প্রেমের পাঁচফোড়ন💖 #সিজন_২ #পর্ব_৩৩

0
681

প্রেমের পাঁচফোড়ন💖
#সিজন_২
#পর্ব_৩৩
#Writer_Afnan_Lara
🌸
গান শেষ হতেই সবাই স্টেজ থেকে নেমে যাচ্ছে
আহানা শান্তর মুখের দিকে চেয়ে আছে,আর শান্ত সে তো দাঁত কেলিয়ে শুধু হাসতেছে আজ
কি হয়েছে এই ছেলেটার!!
.
গায়ে হলুদের বিরিয়ানি খাওয়া শেষে রিয়াজ দাঁড়িয়ে তার মাকে বলতেছে একটা রুম খালি করতে
শান্ত পানির গ্লাস হাতে নিয়ে বললো”রিয়াজ আজ যাই,কথা দিচ্ছি কাল ভোরেই এসে পড়বো”
.
তা হচ্ছে না,আমি তোর আর আহানার জন্য আলাদা একটা রুম খালি করে ফেলেছি,তোরা আজ আমার বাসাতেই থাকবি
কথা ছিলো আমার বিয়ের ৭দিন আগে আসবি সেটা রাখোসনি তো এটা রাখতেই হবে
.
কিহ?এক রুমে আমি আর আহানা?ইম্পসিবল,আহানা এটা শুনলে আমাকে কাঁচা গিলে খাবে আর আমার পক্ষেও পসিবল না আহানার সাথে এক রুমে রাত কাটানোর
.
শুন,শান্তি আন্টি আর আহানার আম্মু,নিতু ওরা কাল আসবে,তোরা আজ থেকে যা,তোদের পরার সব ওরা আসার সময় নিয়ে আসবে,আমি আর কিছু শুনতে চাই না ব্যস
.
আহানা এগিয়ে এসো বললো”কি হয়েছে রিয়াজ ভাইয়া?”
.
আহানা তোমার কি শান্তর সাথে এক রুমে থাকতে কোনো প্রবলেম হবে?তোমরা তো হাসবেন্ড ওয়াইফ,প্রবলেম হওয়ার তো কথা না
.
কি বললেন?আমি তাও উনার সাথে এক রুমে?ইম্পসিবল এটা,হতেই পারে না
.
দেখলি,আমি বলেছিলাম না?
.
আহানা মুখ বাঁকিয়ে আরেকদিকে চলে গেলো
.
শান্ত তোকে আমি আমার রুমে শুতে বলতে পারতাম বাট কথা হলো আহানা কার সাথে ঘুমাবে?আমার কোনো বড় বোন নেই
যে পিচ্চি একটা আছে সে মা বাবার সাথে ঘুমায়,অন্য কারোর সাথে মরে গেলেও ঘুমাবে না সে,তো আহানা একা রুমে ঘুমাক??এতে তোর কোনো সমস্যা না হলে বল
.
একা?না ওকে একা রুমে দেওয়া যাবে না,ওর সেফটির জন্য আমি ওকে বিয়ে করেছি সেই আমি কিনা ওকে একা অজানা জায়গায় আলাদা রুমে ঘুমাতে দিব?
.
তাহলে একসাথেই এক রুমে থাক,একজন সোফায় আরেকজন বিছানায়,থিংক সামথিং ফিল্মি
.
এহহহহ!আহানা আমাকে সোফায় শুতে বলবে,যে মেয়ে তুই চিনস না ওরে
.
তো তুই তো সোফাতেউ ঘুমাবি,ফিল্মে তো ছেলেরাই সোফায় ঘুমায়
.
আহানা আবার এসে বললো”সোফায় শোয়ার কথা আসে কোথা থেকে?আমি তো উনার সাথে এক রুমেই ঘুমাবো না
.
রিয়াজ প্লিস মেনে যা,আমি সত্যি ভোরে রওনা দিব কাল
.
না আমি মানবো না এমনিতেও আজ তুই দেরি করে এসেছিস,আমি কিছুতেই মানবো না,নওশাদ,সূ্র্য থেকে যাচ্ছে তাহলে তোর কি সমস্যা?
.
