নেশাক্ত_ভালোবাসা #লেখিকাঃ Tamanna Islam #পর্বঃ ২৪

0
1164

#নেশাক্ত_ভালোবাসা
#লেখিকাঃ Tamanna Islam
#পর্বঃ ২৪

আইরাত বাড়িতে গেতে না গেতেই পাকে আরেক ঝামেলা। আইরাত গিয়ে দেখে তার চাচা আর চাচি মুখ ফুলিয়ে দিয়ে বসে আছে আর তাদের মাঝে রনিত বসে আছে। আইরাত কে আসতে দেখেই রনিত ছুটে গিয়ে আইরাতের কাছে যায়। আর তখনই সবার চোখ আইরাতের দিকে যায়।

রনিত;; আইরু আপু আইরু আপু..!

আইরাত রনিত কে অনেক গুলো পাপ্পি দেয়।

রনিত;; এসেছো তুমি। জানো অনেক মিস করছিলাম তোমাকে। আমার জন্য চকোলেট আনো নি?

আইরাত;; হ্যাঁ এনেছি তো অনেক গুলো। এই যে নে।

আইরাত রনিতের হাতে দুই বক্স চকোলেট ধরিয়ে দিলো। রনিতের খুশি আর দেখে কে। তবে আইরাত রনিতের দিকে ঝুকে আস্তে করে বলে ওঠে…

আইরাত;; আচ্ছা কি হয়েছে চাচা-চাচির বল তো। এভাবে দুজনেই মুখ গোমড়া করে রেখেছে কেন?

রনিত;; আরে তুমি তো এতোদিন ছিলে না জানো না তো কি কি হয়েছে আল্লাহহহহহহহহ 😱 (ফিসফিস করে)

রনিতের এমন রিয়েকশন দেখে আইরাত ফিক করে হেসেই দেয়।

আইরাত;; কি হয়েছে বলবি?

রনিত;; আরে তোমাকে নিয়েই বেধেছে দুই জনের মাঝে।

আইরাত;; আমাকে নিয়ে মানে? আমি আবার কি করলাম?

রনিত;; তা আমি জানি না তুমি বরং গিয়েই শুনো আমি এখন বাইরে যাবো খেলতে এতোক্ষনে আমার কান পচে গেছে।

আইরাত;; চুপ বাদর একটা। আচ্ছা তুই যা

রনিত দৌড়ে বাইরে চলে গেলো। আর আইরাত ধীর পায়ে হেটে ভেতরে গেলো। আইরাত কে দেখেই তার চাচা ইকবাল তার দিকে এগিয়ে গেলো। আর তখনই ষাড়ের মতো চেচিয়ে আইরাতের চাচি বলে ওঠে…

কলি;; হাহ ওইতো এসেছে বাড়ির জমিদার। চারদিনের কথা বলে আজ নিয়ে ছয়দিন লাগিয়ে দিলো।

আইরাত;; চাচি আমি সেখানে সাধে থাকি নি।

কলি;; এই রনিতের বাবা তুমি এখন সোজা সাপটা সব বলে দাও তো।

আইরাত;; চাচ্চু হয়েছে কি? আমি বাড়িতে না থাকার ফলেও যদি এই আমাকে নিয়েই ঝামেলা হয় তাহলে প্লিজ বলে দাও আমি বাড়ি থেকে বের হয়ে যাই।

ইকবাল;; শোন মা আমি কখনো চাই নি যে এমন কিছু একটা হোক। যদি আমার বড়ো ভাই তোর বাবা বেচে থাকতো তাহলে হয়তো আজ আমাকে উনার নিজের ভাই হিসেবে পরিচয় দিতেও বাধতো। কেননা আমার কাছে থেকেও তোকে এই এতো কিছু সহ্য করতে হচ্ছে।

আইরাত;; আহা চাচ্চু ছাড়ো তো।

ইকবাল;; আজ একটা না একটা ব্যাবস্থা হবেই।

এই বলেই একবাল সাহেব একটা ব্যাগ এনে আইরাতের সামনে রাখলেন।

ইকবাল;; আইরাত মা এই ব্যাগে, এই ব্যাগে এক কোটি টাকা আছে। এটা তোর।

কলি;; কি তুমি, তুমি এই সব টাকা গুলো ওকে দিয়ে দিচ্ছো?

