#রংধনুর_আকাশ
#লেখিকা_সামিয়া_বিনতে_হামিদ
পর্ব-২৭
৪৭।
প্রহর চুপচাপ তার বাবা-মার পাশে বসে আছে। কিন্তু তার মনের মধ্যে উত্তেজনা ভীড় করছে। শেষমেশ কি সে তার মায়াবিনীকে কাছে পেতে যাচ্ছে? এমন সব এলোমেলো প্রশ্ন তার মাথায় ঘুরপাক খাচ্ছে।
আরিয়া ফেরদৌস প্রহরের বাবা-মার মুখোমুখি বসে আছেন। তিনি তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে প্রহরকে দেখছেন। মেয়েকে যেহেতু এই ছেলের হাতেই তুলে দেবেন, তাহলে তো ভালোভাবে দেখতেই হয়!
মাফিন বুকে হাত গুঁজে সোফায় হেলান দিয়ে বসে আছে, আর মাহাথি প্রহরের বাবা খালেদ হোসেনের সাথে টুকটাক কথা বলছে। সূচনা মেহমানদের জন্য ট্রেতে নাস্তা সাজাচ্ছে। আর এদিকে মারিয়া রুম বন্ধ করে ঘরে পায়চারী করছে।
হঠাৎ ফোনের ভাইব্রেশনে মারিয়ার বুকটা কেঁপে উঠলো। সে সাথে সাথেই ফোন হাতে নিয়ে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেললো। কল রিসিভ করেই চেঁচিয়ে বলল,
“আমার এই দুঃসময়ে তুই আমাকে একা ফেলে কিভাবে চলে গেলি, চান্দু?”
মহুয়া হতাশা ভরা কন্ঠে বলল,
“কি করবো বল? আফরা খুব অসুস্থ। আর মামীও একা একা সব সামলাতে পারছেন না। আর তুই তো জানিস, আফরা আমাকে কতোটা ভালোবাসে। ও চায়, আমি ওর পাশে থাকি।”
“আর আজ আমাকে পাত্রপক্ষ দেখতে এসেছে, এদিকে আমি এখানে একা একা পাগল হয়ে যাচ্ছি।”
“বড় ভাবী তো আছেই।”
“তুই আর বড় ভাবী এক না। সো আই নিড ইউ, মহুয়া।”
“আরেহ, একটা দিনই তো। আর আমাকে দেখলে আবার পাত্র বিভ্রান্ত হয়ে পড়বে। বুঝবেই না কাকে দেখতে এসেছে।”
“এতো কথা আমি বুঝি না। আমি এই মুহূর্তে তোকে আমার সামনে চাই।”
“আমার এই মুহূর্তে তোর পাশে থাকা কি আফরার পাশে থাকার চেয়েও গুরুত্বপূর্ণ?”
“তোদের এসব ইমোশনাল কথাবার্তাগুলো শুনলে না বাংলা সিনেমার নায়িকাগুলোও মুখ থুবড়ে পড়ে যাবে।”
“এখন রাখছি। আফরা আমাকে ডাকছে।”
“তুই আফরারই বোন হয়ে যা৷ আজকে থেকে তুই আর আমার বোন না।”
“তুই খুব কঠিন হৃদয়ের মানুষ রে। একটা বাচ্চা মেয়ের উপরও তোর দয়া হচ্ছে না।”
“হ্যাঁ, এদিকে আমার বুকটা যে ঢিপঢিপ করছে, সেটা তো বুঝতে পারছিস না। তুই ভালোভাবেই জানিস, তুই পাশে থাকলে আমার মনে কোনো ভয় থাকে না।”
“বিয়ের পর আমাকে এমনিতেও আর কাছে পাবি না। তাই এখন থেকেই অভ্যস্ত হয়ে যাওয়া ভালো। বিয়ে করার যেহেতু এতো শখ হয়েছে, তাহলে এসবও মেনে নেওয়ার চেষ্টা কর।”
মহুয়ার কথাটি শুনে মারিয়ার রাগ উঠে গেলো। ফোনটা বিছানার এক পাশে ফেলে সে মেঝেতে বসে পড়লো। কিছুক্ষণ পর সূচনা এসে দরজায় কড়া নেড়ে বলল,