শান্ত আহানার দিকে তাকালো,আহানা অনেক ভেবেচিন্তে তারপর রাজি হয়ে গেলো শেষমেষ
করিডোরের শেষপ্রান্তে যে রুমটা আছে সেটাতে আহানা আর শান্তকে এনে দাঁড় করিয়ে দিয়েছে রিয়াজ
তারপর শান্তর কাঁধে দুম করে হাত রেখে ওর পিঠ ঘষতে ঘষতে বললো”জাস্ট চিল!!ফ্রেশ হয়ে নে আমি নাস্তা পাঠাচ্ছি”
রিয়াজ হেসে চলে গেলো
আহানা শান্তর দিকে রাগী রাগী মুখ করে রুমটার ভিতরে ঢুকে ওর মাথায় মনে হয় আকাশ ভেঙ্গে পড়েছে
গোলাপের পাপড়ি দিয়ে বিছানাটায় লাভ শেফ করে আঁকা ভিতরে লিখা(S+A)
আহানা চোখ রাঙিয়ে শান্তকে ডাক দিলো,শান্ত এখনও করিডোরে,ফোন দেখতে দেখতে ভিতরে ঢুকে বললো “আবার কি সমস্যা”
.
কি সমস্যা? দেখুন কি সমস্যা!!
.
শান্ত ফোন থেকে চোখ উঠিয়ে বিছানার দিকে চেয়ে এমন অবস্থা দেখে হাসলো তারপর সোফায় বসতে বসতে বললো”আমার ফ্রেন্ড তো একটু মজা করেছে,ফুলগুলো সরিয়ে বসো,এত অবাক হওয়ার কি আছে?
.
আহানা অবাক হলো এই ভেবে যে শান্ত একদম নরমালি কথা বলতেছে,সে ভাবলো শান্ত হয়ত অন্য কিছু বলতো এরকম সাজানো দেখে
.
আহানা তাই চুপচাপ পাপড়িগুলো সরিয়ে পা তুলে বিছানায় বসে পড়লো,শাড়ীটা ভারী হওয়ায় আহানার অস্বস্তিকর লাগতেছে অনেক
চুপচাপ খোলাচুল গুলো ঘুরিয়ে পেঁচিয়ে খোঁপা করে সে বাইরের দিকে তাকালো,একটা জানালা,এই রুমে কোনো বারান্দা নেই,তবে জানালাটা ফ্লোর থেকে ছাদ পর্যন্ত,এরকম অদ্ভুত জানালা আহানা আগে দেখেনি তবে এমন ডিজাইন অনেক ইউনিক আর সামনে দাঁড়ালে বেশ লাগবে,যে ডিজাইনটা করেছে তার নিশ্চয় মন অনেক সুন্দর,কারন মন সুন্দর থাকা মানুষগুলোরই চিন্তাভাবনা এত সুন্দর হয়
এরকম জানালা থাকলে আর বারান্দার প্রয়োজন নেই
আহানা মুচকি হেসে এবার বিছানার উপরে থাকা গোলাপের পাপড়িগুলোর দিকে তাকালো তারপর সোজা শান্তর দিকে
শান্ত আজকে যে নেচেছিলো সে ভিডিওগুলো দেখতেছে আর মিটমিট করে হাসতেছে তার এদিকে ভ্রুক্ষেপও নেই
.
আহানা ফুলগুলো হাতে নিয়ে আবার নিচে ফেলছে আবার সেগুলো তুলে আবারও ছিঁটাচ্ছে
ঐ যে কথায় আছে না”নেই কাজ তো খই ভাজ”
অনেকটা সেরকমই
.
একজন মহিলা এসে হাজির হলেন কিছুক্ষণের মধ্যেই,গায়ের পোশাক আশাকে বোঝা যায় উনি এই বাসার হেল্পিং হ্যান্ড হিসেবে কাজ করেন
উনি হাতে একটা ট্রে নিয়ে এসেছেন,সম্ভবত চা আর বিসকিট
সাথে একটা প্যাকেট তার হাতে
ট্রেটা বিছানার উপর রেখে তিনি বললেন “রিয়াজের আম্মু এই পাঞ্জাবি আর এই শাড়ী এমনিতেও উপহার হিসেবে দিতেন ওদের,আর আজ ওরা এখানে যেহেতু থেকে যাচ্ছে বারতি পরার কিছু নেই তাই উপহারটা এখনই পাঠালেন,তারা যেন চেঞ্জ করে নেয়”
আহানা তো মহাখুশি,সে তার গায়ের এই ভারী শাড়ী খুলবে,তাই জলদি করে প্যাকেটটা থেকে শাড়ীটা বের করে নিয়ে সে বাথরুমে দৌড় দিলো
শান্ত কানে ফোন ধরে সূর্যর সাথে কথা বলতে বলতে চা খাচ্ছে
আহানা শাড়ীটা পরতে ওরতে ওর মনে পড়লো চা ঠাণ্ডা হয়ে যাচ্ছে
তাই আঁচলটা গায়ে পেঁচিয়ে দৌড় দিয়ে বেরিয়ে সে ট্রেটা থেকে চায়ের কাপ হাতে নিতেই ওর মনে হলো কেউ ওর দিকে ভূত দেখার মতো তাকিয়ে আছে
আহানা আঁচলটা পেঁচিয়ে বিছানায় বসতে বসতে বললো”এমন করে কি দেখেন আপনি?বিয়ে করেই খালাশ??আমার প্রতি আপনার আর কোনো দায়িত্ব নেই তাই না?নিজে বসে চা খাচ্ছেন,আমি খেলাম কিনা সেদিকে কোনো খবর নেই আপনার
.