ইকবাল;; হ্যাঁ কারণ এটা আইরাতের ভাগ। ভাইজান এগুলো নিজের মেয়ের নামে রেখে গিয়েছিলেন। আর তোমার লজ্জা থাকা দরকার কেননা এতো দিন তুমি এই আইরাতের বাবার সম্পত্তিতে তেই থেকে-খেয়ে এসেছো। সেখানে আইরাত কে কিছু বলা কওয়ার অধিকার তোমার নেই বুঝলে।

আইরাত;; কিন্তু চাচ্চু এই টাকা গুলো দিয়ে আমি কি করবো। আমার দরকার নেই।

ইকবাল;; অবশ্যই দরকার আছে। টাকা গুলো তুই তোর পড়াশোনার পেছনে খরচ করতে পারবি। এগুলো তোর আমানত তোর কাছেই রাখ। আর হ্যাঁ মা যেখানে লোভী কুমিররা থাকে সেখানে এই জিনিস গুলো সামলিয়ে রাখা টাই ভালো।

ইকবাল কথা টা যে ইন্ডিরেক্টলি হলেও আইরাতের চাচি কলি কেই বলেছেন তা আর কারো বুঝতে বাকি রইলো না। আইরাত আর কিছু না বলেই নিজের ব্যাগপত্র সব নিয়ে নিজের রুমে এসে পরে। এসেই নিজের ব্যাগ টা সোফাতে ছুড়ে মারে। আর বিছানাতে গিয়ে ধপ করে শুয়ে পরে।

আইরাত;; উফফফফফফফ আল্লাহ, এতো ভেজাল আর ভালো লাগে না। এই বাড়ি ছেড়ে চলে যেতেও পারি না একমাত্র চাচ্চুর জন্য। আমি ডিপ্রেশনে চলে যাবো এভাবে চলতে থাকলে। কিছু তো একটা করতেই হবে।

হঠাৎ আইরাতের মাথায় একটা কথা আসে। আর আইরাত ঝট করে উঠে পরে।

আইরাত;; আচ্ছা আমি এক কাজ করি। অফিসের চাকরি টা ছেড়ে দেই। হ্যাঁ কারণ সেখানে থাকলে আমি আরো পাগল হয়ে যাবো। আব্রাহাম পাগল বানিয়ে দিবে আমায়। হুম এটাই বেস্ট হবে, আমি কালই অফিসে গিয়ে আমার রেসিগনেশন ল্যাটার টা সাবমিট করে দিবো।

আইরাত হাত দিয়ে নিজের মুখ চেপে ধরে চোখ বন্ধ করে কিছুক্ষন বসে থাকে।

ফ্রেশ হয়ে আইরাত নিচে গেলো। ভাগ্যিস আজ তার চাচি রান্না করেছে। কোন রকমে গিয়ে খেয়ে এসে আবার নিজের রুমে যায়। সকালে অনেক যার্নি করে এসেছে যার ফলে অনেকটাই টায়ার্ড। শুয়ার সাথে সাথে চোখে ঘুম নেমে এলো।


পরেরদিন সকালে ঘুম থেকে উঠেই আইরাত রেডি হয়ে অফিসের উদ্দেশ্যে বের হয়ে পরে। আজ অন্যান্য দিন থেকে আইরাত অফিসে দশ মিনিট আগেই এসেছে। অফিস এতো শান্ত আজ। আজ এখনো আব্রাহাম আসে নি। আর আব্রাহাম আসার আগে সবাই বেশ কোলাহল করেই কাটিয়ে দেয় সময় টুকু। আব্রাহাম যখন আসে তখন সবাই যেন রোবট, একদম চুপচাপ। কিন্তু আজ এখন থেকেই সবাই অনেক চুপ। ব্যাপার টা আইরাত খেয়াল করলো। আইরাত ভেতরে যেতেই দেখলো রোদেলা দাঁড়িয়ে দাঁড়িয়ে একজনের সাথে কথা বলছে।

আইরাত;; এই রোদেলা..!

