প্রেমের পাঁচফোড়ন💖 #সিজন_২ #পর্ব_২৯

0
689

প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#সিজন_২
#পর্ব_২৯
#Writer_Afnan_Lara
🌸
কি শর্ত?
.
রিয়াজের বিয়ের সব অনুষ্ঠানে আমার সাথে এটেন্ড করতে হবে তোমাকে এজ মাই ওয়াইফ
.
এহহহহ,শখ কত,পারবো না আমি
.
শান্ত নিচু হয়ে আহানার নাক বরাবর মুখটা লাগিয়ে বললো”তাহলে তোমার কপালে শনির দশা আছে মিস আহানা”
.
আহানা একটু পিছিয়ে গিয়ে বললো”আচ্ছা যাব তবে আমারও একটা শর্ত আছে”
.
কি?
.
আমাকে ছুঁবেন না একদম
.
সেটাতে ওকে বলতে হলে এখন এই মূহুর্তে তোমাকে আমি মদের বোতলের সেম্পলটা দিব না,ভেবে উত্তর দাও
.
আহানা মুখ বাঁকিয়ে ৩মিনিট ধরে ভাবলো তারপর বললো”ঠিক আছে”
.
ওকে তাহলে আর তোমাকে ছুঁবো না
.
হুমম এখন সরুন আমি আমার ওড়না নিব
.
শান্ত গাল ভেটকিয়ে রুমের দিকে চলে গেলো
আহানা ওড়না ছুটিয়ে আবারও গ্রিল টপকে নামতেছে
.
এই তোমার কি মিনিমাম কমনসেন্স ও নাই??আমার সাথে তোমার কথা দুই এ দুই এক হয়ে গেছে তাহলে এরপরেও তুমি চোরের মতন গ্রিল টপকে যাচ্ছো কেন?
.
ও হ্যাঁ তাই তো
.
আহানা মাথা চুলকাতে চুলকাতে সোজা দরজা দিয়ে বেরিয়ে চলে গেছে
শান্ত বিছানায় হেলান দিয়ে বসে টিভি অন করলো,দারুন একটা শো দেখাচ্ছে,শো টার নাম হলো”আজকের সকাল”ঢাকার বিভিন্ন জায়গা লাইভ দেখাচ্ছে,শান্ত হাতে চিপসের প্যাকেট নিয়ে খেতে খেতে শো টা দেখছে
আহানা টেবিল থেকে আপেল একটা নিয়ে সোফায় বসে টিভি অন করে বসে কার্টুন দেখতেছে আরামসে
আর ২/৩দিন বাদেই রিয়াজের বিয়ের সব কাজ শুরু,প্রথমে গায়ে হলুদটাকেই ইম্পরট্যান্স দিচ্ছে শান্ত,নওশাদ আর সূর্য
কাল ব্যাচেলর পার্টি,শান্ত এই সকালবেলায় সময় পেয়েছে বলে আলমারি খুলে কাল কি পরে যাবে সেটা দেখতেছে
আহানা সোফায় ঘুমিয়ে গেছে টিভি দেখতে দেখতে,সকাল ৬টা বাজে তখন
হঠাৎ ল্যান্ডলাইনের ফোনটা বেজে উঠলো,আহানা ভয় পেয়ে জেগে গিয়ে এদিক ওদিক তাকালো,কেউ নেই তার মানে ফোনটা তাকেই ধরতে হবে
হ্যালো,কে?
.
আমি নওমি বলছি,শান্ত ভাইয়া আছে তাকে একটু দেওয়া যাবে?
.
নওমি আপু? মানে রিয়াজ ভাইয়ার বউ?
.
আহানা?
.
হুম
.
আরেহহহ দাঁড়াও দাঁড়াও,শান্ত ভাইয়াকে দিতে হবে না,আমি তো তোমাকেই খুঁজছিলাম,শান্ত ভাইয়াকে দিতে বলেছিলাম কারণ উনার থেকে তোমার নাম্বারটা নেওয়ার দরকার ছিল আমার,এখন তোমাকে পেয়ে গেলাম নাম্বার লাগবে না
.
কি হইছে?কোনো দরকার?
.