তুমি তো শাড়ী পেয়ে দুনিয়া ভুলে বাথরুমের দিকে দৌড় দিসো,আমি আর কি বলতাম?
.
নাচেন,কিছু বলতে হবে না
.
এটা কি শাড়ী পড়ছো?এটা কে শাড়ী পরা বলে?মনে হচ্ছে বাঁশের উপর কেউ নেকড়া টাঙিয়ে দিয়েছে
.
আহানা চোখ বড় করে বললো”আমাকে দেখে আপনার বাঁশ মনে হয়?
.
নেকড়াও হতে পারে
.
আহানা রেগে শান্তর দিকে পা বাড়াতেই উল্টা পাল্টা করে শাড়ী পরায় শাড়ী ফ্লোরে নেমে এসেছিলো অনেকটা তো সেটায় পা দিয়ে পিছলিয়ে শান্তর গায়ের উপর গিয়ে পড়লো সে একেবারে
.
শান্ত দাঁত কেলিয়ে বললো”রোমান্স করতে মন চায় বুঝি?তাহলে বিছানার পাপড়ি গুলা এলোমেলো করলে কেন?
.
আহানা দূরে সরে গিয়ে এক চুমুকেই কাপের সব চা শেষ করে শাড়ী ধরে বাথরুমের দিকে চলে গেলো
.
শান্ত হাসতে হাসতে বিছানায় বসে একটা বিসকিট মুখে দিয়ে আবারও ভিডিও দেখায় মনোযোগ দিলো
.
আহানা ঠিকমত শাড়ীটা পরে বেরিয়ে জানালার ধারে গিয়ে দাঁড়িয়েছে
জানালাটার সামনে সব সুপারি গাছ,মনে হয় সুপারি বাগান হতে পারে,পরিষ্কার বাগান,এখানে হেঁটে আসতে মন্দ লাগবে না
আহানা খুশি হয়ে পিছনে তাকালো,ওমা শান্ত নেই
আহানা দরজা খোলা দেখে সেও বের হলো,করিডোর ফাঁকা,দূরে মানুষের কোলাহল শোনা যাচ্ছে
আহানা সেদিকেই গেলো,সোফায় রিয়াজের বাবা আর নানা দাদা সবাই একসাথে বসে চা খাচ্ছেন আর কাল বিয়ের বাবুর্চির রান্না নিয়ে কথা বলতেছেন
আহানা মাথায় গোমটা দিয়ে সামনে দিয়ে বেরিয়ে গেলো,শান্তকে দেখতে পেয়ে মনটা জুড়ালো তার
শান্ত দূরে একটা সুপারি কাছের সাথে আটকানো সিটে বসে রিয়াজের সাথে কথা বলতেছে,পাশেই নওশাদ সুপারি গাছটাতে উঠার বৃথা চেষ্টা চালাচ্ছে
সূ্র্য লুকিয়ে নওশাদের ভিডিও করতেছে তার ফোনে
আহানা তাই আর সেদিকে গেলো না
নওমিরা সবাই চলে গেছে,কাল একেবারে ওর বাড়ি থেকে বিয়ে করে ওকে নিয়ে আসবে রিয়াজ ভাইয়া
আহানা সুপারি বাগানটার দিকে গেলো,জায়গাটা এত সুন্দর তার উপর বিকালবেলা, হাঁটতে জোস একটা ফিলিং আসতেছে আহানার
আহানা হেলেদুলে পুরো সুপারি বাগানটা ঘুরে দেখতে লাগলো
সুপারি বাগানটা যেখানে শেষ সেখানে বিরাট ঘাট দেওয়া একটা পুকুর
ঘাটটা দেখে আহানা রীতিমত অবাক
দৌড়ে ঘাটটার কাছে এসে দাঁড়ালো সে
দুপ করে বসে পুকুরটার দিকে চেয়ে রইলো আহানা,পুকুরটার চারপাশে বন আর বন, ওপারে কি আছে তা বোঝা দায়
আহানা এই ভেবে নিজের মাথা নিজে চাপড়ালো যে
কয়েক মাস আগে হলো সে এই পুকুরে ডুব দিয়ে মরে যাওয়ার চিন্তা করতো