রোদেলা;; হ্যাঁ এসেছো।

আইরাত;; হুম কিন্তু সবাই আজ এতো চুপ কেন?

রোদেলা;; আরে নিউ প্রজেক্ট নিয়ে সবাই অনেক বেশি সিরিয়াস। প্রচুর ভাগ-দৌড় করছে সবাই। এক বিন্দু কিছু ওলট-পালট হলে আব্রাহাম স্যার খুন করে ফেলবেন একদম।

আইরাত;; ঘোড়ার ডিম করবেন। মানুষ মাত্রই ভুল করে এতে এতো রাগার কি আছে।

রোদেলা;; আরে স্যার তো নিজেও পারফেক্ট আর উনার সবকিছু চাইও পারফেক্ট। (কিছু টা লজ্জা পেয়ে)

আইরাত;; তা তুমি লজ্জা পাচ্ছো কেন?

রোদেলা;; আরে স্যার তো আমারও ক্রাশ।

আইরাত;; ওরে বাবা রে আচ্ছা থাক হয়েছে।

আইরাত রোদেলার সাথে কথা বলছিলো আর তখনই চোখে চশমা পরে হাতে ফোন ঘাটতে ঘাটতে আব্রাহাম অফিসের ভেতরে আসে। সবাই তাকে দেখে দাঁড়িয়ে পরে। আব্রাহাম যখন ভেতরে আসে তখন ফোন থেকে মাথা তুলে এক নজর আইরাতের দিকে তাকায়।

আব্রাহাম;; মিস.আইরাত, কফি নিয়ে আমার কেবিনে আসুন এক্ষুনি।

আইরাত অবাক, এই প্রথম আব্রাহাম তাকে আপনি বলে সম্বোধন করলো। হয়তো এখন সবাই আছে তাই। আব্রাহাম তার কেবিনে চলে গেলো। এখন কি আর করার আইরাত কে কফি বানাতে হবে। সে তার পাশে ঘুড়ে তাকিয়ে দেখে রোদেলা তার দুই হাত বুকের কাছে জড়িয়ে ধরে হেলেদুলে আব্রাহামের দিকে তাকিয়ে আছে। মুখে খুশি যেন উপচে পরছে। আইরাত দেয় এক ধাক্কা।

আইরাত;; এমন করে তাকিয়ে থাকতে হবে কেন?

রোদেলা;; আব্রাহাম স্যারের দিকে না তাকালে আমার এই চোখ দুটোর সাথে বড্ড বেশি অন্যায় করা হবে।

আইরাত;; এহহহহহহহহহহ আদিক্ষেতা।

রোদেলার কাছ থেকে আইরাত এসে পরে, তারপর চলে যায় কিচেনে। গরমা গরম এক কাপ কফি বানিয়ে আইরাত আব্রাহামের কেবিনে চলে যায়। আর সাথে নিজের রেসিগনেশন ল্যাটার টাও নিয়ে যায়।

আইরাত;; ভেতরে আসবো?

আব্রাহাম;; এসো।

আইরাত গিয়ে আব্রাহামের টেবিলের সামনে কফির কাপ টা রাখে। তবে আব্রাহাম টেবিলে নেই। আইরাত তাকে আশে পাশে খুজছে। আর তখনই আব্রাহাম হুট করেই এসে আইরাতকে পেছন থেকে জড়িয়ে ধরে। আইরাত চমকে কিছুটা চিল্লিয়ে ওঠে। আব্রাহাম তার দুই হাত দিয়ে আইরাতের কোমড় জড়িয়ে ধরে তার ঘাড়ে নিজের নাক ডুবিয়ে দেয়।

আব্রাহাম;; আই মিস ইউ জানপাখি।

আইরাত;; কালই তো দেখা হয়েছিলো এইটুকু সময়ে আবার মিস করার কি আছে?

