্থিতিতে পড়তেই দেবো না। তাই তো আমি দেখে শুনে একটা ভালো ছেলের সাথে তোমার সম্বন্ধ করতে চাচ্ছি। তুমি পড়াশুনা করো, আমার আপত্তি নেই। তোমাকে নিজের পায়ে দাঁড় করানোর দায়িত্ব আমার। কিন্তু আমি বেঁচে থাকতে, তোমাকে ভালো ছেলের হাতে তুলে দিতে চাই।”

“তাহলে তুমি কি মহুয়াকেও বিয়ে দিয়ে দেবে?”

“নিবিড় ছেলেটা তো মহুয়াকে বিরক্ত করছে না। তোমাকেই বিরক্ত করছে। আর এসব ছেলেরা সহজে পিছু ছাড়ে না। কখন, কি করে বসে বলা যায় না। তাই আমি এতো তাড়াহুড়ো করছি।”

“মা, বিয়ের পর বর যদি আমাকে ট্যুরে যেতে না দেয়? আমাকে যদি ঘুরতে নিয়ে না যায়?”

“আমি কথা বলে রাখবো। তোমার যা ইচ্ছে তুমি তাই করবে, তবে সীমার মধ্যে থেকে করবে।”

“একটা কথা বলার ছিলো।”

“বলো।”

“আমাদের কলেজের শিক্ষিকা মিসেস সাবিলা তোমার সাথে দেখা করতে চেয়েছে।”

“আচ্ছা, আমি কাল যাবো। তুমিও কাল কলেজে যেও। পড়াশোনা না করলে, কখনোই তুমি কারো সামনে দাঁড়ানোর সাহস পাবে না। একমাত্র শিক্ষায় তোমাকে দৃঢ়তা দেবে।”

পরেরদিন আরিয়া ফেরদৌস মারিয়াকে নিয়ে কলেজে গেলেন। এরপর মারিয়ার কলেজ শিক্ষিকা মিসেস সাবিলার সাথে দেখা করলেন। তিনি আরিয়া ফেরদৌসকে মিসেস মাসুমা আকতারের প্রস্তাবের কথাটি জানালেন। আরিয়া সব শুনে বললেন,
“মারিয়ার তো এখনো পড়াশোনা শেষ হয় নি। তবে ছেলে যদি ভালো হয়, আমার কোনো সমস্যা নেই। কিন্তু কিছু শর্ত আছে।”

সাবিলা বললেন,
“আপনি আমার বান্ধবীর সাথেই না হয় কথা বলে দেখুন। আমি তাকে আপনার ফোন নম্বরটি দিয়েছি। আজ হয়তো আপনাকে ফোন করতে পারে।”

আরিয়া মাথা নেড়ে বললেন, “ঠিক আছে।”

আরিয়া চেয়ার ছেড়ে শিক্ষিকাদের রুম থেকে বেরিয়ে দেখলেন, মারিয়া বাঁকা হয়ে দাঁড়িয়ে আছে। মেয়েকে এভাবে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখে তিনি বললেন,
“এভাবে দাঁড়িয়ে আছো কেন?”

মারিয়া ভীত চোখে মায়ের দিকে তাকালো। মনে মনে বললো,
“সাবিলা ম্যাম, মাকে আমার নামে কি অভিযোগ দিয়েছেন কে জানে!”

মারিয়া এবার হাসার চেষ্টা করে বলল,
“ম্যাম কি বলেছে?”

“তোমার না জানলেও চলবে।”

“মা, তুমি কি আমার উপর রেগে আছো?”

“আমি আবার কেন রাগ করতে যাবো?”

মায়ের কথা শুনে মারিয়া হেসে বলল,
“এমনি বললাম। চলো বাসায় যাই।”

আজ সন্ধ্যায় ঠিকই মিসেস মাসুমা আকতার আরিয়া ফেরদৌসকে ফোন করলেন। তাদের ভালোই কথাবার্তা হলো। তারপর রাতে মিসেস সাবিলা আরিয়া ফেরদৌসকে প্রহরের বায়োডাটা পাঠালেন। সব দেখে আরিয়ার খুব ভালোই লাগলো। তিনি তার ছোট ভাই আর রিদ্ধকে সেই বায়োডাটা পাঠিয়ে ছেলে সম্পর্কে খোঁজখবর নিতে বললেন।

এক সপ্তাহ পর আরিয়া ফেরদৌস মাহাথি ও সূচনাকে প্রহরের কথা জানালেন। এরপর সূচনা প্রহরের ছবি মারিয়াকে দেখালো। মারিয়া তো প্রহরের ছবি দেখেই চোখ বন্ধ করে বলে দিলো, তার এই বিয়েতে কোনো আপত্তি নেই।

মারিয়ার সম্মতি পাওয়ার পরই মাফিনকে এই ব্যাপারে জানালেন আরিয়া ফেরদৌস। কিন্তু মারিয়া সম্মতি দিয়ে দেওয়ায় সে আর কিছুই বলতে পারলো না।
এদিকে এক সন্ধ্যায় আরিয়া ফেরদৌস তার বাসায় মাসুমা আকতার ও খালেদ হোসেনকে নিমন্ত্রণ করলেন। সেদিন তাদের সাথে প্রহরও এলো। আর সেদিনই ঘটে গেলো এক অনাকাঙ্ক্ষিত ঘটনা। যেই ঘটনার প্রেক্ষিতে পালটে গেলো কিছু জীবনের গতি।

চলবে-

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here