আর এখন জীবনটা তার পুরো বদলে গেছে,মরার প্রশ্নই আসে না এখন
আহানা দেখলো পুকুরটার পশ্চিম পাশের কোণায় একটা গোলাপি রঙের পদ্ম ফুটে আছে একলা একলা
আহানা নিজের গায়ের দিকে একবার তাকালো,তার গায়ের শাড়ীটাও সুতির গোলাপি রঙের,এখন যদি সে ফুলটা পায় তাহলে সেই মানাবে
ভাবতে ভাবতে সে ঘাট থেকে নেমে সেদিকে ছুটলো, কথা হলো গিয়ে বন পেরিয়ে যেতে হবে
আসার সময় শান্তকে নিয়ে আসলে ফুলটা এতক্ষণে আমার মাথায় থাকতো,কি আর করার,এখন আবার বাগান পেরিয়ে তাকে ডাকতে যেতে পারবো না,সাথে করে ফোনটাও আনিনি
সাপ টাপ না থাকলেই হয়,আহানা শাড়ীটা একটু উঠিয়ে পা টিপে টিপে বন মাড়িয়ে পুকুরটার কোনায় এসে দাঁড়ালো,তারপর একটা শুকনো লাঠি খুঁজে সেটা নিয়ে ফুলটাকে কাছে এনে পানি থেকে তুলে নিয়ে ডাঁটাটা ফেলে দিলো
তারপর ফুলটা খোঁপায় বেঁধে নিলো,ইস কি যে ভাল্লাগতেছে,এবার নিজেকে আয়নায় দেখে মনটা জুড়াবো
এটা বলেই আহানা পিছন ফিরে নিচের দিকে তাকাতেই
তার সামনে দিয়ে কি একটা যেন গেলো,সে পুরোটা না দেখলেও লেজ দেখেছে
আর লেক দেখেই বোঝা গেছে এটা মাটিয়া সাপ
আহানা মনে হয় জীবনে এত জোরে চিৎকার দেয় নাই এখন মাত্র যে চিৎকারটা দিলো
পুরো পুকুর কেঁপে উঠেছে,এমনকি আহানার চিৎকার শান্তর কানেও গেছে
শান্ত সিট থেকে নেমে সুপারি বাগানটার দিকে চেয়ে রইলো তারপর বললো”এটা আহানার আওয়াজ না?
.
আহানা তো রুমে,ওদিকে আসবে কেন?
.
শান্তর কেন যেন ভয় লাগলো,দেরি না করে সে সেদিকে ছুটলো
সুপারি বাগানটার চারিদিকে একবার চোখ বুলাতে বুলাতে থেমে গেলো সে,দূরের পুকুরটার কোণায় গোলাপি রঙের শাড়ী পরা কাউকে দেখলো সে,রঙটা ঘাড়ো হওয়ায় সহজেই চোখে পড়েছে
শান্ত আরেকটু এগিয়ে এসে বুঝলো এটা আহানা
.
আহানা?তুমি এখানে কি করতেসো?এত জঙ্গলের ভিতরে গেসো কেন?
.
আমাকে বকা বাদ দিয়ে আমাকে এখান থেকে নিয়ে যান,এখানে একটা মাটিয়া সাপ দেখসি,আমি মরে যাব,আমাকে বাঁচান
.
ভালো হয়েছে,তেমাকে কে বলেছিলো এত বনের ভেতর যেতে,ওয়েট আমি আসতেছি
শান্ত বন পেরিয়ে আহানার কাছে এসে ওর হাত ধরে নিয়ে আসলো
.
কেমন হাসবেন্ড আপনি?
.
যাক বাবা,আবার কি করলাম?
.
আহানা কপাল কুঁচকে কিছু না বলেই বাসার দিকে চললো
.
এই মেয়ের মাথায় মাঝে মাঝে কি চলে আমি বুঝি না,হাত ধরে নিয়ে আসলাম আর সে বলে কেমন হাসবেন্ড আমি??
ওহহহহ,আচ্ছা তুমি চাইসো তোমাকে কোলে করে আনা দরকার ছিলো??
.