“মারিয়া, দরজাটা খোলো।”
মারিয়ার তো পা কোনো ভাবেই চলছে না। এক প্রকার টেনেটুনে সে দরজার কাছে এসে দাঁড়ালো। তারপর আল্লাহর নাম নিয়ে দরজা খুলে দিলো। সূচনা ঘরে ঢুকে মারিয়ার দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো, আর বলল,
“মাশাল্লাহ, তোমাকে সেলোয়ার-কামিজে অনেক সুন্দর লাগছে।”
মারিয়া চাপা কন্ঠে বলল,
“ভাবী, আমার খুব পেট ব্যথা করছে।”
“তুমি বেশি ভয় পাচ্ছো, তাই এমন লাগছে।”
“হয়তো। আমি না কিছুই বুঝতে পারছি না।”
“তোমাকে কিছুই বুঝতে হবে না। তুমি আপতত চিন্তামুক্ত থাকো। আমরা তো আছিই তোমার সাথে।”
এরপর সূচনা মারিয়াকে চেয়ারে বসিয়ে তার মাথার কাপড়টি টেনে দিয়ে বলল,
“মনে হচ্ছে মহুয়া বসে আছে।”
মারিয়া হেসে আয়নার দিকে তাকিয়ে নিজেকে একবার দেখে বলল,
“হ্যাঁ, ভাবী, ঠিকই বলেছো। চান্দু তো আমাকে দেখেই অবাক হয়ে যেতো। আর এই জামাটা তো ওরই। আর তুমি তো জানো ভাবী, আমার এতো ঢিলাঢালা সেলোয়াড় ভালো লাগে না।”
“সেলোয়াড় তো ঢিলেঢালায় হয়।”
“বিয়ের পর কি আমাকে এসবই পড়তে হবে?”
“বাসায় যেহেতু তোমার শ্বশুড়মশাই থাকবেন, তাহলে তো এসবই পরতে হবে। শ্বশুড়ের সামনে তো আর শার্ট-প্যান্ট পরলে সুন্দর দেখাবে না।”
মারিয়া মলিন মুখে সূচনার দিকে তাকিয়ে রইলো। কিছুক্ষণ পর সূচনা মারিয়াকে বসার ঘরে নিয়ে এলো। প্রহর মারিয়াকে দেখেই থমকে গেলো। তার বুকটা ঢিপঢিপ করতে লাগলো। এদিকে মারিয়ারও একই অবস্থা। মা তাকে ভদ্রভাবে বসে থাকতে বলেছে, কিন্তু সে বুঝতে পারছে না কিভাবে নিজেকে শান্ত রাখবে। তার এই মুহূর্তে খুঁটিয়ে খুঁটিয়ে প্রহরকে দেখতে ইচ্ছে করছে। ছবি দেখার পর পরই তো সে প্রহরের প্রেমে পড়ে গিয়েছিলো। তাই বিয়েতে আর না করতে পারে নি। কারণ এতো সুদর্শন ছেলে যদি তার বর হয়, তাহলে ট্যুরে গিয়ে তার সাথে ছবি তুলে সোশ্যাল মিডিয়ায় ছাড়তে পারলে মারিয়া মনে মনে অনেক শান্তি পাবে।
মারিয়া আজ মিষ্টি রঙের একটা জামা পড়েছে। আর উড়নাটা লাল রঙের হওয়ায় তার মুখের উজ্জ্বলতাটা আরো ভালোভাবে বোঝা যাচ্ছে। এদিকে প্রহর চুপচাপ বসে আছে। তার মায়াবিনী তার মুখোমুখি বসে আছে, অথচ সে একবার দেখে আর দেখার সাহস পাচ্ছে না? ব্যাপারটা প্রহরের খুব অদ্ভুত লাগছে। অন্যদিন তো বাতিঘরে ঘন্টার পর ঘন্টা সে মায়াবিনীর দিকে তাকিয়ে থাকে, আর আজ একবার দেখেই, দ্বিতীয়বার দেখার সাহস হচ্ছে না।
মাসুমা আকতার মারিয়ার পাশে বসলেন। তারপর মিষ্টি হেসে বললেন,
“মা, তুমি কি আমাকে ভয় পাচ্ছো?”