আব্রাহাম;; তা তুমি বুঝবে না। আমি বুঝি।

আইরাত;; ছাড়ুন।

আব্রাহাম;; ন্যাহ ন্যাহ।

আইরাত;; আপনাকে আমার কিছু বলার আছে।

আব্রাহাম;; হ্যাঁ আমারও অনেক বেশি ইম্পর্ট্যান্ট কথা বলার আছে তোমাকে। অনেক বেশিই।

আইরাত;; জ্বি বলুন।

আব্রাহাম;; আই লাভ ইউ।

আব্রাহাম এই কথা বলেই টুক করে আইরাতের গালে কিস করে দেয়। তারপর আইরাত কে ছেড়ে দিয়ে নিজের চেয়ারে এসে বসে।
কফিতে চুমুক দিতে দিতে ফাইল গুলো দেখছে।

আব্রাহাম;; হুম হুম গুড।

আইরাত;; দেখুন সিরিয়াসলি কথা আছে আমার।

আব্রাহাম;; হুম বলো।

আইরাত;; আমার রেসিগনেশন ল্যাটার। আমি এই জব টা আর করতে চাইছি না।

আইরাতের এমন কথায় আব্রাহামের মাঝে তেমন কোন পরিবর্তন দেখা গেলো না। সে আগের মতো করেই ফাইল দেখছে আর কফি খাচ্ছে। আইরাত আব্রাহামের এতো শন্ত চেহারা দেখে কপাল কুচকায়।

আইরাত;; আমি কিছু বলছি আপনাকে, আমি জব টা ছাড়তে চাইছি।

এবার আব্রাহাম জোরে জোরে হেসেই দেয়

আব্রাহাম;; হাহাহা, হাহাহা।

আইরাত;; আপনি হাসছেন কেন?

আব্রাহাম;; যখন আমার পিএ হবার জন্য পেপারে সাইন করেছিলে তখন পেপার টা ঠিক ভাবে পড়েছিলে কি?

আইরাত;; আপনি ঠিক ঠাক ভাবে পড়তে দিয়েছিলেন কি আমায়?

আব্রাহাম;; হুম।

আব্রাহাম বসা থেকে উঠে দাঁড়ায়।

আব্রাহাম;; এক বছরের কমিটমেন্ট করা আছে তোমার সাথে। এক বছর অব্দি তুমি চাইলেও এই জব টা ছাড়তে পারবে না।

আইরাত;; কি কিন্তু কেন?

আব্রাহাম;; এটাই বলা ছিলো সেই পেপার্স গুলোতে।

আইরাত;; কিন্তু

আব্রাহাম;; এখন বলেও লাভ নেই জান।

আইরাত;; মানে এই পাগলের সাথে আরো পুরো এক বছর। আমার মাথা ঘুড়াচ্ছে (মনে মনে)

আব্রাহাম এবার আইরাতের সামনে গিয়ে দাঁড়ায়। নিজের দুই হাত দিয়ে আইরাতের কোমড় চেপে ধরে নিজের সাথে লাগিয়ে নেয়। এক হাত দিয়ে আইরাতের কোমড় পেচিয়ে ধরে। আরে হাতের আঙুল গুলো আইরাতের গালে ছুইয়ে দিতে দিতে বলে ওঠে…

আব্রাহাম;; বেবিগার্ল, একটা কথা মাথায় রেখো। তুমি যতো দূরে যাবে আমি ঠিক তার দ্বীগুণ হারে তোমার কাছে আসবো। So you can’t escape from me and Don’t you dare to try that ok..! বেশি ভালো হবে না তা তোমার জন্য।