আহানা জিভে কামড় দিয়ে হাঁটার গতি বাড়িয়ে ছুটেছে
.
শান্ত মুচকি হেসে দিয়ে সেও আসতেছে
আহানা এবার দৌড়ই দিয়ে দিলো,খোঁপাটা খুলে মাথার ফুলটা পড়ে যেতে নিতেই শান্ত ফুলটা ধরে সাথে আহানার হাত ও ধরে ফেললো
.
না সত্যি আমি কোলে নেওয়ার কথা মিন করে বলিনি
.
আমি কি বললাম তুমি কোলে নিতে বলেছিলা,আমি তো তোমার মাথার ফুলটা ধরলাম পড়ে যাচ্ছিলো,নাও ধরো এটা পরে নাও
বাচ্চাদের মত কান্ডকলাপ করে,ফুল নিতে উনি আফ্রিকার জঙ্গলে গিয়ে জামাই জামাই করে আসতে না পেরে
জঙ্গলে যাওয়া তাদেরকেই মানায় যারা এদের খাওয়ার সাহসিকতা রাখে,ঐ যে ম্যান বাসসেস ওয়াইল্ড শো টা দেখিও
ঐ লোকটা খায় না জঙ্গলের এমন কিছু বাদ নাই
.
এটা আফ্রিকান জঙ্গল ছিলো না,পুকুরের পাশে এরকম বন টন থাকেই
.
তো তাহলে চিল্লাচ্ছিলে কেন?
.
সাপ দেখছিলাম তাই,হইসে হইসে,এত সাপাই কেন দিচ্ছি আপনাকে?কে আপনি??আমার থেকে এত কৈফিয়ত কেনোই বা নিচ্ছেন?
.
শান্ত রেগে আহানার চুলের মুঠি টেনে ধরতেই রিয়াজের আম্মু সামনে এসে দাঁড়িয়ে পড়লেন
.
শান্ত জিভে কামড় দিয়ে বললো”আহানা,চুলের একটুও যত্ন নাও না,কেমন উষ্কখুষ্ক হয়ে আছে,মাঝে মাঝে তেল ও তো লাগাতে পারো
.
রিয়াজের আম্মু মুচকি হেসে বললেন”শান্ত আহানা আসো তোমরা সোফার রুমে এসে বসো,আমি পাঁচ পিঠা বানিয়েছি,খেতে আসো
.
আহানা নিজের চুল ছাড়িয়ে ব্রু কুঁচকে চলে গেলো সেদিকে
.
শান্ত এগিয়ে যাওয়া ধরতেই নওশাদ সূর্য কোমড়ে হাত দিয়ে ওর সামনে এসে দাঁড়ালো
.
কি ব্যাপার কি চাই?
.
সত্যি করে বল তুই আহানার চুল টেনে ধরছিলি কেয়ার দেখাতে নাকি রেগে?
.
শান্ত দাঁত কেলিয়ে যেতে যেতে বললো”দুটোই”
.
সূর্য নওশাদের কাঁধে হাত দিয়ে চশমা ঠিক করে বললো”আহানা যেমন গরম তেলের মতন,তেমনই শান্ত শুকনো মরিচের মতন,দুটোই একসাথ হলে ফোড়নের সৃষ্টি হয়
কোনোটাই কোনোটা থেকে কম যায় না বুঝলি
.
হুম ঠিক বলেছিস
.
আহানা সোফায় এসে বসতেই ২মিনিট বাদে একজন বয়স্ক মহিলা এসে বসলেন ওর পাশে
আহানা উনাকে সালাম দিলো,সম্ভবত রিয়াজের দাদি হোন উনি
উনি আহানাকে ভালো করে দেখে বললেন”তোমার আর আমার নাতি শান্তর নাকি নতুন বিয়া হইছে?”
.
আহানা মাথা নাড়িয়ে হ্যাঁ বললো
.
উনি চমকে বললেন”তাহলে তোমার গলায় কানে স্বর্ণ কই?নতুন বউরা এমন বেশে থাকে না তো
.
আহানা কি বলবে ভেবে পাচ্ছে না,শান্ত কোথা থেকে এসে ওর পাশে বসে নিজের গলার স্বর্নের চেইনটা খুলে ওকে পরিয়ে দিতে দিতে বললো”আরে দাদি!!ওকে একটু বুঝান,ওর নাকি এসব পরলে ঘুম হয় না,তাই সব খুলে রাখছে,নেন আমি আমার গলারটাই পরিয়ে দিলাম”
চলবে♥

LEAVE A REPLY

Please enter your comment!
Please enter your name here