মারিয়া মাথা নেড়ে বুঝালো সে ভয় পাচ্ছে না। তারপর মারিয়ার সাথে মিসেস মাসুমা অনেক কথা বললেন। কিন্তু প্রহর কিছুই শুনলো না।
প্রহর মনে মনে বলল,
“মায়াবিনী এতো আস্তে আস্তে কথা বলছে কেন? সেদিন তো আমার সাথে যথেষ্ট জোরেই কথা বলেছে। আজ তো তার কথা চার হাত দূর থেকেও শোনা যাচ্ছে না। ও কি আমাকে দেখে লজ্জা পেয়েছে? আচ্ছা, ও তো আমাকে বাতিঘরে অনেকবার দেখেছিলো। আর ওকে তো আমার ছবিও দেখানো হয়েছে। ও কি আমাকে এ নিয়ে কিছু জিজ্ঞেস করবে না? ও কি জানতে চাইবে না, আমি কিভাবে ওর ঠিকানা পেয়েছি? আচ্ছা, ও কি এই সম্পর্কটা কাকতালীয় ভাবে ঘটেছে মনে করছে? নাকি আদৌ বুঝতে পেরেছে, আমি ওর মায়ায় জড়িয়ে গেছি।”
মাফিন হঠাৎ কথার মাঝখানে বলে উঠলো,
“ওদের আলাদাভাবে কথা বলতে দেওয়া উচিত।”
মাফিনের কথায় আরিয়া ফেরদৌস কিছুটা বিরক্ত হলেন। তবুও বিয়ের আগে মারিয়ার ছেলের সাথে একবার কথা বলার অধিকার আছে, তাই তিনি আর না করলেন না। এরপর তারা মারিয়া আর প্রহরকে বসার ঘরে বসিয়ে ভেতরে চলে গেলেন।
মারিয়া এবার প্রহরের দিকে তাকালো। প্রহর এই সুযোগের অপেক্ষায় ছিলো। সে মারিয়ার চোখ দুটির দিকে তাকিয়ে মুচকি হাসলো। আর মনে মনে ভাবলো,
“আজ চোখগুলো অন্য রকম মনে হচ্ছে। এতোদিন কি তাহলে অত্যাধিক কৃত্রিম আলোর কারণেই তার চোখগুলো বেশি সুন্দর মনে হয়েছিল?”
পরক্ষণেই প্রহর ভাবলো,
“না, এই আলোতেও মায়াবিনীকে খুব সুন্দর লাগছে।”
এদিকে মারিয়া মনে মনে বলল,
“এই যে মিস্টার, চুপ করে আছেন কেন? তাড়াতাড়ি কথা শুরু করুন। আমি আর চুপ থাকতে পারছি না। উফ! এতো শান্তশিষ্ট লেজবিশিষ্ট থাকা আমার পক্ষে সম্ভব না।”
প্রহর এবার বলল,
“আপনার কোনো প্রশ্ন থাকলে করতে পারেন।”
মারিয়া কিছু বলতে যাবে তখনই আরিয়া ফেরদৌস বসার ঘরে এসে প্রহরকে উদ্দেশ্য করে বললেন,
“তুমি একটু বসো। আমি ওকে একটু পর নিয়ে আসছি।”
আরিয়া মেয়েকে এক পাশে টেনে নিয়ে গিয়ে বললেন,
“নিবিড়ের কোনো কথা এই ছেলের সামনে বলবি না।”
মারিয়া কপাল কুঁচকে বলল,
“আমি নিবিড়ের কথা কেন বলতে যাবো?”
“আচ্ছা, ঠিক আছে। আর শুন, বেশি কথা বলিস না। কম কথা বলিস। তোর তো বকবকানি একবার শুরু হলে থামেই না। আর এমনিতেই ছেলেরা বেশি কথা বলা মেয়ে পছন্দ করে না।”
মারিয়া মায়ের কথাগুলো শুনে প্রহরের সাথে কি কি বিষয় নিয়ে গল্প করবে ভেবেছিলো, সবই ভুলে গেলো। তারপর সে আবার প্রহরের সামনে গিয়ে বসলো। এবার প্রহর বলল,
“আমাকে দেখে কি চেনা চেনা লাগছে না?”