হ্যাঁ আসলে আমি জানতে পারলাম রিয়াজ,শান্ত ভাইয়া আর নওশাদ সূূর্য ভাইয়া তারা আরও কিছু ফ্রেন্ডরা মিলে গায়ে হলুদের আগের ব্যাচেলর পার্ট করবে
.
ওহ আচ্ছা তাই?
.
তো আমি আর আমার কাজিন,ফ্রেন্ডরা ভাবলাম তারা ছেলেরা বিয়ের আগে আবিয়াইত্তা পার্টি পালন করতে পারে তাহলে আমরা কেন পারবো না,সো আমরাও মেয়েদের একটা পার্টি করবো,কিটি পার্টি
তুমি ও আসবা,তোমাকে ডাকার জন্যই ফোন করলাম
.
আমি??কিন্তু!
.
আরে কোনো কিন্তু নয়,তুমি আমার ভালো ফ্রেন্ড হয়ে গেছো তার উপর শান্ত ভাইয়ার হবু ওয়াইফ তুমি,তোমাকে তো আলাদা করে গুরুত্ব দিতে হয়,সুইমিং প্লাজায় চলে এসো কাল সন্ধ্যা ৬টায়
.
আহানা আর কিছু বলার সুযোগই পেলো না কারণ নওমি লাইন কেটে দিয়েছে,আহানা বোকার মতে বসে আছে
পার্টিতে যেতে কোনো সমস্যা নেই কিন্তু কথা হলো যদি কণাও আসে?সে তো নির্ঘাত আসবে,আর আমাকে একা পেলে মাথা চিবিয়ে খাবে,উফ কি করে বাঁচবো এখন
আহানা ভাবতে ভাবতে রান্নাঘরে গেলো চা বানাতে,মাথাটা ধরেছে,চা খেলে ঠিক হবে,এখন সকাল ৬টা ১৭বাজে
আহানা কি পরে যাবে ভাবতে ভাবতে চা বানাচ্ছে
.
শান্ত ঠিক করলো সে কাল ব্রাউন কালারের জ্যাকেট,ভিতরে কালো টিশার্ট পরে যাবে সাথে ডিপ ব্ল্যাক জিন্স,পারফেক্ট!
সেগুলো একসাইড করে রেখে শান্ত রান্নাঘরের দিকে চললো কফি বানাতে
আহানা চা বানিয়ে পিছন ফিরতেই শান্তর সাথে এক ধাক্কা খেলো
.
চোখ কোথায় রেখে হাঁটেন আপনি?
.
তুমি দেখে হাঁটতে পারো না?সবসময় আমার দোষ দেয় এই মেয়ে
.
সরুন তো
.
আমার জন্য কফি বানিয়ে দাও
.
ইহ মঘেরমুলুক পাইছে উনি
.
শান্ত আহানার হাত থেকে চায়ের কাপটা নিয়ে নিলো ছোঁ মেরে
.
এটা কি ধরনের অসভ্যতামি?দিন আমার চায়ের কাপ
.
আগে কফি বানিয়ে দাও
.
আহানা শান্তকে গালি দিতে দিতে পানি গরম করতে চুলায় বসিয়ে শান্তর হাত থেকে চায়ের কাপটা নিয়ে চলে গেলো
.
সকালের নাস্তা সেরে সেই দুজন মিলে একসাথে অফিসে ফিরেছে
আহানা ঠিক করলো সে শাড়ী পরে যাবে,যেহেতু তার ভালো কোনো জামা নাই তো শাড়ী একটা আছে তার কাছে যেটা শান্তর মা ওকে দিয়েছিলো কিছুদিন আগে,খয়েরী রঙের সেই শাড়ীটা
আজ কাজের এত চাপ যে অফিসে শান্ত আহানার তেমন একটা দেখা হয়নি,একেবারে সন্ধ্যাবেলায় বাসায় ফিরার সময় দেখা হয়েছে
.
পরেরদিন সকাল সকাল শান্ত আর আহানা দুজন মিলে রেডি হয়ে নিলো একেবারে অফিস থেকে পার্টিতে যাবে এই ভেবে
রুম থেকে বেরিয়ে দুজন দুজনকে দেখে তো রীতিমত অবাক
শান্ত অফিস কোট না পরে, পরে আছে জ্যাকেট -জিন্স
আর আহানা থ্রি পিস না পরে,পরে আছে শাড়ী
.