আইরাত;; দেখুন আপনি…

আব্রাহাম;; আমি ভালোবাসি তোমায় আইরাত (চোখ মুখ শক্ত করে) তোমার কাছে সবসময় দুটো অপশন খোলা আছে। হয়তো আমাকে ভালোবাসবে নয়তো মরবে। কেননা আমি বেচে থাকতে তো তোমাকে অন্য কারো হতেই দিবো না। কখনোই না।

আইরাত;; লেন এমন পাগলামি গুলো করেন বলুন তো। দেখুন আপনার সাথে আমার যায় না। আমি খুব সাধারন একটা মেয়ে আর আপনি, আপনার জীবনে বিলাসিতার অভাব নেই। আব্রাহাম আকাশ আর সমুদ্র কখনো এক হয় না।

আব্রাহাম;; কিন্তু আকাশে যখন বিদুৎ চমকায় তখন প্রাকৃতিক নিয়মে সমুদ্রের পানিতে ঢেউ খেয়ায় সবার আগে। আকাশে বৃষ্টি হলে তার পানি গুলো সমুদ্রের বুকে এসেই আছড়ে পরে আগে। আর মজার ব্যাপার হচ্ছে এটা যে আকাশ কে কিন্তু কখনোই মানুষ একা উচ্চারণ করে না। সবসময় বলে আকাশ-জমিন। আর মনে রেখো সমুদ্রের অবস্থান কিন্তু জমিতেই।

আইরাত;; ______________

আব্রাহাম;; শুনো আমি ভালোবেসেছি তোমাকে। তোমাকেই বাসবো। আর এছাড়াও তুমি তো আমারই। তুমি চাইলেও আমার না চাইলেও আমার।

আইরাত গিয়ে নিজের কেবিনে বসে। মানে তার জায়গা তে গিয়ে বসে। তার আর আব্রাহামের কেবিন তো এক রুমেই সেট করা।

আব্রাহাম গিয়ে তার চেয়ারে বসে। হাতে একটা পেন্সিল নিয়ে ঘুড়াচ্ছে আর আইরাতের দিকে তাকিয়ে আছে। আব্রাহামের এমন নজর বরাবরই আইরাতকে অস্বস্তি তে ফেলে। কি আর করার আইরাত সেভাবেই কাজ করতে থাকে। অফিসের কাজ তাড়াতাড়ি শেষ বিধায় সে বিকেলের দিকেই এসে পরে। আসলে আব্রাহাম কে না বলেই এসেছে। লুকিয়ে চুরিয়ে।
আব্রাহাম তো রাগে লাল। শুধু পালাই পালাই করে ঘুড়ে বেড়ায় তার থেকে । এখন রাত বাজে ৮ টা। আব্রাহাম অফিস থেকে বের হয়ে পরে।


ওদিকে আইরাত পপকর্ন খাচ্ছে আর টিভি তে আরামছে হরর মুভি দেখছে। হঠাৎ তার ফোন বেজে ওঠে আর এমন বিকট শব্দে ফোন বাজাতে আইরাত এমন ভাবেই চমকে গিয়েছে যে হাত থেকে পপকর্ন ছিটে পরে গেছে। আইরাত নিজের মাথায় নিজেই গাট্টা মেরে ফোন টা রিসিভ করে। আননোন নাম্বার। আইরাত মাথা চুল্কাতে চুল্কাতে ফোন টা ধরে।

আইরাত;; কে?

আব্রাহাম;; অবশ্যই তোমার জামাই।

আইরাত;; আপনি?

আব্রাহাম;; অন্য কাউকে আশা করেছিলে নাকি?

আইরাত;; জ্বি না।

আব্রাহাম;; নিচে আসো।

আইরাত;; মানে?

আব্রাহাম;; আরে মাথা মোটা আমি নিচে দাড়িয়ে আছি, নিচে আসো।

আইরাত;; এই আমি পারবো না, আমি হরর মুভি দেখছি জ্বালাবেন না তো।

আব্রাহাম;; হেই লিসেন, ঝাড়ি মারবে না আমায় একদম। তুমি নিচে নামবে নাকি আমি ওপরে আসবো?