মারিয়া এবার প্রহরের দিকে তাকালো। ভালোভাবে তাকিয়ে দেখে মনে মনে বলল,
“চেনা চেনা কিভাবে লাগবে? আমি তো আজ তাকে সামনা-সামনি প্রথম দেখলাম।”
মারিয়া চুপ করে আছে, তাই প্রহর ভাবলো, তার এই প্রশ্নটি করা উচিত হয় নি। তাই সে আবার বলল,
“আসলে আমার তোমাকে ভালো লেগেছে। তোমার কি কোনো অমত আছে?”
মারিয়া মাথা নেড়ে বললো, “না।”
“তোমার কি কিছুই জিজ্ঞেস করার নেই?”
মারিয়া এবার মাথা নেড়ে বলল, “হ্যাঁ।
“বলো।”
“আপনার কি ভ্রমণ করতে ভালো লাগে?”
প্রহর মারিয়ার কন্ঠ শুনে ভ্রূ কুঁচকে তার দিকে তাকালো। আর মনে মনে ভাবলো,
“ওর কন্ঠস্বর পরিবর্তন হলো কিভাবে?”
মারিয়া প্রহরের উত্তর না পেয়ে তার দিকে তাকালো। প্রহর জিজ্ঞেস করলো,
“তোমার গলার স্বর পরিবর্তন হলো কিভাবে?”
মারিয়া প্রহরের কথা শুনে অবাক হলো। আর মনে মনে বলল,
“এই ছেলে বলে কি? আমার গলার স্বর আবার কবে পরিবর্তন হলো? আল্লাহ! এর কি তাহলে আমার কন্ঠস্বর পছন্দ হয় নি? মা ঠিকই বলেছে, একটু কম বললেই ভালো। কিন্তু আমি যতোদূর জানি আমার কন্ঠ ওতোটাও খারাপ না। তাহলে এই ছেলে এমন প্রশ্ন করলো কেন?”
প্রহর মারিয়াকে চুপ করে থাকতে দেখে বলল,
“কি হলো? চুপ করে আছো যে?”
মারিয়া কিছু বুঝতে না পেরে উত্তর দিলো,
“ঠান্ডা পানি খেয়েছি, তাই একটু গলার স্বর পরিবর্তন হয়ে গেছে।”
প্রহর মাথা নেড়ে বলল, “ওহ আচ্ছা।”
তারপর মারিয়ার প্রশ্নের উত্তর দিয়ে বলল,
“হ্যাঁ, আসলে ভ্রমণ করতে ভালোই লাগে। তবে কাজের চাপে তেমন একটা ঘুরাঘুরি করা হয় না। আর অবসর সময়টা আমি বই পড়েই কাটিয়ে দেই।”
মারিয়া মনে মনে বলল,
“ওরে আল্লাহ, এতো দেখছি চান্দুর টিমের মানুষ। আমার কপালেই কি এসব পড়ুয়া পাবলিক জুটবে? থাক, কি আর হবে? বিয়ের পর না হয় তাকে আমি নিজের রঙে রাঙিয়ে ছাড়বো।”
মারিয়া আর প্রহরের কথাবার্তা শেষ হলে মাসুমা আকতার মারিয়াকে রিং পড়িয়ে দিলেন। আর খালেদ হোসেন মারিয়ার হাতে কয়েক হাজার টাকা গুঁজে দিয়ে বললেন,
“আমাদের আপনার মেয়ে পছন্দ হয়েছে।”
আরিয়া ফেরদৌস মুচকি হেসে বললেন,
“আমাদেরও কোনো আপত্তি নেই।”
এরপর মাসুমা আকতার বললেন,
“তাহলে আমরা শুভ কাজটা তাড়াতাড়ি সেরে ফেলতে চাইছি। আমার একটা মাত্র ছেলে। আমাদের খুব ইচ্ছে তাড়াতাড়ি পুত্রবধূকে ঘরে তুলবো।”
মারিয়া কথাটি শুনে মলিন মুখে আরিয়া ফেরদৌসের দিকে তাকালো। মারিয়ার মলিন মুখ দেখে মাসুমা আকতার বললেন,