তুমি এরকম সেজেছো কেন?
.
আপনি এরকম সাজছেন কেন?
.
সেটা তোমার জানার বিষয় না,আগে বলো তুমি শাড়ী পরছো কেন?
.
আপনাকে কেন বলবো আমি?
.
শান্ত আর কিছু না বলে কারের দিকে হাঁটা ধরেছে,আহানার সাথে ঝগড়া করার মুড তার নাই
সন্ধ্যায় একটু চিল করবে সবাই মিলে আর এখন এই মেয়েটার সাথে ঝগড়া করে সন্ধার পার্টিটায় মুড খারাপ করতে চাই না আমি
আহানার মনে পড়লো নওমি আপু বলেছিলো যে আজ শান্ত আর রিয়াজ ভাইয়ারা মিলে ব্যাচেলর পার্টি করবে হয়ত তাই শান্ত এমন তৈরি হয়ে নিয়েছে আগে থেকে
অফিসে এসে আহানা নওমিকে ফোন করলো একবার
সেদিন নওমির থেকে মনে করে নাম্বারটা নিয়ে নিয়েছিলো সে
নওমি জানালো আজ ৬টায় আসতে
আহানা ফোনটা রেখে নিজের কাজে মন দিয়েছে
শান্ত নিজের রুমে এসে নওশাদকে ফোন করলো তারা বললো তারা আজ শান্তর অফিস ছুটি হলে ওকে নিয়ে একসাথে পার্টিতে যাবে
শান্ত তাই অফিস রুম থেকে বেরিয়ে আহানার কাছে এসে বললো আহানা যেন আজ অফিসের কারে করে বাসায় ফেরে কারণ সে আজ এখান থেকে একটা কাজে যাবে,কি কাজে যাবে সেটা আর বললো না
আহানা মাথা নাড়ালো,তারপর মনে মনে অনেক খুশি হলো এই ভেবে যে শান্তকে কৈফিয়ত দিতে হবে না সে সন্ধ্যাবেলায় কই যাবে,এখন আর শান্ত জানবেও না
আহা কি মজা
সন্ধ্যা হয়ে গেছে আহানা চোরের মতন তাকিয়ে আছে শান্তর অফিস রুমের দিকে
উফ কখন যাবে!!ধুর ধুর,আমার তো দেরি হয়ে যাচ্ছে
শান্ত জ্যাকেটের চেইন খুলে আহানার কেবিনের সামনে নিয়ে চলে গেলো
আহানা সাথে সাথে ব্যাগ নিয়ে বেরিয়ে পড়েছে
শান্ত চলে গেছে একদিকে আর আহানা আরেকদিকে
ইয়া বড় এক শপিং মল,এই শপিংমলটার ছাদে কিটি পার্ট হবে
আহানা চুলগুলো ছেড়ে দিয়ে মুখটা হাত দিয়ে মুছে ভিতরে গেলো শপিং মলটার
তারপর লিফটে ঢুকে মুখে হাসি ফুটালো সে,সারাদিনের কর্মব্যস্ততা থেকে বেরিয়ে এখন একটু রিল্যাক্স করা যাবে
ছাদে এসে আহানা তো রীতিমত অবাক,বিরাট আয়োজন এখানে
যাকে বলে এলাহি কান্ড
সবাই এখানে ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরে এসেছে
আহানা এটা দেখে মন খারাপ করলো,তার একটা ভালো জামা থাকলে সেটা পরে আসতে পারতো সে,জামা না থাকায় এরকম একটা পার্টিতে শাড়ী পরে আসতে হইছে
.
আরে আহানা যে আসো আসো
.
আহানা মুচকি হেসে নওমির কাছে গিয়ে দাঁড়ালো,নওমি হলুদ রঙের একটা ওয়েস্টার্ন ড্রেস পরে আছে,সাথে কণা এসে দাঁড়াতেই আহানার মনে হয় কলিজায় কেউ খোঁচা দিছে
ভয়ে আহানার গলা শুকিয়ে গেছে
নওমি সবাইকে নিয়ে গোল হয়ে চেয়ার নিয়ে বসলো
তারপর বললো!”শুনো সবাই,আমাদের সবার উড বি/বিএফরা ব্যাচেলর পার্টিতে সো আমি আর কণা মিলে ঠিক করেছি আমরা তাদের ব্যাচেলর পার্টিতে গিয়ে তাদের ইয়া বড় সারপ্রাইজ দিব, ইয়ে!!”
