বসন্তের_এক_সন্ধ্যায় #পর্ব_৯

0
333

#বসন্তের_এক_সন্ধ্যায়
#পর্ব_৯
#Sumaiya_Sumu(লেখিকা)

“পাখির কিচির-মিচির আওয়াজে ঘুম ভে’ঙে গেলো রোদেলার। আঁড়মোড়া দিয়ে ঘুম থেকে উঠে ঘড়ির দিকে তাকাতেই দেখলো ৭ টা বেজে গেছে। এদিকে আজকে ওরা কলেজ থেকে পাহাড়ে ঘুরতে যাবে আর সেটা ৮ টায়। হাতে আর একঘন্টা বাকি। রোদেলা লাফ দিয়ে বিছানা থেকে নেমে তাড়াতাড়ি ফ্রেশ হয়ে নিলো। তারপর ফোন’টা নিয়ে ইশানকে কল করলো। কালকে ওরা কলেজ থেকে যে যার বাসায় চলে গিয়েছিলো। ইশান প্রথমবার কলটা ধরলো না, হয়তো ঘুমাচ্ছে”। তাই রোদেলা আবার কল দিলো, এবার ধরলো…

‘গুড মর্নিং জানপাখি’।

‘গুড মর্নিং। এই ইশান তুমি এখনো ঘুমাচ্ছো কেন? আজকে কি আছে ভুলে গেছো’?

‘কি আছে আজকে’?

‘আরে বাবা আমরা না ট্যুরে যাবো আজকে। সেটা ৮ টা বাজে আর এখন ৭ টার বেশি বেজে গেছে’।

‘কিহহহহ’!

‘জ্বী মিষ্টার, এবার তাড়াতাড়ি উঠে, রেডি হয়ে কলেজ এসো৷ আমি রেডি হয়ে কলেজের জন্য বের হলাম কিন্তু’।

‘ঠিক আছে জানপাখি। লাভ ইউ’।

‘লাভ ইউ টু’।

“কথা বলা শেষ করে রেডি হয়ে কলেজের উদ্দেশ্যে বের হলাম। কলেজে পৌঁছে ভিতরে ঢুকে দেখি অনেকেই চলে এসেছে সাথে মৌও আছে। মৌ আমাকে দেখে কেমন যেনো একটা মেকি হাসি দিলো। আমি কিছু না বলে আমার বন্ধুদের সাথে গল্প করতে লাগলাম। এর মাঝেই ইশান চলে এলো। ইশান আসতেই মৌ দৌঁড়ে গিয়ে ইশানের গায়ে পড়ে কি যেনো বলতে লাগলো। আমি একটু দূরে থাকায় ঠিক শুনতে পেলাম না। ইশান ওকে পাত্তা না দিয়ে আমাদের দিকে আসতে লাগলো। আমি ইশানকে দেখে মুচকি হেসে সামনে এগিয়ে গেলাম”। ইশান আমাকে দেখে জিজ্ঞেস করলো…

‘কখন এসেছো’?

‘এইতো কিছুক্ষণ হয়। এই শুনো মৌ আপুর থেকে দূরে থাকবে। আমার ভাল্লাগে না কিন্তু’।

‘রোদু রানী কি জেলাস ফিল করছে’?

‘আমার বরের পাশে অন্য কেউ থাকলে জেলাস ফিল করবো না কেন শুনি? আমার বরের পাশে শুধু আমি থাকবো’।

‘আচ্ছা জানপাখি দূরেই থাকবো’।

“কথা বলতে বলতে ৮ বেজে গেছে। স্যার’রা এসে বলে গেছেন, সবাইকে প্রস্তুতি নিতে এখনই রওনা দিবো। তাই সবাই একে একে বাসে উঠে বসলাম। আমার পাশের সিটে ইশান বসলো। আমাদের দিকে মৌ আপু কেমন যেনো তীক্ষ্ণ দৃষ্টিতে তাকিয়ে আছে৷ আমি কিছু না বলে মৌ আপুর থেকে দৃষ্টি সরিয়ে বাহিরে তাকালাম৷ বাস চলতে শুরু করলো”।