“মা, তুমি চিন্তা করো না। তোমার পড়াশোনা, তোমার স্বপ্ন, তোমার যাবতীয় ইচ্ছে পূরণ করার দায়িত্ব এখন আমাদের। তুমি আমাকেও মা মনে করবে। আমারও তো একটা মেয়ে আছে। আমি বুঝি মেয়ের মায়েদের কতো চিন্তা।”
আরিয়া ফেরদৌস মনে মনে খুশি হলেন৷ তার মেয়ের জন্য এমন পরিবারই তিনি খুঁজছিলেন। এখন বাকীটা আল্লাহর হাতে। কথাবার্তায় তো প্রহর ও তার বাবা-মাকে খুব অমায়িক মনে হয়েছে। এখন বাস্তবেও যাতে তা-ই হয়, তিনি এই আশায় রাখছেন। আর মানুষ মাঝে মাঝে ভেতরে একরকম, আর বাইরে অন্যরকম হয়। তাই তিনি এখনো মারিয়ার ভবিষ্যৎ নিয়ে নিশ্চিন্ত হতে পারছেন না। তবে মাসুমা আকতার মহিলাটাকে তার আসলেই অমায়িক মনে হয়েছে।
যাওয়ার আগে মাসুমা আকতার বললেন,
“আপনার আরেক মেয়ের সাথে তো আজ দেখায় হলো না। থাক তার সাথে না হয় পরে দেখা হবে।”
মাসুমা আকতার যখন আরিয়া ফেরদৌসের সাথে ভেতরের ঘরে গিয়েছিলেন, তখনই মহুয়া সম্পর্কে জেনে নিয়েছিলেন। আর এটাও জানতে পেরেছিলেন, মারিয়া আর মহুয়া জমজ বোন। কিন্তু তার মাথায় এটা মোটেও আসে নি যে তাদের সম্পর্কটাতে এতো বড় একটা ভুল বুঝাবুঝি সৃষ্টি হয়েছে।
প্রহর যে মহুয়াকে পছন্দ করে ভুলবশত মারিয়ার তথ্য নিয়ে আসতে পারে, তা মাসুমা আকতারের কল্পনারও বাইরে ছিলো। প্রহর মারিয়ার তথ্যগুলো কিভাবে পেয়েছে, তাও তিনি ভালোভাবে জানতেন না। শুধু একটা ছবি আর মারিয়ার কলেজের নামটাই মাকে দিয়েছিলো প্রহর।
অনলাইন প্ল্যাটফর্মটি প্রহরের ভালোবাসার মানুষটিকে নাটকীয়ভাবে দূরে সরিয়ে দিলো, অথচ সে বুঝতেও পারলো না। তার মনের মধ্যে কিছুটা সন্দেহ ছিলো, তবুও অজানা তথ্যের ভীড়ে সেই সন্দেহটাও চাপা পড়ে গেলো। আর হুট করেই এর পরের সপ্তাহে প্রহর আর মারিয়ার আক্দটাও সম্পন্ন হয়ে গেলো। কিন্তু এরপর যে ভয়ংকর ঝড়টি চারজন মানুষের জীবনে বয়ে গেলো, তার খবর কেউ-ই পেলো না। অনেকাংশে তারা নিজেরাও টের পেলো না। সেই ঝড়ে কেউ স্তব্ধ হয়ে গেলো, কারো বা মনের আশা নিভে গেলো, আর কেউ কেউ তো বুঝতেও পারলো না তার ভবিষ্যৎ তাকে কোথায় নিয়ে যাচ্ছে! কিন্তু একটা সুন্দর সম্পর্ক যে নষ্ট হতে যাচ্ছে, তার আভাস ঠিকই পাওয়া যাচ্ছে।
চলবে-
(🌼বিঃদ্রঃ জানি আজকের পর্ব পড়ে অনেকেই আশাহত হবেন। কিন্তু গল্পটার মেইন প্লট এটাই ছিলো। এই প্লটটার উপর বেইস করেই আমার এই গল্পটা লেখা। সবার ইচ্ছের পূর্ণতা দেওয়া আমার পক্ষে সম্ভব হয় নি, তাই দুঃখিত। আর প্রকৃতির কাছে মাঝে মাঝে ভালোবাসা হেরে যায়। এটাই এর আংশিক প্রতিফলন।🌼)