.
আহানা চোখ বড় করে চেয়ার থেকে উঠে দাঁড়িয়ে পড়লো
.
কি ব্যাপার আহানা?খুশি হও নাই?সেখানে তো শান্ত ও আছে কিন্তু হুমমমম☺
.
না আমি বাসায় যাব,বাই
.
নওমি দৌড়ে এসে আহানাকে আটকালো
আহানা কোথায় যাও,এটা কিন্তু ঠিক না,তুমি বলেছিলে আমাদের সাথে পার্টিতে জয়েন হবে তাহলে এই পার্টি আর ঐ পার্টিতে কি সমস্যা,বরং আরও মজা হবে সেখানে
.
কণা হেসে হেসে বললো”নাকি তোমার হাসবেন্ডের কাছে যেতে লজ্জা করে?”
.
আহানা চুপ করে আছে,তারপর কণার কথার চাপে হ্যাঁ বলে দিলো সে
সবার সাথে শান্ত দের পার্টিতে এসে হাজির হলো অবশেষে
শান্ত মদ এই নিয়ে ৫গ্লাস খেয়েছে,কাজু বাদাম মুখে নিয়ে নওশাদের সাথে হাসাহাসি করতেছে সে
হঠাৎ অনেকজন মিলে বলে উঠলো “সারপ্রাইজ!!!”
শান্ত আর বাকিরা পিছনে তাকিয়ে তো চমকে গেলো সবাইকে দেখে
পুরো মেয়েদের গ্যাং হাজির এখানে
শান্ত আহানাকে এখনও দেখেনি কারণ সে সবার শেষে দাঁড়িয়েছে,সে দেখেছে শুধু কণাকে
শান্ত ঢোক গিলে জ্যাকেটের চেইন টেনে উপরে তুলে ফেললো
কণার একমাত্র দূর্বলতা হলো শান্তর বডি,আর তাই শান্ত সেটা ওকে দেখলেই লুকায়
.
কিগো পুরো ব্যাটেলিয়ন এখানে কি করে?তাও আমাদের ব্যাচেলর পার্টিতে
কথাটা বলে রিয়াজ মদের গ্লাসটা রেখে নেমে গিয়ে নওমির কাছে এসে জিজ্ঞেস করলো ওরা সবাই এখানে কেন
নওমি বললো “সারপ্রাইজ”
যাই হোক রিয়াজ আর কি করবে ওদের নিয়েই পার্টিটা শুরু করলো
শান্ত নওশাদকে সামনে বসিয়ে নিজে কোণায় গিয়ে বসেছে,কণা নির্ঘাত জ্বালিয়ে খাবে এখন
আহানা এদিক ওদিক তাকিয়ে শান্তকে খুঁজতেছে
সবাই তাদের পার্টনারকে নিয়ে ব্যস্ত
আহানার ভয় করছে,এখানে কাউকে তেমন চিনে না সে
নওমি আপুকে চিনতো সে এখন রিয়াজের সাথে কোণায় গিয়ে বসেছে
বাকি রইলো নওশাদ আর সূর্য,ওদের খুঁজে পেলে নিশ্চয় শান্তকেও পাওয়া যাবে
এখানে তো শান্তই ভরসা,ওর কাছে থাকলে সেফটি ফিল হয়
আহানা এগোনোর জন্য পা বাড়াতেই একটা ছেলে ওর হাত ধরে ঘুরিয়ে ওকে আরেকদিকে ফিরিয়ে নিয়ে গেলো
আহানা কপাল কুঁচকে বললো”আপনি!আপনাকে না বলছিলাম আমালে ছুঁবেন না!এরকম করে ধরলেন কেন,আমি তো ভয় পেয়ে গেছিলাম”
ছেলেটার মুখে পার্টি মাস্ক থাকায় আর ঠোঁটটা একদম শান্তর মত হওয়ায় আহানা ভাবলো ছেলেটা শান্ত
কিন্তু শান্ত তো কণার ভয়ে নওশাদের পাশে লুকিয়ে অরেঞ্জ জুস খাচ্ছে,আবার হাতিয়ে টেবিলের উপর থেকে চিপস নিয়ে খাচ্ছে মাঝে মাঝে
কণা পাগলের মতো শান্তকে খুঁজতেছে
অবশেষে সে শান্তকে পেয়েও গেলো
শান্ত!!!