আইরাত;; সবসময় হুমকি। যা ইচ্ছে করেন আমি নিচে যাবো না।

আব্রাহাম;; ওকে এস ইউ উইস।

আইরাত;; হ্যালো হ্যা হালো। যাহ, কেটে দিলো।

আইরাত ফোন টা রেখে দিয়ে আবার পপকর্ন খেতে বসে। তার ঠিক কয়েক সেকেন্ড পরেই নিচ থেকে চিল্লানোর আওয়াজ আসে।

আব্রাহাম;; আইরাত বেবিগার্ল, সেই জান কোথায় তুমি। আইরাত বেবি। (অনেক চল্লিয়ে)

আইরাতের হাত থেকে প্রথমে পপকর্ন পরে গিয়েছিলো ফোনের শব্দে ভয় পেয়ে আর এখন আরেক বার পপকর্ন গুলো পরে গেলো আব্রাহামের এই জোর চিল্লানোর শব্দে ভয় পেয়ে। আইরাতের পপকর্নের বাটি এবার পুরোই খালি।

আইরাত;; পপকর্ন 🙂🙂।

আইরাত দ্রুত রুমের দরজা খুলে বাইরে বের হয়ে পরে। দেখে ইকবাল সাহেব আর আব্রাহামের মাঝে অলরেডি লেগে গেছে এক ঘা।

ইকবাল;; এই ছেলে এই তুমি আবার আমার বাড়িতে এসেছে হ্যাঁ। কোন ভদ্রতা নেই তোমার মাঝে। এতো রাতে একজনের বাড়িতে এসে এভাবে বাড়ির মেয়ের নাম ধরে চিল্লাচ্ছো। কাহিনি কি। সকাল আর রাত নেই শুধু এসে পরে। যাও এখান থেকে।

আব্রাহাম;; ওও চাচাজান আস্তে হ্যাঁ। আমি আমার জিনিস না নিয়ে যাই না। আগে এখান থেকে ওকে নেই তারপর আপনার বলার জন্য এখানে আর বসে থাকবো না এমনিই চলে যাবো।

ইলবাল;; এই ছেলে তুমি তো আচ্ছা বেয়াদ………

আব্রাহাম;; Hay look that’s my Babygirl….

আইরাত সিড়ির ওপরে দাঁড়িয়ে ছিলো। এগুলো দেখে সে দ্রুত নিচে নেমে পরে। আব্রাহাম কে রেগে কিছু বলতে যাবে তার আগেই আব্রাহাম আইরাতের হাত ধরে ফেলে। আবার ইকবাল সাহেব বলে ওঠেন…

ইকবাল;; এই ছেলে যাও এখান থেকে। আর হাত ছাড় আমার মেয়ের, যাও বলছি।

ইকবালের কথা শুনে আব্রাহাম এবার আর এক মূহুর্ত দেরি না করে আইরাতকে এক টান দিয়ে সোজা তার কোলে তুলে নেয়।

আব্রাহাম;; আমার আইরাত, আমার বেবিগার্ল। যেখানে ইচ্ছে নিয়ে যাবো, যা ইচ্ছে করবো আপনার কি তাতে।

আইরাত;; আপ..

আব্রাহাম;; এই চুপ।

আব্রাহাম আর একটা কথা না বলেই আইরাত কে নিয়ে বের হয়ে পরে বাসা থেকে। বাইরে গিয়ে নিজের গাড়িতে বসিয়ে দেয়। আইরাত কিছু বলতে গেলেই আব্রাহাম তার দিকে এমন চোখে তাকায় যে আইরাতের আওয়াজ ওই গলা পর্যন্ত এসেই অফ তার বাইরে আর বের হয় না। আব্রাহাম গাড়িতে বসে আইরাতকে কে নিয়ে চলে যায়। কোথায় যাচ্ছে কেনোই বা যাচ্ছে জানে না।





চলবে~

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here