“গন্তব্যে পৌঁছে গেলাম। প্রকৃতির অপরূপ সৌন্দর্য্য সত্যি মনোমুগ্ধকর। চারদিকে উঁচু উঁচু পাহাড়। পাহাড়ের মাঝে দিয়ে সরু সরু রাস্তা। আকাশ’টা একটু মেঘলা হওয়ায় সৌন্দর্য যেনো আর দ্বিগুণ হয়ে গেছে। আমরা সবাই ঘুরে ঘুরে চারদিক দেখতে লাগলাম। এদিকে একজন সূযোগের অপেক্ষায় আছে কিভাবে ইশানের জীবন রোদেলাকে সরিয়ে ফেলা যায়,আর সেটা হচ্ছে মৌ। মৌ চাচ্ছে রোদেলাকে একটু একা পেতে কিন্তু ইশান রোদেলাকে ছেড়ে কোথাও যাচ্ছে না তাই মৌও কিছু করতে পারছে না। এসবের জন্য মৌ রাগে ফে’টে পড়ছে। ঘুরতে ঘুরতে দুপুর হয়ে গেছে এখন সবাই খাওয়া-দাওয়া করবে তাই সবাই মিলে একটা হোটেলে গিয়ে খাওয়া-দাওয়া করে নিলো। খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আবার সবাই ঘুরতে বের হলো। হাঁটতে হাঁটতে ইশান আর রোদেলা একটু দূরে চলে এসেছে। ওদের অনুসরণ করতে করতে পিছন পিছন মৌও এসেছে। হঠাৎ ইশানের ফোনে একটা কল এলো”। কিন্তু নেটওয়ার্ক সমস্যার জন্য ইশান ঠিক মতো কথা বুঝতেছে না তাই রোদেলাকে বললো…

‘রোদু তুমি এখানে একটু দাঁড়াও। আমি একটু কথা বলে আসি’।

‘আচ্ছা ঠিক আছে’।

“ইশান চলে যেতেই রোদেলা হাঁটতে হাঁটতে একটা উঁচু পাহাড়ের সামনে এসে দাঁড়ালো, নিচে বিশাল বড় খাদ। রোদেলাকে একা পেয়ে মৌ মনে মনে অনেক খুশি হলো। মৌ ভাবলো, এইতো সূযোগ পেয়েছি এখনি যা করার করে ফেলতে হবে। হাতে সময় খুব কম। মৌ আর সময় নষ্ট না করে আস্তে আস্তে রোদেলার পিছনে গিয়ে দাঁড়ালো। কোনো দিকে না তাকিয়ে রোদেলাকে জোড়ে এক ধা’ক্কা দিলো। রোদেলা ‘ইশাননননন’ বলে জোড়ে একটা চিৎকার দিয়ে নিচে পড়ে গেলো”।

“এদিকে রোদেলার এমন চিৎকার শুনে ইশান ভয় পেয়ে গেলো। রোদেলা যেখানে দাঁড়িয়ে ছিলো সেখানে ইশান দৌঁড়ে এলো কিন্তু রোদেলাকে কোথাও দেখতে পেলো না। ইশান চারদিকে চোখ বুলিয়ে দেখলো কিন্তু রোদেলা কোথাও নেই। ইশান সব বন্ধুদের কল দিয়ে এখানে আসতে বললো। ইশান কথা শেষ করে ফোন পকেটে ঢুকিয়ে পিছন ঘুরতেই হঠাৎ কারো গো’ঙা’নো’র শব্দ পেলো। ইশান আশেপাশে তাকিয়ে কাউকে দেখতে না পেয়ে নিচের দিকে তাকাতেই দেখতে পেলো….

#চলবে…

(ভুল-ত্রুটি ক্ষমার দৃষ্টিতে দেখবেন ধন্যবাদ)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here