.
উফ কার মুখ দেখে আজ উঠেছিলাম
.
কণা শান্তর পাশে এসে বসে পড়েছে,তারপর শান্তর ঠোঁট আর গলার দিকে তাকিয়ে মুচকি হেসে বললো”দিন দিন এত কিউট কেন হচ্ছো শান্ত!আমি যে পাগল হয়ে যাবো”
.
রিয়াজ নওশাদের কানে ফিসফিসিয়ে বললো”এখন মনে হয় পাগল নয়,এখন তো পুরো পাগল,তাহলে আর কত পাগল হবে?”
সূর্য আর নওশাদ ফিক করে হেসে দিলো রিয়াজের কথায়
নওমি ওদের দিকে চোখ রাঙিয়ে বললো”মজা অফ দাও আমার বেস্টিকে নিয়ে,কত মানায় ওদের,আমি তো ভেবেছিলাম ওদের বিয়েতে অনেক অনেক মজা করবো কিন্তু শান্ত ভাইয়া কিনা আহানার সাথে এঙ্গেজমেন্ট করে নিলো!সব স্বপ্ন মাটি!
আরে আমি তো ভুলেই গেসিলাম,আহানাও তো এসেছে আমাদের সাথে,সে কোথায়?

.
কি হলো হাত ছাড়ুন!
.
ছেলেটা নিজের মুখ থেকে মাস্ক সরিয়ে ফেললো
ছেলেটার মুখ দেখে আহানার মনে হয় পায়ের নিচ থেকে মাটি সরে গেছে,রতনের চেয়েও নিকৃষ্ট কোনো ছেলে যদি আহানা দেখে থাকে তা হলো এই ছেলেটা,এর চরিত্র কত খারাপ আহানা তা খুব ভালো করে জানে
ছেলেটা একটু পাগল প্রকৃতির
আহানা ১বছর আগে একটা মেয়েকে প্রাইভেট পড়াতো,তার নাম টিয়া,টিয়ার ভাই হলো এই ছেলেটা
নাম সাইমন
এই ছেলেটা আহানাকে ছোঁয়ার চেষ্টা করতো সবসময়,খারাপ নজরে তাকাতো আর তাই আহানা সেই প্রাইভেট ছেড়ে দেয়
এরপর আর ছেলেটা আহানাকে কোথাও খুঁজে পায়নি
তবে আজ ঠিকই পেয়ে গেলো
আহানা ভয়ে কিছুদূর পিছিয়ে গেছে
ছেলেটা হেসে বললো”এট লাস্ট তোমাকে খুঁজে পোলাম আমি,এরকম একটা জায়গায় পাবো সিরিয়াসলি ভাবিনি”
.
আহানা এদিক ওদিক তাকিয়ে শান্তকে খুঁজলো
সাদা লাইট অফ করে লাল নীল বাতি জ্বালানো হয়েছে
আহানা এতক্ষণ যা নওমি,কণাকে দেখেছিলো এখন সেটাও দেখতেছে না এই আলোতে
ছেলেটা এগিয়ে এসে আহানার দুহাত ধরলো আবারও
.
আহানা!!চলো আমরা ইঞ্জয় করি
.
হাত ছাড়ুন আমার,বেয়াদবির স্বভাব আপনার এখনও যায়নি,অতিরিক্ত করতেছেন,হাত ছাড়ুন আমার নাহলে চিৎকার করে মানুষ ডাকবো
.
একটা ইংরেজী গান খুব জোরে বাজানো হচ্ছে
আহানা শান্তকে ২/৩বার ডাক দিলো,সাইমন আহানার হাত আরও শক্ত করে ধরে বললো”কে শান্ত?ওকে ডাকছো কেন?আমি তো তোমার সামনে,আমার দিকে তাকাও,আসো না প্লিস,এই সুন্দর মূহুর্ত আমরা ইঞ্জয় করবো,আসো না”
.
আহানা হাত মুছড়াতে মুছড়াতে ভাবলো আজ তার হাতে একটা চুড়িও নেই,কিছুই নেই,ব্যাগটাতে ফোন ছাড়া কিছু ছিলো না,ব্যাগটা ধরার সুযোগ ও পাচ্ছে না সে
এত এত মানুষের ভীড়ে একটা ছেলে ওর সাথে খারাপ বিহেভ করছে কিন্তু কেউ খেয়ালই করছে না
সাইমন আহানাকে টেনে নিয়ে গেলো সিঁড়ির দিকে
সিঁড়ি বেয়ে উপরে উঠলে গুনে গুনে ৫/৬টা কেবিন
আহানা শান্তকে ডাকতে ডাকতে তার গলা ফেটে যাওয়ার মতন অবস্থা কিন্তু গানের তীব্র আওয়াজের কাছে তার এই চিৎকার কিছু না,সাইমনের সাথে পেরে উঠছে না সে
.
আজ আমি তোমার সাথে কিছু করলে তোমার মায়ের কিছু করার থাকবে না,তোমার তো কিছুই করার থাকবে না
তখন বাধ্য হয়ে আমাকেই বিয়ে করতে হবে তোমায়
.
আহানা কেঁদে দিয়েছে শান্তর কোনো সাড়া না পেয়ে,আজ বুঝি সে নিজেকে বাঁচাতে পারবে না
.
সাইমন আহানাকে কেবিন একটার দিকে নিয়ে যাচ্ছে টেনে হিঁচড়ে
আহানা হাতে প্রচণ্ড রকম ভাবে ব্যাথা পাচ্ছে,শান্তকে ডাকা অফ করে এখন সে শুধু বলতেছে তার হাত ছেড়ে দিতে
সাইমন আহানার হাত ছেড়ে ওর পিঠে হাত দিয়ে ওকে কাছে নিয়ে এসে বললো”ভাবতেও পারিনি আজ এখানে এসে এত বড় বোনাস পাবো,তোমাকে পাওয়া ছিলো আমার একটা জেদ,আর এতদিন পর সেই জেদ পূরণ হবে”
.
সাইমন আহানার চুলে হাত বুলিয়ে ওর কোমড় ছুঁতে নিতেই পিছন থেকে একটা হাত এসে ওর নাকে আঘাত করলো খুব জোরে
এত জোরে যে সে আহানাকে ছেড়ে দূরে থাকা রুমের দেয়ালে পিঠ ঠেকিয়ে পড়লো
আহানা সাথে সাথে পিছনে তাকিয়ে দেখলো শান্ত দাঁড়িয়ে আছে,শান্তকে দেখে আহানা কিছু না বলেই ওর বুকে গিয়ে মাথা লুকিয়ে ফেললো,ওকে শক্ত করে ধরে বললো”আমি আপনাকে ডেকেছিলাম শান্ত!অনেকবার ডেকেছিলাম”
.
শান্ত সাইমনের দিকে এক দৃষ্টিতে চেয়ে আছে,সাইমন পিঠে হাত বুলিয়ে ঠিক হয়ে দাঁড়ালো
আহানার কাঁপা কাঁপা হাতটা গিয়ে শান্তর জ্যাকেটটা শক্ত করে ধরেছে
শান্ত আঙ্গুল তুললো সাইমনের দিকে তারপর আহানাকে বুক থেকে সরিয়ে ওর হাত ধরে কেবিন থেকে বেরিয়ে গেলো
সোজা তার কারের কাছে এসে আহানাকে কারের ভিতর বসিয়ে গায়ের জ্যাকেটটা খুলে আহানার হাতে দিয়ে সে আবারও পার্টি সেন্টারটাতে ফেরত গেলো
চলবে♥
(টুইস্টা আজই দিব ভেবেছিলাম তবে আজকের পার্ট বড় হয়ে যাওয়ায় টুইস্টার অর্ধেক দিতে পেরেছি বাকিটা পরের পর্বে)

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here